আমাদের ল্যাবের টার্কিশ খুকির থেকে একটি সরল কিন্তু উপাদেয় চিকেন স্যুপের রেসিপি জোগাড় করেছি।
(তারা আবার ঠিক তুর্কী না, তুরস্কের পূর্বদিকের কুর্দিস্তান অঞ্চলের, নিজেরা শিশুকালে এখানে চলে এলেও পরিবারের অনেকে সেখানে রয়ে গেছে, পরিবারের অনেক যুবক পিকেকে-র হয়ে তুরস্কের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে আর ফিরে আসে নি, তার কাছে এসব গল্পও শোনা যায়।)
ঘটনা এই, যে সেদিন সন্ধ্যেবেলা আমি ল্যাবে বসে কাজ করছি, আমার পাশের চেয়ারে সেই খুকি কাজ করছে, এমন সময় তার মা ফোন করে ডাক দিয়েছে, আয় বাছা ডিনার খাবি আয়। (যাঁরা প্রবাসী ব্যাচেলরজীবন যাপন করেন নি তাঁরা এই ব্যাপারটা যে কত সুখের তা বুঝবেন না, ঘরকা মুর্গি ডাল বরাবর।) ডাক শুনে আবার খুকির মনে শখ হয়েছে, না, এইটা নয়, ওইটা খাব। কিন্তু ওইটা-র নামটা তার মনে পড়ছে না। তখন কাকাতো বোনকে ফোন করে ওইটার বর্ণনা দিল, লাভ হল না, তারপর ঠাকুমাকে ফোন করে বর্ণনা দেওয়াতে ঠাকুমা একেবারে রেসিপি বলতে আরম্ভ করে দিলেন। নাম পেয়ে গিয়ে তার মাকে ফোন করে সেটার আবদার করা হয়ে গেলে পর আমি মিষ্টি করে জিজ্ঞেস করলাম, কী এই বস্তু যা নিয়ে এত হইচই করছ?
tavuk haşlama শব্দটার বঙ্গানুবাদ স্রেফ মুরগি সেদ্ধ। অতএব, বুঝতেই পারছেন, বস্তুটা ফ্যান্সি কিছু না। তবে পোষ্টাই। মুজতবা আলী জার্মানিতে ট্র্যাম্প হয়ে ঘোরার সময় সেই ঠাকুমা ও নাতনীর বাসায় যেমন বিপুলবপু স্যুপ খেয়েছিলেন, তেমনও না, এইটা ক্লিয়ার স্যুপ। রান্না করাও ভারি সহজ।
১) এক প্যাকেট নধরতন্বী হৃদয়বহ্নি টাইপের চিকেন কিনে আনুন, উরু বা নিতম্ব মানে ড্রামস্টিক থাই সবই চলবে। ধুয়েটুয়ে রাখুন।
২) সঙ্গে কিছু আলু ও গাজর। সেগুলোর খোসা ছাড়িয়ে মাঝারি পিস করে কেটে নিন। যদি পছন্দনীয়র মত জোশ থাকে তাহলে ভার্নিয়ার স্কেল দিয়ে মেপে মেপে এক ইঞ্চি কিউব কাটুন, যদি ভিহার্টের মত জোশ থাকে তাহলে হেক্সাগন পেন্টাগন এসব জিওমেট্রিক শেপে কাটুন, আর যদি আমার মত ব্রাত্যজন হন তাহলে ঠুসঠুস করে টুকরো করে ফেলুন।
৩) একটা বড় পাত্রে অর্ধেক ভর্তি করে জল নিন। তাতে চিকেনগুলো দিন, চামচখানেক নুন, আর কিছু আস্ত গোলমরিচ মুক্ত হস্তে দান করুন। আমি দিয়েছিলাম পিপুল, সর্দিকাশিতে উপকারী কিনা।
৪) ও হ্যাঁ, গুটিকয় রসুনের কোয়াও থেঁতলে দিয়ে দিন। আর এট্টুসখানি তেল। এটা যেহেতু পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর রান্না, আপনি স্বাস্থ্যসচেতন হয়ে থাকলে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল দেওয়াই বিধেয়।
৫) গ্যাস চালু করতে ভোলেননি নিশ্চয়ই? জল ভালমত ফুটতে থাকলে আলুপটলগুলো, থুড়ি, আলু আর গাজর দিয়ে দিন। আঁচ রাখুন মাঝারি, যদি না আমার বাসার হেঁপোরুগীর মত গ্যাস কানেকশন হয়।
৬) একটা হৃষ্টপুষ্ট পেঁয়াজও বড় বড় ফালি করে পাত্রে ফেলে দিন। অবশ্য এখন ভারতে থাকলে অবস্থাবিচারে পেঁয়াজটা বাদও দিয়ে যেতে পারেন। সম্প্রতি পুজোর শাড়ি কিনে পেঁয়াজ ফ্রি পেয়ে থাকলে আবার অন্য কথা।
৭) এটা খুকির রেসিপিতে ছিল না কিন্তু আমি একটুখানি টাটকা আদা ফালি করে দিয়ে দিলাম। বুঝতেই পারছেন, রেসিপিতে মশলাপাতির পরিমাণ কম কিনা।
৭) আধা ঘন্টামত ফুটলে কিছু মিন্ট দিয়ে দিন। আমার কাছে টাটকা পুদিনা ছিল না, ব্রিটিশ মশলার র্যাকে শিশির মিন্টগুঁড়ো পেলাম কিন্তু তাতে গন্ধ নেই। তখন খেয়াল হল কিছু টাটকা কারিপাতা কেনা আছে। গৌরী সেনের মত দানবীর হয়ে পড়লাম। আহা, যা গন্ধ বেরিয়েছিল...
৮) ফুটতে ফুটতে জল বেশি শুকিয়ে এলে রিচার্জ করতে থাকবেন। ৪৫ মিনিট ফুটলে দেখে নিন সব ঠিকঠাক সেদ্ধ হয়েছে কিনা, নুন ঠিক আছে কিনা, ইটিসি ইটিসি। না হলে মেরামত করুন। তারপর নামিয়ে ফেলুন।
৯) শেষে কয়েকফোঁটা লেবুর রস দিয়ে দিলাম।
আর কী, এই পারিবারিক রেসিপির মধ্যে নিহিত বহু বছরের মা-ঠাকুমাদের স্নেহ এবং টার্কিশ খুকির দুষ্টুমিষ্টি বন্ধুত্ব মনে ভাবতে ভাবতে গরম-গরম সুড়ুৎ করে খেয়ে নিন।
যেহেতু ইহা খুকির ঠাকুমার দেওয়া রেসিপি তাই এটি আমাদের সবার ঠাম্মি আশালতাকে ডেডিকেট করা হল, তাছাড়া রেসিপির প্রথম দাবীও ঠাম্মিই তুলেছিল কিনা।
ফাউ রেসিপি – কাজুর বরফি
এইটা মনে হয় আদিতে উত্তরভারতীয় রেসিপি, যদিও কলকাতার দিকে এখন বেশিরভাগ মিষ্টির দোকানেই পাওয়া যায়। তবে মায়ের থেকে পাওয়া আমার এই রেসিপি বিশুদ্ধ ও অকৃত্তিম, হলদিরামের মেঠাইয়ের মত ভেজাল দেওয়া ক্যাতক্যাতে বস্তু না আবার দোকানের মত ক্ষতিকর অ্যালুমিনিয়াম রাঙতাও দেওয়া থাকবে না।
১) ২৫০ গ্রাম আনসল্টেড কাজু (ভাঙা/আস্ত সব চলবে) অল্প অল্প করে মিক্সারে শুকনো গুঁড়ো করে নিন। কাজু যেন ঘরের তাপমাত্রায় থাকে, ঠাণ্ডা বা গরম না হয়। আর গুঁড়ো করতে গিয়ে বেটে ফেলবেন না যেন, তাহলে তেল বেরিয়ে ক্যাতক্যাতে হয়ে যাবে। গুঁড়ো করলে মুখে যে অল্প দানা-দানা লাগে সেই ক্রাঞ্চি ভাবটাই বরং বেশি মজার।
২) অল্প খানিকটা ফুটন্ত জলে ১০০-১৫০ গ্রাম চিনি মিশিয়ে শিরা বানিয়ে নিন। চিনির পরিমাণ আপনার যেমন কম-বেশি মিষ্টি ভাল লাগে সেই অনুযায়ী দেবেন।
৩) ফ্লেভারের জন্য কী দেবেন সেটা আপনার অভিরুচি। যদি জাফরান দেন তবে শিরায় ঢেলে মিশিয়ে নিন।
৪) একটা ননস্টিক পাত্রে অল্প খানিক ঘি/মাখন গলিয়ে নিন। যদি ছোট এলাচ ফ্লেভার দেওয়া মনস্থ করেন তাহলে গুঁড়ো করে খোসাগুলো ভাগিয়ে দানাগুলো ওই ঘিয়ে ফেলে অল্প নেড়ে নিলেই হবে।
৫) এবার ঘিয়ে কাজু দিয়ে নাড়তে থাকুন। যেন ডেলা পাকিয়ে না যায়, আবার বেশি ভাজা-ভাজা হয়েও না যায়। পুরোটায় হালকা রঙ ধরতে শুরু করলেই হবে। একটুখানি রোস্ট করা নিয়ে কথা।
৬) এমন হয়ে এলেই চিনির শিরা ঢেলে দিয়ে মিশিয়ে ফেলুন, বেশ স্মুথ হয় যেন। জল শুকিয়ে এলে (শিরা ঘন থাকলে বেশি সময় লাগবে না) মিশ্রণ যখন মোটামুটি নরম আছে কিন্তু নাড়াচাড়া করার মতনও হয়েছে তখন একটা ঘি-মাখানো থালায় বা ওয়াক্স পেপারে ঢেলে চেপ্টে ছড়িয়ে দিন। ঠাণ্ডা হয়ে গেলে বরফি বা যথেচ্ছ আকারে কেটে ফেলুন। ব্যস!
মন্তব্য
আলু, গাজর, মিন্ট, গোলা মরিচ, থেতলে দেয়া রসুন, ভার্জিন অয়েল, লেবুর রস... তারপরও আপনি বলছেন "রান্না করা ভারি সহজ"।
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
কী গেরো! ফুটন্ত গরম জলে শুধু সবকিছু পরপর দিতে থাকবেন, এতে আর সমিস্যে কী? বিরিয়ানি কি শামিকাবাবের তুলনায় কত্তো সহজ!
শিখলাম
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনি হচ্ছেন 'নজুর মাংস' ইত্যাদি বিখ্যাত সব রেসিপির গুপন ভাণ্ডার, আপনারে শেখাবার ধৃষ্টতা আমার নাই!
এতো বিশাল কারবার! আমার দ্বারা এই তাউক হাসলামা কখনো রান্না করা হবে না!
-নিয়াজ
সুপার্ব!
এই শুক্রবারে রেঁধে ফেলবো তাহলে স্যুপ দিয়ে কাজুর বরফি হবে দুপুরে
তুই আর কি কি রাঁধতে জানিস রে?
এক এক করে দে দেখি। তবে এরপরের রেসিপি গুলোতে যেন আরো অনেক গল্প থাকে, গল্প থাকলে জমে বেশি
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
ভাল, রেঁধে ছবি পোস্টাস।
কিন্তু রান্নার তালিকা দেব কেন রে? তুই পাখি ভাই হলেও নাহয় কথা ছিল।
রান্নার তালিকা কে চাচ্ছে?
রেসিপি দিবি রেসিপি
পরের বার রেসিপিতে খাবারের নামটা এমন ভুল করিসনা। এবার তো লোকে ভদ্রতা করে পয়েন্ট আউট করে দেয়নি, পরেরবার আর 'থাউক-হাসলাম-না' কে 'তাউক-হাসলামা' লিখে পার পাবি বলে মনে হয় না। :।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
থাক থাক। বরং লামা'র রোস্ট কেমন হবে তাই ভাবছি। লোকজন বীফস্টেক নিয়ে মারপিট করে, এ বিষয়ে কিছু বলে না।
নামটা পড়ে আমারো কেমন কেমন পরিচিত মনে হচ্ছিল - এক্ষণে বুঝিলাম 'থাউক-হাসলাম-না'
"থাউক খাইলাম না" নামে কিছু নাই??
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আমার কাছে বিরাট ঝামেলার রেসেপি মনে হইছে, তারপরেও কোন এক ইউকেন্ডে টেরাই নিমু ভাবতাছি
সাহস ও সংগ্রামই সত্যের পথ
বেশ স্ট্রেইটফরোয়ার্ড প্রসেস মাইরি। কোন প্যারালেল ইনস্ট্রাকশন নাই।
একবার চেষ্টা করে দেখা যেতেই পারে
আপ্নারে
কৌ, সগল্প রেসিপি চমৎকার, অতি চমৎকার লাগল। একদিন এই স্বাস্থ্যকর চিকন চিকেন স্যুপ আর উপাদেয় কাজু বরফি খাওয়ার উদ্যোগ নেওয়ার খুব ইচ্ছা রাখি। আরো এই রকম রেসিপি পড়বার আকাঙ্খা জানিয়ে রাখি।
- একলহমা
আপনি তো নজ্জা দিতেছেন!
তাউক মানে মুর্গী? আরব দোকানে শিশ তাউক দেয় তার মানে তাইলে দাঁড়ায় মুর্গীর শিককাবাব?
সবই বুঝছি।
..................................................................
#Banshibir.
আইজ্ঞা হ।
অবশ্যই ট্রাই করে জানাব , কেমন লাগল , কেমন পারলাম
আফরিন আহমেদ
আহা সাধু সাধু!
ট্রাই দিলুম। বেশ উপাদেয় মশায়।
৭ নম্বরের পরে সাদা সাদা গাঁদ ভেসেছিল, সেগুলো চামচ দিয়ে আলগোছে সরিয়ে নিয়েছিলাম।
তাতে করে সুরুয়া হয়েছে টলটলে স্বচ্ছ।
বাহ! খেয়ে ফেলেছেন?! একে কৌস্তভের রেসিপি তাতে আবার দুর্দান্তের সার্টিফিকেট - নজ্রুল ভাই চলেন ট্রাই করি, আমি বাজার সদাই আপনি বাকিটা?!
আরে দারুণ, আপনি এক্কেবারে সটান রেঁধেবেড়ে খেয়েদেয়ে রিভিউ দিয়েছেন, এর উপরে আর কোনো কথা নাই
খিদা লেগে গেল তো
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
খিদা লেগে গেল তো আপাতত বিরিয়ানি কি বোরহানি দিয়েই নাহয় কাজ চালান!
বাহ বাহ, কন্যাগ্রহণের সময় যত এগোচ্ছে ততই গৃহকর্মে তোমার উন্নতি হচ্ছে ! সুখী হুউউউউউউ
facebook
যত্ত বাজে কথা!
চমৎকার, তবে এটা আমি রান্না করতে পারবো বলে তো মনে হয় না। সংগ্রহে রাখলাম যাতে কাওকে দিয়ে রান্না করিয়ে খেতে পারি।
-আরাফ করিম
ঘুড আইডিয়া!
বাহ। বহুমুখী প্রতিভা। নেক্সট ছুটির দিনে ট্রাই করবো। ভাল না হইলে খবর হেজ।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
ভাবতেছি একটা টেরাই মাইরাই দেব কিনা।
লিচ্চয়, লিচ্চয়!
সুপ এর রেসিপি বেশি জটিল না, একদিন চেষ্টা করে দেখতে হবে। কাজুর বরফি খুবই পছন্দের জিনিস আপনি রেসিপি না দিয়ে সবার বাসায় কাজুর বরফি পার্সেল করলে বেশি খুশ হইতাম
ইসরাত
তাচ্চেয়ে লন্ডন আসেন, খাইয়ে দিবনি আর ঠোঙাভরে পথের জন্যও দিয়ে দিবনি।
অ। বাহারে নাম চেহারা দেখে ভেবেছিলাম অজানি দেশের না জানি কি! এইজিনিস তো সেই আদ্যিকাল থেকে আমার বাড়িতে রোগের পথ্যি। আমি সাথে একটু লবঙ্গ দিই আর কারিপাতাটা এখানে মেলেনা। তবে রোগামুখে খেতে ভালোর সাথে ভীষণ পুষ্টিকর তাতে সন্দেহ নেই।
এই রেসিপির চিকেনখানা দিয়ে আরও কয়েকটা ধাপ যোগ করে ফাটাফাটি রকম দারুণ একটা ফিলার বানানো যায়। পাফ পেস্ট্রি দিয়ে মুড়িয়ে ওপরে একটু এগ ওয়াশ করে পনের মিনিট বেক করলেই মুচমুচে চিকেন রোল।
কিন্তু কথা হল গিয়ে, সব ছেড়ে এইরকম ঝ্যালঝেলে বেরঙা খাবারটাই আমাকে ডেডিকেট করতে ইচ্ছে হল তোমার?! কি হিংসুটি মাইরি!
----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি
-একলহমা
আম্মো লবং দিছি।
আরে বুড়ো বয়সে দাঁতটাঁত পড়ে যাওয়ার পর কি আর তিলের নাড়ু মাছের মুড়ো চেবানোর ক্ষমতা থাকে? তখন তো এইসব সুপটুপই খেতে হয়, নাকি?
খাইছি এই বস্তু। রোগীর পথ্য । এইটা খেয়ে রোগমুক্তির চেয়ে বিষ খেয়ে মরে যাওয়া বেশী সুখের
সহমত , বিরাট সহমত ।
আহা এইরম বইলেননা, দিলে কি রহম নাই? টার্কিশ খুকি শুনলে কত্ত দুখ পাবে বলুন তো!
বিয়া না করতেই রান্নাবান্না, রেসিপিমেসিপি দিয়া একাকার!!! বিয়ার পরেতো মনে হয় হেঁসেল ঠেলা, বাচ্চা সামলানো, ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখা, আসবাবপত্রের দেখাশোনা কর্তে কর্তেই তার জেবন যাইবো। পুলাটার ভবিষ্যত ভাইবা আমার মাথার বাকি চুলগুলাও ঝইরা পড়তে শুরু কর্সে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমারতো টাক মাথায় চুলকানি শুরু হয়েছে।
আপনারা মুরুব্বি মানুষেরা সব একটা নিরীহ ছোট ছেলের সঙ্গে এইরম করেন ক্যান?
আমিতো রান্না করতে পারিনা।
তবে খুব লোভ হচ্ছিলো যে, ঘরে এটা বানিয়ে দারা-পুত্রদের চমকে দেব!
কিন্তু, 'চরম' মন্তব্যের 'স্বাক্ষী' হয়ে 'আশালতা' হতে হতেও ইচ্ছেটাই মরে গেলো।
দেখি, কাল যদি ইচ্ছে করে তো 'স্যাম' হয়ে ট্রাই করবো।
আপনিতো মশাই সকল কাজের কাজী।
দোয়া দিয়েন যেন আমিও আপনার মত পারি।
-------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
উরিব্বাবা, আপনি তো একেবারে সবাইকে সাইটেশন দিয়ে যাচ্ছেতাই কাণ্ড করেছেন!
বাহ কি সুন্দর গপ্প করে করে রেসিপি দিয়ে দিলে? আমি শুধু রান্নাই করলুম, রেসিপি দেয়া শিখলুম না। এদেশের প্রচন্ড শীতের দিনে ভালই লাগবে মনে হচ্ছে।
আপনার রেসিপি দেওয়ার দরকার নেই, সরাসরি রেসিপি অনুযায়ী খাদ্য দিবেন অক্টোবরে তা হলেই হবে!
দারুণ তো - সহজ রেসিপি আমার সবসময়ই পছন্দ। ছবি দেখে বেশ স্বাস্থ্যকর স্যুপ মনে হচ্ছে। স্যুপ জাতীয় খাবারে গোল মরিচ আমি শেষের দিকে ছিটিয়ে দেই, তাহলে গন্ধটা আলাদা ভাবে পাওয়া যায়।
কাজু বরফির রেসিপিটা ট্রাই করতে হবে। জাফ্রান বাদে আর কী ফ্লেভার দেওয়া যায়?
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ওই তো বললাম, এলাচ দিতে পারো, আমি সেটাই দিয়েছিলাম, ঘরে জাফরান ছিলও না তখন।
দুইবার জন্ডিসের কারণে মাসখানেক এই বস্তু গিলেছি, আর বেটা এখানে এসে থাউক হাসলাম না-র রেসিপি দেখাচ্ছিস। আমারটায় অবশ্য জন্ডিস চলাকালীন মাংসটা তুলে নিত, আর সেটা মসলা দিয়ে ভেজেভুজে বাসার বাকিরা আমার জুলজুল চোখের সামনে খেত।
কাজু বরফি বানাতে হবে, কফি গ্রাইন্ডারে গ্রাইন্ড করলে হবে?
আমি এই সদ্য বান্ধবীর বাসায় তিনদিন চর্ব্য চোষ্য খেয়ে এলাম। এখন সেই সুখস্মৃতির জাবর কাটছি আর কালকের লাঞ্চের জন্য হাঁড়িকাবাব ঠান্ডা করছি।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
হ্যাঁ হ্যাঁ, নেটে তো দেখলাম একজন বলছেন শুকনো গ্রাইন্ড করার জন্য কফি গ্রাইন্ডারই ভাল।
ওহ, বলতে তো ভুলেই গেছি, "নধরতন্বী হৃদয়বহ্নি টাইপের চিকেন" - কার হৃদয়ে যে কীভাবে বহ্নি জ্বলছে, তা তো আমরা টেরই পাচ্ছি। তা মৌমাছি আর মৌয়ের মিলন কবে হচ্ছে, শীতকাল তো এসেই গেল।
___________________
রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি
facebook
এইসব শয়তানি ছেড়ে লাইনে আসুন!
বাব্বা, কি নামরে বাবা ! নাম পড়েই ভিমরী খাবার যোগাড়।
শেক্ষপিয়ার বলেছেন, হুয়াটজ ইন এ নেম? গোলাপ কল এনিথিং গিভজ বুটিফুল স্মেল।
প্রথমে তাড়াতাড়ির চোটে জিনিসটার নাম পড়েছিলাম, " থাউক, হাসলাম ", তারপরে আবার পড়ে একচোট হাসলাম।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
কি মুস্কিল!
শুধু তাই না, লেখার উপরে খাবারটার ছবি দেখে ভেবেছিলাম চিকেনের টুকরোর উপরে শামুক বসে আছে, তাই ভয়ের চোটে লেখাটা পড়তেই পারিনি প্রথমদিন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আরে এত দু:খের কিছু নাই। বেশ কিছু আডভেঞ্চারপ্রবণ লোক আছেন নানারকম নতুন খাবার ট্রাই করেন। আমিও ওরকম নতুনরকম খাবার ভেবেছিলাম। তারপরে ভালো করে চেয়ে দেখি আরে এতো গুটিয়ে রোল হয়ে যাওয়া কারিপাতা।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
Escargot তো খেইচি। কিন্তু সবুজ কারিপাতাকে শামুক মনে করলে কি চলে?
হ্যাঁ। এভাবে সংসারে গতি আসে, বিজ্ঞানে দূর্গতি!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
কেন, রন্ধনশাস্ত্রও তো একপ্রকার ব্যবহারিক বিজ্ঞান...
বিজ্ঞানের চাইতে ওটি বেশি শাস্ত্র খোকা। সংসারশাস্ত্রের ওটি কণিষ্ঠ ভগ্নী
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আপনি কেমনে জানলেন? এই দুটি শাস্ত্র খুব মনোযোগ দিয়ে পাঠ করেছেন বুঝি?
জানতে তো আর চীনে যেতে হয়না! শাস্ত্র প্রয়োগের বেলাতেই কেবল মার খেয়ে গেলাম!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
লাফাইছিল______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
প্রয়জনীয় সব উপকরণ-ই হাতের কাছে আছে। শুধু টার্কিস খুকি ছাড়া।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
টার্কিশ খুকিরা বুঝি টাঙ্গাইলের ভাষায় "খেতে ভাল?"
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
ইরাকি ইরানি অন্য কোনো খুকি থাকলেও চলবে, সুবিধামত রেসিপিতে কিছু রদবদল করে নিলেই হল।
রেসিপি পছন্দ হইছে, স্যুপ আমি ভালা পাই।
আম্মো
নতুন মন্তব্য করুন