আজই দুপুরে আধখানা দুনিয়া পাড়ি দিয়ে আমার হাতে এসে পৌঁছেছে একখানি চকচকে রঙিন মলাটওয়ালা চল্লিশপাতার বই। বইখানি অনেকদিন থেকেই আমার কড়া নজরে আছে, কারণ এই বইটি হল দুইজন খুবখ্রাপ সচলের এক অশুভ আঁতাঁতের ফলশ্রুতি। আর সবচেয়ে নিন্দনীয় ব্যাপার এই যে, যখন আমি ছোট্টটি ছিলাম সেইফাঁকে এঁরা দুইজন কালা শব্দটির কপিরাইট দখলিস্বত্ত্ব করে ফেলেছেন; কালা শব্দটি আমার সঙ্গেই একাত্মভাবে জড়িত (তার প্রচুর সাক্ষ্য দিতে পারবেন বুনোদি বা যাযাদি), ওঁরা যদি আমার চেয়েও বেশি কালা হন তাহলে ক্লাইভ লয়েডও অ্যালবিনো, হুঁ।
অতএব বইটির তীব্র সমালোচনার মধ্যে দিয়ে সব ষড়যন্ত্র উদ্ঘাটন করে দেওয়া হবে, পাঠক সঙ্গে থাকুন।
*************************************************
বইটা হাতে নিয়ে প্রথম পাতা উল্টেই কী দেখলাম? দেখলাম অ্যাসটেরিক্স-স্টাইলে মূল চরিত্রগুলিতে পরিচিত করে দেওয়া হচ্ছে। হুম। তারপর গল্প শুরু হচ্ছে কী দিয়ে? একটি চমৎকার ড্রীম সিকুয়েন্স দিয়ে। এবং সেটি হঠাৎ ছিন্ন হচ্ছে কীভাবে? নিশ্চয়ই হাড়বজ্জাত বদরু খাঁর কোনো অপকম্মের সংবাদ ধেয়ে আসাতে। এখন কার স্বপ্ন, কী স্বপ্ন, কিসের বজ্জাতি ইত্যাদি এত কথা আমি বলতে রাজি নই।
আর বইটার শেষে গিয়ে কী বুঝলাম? না, দুষ্টু লোকে বলে, সুজন্দা নাকি নারীচরিত্র আঁকতে তেমন ইয়ে বোধ করেন না। এই অভিযোগের সত্যতা বিচার করবেন পাঠক, এই তথ্য থেকে যে পুরো বইটির একটিমাত্র ফ্রেম ছাড়া কোথাওই লাস্যময়ী হাস্যময়ী কেন কোনো মহিলারই আস্য দেখতে পাওয়া যায় না। অতব বইতে ‘লোচনা’ খুঁজতে গেলে হতাশ হবেন। লুল্পুরুষ পাঠকেরা দূরেই থাকুন।
আচ্ছা, আচ্ছা, ঠিকাছে। মাঝের অতগুলো পাতায় কী হল? হল, বইটির যা শিরোনাম, তাই – ‘জাদুঘরে চুরি’। কে করেছে? বদ্রুমেজর, অবশ্যই। কী চুরি? কমু না। যান, নিজে পড়ুন গিয়ে।
*************************************************
ঠিক আছে, বইয়ের একটা সুন্দর সামারি তো দিয়ে দিলাম। এবার স্টাইল নিয়ে কিছু জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করা যাক। আগে আসি লেখার স্টাইলে। কেমন লেগেছে? ভালই। তা ঝাকানাকা এদ্দিন ধরে পড়ে আসছি পোস্ট হিসাবে, সেগুলোও তো ভালই লাগত। তফাত কিছু? হ্যাঁ, সে তো হবেই। লেখায় যেমন টানটান রহস্য থাকত সেটা আছে? আছে। পোস্ট পড়ার সময়ও আপনার কানের কাছে সাসপেন্স মিউজিক বাজত না, কমিকবইতেও তাই। পাঠক নিজের দায়িত্বে রহস্য বুঝে নিন। থ্রিল? আছে। মাঝে জাদুঘরে অনেকক্ষণ এটাওটা পরিদর্শন জেরা-জিজ্ঞাসা করার সময় সেটা খানিক কমে গেছে, তাও। ক্লাইম্যাক্সটা একটু সংক্ষিপ্ত, অ্যাকশন আরেকটু জমজমাট হলে আরো জমত।
আর কমিক? ওইটাই তো গল্পগুলোর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল? তাও আছে। কমিক ডায়লগগুলো ভালোমতনই আছে। “উত্তমরূপে মাধ্যমিক চিকিৎসা”র মত সুখাদ্য মাঝেসাঝেই মিলছে। বন্ধ দরজার এপাশ থেকে ঝাকানাকা ওইদিকে কিংকু চৌধুরীই কিনা পরখ করে নেওয়ার জন্য হাতে বন্দুক নিয়ে প্রশ্ন করছেন, “তার আগে বলুন দেখি, গত পরশু আপনাকে আমার বাসায় বিকেলে কেস নিয়ে আলোচনার পর কী নাস্তা খেতে দিয়েছিলাম?” উত্তর আসে, “অল্প একটু মুড়ি স্যার! সাথে শসা। আর চা। খেয়ে পেট ভরে নাই!” তবে সব কমিক তো আর ডায়লগে নাই, সেগুলোর কী হবে? সে ভিজুয়াল কমিকও মোটামুটি আছে বইকি। ওই উত্তরটার পরেই ঝাকানাকার যা চেহারা হয়েছিল! বা স্বপ্নের দৃশ্যগুলো... তবে হিমুদার অত্যন্তসরস কিছু বর্ণনা, যেমন “এরপর ঘন্টাখানেক ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন কবিদের আড্ডা পর্যবেক্ষণ করতে করতে দুই গোয়েন্দা ক্লান্ত হয়ে পড়লেন। এক জটলায় মাহমুদ খাদি সবাইকে চা-ডালপুরি খাইয়ে উদাত্ত কণ্ঠে আবৃত্তি করছেন শৈশবের স্বরচিত কবিতা, অন্য কোণায় কবি রাসেল ডটডটডট মৃদু কণ্ঠে কবি বৃদ্ধ শাইসুর কবিতার চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার করছেন, আরেক জটলায় মহিলা কবি ধনুপমা ভৈরবী ফিতা কেটে উদ্বোধন করছেন কবিতার বই "পিয়াল তরুর কোলে", আরেক কোণায় কবি হলুদ ঘোগ হাসিমুখে সবুজ ঘুড়া আর নীল ডাগদারের গল্প শোনাচ্ছেন এক ছিপছিপে বিশালবক্ষা তরুণীকে, তো আরেক প্রান্তে পুরনো দিনের বাঘা বাঘা কবিরা স্মৃতিচারণ করছেন পুরনো বইমেলার কথা। আর চতুর্দিকে বনবন পনপন করে ঘুরছে টেলিভিশন ক্যামেরা আর রেডিওর মাইক্রোফোন।” পড়তে যেমন আনন্দ পেয়ে থাকি, তার কিছু কিছু অভাব বোধ করেছি। অ্যাসটেরিক্সে যেমন মাঝেমধ্যেই কিছু সরস ন্যারেশন যোগ করে দেওয়া হয়, তেমন কিছুর স্বাদ পেলে ভাল হত হয়ত।
*************************************************
আচ্ছা, আঁকা? সুজন্দা আমায় ভ্যাঙ্কুভারে ভরপেট মুরগি’কারি খাইয়েছিলেন বলেই তাঁর সমালোচনা করব না, তাই হয় নাকি? বইয়ের আঁকার মূল স্টাইলটা বেশ ছিমছাম, ‘ক্লিন’, পরিষ্কার, সুপাঠ্য। একটু বেশিই ছিমছাম হয়ত। সুজন্দার সচলে পোস্টিত আঁকাগুলোতে যেমন ডিটেলিং দেখা যায়, তার তুলনায় কমই। এটা হয়ত একটা কারণ যে ছোট ছোট ফ্রেমে কাজ করতে হওয়ায় ডিটেল কম রাখতে চেয়েছেন। তবে এই নিয়ে গাঁইগুঁই করার কিছু নেই। নিচে টিনটিনের তিন যুগের তিন ধরনের ইলাস্ট্রেশনের নমুনা দিলাম। একদম প্রথম বই সোভিয়েত দেশে টিনটিন’এর, মাঝে সদ্য রঙিন হওয়া সিরিজের থেকে ফারাওয়ের চুরুট (বইটা পরে আবার নতুন করে আঁকা হয় আধুনিক স্টাইলে), আর আধুনিক স্টাইলের উদাহরণ ক্যালকুলাসের কাণ্ড –
এই বইটা প্রথম বই হিসাবে সোভিয়েত’এর থেকে অনেক অনেক গুণ ভালো হয়েছে, ৫-১০টা বই পরে না জানি কোথায় উঠে যাবে। তবে পরের দিকে হার্জের মাইনে করা আর্টিস্টের দল থাকত, এখন থেকে আমাদের অতদূর ভাবনাচিন্তা করার প্রয়োজন নেই।
তাও কয়েকটা অনুযোগ। এক, প্রায় পুরোটাই ঘরের মধ্যে শুটিং। বদ্ধ পরিবেশে একনাগাড়ে শুটিং যে কলাকুশলীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর, এটা মেনে ওঁরা শুনছি পরের বইটা সমুদ্রের মধ্যে এক দ্বীপে ফেলেছেন। আশা করি সেখানে কিছু সুন্দরী বিকিনিবসনাও এনে এই বইয়ের শুরুর অভিযোগটা মিটিয়ে দেবেন। দুই, পারিপার্শ্বিকের ডিটেলিং-এর অভাবে মাঝে মাঝে ন্যাড়া ন্যাড়া লাগে – লং শট (যদিও বেশি নেই) গুলোয় সেটা বেশি করে চোখে লাগে। বড়লোকের বৈঠকখানাও অত সাদামাটা... টিনটিনের তৃতীয় ফ্রেমটার মত অত জটিল না হলেও, আরেকটু অলঙ্করণ বেশি হলে খুশি হতাম। তিন, একাধিক ফ্রেমে একজন লোকের একই ভঙ্গি বসিয়ে দেওয়া হলে (এটা প্রিভিউ পাতাটাতেও দেখা যায়) কেমন কেমন লাগে। যাহোক, এসব নিয়ে বেশি তাংফাং করতে চাই না, সুজন্দা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পরেরটা অনেক জমকালো হবে।
*************************************************
গ্রাফিক স্টাইলিং এ টিনটিনেরও ধারা ক্লিন-এর দিকেই। হার্জ নাকি জটিল শেড ইত্যাদি, ত্রিমাত্রিক এফেক্ট আনার চেষ্টা, এসব পছন্দ করতেন না। সেদিকে অ্যাসটেরিক্স অনেক অলঙ্করণবহুল। ওঁরা কিছু চমৎকার মজার মজার এফেক্ট দিতেন, সেগুলোও আমার বড় ভাল লাগে। সেইরকম কিছু এখানেও আস্তে আস্তে আনলে মন্দ হয় না। একটা উদাহরণ দিলাম, দুই মহিলার শীতল সম্পর্ক বোঝাতে –
কিন্তু বারবার অ্যাসটেরিক্স-টিনটিন আনছি কেন? কারণ আমার মনে হয়, প্রথম বই হিসাবে এটা যথেষ্টই ভাল এবং ওগুলোর সাপেক্ষে কিছুই নিকৃষ্ট না, যদিও জনপ্রিয়তা বা বিক্রিতে ওইগুলোর সঙ্গে এখনই তুলনা টানার কোনো অর্থ হয় না।
শুনছি বাংলাদেশে নাকি এটাই প্রথম রঙিন রহস্য-রোমাঞ্চ কমিক। তা বাংলাদেশের কমিকের সাথে যেহেতু আমার বেশি পরিচয় নেই, আমি কলকাতার কিছু কমিকের কথাই আনি। নারায়ণ দেবনাথের হাঁদাভোঁদা-বাঁটুল-নন্টেফন্টের স্টাইলের সঙ্গে আমি এই বইটার কিছুটা মিল পাই। আঁকার ছিমছাম ভাব, শহুরে, সাধারণ পরিবেশ, মজার অংশ ইত্যাদি। তবে সেগুলো রঙিন নয়, এত বড়ও নয়। সম্প্রতি বরং কিছু সিরিজ বেরোচ্ছে, যেমন ফেলুদা বা শঙ্কু সিরিজ। সেগুলোতে ডিটেলের কাজ অনেক থাকলেও, কমিক্স হিসাবে সেগুলো তেমন জুতের হয় না। এই নিয়ে সুজন্দার সাথে মাঝে আলোচনা হয়েছিল। কেন, তা একটা স্যাম্পেল দেখলেও বুঝবেন –
দ্বিতীয় সিরিজটার সঙ্গে বরং ঝাকানাকার খানিক খানিক মিল পেলাম। সৌরভ চক্রবর্তী বলে একজন শিবরামের বই নিয়ে কমিক্স করছেন, সেইটার ছিমছাম আঁকার স্টাইল, পরিমিত রঙের ব্যবহার, হাসির গল্প ইত্যাদি মিলিয়ে। সেটারও স্যাম্পেল দিলাম –
সেইদিন সুজন্দা আক্ষেপ করছিলেন, ছাপার মান খুব ভাল হয় নাই, এই নিয়ে। কিন্তু যদিও অল্প কয়েক কয়েক জায়গায় রেখা ঝাপসা বা বেশি গাঢ়, কখনও রঙ বা লেখা খানিক সরে গেছে, কিন্তু সেগুলো পাঠক-মনোযোগ কেড়ে নেবার মত গুরুত্বপূর্ণ কিছু লাগেনি আমার কাছে।
সব মিলিয়ে কি দাঁড়াল? আমার তো ভালই লেগেছে। প্রথম প্রয়াস, এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগ ধরলে বেশই ভাল। পরের বারের জন্য চাহিদা রইল, আরেকটু জমকালো হতে হবে, আর গল্পের পরতে পরতে যেমন মজা ছড়িয়ে থাকত সেটা আরেকটু দিতে হবে। আমার সবচেয়ে বড় অভিযোগ, আমার বইটির উপর এই দুই দুষ্টু কালাতো ভাই অটোগ্রাফ করে দেয় নাই। আচ্ছা, কালাকোম্পানীর কালারফুল কমিক্স নিয়ে যথেষ্ট নিন্দামন্দ না করতে পেরে এই সুগভীর কালোচনা’র আজ তাহলে এখানেই ইতি।
মন্তব্য
দুধের স্বাদ গরম পানিতে......
কি করতে যে এই চুলায় এলাম, যাদেরকে একখানা কিনতে বলেছিলাম তারা মহা ব্যস্ত মানুষ, বইমেলা পর্যন্ত যেতে যেতে স্টল নাম্বার খেয়ে ফেলেছে, ফোন করতে গিয়ে আবিষ্কার করেছে ফোন বাসায় রয়ে গেছে এবং তারপর যথারীতি সাহায্যকেন্দ্রে জিজ্ঞেস করে জেনেছে ওই জাতীয় কোনকিছু বইমেলায় নেই (অস্বাভাবিক নয়, সাহায্যকারীরা যদি বলতে পারে ওটা বইমেলা, স্বখেতউৎপাদিতগাজরওমূলোপ্রদর্শনী নয় তাহলেই অনেক)।
কিন্তু আপনিতো মহা পাপিষ্ঠ, নিজে খানিকটা সৌভাগ্যের অধিকারী বলে দুর্ভাগাদের জ্বালা বাড়িয়ে মজা লুটবেন এটা কি রকম ব্যাপার?
পোস্টে তবে উল্টোদিকে, স্যাডিজমের ভিকটিম হিসেবে আইনের সাহায্য নিতে পারলে নিতাম
আহারে, বেচারা! বস্টন ঘুরে যাবার ফাঁকে একবার পড়ে যাবেন খন।
আলোচনা দস্তুরমত কেলে-কুচ্ছিত হয়েছে!
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
সহমত
...........................
Every Picture Tells a Story
সব তো বলেই দিলেন মশাই! তাই নতুন করে বলার আর কিছু নাই, শুধু বলি, ভালো হয়েছে কালোচনা।
কোথায় সব বললুম! এখনও রহস্য কত বাকি...
এইডা কী হইল, খেলুম না।
এমনিই বইটা পড়তে পারছি না বলে মন-মেজাজ ভালো না, সেটাকে আপনি এক্কেবারে খারাপই বানিয়ে ছাড়লেন। আপনি মানুষটা ভালা না দেখা যায়।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
কোনো সহৃদয় পাঠক বইটাকে স্ক্যান করে ফ্যালে না কেন?
কিলামু ধৈরা!!!
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
পাগল্দা, বই আছে আমার কাছে,ফোন্দিয়েন।
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
কী শুনাইলেন সুজন্দা, খুশিতে ডুগডুগি বাজাইতে ইচ্ছা করছে। কবে ফোন দিমু খালি কন?
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
এদেখি পুরাই কমিক সাহিত্যের তুলনামূলক আলোচনা
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।
পিএইচডি করছি কিনা...
ভাই আপনি তো জটিল রিভিউ দিলেন... কালোচনা পুরাই
ধুরমিয়া, এভাবে কেউ লেখে? এখন তো বইটা আনাতে হইবো।
তা আনানই নাহয়!
বইটা এখন ঢাকায় কোন কোন দোকানে পাওয়া যাবে? নিউমার্কেটে খোঁজ নিয়ে পাওয়া যায় নি, যে দোকানে ছিল তাদের স্টক ফুরিয়ে গেছে। পাওয়া গেলে আগামীকাল বিকেলে হাতে চলে আসত
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
সুজন্দারে জিগান!
কালাবাহিনি জানিয়েছে, ঢাকা নিউমার্কেটের "cooperative book society" তে পাওয়া যাবে।
আর রাজশাহীতে পাবেন, রাজশাহী নিউমার্কেটের "বইপত্র" তে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
কালোচনায় (গুড়)
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
ভালইতো
কী ভালো, বইখানা না রিভিউখানা?
আর অতিথি লেখকের নাম কই?
প্রাথমিক চিকিৎসায় কিছুই হইবে বলিয়া মনে হয় না, এই ঝাকানাকালোচককে উত্তমরূপে মাধ্যমিক চিকিৎসা দেওয়া হউক।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কী কাণ্ড! কিবা অপরাধ মোর?
আহা হা হা আহা আহা, অপরাধ কেন? চিকিৎসা প্রয়োজন আরোগ্যলাভের জন্য। দ্রুত রোগমুক্ত হইয়া
দরাজহস্তে বই বিলাইবেন এই আশায়।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আলোচনা জটিল হয়েছে।
কালা এণ্ড কোং এর কাছে কথা প্রসঙ্গে আমার দুটো মতামত:
১. রাদুগা প্রকাশনীর স্মৃতিকাতর আমাদের জন্য যদি বইয়ের কাগজটি পছন্দ হয়ে থাকে, তাহলেও আমি বলব, বইয়ের কাগজ এবং সাইজ নিয়ে চিন্তা করার সুযোগ রয়েছে।
যদি এ দুটো কমিয়ে এনে বইয়ের দাম ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে রাখা যায়, তাহলে ভালো হয়।
এ বইটি সেই বাচ্চাদের জন্যই, যারা টিফিনের টাকা জমিয়ে বই কেনে।
২. অপেশাদার প্রকাশনীর মাধ্যমে বিতরণ করা হলে বইটি শেষ পর্যন্ত মেলার বাইরের বাচ্চাদের হাতে তেমন করে পৌঁছাবে না। বিতরণের ব্যাপারটি নিয়ে দ্বিতীয়বার চিন্তার অবকাশ আছে।
রঙিন ছাপার জন্যে পাতলা কাগজের একটা সমস্যা হচ্ছে, এক পাতার ছাপার ইমপ্রেশন পাতলা কাগজের অন্য পাতা থেকে দেখা যায়, তখন জিনিসটা দেখতে খুবই বাজে লাগে। এ সমস্যাটা সাদাকালো ছাপায় খুব একটা প্রকট না। এ কারণেই একটু পুরু কাগজে থাকতে হবে। আর দাম কম রাখার ব্যাপারে আমাদের আন্তরিকতার অভাব নেই, আমরা এবার প্রতি কপি বইয়ের জন্যে ২৫ টাকা করে ভর্তুকি দিয়েছি। ৪০ বা ৪৮ পৃষ্ঠার রঙিন বইয়ের দাম কমিয়ে ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে রাখতে গেলে সোভিয়েত ইউনিয়নের ফান্ডিং লাগবে। আর বাচ্চাদের টিফিনের পয়সা জমিয়ে বই কেনার দিন শেষ হোক, তাদের বাবা মায়েরা ২০০ টাকা দিয়ে মেহেরজানের টিকেট না কেটে বাচ্চাদের বই কিনে দিক। প্রতিদিন সিএনজিওয়ালাকে হাতে পায়ে ধরে ৭০-৮০ টাকা বেশি ভাড়া দিয়ে বিনা প্রতিবাদে যে শহরের মানুষ চলাফেরা করে, বইয়ের দাম নিয়ে তাদের অভিযোগ করা সাজে না।
বিতরণের ব্যাপারে প্রচুর চিন্তাভাবনা চলছে। কিন্তু পেশাদার প্রকাশনী তো দুই-তিনটা চোখের সামনে দেখেছি, তাদের বিতরণ ব্যবস্থাও সুবিধার না। আমার মনে হয় পেশাদার অপেশাদার সকল প্রকাশনীরই উচিত বিতরণের ব্যাপারে চিন্তার অবকাশ গ্রহণ করা।
১. আমার ধারণা ছিল, ভর্তুকি আরো বেশি হয়েছে। বইটির প্রচারে আপনাদের আন্তরিকতাকে ধন্যবাদ। বিশেষ করে পোস্টারিং ভালো ফল বয়ে এনেছে বলে আমার ধারণা।
২. কাগজ সংক্রান্ত সমস্যাটি অবশ্যই একটা বড় সমস্যা। আমার মনে নেই, চাচা চৌধুরী কী কাগজে ছাপা হতো। নিউজপ্রিন্ট নাকি? দেশি নিউজপ্রিন্টে ছাপা হলে এক পাশের ছবি অন্যপাশে ভেসে উঠবে না, তবে সৌন্দর্য মার খাবে অনেকখানি। মোটা কাগজই সই।
৩. বাস্তবতা হচ্ছে এ দেশের মা-বাবা মাসাককালি কিনে কিন্তু বই তেমন একটা কিনে না। বইমেলায় যত লোক যায়, তার ৫% ও যদি একটি করে বই কিনতো, তাহলে ১৫ তারিখের পর বইয়ের অভাবে মেলা গোটাতে হতো।
৪. বাজারজাতের জন্য সেবা প্রকাশনী জাতীয় একটা নেটওয়ার্কে ঢুকতে পারলে মন্দ হতো না। সেক্ষেত্রে আমরা মাসে দুইমাসে একটা করে ঝাকানাকা পেতে পারতাম।
একটা বিকল্প নেটওয়ার্ক নিজেরা তৈরি করা যায় নাকি?
বাহ! কালুচনা একটা করবো ভেবেছিলাম দুই একদিনের মাঝেই, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের কাজ চলছিলো, তো আমার আগেই দেখি বই হাতে পেয়েই (শুরুতেই আমাকেও কেলেকুচ্ছিত বানিয়ে টেনে এনে) ঝাকানাকালোচনা করে ফেলেছে কৌদা!!
রহস্য হাস্যরসের সাথে হালকা মেজাজে কিন্তু বেশ সুন্দর গোছানো, এতো বেশ দারুণ হয়েছে রিভিউ! সাথে অন্যান্য কমিকের তুলনাটা ভালো লেগেছে।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
আরে যাযাদি, একটা পোস্ট এলে কি আর আরেকটা পোস্ট আসতে নাই? তুমি বেশ 'মাস্টারাপা'-'মাস্টারাপা' স্টাইলে অনেক গবেষণা করে পোস্ট দেবে, সে তো খুবই ভাল।
তোমারে কৈ কেলেকুচ্ছিত কইলাম? আমার কেলেকুচ্ছিতত্ব'র জন্য তোমাদের সাক্ষী ডাকলাম শুধু...
কালোচনা ভালো পাইলাম
কুটুমবাড়ি ভাই
ঝাকানাকালোচনা পড়ুম নি, আগে বইটা হাতে আসুক!
তারপর, সমস্ত কালাকুশলী (বিশেষ করে কালেখক এবং কালানিমেটর)'রে কাটুম, কুটুম এবং মহোৎসাহে কালালবন লাগামু! যাবে কোয়ানে... মুহাহাহা
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
সেকি, আপনার জিগরি দোস্ত ময়না মিয়া'ও এখনো আপনার হাতে বইটা পৌঁছায়ে দিতে পারে নি? আয়হায়...
বইটাতো চমৎকার। আর রিভিউও ভালো হয়েছে। কালা পরিবারের সবাই ভালো থাকুন আর নতুন নতুন কালা বই আমাদের উপহার দিন।
তবে আরিফ ভাই যেটা বলেছেন, বইয়ের দাম। সেটা নিয়ে একটু চিন্তা করা যেতে পারে। কারণ দামটা একটু বেশীই মনে হয়েছে।
সুপ্রিয় দেব শান্ত
ধন্যবাদ।
বইয়ের দাম নিয়ে হিমুদা উপরে কিছু মন্তব্য করেছেন, দ্যাখেন...
রিভিউ খুব ভালো লেগেছে কৌস্তুভ দা
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
থেঙ্কু!
ফেলুদা কমিক্সের অবস্থা তো দেখলেন, আর আপনি তো আঁকেনটাকেন ভালো, তাই রিকোয়েছ্ট করছি, আপনিই একবার আঁকায় হাত দিয়ে দেখুন না...
বইটা যে উচ্চমূল্যে অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে সেটি মনে হয় যথেষ্ট মানুষ এখনো জানে না।
ফরিদ ভাই, আপনাদের অনেক ধন্যবাদ, বইটা পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।
আপনাদের জন্য একটা ছোট্ট অনুরোধ আছে। অনলাইনে বই কেনার পর বইমেলা.কমের থেকে কোনো 'পারচেজ কমপ্লিটেড' বলে পেজ (বা ইমেল), বা কোনো কনফার্মেশন কি রসিদ দেখায় না। সেইটা করতে পারলে ভালো হত।
ছাপার বইটির দামও মনে হলো কিছুটা বেশিই ধরা হয়েছে।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
দুর্দান্ত রিভিউ হয়েছে!
কমিকসের ব্যপারে সামান্য কিছু অনুযোগ (যেমন ডিটেইলিং, যাদুঘরের বদ্ধ পরিবেশে একনাগাড়ে শুটিং ) থাকলেও সবমিলিয়ে দুর্ধর্ষ একটা ব্যপার হচ্ছে এইটা! পরেরগুলোর জন্য অপেক্ষায়! শুনলাম এরপরে ঝাকানাকা নাকি সমুদ্রের মধ্যে কোন এক দ্বীপ, হিমালয়, এমনকি মঙলেও নাকি যাচ্ছে্ন!
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
আরেহ্, সব ফাঁস করে দেবেন নাকি?
ধন্যবাদ কৌস্তুভ্, চমৎকার লেখাটার জন্য।
আমি একটু দেরী করে ফেল্লাম আসতে... আসলে ৩ মহাদেশে কাজটা হওয়াতে কিছুটা সিস্টেম লস্তো স্বাভাবিক... সেটা পরেরবার নিশ্চুই কমবে আর গল্পটাও দারুণ!!! আর নারীবহুল!!!
নারীদের বিষয় দেখলাম নারী পাঠকেরাও বিশেষ আগ্রহী!!!
কমিকের কাজতো আমরা মাত্র শুরু করলাম এখনি টিনটিন বা অ্যাস্টেরিক্সের সাথে তুলনা করার সময় আসেনি... আমাদের ১টা বড় উদ্দেশ্য ছিলো বাংলায় রহস্য কমিক তৈরী করা যেটা সম্পূর্ণভাবে আমাদের গল্প। এখন কমিকের গল্পটা বলা যায় বহুভাবে যার মধ্যে আমরা বেছে নিয়েছি সবচেয়ে সহজ রাস্তাটা ... গ্রাফিক নভেল বা মার্ভেলের রাস্তায় নয়, এই বিষয় পরে বিশদ
আলোচনা করা যাবে।
তবে ভারতীয় কমিকের মধ্যে আমার মতে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ 'অনন্ত পাই'-এর অমর কথাচিত্র সিরিজের কমিকগুলো। এর বিশেষত্ব হলো কমিক বইয়ের ফরম্যাটে গল্পটাকে বলা, এই সিরিজের প্রায় সব গল্পই হয় রামায়ণ-মহাভারত নাহয় বিভিন্ন মণীষীর জীবনের কথা, এখনো বের হয় কিনা জানিনা। এগুলো নিয়ে পরে বিশদ আলোচনা করা যাবে। আর কলকাতার কমিক আমি যে কটা পড়েছি তার মধ্যে নন্টেফন্টে আর বাটুল দা গ্রেট খুব ভালো লাগতো যার প্রধান কারণ গল্পগুলো লেখা হয়েছিল কমিক বইয়ের জন্যই। এটা খুব গুরত্বপূর্ণ কারণ পড়ার গল্প আর দেখার গল্পের মধ্যে পার্থক্য বিস্তর!
ঠিক এই কারণেই ফেলুদা আর শঙ্কুটা কমিক হিসাবে জমলোনা! আরো ১টা বড় কারণ গল্পগুলো সবই আমাদের জানা! এবং যার প্রতিটাতেই মূল গল্পে সয়ং সত্যজিৎ রায়ের আঁকা ইলাস্ট্রেশান আছে ... অর্থাৎ মানটা আগেই নির্দিষ্ট! যাহোক এগুলো নিশ্চুই ভবিষ্যতে আমাদের আলোচনায় আসবে।
আর শিব্রামের গল্প নিয়ে করা কমিকটা আমার দেখা হয়নি.. দেখে মনে হলো হরষবর্ধণ-গোবর্ধণ!
লাল গানে নীল সুর, হাসি হাসি গন্ধ
বড়োসড়ো মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, হে 'কালানিমেটর'!
কালাইডোস্কোপের সাইটের জরিপে তো বিদেশি কমিক্সের সঙ্গে তুলনা নিয়ে কিছু প্রশ্ন ছিল...
অমর কথাচিত্র সিরিজটা আসলেই বেশ ভাল হত, ছোটবেলায় পড়ে খুব ভালো লাগত। মোটামুটি ডিটেলে কিন্তু জটিলতা ছাড়া, সুন্দর আঁকা ছিল। এখন আর বেরোয় কিনা জানি না।
হ্যাঁ, শিব্রামের ওইটা হর্ষবর্ধন-গোবর্ধন দেরই একটা গল্প।
লেখা ভাল্লাগছে! বই ভাল্লাগে নাই! খাইতে না পাওয়া পর্যন্ত খাবার ভালো লাগেনা!!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
নতুন মন্তব্য করুন