জিনোম সিকুয়েন্সিংয়ের দশ বছর

কৌস্তুভ এর ছবি
লিখেছেন কৌস্তুভ (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৪/০২/২০১১ - ৪:২৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দশ বছর আগে, ১৫ই ফেব্রুয়ারি ২০০১ তারিখে, নেচার পত্রিকায় প্রচুর আলোড়নের সঙ্গে বের হয়েছিল সমগ্র মানব-জিন লিপিবদ্ধ করার ঘোষণা সম্বলিত পেপারখানা। আমেরিকা সরকারের অর্থায়নে করা এই প্রকল্পের সাফল্যের ঘোষণা সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে প্রেসিডেন্ট ক্লিন্টন করে ফেলেছিলেন আরো এক বছর আগেই, ২৫য়ে জুন ২০০০’এ। সে সময় এই নিয়ে কত হইচই, কত আশা, কত স্বপ্ন। তার দশ বছর পর কতদূর এগিয়েছি আমরা?

এইসব প্রশ্ন নিয়ে বার্তালাপ করতে গতকাল আমাদের ইউনির জমকালো স্যান্ডার্স থিয়েটারে এক আলোচনা-চক্রের আয়োজন হয়েছিল, কিছু নামীদামী লোকজনদের নিয়ে। আলোচনার হোতা ছিলেন ইউনির প্রেসিডেন্ট ড্রিউ ফাউস্ট। আর অতিথিদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন বিখ্যাত জিন-গবেষক, হিউম্যান জিনোম প্রজেক্টের কর্তা এরিক ল্যান্ডার। আর ছিলেন এদেশের ফুড-অ্যান্ড-ড্রাগ দপ্তরের মাথা, মার্গারেট হামবুর্গ। আরো জনতিনেক গবেষক ছিলেন বিভিন্ন দিক থেকে। শারীরবৃত্তীয় বিজ্ঞানের উপর তরুণ ডাক্তার ভামসি মুথা, কোষভিত্তিক জীববিজ্ঞানের উপর ভিকি সাতো (ইনি কিছুদিন ওষুধের কোম্পানিও চালিয়েছেন, তাই এখন বিজনেস স্কুলেও উপদেষ্টা), আর বিজ্ঞানের ইতিহাস নিয়ে সুসান লিন্ডি

(১)

সেই গল্পে যাওয়ার আগে পেছনের গল্প একটু বলে নি। ডিএনএ’র গঠন আবিষ্কার করে বিখ্যাত হলেন যে ওয়াটসন-ক্রিক জুটি, সেই জেমস ওয়াটসন দায়িত্ব পেয়েছিলেন মার্কিন সরকারের হিউম্যান জিনোম গবেষণা কেন্দ্রের। কিন্তু কিছু বর্ণবাদী মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। আর তাঁর বস, রক্ষণশীল দলের বার্নাডিন হিলি’র সঙ্গে মতপার্থক্যও হয়। ওয়াটসনের মত ছিল, গবেষণা-প্রাপ্ত জিনের গুণাগুণ সব মানুষেরই অধিকার। আর হিলি স্থির করেন তাঁদের কেন্দ্রের গবেষণা পেটেন্ট করা হবে। ফলে ওয়াটসন সে চাকরি ছেড়ে দেন। ক্রমে ল্যান্ডার সেই দায়িত্ব পান।

সেই সময়ে তাঁর সহকর্মী ক্রেগ ভেন্টার’এর সঙ্গে এই সিকুয়েন্সিংয়ের পদ্ধতি নিয়েও দ্বিমত হয় ওয়াটসনের। ভেন্টারও ওই কেন্দ্র ছেড়ে নিজের কম্পানি খোলেন সেলেরা নামে, সেখানে নিজের প্রযুক্তিতে নিজেরই দেহকোষের জিনোম সিকুয়েন্স করা শুরু করেন। সরকারি প্রয়াসের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে তাঁরা এগোতে থাকেন, আগে করলে অর্থায়নের সুযোগও তাঁরাই আগে পাবেন। সেটা দেখে সরকারি দলও আরো তাড়াহুড়ো করে কাজ করতে থাকে, বিদেশের কিছু গবেষণাকেন্দ্রের সঙ্গেও কাজের সংযুক্তি হয়, ক্লিন্টনও জলদিই ঘোষণা করে ফেলেন। শেষে, ল্যান্ডার'দের ১ দিন পরে, ১৬ই ফেব্রুয়ারি, আরেক বিখ্যাত জার্নাল সায়েন্স’এ ভেন্টার'দের পেপার প্রকাশিত হয়।

(২)

উদ্বোধনী বক্তৃতায় সেই কথা বলে, ফাউস্ট প্রশ্ন করলেন, সেই সময় যে এত সম্ভাবনা জাগিয়েছিল এই গবেষণা, তা কতটা আশা রাখতে পেরেছে? ল্যান্ডার বললেন, কার আশার কথা বলছেন? যদি বলেন বিজ্ঞানীদের, তাহলে বলব, আশাতীত অগ্রগতি হয়েছে। জিন সিকুয়েন্সিংয়ের খরচা কমার হার মাইক্রোচিপের দাম হ্রাসের হারের থেকেও দ্রুত হয়েছে। আগে যে কাজে বহু হাজার ডলার অনুদান লাগত তা এখন ছোট গবেষণাকেন্দ্রগুলোও করতে পারছে। তাই আবিষ্কৃত রোগ-সংক্রান্ত জিনের সংখ্যা বেড়েছে বহুগুণ – সে সময় হয়ত ১০-২০টা জিনের হাত পাওয়া গেছিল রোগের পেছনে, এখন সেটা হাজারের বেশি। জিনের তুলনা করে মানবজাতির ইতিহাসের অনেক খবরও পাওয়া গেছে। আমাদের জিনের একটা অংশ যে নিয়েনডার্থালদের থেকে পাওয়া, সেই খবরও জানা গেল সম্প্রতি, তাদের জিন তালিকাভুক্ত করে।

অবশ্য সেসময় মিডিয়ায় পড়া শোরগোলের কথা যদি বলেন, সেটা ছিল কিছু অত্যুৎসাহীর কাণ্ড। লোককে আশা দেখানো হয়েছিল, এই তো, জিনের তালিকা হাতে এসে গেলেই পটাপট সমস্ত রোগের ওষুধও চলে আসবে। অনেক নেতারা হয়ত আশা করেছিলেন, সেসব ফিল-গুড ব্যাপার সামনের নির্বাচনের আগেই এসে যাবে। তাঁরা ভুলে গেছিলেন, জিনতত্ত্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় আর জটিল অংশটাই হল, নানা মানুষের জিনের বৈচিত্র।

ফাউস্ট হেসে বললেন, ছিঃ, এরকম বলছেন? সেসময় ভেবেছিলাম, আগামী দশ বছরের মধ্যেই সবাই অমরত্ব পেয়ে যাব, সেটাও আপনারা করে উঠতে পারলেন না? ল্যান্ডার বললেন, নাঃ, সে আশা আমার জীবদ্দশাতেও নেই, অতএব যে জীবনটা পেয়েছেন সেটাকেই উপভোগ করুন সবাই।

(৩)

ফাউস্ট এবার মুথা’কে বললেন, আপনি এখন তরুণ গবেষক, আর সে সময় ছিলেন ছাত্র। কী কারণে এই বিষয় আপনাকে আকর্ষিত করল? মুথা বললেন, আমি ছাত্র হিসাবে ভাবিত হই মাইটোকন্ড্রিয়া-ঘটিত রোগগুলো নিয়ে। কি ধরনের জৈবরাসায়নিক ক্রিয়াকলাপ চলে সেখানে, সেটা জানা প্রয়োজনীয় ছিল। আবার, সে সময় মানবদেহের কুড়ি হাজার প্রোটিনের মধ্যে মাত্র শ’পাঁচেকের মূলে অবস্থিত জিনগুলির খোঁজ পাওয়া গেছিল। বাকিগুলোর জিন খুঁজে বার করা, যাতে গন্ডগোলের প্রোটিনগুলো কোন জিন থেকে আসছে, সেটা বার করা যায়, এটা প্রয়োজন ছিল। তাহলে কারোর সেই রোগ হবার সম্ভাবনা কত, তা বলা যাবে, আবার সেই জিনকে দমিয়ে সেই রোগ হবার সম্ভাবনা কমানোও যেতে পারে।

মুশকিল হল, আমাদের এক-একটি দেহকোষে তেইশ জোড়া ক্রোমোজোম মিলিয়ে যে ডি.এন.এ.'র সমাহার, যাকে বলা হয় জিনোম, তা তৈরী মোট প্রায় তিনশ কোটি নিউক্লিক অ্যাসিড অণু দিয়ে। এই যে তথ্যের সুনামি, একে সঞ্চয় করে রাখা, একে অ্যানালিসিস করা, এর জন্য নতুন প্রযুক্তির আর দক্ষতার দরকার। এবং তা নিয়ে গবেষকদের যেমন শিক্ষিত করতে হবে, তেমনই দেশের মানুষদের, বিশেষ করে নেতাদের – যাঁরা এসবের অর্থায়ন এবং নীতি রূপায়ণ করবেন – তাঁদেরও শিক্ষিত করতে হবে।

(৪)

তারপর লিন্ডি’কে বললেন, বিজ্ঞানের ঐতিহাসিক হিসাবে আপনি কিছু বলবেন? লিন্ডি বললেন, বিষয়টার মধ্যে যে অনেকটা অনিশ্চয়তা আছে, এটা লোককে বোঝানো দরকার। স্বাস্থ্য একটা খুব জটিল জিনিস, জিনও। তখন যেমন প্রচার হয়েছিল, যে জিনের একটা তালিকা তৈরী হয়ে গেলেই জিন এবং স্বাস্থ্যের কর্তৃত্ব আমাদের হাতে চলে আসবে, এমন ভাবা ভুল। আমরা লোককে শিক্ষিত করতে পারি, কাউন্সেলিং করতে পারি, বিশেষ করে সন্তান ধারণের সময়। কিন্তু জিন থেরাপি নামক জিনিসটা বহুবিজ্ঞাপিত হয়েও এখনও তেমন সফল হয় নি। আমরা এখনও হবু সন্তানকে নীরোগ করে দিতে পারি না। যেটা হয়, আমরা ভ্রুণের জিন দেখে বলতে পারি, তার এই এই রোগ হবার সম্ভাবনা আছে, তখন বাবা-মা হয়ত গর্ভপাত করিয়ে নেন। যেমন সিস্টিক ফাইব্রোসিস নামের রোগটা। এর সঙ্গে যে জিনের সম্পর্ক পাওয়া গেছে, সেটা দেখে আমরা বলতে পারি। তাই এই কাউন্সেলিং শুরুর পর থেকে শিশুদের মধ্যে ওই রোগের হার প্রায় অর্ধেক হয়ে গেছে। তবে, ওই কাউন্সেলিং করা বা না করা শিশুর মধ্যে ওই রোগ বাস্তবে হবে কি না, তার বাঁচার আশা কত, ইত্যাদি বিস্তারিত বলা খুব কঠিন।

(৫)

ওষুধের উপর কাজ করেন বলে সাতো’কে অনুরোধ করা হল, জিনোম সিকোয়েন্সিং এর প্রত্যক্ষ প্রভাব ডাক্তারির উপর কতটা পড়ে, তাই নিয়ে বলতে। উনি বললেন, ব্যাপারটা খুবই ‘এম্পিরিকাল’ অর্থাৎ পরীক্ষানিরীক্ষানির্ভর। তাই ভুলভ্রান্তি-ব্যর্থতার সম্ভাবনাও অনেক। আমরা এখন বেশি জানছি; আমাদের কাছে ক্যান্সার মানে শুধুই আর অনিয়ন্ত্রিত কোষবৃদ্ধি নয়, সব ক্যান্সারের আলাদা আলাদা ব্যবহার আমরা ধরতে পারছি। এর থেকেই পার্সোনাল মেডিসিন, মানে ব্যক্তি-নির্ভর রোগপরীক্ষা ও ওষুধের ধারণা আসছে। কিন্তু ওষুধ কোম্পানিরাও এই তথ্যের সুনামি সামলে উঠতে পারে নি। আরো সময় লাগবে।

(৬)

ফুড-অ্যান্ড-ড্রাগ দপ্তরের কর্ত্রীকে তাই জিজ্ঞেস করা হল, যে আপনারাই তো সব ধরনের ওষুধ ছাড়পত্র দেবার দায়িত্বে, তা পার্সোনাল মেডিসিনের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কেমন? এথিক্স অর্থাৎ নীতির সমস্যা কিছু? বললেন, হ্যাঁ, সেটা তো থাকেই। যাঁর জিন, তাঁর তথ্য তো লাগছেই ওষুধ তৈরীতে। কিন্তু সেই তথ্য কতটা ছড়িয়ে যাচ্ছে, তাতে প্রাইভেসি রক্ষিত হচ্ছে কি না, আবার গবেষণা যারা করছে তাদের স্বার্থও রাখা হচ্ছে কি না, ব্যালেন্স করা দরকার। লোকজনকে সচেতন করা দরকার। তা ছাড়া, নতুন প্রযুক্তি এল, তা থেকে ওষুধ হল, সেটা যেমন জলদি জলদি বাজারে পৌঁছলেই ভাল, তেমনই ওষুধের কার্যকারিতা ক্ষতিকর দিক ইত্যাদি খতিয়ে দেখাও আগে প্রয়োজন। সবই ব্যালেন্স করতে হয়। তা এর মধ্যেই সত্তরেরও বেশি ওষুধ বাজারে চলে এসেছে যাতে রোগীর জিনগত তথ্য অনুযায়ী ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া আছে।

(৭)

শেষ করার আগে ল্যান্ডার বললেন, আমাদের সামগ্রিক চিত্রটা উপলব্ধি করা প্রয়োজন। তাই ডাক্তার-জীববিজ্ঞানী-গণিতবিদ-কম্পিউটার গবেষক সবাইকে নিয়েই টীম তৈরী হচ্ছে আজকাল। কম্পিউটার-বিজ্ঞানের যে ভাগ আধুনিক গণন-বিদ্যা নিয়ে, তার প্রয়োজন অনেক বেড়ে গেছে। তাতে সাতো বললেন, কিন্তু নতুন ভাবনা বা গবেষণার চিন্তা কিন্তু সমষ্টির সবার থেকে আসে না, আসে একজন ব্যক্তির মাথা থেকেই।

হামবুর্গ আবারও আনলেন এই শাখায় অনিশ্চয়তার কথা। কিছু জিনিস যে জিনগত নয়, পরিবেশগত, যেমন ধূমপান, সেটা লোকেরা প্রায়ই ভুলে যায়। তখন লিন্ডি বললেন, হ্যাঁ অনিশ্চয়তা এমনকি নীতিগতও। পরবর্তীকালে যখন ওয়াটসনকে তাঁর অবদানের পুরষ্কার হিসাবে তাঁর সমগ্র জিন সিকুয়েন্স করে দেওয়া হয়, তখন তিনি একটা বিশেষ জিনের সিকুয়েন্স প্রকাশ করতে বারণ করেন, যেটা অ্যালঝাইমার্স রোগের সঙ্গে জড়িত – যেহেতু ওই রোগের চিকিৎসা নেই, এবং ওঁর পরিবারে ওই রোগ আছে, উনি জানতে চাননি ওঁর সেটা হতে যাচ্ছে কি না। তাতে ল্যান্ডার জানালেন, কিন্তু সমস্যা হল এই, যে তার ঠিক পাশের জিনগুলো দেখেই বলে দেওয়া যায়, ওই জিনটা থাকার সম্ভাবনা আছে কি না।

লিন্ডি এই প্রসঙ্গে আরো বললেন, জিনের তথ্য নিয়ে যখন পরিবার-ভিত্তিক বিশ্লেষণ করা হয় রোগের জন্য, তখন এমনও দেখা গেছে, যাঁকে বাবা বলা হচ্ছে তিনি আসলে ওই সন্তানের পিতা নন। তখন প্রশ্ন জাগে, এই তথ্যটা কি ওদের সবাইকে জানানো হবে, নাকি গোপনই রাখা উচিত?

শেষে দর্শকদের একজন প্রশ্ন করলেন, এটা কি দুনিয়ার জন্য একটা ‘স্পুটনিক মোমেন্ট’ বলা যেতে পারে? ল্যান্ডার বললেন, আরে, স্পুটনিক চাঁদে যাওয়া বড় ঘটনা তো বটে, তবে তাতে সাধারণ মানুষের জীবনে অল্পই প্রভাব পড়েছিল। এটার প্রভাব আরো প্রত্যক্ষ, তাই এটা আরো গুরুত্বপূর্ণ একটা মুহূর্ত।


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

বাহ! দারুণ একটা সেমিনার হলো আপনাদের ওখানে। যেতে পারলে ভালো লাগতো। এতো বড় সায়েন্টিস্টরা এসেছিলেন!

জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আমি একটা ব্যানার করেছিলাম। একটা লেখা লেখা যায় কিনা তাও ভাবছিলাম। সিকোয়েন্সিং বোধহয় ফেব্রুয়ারির ১২ তারিখে শেষ হয়েছিল (তাত্ত্বিক ভাবে)। সায়েন্সে আর ন্যাচারে পেপার এসেছিল তাদের নিয়মিত প্রকাশনার দিনে।

আমাদের প্রতিটি দেহকোষে পুরো ডি.এন.এ. তৈরী প্রায় তিনশ কোটি অণু দিয়ে।

এই লাইনটি স্পষ্ট হয়নি। পাঠকের বুঝতে সমস্যা হবে বলে মনে করি। আপনার লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো। হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

হ্যাঁ, আপনার ব্যানার নজর কেড়েছিল বই কি।

বলেছেন ঠিকই, ওই অংশটা লেখার সময়ও খচখচ করছিল। কিছুটা সম্পাদনা করলাম, দেখেন এখন।

এখানে আসলে তো ভালই করতেন, সেমিনার সবার জন্যই উন্মুক্ত ছিল। কিন্তু এখন আর কী করা! ওয়েবকাস্ট হয়েছিল, রেকর্ডিং আছে, তাই দেখতে পারেন।

ashraf এর ছবি

খুব ভালো লাগলো পড়ে।
ওয়েবকাস্ট এর ঠিকানা টা কি একটু জানাবেন।
অনেক ধন‌্যবাদ।

কৌস্তুভ এর ছবি
অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এখনো কেমন জানি লাগছে! "প্রায় তিনশ কোটি নিউক্লিক অ্যাসিড অণু" মানে হচ্ছে ৩০০০ মিলিয়ন ডিএনএ অথবা আরএনএ। সেরকম হবে কি?

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

ডুপ্লি

কৌস্তুভ এর ছবি

হুমম... তাহলে কী দেওয়া যায় ওখানে, বলুন তো?

ফাহিম হাসান এর ছবি

আমার কাছে "সচলত্বের গুহ্যতত্ত্ব" এরপর এটা আপনার সেরা লেখা।

আমার এক কোর্সের প্রফেসর সেদিন একটা উদাহরণ দিচ্ছিলেন শব্দের ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়া নিয়ে। মাত্র পাঁচ পাতায় তার এসাইনমেন্ট শেষ করা নিয়ে আমরা গাঁইগুঁই করছিল্ম। তিনি মুচকি হেসে বললেন, " ওয়াটসন আর ক্রিক যদি দুই পাতায় DNA এর গঠন বলতে পারে তবে তোমাদেরও পাঁচ পাতায় এটা শেষ করতে পারা উচিত।

কৌস্তুভ এর ছবি

হায়, আমি যদি সেই ভদ্রলোকের মত বলতে পারতাম, 'আমার প্রতিটি লেখাই আমার শ্রেষ্ঠ লেখা'... দেঁতো হাসি

আর বলেন কেন, সেই ছোটবেলা থেকে ক্লাসের ইতিহাস পরীক্ষায় উত্তরের পাতা গুণে নম্বর দেওয়া দেখে অভ্যস্ত আমরা, সেই স্বভাব কি সহজে যায়?

তানভীর এর ছবি

পড়ে আরাম পেলাম খুবই। ঝরঝরে।

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

তাসনীম এর ছবি

দুর্দান্ত একটা লেখা।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কৌস্তুভ এর ছবি

কী বলি আর, কয়েকদিন আসা হচ্ছে না, আপনার এবং আপনাদের ভালো ভালো লেখাগুলোও পড়া হচ্ছে না...

অতিথি লেখক এর ছবি

পেছনের গল্প দিয়ে ভালো করেছেন। লেখাটার খুটিনাটি সব বুঝেছি সেই দাবী করবো না, কিন্তু পড়তে ভালো লেগেছে। -রু

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

সেসময় ভেবেছিলাম, আগামী দশ বছরের মধ্যেই সবাই অমরত্ব পেয়ে যাব, সেটাও আপনারা করে উঠতে পারলেন না?

আহা!
যখন উঠিল জাগি সোনামাখা প্রাত
চিরদিন বাঁচিবার হলো তাঁর সাধ

এত ভালো লিখেছেন কেন? কোন কথা হবে না।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

কৌস্তুভ এর ছবি

আমি ভাবলাম এরশাদাদুর কথা বলছেন বুঝি খাইছে

লইজ্জা লাগে

 শুভাশীষ মনি এর ছবি

ক্রেগ ভেন্টারের সেলেনা গোটা বিষয়টাকেই বাণিজ্যিক করে ফেলতে চেয়েছিল intellectual property protection এর দোহাই দিয়ে, বিল ক্লিনটন সাহেবের জোরালো ভূমিকার কারণেই সমস্ত তথ্যাদির উপর সর্বসাধারণের অধিকার প্রতিষ্টিত হয়।এই ঘোষণার ফলে সেলেনার শেয়ার দর হুড়মুড়িয়ে পড়ে যায়,প্রায় পষ্ণাশ বিলিয়ন ডলার লস করে কোম্পানিটি মাত্র দুদিনে..
ভালো লাগল লেখাটি,তথ্যবহুল,ঝরঝরে, আরোও লিখুন,ধন্যবাদ আপনাকে...

কৌস্তুভ এর ছবি

বিষয়টা একেকজন একেকরকম ভাবে দেখাতে চান। যদি উইকির আর্টিকলটা দেখেন, ওটায় সেলেরার সম্পর্কে বেশ ভাল ভাল কথা লেখা। যে উনি সরকারি ব্যুরোক্রাসির উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে এটা করেছেন, জনস্বার্থেই, ইত্যাদি। অন্যরা বলে উনি নিজেই তাড়াতাড়ি করে পেটেন্ট নেবার তালে ছিলেন। এই বিতর্কটা নিয়ে আপনিই একটা লেখা দিন না।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

microbes এর ছবি

পড়ে ভাল লাগল। ধন্যবাদ

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনি কী ধরনের মাইক্রোব? উপকারী না ক্ষতিকর? আসুন আপনাকে সিকুয়েন্স করে জেনে নিই... খাইছে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চমৎকার এই পোস্টটি পড়ে মন্তব্য করা হয়নি। ভালো লাগা জানালাম।

কৌস্তুভ এর ছবি

থেঙ্কু মুর্শেদ ভাই।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লিংক ধরে নেচারে একবার উকি দিয়েই সটকে পড়লাম। বাপরে, বাংলাই সই।
অনিশ্চয়তা বা পরিবেশগত প্রভাবও কি শেষপর্যন্ত জিনের উপরই নির্ভরশীল নয়? কোন ধরনের বিহেভিয়ার কোড আমি একসেপ্ট করবো, আর কোনটা করবো না, সেটা তো আমার জিনই বলে দেবে, নাকি?

আমার একটা অবজারভেশন বলি। প্রায়ই দেখা যায় যে, আমি আর আমার বোন একই সময়ে একই ধরনের চিন্তা করছি, মন্তব্য করছি, রি-অ্যাক্ট করছি। আপনার স্ট্যাট কি বলে? কাকতাল? নাকি জিনের কারসাজি?
জিনের কারিকুরি হলে তো চিন্তার বিষয়। তার মানে কি আমি রোবট? এই যে আপনাকে এই মুহূর্তে লিখছি -এটাও কি প্রিডিটারমাইন্ড? জিন-প্রোগ্রামড?

-------------
সাত্যকি

-------------

কৌস্তুভ এর ছবি

পরিবেশগত প্রভাব অনেক সময়েই জিনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। এটা ওই 'nature vs. nurture' ব্যাপার। (এই নেচার কিন্তু জার্নাল নেচার নয় খাইছে )

কী পরিবেশে একজন বেড়ে উঠছে সেটা নির্ভর করে অনেকাংশে তার পরিবার, এবং কিছুটা সমাজ, স্কুল ইত্যাদির উপর। এই যেমন ধরুন, আমেরিকার মিডওয়েস্ট বা হার্টল্যান্ডে বহু মানুষ এখনও বিবর্তনে বিশ্বাস করে না, তারা বাইবেলের সৃষ্টিতত্ত্বের গল্পে বিশ্বাসী। এরকম একজনের সাথে সাম্প্রতিক আলাপ নিয়েই তো আগের লেখাটা দিয়েছিলাম। তা এরা কি আর নিউইয়র্ক-বাসীদের চেয়ে জিনগতভাবে খুব আলাদা? তা তো নয়, এদের প্রচণ্ড-ধার্মিক বাবা-মা-চাচা-খুড়ো-ইত্যাদি এবং চারিপাশের সমাজ, ক্যাথলিক স্কুল ইত্যাদিই প্রধানত দায়ী।

আপনি আর আপনার বোন যে একই ধরনের ব্যবহার করছেন তার কারণ হয়ত অনেকটাই এই, যে দুজনে একই পরিবারে, একই পরিবেশে বড় হয়েছেন। জিনগত ব্যাপারও তার সঙ্গে আছে অবশ্যই। হয়ত এরকম, যে জিনগত কারণে (ধরুন, হরমোনের আধিক্যের জন্য) দুজনেই বদরাগী।

এইগুলো নিয়ে বিস্তারিত বোঝা যায় যখন জিন আর পরিবেশ দুটো আলাদা করে ফেলা যায়। যেমন ধরুন, দত্তক নেওয়া পরিবারে। টুইন স্টাডিজ অর্থাৎ যমজ সন্তানকে নিয়ে গবেষণা খুব প্রচলিত, যেখানে ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠা দুই যমজকে (ফলে তারা জিনগত ভাবে সমান) বিশ্লেষণ করে দেখা হয়, তাদের কতটা কী সমান আর কতটা আলাদা।

এখানে একটা ব্যাপার আছে কিন্তু, যারে কয় এপি-জেনেটিক্স। এপি মানে উপরি। আমাদের ডিএনএ'র সঙ্গে আরো কিছু অণু জুড়ে থাকে, যেগুলো যমজদের ক্ষেত্রে আলাদা হয়। সেখান থেকেও কিছুটা পার্থক্য আসে।

মোদ্দা কথা, আপনি রোবট নন কিছুতেই। ওই উপমাটা একটা বিশেষ ক্ষেত্রে ডকিন্স ব্যবহার করেছিলেন, তারপর থেকে সৃষ্টিতত্ত্ববাদীরা সব জায়গাতেই ওই রোবটের কথা এনে লোককে বিভ্রান্ত করে রাখতে চায়, যেন জিনতত্ত্ব মানেই রোবটবাদ।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমি জ্বীন আর ইনসান ছাড়া আর কিছু বুঝি না মন খারাপ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কৌস্তুভ এর ছবি

সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই... অতএব ইনসান বুঝলেই হল হাসি

তুলিরেখা এর ছবি

আহা আপনার লেখাটি ভারী চমৎকার। কিন্তু রেকর্ডিংটা খুললো না, বলছে প্রাইভেট! মন খারাপ
এদিকে আমি ফাউস্ট শুনেই আপ্লুত, মনে পড়ে যাচ্ছে গেটেদাদুকে। ইনিও কি দাবা খেলেন? চিন্তিত

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

কৌস্তুভ এর ছবি

ইউটিউব ভিডিও তো, এমন তো হবার কথা নয়... ডাইরেক্ট লিঙ্ক দিলাম - http://www.youtube.com/watch?v=UqWuLQJC5dY
(৭ মিনিট পর থেকে শুরু)
গ্যেটের ফাউস্ট শুনলেই আবার আমার মনে পড়ে জুয়েল সং এবং বিয়াঙ্কা কাস্তাফিওর দেঁতো হাসি
ইনি দাবা খেলেন কিনা কইতে পারি না। প্রোফাইল পেজে কিছু লেখে নাই। তবে হার্ভার্ড স্কোয়ার কিন্তু দাবা খেলার বোর্ডগুলোর জন্য বিখ্যাত।

তুলিরেখা এর ছবি

আরে জীও মণিরত্নম। এবারে খুলছে। হাসি
বংশী বাবুর বক্তব্যে আছি এখন (বেশ ভালো লাগছে ছেলেটাকে। হাসি )। অংক টংক শিখে সে ডাক্তারি করতে ঢুকেছিলো ভেবেই অবাক হয়ে যাচ্ছি। ইনি কোনদিকের মানুষ? ভারতীয় বা শ্রীলংকান বংশীয়?
এনার বাবামা নির্ঘাত বলেছিলো " ওরে ইকোনোমির যা অবস্থা দেখছি, তুই অঙ্ক করে কোন কচুটা করবি? শীগগীর এই তালে ঢুকে যা ডাক্তারিতে, ঠিকমতো ঝোপ বুঝে কোপ মারতে পারলে পাথরে পাঁচ কিল। " হাসি

আমার মনে পড়ছে সেই সময়ের কথা, সাদাসিধে চেহারার এক বেচারা কলকাতার ছেলে, চাপ্টি করে চুলে তেল দেওয়া, সে তখন সদ্য ডাক্তারি পাশ করে জিয়ারি ভার্বাল প্র্যাকটিস করছে। এমন সময় হিউম্যান জিনোমের বোমা ফাটলো আর সে বেচারা কেঁদে ভাসালো, নাকি ভবিষ্যতে করার মতো কিছু রইলো না, সবই নাকি হয়ে গেল। তার করার জন্য কোনো আবিষ্কার আর বাকী রইলো না। যত আমরা বোঝাই ওরে মানুষের রোগব্যাধি যতদিন আছে সেসব দু:খ দূর না হওয়া পর্যন্ত কাজ হাতে থাকবেই, কিন্তু কে শোনে কার কথা!

আর একটা কথা কই, ফাউস্ট কে বেশ লাগলো, বেশ একটা রাশভারী বড়পিসিমাগোছের। হাসি
গ্যেটে তো ভাবতেই পাত্তেন না, মহিলা ফাউস্ট মেফিস্টোর সাথে দাবা খেলছে। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

কৌস্তুভ এর ছবি

কোন দেশীয় সেটা তো ঠিক বুঝতে পারছি না, ওনার প্রোফাইল পেজে কিছু বলা নেই। তবে মনে হয় এদেশেই বড় হয়েছেন, বাবা-মা হয়ত ইমিগ্রান্ট।

তুলিদি, ভালো ছেলের কি অভাব আছে? এই সচলেই তো... তাদের সঙ্গে মিলমতন কিছু ভালো মেয়ের ব্যবস্থা করে দিন, তবেই না? লইজ্জা লাগে

তুলিরেখা এর ছবি

আহা হিউম্যান জিনোম প্রোজেক্টে তো তাও থাকা উচিত ছিলো। কোথায় ভালো ভালো একেবারে ম্যাচ করা জিনসেট আছে, বেছে বেছে দেখে দেখে সেসব ঘটিয়ে তোলার জন্য ঘটক লাগানো। হাসি
চাকরিও বাড়তো, অর্থনীতিও চেগে উঠতো, মানবজাতির উন্নতিও হতো। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

কুটুমবাড়ি [অতিথি] এর ছবি

বানানটা কি সিকোয়েন্সিং (sequencing) হবে না? যেমন : question=কোয়েশ্চেন, request=রিকোয়েস্ট ইত্যাদি।

লেখার কথা আর কী বলি! অত্যুত্তম হয়েছে। চালিয়ে যান। হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ, ধন্যবাদ। হাসি

কি জানি। আমার কানে তো কু-ই লাগে। dictionary.com বলছে sequence এর উচ্চারণ see-kwuhns আর request এর ri-kwest...

দ্রোহী এর ছবি

ferioala33 এর ছবি

"জিনের তথ্য নিয়ে যখন পরিবার-ভিত্তিক বিশ্লেষণ করা হয় রোগের জন্য, তখন এমনও দেখা গেছে, যাঁকে বাবা বলা হচ্ছে তিনি আসলে ওই সন্তানের পিতা নন। তখন প্রশ্ন জাগে, এই তথ্যটা কি ওদের সবাইকে জানানো হবে, নাকি গোপনই রাখা উচিত?"

চিন্তার কথা!

লেখা ভাল লাগলো।

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ। এথিক্স বেশ জটিলই ব্যাপার...

দ্রোহী এর ছবি
কৌস্তুভ এর ছবি

হাহা... ওইটা সত্যিই নেচার কি সায়েন্সে প্রকাশ করার মত আর্টিকল। আপনার কোনো লিঙ্কেই আগে দেখেছিলাম সম্ভবত।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

সৃষ্টিছাড়া এর ছবি

চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।