টয়লেটলিপি

খেকশিয়াল এর ছবি
লিখেছেন খেকশিয়াল (তারিখ: মঙ্গল, ১৫/০৯/২০০৯ - ৩:২১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(সতর্কবানী! অ্যাটেনশন! আক্তুং! অ্যাতেন্সিও! )

রোজদার মানুষের সেহেরী-ইফতার এর মধ্যে পড়া নিষেধ, রোজা মাকরুর সমূহ সম্ভাবনা আছে

চ বর্গীয় বিখ্যাত গালিটার সাথে আমার পরিচয় একদম কাঁচা বয়সে স্কুলের টয়লেটে। স্কুলে সায়েন্স ফেয়ার চলছিল। আমি টয়লেটে গিয়ে দেখি এক জায়গায় লেখা, "অমুকরে ুদি, অমুকের বউরেও ুদি"। এইখানে অমুক আমাদের একজন স্যার। লেখাখানি যে ব্যক্তিরোষবশতঃ কোন বড় ক্লাসের বেয়াড়া বড় ভাইয়ের বাড়াবাড়ি সে বুঝতে পেরেছিলাম। আমি আরেক বড় ভাইকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম " ভাইয়া বাথরুমে দেখলাম এরকম লেখা, ুদি মানে কি? সে বলেছিল, "হে হে এইটা খারাপ কথা, জানার দরকার নাই"। আমি ভেবে নিয়েছিলাম ুদি মানে চুমা জাতীয় ব্যাপার, ঠিক চুমা নয় 'খারাপ' কোন কিছু। কিন্তু একটা ব্যাপার, স্যারকেও চুমা খাবে স্যারের বউকেও খাবে? কেম্নে কী? কেনো এই উভকামীতা? যদিও নিষ্পাপ মন তখন কামই বুঝে উঠেনি, সম উভ তো অনেক দূর।

দিনে দিনে ইঁচড়ে পাকা হলাম। অনেক কিছুই বুঝলাম। একদিন, তাও স্কুলেরই টয়লেটে, দেখি নানা বর্ণে, নানা ফন্টে স্যারদের নামে যা তা লেখা। মজা পাইলাম। কিছু এখন মনে আছে, "মনা পাগলা (জনৈক স্যারের নিক)", "টেরি মোল্লা", ইত্যাদি। এছাড়াও সেসময় নতুন নতুন কিছু লেখাও, যেমন "ডানো ডানো, োলটা ধরে টানো (ডানো'র গুড়ো দুধের সেসময়ের বিখ্যাত জিঙ্গেলটার নকল)" টাইপ বিজাতীয় সব কথাবার্তাও দেখা যেত। স্কুলের বাইরে পাবলিক টয়লেটে খুবই কম যাওয়া হত। একদিন স্কুল থেকে এক শিক্ষাসফরে যাচ্ছি ঢাকার কাছে। কোথায় ঠিক মনে নেই। ফেরীতে উঠতে হয়েছিল। বেদম বেগ চাপল ছোট বাথরুমের, গিয়ে দেখলাম আঁকা ছেলেদের আর মেয়েদের লিঙ্গ। ব্যাপারটা স্কুলের বাথরুমে মোটামুটি দেখলেও, কলেজে উঠে আরো বেশী দেখতে পেলাম। তখন ছেলেপেলেদের আঁকার হাত আরো ভাল হয়েছে। নটরডেমে আমি পড়তাম না, বন্ধুদের সাথে আড্ডাবাজি আর নানা অনুষ্ঠানে গিয়ে একই জিনিস দেখতে পাই বাথরুমের দেয়ালে। মনে আছে এক ম্যাডামকে নিয়ে ইনিয়ে বিনিয়ে মনের মাধুরী মিশিয়ে আদিরসাত্বক একটা কবিতা ছিল। তবে আমাদের রাইফেলস পাবলিকের বাথরুমের তুলনায় নটরডেমের আঁকাগুলো বেশ পরিপক্ক ছিল। সেসময় কার্টুনের কিছু স্টিকার বের হয়েছিল, "ত্যাগেই সুখ", "কিছু ফেলে গেলেন কি?" এরকম অনেক স্টিকার দেখতে পেতাম বন্ধুদের বাড়ির টয়লেটের দরজায়।

ভার্সিটিতে উঠে টয়লেটে আবিষ্কার করতে লাগলাম যতসব কিচ্ছা কাহিনী। বেশিরভাগই মেয়েদের মোবাইল নাম্বার থাকতো, আকর্ষণীয়া, নাম বেশী শোনা যায় এমন মেয়েদের। আবার অন্যকিছুও থাকতো। যেমন আই ইউ বি'র টয়লেটে দেখেছিলাম কোন ছেলের এক মেয়ের জন্য হাহুতাশ নামা, এক ছেলে আর মেয়েকে জড়িয়ে কাহিনী, আবার এরকম কাহিনীর বই আছে দাবি করে লেখা ছিল "অমুক+তমুকের প্রেম কাহিনী পাঁচ টাকা মাত্র"। তবে খুলনা ভার্সিটির টয়লেটে একটা কবিতা দেখে আমি যেরকম অবাক হয়েছিলাম আর মজা পেয়েছিলাম তার সাথে এগুলো কোনটাই ধোপে টেকে না। খুলনা ভার্সিটিতে সুব্রত পড়ত। ওদের হলে থেকেছিলাম বেশ কিছুদিন। একদিন হলের এক বাথরুমে গিয়ে দেখি এক জায়গায় লেখা এক অদ্ভুত কাব্য! আমি একবার পড়লাম , দুইবার পড়লাম, পড়ে হো হো করে হেসে উঠলাম। সবাইকে বললাম , কে লিখেছে রে এটা? সবাই বলল, "আর কে! আমাদের কবি ইমরান ভাই!" ইমরানের সাথে ওবারই আমার পরিচয় আর বন্ধুত্ব। ব্যাটা ভাল কবিতা লেখে, দিলখোলা এক ছেলে। কিন্তু ব্যাটা যে এরকম ফাজিল, তা জানতাম না। ইমরান সেই বাথরুমে লিখেছিল,
" সাধুবাবার গুহ্য হইতে বেরোয় ঐশী রব -
'ওহী সুধায় সাধন বিনা হাগন অসম্ভব' "


মন্তব্য

তানবীরা এর ছবি

হাহাহাহাহাহ
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

অনিকেত এর ছবি

জবর--!

রেশনুভা এর ছবি
রেশনুভা এর ছবি
খেকশিয়াল এর ছবি

আপ্নে দেখি দুই কিস্তিতে হাসলেন!

------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

হরেকৃষ্ন এর ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে হলে থাকতাম, তার বাথরুমের দরজায় একটা কবিতা লেখা ছিল। কবি এর ও নিজের নাম লেখেন নাই। আমিই কবিতাটির নাম দিলাম।

আধুনিক বাথরুম

উদরের ভার
কিছু কমাবার
মানসে বদনা হাতে,
শয্যা ত্যাগিয়া
ছুটিয়া চলেছি
দেইনি রাত্রি পোহাতে।

রাম রাম রাম
হেথা হেরিলাম
একি অপরূপ সীন!
ঘোর কলিকালে
একেই কি বলে
স্যানিটারি ল্যাটরিন?

কুমারীর কাঁখে
গাগরি যেমন
ছলকি ছলকি ওঠে
নিতম্ব দোলা সনে,
তেমনি হেথায় প্যান ভরা জল
না জানি কী সূখে আজি উচ্ছল
সিক্ত করিয়া বস্ত্রাঞ্চল
শিহরণ আনে মনে।

আবার কখনো হায়
এই হবে মরুপ্রায়
জলবিন্দু কলে নেই ঘোড়াও, প্যাঁচাও,
এ যেন বুড়ির স্তন
যতোই চোষ না ধন
এক ফোটা আশা নেই, যতোই পেঁচাও।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি ব্যাপক মজারু

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

দময়ন্তী এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

সাধু সাধু

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

খেকশিয়াল এর ছবি

ওরে এ এ !!! হো হো হো

------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ওরে দুষ্টু খেকুদা, অনেক মজা পাইলাম লেখাটা পড়ে। চলুক

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

দময়ন্তী এর ছবি

হো হো হো
গড়াগড়ি দিয়া হাসি
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

জব্বর

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

চ্রম !

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

কীর্তিনাশা এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

হাহাপগে! গড়াগড়ি দিয়া হাসি
-----------------------
আমার ফ্লিকার

---------------------
আমার ফ্লিকার

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

হাহাপগে! গড়াগড়ি দিয়া হাসি

-----------------------
আমার ফ্লিকার

---------------------
আমার ফ্লিকার

অতিথি লেখক এর ছবি

হি হি হি হি হি..........
লেখক : প্রীতম সাহা

দ্রোহী এর ছবি

ব্যাপক লোল....

কল্পনা আক্তার এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি =)) গড়াগড়ি দিয়া হাসি
........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা


........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা

নিবিড় এর ছবি

মজা পাইলাম


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

এনকিদু এর ছবি

" সাধুবাবার গুহ্য হইতে বেরোয় ঐশী রব -
'ওহী সুধায় সাধন বিনা হাগন অসম্ভব' "

গড়াগড়ি দিয়া হাসি


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

লেখা এবং হরেকৃষ্ঞের মন্তব্য - দুইটায়ই ৫ তারা।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আমাদের রাইফেলস পাবলিকের বাথরুমের তুলনায় নটরডেমের

বাহ !! ভাইয়ের লগে ইতিহাসে আমার তো ব্যাপক মিল !!

লেখায় মজা পাইলাম।
হরেকৃষ্ণ রেও হাততালি !!
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

জবর!

দুর্দান্ত এর ছবি

কোথায় যেন পড়েছিলাম ঃ

"here i sit
broken hearted
came to shit
but only farted"

নজমুল আলবাব এর ছবি

হাসতেই আছি

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

ওরেএএএএএ.........
......................................................................................

আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার সময় আছে,
পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করার সময় আছে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।