স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে গেছিলাম বন্ধুর সাথে দেখাসাক্ষাৎ করতে। তাদের ক্যাম্পাসটা অতি খুবসুরৎ, সেসব ছবি অন্য একদিন দেওয়া যাবে। সেখান থেকে বন্ধু ড্রাইভ করে নিয়ে গেল ক্যালিফোর্নিয়ার প্যাসিফিক কোস্ট দেখাবে বলে। সেই পথের বহু প্রশংসা শুনেছি, খুবই দ্রষ্টব্য নাকি। আমরা অবশ্য একটা ছোট ট্যুর করব, ঘন্টাদুই ড্রাইভ করে সান্তা ক্রুজ যাওয়া আবার ফিরে আসা; এই পথে সেই লস অ্যাঞ্জেলিস অবধি যাওয়া যায়, সেটা ছয় ঘন্টার পথ।
পাওলো অল্টো থেকে নিচের দিকে যাবার বদলে প্রথমে একটু উপর দিকে ওঠা হল, সান মাতেও ভ্যালির মধ্যে দিয়ে একটা সিনিক রাস্তা আছে, সেটা দেখা যাবে বলে। পথে পড়ল ক্রিস্টাল স্প্রিংস রিজার্ভার।
ভ্যালির মধ্যে নানারকম ক্ষেত। সামনেই থ্যাঙ্কসগিভিং, অনেক পাকা কুমড়ো ফলে আছে।
সেখান থেকে পাহাড় পেরিয়ে আমরা স্টেট হাইওয়ে-১ এ এসে পড়লাম। উঁচু-নিচু রাস্তা, কখনও সমতল কখনও টিলার উপর দিয়ে; ডানদিকে প্রশান্ত মহাসাগর, সেখানে কখনও খাড়া সাদা পাড় নেমে গেছে তো কখনও রুক্ষ পাথরে ভরা সৈকত।
এক জায়গায় দেখি আবার সমুদ্রের জল ঢুকে এসে অল্প জলাজমি(মার্শ)ও হয়ে আছে।
মাঝে এক জায়গায় ছবি তোলার জন্য থামা গেল। মানে, আমার খাতিরেই।
এই অঞ্চলটা এলিফ্যান্ট সীল-এর জন্য বিখ্যাত। একটা পরিবারকে (আসলে হারেম) বিকেলের নরম রোদে গড়াগড়ি দিয়ে আয়েশ করতে দেখলাম।
সেখান থেকে একটু এগিয়ে পৌঁছলাম পিজিয়ন পয়েন্ট বলে একটা প্রাচীন লাইটহাউসে। রাজ্য থেকে সেটাকে সংরক্ষিত অঞ্চল তকমা দেওয়া হয়েছে। তখনই বিকেলের আলো পড়ে এসেছে বেশ।
যখন সান্তা ক্রুজের দিকে এগোলাম তখন সুয্যি ডুবি ডুবি প্রায়। রাস্তাখানা এদিক পুরোই নীড ফর স্পীড-এর কথা মনে করিয়ে দেয়।
ছোট্ট শহরটায় পৌঁছে বীচের মূল আর্কেডটার সামনে (সেটার সামনে দিয়ে আবার একটা ছোট্ট রেললাইন গেছে) গাড়ি রেখে বীচে গেলাম। পাশেই হোয়ার্ফ। ততক্ষণে সূর্য ভ্যানিশ, অন্তত দেখা আর যাচ্ছে না, টিলার পেছনে উধাও।
সান্তা ক্রুজ একটা খাঁড়ির এক প্রান্ত, আর অন্য প্রান্ত হল মন্তেরে। এই খাঁড়িটার নামও মন্তেরে বে। বীচে দাঁড়ালে দূরে মন্তেরে'র টিলাগুলো দেখা যায়। সন্ধ্যায় বে তখন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে।
সমুদ্রতীরে সী-গাল সব সময়েই দেখা যায়, এখানে উপরি দেখলাম পেলিক্যান। তারা আকাশে চক্কর দিতে দিতে খাড়াখাড়ি ঝপাস করে জলে ঝাঁপ দিয়েই আবার শূন্যে উঠে যায় মাছ নিয়ে। আলো তখন এতই কমে এসেছে যে ওই ঝটিকাআক্রমণের ছবি তুলতে পারলাম না ঠিকমত। ভিডিওতে দেখেন তাদের কেরামতি।
অল্প অল্প মেঘে তখন সন্ধ্যার আকাশে দারুণ সব রঙের খেলা।
সন্ধ্যা নেমে এলে বীচে খানিকক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে আমরা ফিরে এলাম। দারুণ একটা ছোট্ট সফর হল।
জন্মদিনে এই পোস্টখানা উৎসর্গ করা যাক বুজুর্গ তাসনীমভাইকে, তাঁর তন্দুরুস্তি মন্দুরুস্তি কামনাসহ। তাঁর শিক্ষাসিরিজ অবশ্য এখনও কাজে আসে নি, তবে যেন শীঘ্রই আসতে পারে এমন দোয়া রাইখেন।
মন্তব্য
অনেক অনেক ধন্যবাদ কৌস্তুভ।
জন্মদিনের এতো চমৎকার উপহার পেয়েছি বলে মনে পড়ে না।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
শুভ জন্মদিন তাসনীম ভাইয়া।
ইয়ে মানে এতটা প্রশংসা কেবল আপনার বদান্যতা
শুভ জন্মদিন তাসনীম ভাই।
ফারাসাত
এত সুন্দর সুন্দর ছবি দেখে চোখ জুড়িয়ে গেল রে ভাই।বুঝতে পারছি অচিরে আর ও পোষ্ট আসছে ।
তা কইতারি না, আমি আবার ছবি প্রসেস করায় খুব আলসে। দশ হাজারের উপর ছবি তুলে ফেলেছি এই নতুন ক্যামেরাখানা দিয়ে গত এক বছরে, পোস্ট করেছি হয়ত ১-২%।
শুভ জন্মদিন তাসনীম ভাই।
কৌস্তভদারে কি ঘণূদা ভাইরাসে ধরছে?
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ক্যান রে ভাই, আমার বুঝি একটু ইচ্ছেমত ঘুরতে নেই? কেবল ওই দুষ্টলোকটিকে টেনে আনা কেন?
সবাই দুষ্টলোক হয়ে যাচ্চে যে!
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
ইয়েমানে কৌস্তুভদা, ছবিগুলা কি আসলেই ক্যামেরায় তোলা না পোস্টের সাথে দৃশ্যগুলো হাইপারলিঙ্ক করে দিয়েছেন???
কবে যে এইরাম দ্যাশ বিদ্যাশ ঘুইরা বেড়াইবার পারমু!!
_____________________
Give Her Freedom!
আহা, আগে বড়ো হও, তারপর...
তাসনীম ভাইরে অবশ্য ফেবুতে বাড্ডে উইশ করেছি তবু এখানে আবারো করলাম।
ছবিগুলো দারুন!!!
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
দোন্নোবাদ!
এক তাড়েকাণুরে নিয়া বাঁচিনা, আইছে আরেকজন! ক্যালিফোর্নিয়ার সূর্যাস্ত দেখা যায় খুবই সুন্দর, মনে হচ্ছে আগুন লেগে গেছে।
সহমত। শেষের চারটা ছবি দুর্দান্ত।
ধন্যবাদ দাদা।
আরে না না আমি ভালো মানুষ! দেখেন না কয় হাজার ছবি তুলেছি তার মধ্যে কিছুই পোস্টাইনা!
দাদা আপনি তো বস টাইপের আদমি গো।অধমের প্রনাম নিন।
-মনি শামিম
আরে ধুর, কী যে কন। মুস্তাফিজ ভাই যুধিষ্ঠিরদা এনারা হলেন আসল ভচমানু।
এই শব্দটা কি আপনিই লিখেছেন?
আমাদের খাতিরে এত সুন্দর সুন্দর ছবি দেবার জন্য ধন্যবাদ। দশ হাজার থেকে আর কিছু নামান না।
ক্যান আমার বুঝি শখআহ্লাদ থাকতে নাই?
ছবিতে
দেইখেন, একদিন আমরাও...!!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
ফেসবুক -.-.-.-.-.- ব্যক্তিগত ব্লগ
অবশ্যই!
শুভ জন্মদিন তাসনীম ভাই।
পোস্টে পাঁচতারা।
কোন দুরাত্মা বলে আপনি ফাঁকিবাজ???
ছবিগুলা দেখলাম আর উদাস উদাস দীর্ঘশ্বাস ফেলতেই থাকলাম। বাকী ৯,৯০০ ছবির অপেক্ষায় !!
ফারাসাত
আজ্ঞে না দাদা, ছবি ঝাড়াইবাছাই করে ১০-২০% আপলোড করা হয়, বাকি বাতিল।
শুভ জন্মদিন তাসনীম ভাই।
খুড়ো, বড় হলে আম্মো ক্যামেলা কিনবো দেখে নিও !!!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
কেন হে বাবু, এখনই তো দিব্যি হিল্লিদিল্লি ঘুরে বেড়াচ্ছ আর ভালোছেলের মত ফটোব্লগ দিয়ে যাচ্ছ...
আহা ওসব তো আর এরকম ফটুক নয়। এগুলো তো খুড়োর মাস্টারপিস এক একটা !!
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
যাহ...
কি চমৎকার সব ছবিগুলো। বড্ডও ভালো লাগলো।
আরও অনেক অনেক ছবি দেখতে চাই।
শুভ জন্মদিন তাসনীম ভাই।
রঙের ছড়াছড়ি দারুণ লাগলো। বার্থডের যুগ্যি একদম রংচঙে উপহার হয়েছে। তোফা।
এই ফাঁকে তাসনীম ভাইকে আরেকবার হ্যাপি বাড্ডে।
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
হুঁহুঁ, ঠাম্মির বুনে দেওয়া কাঁথাগুলোর মতনই রঙিন!
অসাধারণ সব ছবি। মন ছুঁয়ে গেল সেই সাথে এরকম ছবির কাছে যেতেও খুব মঞ্চায় ।
ধন্যবাদ
শুভ জন্মদিন তাসনীম ভাই'কে....
দুর্দান্ত, বিশেষ করে রাস্তার প্রথমটা আর সূর্যাস্তের ছবিগুলো...
ছবিগুলো দারুন! ক্যালিফোর্র্নিয়াতে মুভ ইন করেছি কিছুদিন হলো। সানিভেল এ আছি। উইকেন্ডে কোথায় কোথায় ঘুরব ভাবছিলাম, এখনো লিস্ট করা হয়নি। আপনার লেখাটা দারুন হেল্প করবে কৌস্তভদা । সচলায়তন রেগুলারই পড়া হয়, আর এরমধ্যেও যাদের লেখা খুঁজে খুঁজে পড়ি আপনি তাদের একজন। সচলায়তনে এই প্রথম কমেন্ট করে আপনার লেখা আর ছবি'র প্রতি ভালোলাগা জানিয়ে গেলাম
আরে বলেন কি, আপনার উপকারে লাগতে পারে শুনে খুবই ভাল লাগল। আর আপনার এহেন প্রশংসা শুনে করে বেগুনি হয়ে গেলুম
পিসিএইচ দিয়ে এলএ যেতে কিন্তু ৬ ঘন্টার অ-নেক বেশি লাগবে। আমরা বন্ধুরা মিলে একবার এলএ থেকে বেএরিয়াতে এসেছিলাম। সকাল ১০টায় রওনা দিয়ে মনে হয় রাত ৯টা বেজেছিল এখানৃ পৌছাতে। বেশিরভাগ অংশই ২ লেন আর স্পিড খুব বেশি তোলা যায় না।
Monterey শব্দটা কি ইটালিয়ান ? লোকালরা কিন্তু মন্টেরে বলে থাকে।
উইকি থেকে মনে হচ্ছে এটা স্প্যানিশ শব্দ, Monte Rey থেকে, শহরটাও স্প্যানিশদের দ্বারাই প্রতিষ্ঠিত।
ইয়ে, ওই রাস্তা দিয়ে এলএ যায় বলে শুনেছি, আর ছঘন্টা মত লাগে বলেও শুনেছি, তবে ওই রাস্তা দিয়েই গেলে লাগে কিনা তা কৈতারিনা
স্ট্যানফোর্ডে আছি এক বছরের বেশি সময় ধরে। সচলায়তনের পাঠক অনেকদিন থেকেই শুধু লেখা হয়নি কিছু। ছবিগুলো দেখে বেশ লাগল। সামনে থেকে দেখতে আরো অসাধারণ লাগে। ভাল থাকবেন। এরপর কাছে কোথাও এলে আড্ডা হয়ে যাবে।
স্ট্যানফোর্ডের ক্যাম্পাস ভারি সুন্দর, হুভার টাওয়ারের উপর থেকে ফল সিজনে অসাধারণ ভিউ পেয়েছি। ভালো থাকবেন।
নাহ! ফটোব্লগ দেয়া ছেড়ে দিব ভাবতেছি... :'(
ছি ছি, এগুলা কী কন! তাইলে তো তারেকাণুর জন্য আমাদেরও ফটোব্লগ দেওয়া ছেড়ে দিতে হত...
একটাও বালিকার ছবি দেক্তেছি না! তাসনীম ভাই তো অতো বুড়া হন নাই!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
সবাইকে ধন্যবাদ আবারো।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
ফাকিবাজি মানিনা;) সুন্দর সুন্দর ছবির সাথে আর একটু লিখলে কি হত? সব ছবির সাথে আরো লেখা চাই
মিতবাক হওয়া ভাল না?
চমৎকার!
****************************************
প্রতিটা ছবিই চমৎকার এসেছে। মন ভালো করে দেয়ার মতন।
তাসনীম ভাইয়াকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা ( যদিও একটু দেরিতে দিলাম)
থ্যাঙ্কু ডাক্তারনি
কি দারুন সব ছবি!
কনফারেন্সে একবার সানদিয়াগো আরেকবার সানফ্রানসিসকো গিয়ে হাইওয়ে ওয়ান দিয়ে গাড়ী চালিয়েছি। কি যে সুন্দর, তুমি তো দেখলে। সানফ্রানসিসকো তে আমি মাত্র চারদিন ছিলাম, তার মধ্যে তিন দিনই কনফারেন্স। শুধু বিগ সার আর ফিশার মেন ওয়ারফ এ গিয়েছি।
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর সুন্দর ছবি দেয়ার জন্য।
পরের লেখার আর ছবির আশায় আছি।
অটঃ বোস্টন কবে নাগাদ আসবে?
ফিশারমেনস হোয়ার্ফে গেছি, ওটা তো শহরেই, কিন্তু বিগ সার দূরে তো, ওইখানে যাওয়া হয়নি।
সামনের অক্টোবরের কনফারেন্সটাকে টার্গেট করে তাল করছি, যদি প্রফেসরকে ভজাতে সক্ষম হই তাহলেই যাব।
পুরান কথা আবার কই! আল্ট্রা ওয়াইড কেনার জন্যে টাকাওয়ালা শ্বশুর দেখো
---------------------
আমার ফ্লিকার
ভাইডি , এতো রঙ্গের খেলা দেইখে এক্কেরে আঁটাশ মাইরা গেছি
আম্মো
মেঘ তো ফাটাফাটি ছিলো মনে হয়।
...........................
Every Picture Tells a Story
হ্যাঁ। আমরা যেখানে ছিলাম সেখান থেকে পশ্চিমদিক সরাসরি দেখা যায় না, নয়তো ওই মেঘের মধ্যে সূর্য ডুবতে দেখতে আরো চমৎকার লাগত।
শেষের চার ছবির কোন জবাব নাই গো দাদা! অসাধারণ হয়েছে। জানি না সত্যিই কোথাও আকাশে এতো রঙ ধরে কিনা! দেখা হয় নি অনেক কিছুই। ধুলোর আস্তরে ঢেকে যাওয়া আকাশ অনেক মলীন দেখায়। চাইলেও আমরা এখানে বসে রঙের খেলা দেখি না।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
এগুলিতে ফটোশপের কারসাজি নাই, রঙ যা দেখায় খাঁটিই
#এক কথায় দারুনস! অসম্ভব সুন্দর সব ছবি এবং সিকোয়েন্স, শুভেচ্ছা আপনাকে প্রিয় কৌস্তভদা
আশরাফুল কবীর
ভায়া
সুন্দর ছবি। মেঘের ছবিগুলো বেশিই সুন্দর।
সুন্দর জায়গা কিনা
মুগ্ধতা ছবির প্রতি ...
ডাকঘর | ছবিঘর
নতুন মন্তব্য করুন