আপামর পাঠকমহোদয় ও আবদেরে বাড্ডেবালিকা সুরঞ্জনার জন্য কুইজ,
সেই প্রবাদপ্রতিম সফরে বীগল জাহাজের প্রকৃতিবিদের পদে কে নিযুক্ত ছিলেন?
যাঁরা ঝটপট করে ‘ডারউইন’ উত্তর দিতে যাচ্ছেন, তাঁদের জন্য সতর্কতা, অত সহজ উত্তর হলে নিশ্চয়ই প্রশ্নটা করতাম না!
সম্পূরক প্রশ্ন: যদি ডারউইন সেই জাহাজের নিয়োগপ্রাপ্ত প্রকৃতিবিদ না হয়ে থাকেন, তবে তিনি কোন শালীন বা অশালীন উদ্দেশ্যে সেই জাহাজে উঠেছিলেন?
এবং পরবর্তী প্রশ্ন: যদি নিয়োগপ্রাপ্ত প্রকৃতিবিদ অন্য কেউ হয়ে থাকেন, তবে ডারউইন কেমন করে ওই সফর-পরবর্তী সমস্ত খ্যাতি দখল করে ফেলতে পারলেন?
প্রথম প্রশ্নটার উত্তর আগে দিয়ে নিই। ব্রিটিশ নেভির অংশ হিসেবে সব জাহাজেই একজন পেশাদার চিকিৎসক-এবং-প্রকৃতিবিদ নিয়োগ পেতেন, আর বীগলে সেই পদটি অধিকার করে ছিলেন বিখ্যাত ‘সার্জেন’ রবার্ট ম্যাককরমিক। এমন কি ক্যাপ্টেন রস’এর আন্টার্কটিকা অভিযানেও ইনিই কাজ করেছিলেন।
বিজ্ঞানের ইতিহাস নিয়ে যাঁরা কাজ করেন, তাঁরা অনেক ঘেঁটে নানা দলিলপত্র বার করে এটা প্রমাণ করেছেন। আর আমি এই কাহিনী জানলাম প্রখ্যাত জীববিজ্ঞানী ও প্রত্নজীববিদ স্টিফেন জে গুল্ডের একটি বিবর্তন-বিষয়ক প্রবন্ধ-সঙ্কলন পড়তে পড়তে। ওনার এমন অনেকগুলি বই আছে; বস্তুত ডকিন্সের আগে ইনিই সর্বাধিক বিখ্যাত পপুলার সায়েন্স লেখক হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
দ্বিতীয় প্রশ্নটার উত্তর দেবার জন্য, আমাদের স্মরণ করে নিতে হবে যে ব্রিটিশ সমাজে জাতিভেদ প্রথা বরাবরই বড় প্রকট। অভিজাতরা লর্ড ব্যারন আর্ল ইত্যাদি খেতাব ধরে বংশানুক্রমে জমিদারি ভোগ করে আসেন ও পার্লামেন্টে পারিবারিক আসন পেয়ে থাকেন। তাঁরাই ভদ্রসভ্য ‘জেন্টেলম্যান’, বাকিরা আমজনতা – যা থেকে ব্রিটিশ ক্রিকেটের বিখ্যাত ট্র্যাডিশন ‘জেন্টেলমেন ভার্সেস প্লেয়ারস’ ম্যাচের উৎপত্তি।
বলাই বাহুল্য, ব্রিটিশ নেভির ক্যাপ্টেনরাও হতেন জেন্টেলম্যান। তাঁর অধীনে যারা কাজ করত, মাঝিমাল্লা থেকে ডেক অফিসার পর্যন্ত, তারা সবাইই সাধারণ লোক, তাদের সঙ্গে ক্যাপ্টেনের ‘সোশালাইজ’ করা সভ্যতার চোখে নিষেধ। অতএব দীর্ঘ সফরগুলো ক্যাপ্টেনদের সম্পূর্ণ একা কাটাতে হত – বৌবাচ্চা বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে যাওয়াও ছিল বারণ – কারো সঙ্গে মেলামেশা, গল্পসল্প করার সুযোগ ছিল না, এমনকি সুসজ্জিত টেবিলটিতেও একলা বসেই খেতে হত তিনবেলা।
তাই ওই সময়ে বহু বছর লম্বা দীর্ঘ সফরগুলোয় প্রায়ই মানসিক সমস্যায় ভুগতেন ক্যাপ্টেনেরা। টানা তিন বছর সমুদ্রে থাকার পর দক্ষিণের এক কড়া শীতে বীগলের আগের ক্যাপ্টেন গুলি করে আত্মহত্যা করেছিলেন। এই অবস্থায় বীগলের বর্তমান ক্যাপ্টেন রবার্ট ফিট্জ্রয় দুশ্চিন্তায় ছিলেন নিজের ভবিষ্যত নিয়ে। বিশেষত, তাঁর বংশে এই প্রবণতা ছিল – তাঁর এক বিখ্যাত কাকা, যিনি নেপোলিয়নের সাথে যুদ্ধের সময় বিদেশমন্ত্রী ছিলেন, কয়েক বছর আগেই নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করেন।
অতএব ক্যাপ্টেন ফিট্জ্রয়ের দরকার ছিল আরেকজন জেন্টলম্যান সঙ্গী, যার সঙ্গে সময় কাটানো যাবে, কথাবার্তা খানাপিনা ইত্যাদিতে যার সঙ্গ সামাজিকভাবে অসঙ্গত হবে না।
কিন্তু বন্ধুবান্ধব তো নেওয়া বারণ, তাহলে?
ফিট্জ্রয় তখন ঠিক করেন, যে বীগলের জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে একজন ন্যাচারালিস্ট ও কালেক্টর সঙ্গে নেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। সেইমত খোঁজ করতে বলে দেন পরিচিতদের। তাই ডারউইনকে যিনি এই যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি এ কথা জানিয়েই দেন যে ক্যাপ্টেন সংগ্রাহকের চেয়ে সঙ্গীই খুঁজছেন আসলে। দুজনে একবার দেখা করেন, পরষ্পরকে ‘এগ্রিয়েবল’ মনে হয়, এবং চুক্তি পাকা হয়ে যায়।
এই নিয়োগের পেছনে ক্যাপ্টেনের আরো একটা উদ্দেশ্য ছিল। সে যুগে ক্যাপ্টেন রসের আন্টার্কটিকা অভিযানের মত নানা বিখ্যাত অভিযানের কাহিনী লোকমুখে ফিরত, এবং তরুণ ক্যাপ্টেন ফিট্জ্রয়ও এমন খ্যাতি পেতে খুব উৎসাহী ছিলেন। জরিপকর্মী, ইঞ্জিনিয়ার ইত্যাদি আরো নানা কিছু কর্মী তিনি নিজে জাহাজে নিয়োগ দিয়ে রেখেছিলেন। তাঁর উচ্চাকাঙ্খা ছিল, সেসময়ে পাটাগোনিয়া ইত্যাদি ‘আনচার্টেড টেরিটরি’ ঘুরে, চিলি, পেরু ও উপকূলের নানা দ্বীপ তিনি বিশদে সার্ভে করিয়ে প্রথম একটা সম্পূর্ণ ম্যাপ প্রকাশ করবেন।
আর তৃতীয় প্রশ্নটা দাঁড়ায়, ওই জাহাজের অফিশিয়াল ন্যাচারালিস্ট ম্যাককরমিকের কী হল তাহলে? তিনিই তো বরং সেই সময়ে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন, ওদিকে ডারউইন সদ্য ধর্মকর্ম পড়া ছেড়ে আসা কচি খোকা; তাহলে অভিযানের সব খ্যাতি ডারউইন বাগালেন কী করে?
উপরের পরিস্থিতি থেকে এর উত্তর অনেকটাই সহজ হয়ে আসা উচিত। ডারউইন ছিলেন ক্যাপ্টেনের খাস লোক, তায় আবার বেসরকারি – অবাধ স্বাধীনতা এদিকে দায়িত্ব অনেক কম। ক্যাপ্টেনের অর্থবলের সাহায্যে তিনি সহজেই নতুন কোথাও জাহাজ ভিড়লে নেমে গিয়ে টাকাপয়সা দিয়ে স্থানীয় কালেক্টরদের ব্যবস্থা করতে পারতেন। ওদিকে ম্যাককরমিককে তাঁর সীমিত ক্ষমতার মধ্যে জাহাজে বসে কাগজপত্র নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হত।
বছরখানেকের মধ্যেই পরিস্থিতি এমন হয় যে ক্যাপ্টেন তাঁকে মিষ্টি করে পথ দেখতে বলেন। ম্যাককরমিক অন্য জাহাজ ধরে ইংল্যান্ড ফিরে চলে আসেন। বলা বাহুল্য, এই নিয়ে ডারউইনেরও কোনো আপত্তি ছিল না। এক চিঠিতে তিনি বন্ধুকে লেখেন, “আমাদের সঙ্গী এই মাননীয় ডাক্তারবাবু একটি গাধা, কিন্তু আমাদের হৃদ্যতার ঘাটতি নেই – বর্তমানে তিনি গভীর সমস্যায় আছেন যে তাঁর কেবিনের রঙ ‘ফ্রেঞ্চ গ্রে’ না ‘ডেড হোয়াইট’ করাবেন, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত হলে কেবল এইটি নিয়েই তাঁকে দীর্ঘ আলাপ চালাতে দেখা যায়। ... তাঁকে বিজ্ঞানীর চেয়ে দার্শনিক বলাই উচিত, আমরা যখন সেন্ট ইয়াগো দ্বীপে পৌঁছোলাম তখন তিনি বেশিরভাগ সময় ধরে কেবল নানারকম ভাবুক মন্তব্যই করে গেলেন এখানে কীরকম কালেক্টিং করা উচিত সেই বিষয়ে। ... ক্যাপ্টেনের সঙ্গে খাতির না জমায় উনি যে ডাক্তারবাবুকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন ওরফে খেদিয়ে দিয়েছেন, তাতে কোনোই ক্ষতি নেই কারো।”
এইবার গুল্ড আরেকটা প্রশ্ন যোগ করেছেন।
তরুণ ডারউইন যখন বীগলে আসেন তখন তিনি ধর্মতত্ত্ব পড়াশোনা চালাচ্ছিলেন। বীগলে থাকাকালীনও তিনি এক চিঠিতে লেখেন, “ফিরে গিয়ে আবার কতদূর এগোতে পারব জানি না, কিন্তু আশা করি আমি সেগুলো শেষ করে পাদ্রী পদে নিয়োগ পাওয়ার মত অবস্থায় পৌঁছতে পারব।” ক্যাপ্টেনের সঙ্গে মিলে তিনি মিশনারীদের জন্য অর্থসাহায্যের আবেদন জানিয়ে এক পুস্তিকাও লিখেছিলেন।
অথচ বীগল থেকে ফেরার এক বছরের মধ্যেই তিনি ‘ট্রান্সমিউটেশন অফ স্পিসিজ’ (তখনও ‘ইভোলিউশন’ নাম আসেনি) এর উপর নিজের নোটবুকে তত্ত্বালোচনা করতে শুরু করে দেন।
গুল্ডের প্রশ্ন, এই ব্যাপক পরিবর্তনের কারণ কী ছিল? গালাপাগোসের কচ্ছপ আর ফিঞ্চ দেখাই কি সব?
এবং তাঁর বক্তব্য, ডারউইনের ওই ‘জেন্টেলম্যান’ সফরসঙ্গী ছিলেন এক বড় প্রভাবক।
ক্যাপ্টেন ফিট্জ্রয় ছিলেন রক্ষণশীল ‘টোরি’ পার্টির একনিষ্ঠ সমর্থক। ধর্ম, দাসপ্রথা ইত্যাদি বিষয়েও তিনি ছিলেন প্রবল রক্ষণশীল। ওদিকে ডারউইন ছিলেন উদারপন্থী ‘হুইগ’ দলের অনুগামী। কিন্তু ক্যাপ্টেন একে বয়সে তাঁর চেয়ে খানিক সিনিয়র, তার উপর পদাধিকারবলে জাহাজের একচ্ছত্র সর্বেসর্বা, তাই ডারউইন সরাসরি কখনও তর্কে যেতেন না, এবং রাজনৈতিক বিষয় আলোচনাপ্রসঙ্গে এলে যথাসম্ভব এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করতেন।
একবার ডিনারের সময় ক্যাপ্টেন তাঁকে বলেন, তিনি নিজে চোখের দাসপ্রথার প্রশংসনীয় দিকগুলি দেখেছেন। একবার সংখ্যার দিক থেকে ব্রাজিলের অন্যতম বড় দাসমালিক তাঁর উপস্থিতিতে নিজের দাসদের জিজ্ঞাসা করেন, ‘তোমরা কি মুক্তি চাও?’ যার উত্তরে সবাই একবাক্যে বলে ‘না’।
ডারউইন এ কথায় শুধু মন্তব্য করেন, মালিকের মুখের উপর দাসদের এর চেয়ে অন্য কোনো উত্তর দেবার সুযোগ বা সাহস আছে বলে তাঁর মনে হয় না।
এতে চটে গিয়ে ক্যাপ্টেন বলেন, যারা তাঁর মুখের উপর কথা বলে তারা তাঁর সঙ্গে পানভোজনের যোগ্য না।
ডারউইন এই শুনে সেখান থেকে চলে গিয়ে অফিসারদের সঙ্গে যোগ দেন। কয়েকদিন পরে ক্যাপ্টেন ফিট্জ্রয় অবশ্য ফর্মাল অ্যাপোলজি পাঠিয়ে তাঁকে ফিরিয়ে এনেছিলেন।
ধর্ম নিয়েও ক্যাপ্টেন এতটাই প্যাশনেট ছিলেন, যে বাইবেলবর্ণিত মোজেস তাঁর কাছে ছিলেন একজন নিখুঁত ঐতিহাসিক এবং ভূতত্ত্ববিদ; তাই সফরের ফাঁকে ফাঁকে তাঁর হবি ছিল বাইবেল থেকে ক্লু খুঁজে খুঁজে নোয়ার নৌকোর দৈর্ঘ্যপ্রস্থ হিসাব করে বের করা। এবং সেযুগের প্রচলিত ‘আর্গুমেন্ট ফ্রম ডিজাইন’, যা বলে যে পৃথিবীর এই চমকপ্রদ জটিলতা দেখেই বোঝা যায় এ স্বত্বঃনির্মিত নয় বরং সৃষ্টিকর্তা দ্বারা নির্মিত, প্রচার করতে তাঁর খুব উৎসাহ ছিল। যা কিনা ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্বের ঠিক উল্টো কথা বলে।
গুল্ডের অনুমান, ক্যাপ্টেন ফিট্জ্রয়ের সঙ্গে নীরবে বিতৃষ্ণাপূর্ণ এতগুলো বছর কাটাতে কাটাতেই হয়ত ডারউইনের মনে এসব ধর্মসম্পর্কিত তত্ত্বের প্রতি বিতৃষ্ণার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল। বস্তুত, গালাপাগোসের পাঁচটা দ্বীপে পাঁচরকম ফিঞ্চের ছোটোবড় ঠোঁট দেখেই যে তাঁর একটা ‘ইউরেকা মোমেন্ট’ এসে বিবর্তনের আইডিয়া এসে গেছিল, এমন তো নয়। বরং ওই পাখিগুলো তিনি যখন সংগ্রহ করেছিলেন তখন কোনটা কোন দ্বীপের এটা লিখে রাখার প্রয়োজনটুকুও বোধ করেন নি, জানতেনও না কোনটা কোন প্রজাতির পাখি। পরে যখন পাখিগুলো অন্য এক বৈজ্ঞানিককে দেখান তখন তিনিই প্রথম বলেন যে এত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও এ সবগুলোই ফিঞ্চ।
অন্তত, ক্যাপ্টেনের নিজের মনে সারাজীবন এই ধারণাই ছিল। আর যার ফলে তাঁর মনে জেগেছিল চরম আত্মগ্লানি, আর প্রায়শ্চিত্তস্বরূপ বাইবেলের মাহাত্ম্য প্রতিষ্ঠার আরো প্রবল ইচ্ছা। অক্সফোর্ডে সেই বিখ্যাত ডিবেটে ‘ডারউইনের বুলডগ’ হাক্সলি সায়েব যখন পাদ্রী উইলবারফোর্সের প্রায় পেন্টুলুন খুলে নিয়েছিলেন, তখন সে সভায় ক্যাপ্টেন ফিট্জ্রয়ও উপস্থিত ছিলেন, এবং পরিস্থিতি দেখে অত্যন্ত বিচলিত হয়ে বাইবেলখানা মাথার উপর তুলে ধরে ‘দা বুক, দা বুক’ বলে চেঁচাতে থাকেন।
এবং পাঁচ বছর পরে তিনিও নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করেন।
মন্তব্য
ভারী চমৎকার লেখা।
আচ্ছা, নিজের গলা নিজে কাটে ক্যামনে! একটুখানি পোচ লাগলেই তো থেমে যাওয়ার কথা।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ঘ্যাঁচ করে এক টান দিলেই তো হল, কোনোমতে রগ কেটে গেলেই যথেষ্ট রক্তপাত হয়ে মারা যাবে।
এ কাজে পুরোপুরি সফল হন নাই বলেই একজনরে চেনার সুযোগ হইছিল।
সুরঞ্জনা'পু কে আ হ্যাপ্পি বাড্ডে...
আহা!
সকাল সকাল চা এর সাথে খুবই উপাদেয় লাগলো। ডারউইনের নোটস পড়েছিলাম কিছুদিন আগে, এই প্রকৃতিবিদ ডাক্তার ভদ্রলোকের উল্লেখ ছিলো বলে মনে পড়ছে না।
ক্যাপ্টেনের প্রতি কৃতজ্ঞতা আরো বেড়ে গেল। একে তো ডারউইনকে সফরসঙ্গী করে বীগলে উঠিয়েছিল, তারওপর প্রতিদিন নিয়ম করে খাবার খেতে ডেকে নিয়ে নানা রকম আকাট মুর্খামি প্রদর্শন করে ডারউইনের চিন্তা-ভাবনাকে একদম লাইনে নিয়ে এসেছে। বিষে বিষক্ষয়।
তোর যাবতীয় লেখার মতো এই লেখাটাও গোছানো, সাবলীল এবং মন ভালো করা হয়েছে।
[পুনশ্চঃ আমার জন্মদিন স্মরণ করে যে শেষমেশ গলায় ছুরি দেয়া পোস্ট নামালি, সেটা নোটিস করলাম। ডায়রিতে তুলে রাখলাম। ]
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
কিন্তু বেচারা যে ভয় থেকে ডারউইনকে ডেকেছিল, শেষমেষ তো ডারউইনের জন্যই সেই কাজ করতে হল...
বাড্ডেবালিকাকে শুভ জন্মদিন জানাই।
আহ্লাদী ছেলে চমৎকার একটা মন-ভরান পোস্ট নামিয়েছে, যেমন নামায় সবসময়। তারেও অনেক আদর-শুভেচ্ছা।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আঁয়, আমি আহ্লাদী?
কৌস্তুভদার লেখার প্রাঞ্জলতা, যুক্তির গাণিতিক পরিমিতি এবং লেখার স্বতস্ফূর্ত গতি আমাকে মুগ্ধ করে।
ডারুইন মিয়ার আয়রনি হচ্ছে - এই পরম ধার্মিক লোকটিই কিনা দুনিয়াভর ধার্মিক লোকের চক্ষুশূল! বিজ্ঞানের ইতিহাস নিয়ে আরো অনেক লেখা চাই।
আহেম। পরম ধার্মিক কথাটা বোধহয় ঠিক হোলো না।
আপনি বোধহয় ভুল কনক্লুশনে পৌছেছেন লেখাটা পড়ে।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
ইয়ে, 'পরম' ধার্মিক না হলেও অন্তত পাদ্রী হবার মত যথেষ্ট ধার্মিক তো ডারউইন অল্পবয়সে ছিলেনই। আবার শেষ জীবনে এতটাই নিষ্পৃহ হয়ে পড়েন যে বৌবাচ্চাকে রোববার সকালে চার্চে পৌঁছে দিতেন কিন্তু নিজে ঢুকতেন না।
ধন্যবাদ আপু।
নাহ, আমি কোন উপসংহারে আসিনি। ওটা আমার কুখ্যাত শ্লেষোক্তি! তাছাড়া আমার কাছে এটুকুই পরম ধার্মিকতা বলে মনে হয়েছে!
যে উদ্ধৃতিটা দিলেন সেটা কি ডারউইনের বীগল-যুগের নাকি পরবর্তী যুগের? প্রথম জীবনে, এমনকি এই পর্যায়েও তো তিনি অজ্ঞেয়বাদী ছিলেন বলে পড়েছি -তা তো মনে পড়ে না। জানতে পারলে উপকৃত হব।
আহারে, শ্লেষোক্তি বলে বুঝতে পারিনি রে ভাই, ঘর পোড়া গরুর অবস্থা তো।
ডারউইনের উক্তি আছে এখানে। শুভকামনা রইলো!
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
লিঙ্কের জন্য ধন্যবাদ দিদি।
- তা যা বলেছেন!
ডারউইনের লাইনটা ব্র্যাকেট সহ তুলে দিলামঃ
"I think that generally (& more and more so as I grow older) but not always, that an agnostic would be the most correct description of my state of mind."
অর্থাৎ বয়োবৃদ্ধির সাথে সাথে বুদ্ধির পাক ধরা এবং বিশ্বাসের ক্ষীণ হওয়া। চিঠিটি ১৮৭৯ সালের বৃদ্ধ ডারউইনের। ১৮৩১ এর বীগল তরণীর নওজোয়ান ডারউইন আদতেই ভালো মাত্রার ধার্মিক ছিলেন বলেই তো জানতাম!
কত অজানারে!
লেখা ভালো লেগেছে।
--------------------------------
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজো চমৎকার?
আমিও তোমার মত বুড়ো হব – বুড়ি চাঁদটারে আমি করে দেব বেনোজলে পার
আমরা দুজনে মিলে শূন্য করে চলে যাব জীবনের প্রচুর ভাঁড়ার ।
বইটা পড়ে আমিও তাই ভাবছিলাম!
আমার মনে হয় আপনার অনুমান সঠিক
চমৎকার লেখা। আরো বেশি বেশি লিখুন।
কিছু লেখা থাকে বিরিয়ানির মত অভিজাত এবং অত্যন্ত সুস্বাদু। আবার কিছু থাকে সাদামাটা ভাবে রাধা বাতাসী মাছের চচ্চরি এবং সেও নিখাদ সুস্বাদু। এই লেখাটি উক্ত দুটি ধারার মিশেল। বিষয় নির্বাচন বিরিয়ানির মত অভিজাত, আর রচনার ভাষা মোটেও খটমটে পাণ্ডিত্যে ভরা নয় বরং বাতাসী মাছের চচ্চরির মত সাদামাটা অথচ প্রাঞ্জল। অর্থাৎ সুস্বাদু স্কয়ার।
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
এত্তো প্রশংসা?
এতো সুন্দর করে লেখো কেন বাওয়া? সব পাটিকা একলা দখলের মতলব করেছো নাকি?
আমারও কুশ্চেন জেগেছিলো মনে, কেমনে পাদ্রিবেটা এমন আজেবাজে আইডিয়া পেলো! তর্কের উল্টো ফল, না?
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
তাই হবে
সুরঞ্জনাপ্পুকে হেপ্পি বাড্ডে
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
মাসুদ সজীব
থ্যাঙ্কু
চমৎকার লিখেছেন ভাইয়া- সাজানো গোছানো পরিপাটি করে সাজানো।
আর বাড্ডে আপুকেও দেরীতে বাড্ডে শুভেচ্ছা।
-এস এম নিয়াজ মাওলা
জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্যে সবাইকে ধন্যবাদ।
আমাকে উপহার দিয়ে নিজের স্কন্ধে মুন্ডুখানি আরো কিছুদিন রাখার সুযোগ পেলো, তাই কৌস্তুভকে অভিনন্দন।
............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্ চিনে।
অসাধারণ। এইভাবে এত্ত সরল করে লিখলে আমার মতো বিগgun-এ ন-জ্ঞান মানুষেও দিব্বি বুঝতে পারে
( পাঁচ তারা ভাইডি )। আরও কিছু নামাও হে ডারউইন দাদুকে নিয়ে
০২
(অটঃ) ইসে, কানাডার ভ্রমণ বেত্তান্ত চেপে গেলে যে?
ডাকঘর | ছবিঘর
facebook
আহা, ছোড়া, না না ছেলেটা এত সুন্দর গুছিয়ে লেখে, পড়তে ও বুঝতে মোটেও বেগ পেতে হয়না। কিন্তু ইদানিং লেখালিখি একেবারেই কমিয়ে দিয়েছে।
হ্যাঁ, আপনাকে বলছি কৌস্তুভ, লেখা ও বিষয়বস্তু ভাল লেগেছে।
দারুণ লাগলো। কিন্তু কেমন জানি শেষ হইয়াও হইলো না শেষ
হা হা হা , ব্যাটা ক্যাপ্টেন বুঝলো না, না বুঝে সে পৃথিবীর কত বড় উপকার করে ফেলেছে!
____________________________
এখন তো নামের সাথে মুখটিও চেনা। এই বাচ্চা বাচ্চা চেহারার ছেলেটি কি করে এতো সুন্দর করে লেখে ? যারা কৌ কে দেখেন নি তাদের বলছি লেখায় যেমন ঝকঝকে দেখতেও তেমনি,তবে বড্ড লাজুক। হয়তোবা আমার মতো বুড়ো দিদির বাড়ী এসে একটু বেশীই চুপচাপ ছিলো।
তাহলে অভিযানের সব খ্যাতি ডারউইন বাগালেন কী করে?
[b]
উপরের পরিস্থিতি থেকে এর উত্তর অনেকটাই সহজ হয়ে আসা উচিত। ডারউইন ছিলেন ক্যাপ্টেনের খাস লোক, তায় আবার বেসরকারি – অবাধ স্বাধীনতা এদিকে দায়িত্ব অনেক কম। ক্যাপ্টেনের অর্থবলের সাহায্যে তিনি সহজেই নতুন কোথাও জাহাজ ভিড়লে নেমে গিয়ে টাকাপয়সা দিয়ে স্থানীয় কালেক্টরদের ব্যবস্থা করতে পারতেন। ওদিকে ম্যাককরমিককে তাঁর সীমিত ক্ষমতার মধ্যে জাহাজে বসে কাগজপত্র নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হত।[/b]
বাগালেন শব্দটা মস্করার মত ব্যবহার করা হলেও, সেতি অত্যন্ত আপত্তিকর। ডারউইন কোন সময়ই খ্যাতির পিছনে ছোটেন নি, বরং এর এক যুগেরও বেশী সময় পরে তার প্রকাশিত বইয়ের কারণে তার কপালে সেই খ্যাতি বা কুখ্যাতি জোটে। তিনি কিছুই বাগানোর চেষ্টা করেন নাই, সত্য জ্ঞান ছাড়া।
----- অবাধ স্বাধীনতা, দায়িত্ব কম- তাই যদি হত, তাহলে সব বন্দরে, সাগরে নেমে সে জিনিস সংগ্রহ করত কেন? করত, কারণ তার সেই তাড়না, জ্ঞানপিপাসা ছিল ভিতর থেকে। যদি আসলে দায়িত্ব নিতে না চাইত তাহলে সে মদ গিলে থাকত বা পা উচিয়ে তামাক টানত সারা ভ্রমণ। আর শুধু সংগ্রহের কারণে কি ডারউইনের খ্যাতি? সে তো বিলেতের জুলজিক্যাল সোসাইটির বাহিরে আর কে জানত?
নাহে কৌ, হালকা চালের লেখাতে কেন জানি কিছুটা বিকৃত মনে হচ্ছে আসল ইতিহাসকে। তোমার মতামতের অপেক্ষা করছি-
facebook
নতুন মন্তব্য করুন