• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

কাইদান চার : কানহীন হইচি ( ১ম পর্ব )

খেকশিয়াল এর ছবি
লিখেছেন খেকশিয়াল (তারিখ: সোম, ২৮/০৭/২০০৮ - ১:৫৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto

অনেক দিন আগের কথা । সেইদিন দান-নো-উরা’র কাছে, শিমোনোসেকির সরু পথে শেষ হয় হেইকি গেঞ্জিদের যুদ্ধ । তীর আর বর্শায় ছেয়ে গিয়েছিল আকাশ সেদিন, সাগরে উথাল পাথাল করছিল রক্তলাল ঢেউ । হেইকি বীরদের রক্ত .. তাদের স্ত্রী শিশুদের রক্ত এবং তাদের শিশু রাজার । চারশ বছর পেরিয়ে গেছে, এখনো সাগরে ভেসে আসে হেইকিদের হাহাকার ।

দেখা যায় কিছু কাকড়ার .. পিছনে মানুষের চেহারা ওগুলোর, যেগুলোকে সবাই ডাকতে শুরু করে হেইকি কাকড়া নামেই । সবাই মনে করত ওগুলো সব হেইকির যোদ্ধাদের প্রেতাত্মা । এখনো অমাবস্যার রাতগুলোতে ভুতুড়ে কিছু আলো নাকি উড়াউড়ি করে তীর ঘেষে । ছুটে যায় ঢেউয়ের উপড় দিয়ে । জেলেরা ওগুলোকে বলে ‘ওনি-বি’ । ঝড়ো বাতাসে নাকি কান পাতলে শোনা যায় অস্ত্রের ঝনঝনানি, যেন ভেসে আসছে সাগরের মাঝ থেকে । কখনো নাকি দেখা মিলে হেইকি যোদ্ধাদের, তুমুল আক্রোশে এরা নাকি ঝাপিয়ে পড়ে মাঝি মাল্লাদের উপরে, ডুবিয়ে দেয় যত জাহাজ, নৌকা । সেইসব আত্মাদের প্রায়শ্চিত্ত করবার জন্যই বানানো হয় এই আমিদাইজি মন্দির । সাগরের তীরে তোমরা হয়ত দেখে থাকবে ওই স্মৃতিফলকগুলো । হেইকিদের স্মরণেই বানানো হয় ওগুলো । এই আকামাগেসেকিতে এখনো পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে হেইকিদের নামগান চলে আসছে । তোমাদের মাঝে আজকে বিওয়া হাতে যাকে দেখছো সে হইচি । ও তোমাদের শোনাবে সেই শোকগাঁথা, সেই যুদ্ধের কথা ।" বুড়ো সন্ত থামলে সবাই তাকাল হইচির দিকে । অন্ধ হইচি হাসিমুখে টেনে নিল ওর বিওয়া । মাথা নুইয়ে শুরু করল তার গান ।

হইচি এখানে এসেছে বেশিদিন হয়নি । অনেক গরীব ও । ছোটবেলা থেকেই গানের পাগল । বিওয়াতে হাত খুবই ভাল সেই ছোটবেলা থেকেই । ওর গান শুনে খুশি হয়ে ওকে আমন্ত্রণ জানান আমিদাইজির বুড়ো সন্ত । থেকে যেতে বলেছেন ওকে, ব্যবস্থা করে দিয়েছিন মন্দিরে থাকা খাওয়ার । কদিন হল বাইরে গেছেন তিনি এক বাড়িতে ওঝাগিরি করতে, আজকেই ফিরে আসার কথা ।
তখন মাঝরাত । হইচি দরজা হাতড়ে চলে এলো বারান্দায় । সামনেই বাগান, সেখান থেকে আসছে সুগন্ধী বাতাসের ঝাপটা । হইচি বিওয়া টেনে নেয়, শুরু করে আলাপ । কেন জানি ওর মনে হল কেউ এদিকেই আসছে । বাগান পেরিয়ে বারান্দায় উঠে এলো যেন সে । হইচি বিওয়া নামাতেই নামাতেই শুনলো এক ভারী কন্ঠস্বর “হইচি !”
“বলুন !” বলে উঠল হইচি । কিন্তু উত্তরে বলল না কেউ কিছু । আবার বলল ও,
“দেখুন আমি অন্ধ , আপনি দয়া করে না বললে বুঝতে পারব না কে কথা বলছেন ।”
“ভয় পাবেন না, আমি একজন সামুরাই” শান্তস্বরে বলল আগুন্তুক, “আমার প্রভু আমাকে পাঠিয়েছেন আপনাকে নিমন্ত্রণ করতে । তিনি সমাজে খুবই উচ্চপদস্থ একজন ব্যাক্তি । কদিন হল এখানে এসেছেন বিশ্রাম নিতে । ওদিন আপনার দান-নো-উরার সেই শোকগাঁথা শুনে তিনি অনেক খুশি হয়েছেন । তাই আমাকে পাঠিয়েছেন আপনাকে নিয়ে যেতে । তার অনুরোধ আপনি একবার তার বাড়িতে আসেন, সবার সামনে গেয়ে শোনান আপনার গান । ” তখনকার দিনে সামুরাইদের কথা ফেলত না কেউ । হইচি মাথা নুইয়ে উঠে দাঁড়াল । স্যান্ডেল পড়ে বিওয়া হাতে নেমে এল তার সাথে ।

অনেকক্ষন ধরেই হাঁটছিলো ওরা । হইচি ধরে রেখেছিল সামুরাইয়ের লোহার মত শক্ত হাত । শরীরের নানা জায়গা থেকে ঝনঝন শব্দে বোঝা যাচ্ছিল আগুন্তুক অস্ত্রসজ্জে সজ্জিত, মনে হয় প্রাসাদরক্ষী কোন । অনেকক্ষন হাঁটার পর অবশেষে থামল ওরা । হইচির মনে হল বিশাল কোন দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে সে । কিন্তু মনে করতে পারল না আমিদাজির প্রধান ফটক ছাড়া আরো বড় কোন দরজা এখানে থাকতে পারে । “খুলো !” সশব্দে আদেশ দিল সামুরাই । পরক্ষনেই হইচি শুনতে পেল কলকব্জা টানার ঘড়ঘড়ে শব্দ, খুলে গেল যেন বিশাল কোন দরজা । ভিতরে ঢুকে আরো কিছুক্ষন হাঁটার পর হইচি বুঝল ওরা এসে দাঁড়িয়েছে আরো একটা বড় কোন পরিসরে, সুগন্ধীতে মনে হচ্ছে বাগান হবে কোন । “ দেখো সব, নিয়ে এসেছি হইচিকে !” আবারও হাঁকল সামুরাই । হঠাৎ স্পষ্ট হয়ে এল কিছু দৌড়ে চলার শব্দ, সরসর করে নড়ে উঠল বড়বড় কিছু পর্দা যেন । মেয়েদের মিহি গলার শব্দে হইচি বুঝতে পারল এরা সম্ভ্রান্ত কোন মহলের অন্তঃপুরবাসিনী, কিন্তু একটা অস্বস্তি রয়েই যাচ্ছিল । ও বুঝতেই পারছিল না এটা কোথায়, কেমন একটা জায়গা । আরো কিছু দূর এগিয়ে যাওয়ার পর ওকে এসে ধরল একটি মেয়ে । তার কোমল হাত ধরে স্যান্ডেল রেখে ও উঠে এল মসৃণ কাঠের একটা মেঝেতে । চারদিকে মৃদু গুমগুম কথায়, সিল্কের পোশাকের কোমল শব্দে ওর মনে হল ওর সামনে অনেক মানুষ । অনেক সম্ভ্রান্ত উচ্চপদস্থ কিছু লোক, যারা বসে আছেন ওকে ঘিরেই । কে জানি ওকে একটা কুশন দিয়ে আরাম করে বসতে বলল ।

হইচি বিওয়ার তারগুলো বেঁধে নিচ্ছিল, তখন এক নারীকন্ঠ যার স্বর শুনলেই বোঝা যায় তিনি মহলবাসিনীদের কত্রীস্থানীয়া কেউ, বলে উঠল,
“মহাশয় আপনি যদি হেইকিদের ইতিহাস বিওয়া বাজিয়ে পাঠ করতেন খুবই ভাল হত”
“কিন্তু সম্পূর্ণ ইতিহাস তো বিশাল , আপনি ঠিক কোন অংশটা বেশি পছন্দ করেন তা যদি বলতেন” বলে ওঠে হইচি ।
“তাহলে আপনি দান-নো-উরার শোকগাঁথাখানাই গান, আহা ! এর থেকে করুণ কিছুতো হতে পারে না ...”
হইচি তখন ধরল সেই গান । মন্ত্রের মত আবৃত্তি করতে লাগল সেই রক্তক্ষয়ী দিনের কথা । বিওয়ায় ছড়িয়ে দিল তার আবেশ, তারে তারে ধ্বনিত হল বৈঠার শব্দ, জাহাজের ঢেউ ভাঙ্গার আওয়াজ । তারে হিসহিসিয়ে উঠল বর্শা তীরের আওয়াজ, যোদ্ধাদের চিৎকার । তাদের শিরস্ত্রান বিদীর্ণের নির্মম ধাতব শব্দ । মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনে গেল সবাই । ছোটখাট বিরতিগুলিতে ও শুনতে পাচ্ছিল সবার ফিসফিস , “কি গুণী একজন লোক ... ”, “এরকম গাইতে আমি আর কাউকে শুনিনি ...”। হইচির মন ভরে গেল , ও আরো সুন্দর করে গাইতে শুরু করল । যখন ও শেষে হেইকি রমণী আর শিশুদের নির্মম পরিণতির কথা বলছিল, চারিদিক থেকে ভেসে আসছিল মেয়েদের গুমোট কান্নার শব্দ । হেইকি ধাত্রী নি-ওয়ামা যখন কোলে শিশু রাজাকে নিয়ে আত্মহুতি দিল সাগরে, চারিদিক থেকে ফোঁপাতে শুরু করল সবাই । মাতম করতে লাগল কেউ । হইচি ভয় পেয়ে গেল, সে বুঝল এই ভয়াবহ করুণ পরিবেশ তারই সৃষ্টি । এভাবে বেশ কিছুক্ষন চলার পর আস্তে আস্তে গানের সাথে এক সময় শান্ত হয়ে এলো সবাই । হইচি আবারও শুনতে পেল সেই নারীকন্ঠস্বর,
“মহাশয়, আমরা সবাই একমত । আপনার মত এত সুন্দর বিওয়া বাজিয়ে গান গাইতে আমরা এর আগে কাউকে শুনিনি । আমাদের প্রভু অনেক খুশি । তিনি আপনাকে আপনার এই অসামান্য পরিবেশনের জন্য পুরস্কৃত করতে চান । কিন্তু একটা শর্তে, তিনি চান আপনি এভাবে ছয় রাত ঠিক এই সময়েই এখানে চলে আসবেন আমাদের বার্তাপ্রেরকের সাথে, গান করবেন তিনি এখানে থেকে চলে যাবার দিনটি পর্যন্ত । আর আরেকটি কথা, কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারনে তিনি অনুরোধ করছেন আপনি এখানে আসার ব্যাপারটা যেন আর কাউকে না জানান । ভদ্র, আপনি এখন যেতে পারেন ।”
হইচি উঠে দাঁড়াল । সবাইকে ধন্যবাদ দেয়া শেষ হলে এগিয়ে এলো আবার এক নারীর হাত, পৌঁছে দিল তাকে সদর দরজায় । যেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছিল সেই সামুরাই ।

চলবে...

----------------------------------------------------
টীকা টিপ্পনি :
auto
১. হেইকি কাকড়া আসলেই আছে, যেগুলোকে বলা হয় হেইকিগানি । হেইকি ক্র্যাবগুলোর পিছনটা দেখতে আসলেই মানুষের মত ।

auto
২. বিওয়া মূলত চীনা বাদ্যযন্ত্র, পরবর্তীতে জাপানেই জনপ্রিয় হয়েছিল বেশি ।


মন্তব্য

রায়হান আবীর এর ছবি

অনেকদিন পর কয়াইদান আসলো। পরের পর্ব তাড়াতাড়ি চাই।
---------------------------------
জানিনা জানবোনা... কোন স্কেলে গাইছে কোকিল
গুনিনা আমি গুনিনা...কার গালে কটা আছে তিল

খেকশিয়াল এর ছবি

এই গল্পটা বড় আছে, কালকেই শেষ করতে পারতাম কিন্তু পুরো রাত লাগত মনে হয় । পরের পর্ব লিখে ফেলব এর মধ্যেই ।

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

কীর্তিনাশা এর ছবি

আহা! অদ্ভুত মায়াময় এক পরিবেশে ছিলাম এতক্ষন। আপনার লেখায় পুরো ডুবে গিয়েছিলাম। পরের পর্ব দ্রুত চাই খেকশিয়াল ভাই।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিষাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

খেকশিয়াল এর ছবি

আপনার ভাল লেগেছে জেনে আমারও ভাল লাগল, ধন্যবাদ ।

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দারুণ
আচ্ছা এগুলো কি আপনি সরাসরি জাপানি থেকে অনুবাদ করেন নাকি ইংরেজি থেকে?

এগুলো দিয়ে একটা পাবলিকেশন করার চিন্তাটা মাথা থেকে বাদ দেবেন না

খেকশিয়াল এর ছবি

না লীলেনদা, আমি গল্পগুলি রূপান্তর করছি লাফসাদিও হার্নের কয়াইদান সংগ্রহ থেকে, ভদ্রলোক জাতিতে গ্রীক কিন্তু জীবনের বেশিরভাগ সময় জাপানেই কাটিয়েছেন আর বিয়ে থা করে ওখানেই থেকে গিয়েছিলেন, তিনি ইংরেজীতেই লিখেছিলেন তার গল্পগুলি । আর অন্যান্য যেসব জায়গা থেকে , বই থেকে সাহায্য নিচ্ছি তা সবই অন্তর্জালভিত্তিক, ইংরেজীতেই । জাপানীটা জানি না তবে টুকটাক যা জানি আর জানতে পারছি, ওগুলোকে সিড়ি করেই খুঁজছি সব গল্প ।
পাব্লিকেশন-এর চিন্তাটা আছে, ঠিক করেছি আপনাকেই ধরব একদিন এই ব্যাপারে :D

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

সবজান্তা এর ছবি

দুর্দান্ত ! সাধে কি আপনাকে আমি জি এইচ হাবীব নামে ডাকি :P


অলমিতি বিস্তারেণ

খেকশিয়াল এর ছবি

গেলি ! সংশোধনীগুলার জন্য ধন্যবাদ ।

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

নিরিবিলি এর ছবি

মন্ত্রমুগ্ধের মত পড়লাম। অনেক ভাল লাগলো। পরের পর্বটা লিখে ফেলেন।

শেখ জলিল এর ছবি

বেশ রহস্যময় কাহিনী মনে হচ্ছে। পরের পর্বগুলো পড়ার আগ্রহ থামাতে পারছি না!
..খুব সুন্দর অনুবাদ করেছেন। চলুক আরও পর্ব..

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

দেবোত্তম দাশ এর ছবি

খুব ভাল লাগলো। সত্যি পরের পর্ব দ্রুত চাই
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি

------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।