“ডাল ভাত তরকারি ফল-মূল শস্য,
আমিষ ও নিরামিষ, চর্ব্য ও চোষ্য,
রুটি লুচি, ভাজাভুজি, টক ঝাল মিষ্টি,
ময়রা ও পাচকের যত কিছু সৃষ্টি,
আর যাহা খায় লোকে স্বদেশে ও বিদেশে -
খুঁজে পেতে আনি খেতে - নয় বড়ো সিধে সে!”
বস্টনে বেড়াতে আসার জন্য আমি নানাভাবেই নানাসময়ে পাঠকদের প্রলুব্ধ করে থাকি। বলতে নেই, মাঝেসাঝে সেই চেষ্টা ফলও দিয়েছে – সদ্যই সজল এন্ড কোং এসে আমাকে ইনজেরা ভোজনে পরিতৃপ্ত করিয়ে গেছেন (ইনজেরা কী জানতে হলে নিচে দেখুন)। আজকে সেই প্রচেষ্টার দ্বিতীয় দফা – শহরের আন্তর্জাতিক সুখাদ্য-সমাহারের বিজ্ঞাপন দ্বারা গুরমে-দের চিত্তহরণের প্রয়াস।
(১)
নিউ ইংল্যান্ড অঞ্চল সমুদ্রখাদ্যের জন্য বিশেষ বিখ্যাত। এখানে এলে তিনটে জিনিস আপনাকে চেখে দেখতেই হবে – নিউ ইংল্যান্ড ক্ল্যাম চাউডার, লবস্টার, এবং স্যামন।
ক্ল্যাম হল একপ্রকার ঝিনুক; সেই বস্তু, আলু, ও পর্যাপ্তাধিক চীজ দিয়ে নির্মিত এক ঘন স্বর্গীয় স্যুপ হল ক্ল্যাম চাউডার। ট্যুরিস্টদের ধরতে এটা বহু দোকানই বানিয়ে থাকে, কিন্তু ভালো করতে পারে কেবল কয়েকটাই মাত্র দোকান। তাদের গুপ্তঠিকানা জেনে নেবেন আমার থেকে।
আধহাত লম্বা লবস্টার সাবড়ানো অনেকের কাছেই ফ্যান্টাসি। লবস্টাররা রন্ধিত হয়ে থাকেন দুইভাবে – আমেরিকান স্টাইলে, আস্ত সেদ্ধ করে, গলা মাখন-নুন-গোলমরিচ দিয়ে সার্ভড (আপনিই নিজেহাতে ফাটিয়ে খাবেন); অথবা সেদ্ধর পর একটু ফাটিয়ে জিঞ্জার-গার্লিক সস দিয়ে চিনে পদ্ধতিতে রান্না। দুটোই ভাল, আর দুটোই বেশ দামী, খোঁজখবর না নিয়ে যে-সে দোকানে যাবেন না।
স্যামন হল আমেরিকান মাছেদের মধ্যে সবচেয়ে স্বাদু। শুরুতে একটু গন্ধ বেশি বলে মার্কিন গৃহিণীরা রাঁধতে চান না, কিন্তু রাঁধতে জানলে অমৃত। আস্ত বীফস্টেকের মত গ্রিল করা নিতে পারেন, অথবা গ্রেভি দিয়ে রান্না করা। আমি দিফিও-বর্ণিত পদ্ধতিতে স্যামন বিরিয়ানি বানাই, চিকেন বিরিয়ানিকে সে দশ গোল দিতে পারে।
(২)
আমেরিকান ক্লাসিকাল খাদ্য খুব একটা উল্লেখযোগ্য না। (ওই বার্গার-ফ্রায়েডচিকেন এসব বাদ দিলাম।) এরা সবজিও রান্না করতে জানে না – আধসেদ্ধ করে নুন-মরিচ দিয়ে বাচ্চাদের ধরিয়ে দিলে কেন তারা খেতে যাবে! আর আমাদের দেশে, বিশেষত নিরামিষাশীদের মধ্যে, তরকারি রান্নার কত শত বৈচিত্র! তারপর ধরুন তিক্ত – এদেশে তো তেতো খায় কেবল ডার্ক চকলেট আর বীয়ার, উচ্ছে-করলা-শুক্তো-নিম্বার্ক এসব কি এরা খেতে জানে!
তবে এদেশের দক্ষিণে, লুইসিয়ানা – নিউ অর্লিন্স অঞ্চলে ফরাসী, নেটিভ আমেরিকান ও অন্যান্য সেটলারদের মিশ্রণে যে বিশেষ খাদ্যধারার সৃষ্টি হয়েছে তার নাম ক্যাজুন। এরা বেশ মশলা-টশলা দিয়ে রান্না করে, বেশ খেতে হয়। ক্যাজুন পাস্তা আমাদের খুব প্রিয়। জাম্বালয়া – প্রথমে শুনলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ডিশ বলে মনে হয় – আরেকটা বেশ জিনিস – মাংস, ভাত, সবজি, বীনস দিয়ে বেশ মশলাদার স্টু।
তবে এদের মেঠাইয়ের ধারা আমার, হুঁহুঁ, বেশ পসন্দ। তবে সে কথা পরে।
(৩)
আমেরিকায় দক্ষিণ থেকে আসা মেক্সিকান ইমিগ্র্যান্ট প্রচুর, তাদের খাদ্যের দোকানও অনেক। খাবারগুলোও সস্তার মধ্যে ভালো। বুরিতো ছিল আমার আমেরিকায় খাওয়া প্রথম খাবার। রোল, তার মধ্যে ভাত-মাংস-বীনস-চীজ-সালসা। অথবা ওই একই জিনিস, কিন্তু রুটি আধা-ভাঁজ করে তাকে পুর-সমেত টোস্ট করে হয় কেসাডিয়া। ইয়াম ইয়াম। অথমা সিজলিং ভাজা মাংস – ফাহিতা, ভাত-রুটি দিয়ে খান।
(৪)
আধুনিক আমেরিকা তো গড়ে তুলেছে সায়েবরাই ইমিগ্রান্ট হিসাবে এসে, তবে তারপর থেকে ইমিগ্রান্টদের মধ্যে চিনেদের রমরমাই সবচেয়ে বেশি। প্রায় প্রতিটা বড় শহরেই পাবেন চায়নাটাউন। চিনে খাবারের দোকানও অগুন্তি। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের মতই চিনেরও বিভিন্ন প্রদেশ অনুযায়ী খাবার বেশ অনেকরকম, যদিও আমাদের মনে রাখা মুশকিলই হয়। আমরা ওদেশের মেন ডিশ বলতে ফ্রায়েডরাইস বা ভাজা নুডুলস, আর সঙ্গে বীফ-চিকেন-পর্ক-শ্রিম্পের একটা ডিশ, এই বুঝি। এরা মাছও রাঁধে, তবে খুব সুবিধার হয় না সেটা। ছবিতে যেটা দেখছেন, সেতা ভেজে ভেজে জুতোর মত শক্ত করে ফেলা হয়েছে, তারপর উপর দিয়ে সুইট-সাওয়ার সস। সে কি আর খাওয়া যায়?
বেচারারা আবার দুধের বদলে বেশি খায় সয়া মিল্ক। সেটা পাতলাও বেশি, স্বাদও কম। অনেকের সেটার গন্ধও পোষায় না। আর পনির বা ছানার বদলে সেটা থেকে বানায় টোফু, সেটা সেদেশের খুব প্রিয় নিরামিষ খাদ্য। এদেশেও যারা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট, তাদের ওটাই অগতির গতি।
ডিম সাম একটা স্টাইল যেটা দেশে থাকতে খাই নি। এটায়, ঠেলাগাড়ি করে নানারকম ছোট ছোট পদ টেবিলের পাশ দিয়ে দেখিয়ে নিয়ে যায়, পছন্দ হলে চাইতে হবে। নানারকম ডাম্পলিং, রোল, ছোট নোনতা পিঠে, স্যুপ ইত্যাদির ঢালাও আয়োজন। সাথে প্রায় ফ্লেভারহীন গ্রিন টি (জল দেয় না এরা, ওইটাই পানীয়)। শেষ পাতে হয়ত নিলেন সুইট কর্ন ডামপ্লিং। এদের মিঠাইয়ের প্রকারভেদ বেশি না – সয়া মিল্ক দিয়ে পুডিং-এর মত একটা কি বানায়, তেমন জুতের না। কয়েকরকম কেক রয়েছে অবশ্য, খাওয়া যায়।
(৫)
চীনের প্রতিবেশী ছোট ছোট দেশ হলে কি হবে, খাওয়াদাওয়ায় জাপান ও কোরিয়া অনেকটাই স্বতন্ত্র। সুশির কথা তো সকলেই জানেন। জাপানের কারি কিন্তু অনেকটাই আমাদের মত। বা ভাজাও সুইট-সাওয়ার সসে ডুবিয়ে খেতে বেশ। কোরিয়ান দোকানেই আমি প্রথম খাই সুপে ডোবানো নুডলস, পরে জানতে পারি যে সেই জিনিস চিন-জাপানেও খুবই প্রচলিত।
গ্রিন টি আইসক্রিমও বেশ নতুনত্ব। আর নিশ্চয়ই খাবেন একটা নতুন জিনিস – মোচি। ভাত গলিয়ে তৈরি একটা খোলসের ভেতর আইসক্রিম পুরে তৈরি করা বল। মোড়কেও ফ্লেভার, আইসক্রিমেও। অল্প করে গলবে, আর আলতো করে কামড়াবেন...
(৬)
দক্ষিণ এশিয়ার কথা বাদই দিলাম, ও রান্না তো দেশে থাকতে হরদমই খেতেন। তাও যদি কয়দিন যাবনিক আহার্য্য খেয়ে ভাত-তরকারির জন্য পেট কাঁদে (অর্থাৎ পেট ছাড়ে), তাহলে উত্তর/দক্ষিণ-ভারতীয়, বাঙালি সবরকম রেস্তোরাঁই পাবেন। কিন্তু সে যাক।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার খাদ্যও এদেশে খুবই বিখ্যাত। সবচেয়ে বিখ্যাত মনে হয় থাই – বিশেষত ওদের গ্রিন/রেড/ইয়েলো কারি (নারকেলের দুধ দিয়ে করা ঝাল-মিষ্টি ঝোলের তরকারি) বেশ খেতে। আমি একটা গুপ্ত-প্রাপ্ত রেসিপিতে ভারতীয় গ্রিন কারি করি স্যামন দিয়ে, সে যে কেমন খেতে হয় সেকথা আর নাই-বা বললাম।
আর খুব চলে প্যাড থাই (সবজি-চিকেন-চিংড়ি-বাদাম দিয়ে মিষ্টি-মিষ্টি ফ্রায়েড নুডল), ড্রাঙ্কেন নুডল (একটা ঝাল-ঝাল, পোড়া-পোড়া ফ্লেভার থাকে, চমৎকার)।
মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়া-সিঙ্গাপুর এদের খাদ্য একটু কম মিললেও বেশ চমৎকার। বীফ রেন্ডাং (দেশের কষা মাংসের মত খানিকটা) – মশলার কাই মাখিয়ে সারাদিন ধরে রান্না করা মাংস, মুখে দিলেই মিলিয়ে যায়... এঃ, লুল পড়ে কীবোর্ড ভিজে গেল! সাথে নাসি লেমাক – আমাদের পাতুরির মত – পাতায় মুড়ে ভাত-মশলা-নারকেলবাটা ভাপানো, সঙ্গে থাকবে অ্যাঞ্চোভি মাছ ভাজা (মৌরলার মত) – আঃ কি ঘ্রাণ!
আরেকটা জিনিস এদের খেতে ভুলবেন না – ফ্রায়েড আইসক্রিম। ডিম-ময়দার গোলায় একটা বরফঠান্ডা আইসক্রিমের বলকে ডুবিয়ে, দ্রুতই ডুবোতেলে ফেলে আবার তুলে নেওয়া, যাতে না গলে। মুচমুচে খোলসের মধ্যে নরম-নরম হয়ে আসা আইসক্রিম – আঃ...
(৭)
আরে, তাইওয়ান-এর কথা বলতে তো ভুলেই গেছি! ছোট্ট দেশ হলে কী হবে, চিন ভেঙ্গে বেরিয়ে আসা ওদের আত্মমর্যাদা খুব। আমার তাইওয়ানিজ বন্ধুদের চিনে রেস্তোরাঁয় গিয়ে মন ভরত না, খুঁজে খুঁজে দূরের কোন দেশীয় দোকান বার করেছিল। একবার গেছিলাম ওদের সাথে, সত্যিই খানিক অন্যরকম খাদ্য। সেদ্ধ করা গরু বা শূকরের বৃহদন্ত্রের ফালি, সয়া সসে ডুবিয়ে খাও – আমার সদ্য-আগত ভারতীয় বন্ধু টেবিল ছেড়ে পালায় আর কি!
পরে অবশ্য সেই ছোঁড়ারই তাইওয়ানিজ বান্ধবী হয়েছে (সেই মেয়ে বেশ রান্নাবান্না করে, আমাকেও দুচারটে শিখিয়েছে)। সে আদর করে একদিন বলেছিল, ‘জানেমন, আমার বাড়িতে আইস, আমি তোমার জন্য অত্যুত্তম স্টিঙ্কি টোফু (টোফুর শুঁটকিমাছের মত কড়া গন্ধওয়ালা প্রকার) রন্ধন করিব।’ জবাবে সেই ছেলে তিড়িং করে লাফ দিয়ে বলে, ‘দূর হয়ে যা নচ্ছার মাইয়া!’ প্রায় ব্রেকাপ হয়ে যায় আর কি...
(৮)
চলুন এবার যাই ইউরোপে। ইউরোপের খাদ্য-শিরোমণি হল ফরাসীদেশ – অন্তত তারা নিজেদের তাইই মনে করে। অবশ্য ইংল্যান্ড বা জার্মানীর তুলনায় তাদের খাদ্য ভালো বটে। তবে তাদের বদভ্যাস হল, পরিমাণে বড্ডই কম দেওয়া। এতে বিশেষ করে কষ্ট হয় আমেরিকানদের, যারা পরিমাণে বেশি বেশি খেতেই অভ্যস্ত। সেইবার আমরা গেলুম প্যারিস (এমনিতেই মাগ্যিগণ্ডার শহর), বড়রাস্তা থেকে যে অ্যালে অর্থাৎ গলিগুলো বেরিয়ে গেছে, তার উপরেই ছাউনি পেতে বসানো কাফে-কাম-রেস্তোরাঁ, যা ওদেশে বেশ জনপ্রিয়, সেখানে গিয়ে বসা হল। লাঞ্চ ফ্ল্যাট রেট ১২ ইউরো (সেটাও মার্কিন দামের তুলনায় কম না), আমি নিলাম পোঁয়াসঁ অর্থাৎ কিনা মাছ। দেওয়া হল – পাঁচ বছরের বাচ্চাকে যেমন একটুকরো মাছ দেওয়া হবে, তেমন এক খণ্ড, একমুঠো ভাতের উপরে বসানো, আর তার উপর ছড়ানো কমলা রঙের তিনচামচ গ্রেভি। সেখানে কয়দিন যে আমরা কেমন খাদ্যসংগ্রাম করেছিলাম, সে এক বিশাল গল্প...
ফরাসী রেস্তোরাঁ বস্টনেও অনেকগুলো আছে। সেখানেও দাম বেশী আর পরিমাণ কম। অবশ্যে তাতেই আমি প্রথম খেয়েছিলাম ফ্রগ লেগস – বেশ নরম আর ছোট মুরগির ঠ্যাঙের মত। তবে ওই ছোট্ট জিনিসই দিয়েছিল মোটে পাঁচটা!
জার্মান খাদ্য স্বাদে নিস্তেজ হলেও পরিমানে দেয় প্রচুর। বন-এ যখন খেতাম, পাঁচ ইউরোতেই একটা বিশাল ফিশ কাটলেট, সঙ্গে অনেক আলুসেদ্ধ, উপরে টার্টার সস দিত, সাথে আবার পুডিং। কোনোদিনই শেষ করতে পারতাম না, সঙ্গীরা কিন্তু দিব্যিই সব সাবড়ে দিত। ওদেশের অবশ্য ভালো লাগে, হেঁহেঁ, ব্ল্যাক ফরেস্ট কেক...
ব্রিটিশ খাবার আরোই ব্ল্যান্ড। হ্যাঁ, ইয়র্কশায়ার পুডিং, ফুল, ইত্যাদি সব নামী খাদ্যই চেখে দেখেছি, তবে ওই-ওই। সাধে কি আর ব্যাটারা সব বিদেশে হানা দিত!
আমি কিন্তু স্পেনীয় খাদ্যের বড়ই ফ্যান, ফরাসী খাবারের চেয়েও। ওদের একটা ফ্যান্সি, স্নব ব্যাপার থাকে খাবারেও – স্পেনীয় খাবার বড়ই খোলামেলা। মশলার পরিমাণ কম দিয়ে স্বাদকে মাইল্ড থেকে মাইল্ডতর করার যে ফরাসী ঢং, তা থেকেও স্পেন মুক্ত। সেটাতে হয়ত কিছুটা মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাব, আর কিছুটা উষ্ণতর আবহাওয়ার জন্য মশলার চাষ বেশী হওয়ার কারণে।
ওদের পশ্চিম উপকূলে আমাদের পোলাওয়েরই মত, কিন্তু চিংড়ি-ঝিনুক-সীফুড দিয়ে রান্না করা পায়েলা (উচ্চারণ পায়েয়া – ওরা ‘ল’ উচ্চারণ করেই না প্রায় – চিকেন হচ্ছে পোলো কিন্তু বলবে পোয়ো, কি মুশকিল!) বড়ই সুস্বাদু। ওরাও চিনেদের ডিম সাম-এর মত ছোট ছোট খাবারের ব্যবস্থা রাখে, সচরাচর মদ্যপানের সাথে – তার নাম তাপাস। তাতে হরেকরকমের খাদ্য – কফি দিয়ে কোয়েলের রোস্ট থেকে ভাজা অক্টোপাস।
ওদের মিষ্টান্নও বেশ। ফরাসী ক্রিম ব্রুলি, আর স্পেনীয় ক্রেমা কাতালানা – দুটোই মিষ্টি পুডিং, উপরে ক্যারামেল-কৃত চিনির কুড়মুড়ে শক্ত লেয়ার। উল্স্! কেক-পেস্ট্রি-চীজকেক-পুডিং ইত্যাদিতে সারা ইউরোপই বিখ্যাত, যেখান থেকেই আমেরিকা এই রেসিপিগুলো পেয়েছে। সারা বস্টন জুড়েই এসবের দোকানের ছড়াছড়ি। আরো আছে ট্রাফলস – (এই নামেরই একপ্রকার মহামূল্যবান ফাঙ্গাস-মণ্ডও হয়, দারুণ ফ্লেভার, স্লাইস করে রান্নায় দেওয়া হয়) চকলেটের ছোট বল বা শঙ্কুর ভেতর নরম-নরম মাখোমাখো পুর – চকলেট, সঙ্গে শ্যাম্পেন বা রাম, বা কফি, সাথে একটু মিন্ট বা ফলের ফ্লেভার...
(৯)
জার্মানি-ফ্রান্স-স্পেনে ফাস্ট ফুড হিসাবে বহুল প্রচলিত হল মধ্যপ্রাচ্যের রোল – ফালাফেল-শোয়ার্মা-কাবাবের রোল। ওই ম্যাকডোনাল্ডের চেয়ে খেতেও অনেক ভালো আর পুষ্টিগুণও বেশি। ফালাফেল বেশ মজার জিনিস – দেশের মোচার বড়ার মত, কিন্তু চানা’র ডাল দিয়ে; সেই কুড়মুড়ে বড়া, সবজি, আর জাৎজিকি সস (দই দিয়ে তৈরি) দিয়ে রুটিতে জড়িয়ে বানানো রোল – নিরামিষ তো কী, খেতে চমৎকার।
শোয়ার্মাও বেশ জিনিস – একটা কাঠিতে অনেক মাংস (আর তারই চর্বি) গেঁথে উনুনের পাশে খাড়া করে পাক খাওয়ানো হয় সারাদিন। মাংস নরম হয়ে মশলা মেখে বেশ ইয়ে ইয়ে হয়ে যায়। এরই আরেক নাম ডোনার কাবাব। আর এই দিয়ে তৈরি রোলকে গ্রীকরা বলে ঈরো (বানান কিন্তু জাইরো)।
মধ্যপ্রাচ্য-ইরান-আফগানিস্তান-তুরষ্ক-মরক্কোর বহু দোকান আছে এখানে। আমি খুব ভালোবাসি দোলমা – আঙুরপাতায় জড়িয়ে রান্না করা ভাত আর কিমা – পাতা সমেতই খাওয়া যায়। ওদেশের বিশেষ সসে ডোবানো মীটবলও খাসা। মিষ্টিও যে কয়েকরকম আছে তা মন্দ না। বাকলাভা যেমন গজা’র মত, মধু-টধু দেওয়া। আরো কয়েকটা আছে, সেগুলোও আমাদের দেশের মতন।
(১০)
মধ্যপ্রাচ্য যখন গেলাম, আফ্রিকাই বা বাকি থাকে কেন? ইথিওপিয়ান খাদ্য এদেশে বেশ জনপ্রিয়। তার একটা বিশেষ স্টাইলও আছে। আপনি যদি রান্না করা মাংস বা সবজি – টিব – চান, তাহলে সেটা দেওয়া হবে একটা বড় থালায় ছড়ানো একটা বিশাল তুলতুলে রুটি – ইনজেরা (আমাদের গোলা রুটির মত) – তার উপর সাজিয়ে। মানে একটা রুটির উপরেই নানানরকম মাংস, সবজি, স্যালাড, আচার, আলু-কুমড়ো-সেদ্ধ সার্ভ করা। খালি অংশ থেকে হাত দিয়ে রুটি ছিঁড়ে তরকারি নিয়ে খান। পুরো দেশের মতই আরাম!
(১১)
ওই দেখেন, ইউরোপীয় খাদ্য নিয়ে সাতকাহন করেছি কিন্তু ইতালী দেশটাকেই পুরো বাদ দিয়ে গেছি! ইতালীর একটা জনপ্রিয় খাদ্য অবশ্যই পিৎজা, যেটা মার্কিনরা বিশ্রিভাবে রেঁধে রেঁধে হদ্দ করে ফেলেছে। আর থাকে পাস্তা। সেটাও মার্কিনরা গুচ্ছের চীজ ঢেলে ম্যাক-অ্যান্ড-চীজ টাইপের আবোলতাবোল রান্না করে। ওই ক্যাজুন পাস্তার মত দুয়েকটা রকমফেরই ভালো কেবল। আসল পাস্তা খেতে হলে আমার সাথে চলুন ইটালিয়ান ডিস্ট্রিক্টে। আমেরিকায় ইতালীয় ইমিগ্রেন্ট প্রচুর, আর মাফিয়াদের সুবাদে আমরা সবাই তাদের সম্পর্কে অবগত। একটা বিশেষ দোকানের বিশেষতম খাবারটা – ব্ল্যাক পাস্তা – খেয়ে দেখবেন। আমার আগের লেখাটা থেকে তুলে দিলাম:
আপনাকে নিয়ে যেতে পারি নর্থ এন্ড’এ। শহরের অন্যতম ‘লাইভলি, হ্যাপেনিং’ জায়গা এটা, ইতালীয়, আইরিশ ইত্যাদি ইমিগ্র্যান্টদের বাসা, তাদের আকর্ষণীয় সংস্কৃতি, হইহট্টগোলে বেশ জমাটি লাগবে। আমি আবার এট্টু খেতে আর খাওয়াতে ভালোবাসি, আপনাকে নিয়ে যাব এমন একটা রেস্তোঁরায়, যেটা দেখতে-শুনতে অভিজাত না হলেও প্রবল জনপ্রিয় এবং খ্যাতিতে কুলীন – দি ডেইলি ক্যাচ। ডিনারের সময় গেলে ঘণ্টাখানেক লাইনও দিতে হয়ে থাকে। ভেতরটা একটাই মাত্র ছোট ঘর, তার মধ্যেই রান্নাঘর – কলকাতাভিজ্ঞরা অনাদির সুপ্রসিদ্ধ মোগলাই কেবিনের আমেজ পাবেন, সেইরকমই আধনোংরা পরিবেশ, প্রায় টেবিল-ধরে-খাড়া-থাকা কাস্টমারদের লাইন। এদের সবসেরা খাবারটাই খাওয়াব – স্কুইড ইংক দিয়ে তৈরী ব্ল্যাক পাস্তা, সঙ্গে স্কুইড-কুচি-ভাজা। স্বর্গীয়।
একটা খাবার – রিসোত্তো – একটু কম প্রচলিত। ভাত সেদ্ধ করে করে বেশ মাখোমাখো করে ফেলা (ওয়াইন বা চিকেন/বীফ স্টক দিয়ে) – সাথে মাংস বা মটর ইত্যাদি সবজি। একটু চীজ কি মশলাও ছড়ানো। খানিকটা পোলাওয়ের মত, বেশ খেতে।
আর তারপর জেলাত্তো অর্থাৎ ইতালিয়ান আইসক্রিম খেতেই পারেন – স্ত্রাচাতেল্লা ইত্যাদি দারুণ সব ফ্লেভার দেশে পাবেন না। ওদের তিরামিসু অর্থাৎ কফি-ফ্লেভারড কেকও খুব বিখ্যাত। আরো প্রচুর কেক-টেক দেখবেন, ফ্রুট-টার্ট-ও আছে। কিন্তু আপনাকে খেতেই হবে, খেতেই হবে – ক্যানোলি। আমাদের পাটিসাপটার জাতভাই। ময়দার চোঙা, কিন্তু কুড়মুড়ে ক্রিস্পি। ভেতরে রিকোটা বা মাস্কারপোনে চীজের পুর দেওয়া (ইতালীয় চীজ যে কত শত রকমের, তা জানেন?), তাতে মেশানো চকোলেট বা অন্যান্য বহু ফ্লেভার, আর উপরে ছড়ানো চকোলেট-পেস্তা-বাদাম কুচি, যার যেমন অভিরুচি।
(১২)
বস্টনে গরমও পড়ে বেশ ভালোই, তাই শরবতের দোকানও প্রচুর। স্মুদি অর্থাৎ লস্যি পাবেন কিউই ইত্যাদি বেশ নতুন নতুন ফ্লেভারে। পিনা কোলাডা বা আনারস-নারকেলের শরবতও ফাটাফাটি। বা নানা ফ্রুট পাঞ্চ চেখে দেখতে পারেন। অথবা খেতে পারেন ফ্রোজেন ইয়োগার্ট। কিংবা বহুবিধ আইসক্রিম-জেলাত্তো।
(বলতে ভুলে যাচ্ছিলাম, ছবিগুলোর কয়েকটা আমার বন্ধুদের তোলা, আর দুয়েকটা উইকি থেকে পাওয়া। বাকি আমার তোলা, যখন লালসা একটু সম্বরণ করে খাওয়ার আগে দুএকটা ছবি তুলতে পেরেছিলাম।)
*****************************************************************
এই লেখাটা অর্ধেকটা লেখার পর খবর পেলাম সচলমডুরা আমার অ্যাকাউন্টে আপগ্রেড’প্যাচ ইন্সটল করে আমাকে সচলত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। সেই আনন্দে সকলকে এখান থেকে যথেচ্ছ মিঠাই-উঠাই খাওয়ার অনুমতি দেয়া হল। বা অন্য যেকোনো সুখাদ্য। আর শহরে এলে তো স্বয়ং দোকানে নিয়ে গিয়েই খাওয়াতে পারি। শূকরের বৃহদন্ত্র না, ভালো জিনিসই খাওয়াবো!
মন্তব্য
আপনার লেখা নিয়মিতই মুগ্ধ করে। সচলত্বে অভিনন্দন কৌস্তুভ।
সামনের গ্রীষ্মে ওই মুল্লুকে আসার সম্ভবনা আছে বেশ। তখন পর্যন্ত বকেয়া রইল।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ধন্যবাদ!
তখন যদি আমি এদিকে থাকি, তাহলে তো অবশ্যই। আর নইলে...
সচল হওয়ায় অভিনন্দন।
না খাওয়ায়ে খাওনের ছবি দেওনের লাইগা দিক্কার।
থ্যাঙ্কু। আর দর্শনেন কোয়ার্টারভোজনম...
ভুল। দর্শনং ডবলক্ষুধাবাড়ায়ং...
****************************************
ডুপ্লিঅ্যাপেটাইজার পোস্ট দেয়ার দরকার ছিল না। কেউ সচলে হয়েছে শুনলে আমার এমনিতেই যথেষ্ট খিদে পেয়ে যায়।
আমার নিজের পোস্টে মন্তব্যের জবাবে বলেছিলাম, নজরে না পড়লে আবার এখানেই বলে দেই, ঠিকানা মেসেজে পাঠাচ্ছি, খাবার দাবার সব ডিএইচএল-এ পাঠিয়ে দিন। আপাতত শুকনো খাবারই পাঠান জিভের জলে ভিজিয়ে নিতে পারব।
বি দ্র: ১০ কেজির বেশি খাবার একবারে পাঠাবেন না। আমি একা মানুষ। আর তাছাড়া ইদানিং ডায়েট করছি। কষ্ট পাওয়ার কিছু নেই। সশরীরে এসে একদিন ঠিকই আপনার মন ভরিয়ে পকেট ফুরিয়ে খাবো। আপাতত কম করেই পাঠান।
[লেখা লোভনীয় হয়েছে। সচলত্বের অনেক অভিনন্দন ]
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আমার প্রফেসর শিগগিরই জার্মানিতে তাঁর বাপদাদার বাড়িতে ফিরছেন সামারের ছুটিতে। তাঁর হাত দিয়েই পাঠিয়ে দিচ্ছি তাহলে, একছালা শুকনো খাবার আর একছালা ধন্যবাদ...
বাংলাদেশে কেউ কি আসতেছে না? আমার শুধু চক্কেট হলেই চলবে তো...
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
নাহ, কুনু আশা নাই...
এইভাবে মানুষকে কষ্ট দিয়ে মজা দেখা... লজ্জা করেনা আপনার?
রীতিমত এগারোখানা পরিচ্ছেদ! মানুষের মনে সামান্য হলেও একটু দয়া মায়াও তো থাকে, নাকি?
আরে, আপনার কি ধারণা, এত্ত খাবার সব এখন আমার সামনে সাজানো রয়েছে!
এইসব খানাখাজানা টাইপের পোস্ট না দিয়ে ঘুম দেন মিয়া। আপনার উচিৎ ছিলো আধেক পোস্ট লিখেই ঘুমাতে চলে যাওয়া। তা, মুরুব্বিদের কথা তো আর শুনবেন না। এবারে, পুরো পোস্ট যখন দিয়েই ফেললেন, আগামি ছয় মাস (মিনিমাম) একটু রেস্ট নেন। বহুত খাটাখাটুনি গেলো!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
জি জনাব!
পেট পুরে খেলাম। আহ্ !
****************************************
আহা, অতিথি নারায়ণ, তাঁকে তৃপ্ত করলেই আমাদের পুণ্য...
আহা, এত সব খাবার বাদ দিয়ে কিনা হার্ভার্ড আর এমআইটি'র বিল্ডিং দেখে বেড়িয়েছি! তাও ইথিওপিয়ান খাবারটা খাওয়া হয়েছে বলে রক্ষা।
সচলত্বের অভিনন্দন। আপনে এখন সিনিয়র মানুষ
পড়াশোনাও তো একরকমের খাওয়াই হল - আমাদের জন্য ডাব্বা খাওয়া। আপনার যাতে চিত্ততুষ্টি, আপনি তাই-ই খাবেন
আপনাকে ডবল ধন্যবাদ - ইনজেরার জন্য, আর শুভেচ্ছার জন্য!
বলতে ভুলে গেছি, ন্যাজ হারানোয় অভিনন্দন...
আমি কিন্তু ভুলি নাই, দেখামাত্রই থ্যাংকু জানালাম!
ধুরো, মাত্রই ফাঁকিবাজি কাস্টার্ড ( আইস্ক্রিমে টুকরো করে কাটা ফল আর ইয়োগার্ট মিশিয়ে ঘুটা) খেয়ে এসে আরাম করে শুলাম, দিলেন তো খিদেটা চাগিয়ে। ডিসির প্ল্যান বাদ্দিয়ে এখন বোস্টন আসতে ইচ্ছে হচ্ছে।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
বলেইতোছি, চলে আসেন; না এলে ক্যাম্নেকি?
তা দাদা আপনার সাড়ে ছাব্বিশখানা পোস্ট হয়েছে? নাকি তার আগেই সচলত্ব পেলেন? আপনার পরিসংখ্যান কি বলে?
আহা! কত্ত খাবার। বড় ভালো লাগলো। দেখেও শান্তি।
সচলত্বের অভিনন্দন। এই নিয়ে দু'বার জানালুম।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
আরে, ধন্যবাদ! কিন্তু দাদা, আজকাল ইউজার প্রোফাইলে আর পোস্টকাউন্ট এসব দেখায় না, বড়ই গিয়ানজাম! তবে সাড়ে ছাব্বিশখানা অনেকদিনই হয়ে গেছিল, ফ্যাসিস্ট মডুরা নিশ্চয়ই নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছিল তাই আপগ্রেড করে নি!
এই নিন, আবারো ধন্যবাদ, এই নিয়ে তিনবার!
এই ব্যাটাকে আবার অসচল করে দেওয়া হোক...
ভোরসকালে খালিপেটে এইটা পইড়া মেজাজ বিলা...
যাহোক, সচলাভিনন্দন... এইবার ঘুম দেন
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
থেঙ্কু...
সচলত্বে অভিনন্দন, তবে পোস্টে মাইনাস। কয়দিন হলো খাবারের ব্যাপারে সংযত হওয়ার চেষ্টায় আছি
থ্যাঙ্কু ভাই। কিন্তু ডায়েটিং করেন নাকি?
ডায়েটিং করা কি এত সোজা? ওয়েট এই মুহূর্তে এক দশমিক শূন্য নয় কুইন্টাল। উচ্চতা একশত আশি সেন্টিমিটার। এবার বুঝে নেন
আরে! আপনাকে হাচলত্বের অভিনন্দন।
(আমি কিন্তু সতেরো বা ঐরকম পোস্টে সচল হয়েছি, তবে আতিথ্য ঘুচে হাচলত্ব হাসিলে বেশ সময় লেগেছিল মনে আছে... ! )
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ধন্যবাদ
মন্তব্য লাফাং___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ভাগ্যিস ভরপেট খেয়ে পোষ্টে চোখ ঘুরিয়েছি। নইলে আজকে খবরই ছিল। পোষ্টা পুরো পড়লাম না। পরে খাওয়ার জন্য অর্ধেক রেখে দিলাম।
সচলত্বের অভিনন্দন।
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
ধন্যবাদ, ধন্যবাদ! কিন্তু ভরপেট খেয়ে চোখ বুলোলে কি আর এগুলোর মজা পাবেন?
ইয়ে... সচল কি মন্ত্রে হয় দাদা ? সে কি খায় নাকি মাথায় দেয় ? ( দীর্ঘশ্বাস ফেলার ইমো )
দেশে বসে এইসব দেশি বিদেশী খাবার দেখে শুধু 'আঙ্গুর ফল টক' বলেই ক্ষান্ত দিতে হল ।
যাহোক, অভিনন্দন ।
থ্যাংকু! সবাইকে নিয়মিত এরকম ভালোমন্দ খাওয়াবেন, তা হলেই হবে।
প্রথম কয় লাইন পড়ে বলতে ইচ্ছে হয়েছিল, Et tu, Kaustubh(e) । পরে চরম স্বস্তি নিয়ে দেখলাম লেখার বিষয় অন্য...।
সচলত্বে অভিনন্দন। লেখা বরাবরের মতই চমৎকার।
হেহে, কী মনে করেছিলেন? আমারে কি ননীচোরা দাস ঠাউরেছিলেন নাকি?
ধন্যবাদ দাদা।
সচলত্বে অভিনন্দন।
মনির হোশেনের দলে না ভিড়ে আমার দলে থাকলে সময়মত বিয়েশাদি হতো। রান্নাবান্না নিয়েও এত গবেষণা করা লাগতো না।
ধন্যবাদ, ভিড়ে গেলুম। দলিলপত্র দিন, সই করে দিচ্ছি। দলের অফিস-টফিস কোথা?
(সাত লাইনের একটা মন্তব্য করার পরে এন্টার চেপে দেখি লগাউট হয়ে গেসি। এইটা কীরকম বিচার !! ধুত...)
এককথায়, সচলাভিনন্দন। সচল পরিবারে স্বাগতম।
আহারে! সচলের কলকবজা নিয়মিত টাইট না দেওয়ার জন্য মডুদের ব্যাঞ্চাই!
আচ্ছা, কি লিখেছিলেন কানে কানে কন। ধন্যবাদটাও কানে কানে দিতাছি।
হরেক রকম খানা দেখে যাই
রসনার জলে টেবিল ভেজাই
ভুলেও কখনো যদি খেতে চাই
আমার কপাল মন্দ!
গিন্নী বলেন প্রেশার বেড়েছে সকল খাবার বন্ধ।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
আমি জানতাম, জানতাম আসবে। যে-হারে আপনি এগুচ্ছিলেন, আমি মোটের ওপর নিশ্চিতই ছিলাম। যাহোক, আপনার কাছে গিয়ে খাওয়ার সাধ্য এজীবনে নেই, আমার বংশাবতংসেরা যেতে পারে। আর আপনি আমাদের এপারে এলে পরে আপনাকেও আগাম কিছু খাইয়ে রাখা যায়।
ষুবেশ্চা।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
ডোন্নোবাড।
কী আসবে জানতেন, এতসব খাবারদাবার?
সচলাভিনন্দন! এইবার হাইবারনেশনে যেতে পারেন।
***************************************************************
আম্রিকা দ্যাশটা কেমুন জানি। ঐখানে কি কোনো ময়-মুরুব্বী নাই? এই পুলাটারে বিয়া দিতাছেনা ক্যান? বামুনের পুলা সাত্ত্বিক আহার রাইখা কী সব হাবিজাবি খাইয়া বেড়াইতাছে!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
হ, সে তো যামুই, কেবল ভালো রিটায়ারমেন্ট প্যাকেজের সন্ধানে রয়েছি...
ধন্যবাদ, এত চিন্তা আর কে করে বলুন! এই তো তাসনীম ভাই, মুর্শেদ ভাই, সব মুরুব্বিরা রয়েছেন, কেউ কি এট্টুকুও উদ্যোগ লিতেছে?
[দী-ই-র-ঘ শ্বাস]...
বাসায় আছে কয়েকটা আলু, আর কাগজী লেবু।
আলুপোড়ায় লেবু মাখিয়ে লেখাটা পড়তে পড়তে খেয়ে দেখবো কি না ভাবছি।
দুর্দান্ত বর্ণনা রে ভাই।
সচলত্বের অভিনন্দন !!!
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
থ্যাংকু, থ্যাংকু। কী আর বলি, এইসব খাবারদাবার তো কেবল লেখাতেই, আমিও ডিনার করেছি কেবল একখানা ভুট্টা নুনলেবু দিয়ে সেঁকে...
কিন্তু আপনার তো সেই একজন আছেন না, যিনি ধরে আনতে বললেই রেঁধে আনেন...?
অভিনন্দন!!
রান্নাবান্নার টাইম নাই। মুরগীর সিনা আর আলুভাজা খাই .....
অজ্ঞাতবাস
ধন্যবাদ। আমারো ডিনার ছিল একখানি ভুট্টারোস্ট কেবল।
এক. "ম্মাহ্! আমার খুদা পেয়েচে ম্মাহ্... কিচু খেতে দাউ না!"
দুই. ঝেড়ে মাইনাস! এইভাবে একটা না দুইটা না, সময়ে-অসময়ে সসব মহাদেশের সব খাবারই তুলে আনতে হবে?
তিন. আমি মেহিকান ভালু পাই... কিন্তু খাবার সুযোগ পাই তো ছ'মাসে-বছরে একবার!
চার. আমি লবস্টার খাবু...
পাঁচ. মাইনাস... তারপরে আবার মাইনাস... তারপরে আরো মাইনাস... (রিপিট)
আর লেঞ্জা খুলে যাবার অভিনন্দন, এখন তুমি মর্কট থেকে শিম্পাঞ্জি হয়ে উঠেছ, অতএব শীতনিদ্রায় যেতে অনুমতি দেয়া হলো... (স্বগতোক্তি - পোলাটা ভালাই আসিল... চুক চুক... )
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
এক. কিচুই না পেলে ভ্যাবাচ্যাকা খাও! বা থতমত...
দুই. হ্যাঁ তো, নইলে সব মহাদেশের লোক ইন্টারেস্টেড হবে কেন?
তিন. চইল্যা আসো... অন্নেক অন্নেক খাইতে পাবা!
চার. তিন দেখুন...
পাঁচ. কী আর কমু...
আহা, কি সুমিষ্ট বিশেষণ! দিলটা খুশিয়াল হয়ে উঠল...
সচলত্বপ্রাপ্তিতে দ্বিতীয়বারের মত অভিনন্দন।
আমার ভোজনবিলাসিতার কথা আর তেমন বললাম না, শুধু ছবিগুলোতে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারলাম না এতটুকু বলি, জিহ্বা অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ছে!!!!!!
কল্যাণ হোক।
হেঁ হেঁ, ধন্যবাদ। পানাহারে তো এটুকু হয়েই থাকে...
অভিনন্দন !
পোস্টে জাঝা, তবে মনটাও একটু খ্রাপ হল। এখন কলিগদের সাথে একটা অখাদ্য ইরানি দোকানে খেতে যেতে হবে
আহারে! ইরানি খাবার তো ভালোই হয় জানতাম, এইটা অখাদ্য?
আর ধন্যবাদ!
সচলত্বের জন্য মোচি আর ব্ল্যাকফরেষ্ট সহযোগে অভিনন্দন পোষ্টে (গুড়)
উল্স্! আপনার জন্য অনেক
এতো বড় ঘটনা ঘটে গেলো আর আমি টের পেলাম না! যাই হোক, অভিনন্দন। যারা আপনার সচলত্বের জন্য মডুদের কাছে সুপারিশ করেছিল, তাদের আশা করি ভুলে যাবেন না এবং দেখা হলে এক্সট্রা খাতির করবেন। আবারো অভিনন্দন জানাই। আর লেখা ভালো হয়েছে।
লিশ্চয় লিশ্চয়! চলে আসুন, খাতিরের টপিং সহযোগে ধন্যবাদ আইসক্রিম আপনার জন্য বরাদ্দ রইল।
স্যামনের বিরিয়ানী?
হুঁ হুঁ... হয় হয়... zaন্তি পারেন না...
খাড়ান! আইতাছি!
আর সচলত্ব এর জন্য অভিনন্দন, আর শুভকামান!
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
আসেন আসেন, জপযন্ত্র আর ছাংয়ের বোতলটা নিয়ে চলে আসেন!
আপনার জন্য ধন্যযোগ!
কে যেন ছাং খায়? মিগু?
বেচারা মিগুকে এর মধ্যে টানা কেন? এমনিতেই বরফের দেশ তিব্বত থেকে মরুর দেশ কুয়েতে গিয়ে সে কষ্টে আছে...
হায় হায়, আপনি তো এখন মনের সুখে লেপমুড়ি দিয়ে ঘুম দিবেন। এমনটা যাতে না হয়।
আর খাওয়া-দাওয়া নিয়ে এমন পোস্ট দেখে বেশ লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাসের জন্ম দিলাম। কদিন যাবত ইন্স্ট্যান্ট নুডলস আর ডিম ভাজির উপ্রে আছি। যে হারে ডিম খাই আমার কাছে কানাডার পোল্ট্রি শিল্পের কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
হুঁহুঁ, ডিম, কলা আর পাঁউরুটি হচ্ছে মহান করুণাময় সৃষ্টিকর্তার অপার করুণার সাক্ষাৎ নিদর্শন। আর কেউ একমত হোক বা না হোক, যে ছাত্রের (গ্র্যাড বা আন্ডারগ্র্যাড) বাড়ি ছেড়ে বাইরে থাকতে হয়েছে সে একমত হবেই...
আবার জিগায়!
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
"ঘনিয়ে এল ঘুমের ঘোর,
গানের পালা সাঙ্গ মোর।"
শুধুই ডিম খান? আর ডিম যারা পাড়ে তাদের খান না?
@ কৌস্তুভ, গানের পালা সাঙ্গ হলে খবর আছে
ডিম-পাড়নেওয়ালীদের কব্জা করতে এখনো একটু বেগ পেতে হয়। ডিম ভাজিতে সময় কম লাগে।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ঐ তো, গরীবের কথা বাসী হলেই ফলে। এত করে ভেটো দিলাম, কেউ কানে নিলো না, সচলত্বের প্রথম দিনেই এখন ঘুমাবার কবিতা আওড়াচ্ছে।
তা বটে। সেইজন্য আমরা প্রায়ই শর্টকাটে চিকেন রান্না করি, ম্যারিনেট করে সেটাই সোজা মাইক্রোওয়েভে ঢুকিয়ে রান্না করে ফেলি।
আচ্ছা !
কৌস্তুভ, সচল হইলা শেষ পর্যন্ত!
ছেলেটা তুমি লেখালেখি করতা। আমরা পড়ে আরাম পেতাম। সেইটা মডুদের সহ্য হইলো না। দিলো তোমারে গাচাং কইরা। অনেক আশা ছিলো তুমি অন্তত সচল থাকবা। সেই তুমিও অচল হয়ে গেলা। কি আর করা...
সচলত্ব এর জন্য অভিনন্দন!
--------------------------------------------------------------------------------
ভাবী, আপনি তো অনেক দিন থেকেই দাবী করে আসছিলেন, যাতে আমাকে আপগ্রেড দেওয়া হয়... এ আপনারই দয়ায় হয়েছে, বলা যায়...
মুড়ি খাই (জিভের পানি কিছুতেই সামলানো যাচ্ছেনা) :(
তাই খান ভাই
কী আর কই, এই রাতবিরেতে ঢুকলাম নিজের পোস্টটায়, উপর থেকে নিচে নামতে নামতে নিজেরই এত খিদে পেয়ে গেল যে কী বলব!
হুঁ! আবার ঢুকলাম এই পোস্টে - তবে এবার রেডি হয়েই। একবাটি হান্ডিকাবাব আর একগাদা গরম রুমালি রুটি নিয়ে বসেছি। খেতে খেতে পড়বো। সো, পোস্ট পড়তে গিয়ে এবার আর খিদে পাওয়ার বা নোলা সুড়সুড় করার বা খাওয়া নিয়ে কমেন্ট করতে গিয়ে কীবোর্ড ভেঙ্গে যাওয়ার ভয় নেই।
****************************************
উল্স্!
বাজে পোস্ট
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
আমার মনে হয় বাঙালী তথা ভারতীয় উপমহাদেশের খাবারের চেয়ে ভাল কিছু আর এই দুনিয়াতে নাই। ইউরোপের খাবার ভাল হবে কেন? ওই ব্যাটা ভাইকিং,সাক্সন সহ আরো কিছু বর্বর অসংস্কৃত জার্মানিক জাতের সংমিশ্রণ যারা মশলা চোখে দেখেনি আগে খেয়েছে সেদ্ধ করা খাবার। আচ্ছা ভাইকিংরা নাকি রান্নাই করতে পারত না? তবে কি কাঁচা মাংস খেতে নাকি শুধুই পানি দিয়ে সেদ্ধ করে?
নতুন মন্তব্য করুন