প্রথম স্কুলের গণিত স্যার এর নামটা আমি কিছুতেই মনে করতে পারছি না! ছ-ফুটের শরীর, ছিপছিপে গড়ন, লম্বা নাক…এইটুকু মনে আছে, আর মনে আছে স্যারের ক্লাসে গল্প করা, ঐ গল্প শুনতে শুনতেই গণিতের প্রতি ভালোলাগা তৈরী হয়েছিল। কত কি মনে আছে! স্যারকে কেন মনে নেই! ভীষণ অসহায় লাগে মাঝে মাঝে নিজেকে! স্যারকে আমার মানুষ বলে মনে হতো না! মনে হতো কোনো দেবতা, গল্প শোনাতেন যেন স্বর্গ রাজ্যের, ভ্রমনপ্রিয় ছিলেন স্যার, ভ্রমনের নেশাটা হয়তো তখনই মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন।
কলেজে ওঠার আগ পর্যন্ত কোনো দিন ‘পিকনিকে’ যেতে পারি নি, আম্মার বেশ ভয় ছিল আমাকে হারিয়ে ফেলার। স্কুলে প্রতিবছর সব বন্ধুরা ‘পিকনিক’-এ যেত, আমি ওদের গল্প শোনতাম। কলেজের পর দু বছরেই আমি সারা বাংলাদেশ ঘুরেছি, চার-পাঁচটি জেলা বাদ দিয়ে প্রায় সবকটি। যতটা না প্রকৃতি দেখেছি, তারচেয়ে বেশি দেখেছি মানুষ। মানুষ দেখায় আমার কোনো ক্লান্তি নেই। একা একজন দেখতে যেমন ভালো লাগে তেমনি ভালো লাগে মিছিল, মেলা বা ‘মিউজিক কনসার্ট’-এ মানুষের ভিড় দেখতে। একা একজন এবং ভীরের একজন, একই মানুষে দেখা যায় ভিন্ন ভিন্ন মানুষ। মানুষ বড়ই আজব প্রাণী, যে চোর সে-ই আবার পিতা, যে ভাই-বন্ধু, সেই আবার ভয়ংকর পিশাচ। অবস্থা এবং অবস্থান বদলে দেয় চরিত্র।
প্রথম ভালোলাগার নারীকে ভালোবাসার কথা বলতে পারিনি, না আমি ভীতু ছিলাম না, এখনো নই বরং যে দূরত্বটুকু না থাকলে আনমনে হাত ধরে বলা যায়, “চলো একসাথে পথ চলি”, ঐ দূরত্বটুকুই অতিক্রম করা হয়নি, ইচ্ছে করেনি।
কোনো আদর্শ, কোনো ক্ষমতার মোহ ছাড়াই কলেজে মূল ধারার রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলাম, একবছর যেতে না যেতেই ঘোর কেটে গেছে, মনে হয়েছে “কোনো লাভ নেই”। আছে হয়তো কোনো বিকল্প পথ। এরপর বামপন্থী বন্ধুদের সাথে ঘনিষ্ট হয়ে দেখেছি তাদেরও নোংরামী। শিল্প, সাহিত্য সঙ্গ নিয়েছিল শৈশবেই, এরপর কোনোদিন ছেড়ে যায় নি। সেই শিল্প সাহিত্যই বাঁচিয়েছে, বাঁচিয়ে রাখছে এখনো। ছোটবেলায় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র’র দর্শনের পাঠচক্র থেকে আসার পর নিজেকে খুব জ্ঞানী মনে হতো, যত দিন গেছে নিজের প্রতি অবিশ্বাস বেড়েছে, বাড়ছে। ভীষণ অসহায় লাগে নিজেকে। দুটি মাত্র হাত, দুটি পা, ২৪ ঘন্টার দিন, কত কি করার বাকী!
'আমার ছোটবেলা খুব ভালো ছিল' এটা মিথ ছাড়া আর কিছু মনে হয় না আমার কাছে! ছিল, যেমন থাকার কথা ছিল তেমনই। আমি ইচ্ছে করেই তো বড় হয়েছি বা হচ্ছি! কেউ ঘাড় ধরে বড় করেনি! বয়স হয়তো বাড়ে নিজেই কিন্তু বড় হই আমরা নিজেরাই! মানুষের প্রতিটি বয়সই ভিন্ন ভিন্ন ভাবে উপভোগের, আনন্দের। বড় বা বুড়ো হয়ে যাচ্ছি, মরে যাবো, এসব কোনো কিছু নিয়ে আমার কোনো ক্ষেদ নেই। মরার পরের জগতটাও আমি দেখতে চাই, কি আছে? কি নেই! যখন যা করার কথা তা করতে পারছি কিনা এটা নিশ্চিত করতে পারলেই হলো! উর্দুতে গালিব এর পরেই শ্রেষ্টতম কবি 'মীর তকী মীর' এর একটা শায়েরী আমার খুব প্রিয়, অনেকটা এমন- "মরে যাবো, হুম এর কারণ তো যথেষ্ট কিন্তু কেন বেঁচে আছি এটা দেখার জন্যই বেঁচে আছি!" আমি বিশ্বাস করতে ভালোবাসি আত্মা অবিনশ্বর। একক আমি যদি সমগ্রের অংশ বলে নিজেকে ভাবতে পারি তাহলে আর স্বর্গ নরক ছাইপাশ ভাবনা নিয়ে মাথা নষ্ট করতে হয় না। আমি মানে কি শুধুই আমি? আমি মানে কি এই পৃথিবী, এই মহাবিশ্বেরই কোনো অংশ নই! “কোথা থেকে এলাম, কোথায় যাবো!” এই ভাবনাগুলো ভীষণ যন্ত্রণা দেয়!
গত সাত বছরে সম্ভবত এই প্রথম একটানা তিনদিন কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ছাড়া কাটিয়ে এলাম!! বিচ্ছিন্ন একটা দ্বীপে, সমুদ্রের কাছাকাছি বাংলো টাইপ একটা বাড়ীতে একা, আমরা ক’জন। পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেটের দেশের একটি দ্বীপ, সেখানে ইন্টারনেট সংযোগ নেই, এটা একরকম সৌভাগ্য হয়েই এসেছিল বলতে হবে! কিছু সত্য উপলব্ধি হলো নতুন করে। সাত বছরের প্রতিদিনকার অভ্যাস কিন্তু একবারের জন্যও মনে হয়নি, আহা মেইলটা, ফেসবুকটা যদি একটু চেক করা যেত! এবং অনুভব করলাম ইন্টারনেট এবং কম্পিউটার আসলে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো ছাড়া আর কিছু নয়!
জালাল উদ্দিন রুমী বলতেন- “Silence is the language of God, all else is poor translation.” আমার মনে হয় “Silence is the language of Heart, all else is poor translation.” আপাতত 'poor translation' এ আর না যাই। ছিন্নকথন লিখছি অনেক আগে থেকেই, এখানে-সেখানে, বিচ্ছিন্ন ভাবে। সচলের প্রোফাইল পরিচিতিটাও ছিন্নকথনেই লেখা। ছিন্নকথন একরকম আমার ‘Confessions’, নিজের প্রতি।
মন্তব্য
ছিন্নকথনের একটা সিরিজ চালিয়ে গেলে মন্দ হয় না মামুন ভাই ! বেশ উপভোগ্য !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
ছিন্নকথন এলোমেলো ভাবনা ছাড়া ভিন্ন কিছু নয়। আপনাদের ভালো লেগেছে শুনে ভরশা পাচ্ছি। লিখবো মাঝে মাঝে।
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
ছোটবেলায় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র’র দর্শনের পাঠচক্র থেকে আসার পর নিজেকে খুব জ্ঞানী মনে হতো, যত দিন গেছে নিজের প্রতি অবিশ্বাস বেড়েছে, বাড়ছে।
অবিশ্বাস বাড়বে কেন ?
সম্ভবত বয়সের দোষ!
বড় হতে থাকলে, নিজেকে আরো বেশি ক্ষুদ্র মনে হয়!
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
উঁহু! আমি তো কক্ষণও বড় হতে চাই না, আমাকে ঘাড় ধরে বড় করা হচ্ছে। বুড়োমহিলার বাচ্চামি কারো সহ্য হয় না। বড় হওয়া মানে ভেক ধরা। যা মনে আছে তা সোজাসুজি না বলে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বলা, যা করতে ভালো লাগে না, সেটা ভালো লাগার ভান করা দায়িত্ব-কর্তব্যের অজুহাতে, হৃদয়,মন, অস্তিত্ব আর আপনার বাইরের অ্যাপিয়ারেন্সের মাঝে একটা পর্দা তৈরি করা, যেন অন্দরমহল আর বাইরের মহল। ভাল লাগে না।
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~
বড় হওয়া মানেই ক্রমাগত জটিলতায়, চাহিদায় নিজেকে জড়ানো! শৈশব সারল্য আমরা নিজেরাই বিসর্জন দেই। একটার পর একটা চাহিদা বাড়ে। মৎস শিকারীর গল্পটা কি জানেন? যে দিনে অল্প কিছু মাছ ধরতো তাই দিয়ে আরামে আয়েসে দিন কাটাতো...
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
'আমার ছোটবেলা খুব ভালো ছিল'- মানুষ এটা বলে আসল 'বড়বেলায়' আসার পরে। মজাটা এখানে, সবাই ছোটবেলা কাটায় বড় হবার দিন গুনে, কিন্তু বড় হয়ে কাঁধে দায়িত্ব এসে পড়লে তখন ছোটবেলার মজাটা টের পাওয়া যায়।
সুন্দরবন ভ্রমণে গিয়েছিলাম প্রায় ৫০ জন সহপাঠী বন্ধু মিলে। বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট, মোবাইল বিহীন সেই প্রথম তিনদিন কাটিয়েছিলাম প্রিয় মানুষগুলোর সাথে, প্রকৃতির সাথে। সারা জীবনে এমন অভিজ্ঞতা আর কোনদিন হবে বলে মনে হয়না
মানুষ কেন জানি এমনই!
ছোট বেলায় আমরা আকুল থাকি আহারে কবে বড় হবো!
বড় হলে মনে হয়, ছোটই ভালো ছিলাম। ছোট বেলায় মনে হতো, বড় হলে একদিন আমি বাজারের সব সুপার বিস্কুট আর হাওয়াই মিঠাই কিনে একসাথে নিয়ে বসে খাবো, এখন মনে হয় আহারে কি বাচ্চাই না ছিলাম।
তারচে যখন যেমন যা আছি, তাই বা মন্দ কি!!
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
মামুন ভাই,
'ছিন্নকথন' সিরিজ হিসাবে চলুক, পাঠক হিসেবে সঙ্গে আছি...
শুধু প্রিভিউটা একটু দেখে নিতে হবে!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
কনফেশন তো করতেই হবে! করি, সবসময় পাঠকের নজরে নিয়ে আসা হয় না! অতিথি সচল হিসেবে যাত্রা শুরু করলাম, ভাবলাম প্রথমে একটু কনফেশনই করে নেই। লিখবো মাঝে মাঝে।
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
হুম। ছিন্নকথনে জীবনের ছেঁড়া ঘটনাগুলোকে জোড়া দিয়ে দিন। সিরিজ চলুক। আর অতিথি হিসেবে নিজের একাউন্ট পাওয়ার জন্য অভিনন্দন।
তবে আমাদের বানানবিদরা আপনার উপর কেন এত দয়া দেখাচ্ছে সেটা বুঝলাম না
পিপিদা, বানানবিদদের প্রতি আমি আমার এক লেখায় আহবানও জানিয়েছিলাম। টাইপো বা অসতর্কতা বলবো না, অনেক বানান আমার আসলেই জানা নেই। অনেক সহজ বানানও জানা নেই। যদি আপনাদের চোখে পড়ে, যেটাই পড়ে ধরিয়ে দিবেন, উপকৃত হবো।
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
বিভিন্ন চিন্তার মিশেলে ভাল লাগল ছিন্নকথন. সিরিজ হিসেবে চলুক।
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...
এলোমেলো চিন্তা, এটাই আসলে ছিন্নকথন। মাঝে মাঝে আশ্রয় নেয় কবিতায়ও।
এই লেখাগুলো লেখার পর কেমন জানি ভারমুক্ত লাগে, ভালো লাগলো বলে ধন্যবাদ আপনাকেও!
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
চৈনিক বালিকা আর ইকো ট্যুরিজমের সিরিজ কি শেষ হইয়া গেলো ?
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________
চীন ভ্রমনটা নিয়ে একরকম সাইকোলজিক্যাল দোলাচলে আছি, তবে লিখবো আরো দুই পর্ব অন্তত।
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
মামুন ভাই কনফেশনস ভালো লাগছে। চীন ভ্রমণের উপর লেখাগুলোও ভালো ছিল।
মাঝে মাঝে মনে হয়, ইন্টারনেট ছাড়া থাকতেই পারবো না। আবার ভাবি, জীবনের বেশিরভাগ সময়ই তো ইন্টারনেট ছাড়াই কাটিয়েছি। জানি না আপনার মত টানা কয়েকদিন ইন্টারনেট ছাড়া কাটালে কী হবে! হয়তো অভ্যস্ত হয়ে যাবো অনভ্যস্তাতে।
অ ট - আপনার পুরনো লেখাগুলো পাবার উপায় কী?
আপনাকেও।
পূর্বতন লেখা, কিছু লেখা ফেসবুকে আছে, লিঙ্ক দিচ্ছি।
ছিন্নকথন-৩
ছিন্নকথন-৪
ছিন্নকথন-৫
ছিন্নকথন-৬
ছিন্নকথন-৭
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
কাজী মামুন wrote: পিপিদা, বানানবিদদের প্রতি আমি আমার এক লেখায় আহবানও জানিয়েছিলাম। টাইপো বা অসতর্কতা বলবো না, অনেক বানান আমার আসলেই জানা নেই। অনেক সহজ বানানও জানা নেই। যদি আপনাদের চোখে পড়ে, যেটাই পড়ে ধরিয়ে দিবেন, উপকৃত হবো।
মামুন ভাই,
প্রথম দু প্যারা করেই হাঁপিয়ে গেছি, বাকিটুকু মাফ করলে হয় না?
গনিত> গণিত (কয়েক বার)
স্যার এর> স্যারের (কয়েক বার)
ঐ> ওই (কয়েক বার)
তৈরী> তৈরি
স্যার কে> স্যারকে (কয়েক বার)
স্বর্গ রাজ্যের> স্বর্গরাজ্যের
ভ্রমনপ্রিয়> ভ্রমণপ্রিয় (কয়েক বার)
কলেজে ওঠার আগে পর্যন্ত> কলেজে ওঠার আগ পর্যন্ত
কোনোদিন> কোনো দিন
আম্মা’র> আম্মার (ঊর্ধ্বকমা পরিত্যাজ্য)
প্রতি বছর> প্রতিবছর
‘পিকনিকে’> পিকনিক-এ
দু-বছরেই> দু বছরেই
চার পাঁচটি> চার-পাঁচটি
তারচে> তারচেয়ে
মানূষ> মানুষ
‘মিউজিক কনসার্ট’ এ> ‘মিউজিক কনসার্ট’-এ
মানূষের ভীর> মানুষের ভিড়
যে চোর সেই> যে চোর সে-ই
যে ভাই, বন্ধু,> যে ভাই-বন্ধু,
একই ভুল দ্বিতীয়বার পাওয়া গেলে খেলুম না।
সংযোজন : পারি নি এবং পারিনি - এটা একই লেখায় দুই রীতি হয়ে যায়। যেকোনো একটা লিখুন। আমি কিন্তু বানানবিদ না ভাই। আপনার লেখা পড়তে চাই, সেই জন্য একটু কষ্ট করলাম আর কি। হে হে হে।
কুটুমবাড়ি
কষ্ট করলেন তাই একটা গল্প বলি, সত্যি গল্প, আমার বানান নিয়ে অভিজ্ঞতার গল্প। মন্তব্য লিখতেও এখন ভয় পাচ্ছি। মন্তব্যেই না জানি কত ভুল হয়! এই 'ভুল' বানানটা নিয়েই গল্প।
শাবিপ্রবিতে ২০০০ সালের ঘটনা। আমাদের সবাইকেই বাধ্যতামূলকভাবে 'বাংলা' একটা কোর্স করতে হতো। আমিও নিয়েছিলাম। ম্যাডাম খুব ভালো পড়াতেন, আর সবগুলো গল্প কবিতা যেহেতু আমার পড়া ছিল আগেই, তাই আলোচনায় অংশ নিয়ে ম্যাডাম এর সুনজরেও পড়েছিলাম দ্রুতই। একদিন ক্লাসে ম্যাডাম কি মনে করে সবাইকে একটা একটা করে বানান বোর্ডে এসে লিখতে বললেন, ভুল করলে ঠিক করে দিচ্ছিলেন। আমাকে বললেন, 'ভুল' বানানটি লিখতে, আমি লিখলাম গিয়ে 'ভূল'। ম্যাডাম এরপর আমাকে দিয়ে একে একে ৫৫টি বানান লেখালেন বোর্ডে। বুঝতে পারলাম ম্যাডাম কিছুটা রাগ করেই করেছিলেন ওটা। সেদিন ক্লাস হয়ে গিয়েছিল আমার বানান পরীক্ষার। অবশ্য সেইবারই প্রথম আমি বাংলায় লেটার মার্ক্স অর্থাৎ ৮২ পেয়েছিলাম। তাও ঐ ম্যাডাম এর কাছ থেকেই
একটু কষ্ট করে হলেও বানানগুলো ধরিয়ে দিবেন। আমি ছাত্র একেবারেই খারাপ না এবার এই মন্তব্য'র বানান সম্পর্কে বলুন।
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
প্রথমে লেটার মার্কস দিতে নিচ্ছিলাম, কিন্তু কী মনে করে (আপনি লিখেছেন কি মনে করে) যেন আপনার মার্কস বানানটি দেখতে গিয়ে দেখলাম আপনি লিখেছেন মার্ক্স। তাই আর লেটার মার্কস দিলাম না।
অট : ঐ এবং মন্তব্য'র (ঊর্ধ্বকমা) ব্যাপারে আগে মন্তব্য করেছি, সুতরাং এই দুটি কি ইচ্ছে করে লিখলেন না অনিচ্ছায়, জানতে চাই।
সংযোজন : ম্যাডামের গল্পে মজা পাইছি খুব (আপনি লিখেছেন ম্যাডাম এর)
কুটুমবাড়ি
বুঝছি প্রতিটা বানান দশবার করে খাতায় না লিখলে আমার হবে না!
এরপর থেকে সতর্ক থাকবো, কথা দিচ্ছি।
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
আপনার চিন্ত-চেতনার মধ্যে সূফীবাদের গন্ধ পাচ্ছি। সেই সুবোদে স্পেনদেশীয় মহাগুরু সূফীদার্শনিক ইবনুল আরাবী কথাগুলো বলতে ইচ্ছা হচ্ছে। ইবনুল আরাবী ইসলাম ধর্মে বর্ণিত বেহেশত৻দোযখ স্বীকার করেন না। তিনি কুরআনে বর্ণিত পরজগত,বেহেশত,দোযখ,বিচারদিবস,পুলসিরাত,দীদার ইত্যাদী বিষয়ে সাধারণ মুসলমানদের যে আত্মবিশ্বাস রয়েছে, এসব কেবল বিভিন্ন মানসিক অবস্থার প্রতীক এবং ধারনার মূর্তরূপ মাত্র বলে মনে করেন। তিনি পুলসিরাত বলতে বুঝেন ঐশী সত্তাসারে ভ্রমন করার সোজাপথ এবং এই পথে সবকিছু ভ্রমণ করে। এই পথ ধরেই সবকিছূর উৎপত্তি হয়েছে এবং ঐ পথ ধরেই সবকিছূ ফিরে যাবে। দোযখের শান্তি কার্যের প্রতীক মাত্র।জান্নাতের অর্থ করেছেন, গোপন করা। সবকিছূ গোপনকারী বস্তুই ঐশীসত্তা। এই সত্তার মধ্যে সবরকম বহুত্ব ও বৈচিত্র গোপন রয়েছে।দোয়খের অর্থ হচ্ছে ,আল্লার নিকট থেকে দূরত্বে থাকা। মানবাত্মা ও পরমাত্মার মধ্যে একাত্মতা বুঝতে অক্ষম হওয়াই প্রকৃত দোযখ। হাশর বা সমবেত হওয়া বলতে বুঝিয়েছেন, এক সার্বিকপথে আত্মার মধ্যে সকল আত্মার সমবেত হওয়া। কিয়ামত বা পুনরুত্থান অর্থ করেছেন, মৃত্যর পর সকল আত্মার সগৃহে প্রত্যাবর্তন করা। বেহশ্তী ও দোযখীদের মধ্যে কেবল পার্থক্য আল্লার সন্দর্শন লাভ হওয়া ও না হওয়া........। রূমী মতে সৃষ্টিজগতে প্রত্যেক বস্তুতে প্রাণ প্রবাহ বিদ্যামান। রূমী যাকে বলেছেন ‘জীবনশিক্তি’ ইবনুল আরাবী তাকে বলেছেন পরম ঐক্য,স্পিনোজার দৃষ্টিতে তা পরমদ্রব্য,বার্গস এক বলেন প্রাণ প্রবাহ। এই প্রেরনাই অর্ন্তনিহিত ঐক্যসূত্র। একেই বলে পরম প্রজ্ঞা অথবা লগস বা নূরে মুহাম্মদী। ..... পরে বিস্তৃত আলোচনা করা যাবে।
এবার field theory দিয়ে বলি। ‘সমগ্র’ কে যদি আপনি field মনে করেন তাহলে আপনি Sub-field।জালাল উদ্দিন রুমী বলতেন- “Silence is the language of God, all else is poor translation.” আমার মনে হয় “Silence is the language of Heart, all else is poor translation.” আপাতত 'poor translation' এ আর না যাই। ছিন্নকথন লিখছি অনেক আগে থেকেই, এখানে-সেখানে, বিচ্ছিন্ন ভাবে। সচলের প্রোফাইল পরিচিতিটাও ছিন্নকথনেই লেখা। ছিন্নকথন একরকম আমার ‘Confessions’, নিজের প্রতি।একটি বিখ্যাত বই এর কথা বলতে পারি ‘The Presence of the Past" by Rupert Sheldrake। যদিও field একটি বিমূর্ত গাণিতিক ধারনা তথাপিও এই বইটিতে ফিল্ড সর্ম্পকে বাস্তবাতা সর্ম্পকে চমৎকার আলোচনা আছে। Rupert Sheldrake এর একটি উদ্বৃতি দিচ্ছি “ কোন সন্দেহ নেই যে এই ফিল্ডগুলো বাস্তব, আমরা সেগুলোকে যে-ভাবেই রূপায়িত করি বা যে-নামেই ডাকি না কেন। আমরা জানি যে এই ফিল্ডগুলো তাদের ভৌত ক্রিয়াকান্ডের মাধ্যমে অস্তিত্বশীল, যদিও আমরা সেগুলোকে সরাসরি পঞ্চইন্দ্রিয় দ্বারা অনুভব করতে পারি না”।............... পরে বিস্তৃত আলোচনা করা যাবে।
Field একটি বির্মূত গাণিতিক ধারণা। Mathematical Reality বিশ্লেষন বা বর্ণনা করার জন্য Field এর ধারনাটি সবচেয়ে ব্যাপক এবং সার্থক বলে বিবেচিতত হয়। সুতরাং আধ্যাত্মিক আলোচনা আজকের মতো ইতি টানলাম। হয়ত অনেক অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে ফেলেছি। আপনার অন্য লেখাগুলোর তুলনায় এই ছিন্নকথন বেশী ভাল লেগেছে। ক্ষমা প্রার্থনীয়।
মহসিন ভাই,
জালাল উদ্দিন রুমী দিয়েই বলি- "এক গ্লাস সচ্ছ পানির দিকে তাকালে, আপনি যদি ঈশ্বরকে ভালোবাসেন তাহলে ঈশ্বরকে দেখতে পাবেন, যদি ভালো না বাসেন তাহলে দেখবেন নিজের মুখ"
হুম সুফীবাদ এর প্রভাব আমার মধ্যে আছে ভীষণরকম। তবে এই সুফীবাদ নির্দিষ্ট দেশ কাল সীমায় আবদ্ধ নেই। এরমধ্যে রুমী যেমন আছেন, আছেন লালনও। লালন একটু বেশি পরিমানে আছে। "আপনাকে আপনি চিনে নে", অথবা "তুমি আপনি আল্লা ডাকো আল্লা বলে" এগুলোর মধ্যে আছে অনেক চিন্তন যা আমাকে নিত্য ভাবায়। সত্য এবং মুক্তচিন্তা দিয়ে জগত বিশ্লেষণের জন্য এর চেয়ে বেশি গ্রহনযোগ্য এবং সুবিধাজনক আর কোনো মাধ্যম এর সাথে এখনো পরিচয় হয় নি।
আপনার কথাগুলো আমাকে ভাবায়।
ভালো থাকবেন, নিরন্তর!
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
ভালো লাগলো। আপনারা কেমনে যে লেখা-লেখি করেন, আমি এক ফোঁটাও ধৈর্য রাখতে পারিনা। আমার এক প্যারা লিখতে মোটামুটি এক থেকে দেড় ঘন্টা লাগে।
এটা অবশ্যই সিরিজ হিসেবে চাই। এ ব্যাপারে কোনো ছাড়া-ছাড়ি নাই।
===============================================
ভাষা হোক উন্মুক্ত
==========================================================
ফ্লিকার । ফেসবুক । 500 PX ।
হা হা হা! লেখালেখি আর করছি কই! মাঝে মাঝে মনে হয় আবোল তাবোল বকছি! কেউ লিখতে লিখতে ভাবেন, আর কেউ ভেবে লিখেন। আমি লেখার আগে সময় নেই অনেক, ভাবনার জন্য। কয়েক ঘন্টা, মাঝে মাঝে কয়েকদিন, সপ্তাহ! এরপর লিখতে বসলে একটানেই লিখি।
ধন্যবাদ আপনাকে!
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
=================================
"রঙিন কাফনে মোড়া উৎসুক চোখে
ছায়া ছায়া প্রতিবিম্ব দেখি
মানুষ দেখি না।।"
কাজী মামুন সাহেব, আপনার এই ছিন্নকথনটা অসম্ভব সুন্দর লাগলো। খুবই সুন্দর লাগলো।
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
-----------------------------------------------------------------------------
সোনা কাঠির পাশে রুপো কাঠি
পকেটে নিয়ে আমি পথ হাঁটি
নতুন মন্তব্য করুন