মেন্ডেল বদনাম হুয়ি...

কৌস্তুভ এর ছবি
লিখেছেন কৌস্তুভ (তারিখ: শুক্র, ০৭/০১/২০১১ - ১:১৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

স্যার রোনাল্ড ফিশার। প্রখ্যাত স্ট্যাটিস্টিশিয়ান। এবং সেই সঙ্গে বিখ্যাত ম্যাথেমেটিকাল/স্ট্যাটিস্টিকাল জেনেটিস্ট। দুর্ভাগ্যবশত, ইনি স্ট্যাট এবং জেনেটিক্স দুই মহলেই একটা ভ্রান্ত ধারণা বিস্তারের উৎস হিসাবেও সুপরিচিত, যে মেন্ডেল তাঁর সর্বজনবিদিত মটরগাছের গবেষণায় জালি করেছিলেন।

কিছু কিছু ভ্রান্ত ধারণা একবার চেপে বসলে আর ছাড়তে চায় না। যেমন, চীনের প্রাচীর বাস্তবে মোটেই চাঁদ থেকে দেখা যায় না। এইটাও সেরকম। আমাদের স্ট্যাট ক্লাসে যখন কাই-স্কোয়্যার শেখায় তখন বলা হয়েছিল, যে দেখ, এইটা দিয়ে দেখলেই বলা যায়, মেন্ডেলের ডেটা ‘টু গুড টু বি ট্রু’। আর জেনেটিস্টরা অনেকেই কঠোরভাবে বিশ্বাস করেন, যে মেন্ডেলের এক্সপেরিমেন্টে ঘাপলা ছিল। অনেকে তো এটাও মনে করেন, যে আসলে উনি ওই এক্সপেরিমেন্টগুলো করেনই নি। এ নিয়ে অনেক পেপারও লেখা হয়েছে। “অনেক ছোট কাই-স্কোয়্যার, নাকি মনাস্ট্রিতে হ্যাংকি-প্যাংকি”, “বিজ্ঞানের ইতিহাসে প্রধান জালিগুলো” ইত্যাদি দাগছোপ লেগেছে ওনার নামে। [তবে সেসব বোধয় শিশুনিপীড়ক পাদ্রীর তকমার থেকে অনেক ভালো, নাকি?] চলুন একটু দেখি।

(১)

১৮৬৫তে মেন্ডেল তাঁর মটরগাছ নিয়ে আর্টিকলটা লিখলেন, আট বছর গবেষণার পর। ১৮৫৩’তে ভিয়েনার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অঙ্ক, পদার্থবিদ্যা, জীববিজ্ঞান ইত্যাদি নিয়ে পড়ে আসার পর। চেক প্রজাতন্ত্রের এক ছোট শহরের অ্যাবে’তে লাগোয়া বাগান আর গ্রীনহাউসে এইসব কাজ করতেন, ধর্মকর্মের ফাঁকে। তা ওনার পেপারটা (জার্মান ভাষায় লিখিত) সেই সময়ের একটা অন্যতম সুলিখিত পেপার হিসাবে ধরা হয়। আর ওনার যত্নশীলতাও ছিল উল্লেখযোগ্য। যেমন, ওনার হিসাবনিকাশের ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করবার জন্য, উনি এটাও পরীক্ষা করে দেখে নিয়েছিলেন, যে সত্যিই একটাই মাত্র পরাগরেণু একটা ফুলকে নিষিক্ত করে কি না (কারন একাধিক হলে সব অনুপাত অন্যরকম হত, যেহেতু বাবার দিকের অবদান আর মায়ের দিকের অবদান সমান অনুপাতে হত না)।

মেন্ডেল প্রধান যে এক্সপেরিমেন্টগুলো করে তাঁর লেখায় ডেটা হিসাবে উপস্থাপিত করেছেন, সেগুলো মোনো- বা ডাই-হাইব্রিড ক্রস। সোজা ভাষায়, উনি একটা গুণ ঠিক করলেন, ধরুন বীজের রঙ – হলুদ বা সাদা। তারপর দুদল গাছ নিলেন, যাদের তফাত শুধু বীজের রঙে, অন্যান্য ধর্ম যেমন গাছের উচ্চতা ইত্যাদিতে সমান। এবার এদের পরাগমিলন ঘটিয়ে দেখলেন তাদের থেকে উৎপন্ন প্রজন্মের মধ্যে হলুদ আর সাদা বীজওয়ালা গাছের অনুপাত কত। আর এই এক্সপেরিমেন্টগুলো ডিজাইন করেছেন বেশ স্ট্যাট-সম্মত ভাবে। ওনার পদ্ধতি, ফিশার পরবর্তীতে যে ‘ডিজাইন অফ এক্সপেরিমেন্টস’ থিয়োরীর প্রচলন করেন (কৃষির উপর কাজ করতে করতে) তার মাপমতই।

সবাই জানে, উনি দুটি তত্ত্ব দিয়েছিলেন ওনার লেখায় – অর্জিত গুণাবলীর বংশগতি, আর গুণগুলির স্বাধীনভাবে বংশগতি। নিতান্ত একজন এক্সপেরিমেন্টার-এর খোলস থেকে বেরিয়ে এসে উনি এই দুটি সাধারণ তত্ত্ব দিলেন জীববিদ্যার জন্য, আর তাই ওনার কাছে ওনার এক্সপেরিমেন্টে প্রাপ্ত সংখ্যাগুলো এই থিয়োরি সপ্রমাণের সহায়কমাত্র।

(২)

মেন্ডেলের এই লেখাটা পড়েছিলেন অনেকেই, কিন্তু তেমন কেউই এটার গুরুত্ব বুঝতে পারেন নি। ১৯০০ সালে তিনজন জীববিজ্ঞানী আলাদা ভাবে এই লেখাটা লক্ষ্য করে, তাকে নিয়ে লেখালিখি করে, একে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসেন। সেই থেকে একে নিয়ে সু- কু- দুরকম আলোচনাই চলতে থাকে। নানা ধরনের সমালোচনা উঠেছিল, তার মধ্যে একটা হল, যে অনুপাত আশা করা হয়েছিল তার বড্ড কাছাকাছি ওনার পরীক্ষালব্ধ সংখ্যাগুলো। একটা অনুপাত থিয়োরীমতন হবার কথা ২:১। মানে ৬০০টা গাছে হবে ৪০০-২০০টা গাছ দুই গ্রুপে। আর পরীক্ষায় মেন্ডেল পেলেন ৩৯৯-২০১। বড্ড কাছাকাছি। ১৯০২’তে ওয়েল্ডন, যে কাই-স্কোয়ারের কথা বলেছিলাম, সেটা লাগিয়ে বললেন, ভ্যালু’টা বড্ডই ছোট, অতএব বিশ্বাসযোগ্য নয়।

ফিশার ১৯৩৬’য়ে লিখলেন মেণ্ডেলের উপর তাঁর বিখ্যাত পেপারটা। সেখানে তিনিও যে ইস্যু বার করলেন তা হল এইটাই। মজার ব্যাপার, এই কাই-স্কোয়ার পদ্ধতি ওনার আগের প্রজন্মের বিখ্যাত স্ট্যাটিস্টিশিয়ান পিয়ার্সনের আবিষ্কৃত, আর দুজনের কিন্তু ছিল রেষারেষি।

এই প্রসঙ্গে বলে রাখা উচিত, ফিশার কিন্তু মেন্ডেলকে বিকৃতির দায়ে অভিযুক্ত করেন নি। তিনি বস্তুত মেন্ডেলের কাজকে পছন্দই করতেন। আরেকটা প্রচলিত ধারণা ছিল, যে মেন্ডেলের মনোভাব আর তাঁর আবিষ্কৃত তথ্যগুলি ডারউইনের বিবর্তন-তত্ত্বের বিরোধী। ফিশার সেটারও বিরোধিতা করে দেখান। বস্তুত, দেখা যায় যে মেন্ডেলের কাছে ডারউইনের বিখ্যাত বইটির একটা কপি ছিল, এবং তার মার্জিনে তাঁর সহমতপূর্ণ নোটও পাওয়া যায়। অবশ্য মনে করা হয় যে ডারউইন মেন্ডেলের কাজের হদিস পান নি। পেলে তাঁর থিয়োরীর সমর্থনই হত বিশাল ভাবে, তাই তিনি খুশিই হতেন।

আগে যেমন বলেছি, অনেকে মনে করেন, মেন্ডেল বাস্তবে যেমন লিখেছেন সেরকমভাবে এক্সপেরিমেন্টগুলো করেন নি। ফিশার একটা ‘সম্ভাব্য রূপায়ণ’ করেন ওই আট বছরের গবেষণার, এবং বলেন যে সম্ভবত এই এই ধাপ করেছিলেন উনি এবং এই এই রকম সংখ্যা নিয়েছিলেন, এই এই রকম ফল পেয়েছিলেন। করে বলেন, যে বেনিয়ম কিছু মনে করার কোনো যুক্তি পাচ্ছি না।

এটা সত্যি, যে মেন্ডেল এই দীর্ঘ সময় ধরে প্রচুর এক্সপেরিমেন্ট করেছেন, এবং সম্ভবত তার থেকে কিছু পছন্দসই অংশ বেছে তাঁর থিয়োরীর সমর্থনে পেপারে রিপোর্ট করেন। তাঁর সেসময়ের নোট, ডায়রী ইত্যাদি গবেষণার দলিলপত্র পেলে খুবই সুবিধা হত, কিন্তু ওনার পরের পাদ্রী মেন্ডেলের প্রায় সব কাগজপত্রই নষ্ট করে দেন।

(৩)

এই ধরনের বায়োলজি-ভিত্তিক নানা আপত্তি উঠেছিল, যার অনেকগুলোই ফিশার তাঁর পেপারে তাঁর মতন করে খন্ডন করেন। তাঁর মতে, মেন্ডেল যথেষ্ট যত্ন নিয়ে, যেমন লিখেছেন তেমনভাবেই গবেষণাগুলো করেন, এবং মেন্ডেলের গবেষণা ও লেখার ধরন প্রশংসনীয়। তাঁর আপত্তি ওইটাই, যে মেন্ডেলের পাওয়া সংখ্যাগুলো যা হওয়া উচিত তার বড্ড বেশি কাছাকাছি। সেইটাই শুধু নয়, এই এক্সপেরিমেন্টে যে ভুলভ্রান্তি (এরর) আসতে পারে তা স্ট্যাস্টিস্টিক্স-অনুযায়ী হিসেব করলে থিয়োরী-মতন অনুপাতটা ২:১ থেকে বদলে ১.৮৯:১.১১ হওয়া উচিত। সেইটার কাছাকাছি হলে তাও কথা ছিল, কিন্তু তা না হয়ে যখন বাস্তবে অনুচিত কিন্তু মূল থিয়োরি-অনুসারী ২:১ এর কাছাকাছি, অতএব কিছু গণ্ডগোল নিশ্চয়ই আছে।

তবে ফিশার কিন্তু মেন্ডেলকে দায়ী করেন নি, তাঁর মতে মেন্ডেল যেমন জানতেন ২:১ হওয়া উচিত, তেমন তাঁর সহযোগীরাও হয়ত জানত, আর তাদেরই কেউ হয়ত উৎসাহী হয়ে ‘আরো সুন্দর প্রমাণ’ করার জন্য ওরকম সংখ্যা রিপোর্ট করে।

ফেয়ারব্যাঙ্কস ও রাইটিং তাঁদের ২০০১ সালের এক সুপরিচিত পেপারে এইরকম বহু প্রসঙ্গ আলোচনা করে দেখান, যে সেই সমালোচনাগুলো অনুচিত কেন। ফিশার-প্রসঙ্গে তাঁদের বক্তব্যের কয়েকটা অংশ বলি। কিন্তু তার আগে বলি, এই ২:১ অনুপাতটা কি ও কেন।

(৪)

মেন্ডেল যে ৭টা চরিত্র নিয়ে কাজ করছিলেন, তার প্রত্যেকটাতেই, একটা ধরন আরেকটার উপর ‘ডমিন্যান্ট’। তার অর্থ – যদি একটা বিশুদ্ধ লম্বা গাছ আর একটা বিশুদ্ধ বেঁটে গাছের মিলন হয়, তাহলে যে গাছ উৎপন্ন হবে (তাদের বলে মিশ্র বা হেটেরোজাইগোট, কারণ তার মধ্যে দু ধরনের জিনই একটা করে আছে) তাহলে তার মধ্যে লম্বা বেঁটে দুরকম জিন থাকা সত্ত্বেও তারা লম্বাই হবে। এক্ষেত্রে লম্বা জিনটা বেঁটের উপর শাসন বা ‘ডমিনেট’ করছে। তেমনই বীজের রঙে হলুদ সাদার উপর ডমিন্যান্ট’।

বিশুদ্ধ লম্বা ও বেঁটে গাছের মিলনে ১:২:১ অনুপাতে বিশুদ্ধ লম্বা, মিশ্র লম্বা আর বিশুদ্ধ বেঁটে পাওয়া যাবে, এই ছিল তাঁর থিয়োরি। কিন্তু উৎপন্ন লম্বা গাছেদের মধ্যে কোনটা বিশুদ্ধ আর কোনটা মিশ্র তো এমনিতে বোঝা যাবে না। তাই তাঁর থিয়োরি ছিল, এরকম লম্বা গাছের মধ্যে বিশুদ্ধ আর মিশ্রের অনুপাত ২:১ হবে।

তা সেটা প্রমাণে উনি করলেন কী? উনি এরকম প্রত্যেকটা গাছকে নিজের সঙ্গে নিষেক করালেন। তাতে বিশুদ্ধ লম্বারা কেবল লম্বা গাছেরই জন্ম দেবে। কিন্তু মিশ্র গাছের প্রজন্মের মধ্যে দুরকমই থাকবে। সেইটা দেখে বলে দেওয়া যাবে, মূলে কি ছিল।

ফিশার বললেন, এইটায় একটা মুশকিল আছে। একটা মিশ্র গাছের লম্বা আর বেঁটে অপত্য হবে ৩:১ ভাগে। কিন্তু কোনো মিশ্র গাছের থেকে হওয়া ৪টে গাছে তো ঘটনাক্রমে একটাও বেঁটে গাছ নাও হতে পারে? মেন্ডেল নিয়েছিলেন ১০টা, তাতে এমন হওয়ার সম্ভাবনা ৬%। সেক্ষেত্রে মিশ্রগুলোকে ভুল করে বিশুদ্ধ হিসাবে ধরা হয়ে যাবে। এই ক্লাসিফিকেশন-এর ‘এরর’ হওয়ার প্রোবাবিলিটি ধরলে ২:১ পাওয়ার কথা বদলে দাঁড়ায় ১.৮৯:১.১১ এ।

(৫)

ফেয়ারব্যাঙ্কস ও রাইটিং বললেন, এই হিসাবটা ঠিক নয়। ফিশার যে মনে করছেন, মেন্ডেল ওই গাছগুলোর ১০টা করে সন্ততি নিয়েছেন হিসাব কষতে, সেটা ভুল। উনি দশটা সন্ততি নিয়েছেন এর পরের স্তরে আরো একবার স্বনিষেক করিয়েছিলেন, সেই গবেষণার সময়। ধরুন বীজের রঙ, তা একটা গাছে তো আর ১০টা বীজ হয় না, হয় ৩০-৪০টা। তাহলে ভুল হবার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়। এবার সেটা থেকে দশটা নিন না।

আর যেগুলো দেখার জন্য গাছটাকে বড় করতে হয়, তাতেও উনি আসলে বড় করেছিলেন ১০’এর বেশি, ১২-১৫টা মতন, কারণ কিছু গাছ তো মরে যাবার সম্ভাবনা থাকে। সেক্ষেত্রেও ভুল হবার প্রবাবিলিটি কমে যায়। তাছাড়া, ফুলের রঙ বা বীজের রঙ প্রভাব দেখায় কাণ্ডের রঙে, অতএব তা থেকেও আগেভাগেই নির্ণয়ে সুবিধা হয়। তাই, আসলে মিশ্র চেনায় ভুল হবার সম্ভাবনা কমে দাঁড়ায়।

ফিশারের আরো একটা হিসাবেও কিছু ভুল ছিল। উনি যেখানে বলেছেন, এত ভাল ফল আসার সম্ভাবনা ২৯টা এক্সপেরিমেন্টে একবার। সেখানে ওঁরা ঠিকটা কষে বললেন, ৭টা এক্সপেরিমেন্টে একবার। এই সংখ্যাটা ‘স্ট্যাটিস্টিকালি সিগনিফিকেন্ট’ নয়, অতএব সমস্যা নেই।

আরো একটা ব্যাপার বলা যায়, যেটা সাধারণভাবে ফিশারের নির্মিত স্ট্যাট থিয়োরিরই সমস্যা। তা এই, যে ২৯টা চেষ্টায় একবারই হোক, কিন্তু মেন্ডেলের এই পরীক্ষাটাই যে সেই একবার হতে পারে না, তা কে বলবে? এর থেকে বরং বলা উচিত, এই পরীক্ষাটা ভুল হবার সম্ভাবনা কত? এই প্রোবাবিলিটিটা সরাসরি বলে দিলেই ল্যাটা চুকে যায়, কিন্তু ফিশারীয় থিয়োরি, যাকে বলে ‘ফ্রিকুয়েন্টিস্ট স্ট্যাটিস্টিক্স’, সেইটা বলতে পারে না। ফিশার যখন কলকাতার আই.এস.আই.তে এলেন, বিখ্যাত স্ট্যাটিস্টিশিয়ান দেবব্রত বসু, যিনি ‘ডি. বাসু’ নামে ‘মাস্টার অফ কাউন্টার-এক্সাম্পলস’ বলে সুবিদিত, এইসব নিয়ে বেশ খোঁচাতেন। সে এক মজার গল্প, কিন্তু অন্যদিন।

(৬)

তাহলে, সংক্ষেপে:

১. ফিশার মেন্ডেলকে জালি বলে আদৌ অভিযুক্ত করেন নি, যদিও সেটা ওনার নামেই চলে গেছে,
২. যেটাকে জালি বলে মনে হচ্ছে, যে থিয়োরি-সম্মত সংখ্যার বড্ড বেশি কাছে, সেটাও ‘স্ট্যাটিস্টিকালি সিগনিফিকেন্ট’ নয়,
৩. কারণ, যতটা বিচ্যুতি হওয়া উচিত মনে হচ্ছে, ততটা হবার কথা নয় স্ট্যাট বা বোটানি অনুযায়ী।


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

খুবই ইন্টারেস্টিং! তাহলে মেন্ডেলকে আদৌ বদনাম করা হয়নি এবং তার তত্ত্ব অটুট। হাসি

এই ধরনের আরও লেখা চাই।

কৌস্তুভ এর ছবি

ঠ্যাংকু। লেখার ইচ্ছা তো থাকেই। ডি.বসু-ফিশার এনাদের কিচ্ছাকাহিনী বেশ মজাদার।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

অনেকদিন পরে মেণ্ডেল রিভিজিটেড। মজা পেলাম। হাসি চলুক

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কৌস্তুভ এর ছবি

সেই... ছোটবেলার পড়া, যখন যৌনজনন ব্যাপারটা গাছের উপর চালিয়ে দিলেই ছোট ছেলেপিলেদের সারল্য বজায় থাকত, সেই সময়কার জিনিস, মজাই লাগে এখন...

হিমু এর ছবি

আচ্ছা এই কাই-স্কোয়্যারের ব্যাপারটা কী বলুন না।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমি ভয়ে জানতে চাই নাই!
ফার্স্ট ইয়ারে পড়সিলাম, করসিলাম ব্লা ব্লা... আব্বা-আম্মা দেখি এখনো বলে ব্লা ব্লা.. এগুলা নিয়ে পোস্টালে আমি নাই। মন খারাপ

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কৌস্তুভ এর ছবি

কাই-স্কোয়ার জিনিসটা বেশ এলিমেন্টারি, যাদেরই (ডাক্তার-মোক্তার) কাজের জন্য একটুখানিও স্ট্যাট শিখতে হয় তাদেরকেই পড়তে হয়।

ব্যাপারটা এইরকম। মনে করুন আমার দুই সেট সংখ্যা আছে। সেটা পরীক্ষায় প্রাপ্ত ভ্যালু আর থিয়োরি-অনুযায়ী ভ্যালু হতে পারে, বা দুই দল ছেলেপিলের উচ্চতাও হতে পারে। এবার মাপতে চাই এই দুই সেট সংখ্যা কতটা কাছাকাছি বা 'সিমিলার', নাকি আলাদা। তা করে খুব সোজা, দুটোর তফাত নিয়ে বর্গ করে দেয় (তাই নামে স্কোয়্যার)। এর পর একটা ভাগ করে অবশ্য, তা সে যাক।

তাই ওইভাবে প্রাপ্ত সংখ্যাটাই হল আপনার কাই-স্কোয়্যারের ভ্যালু। মূলে ওই দুটো সেট সংখ্যার মধ্যে কোনো তফাত না থাকলে [মানে, যেটুকু বিচ্যুতি সেটুকু র‍্যাণ্ডম 'এরর' থেকে এলে], মনে করুন আমার ভ্যালুটা তিন, তাহলে প্রবাবিলিটি বলে দেওয়া যায় যে কাই-স্কোয়ার যে মাপা হল সেই সংখ্যাটা তিন বা তার বেশি হবার সম্ভাবনা কত। [এই সম্ভাবনাটার একটা পোশাকি নাম আছে, পি-ভ্যালু]

কারণ হল, ওই ভ্যালুটা প্রবাবিলিটির একটা বিশেষ সূত্র অনুসারে হয়, যেটার নাম কাই-স্কোয়্যার। সেই সূত্রের একটা টেবিল থাকে, সেটার এই নম্বরটা বাঁ কলামে বসালে ডান কলামে ওই উপরে বলা প্রবাবিলিটিটা দেয়।

বুঝতেই পারছেন, দুটো সেটের মধ্যে তফাত যত বেশি হবে, এই ভ্যালুটাও তত বেশি হবে। ৪০০-২০০'র বদলে ৩৯৯-২০১ পেয়েছিলেন মেন্ডেল তাই ওই ভ্যালুটা ছোট, বড্ডই ছোট। ৩৫০-২৫০ হলে ওই ভ্যালুটা বেশ বড়সড় হয়ে যেত।

তাসনীম এর ছবি

ধন্যবাদ।

মনে পড়েছে কিছুটা। বুয়েটের থার্ড ইয়ারে স্ট্যাট ছিল, সব ভুলে গেছি এখন।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অপছন্দনীয় এর ছবি

মাথা গুলিয়ে গেলো...এমনিতেই সংখ্যা টংখ্যা ভয় পাই...

কৌস্তুভ এর ছবি

আহারে...

ফাহিম হাসান এর ছবি

আমি শিরোনাম পড়েই বলে দিতে পারি যে লেখাটা আপনার।

এই ফিশার চাচু আমাকে econometrics এ ধরা খাওয়াইছে। আবার দেখি ব্লগেও হানা দেয় ইয়ে, মানে...

মেন্ডেলের কাজ কিছুটা উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ায়। আমার বেশ ভালই লেগেছে। ব্যাপারটা খুব একটা জটিল না। ঐ সময় একটা জিনিস খুব নাড়া দেয় তা হল তাঁর চিন্তার ব্যাপ্তি এবং হাতে কলমে প্রমাণ করার মানসিকতা।

ফিশারের আরো একটা হিসাবেও কিছু ভুল ছিল। উনি যেখানে বলেছেন, এত ভাল ফল আসার সম্ভাবনা ২৯টা এক্সপেরিমেন্টে একবার। সেখানে ওঁরা ঠিকটা কষে বললেন, ৭টা এক্সপেরিমেন্টে একবার। এই সংখ্যাটা ‘স্ট্যাটিস্টিকালি সিগনিফিকেন্ট’ নয়, অতএব সমস্যা নেই।

ঠিক বুঝলাম না। নাল হাইপোথিসিস কি ছিল? কোন সংখ্যাটা ‘স্ট্যাটিস্টিকালি সিগনিফিকেন্ট' হলে সমস্যা নাই? আমার মনে হয় আপনি বোঝাতে চেয়েছেন যে ঐ সাতবারে একবার আসাটা সিগনিফিকেন্ট না - ঠিক কিনা ?

পুন: একটা ছবি হলে বড় আমোদ হত। দেঁতো হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

মেন্ডেলের কাজ কিছুটা উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ায়। আমার বেশ ভালই লেগেছে। ব্যাপারটা খুব একটা জটিল না। ঐ সময় একটা জিনিস খুব নাড়া দেয় তা হল তাঁর চিন্তার ব্যাপ্তি এবং হাতে কলমে প্রমাণ করার মানসিকতা।
ঠিক। কলেজ ফার্স্ট ইয়ার বোটানি। খুবই পছন্দের চ্যাপ্টার ছিল এটা। আর সেকেন্ড ইয়ার প্রাণিবিদ্যাতেও ছিল একটা অধ্যায়।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কৌস্তুভ এর ছবি

সেই মাধ্যমিকে মেন্ডেল পড়েছিলাম। তারপর আবার পড়লাম এখানে এসে। প্রফেসার মেসেলসন একটা কোর্স পড়াতেন, 'মেজর অ্যাডভান্সেস ইন ক্লাসিকাল অ্যান্ড মলিকিউলার জেনেটিক্স', মূলত জেনেটিক্সের ইতিহাস। সেখানেই মেন্ডেল এবং এসব বিস্তারিত ব্যাপারস্যাপার শুনেছিলাম। প্রফেসর-দাদুর জীবনের কাহিনীও খুব রঙিন, গল্প বলার মত বলতেন, কখনও সুযোগ পেলে শোনানওর ইচ্ছা রইল।

কৌস্তুভ এর ছবি

হেঁ হেঁ... কেন বলুন তো, মেন্ডেল এসেছেন বলে, না হিন্দিগান এসেছে বলে?

ফিশার ইকো'তে কি ধরা খাইয়েছেন? উনি সব জায়গাতেই স্ট্যাট নিয়ে অনেক কিছু অবদান রেখেছেন অবশ্য, তবে সব কটাই যে সুবিধার অমন নয়...

বলেছেন ঠিক, কিছু ছবি দিলে ভালো হত, কিন্তু কি দেওয়া যায় বলুন তো? ফিশার আর মেন্ডেলের বদনচিত্র?

হ্যাঁ, যেটা আসার সম্ভাবনা ১/৭ সেটা এসে গেলে খুব আশ্চর্য হবার নয়, ১/২৯ এর তুলনায়। ঠিকই ধরেছেন। তবে কি, আমি কিছুই বোঝাতে চাইনি, যা বোঝাবার সব ওই রথী-মহারথীরাই বলে রেখেছেন... দেঁতো হাসি

তাসনীম এর ছবি

আরো আসুক এরকম লেখা।

থার্ড ইয়ারে স্ট্যাটিস্টিক্সের কোর্স ছিল একটা। সব মোটামুটি ভুলে গেছি...কাই স্কোয়ার এনালাইসিসের ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিয়েন একটু হাসি এটা সম্ভবত হাইপোথিসিস টেস্টিং এর সাথে সম্পর্কিত।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কৌস্তুভ এর ছবি

ওই উপরে হিম্ভাই আর যাযাবরদির কমেন্টের জবাবে কাই-স্কোয়ারের কথা বললাম এট্টু। হ্যাঁ, হাইপোথিসিস টেস্টিং-ই করে এটা দিয়ে, কতটা তফাত দুটো সেটের মধ্যে, সেটা 'সিগনিফিকান্ট' কি না...

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ইন্টারেস্টিং লেখা হাসি, এমন লেখা আরও চাই।

কৌস্তুভ এর ছবি

ধইন্যবাদ, উৎসাহের জন্য...

সজল এর ছবি

আমি ম্যান্ডেল সাহেবের একজন ফ্যান, বিশেষত আমাদের চার ভাইবোনের মাঝে একটা বৈশিষ্ট একেবারে ৩:১ অনুপাতে আছে (কোইনসিডেন্স হওয়ার কথা যদিও)। আর তার নামে মন্দ কথা বলায় স্ট্যাটিসটিশিয়ানদের কে ধিক্কার। স্ট্যাটিস্টিক্সের ব্যাপার গুলা বেশ মজার। সিম্পসন'স প্যারাডক্স পড়ে বেশ ভালো লেগেছিল। লিখেন আরো।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কৌস্তুভ এর ছবি

যে বৈশিষ্টের কথা বলছেন বলে মনে হয়, সেইটা তো ১:১ অনুপাতে হবার কথা, নাকি? খাইছে

হায়, মেন্ডেলের পক্ষ নিতে গিয়ে আমাদের সব্বাইকে ইসে করে দিলেন? মন খারাপ

সিম্পসনস প্যারাডক্স খুব ভালো জিনিস। আমি যখনই ক্লাস পড়াই ওটার উদাহরণ নিয়ে আসি। আমি তো বলি, স্ট্যাটিসটিশিয়ানদের মন থেকেই ওইটার সংখ্যাগুলো বানিয়ে ফেলতে পারা উচিত।

আপনার নাম লিখুন এর ছবি

দারুণ দাদা। আরো আসুক। আসতেই থাকুক।
একটা বোকাসোকা কোয়েশ্চেন, একটা মিশ্র গাছের লম্বা আর বেঁটে অপত্য হবে ৩:১ ভাগে। এইটা কি মেন্ডেলের ১:২:১ অনুপাত সূত্রের করোলারি?

সাত্যকি

কৌস্তুভ এর ছবি

বিলকুল করোলারি। ঠিক ধরেছেন।

দ্রোহী এর ছবি

চমৎকার লেখা।

লেখাটা পড়ে ফ্যামিলি গাইয়ের "আইনস্টাইন বনাম ঈশ্বর" ক্লিপের কথা মনে পড়ে গেল।

কৌস্তুভ এর ছবি

থেঙ্কু মিম্বর। ক্লিপডা দেখা নেই, দেখতে হবে... ফ্যামিলি গাই দুষ্টু লোক এইটা জানি বটে...

স্পর্শ এর ছবি

মেন্ডেলের কাজ নিয়ে যে আবার জালিয়াতির অভিযোগও ছিলো তা-ই তো জানতাম না! ধুরো মিয়া, খালি খালি সন্দো ছড়ান।

এমন আরো পোস্ট চাই। চলুক


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

কৌস্তুভ এর ছবি

ওমা, আমি সন্দো ছড়ালাম কই! অ্যাঁ

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

বাহ। দারুণ হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

হেঁহেঁ...

অতিথি লেখক এর ছবি

এই বিষয়ে কিছুই জানতাম না। ভাল লিখেছেন। -রু

কৌস্তুভ এর ছবি

শুনে শান্তি পেলাম!

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

বাব্বা, সেই মাধ্যমিকের পরে মেন্ডেল রিভাইস দিলুম। কাই স্কোয়ার আমার নেক্সট পরীক্ষার বিষয়, থিয়োরিটা বেশ ইন্টারেস্টিং। বিজ্ঞান বিষয়ের আপনার অন্যান্য আলোচনাগুলোর মত এটা এন্টেনার উপর দিয়ে গেলো না তাই।

তবে ফিশার সাহেবের এই সন্দেহ ছড়ানোর তত্ত্ব জানা ছিলো না। তবে ডারউইন তত্ত্বের বিপক্ষে যে মেন্ডেল সাহেব যান, সেই বিতর্ক হালকা শুনেছিলুম বটে।

কৌস্তুভ এর ছবি

ওমা, আমার বাকি লেখাগুলো সব অ্যান্টেনার উপর দিয়ে গেছে? এমন বলতে পারলেন? অ্যাঁ

আশফাক এর ছবি

আপনার লেখার জন্য মনে মনে ওয়েট করি, ভাইয়া।
দুঃখের বিষয়, আমি আএখন আর অতিথি লেখক হিসেবে কমেন্ট করতে পারি না মন খারাপ

---আশফাক আহমেদ

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই। এরকম উৎসাহী পাঠক পেলে নিজেরও উৎসাহ লাগে।

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই। এরকম উৎসাহী পাঠক পেলে নিজেরও উৎসাহ লাগে।

কৌস্তুভ এর ছবি

একি, দুবার পোস্ট হয়ে গেল আপনা-আপনি, তাও দুরকম ভাবে!

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালোই তো খাইছে

---আশফাক আহমেদ

মুস্তাফিজ এর ছবি

আমি না বুঝেই উৎসাহ দিলাম, চালিয়ে যান।

...........................
Every Picture Tells a Story

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

মেন্ডেলিজম পড়ে মজা পেলাম। আচ্ছা, 'প্রবাবিলিটি অব এরর' এর সাথে 'ষ্টান্ডার্ড ডেভিয়েশনের' কোন সম্পর্ক আছে কি? জীনগত বংশগতি কি স্টোকাষ্টিক প্রসেস? হলে, সেটি নিয়ে একটি কবিতা লেখার ইচ্ছে করি!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ রোমেল ভাই। হ্যাঁ, 'প্রবাবিলিটি অব এরর' এর সাথে 'ষ্টান্ডার্ড ডেভিয়েশনের' সাধারণত সম্পর্ক থাকে বই কি। ষ্টান্ডার্ড ডেভিয়েশন যত বেশি, যে জিনিসটি মাপলেন তার প্রবাবিলিটি ডিস্ট্রিবিউশন-টি তত ছড়ানো। ষ্টান্ডার্ড ডেভিয়েশন শূন্য হলে ডিস্ট্রিবিউশন-টি একদমই ছড়ানো নয়, একটি বিন্দুতেই অবস্থিত। আর যত ছড়ানো ততই মাপার ভুল অর্থাৎ 'এরর' এর সম্ভাবনা বেশি। তবে এরর শব্দটির নানাস্থানে নানা অর্থ হয়, এবং সেই অনুযায়ীই 'প্রবাবিলিটি অব এরর' জিনিসটিও সংজ্ঞায়িত হয়।

'জীনগত বংশগতি' বলতে আপনি ঠিক কী সংজ্ঞায়িত করছেন তার উপরে এই উত্তরটিও নির্ভর করে। কখনও হ্যাঁ, কখনও না। হ্যাঁ-এর দুটো উদাহরণ দিই।
১. আমি মাপছি, প্রতি প্রজন্মে একজন তার গত প্রজন্মের একজনের (পিতা বা মাতা কোনো একটা) থেকে কোনো একটি জিন পেয়েছে কী না। তাহলে সেটি ০ বা ১ দিয়ে বোঝানো যায়। এই মটরগাছটি তার ফুলের রঙের জিনটি বাবার থেকে পেলে ১, মায়ের থেকে পেলে ০। তাহলে বুঝতেই পারছেন, এই প্রজন্মে কি হল তা পরের প্রজন্মকে নিয়ন্ত্রণ করে না। তাহলে এটি একটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টোকাষ্টিক প্রসেস।
২. মনে করুন দুইশ প্রজন্ম আগে ওই রঙের জিনে মিউটেশনের ফলে হলুদ রঙের ফুল হওয়া শুরু করল। এবার আপনি সেখান থেকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ট্রেস করতে লাগলেন ওই জিনটি, যে প্রত্যেক প্রজন্মে কেউ ওই বিশেষ জিনটি গত প্রজন্ম থেকে পেয়েছে কি না। পেলে ১, না পেলে ০। তাহলে এইটি একটি অন্য রকম স্টোকাষ্টিক প্রসেস, যেটি আর ইন্ডিপেন্ডেন্ট নয় - একবার ০ হয়ে গেলে আর ১ হবার উপায় নেই, যতক্ষণ না আরেকটি হলুদ জিন ধারী বংশের সাথে তার মিলন হচ্ছে।
এরকম, পরিস্থিতি বিচার করে দেখতে হবে আর কি।

অপছন্দনীয় এর ছবি

এই পোস্টের কমেন্ট আর পড়বো না :(।

যে সব আপদগুলো সবচেয়ে ঝামেলায় ফেলেছে এ পর্যন্ত সেগুলোর সবই দেখি একে একে হাজির হচ্ছে। এক মেন্ডেল উচ্চমাধ্যমিকে জ্বালিয়েছে, এখন দেখি আবার স্টকাস্টিক প্রসেস (বি এসসি ৩-১ তামা তামা বানিয়ে ছেড়েছিলো)। আরো চলতে থাকলে মনে হয় এরপর একে একে এস আর ডি, এল আর ডি, লাইট আর হেভী লেজ সব এসে জুটবে। সবেমাত্র একটা কোর্সে গোটাকয় ডিস্ট্রিবিউশন আর তাদের উল্টোপাল্টা অ্যাপ্লিকেশনের জ্বালায় নাকের পানি চোখের পানি একাকার করে রক্ষা পেয়েছি, আবার এদের খপ্পরে পড়ার কোন ইচ্ছা নেই। মন খারাপ

স্টকাস্টিক প্রসেস নিয়ে কবিতা - ভাই পাঠকের জীবনের উপরে ঝুঁকি নেয়াটা কি ঠিক হবে?

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

কান্দেন না ভাই, কান্দেন না। এদিকে পাইলে আসেন। জল-পানি খাওয়ামু।

ওডিন এর ছবি

ভাল্লাগলো! হাততালি

কৌস্তুভ এর ছবি

থেংকু ওডিন্দা, আর হেপি বাড্ডে হাসি

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বললে হয়তো হাসবেন, আমি খুব লম্বা একটা সময় পর্যন্ত শিরোনামটা পড়ছিলাম "মেন্ডেল বনাম হুয়ি"... (যেদিন পোস্ট করেন, সেদিনই পড়েছি) ভেবেছিলাম হুয়ি নামে হয়তো তাঁর সমসাময়িক অন্য কোনো বিজ্ঞানী বা গবেষক কেউ ছিলেন। অনেক অনেক পরে, হঠাৎ করে দেখি যে এটা "বনাম" না, "বদনাম"! পুরা বেকুব বনে গেলাম! হাসি

লেখাটা ভালো লেগেছে।

কৌস্তুভ এর ছবি

হা হা হা... হুয়ি শুনলে কোনো চিনে বৈজ্ঞানিক মনে হয় হাসি

তানভীর এর ছবি

ভাল্লাগলো। এমন লেখা আরো আসুক...

কৌস্তুভ এর ছবি

দেরিতে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অলসকুমার এর ছবি

বাপরে, মেন্ডেলের জন্মদিন বলে কি দুর্ধর্ষ রিসার্চ... কিন্তু স্ট্যাট নিয়ে লেখায় এত শুদ্ধ বাংলায় পড়তে গিয়ে মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল মাঝে মাঝে... তাও ফিশার কাহিনীর জন্য অপেক্ষা করে রইলাম...

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ। অশুদ্ধ বাংলাটা কী রকম চান? খাইছে

guest_writer এর ছবি

চেক প্রজাতন্ত্রের সেই ছোট শহরটির নাম ব্রেনো (BRNO)। প্রাগের পর চেকের ২য় বৃহত্তম শহর। ২০০৯-এ গিয়ে ছিলাম সেখানে কৌস্তভ দা। শুভেছা-- অণু

কৌস্তুভ এর ছবি

আমারে খালিখালি ঈর্ষিত না করলে কি আপনার চলে না? খাইছে

দাবি রইল, আগামী পোস্টটা সেই সফর নিয়েই দিতে হবে!

সুমন_তুরহান এর ছবি

সুন্দর গদ্যে রচিত জরুরি একটি লেখা। লেখককে ধন্যবাদ।

দুর্ভাগ্য যে মেন্ডেলের গবেষণার ব্যাপারে ডারউইন জানতেন না। এই দুই মহৎ ব্যক্তিত্ব সমসাময়িক হলেও দু'জনেই ছিলেন ভিন্ন দেশে। ডারউইন যদি মেন্ডেলের জিনতত্ত্ব সম্পর্কে জানতেন, তাহলে নিশ্চিত হতে পারতেন তাঁর নিজের প্রস্তাবিত 'প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তনবাদ' তত্ত্বটির শক্তি এবং সত্যতা সম্পর্কে। হয়তো উল্লসিত হতেন বংশানুক্রমিক গুণাবলী অর্জনের রহস্যময় প্রক্রিয়াটি জেনে।

কৌস্তুভ এর ছবি

ঠিক বলেছেন। এই তথ্য ব্যবহার করে উনি হয়ত চিন্তার রাজ্যে আরো খানিকদূর এগিয়েও যেতে পারতেন...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।