একদম এইরকমই উৎসাহ নিয়ে শিকাগোর উদ্দেশ্যে প্লেনে চড়ে বসেছিলাম। মনে আরো ফুর্তি ছিল, কারণ আমার পুরো প্লেনভাড়া ছিল মাত্র ১০ ডলার – ট্যাক্সটুকু – আসলটা ফ্রিকুয়েন্ট-ফ্লায়ার জমিয়ে কাটা। কিন্তু আমার প্ল্যানটা ছিল একটু ঘুরপথ। আমার এক বন্ধু পড়ে পারডু ইউনি’তে, সেখানেই প্রথমে গিয়ে, তার এবং এক সিনিয়রের সাথে শিকাগো যাওয়া হবে পরের দিন, ওই দাদাই ড্রাইভ করবে।
সেইখানে যাওয়া এক হ্যাপা। প্লেনে করে ইন্ডিয়ানাপোলিস শহরে যাও – তারও ডিরেক্ট ফ্লাইট নেই, ডিসি’তে ভেঙে যেতে হবে, তারপর আবার শাটল বাস ধরে দেড় ঘন্টা গিয়ে ওদের টাউন। লাফিয়েৎ শহরের লাগোয়া ওদের ইউনি, আসলে একটা ইউনিভার্সিটি টাউন – ঠিক টাউনও না, একটা পাড়াগাঁর উন্নত সংস্করণ বলা চলে।
**********
এসব ছোট টাউনে কোথাও যেতে হলে গাড়ি ড্রাইভ করা ছাড়া উপায় নেই। আমি আবার বড় শহরের আরামে থাকি, কোথাও যেতে হলে দুপা হাঁটলে বা বাস/সাবওয়ে ধরলেই হয়ে যায়। সেইবার গেছিলাম ভার্জিনিয়ায়, পাহাড়ের কোলে ব্লুফিল্ড নামে এক গাঁওগেরামে। একটা টিলার মত জায়গার উপরে জিওলজিস্ট দাদার বাড়ি (ওই জন্যই ওই বিরান জায়গায় পড়ে থাকতে হয়)। একদিন আমায় বলল, চল স্টারবাকস থেকে তোকে কফি খাইয়ে আনি।
আমি বললাম, বেশ; বলে চটি গলাতে যাচ্ছি, শুনলাম, গাড়িতে করে যেতে হবে।
সেকি, কদ্দূর?
না, এই তো, একটুখানি।
তাহলে হেঁটে গেলেই হয়!
না না, হাঁটা হলে দূর আছে। চলই না গাড়িতে।
সেই একটুখানি যখন ঘড়িতে পাক্কা আধঘন্টা হয়ে গেল, তখনও জিজ্ঞেস করে শুনি, ওই একটুখানি। শেষে পৌঁছে বুঝলাম, লাগোয়া দুইখানা টাউন মিলিয়ে এই একখানা স্টারবাকস পুরো এলাকায়, তার পার্কিং লট কোনো সুপারমার্কেটকেও হার মানায়। লোকেও সেখানে পৌঁছে তাই বডি ফেলে দেয়।
সেই ইস্তকই আমি আম্রিকার ছোট টাউনগুলোকে সন্দেহের নজরে রাখি। আর এমনই নসিব, এবারও ফ্যাসাদের ব্যত্যয় হয় নি।
**********
যেদিন ভোরে প্লেন ধরব, তার আগের দিন সন্ধ্যা থেকেই প্রবল বজ্র-বিদ্যুৎ-ঝড়-বৃষ্টি। রাত্তিরে যদিও থেমে গেল, প্লেনের সাইটে ঢুকে দেখি ফ্লাইট ক্যানসেল। আমাকে রিবুকিং করে দিয়েছে, বস্টন-ডিসি-ইন্ডি’র বদলে বস্টন-শিকাগো-ইন্ডি। তাই সই। প্লেন ঠিক সময়েই ছাড়ল, কিন্তু বলল, শিকাগোর দক্ষিণে খুব ঝড়-বৃষ্টি-ওয়ালা মেঘ, তাই আমরা ওদিক দিয়ে না গিয়ে ঘুরপথে উত্তর দিয়ে যাব, ঘন্টাখানেক বেশি লাগবে। আপনাদের কানেক্টিং ফ্লাইট নিয়ে চিন্তা করবেন না, ওগুলোও মনে হয় ডিলে’ই হবে। আবার শিকাগোর উপর পৌঁছে শুনলাম, ঝড়ের পর এখন আকাশে খুব ভিড়, নামতে আরো আধা ঘন্টা দেরি হবে।
এ সবের পরে যখন নামলাম, শুনি আমার ইন্ডি’র প্লেনও ক্যানসেল। তখন বাজে সকাল নটা, আর রাত নটার আগে কোনো প্লেনে সিট নেই। সেই প্লেন ইন্ডি পৌঁছবে রাত ১১টায়, ততক্ষণে পারডু’র শেষ শাটল বাসও ছেড়ে গেছে। ওদের গিয়ে বললাম, এতক্ষণ ওয়েট করতে পারি না, আমায় আগের কোনো প্লেনের ওয়েটিং লিস্টে তুলে দিন।
বেলা বারোটায় একটা প্লেন ছিল, সেইটায় তুলে দিল। দেখি, প্লেনে খালি সিট আছে চারটে, আমি প্রায় বারো জনের পরে। হবেই, ক্যানসেল হওয়া প্লেনের অনেক যাত্রীই তো এটা ধরতে চাইবেন। আর এই তালিকাতে ফ্রিকুয়েন্ট ফ্লায়ার-রা অগ্রাধিকার পায়, কিন্তু এই এয়ারলাইন্সে আমি আগে যাই-ই নি।
তাও শুনলাম, যে প্লেন যাবে, সেই প্লেন অন্য এক শহর থেকে আসবে, আর তারও আসতে হবে অনেক দেরি। পিছিয়ে সময় দিল একটা। তারপর আরো পিছিয়ে করল দেড়টা। ওইদিন ইউনিতে এক বাঙালি প্রফেসর আমাকে আর বন্ধুকে লাঞ্চে খাওয়াবেন বলেছিলেন, তাই বন্ধুকে ফোন করে বললাম ক্যানসেল করতে। শুনে প্রফেসর বললেন, শিকাগো থেকে পারডু'তে বাস আসে, ভাড়া অনেক বটে, কিন্তু বেশি ঝামেলা হলে ওকে ওতেই চলে আসতে বলো। প্লেন আর শাটলের টিকিটের পয়সাটা যাবে বটে।
**********
তখন ঘুরতে ঘুরতে দেখলাম, বেলা একটায় আরো একটা প্লেন আছে শিকাগো থেকে ইন্ডি। সেটায় ওয়েটিং লিস্টও খুব ছোট, সবাইকে বারোটার প্লেনের লিস্টেই রাখা হয়েছে বলে। ওদের গিয়ে বললাম, আমায় ওইটায় ট্রান্সফার করে দিন। তখন দেখি, ওটায় তিনটে সিট খালি আছে, আর ওয়েটিং লিস্টে আমার র্যাঙ্ক দুই। নিজের বুদ্ধিতে নিজেই প্রসন্ন হয়ে গোঁফে তা দিয়ে নিলাম দুইবার।
এবার সেখানে গিয়ে বসে আছি, শুনি ঘোষণা হচ্ছে – বন্ধুগণ, আনন্দের খবর, আমাদের প্লেন এসে গেছে... কিন্তু আমাদের বিমানকর্মীরা এখনও আসেন নি – তাঁরা অন্য একটি প্লেনে আসছেন, যেটি ডিলে হয়েছে... আমরা তাই ছাড়ার সময় দশ মিনিট পিছিয়ে দিলাম।
সেটাও পিছাতে পিছাতে হল দেড়টা। ওই প্লেনটা গেল ছেড়ে, আর এইটার ছাড়ার সময় আবারও পিছিয়ে হল দুটো। তখন যা বুঝলাম, ওটার ওয়েটিং লিস্টের সব লোকজন এবার এইটায় ট্রান্সফার হয়ে যাবে। তাই হল, আমি এক ধাক্কায় দশে চলে গেলাম। রেগেমেগে ভাবলাম, দুচ্ছাই, এটাতেও না পেলে বেরিয়ে পড়ে মুর্শেদ ভাইয়ের বাসাতেই চলে যাব, পরদিনই তো সেই শিকাগো আসতাম আমরা!
কিন্তু দেখলাম, অবশেষে ভাগ্য সুপ্রসন্ন – ওই প্লেনটায় যাঁরা কনফার্মড ছিলেন, তাঁরাও অনেকে কানেক্টিং ফ্লাইটের ঝামেলায় এসে পৌঁছতে পারেন নি সময়ে। তাই অনেকগুলো বুকড সিট খালি হল, আমি ঠাঁই পেয়ে গেলাম ওই প্লেনেই।
**********
কিন্তু দ্বিতীয় দফার ঝামেলার সবে এইটা হল শুরু। উঠে দেখি, প্লেনের মধ্যে কলকাতার পাবলিক বাসের মত গরম – এত লোকের ভিড় আর ঘাম। পাইলট ঘোষণা দিলেন, ভাইসকল, আমরা গরমের জন্য খুব দুঃখিত, কিন্তু আমরা এখন ইঞ্জিন বন্ধ করে রেখেছি, তাই এসি চালাতে পারছি না, আপনারা রোদ এড়িয়ে গরম কমাতে জানলাগুলো বন্ধ করে দিন, উপরের এয়ার ভেন্টিলেটরটা খুলে দিন, (আর দরকার হলে হাতের ম্যাগাজিনটা দিয়ে হাওয়া করুন, এটুকুই বলতে বাকি রেখেছিল)।
এভাবে বসে আছি, আড়াইটে হল। তখন আবার ঘোষণা হল, বন্ধুগণ, আমরা আবারও খুব দুঃখিত, কিন্তু আমরা এখনও ডিপারচার কার্ড পাইনি (সেইটা নাকি একটা পারমিশন যেটা এয়ারপোর্ট ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা দেয়), তাই বোর্ডিং হয়ে গেলেও ইঞ্জিন চালাতে বা প্লেন ছাড়তে পারছি না। আরেকটু কষ্ট সহ্য করুন।
অবশেষে বেলা তিনটের সময় বাবুদের ছাড়ার মর্জি হল। আবহাওয়া ভাল ছিল না – ছ্যাকরা ছ্যাকরা মেঘ, তার ফাঁক দিয়ে ইন্ডিয়ানা রাজ্যের মাঠ-ঘাট – রাগিব ভাইয়ের বলা ভুট্টাক্ষেত-পেঁয়াজক্ষেত এসব দেখতে লাগলাম। আর খালি খালি এয়ার পকেট না টারবুলেন্সে পড়ে ঠেলাগাড়ির মত ছোট্ট প্লেনটা ঝাঁকানি খেতে লাগল। আবারও ঘোষণা হল, হে যাত্রীবন্ধুরা, যেহেতু এটা মাত্র সাঁইতিরিশ মিনিটের ফ্লাইট, এবং প্লেন যে-কোনো সময় টাল খাচ্ছে, তাই আমরা এই প্লেনে যে বিমানসেবিকাদের কার্ট নিয়ে এসে ফ্রি পানীয় দেওয়ার কথা সেটা বন্ধ রাখছি। আপনারা আরেকটু কষ্ট করে বসে থাকুন, বাইরের শস্যশ্যামলা শোভা দেখুন, আমরা এখুনিই পৌঁছে যাব।
মনে মনে বললাম, বাহ রে, নেটে একসময় বিমান বাংলাদেশ শুনে কত হেসেছি, আমেরিকায় বসে যে এরকম বিমান কাঙালদেশ-এর অবস্থায় পড়তে হবে তা তো কল্পনাতেও আনি নি। তখনও তো জানি না, এতেও শেষ নয়।
সাড়ে চারটে নাগাদ (ইন্ডি’র স্থানীয় সময় শিকাগোর চেয়ে এক ঘন্টা এগিয়ে) ইন্ডি এয়ারপোর্টে ল্যান্ড করলাম। রানওয়ে থেকে টার্মিনালটা দেখে ধড়ে প্রাণ এল, কারণ তখন প্রবল খিদেয় মরছি। প্লেন ঘুরেটুরে যখন গেটে এসে দাঁড়াল, তখন আবার ঘোষণা হল, হে অবলা যাত্রীগণ, আমরা যারপরনাই দুঃখিত, কিন্তু যে সিঁড়িটা আমাদের প্লেনে আসার কথা, সেটা এখানে না এসে আমাদের পাশের প্লেনে লাগানো হয়ে গেছে। অতএব একটু অপেক্ষা করুন, ওদের সমস্ত প্যাসেঞ্জার নেমে গেলে তারপর আমরা নামতে পারব।
তখন মনে হল, ধুরো, <সেন্সরড>, তিব্বতে টিনটিনের ক্যাপ্টেন হ্যাডকের মত সটান লাফিয়েই টারম্যাকে নেমে পড়ি, নাহয় একটু হাত-পা ছড়বে। তাও বসে বসে সোয়া পাঁচটায় শেষমেষ নামার উপায় হল। নেমেই আগে গপাগপ কিছু পেটে পুরলাম, তারপর আরো অপেক্ষা করতে করতে সাড়ে ছটার শাটল ধরলাম। সুন্দরী কৃষ্ণাঙ্গী মহিলা ড্রাইভার অতি মিষ্টভাষী, আমি অনেক পরের শাটল ধরছি তাতেও তাঁর কোনো আপত্তি নেই। সন্ধ্যা আটটায় পৌঁছালাম পারডু। বুঝলাম, শিকাগো আমার মত ভালোছেলের উপযুক্ত শহর নয়, টিনটিনের মত ডেয়ারডেভিল ছেলে হলে নাহয় একটা প্লেন চুরি করেই চালিয়ে উড়ে যেতে পারত।
**********
পরদিন, শনিবার, ঘন্টা-আড়াই ড্রাইভ করে শিকাগো পৌঁছনো তো গেল, কিন্তু শহরে ঢোকার বড় রাস্তাগুলোয় বিশাল জ্যাম। ডানদিকে দারুণ উঁচু-উঁচু সব বাড়ি – হ্যানকক টাওয়ার, সিয়ার্স টাওয়ার (নতুন নাম উইলিস টাওয়ার), আরো অজস্র – আর সামনে বিশাল চওড়া সব এক্সপ্রেসওয়েতে অগুন্তি সব গাড়ি সারি সারি দাঁড়িয়ে রয়েছে বা ঢিকির ঢিকির করে এগোচ্ছে। সেখানেও আমাদের লাঞ্চ খেতে তাই হয়ে গেল চারটে।
এই ট্রিপে যে দাদাকে আমরা মুরুব্বি পাকড়েছিলাম, তিনি শিকাগো আগেও এসেছেন, আবারও আসবেন, তাই দর্শনীয় বস্তুতে তাঁর উৎসাহ কম, তাঁর লিপ্সা পাচনীয় বস্তুতে – আর তাছাড়া আমার সঙ্গীরা থাকেন গণ্ডগ্রামে, সেখানে বস্টনের মত দেশী-বিদেশী সুখাদ্যের নিতান্তই অভাব। তো দেখলাম, আমাদের বেড়ানোর প্ল্যানটা মূলত হয়ে দাঁড়াচ্ছে ফুড ট্যুরিজম। তাই সই, খানাপিনায় তো আমার আপত্তি কোনোকালেই ছিল না। তবে যা বুঝলাম, শিকাগো বিশাল শহর, অজস্র দর্শনীয় জায়গা-বাড়ি, তায় ডাউনটাউন-সাবার্ব’য়ে ঘুরে ঘুরে বিদেশী সব রেস্তোঁরায় হানা দিতে গিয়ে অনেক কিছুই বাদ যাবে। তা কি আর করা। বাজেটের মধ্যে হোটেল ধরতে গিয়ে থাকতে হয়েছে এয়ারপোর্টের কাছে, সেটাও শহর থেকে ট্রেনে প্রায় ঘন্টাখানেক দূর, তাতেও অনেকটা সময় যাবে।
প্রথম দিন দেখতে গেলাম একটা অপেরা – শিকাগো আর নিউইয়র্কের অপেরা বিখ্যাত কিনা। সাউন্ড অফ মিউজিকের স্টেজ-উপস্থাপনা – তিন ঘন্টা লম্বা, সিনেমাটার মতই। অত্যন্ত সুনির্মিত সেট ও সাজসজ্জা, কিন্তু আফসোস – মূল চরিত্রে যে মহিলা, তাঁকে হিরোইন না ডেকে জ্যাঠাইমা ডাকলে ঠিক হয় – এবং তাঁর অভিনয়ও অত্যন্ত খারাপ – চড়া দাগের। তবে তাঁর কন্ঠও গানে অনেকদূর চড়তে পারে, এবং অপেরাতে ওইধরনের গানেরই খুব দাম, তাই বোধহয় তাঁকে প্রধান রোল দেওয়া।
**********
দ্বিতীয় দিন খুচখাচ ঘোরার পাশে আমরা নেভি পিয়ার থেকে একটা বোট ট্রিপে লেক মিশিগানের উপর খানিকদূর ঘুরে এলাম। বিকেলের আলোয় শিকাগো স্কাইলাইনের সিল্যুয়েট দেখতে খুবই ভালো লাগল। সমুদ্রের মত বিশাল লেকের উপর বেশ ঠাণ্ডা হাওয়া – ওরা নৌকাতেই অনেক কম্বল রাখে যাত্রীদের জন্য। ভালোরকম দোলা খেতে খেতে মজায় ঘুরে এলাম। ওইদিন মুর্শেদ ভাইয়ের সাথে দেখা হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ওনারা জ্যামে ফেঁসে গিয়ে ডাউনটাউনে ঢুকতেই পারলেন না। পরের দিন লাঞ্চে তাই দেখা হল। বেশি কথা হল না অবশ্য, অফিসের তাড়া থাকায়।
**********
আমরা হোটেল থেকে ডাউনটাউনে আসার পথে লেক শোর ড্রাইভ ধরতাম – মিশিগান হ্রদের পাশ দিয়ে ওটা উত্তর থেকে শহরে ঢোকে, অনেক গাছপালা আর পার্কের ফাঁক দিয়ে রাস্তার সোজাসুজিই স্কাইরাইজগুলোকে দেখা যায়, দারুণ লাগে।
চলে আসার দিন সকালে চড়লাম হ্যানকক টাওয়ার। এইটা মিশিগান লেকের পাশে, তাই ভিউ অনেক ভালো – সিয়ার্স টাওয়ার হল ডাউনটাউনের মধ্যিখানে, তাই চারদিকে আরো উঁচু উঁচু বাড়িই কেবল দেখা যায়। সেখান থেকে লেক মিশিগানের যা চমৎকার দৃশ্য দেখতে পেলাম, সে আর বলে বোঝানো যায় না, নিজে চোখে কোনো রোদ ঝলমলে দিনে দেখতে হয় কেবল। অনেকক্ষণ ধরে অনেক ফটো তুলে তবেই আশ মিটল।
**********
ভবেছিলাম ভালোয় ভালোয় শিকাগো ভ্রমণ শেষ অন্তত হল। কিন্তু ছাড়ার আগে শিকাগো একবার মরণকামড় দিয়ে গেল, আক্ষরিক অর্থেই।
এই ট্রিপে আমি ছিলাম টাকাপয়সা-খুচরোর ক্যাশিয়ার। তাই টোল বুথগুলোতেও খুচরো দেবার ভার আমারই ছিল। শিকাগো থেকে বেরোবার পথে হাইওয়েতে একটা টোল বুথের সামনে ওই দাদা গাড়ি দাঁড় করালেন, কিন্তু দেখলাম যে মেশিনটা আমার জানলা থেকে বেশ খানিকটা দূরে, স্রেফ হাত বাড়িয়ে পয়সা ফেলা যাচ্ছে না। তাই জানলা দিয়ে একখানা হাত, একখানা মুণ্ডু, এবং একখানা ধড়ের অর্ধেকটা বের করে খুচুং খুচুং করে কয়েন ফেলতে লাগলাম। এক টাকা কুড়ি পয়সা – শেষ কোয়ার্টার-টা ফেলার পর বিরাট ঝনঝন করে শব্দ হয়ে পাঁচ সেন্ট নিচের বাটিটায় চেঞ্জ হিসাবে এসে পড়ল। হাত বাড়িয়ে যেই সেখানে খাবলিয়েছি, দাদা গাড়িটা দিলেন ছেড়ে – যেহেতু সামনের স্ক্রিনে ‘ডান’ বলে দেখিয়েছে।
আমার হাতে তখন পয়সাটা আসেও নি, রিফ্লেক্সে বাটিটাই খামচে ধরলাম। এক ভগ্নাংশ সময়ের জন্য মনে হল, মেশিনটা ধরেই ঝুলে পড়ি – পরের গাড়িটার বনেটে খসে পড়ব না হয়। পরবর্তী দ্রুতচিন্তায় মনে হল, অন্য হাতটা এবং ধড়ের বাকি আধখানা তো তখনও গাড়ির মধ্যে আছে – পয়সার মায়া অনেক আগেই ত্যাগ করেছি, তাই বাটিটাই দিলাম ছেড়ে – বড়লোকের কুকুর যেমন গাড়ির মধ্যে বসে মুণ্ডু (এবং বিশাল জিভ) বের করে চলেফিরে বেড়ায়, তেমনই মাথা-বাইরে অবস্থায় আমাকে নিয়া গাড়ি চলে গেল বেশ কিছুটা, তারপর ধীরেসুস্থে নিজেকে গাড়ির মধ্যে টেনে এনে কাচ তুলে দিলাম। শিকাগোর হাওয়া খাওয়া সাঙ্গ হল।
মন্তব্য
সব ভালো যার শেষ ভালো। বেঁচে গেছেন অল্পের ওপরে।
বইতে পড়েছিলাম, শিকাগো বাতাসের শহর, কেন বলে লেখায় সেটা খুঁজছিলাম...।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হ্যাঁ, বাপ-পিতেমোর পুণ্যফলে বেঁচে গেছি!
শিকাগোতে লেক মিশিগানের জন্যই বেশ খানিকটা হাওয়া আসে, তাই হবে। হাওয়ার কথাটুকুই পোস্টে বলেছি কেবল। বিস্তারিত এখানে বলছে। তবে শিকাগো এমন বেশি কিছু উইন্ডি না, বস্টন বা নিউইয়র্কেও হাওয়ার ঠেলা ভালোই।
বেশ চোস্ত একটা সচিত্র লিখা পেলাম। ক্যামেরার পেছনে যিনি ছিলেন তার কথা আর নাই বা পাড়লাম...কিন্তু যন্ত্রখানার নাম পরিচয় কি গো দাদা?
ঠ্যাংকু। আমার ক্যামেরাটা ডিএসএলআর না, পয়েন্ট-এন্ড-শুট ই। তবে সুপারজুম। Panasonic Lumix DMC-FZ28। আর দুয়েকটা বন্ধুর ক্যামেরায় তোলা, সেটা Panasonic Lumix DMC-FZ40।
FZ 28 দারুণ ক্যামেরা... তবে ম্যানুয়াল শুটিং সমস্যা করে বলে আমার পছন্দ হয়নি, বিশেষ করে ম্যানুয়্যালি ফোকাস করতে গেলে EVF-এ মাঝখানে একটা বৃত্তে জুম করে দেখায় - একেবারে অসহ্য।
প্যানাসোনিকের এই সুপারজুম সিরিজটা বেশ ভালো। আমি ম্যানুয়ালে অনেকই ছবি তুলি (দক্ষ ক্যামেরাম্যান, বুঝতেই পারছেন, ফাহিম ভাইয়ের মত অভিজ্ঞ ব্যক্তিও এসে প্রশংসা করে যান), ওইটা খুব একটা আরাম লাগে না, কিন্তু মন্দের ভালো আর কি। তা পয়েন্ট-এন্ড-শুট এর মধ্যে ম্যানুয়ালে আর কত অপশন দেবে, বলেন? ছোটবেলায় বাবার ভারী এসএলআর ক্যামেরাটায় নাক ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ফোকাস করতে খুবই আরাম হত, সে আর কে দেবে? তাহলে তো ডিএসএলআর কিনতে হয়।
এসএলআর বয়ে বেড়ানোর ঝক্কি-ঝামেলা কম নয়।আবার যদি এর মাঝে লেন্স পাল্টাতে হয় চরম বিরক্ত লাগে।ক্যামেরা সামলাতে গিয়ে অনুষ্ঠান আর পার্টির আনন্দ মাতি।তাই আমার DSLR বসে বসে ঝিমায়...আর আমি বুক পকেটে Sony TX9 নিয়ে ঘুরি...
তার চেয়ে বড় ঝক্কি ঝামেলা আছে... একবার গেছিলাম এক বিয়ে অ্যাটেন্ড করতে, দিবানিদ্রার বারোটা বাজিয়ে ঘুমিয়ে ঘুমিয়েই তৈরী হয়ে ঘুমাতে ঘুমাতেই গেছি, পোষাকখানা ঠিক বিয়েবাড়ির উপযোগী হয়নি, গাঢ় নীল টি-শার্ট আর কালো প্যান্ট... সেখানে ওয়েটার আমাকে ওয়েডিং ফটোগ্রাফার ভেবে প্রচুর ডিরেকশন আর ফ্রি ঝাড়ি দিচ্ছিলো... শেষটা ত্যক্ত হয়ে "আপনারই একটা ছবি তুলে দেই" বলে ঝটপট গোটাকয় তুলে ফেললাম...ব্যাটা ঘোড়েল, সাথে সাথে ব্যাপারটা বুঝে গেলো।
হই মিয়া, আপনে পারডু-রে পারদু লিখতেসেন ক্যান?
আর সিয়ার্স টাওয়ারের নাম এখন আর সিয়ার্স টাওয়ার নাই। উইলিস টাওয়ার।
লেখা ভালো হইসে। ছবিগুলিও সুন্দর!
আরে তাই তো! ঠিক করে দিচ্ছি। থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্কু।
হ্যাঁ, সেই নতুন নামকরণে নাকি অনেকে খুশিও নয়...
আমার 'সিয়ার্স টাওয়ার' শুনতেই ভালা লাগে। কৌ যদি উইলিস লিখতো, আমি প্রথম চোটে ধরতে পারতাম না, নামের ব্যাপারে আমার স্মরণশক্তি স্মরণীয়রকমের খ্রাপ!
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
শেষের বিপদটা আরেকটু হলেই বড়সড় বিপদে পরিনত হতে পারতো। হয়নি ভাগ্যিস।
হেঁ হেঁ, আসলে লেখার সময় একটু তো রঙ লাগাতে হয়ই...
প্রথমদিকে প্লেনের বর্ণনা পড়তে পড়তে টায়ার্ড হয়ে গেছিলাম, শেষে এসে পুষায়ে গেলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
দরকারী ফিডব্যাক, নজুভাই!
আমার আবার ঐ অংশটাই ভাল্লাগছে বেশী। যার যেটা জানা দরকার কয়দিন পরে কাজে লাগবে।
ছবিগুলো মারাত্তক সুন্দর হয়সে। ভাগ্যিস বেঁচে আসছেন, নইলে এত সুন্দর লিখাটা পড়া হোতনা ।
শুধু টিনটিনের ছবিটার জন্যেই তো তারা দাগিয়ে দেয়া যায়।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
হে হে, আম্মো টিনটিনের মস্ত ফ্যান, আসেন হাত মেলান!
দুইজনের পিছনেই লাইনে দাঁড়ালাম, টিনটিন ফ্যান হিসেবে...
দুপুরের ক্ষীণমেয়াদের একখানা ঘুমের মধ্যে কী একটা লালনীল স্বপ্নও দেখে ফেললাম। গালগলা চুলকে বের করা গেলো সেটা টিনটিনের 'নীলকমল'।
নিদ্রামগ্ন অবস্থাতেও শৈশব পিছু ছাড়ে না....
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আমার মত বুড়োরা তো শৈশব পার হয়ে এসেছে অনেক আগে - শৈশব তাদের পিছু না ছাড়তেই পারে... কিন্তু যেসব 'শিশুরা' এখনো শৈশবের মধ্যেই আছে তাদের 'পিছু ছাড়ার' প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে?
বেশ মজাদার লেখা, আপনার দেয়া খাবারের ছবিটার মতই।
ছবিগুলোও সুন্দর।
শেষের বিপদ থেকে বেঁচে গেছেন শুনে ভালো লাগলো। ভাল থাকবেন।
------------------------------------------
হায়রে মানুষ, রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলে ঠুস
তবুও তো ভাই কারোরই নাই, একটুখানি হুঁশ।
ওইটা পার্সিয়ান খাবার, ভালা পাইসেন তাইলে?
শিকাগো তাহলে আল কাপোনীয় অভর্থ্যনাই জানিয়েছে বলছো...
লেখাটা শুরুতে কানেক্টিং ফ্লাইটগুলো ধরতে গিয়ে বেশ ঝুলে পড়েছে। তবে তোমার বর্ণনা পড়ে আমার আবার মনে হলো, আমার আসলেই বড় শহর থাকবার জন্যে পছন্দ নয়। জ্যাম, খরচ, বেশি মানুষ। কিছুদিনের জন্যে বেড়াতে যেতে কিন্তু ভালো লাগে, তবে সব সময়ে থাকবার জন্যে নয়।
লাইট হাউজের ছবিটা হিংসা লাগিয়ে দিল! আমার কল্পনার শিকাগো টিনটিনেরটা না হলেও পুরানো গ্যাংস্টার সিনেমার অবশ্যই। তাই মুর্শেদ ভাইয়ের পোস্টে রাগিব ভাই যে বলেছেন শিকাগোর নতুন স্কাই লাইন দারুণ, সেটা এখন তোমার দেয়া ছবি দেখে বুঝতে পারলাম!
সিয়ার্স টাওয়ার শুনে ছোটকালে পড়া একটা ফ্যাক্ট মনে পড়লো, দীর্ঘদিন পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু বিল্ডিং-এর স্থান দখল করে থাকা টাওয়ারের একজন প্রধান স্থপতি ছিলেন একজন বাংলাদেশী, ফজলুর রহমান খান।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
ফজলুর রহমান খানের আবক্ষ একটা মূর্তি দেখেছিলাম ওখানে।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
মুর্তির সামনে তোলা ছবি আছে আমার।
শিকাগোর কোথাকার এবং কবেকার ঘটনা এটা? বিপদজনক জায়গাগুলো চিনে রাখা দরকার।
এটা কি গত শুক্রবারের ঘটনা? বন্ধুর ঢাকা থেকে আসার কথা ছিল রাত ১১টাতে। সেটা শেষ পর্যন্ত এসে পৌঁছে রাত সাড়ে চারটায়। ওইদিন নাকি অনেক ফ্লাইট উল্টোপাল্টা হয়েছে।
ছবিগুলো দারুণ লাগলো।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
না, তার আগের শুক্রবার। তবে ওইদিনও আবহাওয়া খারাপই ছিল, আমার এক বন্ধু ফ্লাই করছিল, তার কাছে শুনলাম।
হ্যাঁ, এই ট্রিভিয়াটা আমায় প্রথম বলেন বর্ষা'দি, তারপর বাকিদের শুনিয়ে আমি অবাক করে দিই
এইটা নজুভাইও বললেন, দরকারি ফিডব্যাক এগুলো। সেদিনটা আসলেই খুব লম্বা মনে হচ্ছিল, আর বিরক্তিকরও, কিন্তু সেই দুটো মুড লেখায় বোঝাতে গিয়ে লেখাটাই ওরকম হয়ে গেলে তো মুশকিল!
শিকাগো ডাউনটাউন এখন অনেকটাই নিরাপদ, তবে কিছু কিছু সাবার্ব এখনও রিস্কি আছে। নিচে যেমন রাতঃস্মরণীয় ভাই বললেন।
নিরাপত্তার কথাটা আমি আমার আগের মন্তব্যে লিখেও মুছে দিয়েছিলাম, বড় শহর ভালো না লাগার এটাও একটা কারণ, পৃথিবীজুড়েই মাগিং, ছিনতাই, ইত্যাদি বড় শহরে বেশি হয়, কিন্তু তাই বলে সবখানেই, সব সময়েই না...।
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।
লেখা আর ছবি, দুটোতেই ।
আমেরিকায় কখোনো না গেলেও শিকাগোর কথা আমার বিশেষভাবে সবসময় মনে থাকে কারণ আমার বন্ধু সঞ্জয় ওখানে একটা এ্যাক্সিডেন্টে পড়েছিলো। ও বেতন জমা হওয়ার দিন এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে বেরোলে পিছন থেকে ওর মাথায় ভারী ধাতব কিছু একটা দিয়ে আঘাত করে ওর ওয়ালেট, ঘড়ি, ফোন, সবকিছু নিয়ে নিয়েছিলো দুবৃত্তেরা। সঞ্জয় ব্রেইন হ্যামারেজ হয়ে তিনদিন কোমায় ছিলো। চার বছর হয়ে গেছে এ্যাক্সিডেন্টটার কিন্তু সঞ্জয় এখনও ভূগছে। মাঝে মাঝেই মাথায় প্রচন্ড যন্ত্রণা হয়, ঘুমোতে পারেনা, শরীর অসাড় হয়ে আসে। ওর আমেরিকান স্ত্রী লিসা কিন্তু ওকে খুবই সাপোর্ট করে। ওরা এখন সম্ভবত বোস্টনে থাকে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ইশ। শিকাগো এখন আল কাপোনের যুগ থেকে বেরিয়ে এসে অনেকটা নিরাপদ হলেও, দক্ষিণ বা পশ্চিমে দূরের দিকের সাবার্বগুলো এখনও বেশ রিস্কি বলে শুনেছি।
বড় শহরগুলো সব সময়েই রিস্কি। নেওয়ার্ক এয়ারপোর্টে আমার এক বন্ধুর থেকে টাকা ছিনতাই করেছিল ট্যাক্সি ড্রাইভার।
আরে তাও তো বিপদে পড়েননি। একবার মাঝ আকাশে খিদের চোটে বিশ্বখ্যাত এয়ারলাইন ফুড খেয়ে কিঞ্চিৎ সমস্যায় পড়ে টয়লেটের দিকে হাঁটা ধরায় সুন্দরী(!) বিমানবালা বলেছিলো, "দুঃখিত স্যার, আমাদের সবক'টা ট্যাঙ্ক ভর্তি হয়ে গেছে"। যা ভয় পেয়েছিলাম সেদিন!
হা হা হা... আপনার দেখি রোমাঞ্চকর জীবন!
ঝকমারি শিকাগো ভ্রমণ হলো যে! দুর্ঘটনাটা মারাত্নক হয়নি সেটাই অনেক। এখনো কিন্তু সির্য়াস টাওয়ারই রয়ে গেছে লেখায়। সাবধানে চলা ফেরায় মন দেবার বিনীত অনুরোধ থাকলো।
উইলিস সায়েবের নাম জুড়ে দিলাম
দ্যাখেন মাসিমণি, আমি খুবই সুবোধ বালক, সাবধানেই চলাফেরা করি। চারিদিকে শত্রুবেষ্টিত থাকলে কী করতে পারি?
আর বোঝেনই তো, গল্প করার সময় একটু রঙটঙ মাখিয়েই বলতে হয়...
ওরে, একটু না হয় উপদেশই দিয়েছিলুম তাই বলে মাসিমণি
থেঙ্কু পিপিদা
একেই বলে ভ্রমণ ব্লগ! এক কথায় দুর্ধর্ষ!
অ.ট.: ব্লুফিল্ডের জিওলজিস্টের নাম কি শুভতোষ মুখার্জি?
আরে, কন কি, এত্ত ভালো লাগসে? ...
না, ওনার নাম অঙ্কন বসু...
ভ্রমণ ব্লগ চমৎকার লাগল।
হেঁ হেঁ... ধন্যবাদ
লেখা তো ভালোই, ছবি দেখে সত্যি মন ভরে গেল। প্রথম ছবিটা (প্লেনের) চমৎকার আলোয় তোলা। লাইট হাউসের ছবির নীল, বাঁকা স্কাইলাইন খুব ক্রিয়েটিভ। কিন্তু সবচেয়ে পছন্দ হল কাবাবের ছবিটা। ফ্ল্যাশ দিয়ে তোলা হলেও প্রায় নিখুঁত এক্সপোজার!
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আহা, অভিজ্ঞ ফটুগফুরে ছবি ভালা হইছে বললে মনে কত বল পাই!
ভোর পাঁচটা থেকে এয়ারপোর্টে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সূর্যোদয়ের তো অনেকগুলো ছবি তুললাম। আলোটা খুবই সুন্দর ছিল। তবে ক্যামেরা মিঁয়ার এত অন্ধকার পছন্দ হচ্ছিল না, -২ এক্সপোজার ফোর্স করে তুললাম।
কাবাবের ছবিতে আপনি ফ্ল্যাশ পাইলেন কই? রেস্তোঁরার হলুদ বাল্বের আলো গুটিকতক। ক্যামেরার ইনবিল্ট ফ্ল্যাশে তোলা ভালো ছবি পাওয়াই দুষ্কর...
পাঁচ তারা না দাগানো আর পছন্দের পোষ্টে না নেয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করলাম, পারলাম কই?
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
হি হি... মনকে কঠোর করেন রোমেল ভাই
দুর্দান্ত ছবি আর অভিজ্ঞতা। পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঙ্গালীর সংখ্যা কেমন?
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
তা ভালোই। ওই এক দিনেই অনেকের সঙ্গে দেখাও হয়ে গেল, ভারতীয়/বাংলাদেশী মিলিয়ে। ছাত্র, প্রফেসর সবই আছেন।
জানি তো। জানি যে ওসব ফিরিঙ্গি বিমান যাত্রায় ম্যালা হ্যাপা- এ কারনেই উঠি না এদ্দম
স্টারবাক্স কফিশপের কথায় 'আই এম স্যাম' সিনেমার কথা মনে পড়লো কেনো যেন।
টিনটিনের শিকাগো তো ডাকাতে ভরপুর ছিলো, আপনি দেখলাম টোলবুথ ডাকাতের খপ্পরে পড়েছেন, বেঁচে গেছেন।
আর ছবিটবি খুব বাজে হয়েছে, ওসব আমি দেখি না। আমাদের গোবরডাঙ্গায় এরচেয়ে ঢের ভালো সিনারি আছে
জানি তো। জানি যে ওসব ফিরিঙ্গি বিমান যাত্রায় ম্যালা হ্যাপা- এ কারনেই উঠি না এদ্দম
স্টারবাক্স কফিশপের কথায় 'আই এম স্যাম' সিনেমার কথা মনে পড়লো কেনো যেন।
টিনটিনের শিকাগো তো ডাকাতে ভরপুর ছিলো, আপনি দেখলাম টোলবুথ ডাকাতের খপ্পরে পড়েছেন, বেঁচে গেছেন।
আর ছবিটবি খুব বাজে হয়েছে, ওসব আমি দেখি না। আমাদের গোবরডাঙ্গায় এরচেয়ে ঢের ভালো সিনারি আছে
শেষদিকে ত বেঁচেই গেছেন বলা যায়। যান, এবার ধুনোধূপ জ্বালিয়ে রাম নাম নিতে থাকুন।
আরে মিয়া, লেখা কই আপনার? জলদি দ্যান!
১০ ডলার প্লেনভাড়া, গিনেজ বুকে নামটা পাঠিয়ে দেবো নাকি?
এত ভ্রমণে খানাপিনার ছবি মাত্র একটা???
এত মজারু ভাষায় দুঃসহ সময় বর্ননা করেন কেমনে? ভাগ্যিস অক্ষত ফিরেছেন
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
সে ছবিও তুলেছি অনেক, কিন্তু এখানে দিই নাই - কেন আর লোকজনকে মিছাই কষ্ট দেওয়া? আর ঘোরাটা ফুড ট্যুরিজম হলেও লেখাটাকে হ্যাপা ট্যুরিজমই রাখতে চেয়েছি
বাত্যানগরীতে গেলেন আর ধর্ম্মপুত্রের রান্না খানা খাইলেন না এইটা কেমন কথা! আর পশ্চিম লাফিয়েৎ তো উনার স্নাতকোত্তর পর্যায়ের পুরনো টোল। সেখানে গেলেন আর পুরনো কোন "দেবীকা"র খোঁজ না নিয়েই চলে আসলেন! ভবিষ্যতে আপনাকে আরো অনেক ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে দেখছি।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আহ, আমারে তো কেউ কয়নাই যে ওনার আস্তানা ওইখানে! নইলে কি আর ছাড়তেম? আর দেবীকা-ই বা কৌন হ্যায়?
দেবীকা'র গর্ভে জন্মগ্রহণকারী যুধিষ্ঠিরের এক পুত্রের নাম যুদ্ধেয়। এই নাম নিয়ে কিঞ্চিত মতদ্বৈততা আছে। বিষ্ণুপুরাণ মতে মাতার নাম যুদ্ধেয়া, পুত্রের নাম দেবক। ক্ষমতাবান পরিবারের কন্যা বলে সুভদ্রা আর শক্তিমান পরিবারের কন্যা বলে হিড়িম্বা ছাড়া পাণ্ডবদের অন্য স্ত্রীরা সাধারণত আলোচনায় ঠাঁই পান না। তাই তাদের নাম উঠলে অনেকেই জিজ্ঞাসুর দৃষ্টিতে তাকান। এক যাজ্ঞসেনীই দ্বাপর থেকে কলিযুগ পর্যন্ত সমগ্র আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
(গুড়)
-------------------
নিত্যানন্দ রায়
সাবধান শিকাগো! আমিও আইতাছি (মানে, একদিন না একদিন ঘুরতে ঘুরতে ঠিকই আয়া পড়ুম, এখন থেকেই সাবধান হয়ে থাক আরকি )
লেখা ছবি দুইই
আর শেষের ব্যপারটায়, এইসব একটু উত্তেজনা না থাকলে জীবনটা বেশ আলুনি হয়ে যেতো।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
হে হে, আসেন আসেন, আপনার ডাকাতদলে তখন আমরা নাম লেখামু
অতি স্বাদু ভ্রমণ কাহানি। শিরোনামে আল কাপোনের নাম দেখে ভেবেছিলাম তার সাথেও আপনার মাধ্যমে কিঞ্চিত সাক্ষাৎ হইবেক।
ধন্যবাদ। ওনার সঙ্গে সাক্ষাত হলে কী আর গল্প লেখার মত অবস্থায় থাকতাম?
নতুন মন্তব্য করুন