'তিনি কাঁপছিলেন .. তার হাত কাঁপছিল । লিখছিলেন তার শেষ লেখাটি', বলতে থাকে রেড । 'তার সময় শেষ হয়ে এসেছিল .. । তার সাথে আমার পরিচয় বেশিদিনের না। । তবু তাকে দেখেই বোঝা যেত, কিছু একটা হারিয়ে যাচ্ছে । শেষ হয়ে যাচ্ছে । আমাকে তিনি প্রায় বলতেন 'এই একটু ! আর একটু !' পাগল পাগল লাগত তাকে । লেখকরা বোধহয় পাগলই হয় । তাছাড়া তিনিও বুঝতে পেরেছিলেন, সময় নেই আর । আসলেই ছিল না । আমি জানি না তার লেখার আর কতটুকু বাকি ছিল । আগেই বলেছি আমার সাথে তার পরিচয় বেশিদিনের না । শুধু চাইতাম তার লেখাটা যেন শেষ হয় । কিসের ব্যামো ছিল জানি না । ঘুমাতে দেখিনি তাকে । কেন জানি মনে হয় চোখের পাতাও ফেলতেন না । অদ্ভুত অসহায় লাগত তাকে । সারাক্ষন বারান্দায় পায়চারী, হঠাৎ ছুটে এসে কাগজ টেনে বসা .. এই চলছিল । সেদিন রাত দুটা, তিনি লিখে যাচ্ছিলেন একটানা । মনে হচ্ছিল শেষ হয়ে যাবে লেখাটা । কাঁপছিলেন তিনি, ঘামছিলেন, শ্বাস ফেলছিলেন ! তার চোখ জ্বলজ্বল করছিল এক অদ্ভুত উন্মাদনায় !'
'তারপর ? পেরেছিলেন শেষ করতে ?' প্রায় চিৎকার করে উঠে স্টেড ।
'না .. আমিই শেষ হয়ে গেলাম তার আগে । কালি ছিল না আর .. একটুও .. । আর একটু পরেই মারা যান তিনি । .. টেবিলে পড়ে যান .. মুখ থুবড়ে ।'
বোকার মত তাকিয়ে থাকে স্টেডলার ইরেজার। কালো হয়ে, ক্ষয়ে গেছে অনেকখানি । 'এস'টা পড়া যায় তবু। রেডলিফ কথা বলে না আর। বাতাসে গড়ায় আস্তে আস্তে .. নালাটার দিকে । খালি শীষ পেটে নিয়ে ও এখন বেশ হালকা ।
মন্তব্য
এটা কার কাহিনী?
আমি একজনকে চিনতাম
তিনি লেখক না
কিন্তু কী যেন লেখার কথা বলতেন সব সময়
বাঁধানো একটা বিশাল খাতাও ছিল তার
সারা জীবন প্রতিদিন ওটা হাতড়াতেন কিন্তু লিখেননি কিছুই
প্রায়ই বসতেন লিখতে
মারা যাবার কিছুদিন আগে তার মতিভ্রম ঘটে
তিনি কলম দিয়ে খুঁচিযে খুঁচিয়ে পাতা ছিড়তেন সেই খাতা থেকে
মাঝেমাঝে পাতা ছিঁড়ে কামড়াতেন
কিন্তু খাতাটার প্রথম পাতায় 'লেখক: মোহাম্মদ শমশের আলী' ছাড়া কিছুই লিখেননি তিনি
০২
খুবই টাচি আপনার লেখাটা
ধন্যবাদ লীলেনদা ।
কিন্তু আপ্নে এইটা কি বললেন ! আমারটাতো শুধুই ফিকশন , আপ্নারটাতো একটা ভয়াবহ সত্য ! লীলেনদা এই শমশের আলী কে? আরো কিছু বলেন ।
-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
আমার পরিচিত একটা ছেলের নানা
মগবাজারে তাদের বাসা ছিল
শেষ বয়সে তিনি থাকতেন তার মেয়ের সাথে
মানে ওই পরিচিত ছেলের বামায়ের সাথে
পাড়ার ছেলেরা তাকে ডাকতো রাইটার আলী
তেমন একটা কথা বলতেন না
কিন্তু মাঝেমাঝে মাঝে তার লেখার কথা বলতেন
বলতেন তিনি এমন একটা কিছু লিখবেন যা কেউ কোনোদিন লেখেওনি লেখার কথা কল্পনাও করেনি
আমি সেই ছেলেটার সাথে দুবার যাই তাদের বাসায়
প্রথম যখন যাই তখন তিনি সুস্থ ছিলেন
কিন্তু আমি যখন গেছি তখন তিনি তার লেখার টেবিলে বসা ছিলেন
ওই সময় তার মেয়ে ছাড়া কাউকে তিনি সেই ঘরে ঢুকতে দিতেন না
তার মেয়ে ওখানে গিয়ে চা দিয়ে আসতেন মাঝে মাঝে
আমি অনেক্ষণ বসেও তার সাথে কথা বলতে পারিনি
পরেরবার যখন যাই তখন তিনি অসুস্থ এবং অনেকটা মতিভ্রম হয়ে গেছে তার
তখন তিনি মুখে কী যেন বিড়বিড় করতেন আর একটা পুরোনো পাইলট কলম; দিযে বাঁধাই করা খাতার পাতা উল্টে উল্টে খোঁচাতেন
খুঁচিয়ে ফালা ফালা করে ছিঁড়তেন আবার ছেড়া টুকরাগুলো পাতার যেখান থেকে উঠে গেছে সেখানে যত্নে বসিযে মলাট বন্ধ করে চেপে ধরে বসে থাকতেন
তখন অনেকেই তার ঘরে যেতো। তিনি খুব একটা কাউকে চিনতেন না
মাঝে মাঝে ঘাড় ঘুরিয়ে বড়ো বড়ো চোখ করে তাকাতেন আর খাতাটা বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে রাখতেন
০২
লেখার টেবিল ছাড়া বাকি সময় পুরোটাই তার কলমটা তার শার্ট বা পাঞ্জাবির বুক পকেটে থাকতো
প্রতিদিন সকালে উঠে নাকি কলমটার পুরোনো কালি ফেলে নতুন কালি ভরতেন
তিনি নাকি বলতেন ফ্রেশ কালি ছাড়া ভালো লেখা যায় না
প্রতি সপ্তাতেই কলমটা নিজে ধুয়ে দিতেন
০৩
মারা যাবার পরে ছেলেটা তার নানার খাতাটা আমাকে দেখিয়েছিল একদিন আজিজে এনে
ওটার অনেকগুলো পাতা ফালাফালা করে কাটা
অনেকগুলো দাঁত দিযে কামাড়ানোর কারণে মুচড়ে যাওয়া
অনেকগুলো বোধহয় হাত দিয়ে মোচড়ানো
বিশাল খাতা
দু আড়াইশ পাতা হবে
পুরোটাই ফাঁকা
শুধু প্রথম পাতায় লেখা ছিল
লেখক: মোহাম্মদ শমশের আলী
ওই ছেলেটা পরে কোথায় যেন চলে যায়
আর কোনো যোগাযোগ নেই
অদ্ভুত
মনটাই খারাপ হইয়া গেল
-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
- হ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভাল্লাগছে।
লেখা আর মন্তব্য দুইটাই অদ্ভুত !
কি মাঝি? ডরাইলা?
ইসসস
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
আমার পড়া আপনার লেখা সেরা একটা গল্প
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
স্টেডলার ইরেজার আর রেডলিফ-কে চরিত্র বানিয়ে গল্প লেখার আইডিয়াটিই অভিনব।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
অদ্ভুত সুন্দর টপিক নির্বাচন।
চলেন, KFC তে নিয়া যাই আপনাকে।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
গল্পটা চমৎকার লাগলো।
তবে শমশের আলীর কথা পড়ে কষ্ট লাগলো। তার অনুভূতিগুলো নিজের মধ্যে ভাবতে গেলেই মন খারাপ লাগছে।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
স্ট্রেঞ্জ ফিকশন...স্ট্রেঞ্জার ফ্যাক্টস!
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
বাস্তবতা নাটকের চাইতেও নাটকীয়
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
ধুগোদা রায়হান দ্রোহীভাই মুমু কমরেড সন্ন্যাসীদা রেনেট সুলতানা পারভীন শিমুল জি.এম.তানিম আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ ।
@রেনেট হ হ চলেন ! KFC খাওয়ান
-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
অসাধারণ! প্রথমে ধরতেই পারি নাই রেডলিফ আর স্টেডলার কারা? হাহাহা!
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।
___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!
অদ্ভুত সুন্দর গল্প!
খেকশিয়ালজি, পুরা ফাটাই ফেলসেন
চমৎকার লাগলো...
---------------------------
থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
সবাইকে আবারো ধন্যবাদ
-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
এই ভিন্ন আংগিকের দৃষ্টিভংগিটার জন্যই খেকশিয়ালের লেখাগূলো এত চমৎপ্রদ লাগে। আসলেই এটা তোর সেরা লেখাগুলোর মধ্যে একটা। যদিও এখনও পড়ে চলেছি এক্টার পর একটা।
___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা
নতুন মন্তব্য করুন