যে বিষয়টা্তে চমৎকৃত হয়ে ছবিগুলো তুলেছিলাম সেটা ছিল প্রকৃতির রূপ বদলের খেলা। পরে এই রূপবদলের খেলাড়ি মেহগনি গাছটা বোধয় আমার গুরুই হয়ে গেল। প্রথম ছবিটা তোলার সময় ছিল ঝরা পাতার বসন্ত। ছবির বাম দিকে কাছাকাছি দেখতে পাওয়া মেহগনি গাছটার সমস্ত পাতা ঝরে গিয়ে একেবারে মরার মত হয়েগিয়েছিল। দৃশ্যটা আমার ঠিক বারান্দা থেকে দেখতে পাওয়া। তিন তলা বরাবর গাছটাকে খুব কাছ থেকে প্রতিদিন একটু একটু করে লক্ষ্য করছিলাম। ধীরে ধীরে গাছটার গায়ে ছোট ছোট কুষিপাতা আসছে, হঠাৎ একদিন দেখি- অনেক সবুজ সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে গাছটা! ঘটনাটার মধ্যে কি যেন এক মাহাত্ন্য খুঁজে পেয়েছিলাম সেদিন। একটা পরিবর্তন। একটা চাক্ষুষ পরিবর্তন অবলোকন করে সেদিন ভেতরে ভেতরে একধরনের উত্তাপ এসে ভর করেছিল। এরই মধ্যে একদিন এসেছিল কালবৈশাখী। এই বারান্দা থেকে কালবৈশাখীটাও বেশ উপভোগ করা যায়। মেহগনি গাছটা তখন ঝড়ের তীব্রতা পরিমাপকের কাজ করে। ঝড় যত বেশি হয় সে ততবেশি আছড়া আছড়ি করে, ঝড় যত মন্থর, তার মাতম বল্লরীও তত শম্বুক। বেশির ভাগ সময়ই তীব্র বাতাস এসে মোচড় দেয় মুহুর্মূহু, এই ডানে, এই বামে ঝটকা- মটকা- লবডঙ্কা- মনে হয় যেন কিছুক্ষণের মধ্যেই সমস্ত ডালপালা ভেঙ্গে বিকলাংগ হয়ে যাবে গাছটা! কিন্তু নাহ!! ঠিকই তান্ডব শেষে আবার ঝকঝকে চকচকে আরো ঝলমলে হয়ে মৃদু বাতাসে ঢলপল করতে থাকে। মনে পড়ে যায় ছোটবেলায় পড়া সেই "বৃক্ষ" প্রবন্ধটি বা "বৃক্ষ" বিষয়ক প্রবন্ধটি। বৃক্ষের কাছে নাকি অনেক কিছু শেখার আছে। দিনকে দিন বিমর্ষ আর হতাশার মধ্যে ডুবে যাওয়া আমিও আবিষ্কার করলাম, ইয়েস, মেহগনি গাছটার কাছে কি যেন শেখার আছে । কি যেন মেসেজ সে প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছে আমাকে।আমি ধরতে পারছি না। প্রকৃতির সাথে সাথে নিজেকে বদলে ফেলা? বদলে ফেলতে শেখ। সবার সাথে সাথে থাকো। যখন যেটা করার, অধোবদনে কেবল তাই-ই করে যাও। প্রচন্ড বাধা, বিপত্তি, অসফলতা আর হতাশার সাথে পাঞ্জা লড়েও দিব্যি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকো। যুদ্ধ করতে শেখ। নিজেকে শক্ত মাটির উপরে সমূলে সুদৃঢ় ভাবে স্থাপন করো এবং নিজের অবয়বে ধারন কর নির্মল সৌন্দর্য্য।
মন্তব্য
১
শুরুর লাইনটা দেখে ভেবেছিলাম অনেকগুলো ছবি দেখতে পাবো বুঝি। ভেতরে ঢুকে আশাহত হলাম।
"মেহগনি গাছটা তখন ঝড়ের তীব্রতা পরিমাপকের কাজ করে।" লাইনটা ভালো লেগেছে।
২
খেলাড়ি, কুষিপাতা মানে কী?
৩
মাহাত্ম্য, মুহুর্মুহু, ধারণ, হয়ে গিয়েছিল- বানান আর টাইপোগুলো সম্ভবত প্রিভিউ না দেখার কারণে চোখ এড়িয়ে গেছে।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
কুশিপাতা বুঝিয়েছেন বোধহয়। কুশি পাতা মানে হলো অতি কচি পাতা যা সবে মাত্র বেরিয়েছে।
আরে, কই থেকে উদয় হলেন? কেমন আছেন?
লেখাটায় মন ভরে নি।
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
আলোকবাজি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
একইসাথে 'যখন যেটা করার - অধোবদনে করে যাওয়া' আর 'যুদ্ধ করতে শেখা' একটু পরস্পরবিরোধী হয়ে গেল না?
লেখাটা বোধহয় আরও একটু ভাল করা যেতো, তবে, থীমটা বেশ ভালো লাগলো!
ধন্যবাদ আপনাকে।
এখানে আপাতঃ দৃষ্টিতে মনে হতে পারে এটা পরস্পরবিরোধী, কিন্তু আসলে কি তাই? দেখুন গাছটি কি করছেঃ একই সাথে সে প্রবল লড়াই করছে ঝড়ের সাথে আবার যখন তার পাতাঝড়ার দিন আসে সে ঠিক ঠিক পাতা ঝড়িয়ে দিচ্ছে, ধারন করছে কুশিপাতা (কচি পাতা), পাতার বড় করছে, ফুল, ফুল থেকে ফল, ফল থেকে বীজ...এভাবে ক্রমাগত চলছেই তার কার্যক্রম। তার এই কার্যক্রম কেই বোঝাতে চেয়েছি "যখন যা করার তাই করে যাওয়া..." আর লড়াই টা হচ্ছে "ঝড়ের সাথে"।
আশাকরি বোঝাতে পারলাম।
আশপাশটা গুছিয়ে রাখি...!!
আমার খটকাটা ছিলো 'অধোবদন' শব্দটায়, যেটা শুধু কর্তব্য বা যখন যেটা করার সেটা করে যাওয়াই বোঝায় না, একধরনের (নিঃশব্দ) আনুগত্যের দিকে ইঙ্গিত করে। যে অধোবদনে কিছু করে যায়, সে-ই আবার যুদ্ধ করতে শেখায় আমার কাছে পরস্পরবিরোধী মনে হচ্ছিলো, সেকারণেই।
আপনার ব্যাখ্যার জন্য ধন্যবাদ, লিখুন আরো
হায় হায়...আমি ভীষণ দুঃখিত। এখানে আর একটা ছবি দিয়েছিলাম। বোধয় আমার আপলোডিং টা ঠিক হয়নি।
যারা পড়েছেন এবং মন্ত্যব্য করেছেন তাদের কে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভুল গুলো শুধরে নেবো। উপদেশ গুলোও।
আশরাফ মাহমুদ এই অখাদ্য আপনাদের সামনে পেশ করার জন্য ভীষণ লজ্জিত ভাই।
গাছের কাছ থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা -ভাল লেগেছে।
মিতু
রিফাত জাহান মিতু
ধন্যবাদ
নতুন মন্তব্য করুন