‘বলুন ডাক্তার সাহেব! কি উপহার চান আপনি?.. কিছু তো একটা নিতেই হবে আপনাকে.. আমি জানি আপনি বলবেন এটা আপনার কর্তব্য, ডিউটি। কিন্তু একটা কিছু নিতেই হবে আপনাকে, বলুন কি চান আপনি!’
সোফায় হাসিমুখে বসেছিলেন ডাক্তার শফিক, কিছু না বলে চোখ বুলালেন আশেপাশে। কেবিনটা বেশ বড় আর গুছানো। শেষ যেবার সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন একটা হসপিটালে, সেখানকার সবচেয়ে দামী কেবিনগুলোকেও হার মানায় এই হসপিটালের ডিলাক্স কেবিনগুলো, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
‘আপনি লজ্জ্বা পাচ্ছেন নাতো? ইয়ং ম্যান! ডোন্ট বি শাই!’ বলে উঠলেন পৌঢ় নুরুল হুদা। তিনি যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন তা তার চকচকে চোখ দেখলেই বোঝা যায়।
‘আপনি এখন কেমন বোধ করছেন?’ শফিক বললেন।
‘খুবই ভাল! মনে হচ্ছে বয়স বিশ বছর কমে গেছে! মনে হচ্ছে যেন ফুটবল খেলতে পারব!’
‘হা..হা..হা..’হেসে উঠলেন শফিক.. ‘তো.. বয়স কত হল আপনার?’
‘আজকে পর্যন্ত চৌষট্টি, বারোটা বাজলেই পয়ষট্টি হব!’
‘বলেন কি! কালকে আপনার জন্মদিন?’
‘হ্যাঁ! কালকেই রিলিজ পাচ্ছি শুনলাম, তাই ছেলেকে পাঠিয়ে দিলাম বড়িতে। কাল বাড়ি যাব, ভাবতেই ভাল লাগছে।’
‘আপনার অপারেশনটা খুবই কঠিন ছিল..’
‘আমি জানি ডাক্তার! সবাই বলেছে আমাকে! আপনি আসলেই একটা ফেরেস্তা..’
‘আমি বোধহয় আপনাকে বুঝাতে পারলাম না.. হ্যাঁ অপারেশনটা একটু ট্রিকি ছিল তবে সবচেয়ে বেশী কঠিন ছিল আমার করাটা। ভয়াবহ এক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে আমার এই অপারেশনটা করতে হয়েছে।‘
‘বুঝলাম না, খুলে বলুন..’
উঠে পায়চারি করতে লাগলেন শফিক..‘অপারেশনটা করার সময় খুবই মিশ্র অনুভূতি হয়েছিল আমার। কিভাবে বুঝাই... যেমন প্রথমেই আমার হাসি পাচ্ছিল, ভয়াবহ হাসি!’
‘হাসি ... কেন..?’ ভ্রু কুঁচকে ফেললেন নুরুল হুদা..
‘হা..হা..হা.. বারে! হাসব না?’ ঘর কাঁপিয়ে বললেন শফিক, 'আপনার মত একজন লোকের অপারেশন করতে হচ্ছে, হাসি থামাই কি করে বলুন?'
মুখ শক্ত হয়ে গেল হুদা সাহেবের, কুঁতকুঁতে চোখে দেখতে লাগলেন শফিককে, একমনে হাত পা নেড়ে কথা বলছিলেন তখন শফিক।
‘.. আমার মাথায় ওলটপালট হয়ে গিয়েছিল। কি করা উচিত! কি করা উচিত! আমার কি বড় কোন অজুহাত দেখিয়ে চলে যাওয়া উচিত? প্রথমে ওটাই ভেবেছিলাম, যেমন ভেবেছিলাম ভীষণ অসুস্থতার ভান করে পড়ে যাব। সবাই ধরাধরি করে নিয়ে যাবে। এমনিতেই আমার লো প্রেশার আছে সবাই জানে। ভাবছিলাম আর ঘুরছিলাম ওটির হল দিয়ে। তখনো শুরু হয়নি অপারেশন। বাথরুমে গেলাম। ভালমত নাক মুখে জলের ঝাপ্টা দিয়ে বসলাম একটু। তারপর ভাবলাম.. নাহ.. আপনার অপারেশনটা আমাকেই করতে হবে। অন্য কারো উপর ভরসা করতে পারছিলাম না। আপনাকে বাঁচিয়ে তুলতে হবে যে করেই হোক, এভাবে আপনাকে মরতে দেয়া যায় না। ওটিতে ঢুকার পর আমার ভয় করতে থাকে.. আপনার কেইসটা রিস্কি ছিল। জানেন?.. খুবই সহজ ছিল আপনাকে মেরে ফেলা, বেশ কবার মনে হয়েছে দেই শেষ করে! হা..হা..বিশ্বাস করুন কারো বাবার সাধ্যি হত না বুঝতে যে এটা খুন। কিন্তু প্রতিবারই নিজেকে বুঝিয়েছি.. না এভাবে নয়।’
‘আপনি ..এসব কি বলছেন! ..আমি কি আ-আপনাকে চিনি? ..আপনি ক্কে-কে ?’ ভয়ে তোঁতলাতে শুরু করেছেন নুরুল হুদা। শফিকের শান্ত চেহারার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন তিনি। শফিকের মুখে কোমল হাসি ফুটে উঠল। এগিয়ে এসে হুদা সাহেবের বেডের সামনে দাঁড়ালেন তিনি । বেডের পায়ের চাকার লক খুলে বেডসহ টেনে জানালার কাছে এগিয়ে নিতে নিতে বললেন, ‘আমি কেউ না, আমাকে আপনি চিনবেন না। কিন্তু আপনাকে আমরা সবাই চিনি। আপনি একজন রাজাকার। আপনাকে সারিয়ে তুলতেই আমার ভয়াবহ অপরাধবোধ হচ্ছিল.. ভয়াবহ! .. আপনাদের শাস্তি, বিচার কবে হবে .. আদৌ হবে কিনা আমি জানি না। আমি একলা আপনাকে শাস্তি দেবার কেউ না, এই অধিকার সবার। ... আমি শুধু জানি আমার প্রায়শ্চিত্তের প্রয়োজন। আপনাকে সুস্থ করে তোলার দরকার ছিল আমার... আপনাকে মেরে ফেলবার জন্য।‘
বিকট শব্দে.. পনেরো তালার একটি ডিলাক্স কেবিনের বড় জানালা ভেঙ্গে বিছানাশুদ্ধ রাজাকার নুরুল হুদা যখন নিচে পড়ছিল, ঘড়িতে তখনো বারোটা বাজেনি।
মন্তব্য
ঠিকাছে...............
কী ব্লগার? ডরাইলা?
নমস্কার দ্রোহীদা, আপ্নের 'ঠিকাছে'র দাম আমার কাছে অনেক। ছিলেন কই এদ্দিন? দেখিই না?
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
খাইছে! কস কী মমিন?
কই ছিলাম? মরে গেছিলাম।
কী ব্লগার? ডরাইলা?
সাবাশ! এলা তয় কিছু ভুতুইরা লেখা পোস্টো করেন!
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
- সাধে কি আর পাবলিক মেম্বররে ভূতোদা কয়?
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
:D
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
গল্পের এন্ডিং মনে শান্তি এনে দিলো। ভালো লাগলো।
জেনে আমারো
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
খুবই ভাল লাগল।
জেনে আমারো ভাল লাগল
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
কী ব্লগার? ডরাইলা?
ইয়ান এক্কান হোয়াদের কাম কইচ্চত। হেতনের টেয়াও মাইচ্চত আবার হেতনরে ঠেলা দি মারিও হেলাইছত। ব্রাভো।
--------------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।
দৃশা
---------------------------------------------
রাজাকার আলবদর নিপাত যাক!
জয় বাংলা আমার থাক!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
ব্বাহ্!
ঠিকাছে মানে! রীতিমতো দৌড়াইতেছে।
সুন্দর লাগলো।
------------------------------------
"আমার চতুর্পাশে সবকিছু যায় আসে-
আমি শুধু তুষারিত গতিহীন ধারা!"
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
ধন্যবাদ আপনাকে
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
সুন্দর। ধন্যবাদ আপনাকে।
আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে,
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে ...
হে মহান কবি, এসে দেখে যান সেই ছেলে এখন সচলায়তনে ...
সাবাস!
... নামহীন
হারামজাদাদের বিচার চাই
একদম অন্যরকম।
এক নিঃশ্বাসে পড়ে গেলাম।
এরকম আরো চাই।
অনেক ধন্যবাদ
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
গল্প বড় সৌন্দর্য্য হয়েছে .........!
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
_________________________________________
তুমি মহারাজ সাধু হলে আজ
আমি আজ চোর বটে!
হ ঠিকাসে। উচিৎ কাম হইসে!
খুব ভাল হয়েছে !
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক ধন্যবাদ
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
এক্কেরে ঠিকাছে....
মনের ওপর শান্তির প্রলেপ দেয়ার মতো একটা গল্প হয়েছে, পন্ডিতজী।
দারুণ !
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
আমিও কইলাম ঠিকাসে
...........................
Every Picture Tells a Story
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ঝিমাইন্না পোলাডা মাঝে মাঝে জাগলে বড়ো প্রকাশ্য হইয়া জাগে
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
কী ব্লগার? ডরাইলা?
সবাই যখন কইছেন তাইলে অবশ্যই ঠিকাছে
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
ঠিকাছে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
খেকু'দা গল্পটা বেশ লাগল।
~মিনা~
এখনো ভাবছি.... কনফিউজড...... গল্পই তো.....ঠিকাছে তাহলে....
নিজের ফুলদানীতে যারা পৃথিবীর সব ফুলকে আঁটাতে চায় তারা মুদি; কবি নয়। কবির কাজ ফুল ফুটিয়ে যাওয়া তার চলার পথে পথে। সে ফুল কাকে গন্ধ দিলো, কার খোঁপায় বা ফুলদানীতে উঠলো তা দেখা তার কাজ নয়।
___________________________ [বুদ্ধদেব গুহ]
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
নতুন মন্তব্য করুন