নতুন ওয়াজিব ও অন্যান্য

সৌরভ কবীর এর ছবি
লিখেছেন সৌরভ কবীর [অতিথি] (তারিখ: রবি, ০৫/০৪/২০১৫ - ১১:০৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.

"কিছু মানুষ আছে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী যারা কখনোই কাছাকাছি হয়না। দূরত্ব বজায় রেখে সহানুভূতি প্রকাশ করতে চায়। সমস্যা হলো আমি সহানুভূতি গ্রহণ করিনা; নিজ সমস্যাগুলো আমি নিজেই মোকাবেলা করবার চেষ্টা করি। আমার পরিস্থিতির কারনে কেউ আমাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতে না পারলে সমস্যা নেই এবং সহানুভূতি দেখানোর প্রয়োজন নেই। I hate sympathy." -- ওয়াশিকুর বাবু, ২২ মার্চ ২০১৫।

নৃশংসভাবে মানুষ হত্যা আর চিন্তা-বিবেক-বাকস্বাধীনতা নিয়ে বাংলাদেশের লোকের যে নানামতের বিশাল চিন্তারাশি পেটের মধ্যে লুকিয়ে থাকে তা এমনিতে বুঝবার উপায় নেই। ব্লগারদের একেকজনকে মারবার পর এসব তারা উগড়ে দিয়ে ফেসবুকে সুনামি ঘটিয়ে ফেলেন। ঢেউয়ের ব্যাপকতা দেখে আকাশ থেকে বা অন্য যেখান থেকে পড়েননা কেন শুধু খুননা, খুনকে সহীহ করতে পরবর্তী এসব অনলাইন কর্মকান্ডও পূর্বপরিকল্পনার অংশ।

রাজীব হায়দার মারা যাবার পর নিউজ সাইটগুলোর কমেন্টে ক্লিক করা ছাড়া এসব অবশ্য আমার সেভাবে দেখতে হয়না। কারন কঠিন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেয়ে আমাকে সিলেক্টিভ হয়ে যেতে হয়েছে। এবার দেখতে হলো সেই সিলেক্টেডদের অনেককে ওয়াশিকুরের জন্যে সহানুভূতি ভিক্ষে করে বেড়াতে হচ্ছে।

  • "আপনি এখন কেন একের পর এক এতো ছবিটবি আপলোড করে যাচ্ছেন? পরে করা যেতোনা? প্লিজ।"
  • "ছেলেটাকে কেবল মারা হয়েছে, মনে যাই থাকুক পরে বললে হয় না?"
  • "যুক্তিটুক্তি না দেখিয়ে একবারে বলে দেন না কেন যে খুশি হয়েছি?"
  • "দয়া করে ধর্ম, ধর্ম অপব্যাখ্যা ইত্যাদি টেনে আনবেননা হত্যা জায়েজ করবার জন্যে।"

নৃশংসভাবে কোপানো একজন মানুষের প্রাণহীন দেহ পড়ে ছিলো তখন সবার মনিটরে। এমন যদি হতো কেউ একটু সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দিলে ওয়াশিকুর ফিরে আসতো তবুও যে এদেশের লোকজন আসতো না সেটারও একরকম প্রমাণ হয়ে গেছে। মানুষের দুর্দিনে অমানুষ এর পরিচয় মীমাংসাকরণ সহজ হয়ে যায়। সুসময় হোক আর দুঃসময় হোক অমানুষের সংস্পর্শে যেয়ে মানুষরে অপমান ছাড়া তেমন কিছু করা হয়না আসলে।

২.

বলতে বলতে আরেক ক্লিশে শোনায় 'বিচার চাই' বলাটাও। রাজাকারের বিচার করবে বলে বিশাল ম্যান্ডেট নিয়ে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় আছে এক শক্তিধর সরকার। বিচার করতে যেয়ে সরকার প্রমাণ করেছে এই বিচার এক গরীবের ঘোড়া রোগ ছাড়া তেমন কিছু নয়, পাশাপাশি রোগের মেডিসিন দেখে কোনটায় কতোটা সন্তুষ্ট হতে হবে তাও উনারা বাতলে দেন। বিচারের বাইপ্রোডাক্ট হিসেবে অগণিত তরুণের ঘাড়ের উপর চাপাতি অপেক্ষা করছে আজ। এসব ছেলেমেয়েরা ছাগলের কতো নম্বর বাচ্চা গুণে ইয়ত্তা না পেয়ে নাহয় চোখেই দেখলো না কিন্তু সত্যিকারে যার পরিবারের লোকজন মারা গেছে সে যখন জীবনঝুঁকি নিয়ে বিচার চেয়ে সাক্ষ্য দিতে যায় তার নিরাপত্তার জন্যে কি করেছে সরকার?

ওয়াশিকুরের বোন এখনও বুঝে উঠতে পারছেননা মানুষকে কীভাবে লেখালেখির কারনে হত্যা করা হতে পারে। সে বিচার চাইছেন। তার স্বামী মামলা করেছেন। সরকার আর তার পুলিশ পড়ে গেছে বিপাকে। জনতা এবার খুনী ধরিয়ে দিয়েছে হাতেনাতে। অনেক মানুষ তদন্তের উন্নতির কথা শুনতে উৎসুক। মাঝখানে খুনীরা জনসম্মুখে সব স্বীকারও করে ফেলেছে। বিচার করতে গেলে আস্ত আস্তিক কয়েকটারে ফাঁসি দিতে হবে। ওয়াশিকুরের মামলায় তার পক্ষে জড়িতরা কি আগেভাগেই তবে বড় মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়ে গেলেন?

কে মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়লো তাতে কার কী আসা যায়। অনেকের মিলেমিশে থেকে থেকে অল্প সময়ের জন্যে এটা ওটার দাবী হাঁক দিয়ে তুলে দৈনন্দিন জীবনছন্দে ছোটখাটো কন্ট্রাস্ট আনাটা হয়। অথচ প্রতিবার অন্ধকার আরো গাঢ় হতে থাকে। যে অবস্থায় চলছে তার চেয়ে 'আল্লাহর দেশ', প্রধানমন্ত্রীর দেশ মদীনা সনদ অনুযায়ী চললে কেমন হতো ভাবছি। তাহলে ওয়াশিকুররা অন্তত জানতো যে তার দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই, বুঝেশুনে আরো প্রস্তুত হয়ে এগোনর পথটা বের করতো। মাঝামাঝি অবস্থান বাদ দিয়ে সরকার বা আওয়ামী লীগের কাছ থেকে সোজাসোজি একটা উত্তর জানতে চাওয়া কি খুব বেশি চাওয়া হয়ে যাবে?

৩.

ইসলামের শরীয়তে ইজমা-কিয়াস ইত্যাদি আছে যার দ্বারা জামানার ইসলামের নেতারা দিকনির্দেশনা দিতে পারেন। মাওলানা শফি হুজুর তার দায়িত্ব পালন করেছেন। বলেছেন নাস্তিকদের কতল করা প্রয়োজন এবং এটা ওয়াজিব। ধর্মটার অন্যান্য নেতৃস্থানীয় জায়গা থেকে তেমন কোন প্রতিবাদ না আসায় ধরে নেওয়া যায় এখন এটা ইসলামী বিধি। যতদিন আপনার ধর্মীয় মতাদর্শ (বা অন্য যেকোন মতাদর্শ) অন্যের মতাদর্শের চেয়ে ভালো তুলনাটা পাবলিকলি কোথাও কোনভাবে ধ্বনিত হবে ততদিন আপনি চাপাতি দিয়ে এগোন আর গোলাপ ফুল নিয়ে এগোন ভালো-মন্দ সমালোচনা বন্ধ করতে পারবেননা। এই সহজ সত্যটা বুঝে ধর্মপ্রাণ কেউ কি মানুষ কতলের এই অমানুষিক বিধির ব্যত্যয় ঘটাতে পারবেন? সম্ভবত সে শক্তি তারা অনেক আগেই হারিয়ে ফেলেছে।

আমি অনেকদিন ধরে বাড়ি থেকে দূরে থাকি। যেমনটা হয়তো ওয়াশিকুর রহমানও থাকতেন। যেখানেই থাকি না কেন ঈদের সময় মা-বাবার সাথে ঈদ করতে বাড়িতে যাবার চেষ্টা করি। ঈদ আসার কয়েকদিন আগ থেকে আশাপাশের সবাইকে জিজ্ঞেস করি কে কোথায় কিভাবে ঈদ করতে যাচ্ছে। টিকিট পাওয়া গেলো কিনা। ঈদ করে আসবার পর আবার নানা কথা হয়। বাড়ির সবাই কেমন আছে? বাড়ি থেকে ফিরতে পথে জ্যাম পোহাতে হলো কিনা? এই ঈদের দুরাকাত নামাজ হলো ওয়াজিব নামাজ। এই নামাজ পড়ে ঘরে ঘরে আনন্দ বয়ে যায়। রাস্তাঘাটের সমস্যার কারনে যাদের বাড়ি ফিরতে দেরি হয় তারা পথে পড়ে নেন, কাউকে কাউকে লঞ্চের ছাঁদে পড়তে হয়। বলিউডের কোন কোন নায়ক কষ্ট করে ঘুম থেকে উঠে চতুর্থ জামাতটাতে এটেন্ড করে হলেও এই ওয়াজিব বাদ দেননা শুনি। আনন্দ আর ঈদের ওয়াজিব আদায় ভালো চলে একসাথে। অন্যদিকে মাওলানা শফির নাস্তিক কতল করে ওয়াজিব পালনের নির্দেশনাও যে বিপুল আনন্দ সহযোগে অব্যর্থভাবে এগোচ্ছে বুঝা যায় সদ্য নাস্তিক কতল করে আসা দুই যুবকের কথা শুনলে।

সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগে যেমন বছরের দুটো সময়ে মানুষের ঈদ কাটানোর খবরাখবর নিতাম তেমনি এখন থেকে আমার সঙ্গে কোন ধার্মিকের কথা হলে খোঁজখবর নেওয়ার চেষ্টা করবো যে তার নতুন ওয়াজিব আদায় কেমন এগোচ্ছে? কতদিন পরপর আদায় করতে হয় এটা? বছরে না মাসে? আদায়ের পর রক্তাক্ত রাস্তাঘাট কি বেহেশতের বাগানের মতো লাগে? আচ্ছা কেমন আনন্দ হয়? কুপিয়ে এসে সন্তানরে ভালোবাসায় জড়িয়ে ধরেন? কতলসুখে বাড়ির সবাই মিলে ভালো খাওয়াদাওয়া হয়? খুব..?

তারপর সেসব খোঁজখবরের গল্প হয়তো কোথাও লিখে যাবো, ভালোমন্দ নাকি ফেরেশতারাও লিখে। অল্প কিছুদিন পরেই এমন দিন আসবে যে ভিন্নমতের লোক সব মেরে ধার্মিকরা আর এই নতুন ঈবাদাতটা আদায় করবার সুযোগ পাবেনা অথবা ধরুন এমন হলো যে সব পাল্টে গিয়ে ওয়াশিকুরের মতো কাউকে এভাবে মরতে হলোনা। মানুষের লেখা কই আর যাবে? সেসব সময়ের জন্যে বা তারও অনেক পরের জন্যে কিছু লেখা মানুষরূপীদের চিনিয়ে দেবার জন্যে থেকে যাবে।


মন্তব্য

রানা মেহের এর ছবি

বিচার করতে যেয়ে সরকার প্রমাণ করেছে এই বিচার এক গরীবের ঘোড়া রোগ ছাড়া তেমন কিছু নয়,

এ কথার মানে কী?

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সৌরভ কবীর এর ছবি

শাহবাগের পর থেকে ওয়াশিকুরদের নাম ধরে ধরে লিস্ট করা হয়, এখন সে অনুযায়ী হত্যা চলছে। 'আমার দেশ' পত্রিকা থেকে শুরু করে হেফাজত সবই সরকার কঠোরভাবে দমন করলে এরকম হতোনা। মফস্বল থেকে যারা তখন আন্দোলন করেছিলো ভালো নেই কিন্তু মোটেই। এসব কারনে রাগ থেকে বলেছি আসলে। পড়া ও মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

তানিম এহসান এর ছবি

আপনার যুক্তি পুরোপুরি মানতে পারলাম না।

যে কারণে বিচার চান, যে বিশ্বাসে অবিচল থেকে চিত্ত সমুন্নত রাখার চেষ্টা করেন, যে বোধ এর কারণে প্রত্যয়ী শপথ --- এটা’কে গরিব হিসেবে রাগ করে হলে-ও আর কোনদিন দেখবেন না বলেই আশা করছি। পার্থক্যের জায়গাটুকু খুব সূক্ষ্ম, প্রভেদ পরিষ্কার। গর্বিত পথচলা হোক।

সৌরভ কবীর এর ছবি

গরীব বলে দেখছি সেটা না কিন্তু আমার কাছে সরকারের কাজকর্ম মিন করে এরকম যে জনগণের জন্যে বিচার চাইতে যাওয়াটা বড় উচ্চাভিলাষ যেন। লাইনটা আলাদাভাবে দেখলে কিছুটা সমস্যাজনক শোনাচ্ছে বুঝতে পেরেছি। ধন্যবাদ।

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

তানিম এহসান এর ছবি

চলুক

আমার এই সাধুবাদ রানা মেহের এর প্রশ্নটার সাথে সম্পর্কিত। কিভাবে যেন এটা নিচে চলে এসেছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখা ভাল লেগেছে, তবে রানা মেহের এর মত, আমারও প্রশ্ন কথাটি বলতে কি বুঝিয়েছেন?

সৌরভ কবীর এর ছবি

উপরে উত্তর দেওয়া হয়েছে। নাম উল্লেখ করে মন্তব্য করলে পরে আলোচনায় সুবিধা হয়। শুভকামনা রইলো।

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমি এই পোস্টটা পড়ে কিছু বুঝিনি। আলাদা আলাদা ভাবে হয়তো কিছু বাক্য, কিছু অনুচ্ছেদ বুঝেছি কিন্তু মোটের ওপর লেখক কী বলতে চেয়েছেন সেটা বুঝতে পারিনি। লেখকের তরফ থেকে "আপনাকে বুঝাতে পারিনি, এটা আমার ব্যর্থতা" জাতীয় কথা শুনতে চাইনা। খুব অল্প কথায় পোস্টের gist জানতে চাইছি।

পুনশ্চঃ পাঠক হিসেবে আমি কোনভাবেই dumb না। এটা আমার গর্ব/অহঙ্কার নয়, confidence।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সৌরভ কবীর এর ছবি

একটা বিষয়ে যে বলা হয়নি সেটা শিরোনামই বলছে। ঈদের ওয়াজিব ও মাওলানা শফি প্রদত্ত ওয়াজিবের দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীটার অসহ্য অমানুষিকতা ও প্রভাব বুঝাতে ব্যক্তিগত কয়েকটা অভিজ্ঞতা টেনে এনেছি। ওয়াশিকুরদের মতো কেউ মারা গেলে দেখতে হয় অনেকে অনলাইন সহানুভুতি চেয়ে বেড়াচ্ছেন, ব্যাপারটা অযথা বলে মনে হয় সেটা বলেছি প্রথম পর্যায়ে। যারা বিচার চাইছেন এবং বিচার চেয়ে বিচারিক প্রকিয়ার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন তাদের নিরাপত্তা চেয়েছি। সংক্ষেপে বলতে গেলে এটুকুই।
আপনার আগ্রহের জন্যে অনেক ধন্যবাদ। আরো প্রশ্ন থাকলে করুন।

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বিচার করতে যেয়ে সরকার প্রমাণ করেছে এই বিচার এক গরীবের ঘোড়া রোগ ছাড়া তেমন কিছু নয়

পড়ার সময় এই লাইনটাই চোখে লাগছিল, এসে দেখি সবাই বলে ফেলেছে।

যার পরিবারের লোকজন মারা গেছে সে যখন জীবনঝুঁকি নিয়ে বিচার চেয়ে সাক্ষ্য দিতে যায় তার নিরাপত্তার জন্যে কি করেছে সরকার?

এইটা খুব ভ্যালিড একটা প্রশ্ন, তার ঠিক আগে ঐ কথা বলে এটা লঘু করা অপ্রয়োজনীয়

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

স্বয়ম

অতিথি লেখক এর ছবি

নিরাপত্তার এই প্রশ্নটা শুরু থেকেই হাজির, কিন্তু এর কোনো সুরাহা এখনো হ্য়নি বলা যায়।

আর বিচারটা কোনো রোগ না। কোনো ধরনের ভাবনা থেকেই এটা বিলাসিতা না। এটা দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ যা আমরা অতি-বিলম্বে শুরু করেছি। আজকের এই হত্যা বা কতল, ধর্মবাদীদের এসব আস্ফালনের কারণও এই বিলম্বই, সাথে নানান সমঝোতা বা আরো নানা কিছু থাকতে পারে। কিন্তু এটিই মূল। এই বিচার আরো আগে সম্পন্ন হলে, এই গোষ্ঠী কতলতো দূরের কথা হুঙ্কার দিতেও দুবার ভাবতো।

বুঝতে পারছি আপনি তা মিন করেননি হয়তো। কিন্তু মনে রাখা জরুরি যে, আপনার লেখার কোনো বাক্যের সুযোগ যেন কেউ নিতে না পারে।

স্বয়ম

অতিথি লেখক এর ছবি

সৌরভ ভাই, নামহীন অতিথি আমি, আমি অনন্যা। খুবি দুক্ষিত, নাম দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। আমি সচলে নতুন মন্তব্য করা শুরু করেছি, তাই এখনো অভ্যস্ত হইনি।

অনেক ধন্যবাদ।

সৌরভ কবীর এর ছবি

স্বাক্ষী সত্যানন্দ ও স্বয়ম, পাঠ ও দ্বিমত জানাবার জন্যে ধন্যবাদ। সবাই যেহেতু বলেছে এজন্যে আরো লোকে বলবে হয়তো। বাগধারা থেকে একেকটা শব্দ নিয়ে একেকবার একেকজন কমেন্ট করছেন। সুবিচার উচ্চাভিলাষ যেন না হয় বরং সে চাওয়াটাই আছে লেখা জুড়ে। উপরে মন্তব্যে যা বলেছি তার বাইরে তেমন কিছু বলার নাই। বিচার চাওয়ায় লাশের সংখ্যা কত হলো মাঝেমধ্যে গুণেন আর সরকার বিচারটারে উচ্চাভিলাষ বলে প্রমাণ করে যাচ্ছে না বলে আমার ব্লগে এসে যতো ইচ্ছা দ্বিমত প্রকাশ করে যেয়েন, সমস্যা নাই।
তানিম এহসান, রানা মেহেরের মন্তব্যে আমি জবাব দেওয়ার পর আপনি দিয়েছিলেন। মডারেশনজনিত কারনে পরে দেখিয়েছে। আপনার মন্তব্যটা সবসময় ঠিক জায়গাতে দেখিয়েছে।
অনন্যা, বুঝতে পেরেছি। আপনার খুবি দুক্ষ দূর হোক।

দ্বিমতের জায়গাগুলো ভালোভাবে উঠে আসবে এজন্যেই এই প্লাটফর্মে আসা, অন্য তেমন কোন কারন নাই। ভ্যালিড শব্দটা দেখে মাথায় আসলো যে অনেকখানে এভাবেও নিজেরে বিশেষভাবে ডিফাইন করে ভ্যালিড ও ইন্টারেস্টিংলি মন্তব্য করা যায় যে, "ঐ এইডা কি কইরছেন? আমারে কি যে সে মানুষ লাগে? চিনেন আমারে?" এধরণের ব্যাপারগুলো দেখতে পাওয়া অফলাইনের মতো অনলাইনে নিঃসন্দেহে ভীতিকর নয়। তবে অনলাইনের ক্ষেত্রে বারবার চোখে পড়ে অবধারিতভাবে এবং অরুচি নিয়ে আসে।

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

প্রিয় সৌরভ কবীর,
অফ্লাইনে প্রথম পড়বার সময়ই ঐ কথাটা চোখে লেগেছিল। অনলাইন হতে হতে অনেকেই বলে দিয়েছেন সেটাই উল্লেখ করেছি।

তথাপি,

বিচার চাওয়ায় লাশের সংখ্যা কত হলো

এবং

সরকার বিচারটারে উচ্চাভিলাষ বলে প্রমাণ করে যাচ্ছে না

এক সমতলে এনে মেলাতে পারছি না, হয়তো আমারই অক্ষমতা।

ওপরে, স্বয়ম বলেছেনঃ

বুঝতে পারছি আপনি তা মিন করেননি হয়তো। কিন্তু মনে রাখা জরুরি যে, আপনার লেখার কোনো বাক্যের সুযোগ যেন কেউ নিতে না পারে।

আপাতত এর চেয়ে ভালভাবে বোঝাতে পারছি না।

পুনশ্চঃ

দ্বিমতের জায়গাগুলো ভালোভাবে উঠে আসবে এজন্যেই এই প্লাটফর্মে আসা, অন্য তেমন কোন কারন নাই।

এবং

তবে অনলাইনের ক্ষেত্রে বারবার চোখে পড়ে অবধারিতভাবে এবং অরুচি নিয়ে আসে।

এই বাক্যযুগলকে মেলাতে পারছি না।
কেননা সচলে

ঐ এইডা কি কইরছেন? আমারে কি যে সে মানুষ লাগে? চিনেন আমারে?

এইরাম "আপনে আমাত্তে বেশি বোজেন" কাউরে কইতে দেখি নাই।

ভাল থাকুন।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সৌরভ কবীর এর ছবি

স্বাক্ষী সত্যানন্দ, আপনাদের দ্বিমত সঠিক না আমি সেটা বলছি না। বরং এটা উপরে বলেছি যে আমার বাক্যটা যে সমস্যাজনক শোনায় তা বুঝতে পেরেছি। আমার ফোকাস ছিলো নিরাপত্তার ব্যাপারটা নিয়ে। একটা মন্তব্যে লেখা যেখানে সাম আপ করেছি সেখানে তাকালেও বুঝতে পারবেন। লাশের সংখ্যার কথা বলা সেটা পুনরুল্লেখ করবার জন্যেই।

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
নিরাপত্তা এবং লাশের সংখ্যা নিয়ে কোনও দ্বিমত নাই। ব্যাপারটা সিরিয়াস বলেই (এমনকি অনিচ্ছাতেও/বেখেয়ালেও) লঘু করতে ইচ্ছুক নই।

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

বানান ভুল এর জন্য দুঃক্ষিত, আমি মোবাইল এ বাংলা লেখায় নতুন, তাই ভুল হয়ে গেছে। তবে আপনার ভুল ধরিয়ে দেবার প্রক্রিয়াটা ভাল।
ধন্যবাদ।
অনন্যা

সৌরভ কবীর এর ছবি

চলুক

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

জিল্লুর রহমান সোহাগ  এর ছবি

সুবিচার না পাওয়াটাই এখন স্বাভাবিক ব্যপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝে মাঝে মনে হয় দেশটা বোধহয় আপনা আপনিই চলছে যেখানে আপাতদৃষ্টিতে কোন শাসনযন্ত্র নেই এবং যেখানে "বাকস্বাধীনতা" শব্দটা রীতিমত ভয়ানক। সাম্প্রতিক সময়ের একের পর এক সমাধানহীন ইস্যুই হয়তোবা আমাদেরকে "বিচার" শব্দটাকে নিছকই প্রহসন হিসেবে ভেবে নিতে বাধ্য করেছে। মুখে মুখে সেক্যুলারিজমের ধোয়া তুলে ঠিকই নীতিনির্ধারকেরা পরোক্ষভাবে আল্লামা শফির তরিকাকেই সাপোর্ট করে যাচ্ছেন। প্রত্যাশা করে কোন লাভ আছে কিনা জানিনা তবুও স্বপ্ন দেখি এই সত্যটা সবার মাঝে প্রতিষ্ঠিত হোক যে ধর্মের স্থান কখনোই "মানুষে"র ঊর্ধ্বে নয়।

সৌরভ কবীর এর ছবি

বিচার সংক্রান্ত ব্যাপারে কথা বলার সময় শব্দ নির্বাচনে সতর্ক হোন। এটা নিয়েই লেখার নিচে আরো অনেক মন্তব্য রয়েছে দেখে নিন।

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।