জীবজগতের সুপারম্যান ম্যান্টিস শ্রিম্প

কৌস্তুভ এর ছবি
লিখেছেন কৌস্তুভ (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৭/২০১৩ - ১০:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এখন রঙিন টিভি দেখে দেখে অভ্যস্ত আমরা যদি সাদাকালো টিভির দিকে তাকাই, সেটা আমাদের অনেক বিবর্ণ, বোরিং বলে মনে হবে। নিজের চোখে চারপাশকে যেমন দেখতে পাই, টিভির ছবিগুলো তার বাস্তবসম্মত প্রতিরূপ আদৌ নয় কিনা।

কিন্তু পোকারা যদি আমাদের টিভির দিকে তাকায়, তাদের নজরে কিন্তু আমাদের রঙিন টিভিগুলোকেও ভারি বিবর্ণ বলে মনে হবে। তার কারণ, আমরা টিভিগুলো তৈরি করেছি আমাদের চোখের সিস্টেম অনুসারে। ইস্কুলবেলার বায়োলজি ক্লাস মনে করে দেখুন, আমাদের চোখে তিনরকমের ‘কোন সেল’ আছে যারা লাল, সবুজ আর নীল আলোর প্রতি সংবেদী, এদের তিনজনের পাঠানো সিগনাল থেকেই আমাদের মস্তিষ্ক দৃশ্যের ছবি তৈরি করে। টিভিতেও তাই আমরা লাল-নীল-সবুজ তিনরকম ছোট্টো ছোট্টো আলোর পিক্সেল বসিয়ে ছবি দেখাই।

কিন্তু বাস্তবে তো শুধু এই তিন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোই না, পুরো বর্ণালীর মধ্যে সব তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোই ভেসে রয়েছে। আর কেবল তাইই না, অতিবেগুনি থেকে অবলোহিত তরঙ্গেরাও ঘোরাফেরা করছে। এই যেমন রেডিও-ওয়েভ ব্যবহার করছে রেডিও, মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করছে মাইক্রোওয়েভ কুকারগুলো। এবং অনেক পতঙ্গই আমাদের থেকে বেশি চোখা – তারা হয় আলট্রাভায়োলেট নয়ত ইনফ্রারেড তরঙ্গ দেখতে পায় কারণ তাদের তা গ্রহণ করার মত সংবেদী চোখ আছে।

আমাদের চোখেই ফুলে ভরে থাকা একটা বাগানে অগুন্তি রঙের মেলা বলে মনে হয়। একবার ভেবে দেখুন, তাহলে পতঙ্গরা যারা আরো কিছু রঙ বেশি দেখতে পায় তাদের ফুর্তিটা কেমন হবে? আর খেয়াল রাখতে হবে, গাছেরা ফুল ফোটায় পরাগসংযোগের উদ্দেশ্যে পোকাদের টেনে আনার জন্যই – অতএব তারা যে ফুলের মধ্যে অতিবেগুনি রঙও ব্যবহার করবে এ আর আশ্চয্যি কী? একটা ডকুমেন্টারিতে অ্যাটেনবুড়ো দেখিয়েছিলেন, মাঠেঘাটেই যে সাদামাটা, একরঙা হলুদ ঘাসফুলগুলো ফুটে থাকে, আলট্রাভায়োলেট ক্যামেরায় দেখলে দেখা যায় তাদের কেন্দ্রে আরেক সারি রঙের বলয়। কোনো কোনো ফুলে আবার ভেতরের দিকে লম্বা রেখা রেখা থাকে, পতঙ্গদের জন্য একেবারে পারফেক্টো ল্যান্ডিং স্ট্রিপ!

*************************

অর্থাৎ আমাদের চোখে লাল-নীল-সবুজ তিনরকম রঙের সেন্সর থাকে, কিন্তু কিছু পোকাদের চোখে এ ছাড়াও অন্যান্য রঙের আলোর (অন্যান্য তরঙ্গদৈর্ঘ্যের) দুয়েকটা সেন্সর আছে, মানে তাদের দেখার ক্ষমতা আরেকটু বেশি।

এবার কল্পনা করে দেখুন, কোনো প্রাণীর চোখে যদি ১৬ রকম আলোর সেন্সর থাকে, তাহলে ব্যাপারটা কেমন হয়!

জীবজগতের এই সুপারম্যান হল ম্যান্টিস শ্রিম্পপ্রেয়িং ম্যান্টিস নামের ওই বিখ্যাত পোকাটার ভঙ্গিমার সঙ্গে খানিকটা মিল আছে, দাঁড়াগুলো সামনের দিকে খানিকটা ওভাবে ভাঁজ করে থাকে। আর এই দাঁড়াগুলোর সঙ্গে ক্রান্তীয় অঞ্চলের মানুষেরা খুব ভালো ভাবেই পরিচিত, কিন্তু সে কথায় পরে আসছি।

এদের চোখে কেবল অতিবেগুনি আলোর সেন্সরই আছে অন্তত চার রকম। কিন্তু সবচেয়ে চমকপ্রদ যেটা, এদের আছে বেশ কয়েক রকম পোলারাইজড লাইট ধরতে পারার ক্ষমতা!

পোলারাইজড লাইট ব্যাপারটার সাথে যাঁরা পরিচিত নন, তাঁদের হালকা করে বুঝিয়ে দিই। মনে করে দেখুন, আলো একরকম তরঙ্গ, মানে এমনভাবে ভাবতে পারেন, যেন একটা একটা ফোটন কণিকা একটা নির্দিষ্ট প্লেনে ঢেউয়ের মত নাচতে নাচতে এগিয়ে চলেছে। এখন প্রতিটা ফোটন তার ইচ্ছামত যে-কোনো প্লেনে চলাফেরা করতে পারে। তাই প্রকৃতিতে আমরা যে আলো দেখি, তারা সবাই ছড়ানো বা স্ক্যাটারড। কিন্তু আপনি যদি কোনোভাবে কানে ধরে প্রতিটা ফোটনকে একই প্লেনে নাচাতে পারেন, তাহলে তারা হচ্ছে একগামী বা পোলারাইজড।

দামি সানগ্লাসে প্রতিফলন কমাবার জন্য পোলারাইজার ফিল্টারের প্রলেপ দেওয়া হয়, যাতে অধিকাংশ স্ক্যাটারড আলো শুষে নেয় আর একটা সরু প্লেনে চলা অল্প কিছু আলোই আমাদের চোখে আসে। একই ভাবে দিঘির জলে বা গাছের পাতায় প্রতিফলন কমিয়ে রঙটা গাঢ় করার জন্য ফটোগ্রাফাররাও পোলারাইজার ফিল্টার ব্যবহার করে ক্যামেরায়।


আপনার সানগ্লাসে পোলারাইজার আছে কিনা, সেটা পরখ করতে হলে যেকোনো এলসিডি স্ক্রিন (ফোন বা ল্যাপটপের) সামনে সেটাকে ধরে এদিক-ওদিক ঘোরান। যদি নানারকম অ্যাঁকাব্যাঁকা রঙ দেখতে পান, বুঝবেন পোলারাইজার ফিল্টার কাজ করছে।

ওহ, এখানে হয়ত প্রশ্ন করবেন, এলসিডি স্ক্রিনের সঙ্গে পোলারাইজারের কী সম্পর্ক? উত্তর হল, অতি নিবিড় সম্পর্ক। এই স্ক্রিনগুলো তৈরিই হয় দুই স্তর পোলারাইজার ব্যবহার করে। তারা থাকে পরষ্পরের সঙ্গে সমকোণে, অতএব স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে প্রথমজন যেটুকু আলো ছাড়ে তা অপরজন পুরোটা শুষে নেয়। (উপরের ছবিতে দড়ি দিয়ে বোঝানো উদাহরণটা দেখুন।) তাই এই দুটো স্তরের পেছনে আলোর উৎস হিসেবে এলইডি (লাইট-এমিটিং ডায়োড) বসানো থাকলেও, স্ক্রিন পুরো অন্ধকার দেখাবে।

এখানেই এলসিডির মজাটা, যে কারণে স্ক্রিনটার ওই নাম। এলসিডি বা লিকুইড কৃস্টাল ডিসপ্লে হচ্ছে খুব খুদে খুদে একসারি ‘তরল’ কেলাসের স্তর। এদের ধর্ম হল, এরা তড়িৎ-সংবেদী, মানে এদের উপর ইলেকট্রিক ফিল্ড ফেললে তারা সেই বরাবর ঘুরে যায়। এবং এরা স্বচ্ছ বলে যে আলো পরিবহন করে, সেটাও তখন ঘুরে যায়।

তো ওই দুটো পোলারাইজারের মাঝে একটা এলসিডির স্তর রেখে দিন। এমনিতে তারা কিছু করবে না, কিন্তু যদি এবার এলসিডির দুপাশে ইলেকট্রিক ফিল্ড দেন, তাতে তারা সমকোণে ঘুরে যাবে। এতে হচ্ছে কি, প্রথম ফিল্টারটার মধ্যে দিয়ে যে আলো এসেছিল, তারা ঘুরে গিয়ে দ্বিতীয় ফিল্টারটা ঠিক যেমন চায় তেমনই কোণে চলে এল, অতএব আপনি পুরো আলোটাই দেখতে পাবেন। এবার ইলেকটিরির পরিমাণ কমিয়ে-বাড়িয়ে ঘোরার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন, আলোর পরিমাণ অতএব ঔজ্জ্বল্যও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

এখন ম্যান্টিস শ্রিম্পের এসব কারসাজির কী দরকার? আগেই বলেছি, জলস্তরে যখন সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয় তখন খানিকটা পোলারাইজেশনের মত কাজ হয় – আলোর যে অংশটা মানে যেসব ফোটনগুলো আলোর আপতন তলের পথেই নাচে তারা প্রতিফলিত হয়, আর অন্য অংশটা সুড়ুত করে জলের মধ্যে ঢুকে পড়ে। অর্থাৎ সমুদ্রতল একটা প্রাকৃতিক পোলারাইজার। কিন্তু হয় কি, কোনো জিনিসে যখন এই আলো প্রতিফলিত হয়, তখন তা আবার স্ক্যাটারড হয়ে যায়।

তা সমুদ্রের গভীরে, যেখানে স্পষ্ট দেখার জন্য আলো কম, সেখানে এটা একটা অতিরিক্ত ক্ষমতা দেয়, সহজেই বুঝতে পারবেন। আপনার চোখে যে আলোটা আসছে সেটা যদি পোলারাইজড হয়, তাহলে বুঝবেন সেটা সহজ স্বাভাবিক সূর্যের আলো, সরাসরি আসছে। কিন্তু যদি সেটা স্ক্যাটারড হয়, তাহলে সেটা কোনো বস্তু থেকে প্রতিফলিত হয়ে আসছে, এবং ওটা হয়ত বা আপনার খাদ্য!

*************************

কিন্তু সুপারম্যান শুধু যে উড়তে পারে তাই-ই নয়, সে অতীব বলশালী। আমাদের ম্যান্টিস শ্রিম্পও তেমনই আরেকটি অতিমানবীয় ক্ষমতার অধিকারী – তার মুষ্ট্যাঘাত দালানকোঠা ধসিয়ে দেওয়ার মতনই শক্রিশালী – তারা দাঁড়া দিয়ে কামড় দেয় না, হাতুড়ির বাড়ি দেয়। তার এমনই গুঁতো যে অ্যাকোরিয়ামের কাচ ফাটিয়ে এরা বেরিয়ে যেতে পারে। তাই ক্রান্তীয় অঞ্চলের সাঁতারুরা এদের থেকে ভয়ে-ভয়ে থাকে।

প্রেয়িং ম্যান্টিসের মতই এরা দাঁড়াটাকে ভাঁজ করে রেখে দেয়, এবং সামনে শিকার দেখলে স্প্রিং যেমন ছিটকে বেরিয়ে আসে তেমনই সেটা দ্রুত সামনে ছিটকে এসে শিকারের গায়ে সজোরে আঘাত করে। সেই ক্ষুধার্ত কাকের গল্প মনে আছে না, যে ঠোঁটে করে শামুক তুলে উড়ে গিয়ে পাথরের উপর উঁচু থেকে ফেলে যাতে শক্ত খোলাটা ভেঙে যায়? এই ম্যান্টিস শ্রিম্পের অত হ্যাপার দরকার হয় না, সে একটা সোজা ঘা মেরেই শামুকের খোলা ফাটিয়ে দিতে পারে।

তো একজন গবেষক ভাবছিলেন, স্প্রিং গুটিয়ে রাখার যে শক্তিটা, সেটা দাঁড়ার কোনখানটায় জমা থাকে? তিনি অনুমান করলেন, কোনো একটা খাঁজে; ভাবলেন আঘাত করার ভিডিও করে সেটা দেখে বুঝতে পারবেন। কিন্তু সমস্যা হল, এই ঘুঁষির বেগ অতি দ্রুত – অভিকর্ষজ ত্বরণের দশ হাজার গুণ – আক্ষরিক বুলেটের বেগ! সাধারণ ভিডিও ক্যামেরায় রেকর্ড করা নেহাতই অসম্ভব।

তখন তিনি বিবিসির সঙ্গে আঁতাত করলেন। তারা তাদের সদ্য কেনা সুপারস্পিড (সেকেন্ডে ৫০০০ ফ্রেমওয়ালা) ক্যামেরা দিয়ে যখন ভিডিও তুলে দিল, তখন সেই স্লোমোশন দেখে তাঁর তো একগাল মাছি। দাঁড়াটা গিয়ে যখন শামুকের খোলায় দারুণ জোরে আঘাত করছে তখন তার ফলে একটা আলোর ঝলকানি আর শব্দ তো হচ্ছেই, একটুখানি পরে আরো একটা আওয়াজ আর আলোর ঝলক! সেটা কোত্থেকে এল?

জানা গেল, দাঁড়াটা এত দ্রুতগতিতে নড়ে যে একটা ভ্যাকুয়াম তৈরি হয়ে যায়, কারণ জল তুলনায় এমন ঘন একটা মাধ্যম যে যথেষ্ট দ্রুত এসে ওই সরে-যাওয়া দাঁড়ার শূন্যস্থানটা পূরণ করতে পারে না। এই বাবলের মত ভ্যাকুয়ামটা তারপর চারদিকে জলের চাপে কোলাপ্স করে ফেটে যায়। সেই উল্টো-বিস্ফোরণে তৈরি হয় আলো আর শব্দ। যার ইঞ্জিরি নাম হল ক্যাভিটেশন। মানে শামুকের খোলার উপর পরপর দুটো আঘাতের শক পড়ছে – এক ঘায়ে দুই বাড়ি।

****

অর্থাৎ ফিজিক্সের একটা ইউনিক ঘটনার সদ্‌ব্যবহার করছে এই ছোট্টো পোকাটা তার ইউনিক দ্রুততার দক্ষতা দিয়ে। অন্যদিকে তাদের দুরকম পোলারাইজেশন ধরার ছ’খানা সেন্সর দিয়ে তারা আলোক-তরঙ্গের পুরো ইকুয়েশন কষে ফেলার মত তথ্য পেয়ে যায়, এতেও প্রাণীজগতের মধ্যে ফিজিক্সে তারা ইউনিক – এমন নিখুঁত যন্ত্র এখনও মানুষই তৈরি করে উঠতে পারে নি। স্রেফ যদি এই ম্যান্টিস শ্রিম্পরা কথা বলতে পারত, তাহলেই আইনস্টাইন-হকিং-ফাইনম্যান সক্কলের চাকরি খেয়ে নিত!

****
ফুটনোট: জোনাকিদের মত এই পোকারাও ফ্লুরোসেন্স করে, অবশ্য সেটা করে কেবলমাত্র মেটিং রিচুয়াল-এর সময়। ফ্লুরোসেন্সের ক্ষমতা অনেক সামুদ্রিক প্রাণীরই আছে; কিন্তু এদের ইস্পেশাল দক্ষতা হল, সেই বিশেষ তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো ধরার জন্যও এদের চোখে আলাদা সেন্সর আছে। এক্কেবারে ফর-ইওর-আইজ-অনলি প্রেমপত্র চোখ টিপি

*************************

এই লেখাটা ডেডিকেট করলুম মনিদাকে, বোলোনিয়ার বাসে যেতে যেতে এই চিংড়িদের গুণকীর্তন শোনাবার সময় তিনিই পোস্ট দিয়ে ফেলার জন্য হুমকি-ধমকি দিচ্ছিলেন কিনা...


মন্তব্য

চরম উদাস এর ছবি

হাততালি
সচল ভত্তি বিজ্ঞানের লেখা আজকে। বিজ্ঞান বুঝিটুঝি না কিন্তু আপনি আর অনার্য যেমনে করে লেখেন আমার মতো মুক্কু লোকেও পড়ে দারুণ মজা পায়।

স্যাম এর ছবি

এক্কেবারে মনের কথা - শুধু আপনি বুঝেন না এইটা ছাড়া।

স্যাম এর ছবি

লেখা তো আছেই - ভিডিও আর অন্য লিঙ্ক গুলো দেখতে দেখতে বারটা বেজে গেল অফিসের কাজের রেগে টং
চলুক, মাঝে মাঝে কাজের এমন বার টা বাজুক দেঁতো হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

ইয়ে, মানে...

কৌস্তুভ এর ছবি

চউদার মিঠে মিঠে কথা শুনে দিল গুলবুলিস্তান হয়ে গেল দেঁতো হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

আরও চাই

কৌস্তুভ এর ছবি

যে আজ্ঞে হাসি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

আমাদের চোখেই ফুলে ভরে থাকা একটা বাগানে অগুন্তি রঙের মেলা বলে মনে হয়। একবার ভেবে দেখুন, তাহলে পতঙ্গরা যারা আরো কিছু রঙ বেশি দেখতে পায় তাদের ফুর্তিটা কেমন হবে?

আহা, তাই তো কবি লিখিয়াছেনঃ

যে জীবন ফড়িংযের দোয়েলের - মানুষের সাথে তার হয় নাকো দেখা

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

কৌস্তুভ এর ছবি

আহা সে কথা ভারি সত্যি, কারণ কিছু কিছু পাখিদেরও পোকাদের মত অমন অতিমানবীয় দেখার ক্ষমতা আছে!

মনি শামিম এর ছবি

পুরো লেখাটা একবার পড়লাম। দুইবার পড়লাম। তৃতীয়বার পড়বার জন্য মনস্থির করে রেখেছি। বিজ্ঞানের লেখাগুলি একাধিকবার না পড়লে বুঝতে পারিনা। আমি তোমার আগের লেখাটিও মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। কৌস্তুভ, খুব ভালো হয় তোমার লেখাগুলি, ছবি সহযোগে তা যেন আরও জীবন্ত হয়ে ওঠে। তুমি কম লেখো, এমন একটি অনুযোগ করেছিলাম মনে হয়। কিন্তু ভালো লেখা একটু কম কম আসলেও ক্ষতি নেই তেমন।

আর একি, এমন চমৎকার একটি লেখা আমাকে উৎসর্গ করা কেন? আমি তো পুরাই অবাক হয়ে গেলাম। চরম উদাস করে দিলে হে বালক! বোলোনিয়ায় আরেকবার নেমন্তন্ন থাকছে। মনে হয় ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ পর্যন্ত আছি, আর লন্ডন যাত্রাটাও মনে হয় এবার হয়েই যাবে!

অথৈ আসছে এই ষোল তারিখে, ওর মা আসছে হারমোনিয়াম সহ! তোমরা থাকলে রাতভোর গান হত! সে যাই হোক, আশা করছি দেখা হবে খুব তাড়াতাড়ি। অণুর ওখানে যাওয়া যায় কিনা ভাবছি! দেখা যাক!

কৌস্তুভ এর ছবি

দেখেন কাণ্ড! আমি অগস্টে যাব বলেছিলাম কিন্তু অণুদা আমায় বারণ করে দিল! ওদিকে মে মাসে যাবার প্ল্যানও বাতিল করে দিয়ে আপনার কাছে তড়িঘড়ি ছুটলাম কারণ আপনি জলদি চলে যাবেন, এখন এইসব কথা শোনাচ্ছেন?

মইনুল রাজু এর ছবি

সারাদিন রিসার্চ পেপারের মধ্যে গ্রাফ দেখতে দেখতে পালানোর চিন্তায় থাকি। এখন আপনি ব্লগেও গ্রাফ দেখানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আপনি অদ্ভুদ। দেঁতো হাসি

ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .

ফাহিম হাসান এর ছবি
কৌস্তুভ এর ছবি

সবাই এই নিয়ে বকা দিচ্ছে! মন খারাপ

স্পর্শ এর ছবি

সুস্বাদু লেখা! উত্তম জাঝা!


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

দুর্দান্ত! মাথায় একটা বদ চিন্তা আসলো। ম্যান্টিস ইচা মাছের দাঁড়ার মতো একটা পোর্টেবল অস্ত্র বানানো যায় না যেটা এক ঘায়ে দুইটা আঘাত হানবে! দাঁড়াটা যদি কাউকে আঘাত নাও করে তাও তো দ্বিতীয় বিস্ফোরণটা হবার কথা। সেক্ষেত্রে এটাকে নন-লেথাল অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা সম্ভব।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

কৌস্তুভ এর ছবি

ইয়ে, আগে অনেকগুলো ব্যাপার খেয়াল করতে হবে...

ক্যাভিটেশন জিনিসটা জলের মত কোনো ঘন মাধ্যমেই সম্ভব, বাতাসে সেটার তেজ অত হবে না।

ক্যাভিটেশন হয় যেখানে আঘাত করছে সেখানেই, কারণ সেখানেই সবচেয়ে বেশি গতি পরিবর্তন হচ্ছে, আঘাতের পরে দাঁড়াটা ছিটকে ফিরে আসার সময়। ধরেন সামনের দিকে ১০০ কিমি/ঘন্টা থেকে পেছনের দিকে ৫০ কিমি/ঘন্টা। অতএব আপনাকে আঘাত করতে গিয়ে যদি গাছের গায়ে লাগে, বিস্ফোরণটা সেখানেই হবে। আর ক্যাভিটেশন এত বড় একটা ব্লাস্ট না যা আপনার কাছ অবধি পৌঁছবে।

ব্যাপারটা সব মিলিয়ে ছোট স্কেলে যতটা সহজ, মানুষের মত বড় স্কেলে বোধহয় তুলনায় অনেক কঠিন...

তাও ডিফেন্স মিনিস্ট্রিতে বুদ্ধিটা দিয়ে দেখেন, হয়ত কিছু রিসার্চ-টেকাটুকা দিলেও দিতে পারে...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আরে আমি তো খুনখারাবি করার কথা বলছি না। আমি চাইছি একটু জোরে আওয়াজ হোক, আলোর ঝলকানি হোক। অনেকটা স্টান গ্রেনেডের মতো। তাহলে পুলিশকে আর লাঠিচার্জ করা লাগে না। হ্যাঁ, যদি আঘাত না করলে ক্যাভিটেশন তৈরি হবে না ব্যাপারটা এমন হয়, তাহলে এটা নিয়েই গবেষণা করা যাক কীভাবে আঘাত ছাড়াই ক্যাভিটেশন তৈরি করা যাবে। এর জন্য টেকাটুকা'র ব্যবস্থাটা তুমিই করে দাও। তুমি বিলাতে থাকো, সায়েবদের সাথে তোমার কতো জানাশোনা, মিসিবাবাদের সাথে তুমি ছাতা মাথায় ঘোরো - তুমিই আমার ভরসা।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ইয়ে... মানে... খুনখারাবীর দরকার নাই... তয় একখান কথা, ... আচার আর তেঁতুল তো ম্যালাই খাইলো...গোলামাজমছাইদিনিজামিকাদেরবাচ্চু প্রভৃতি মহৎ ব্যাক্তিবর্গকে খেদমতের সময় বাথটাবে এই আখাইষ্টা জাতের চিংড়ি এক দুইটা ছাইড়া দেওন যায় না? উটপাখিরা একটু রেস্ট নিক না শয়তানী হাসি

রাত-প্রহরী এর ছবি

চলুক
ওহ্‌ একটানে পড়ে ফেললাম। দারূণ লেখা, দারুণ বিষয়।
কৌস্তভ এর জয় হোক।

-------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

কৌস্তুভ এর ছবি

হেঁহেঁ থ্যাঙ্কু।

তানিম এহসান এর ছবি

দারুণ! চলুক চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

ঈয়াসীন এর ছবি

খাসা

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অন্যকেউ এর ছবি

জোশিলা লেখা পড়ে মনটাই ভালু'য়ে গেলো! তোর জন্য গ্রম গ্রম ভাত, একপাশে এট্টু ঘি, এক চিমটি লবণ, আর কলমি শাক ভাজা। হাজার বছর বেঁচে থাক বাপ, আর এসব ছাইভস্ম লিখে যা! দেঁতো হাসি

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

কৌস্তুভ এর ছবি

আইসা পড়ো বেইবে...

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সচলের হোম্পেজ তো আজকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে ভর্তি। খুবই চমৎকার পোস্ট। ভ্যাঙ্কুভার আস এই পোস্টের জন্য খাওয়া পাওনা থাকল দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

ফাহিম হাসান এর ছবি

নিজে রান্না করে খাওয়াবে নাকি? কৌস্তুভ, এইসব ছলনায় ভুলো না কিন্তু! চোখ টিপি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ধুরো মিয়া, বিরানীর জন্যে সবকিছু রেডি কইরা রাখলাম। তুমি তো দিনে রাইতে আমারে সুমায়ই দিলা না। কৌস্তভও নিশ্চইয়ই তোমার মত না!

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

কৌস্তুভ এর ছবি

রান্নায় সুমায় না দিয়ে অন্য কিসে বেস্ত ছিলে তুমরা সে কথা গুপনই থাক না...

কৌস্তুভ এর ছবি

কেন বাছা, তার হাতের রান্না কি একা তোমারই অধিকার? <খুক খুক>

ফাহিম হাসান এর ছবি

আরে না, ব্যাপারটা হল ত্রিমাত্রিক কবি কথা দিয়েও কথা রাখে নি। তবে অন্যান্য খাওয়া-দাওয়া বেশ জব্বর হয়েছে।

কৌস্তুভ এর ছবি

আহাহা, ছনছন করে ভেঙে যাওয়া একটি হৃদয়ের শব্দ শুনতে পেলেম যেন...

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে ভ্যাঙ্কুভার যাচ্ছিই তো ওই জন্যে, তোমাদের ঘাড়ে চেপে খানাদানা আর টইটই করে বেড়াব...

খেকশিয়াল এর ছবি

ওরে কাটাকাটি ফাটাফাটি লেখা! চলুক

ম্যান্টিস শ্রিম্পের একশন একবার ন্যাটজিওতে দেখেছিলাম, ট্রিগারের মত বাড়ি মারে দাঁড়া দিয়ে। কিন্তু তখন জানতাম না ব্যাটারা এরকম সুপারডুপার জীব!

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

কৌস্তুভ এর ছবি

ম্যান্টিস শ্রিম্প বোধহয় মেটালিক লোকজনদের জন্য আদর্শ পেট চোখ টিপি

অতিথি লেখক এর ছবি

ইন্টারেস্টিং। একটা বই পড়ছিলাম কিছুদিন আগে। উদ্ভিদ নিয়ে- সেখান থেকে জানতে পারলাম উদ্ভিদের ১১ ধরনের আলোসংবেদী কোষ আছে! ডারউইনের একটা মজার পরীক্ষাও আছে উদ্ভিদের আলো চেনা নিয়ে হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

আলোই তো তাদের খাদ্য, সেটা সেন্স করতে না পারলে কি চলে! তবে তারা তো 'ইমেজ' তৈরি করতে পারে না আমাদের ব্রেন যেমন পারে।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

মারাত্মক লেখা। খায়া ফেলার মতো চোখ টিপি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

ইয়ে, তেঁতুলের আচারের মত নয়ত?

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আপনি কিন্তু ইস্লামে আঘাত দিতেছেন!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ওরে না! গড়াগড়ি দিয়া হাসি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

আপনি ভারী রঙ্গিলা মানুষ। আমি আগেও দেখেছি সুন্দর সুন্দর রঙচঙয়ে ছবি নিয়ে কাজকারবার করেন। লেখা বড়ই ভালু পেলুম (সে আর বলতে?)

তেঁতুল ব্যবহার করলে কিন্তু রঙ উঠে যায়, সাধু সাবধান!!!

মারভিন  এর ছবি

লেখা ফাটাফাটি ,খালি ফুটনোটে "দি ওটমিল"কে উল্লেখ করলে ভালো হতো। ম্যান্টিস শ্রিম্পকে নিয়ে সাম্প্রতিক আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে তার শুরু ম্যাথিউ ইনম্যানের কমিকটা থেকেই। আপনি তার একটা ফ্রেমও ব্যবহার করেছেন দেখতে পাচ্ছি।

কৌস্তুভ এর ছবি

ঠিক ঠিক, আসলে ওটমিল যে এদের নিয়ে আস্ত একটা কমিক করেছিল সেটা ভুলেই গেছি, এটা একটা সিঙ্গল ফ্রেম হিসেবে কোনো পেজে দেখেছিলাম। মনে করিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ, জনহিতার্থে লিঙ্কটাও দিয়ে দিলে পারতেন হাসি

পাঠক এর ছবি

আপনার লেখাটা পড়ে একটা ব্যাপার বুঝতে না পারায় আমি আমার দিদিকে একটা মেইল লিখসিলাম। সেই মেইলের অংশ বিশেষ এখানে তুলে দিচ্ছি।

.....................
একটা কথা আমি বুঝলাম না, তা হলোঃ ''এতে হচ্ছে কি, প্রথম ফিল্টারটার মধ্যে দিয়ে যে আলো এসেছিল, তারা ঘুরে গিয়ে দ্বিতীয় ফিল্টারটা ঠিক যেমন চায় তেমনই কোণে চলে এল, অতএব আপনি পুরো আলোটাই দেখতে পাবেন।'' তোমাকে একটু ব্যাখ্যা করি। মনে করো, তোমার বাগানে একটা বেড়া আছে। বেড়াটা কিভাবে বানাও তো জানোই। অনেকগুলা লাঠি তুমি পরপর একসাথে রাখো। ধরো, লাঠিগুলার মাঝখানে কিছুটা ফাঁক আছে। তো তার মানে হলো তোমার বেড়াটার লাঠিগুলা vertical, আর তার মাঝখানে কিছু vertical ফাঁকা আছে। তো আলো এক অদ্ভুত চিড়িয়া। তুমি ভাবো, আলো সরল রেখায় আর্মিদের মতো আসতে থাকে, কিন্তু আসলে সে অনেক দুষ্টু। সে আসলে উপরে নীচে ডাইনে বায়ে উত্তর-দক্ষিণ, পূব-পশ্চিম সব দিকেই নাড়াচাড়া করতে করতে আসে। কিন্তু অনেক ''ছোট মানুষ'' তো, তাই তুমি দেখতে পারো না ওদেরকে। তো তুমি যেই না ওদের সামনে দিলা একটা বেড়া, যার মধ্যে কেবল vertical কিছু ফাঁকা আছে, আলোর দুষ্টুমিতেও তুমি আসলে খবরদারি করলে। এইবার কি হবে বুঝতেই পারতেসো। আলোর যে অংশটা উপর নীচে নড়াচড়া করতে করতে আসতেসিল, তারা ঠিকই vertical ফাঁকাগুলো দিয়ে ঢুকে পড়বে ( ছোটদের দুষ্টুমি একেবারেই দমন করা এমনিতেও ঠিক না ), কিন্তু যারা horizontally আসতেসিল, তারা কিন্তু যাবে আটকে। তো LCD টিভিতে নাকি এই রকম এক জোড়া বেড়া থাকে। বেড়াগুলাকে ফিল্টার বলে। একটার সামনে আরেকটা বেড়া। কিন্তু প্রথম বেড়াটার ফাঁকগুলা vertically না, horizontally place করা। মানে একটা বেড়াকে তুমি যদি এমনভাবে rotate করো, যেন ডান পাশ বা বাঁ পাশটা হয়ে গেল উপর আর নীচ ( কিংবা নীচ আর উপর, তোমার ইচ্ছা ), আর উপর আর নীচের পাশটা হয়ে গেল ডান আর বাঁ। এইটা ভেদ করে আলোর কেবল horizontal part-ই আসতে পারে। তো দ্বিতীয় বেড়াটা আবার রেগুলার বেড়া, তার মধ্যে মধ্যে যে ফাঁকগুলা, সেইগুলা সব vertical. এখন সেই ফাঁকগুলার মধ্যদিয়ে বুঝতেই পারতেসো, horizontal আলোর অংশ ঢুকতে পারবে না। কিন্তু তুমি একটা কারসাজি করতে পারো। একটু আগেই horizontal যে আলো আসতেসিল, তাদেরকে এমন জাদু করতে পারো, যেন তারা দ্বিতীয় বেড়ায় ঢোকার আগেই vertical হয়ে যায়। জাদুটাও কঠিন কিছু না, কারেন্ট। এখন এই vertical আলো ঠিকই ঢুকতে পারবে দ্বিতীয় বেড়া ভেদ করে। তো, লেখক বলতেসেন, আমি এইখানে পুরো আলোই পাইতেসি। কিন্তু আমার তো মনে হয়, আমি vertical আলোই পাচ্ছি, horizontal না। আমার কথা হচ্ছে, দ্বিতীয় ফিল্টারটা যেহেতু ভার্টিকাল, সেইটা ভেদ করে horizontal আলোর আসার কথা না। তাহলে আমি পুরা আলো কিভাবে দেখতে পাবো।

................................

আমি হয়তো কিসু মিস করসি। বুঝিয়ে বললে কৃতজ্ঞ থাকবো।

কৌস্তুভ এর ছবি

ওহ আচ্ছা, তাহলে আমার ভাষার দোষ - পুরো আলো বলতে প্রথম বেড়া টপকে যতটা আলো ঢুকছিল তার পুরোটাই দ্বিতীয় বেড়াটা দিয়েও গলে যেতে পারছে, এটাই বলতে চেয়েছিলাম।

পাঠিক এর ছবি

ধন্যবাদ।

পাঠিক এর ছবি

আমি আরেকটা কথা বুঝতে পারি নিঃ

''আলো একরকম তরঙ্গ, মানে এমনভাবে ভাবতে পারেন, যেন একটা একটা ফোটন কণিকা একটা নির্দিষ্ট প্লেনে ঢেউয়ের মত নাচতে নাচতে এগিয়ে চলেছে। ''

তো আমি যা বুঝি, তা হলো, একটা তরঙ্গ, যেমনটা আপনার ছবিতে, যদি ''এগিয়ে চলে'', সে তো একটা প্লেনেই থাকতে পারে না। কারণ, সে একটা প্লেনে না হয় এগিয়ে যাইতেসে, কিন্তু তরঙ্গ বলে সে তো উপরে নীচে ওঠানামাও করতেসে।

আমি physics-এ খুব কাঁচা। আমাকে বুঝিয়ে বললে কৃতজ্ঞ থাকবো।

কৌস্তুভ এর ছবি

একটা প্লেন মানে সমতল তো দ্বিমাত্রিক (২-ডিমেনশনাল)। ইস্কুলে গ্রাফ পেপারে যেমন x-y অক্ষ আঁকতেন ঠিক তেমন। তো পোলারাইজড আলো x অক্ষ বরাবর সামনে এগিয়ে যেতে যেতে y অক্ষে লাফঝাঁপ করতেই পারে। তার তো প্লেন ছেড়ে বেরিয়ে আসার দরকার নেই। বোঝাতে পারলাম?

পাঠিক এর ছবি

হ্যাঁ, আমিও পরে তাই ভাবসিলাম। একটা ফুটবল মাঠে খেলুড়ে যখন দৌড়ায়, তখন সে অনেকটা সময় শূণ্যে থাকে, কিন্তু সে মাঠেও তো এগিয়ে যায়।

ধন্যবাদ আপনার উত্তরের জন্য।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

লেখাটির বিষয়বস্তু সব ঠিকমত বুঝিনি, তবে রঙের কারিকুরি খুব উপভোগ করেছি। চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

আয়নামতি এর ছবি

উদাসদায়ের মত অত্তো বোকা নই, যে পটাং করে বলে বসবো বিজ্ঞান বুঝিনে! খুব বুঝি! বেশ বুঝি পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

আর অনার্য নির্ঘাত আমার এক ভাবীর মত যা-ই দেখি খায়া ফেলতে মন চায় সিনড্রমের স্বীকার!

মারাত্মক লেখা। খায়া ফেলার মতো

তবে ইয়ে, এই চিংড়ির দো'পেয়াজা খেতে কেমন রে? খাইছে

পোস্টখান সত্যিই উপাদেয় দেঁতো হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে হ্যাঁ, আমরা তো জানিই শ্রীমতি বায়নামতি আম্রিকায় রিছার্চার, সে ছায়েঞ্ছ বুঝবেনা তো কি শফী বুঝবে?

এই চিংড়ি ধরা বহুত ঝামেলা, অসাবধানে ধরতে গিয়ে কত লোকে হাতে গুঁতো খেয়ে রক্তারক্তি করেছে...

তুলিরেখা এর ছবি

বড় মতন মজবুত লোহার খাঁচা বানিয়ে খচাখচ এই চিংড়ি ধরে কচাকচ খোলা ছাড়িয়ে আয় রেঁধে খাই। হাসি
এদের এত যে কারিকুরি তা কে জানতো! হাতুড়ী চালায়, শক মারে, আবার নাকি লাইটের ছয়রকম ইকোয়েশন কষে! চিন্তিত

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

টেট্রাক্রোমাসি নিয়ে একটা রেডিও অনুষ্ঠানে ম্যান্টিস শ্রিম্পের কথা শুনেছি। তার কয়েকদিন পর জানতে পারলাম টেট্রাক্রোমাটিক মানুষ পাওয়া গেছে দুজন

আর দাঁড়ার গতিটা কি তাহলে পানিতে শব্দের গতির চেয়ে দ্রুত? বাতাসে যেমন শব্দের গতির চেয়ে বেশী গতিতে (মাক স্পীড) চললে একটা শূন্যতার সৃষ্টি হয় (সনিক বুম) সেরকম অনেকটা?

সুকান্ত এর ছবি

cavitation এর সাথে শব্দের গতির সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। দাঁড়ার অনেক কম গতিতেই cavitation হওয়ার কথা। youtube ভিডিও অনুযায়ী দাঁড়ার সর্বোচ্চ গতি ২৩ মি/সেক আর জলে শব্দের গতি প্রায় ১৫০০ মি/সেক। cavitation হয় মূলত জলের ভেতর কথাও "চাপ" যদি ঐ তাপমাত্রায় জলের বাষ্পচাপের চাইতে কমে যায়। মনে করার চেষ্টা করুন ছোটবেলায় শেখা - জলের স্ফুটনাঙ্ক জলের চাপের উপর নির্ভর করে, তাই পাহাড়ের উপর বাতাসের চাপ কম বলে জল অনেক কম তাপমাত্রায় ফোটে। তেমনি প্রেসারকুকারে চাপ বাড়িয়ে জলের স্ফুটনাঙ্ক অনেক বাড়িয়ে দিয়ে বেশি তাপমাত্রায় রান্না করা যায়।

ধরুন কথাও জলের উপরে চাপ ১০১ কিলোপ্যসকেল (১ বায়ু চাপ) থেকে কমাতে শুরু করলাম তো স্ফুটনাঙ্ক ১০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে আস্তে আস্তে কমতে শুরু করবে। চাপটা যদি মোটামুটি ৪ কিলোপ্যসকেল নেমে আসে তাহলে ৩০ ডিগ্রী সেলসিয়াসেই জল ফুটতে শুরু করবে।

বার্নলির নিয়ম অনুযায়ী তরলের/গ্যাসের গতিবেগ বাড়লে তার চাপ কমে। যখন দাঁড়াটা আর শামুকের খোলসের মাঝের ফাকা জায়গাটা থেকে জলটা দ্রুত বেরিয়ে যেতে থাকে তখন তার চাপ কমে ওই তাপমাত্রায় বাষ্পচাপের সমান হয়ে যায় তাই জলটা ফুটে বাষ্প হয়ে বুদবুদের আকার ধারণ করে। আর বুদ্বুদটা যখন ফাঁটে তখন একটা ছোট কিন্তু শক্তিশালী জলের জেট সারফেসটাকে আঘাত করে।

সনিক বূমটা অন্য ব্যাপার।

কৌস্তুভ এর ছবি

লেখা -গুড়- হয়েছে

সুকান্ত এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

কৌস্তুভ এর ছবি

হ্যাঁ, টেট্রাক্রোমাসির খবরটা আমিও দেখেছিলাম। তবে এই মানুষগুলো পরলোকপ্রাপ্ত হলে যদি এদের রেটিনা ঘেঁটে নতুন একটা আলোকসংবেদী কোষের অস্তিত্ব পাওয়া যায় তবেই পুরোপুরি বিশ্বাস করব।

সনিক বুমের মূল আইডিয়াটা একই, যে দ্রুত কোনো কিছু সরে যাওয়ার ফলে প্রবাহী মাধ্যমে চাপ কমে গিয়ে একটা ভ্যাকুয়াম-মতন ব্যাপার হয়। জলের ক্ষেত্রে সুকান্তদা তো বললেন। বাতাসের ক্ষেত্রে চাপ কমে গেলে জলীয় বাষ্পটা ঘনীভূত হয়ে জলকণা হয়ে যায়, তাই মেঘের মত ওই সাদা সাদা ব্যাপারটা দেখতে পাওয়া যায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভাল লাগল। অতি চমৎকার লেখা - ঠিক যেমনটি আশা করেছিলাম গুরু গুরু । আমি আবার একটু গোলা মত আছি। পড়তে গেলে অক্ষর-রা উল্টে পাল্টে যায়। ফলে গল্পদের হুড়মুড় করে পড়ে যেতে পারলেও বিজ্ঞানের লেখা বেশ ধীরে ধীরে অনেক সময় লাইনগুলো কয়েকবার করে ফিরে ফিরে পড়ে যেতে লাগে। অভ্যাস আছে, হয়ে যায়, তবে সময় দিতে হয়। ফলে একটু গুছিয়ে বসে পুরোটা পড়ে মন্তব্য লিখতে লিখতে ৫৭টা মন্তব্য পার হয়ে গেল। একটা ভাল হল - মন্তব্যগুলো থেকেও আরো কত কি পাওয়া গেল! হাসি
- একলহমা

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনি আগুনেরই গোলা খাইছে

নীল রোদ্দুর এর ছবি

আমার ষোলখান লাইট সেন্সর দরকার।

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনি গবেষক মানুষ, নিজেই বানিয়ে নেন!

মিলু এর ছবি

দারুণ লাগল সত্যি! গতকাল পড়েছিলাম আজ মন্তব্য করার আগে আবারও পড়লাম।

কৌস্তুভ এর ছবি

শুনে দারুণ ভাল লাগল! হাসি

দিগন্ত এর ছবি

সোনোলুমিনিসেন্স নিয়ে কিছু লিখলে না?


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

কৌস্তুভ এর ছবি

ওটা নিয়ে তেমন একটা পড়াটড়া হয়নি। আর সবই কি আমি ছোটোমানুষ একাই লিখব নাকি?

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

দারূণ লেখা।
খুব ভালো লেগেছে পড়ে এবং জেনে।
ধন্যবাদ

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

কল্যাণ এর ছবি

ভাল্লাগছে কস্তুদা' চলুক

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে আপনি অনেকদিন পর!

কল্যাণ এর ছবি

হ্যা খুব ফিল্টার হয়ে যাচ্ছিলাম!!!

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক হাততালি
ইসরাত

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

বুঝলাম চিংড়ি খেতে গিয়ে না পেয়ে দিলে লালা ঝরছে, কোথায় একটা বিব কিনে নিবি, না, সে একখানা আস্ত লেখা নামিয়ে ফেল্লো! তোমরা পারোও বাবা! ম্যাঁও

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

কৌস্তুভ এর ছবি

কি আপদ!

তারেক অণু এর ছবি

হাততালি হাততালি

বাহ, দারুণ!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বুঝলাম, এই চিংড়ির দাঁড়া খুব দ্রুত দাঁড়ায়...
ভালো... বেশ ভালো।

ছোটবেলায় একটা খেলা খেলতাম, আমি যা দেখি তুমি তা দেখো?
এই চিংড়ির সাথে এই খেলা খেললে নীলে গেইম খামু

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নীড় সন্ধানী এর ছবি

ভয়ানক সুন্দর চিংড়ি, তার চেয়ে বড় কথা ভয়াবহ জ্ঞানী পোষ্ট। এক চিংড়িতেই এত!!! অ্যাঁ
এর আঘাত করার শক্তি দেখে তো মনে হলো এর ভেতর সুপার স্প্রীং আছে!!!!

তবে শুরুতে অনেকের মতো চিংড়ি দেখে আমার মনেও ভিন্ন খায়েস জাগছিল কিন্তুক খাইছে

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সাত্যকি এর ছবি

কিভাবে লিখেন রে ভাই ? দুর্দান্তিস !

অতিথি লেখক এর ছবি

পুরোটা বুঝি উঠি নাই,এখনো।২বার পড়েছি,আরো কয়েকবার পড়লে যদি আপনার এই জ্ঞানের কিছুটা নিজের মাঝে নিতে পারি চিন্তিত ।তবে যতটুকু পড়েছি তাতেই অনেক কিছু জেনেছি।বিজ্ঞানের ছাত্র হিসাবে এমন লেখা পেয়ে তাই মুগ্ধ,বিশেষ করে মাইক্রোবায়োলজি লেভেলে কোন লিখা পেলে আরও খুশি হতাম,আশা করি সেখানেও লিখবেন।ভালোথাকবেন।

মাসুদ সজীব

অনীক সামীউর রহমান এর ছবি

এত সুন্দর করে কিভাবে লেখেন বলেনতো? কিছু মন্ত্র শিখিয়ে দেবেন? আমি স্রেফ লেখা শুরু করতেই ভয় পাই। কিছুতেই বুঝে উঠতে পারিনা কি লিখবো, কিভাবে লিখবো।

সত্যপীর এর ছবি

এইখানে এক ম্যান্টিস মামুজি দাঁড়া দিয়ে মাছের চোখ ফর্দাফাঁই করে দিছে দেখাইল। ডেঞ্চারাস!

..................................................................
#Banshibir.

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

আসমান শূকো'র পোষা ম্যান্টিস বোধহয়

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।