ইমু যুদ্ধ

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
লিখেছেন সবুজ পাহাড়ের রাজা (তারিখ: শুক্র, ২৭/০৪/২০১২ - ১২:০৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


ইমু যুদ্ধ (ছবির উৎস: গুগুল ইমেজ আর্কাইভ)

ইমু যুদ্ধ পৃথিবীর অদ্ভুত যুদ্ধগুলোর একটি।
কখনো শুনেছেন কোন আধুনিক সামরিক বাহিনী রীতিমত ঘোষণা দিয়ে কোন পাখির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে?

আজ তাহলে সেই অদ্ভুত যুদ্ধের গল্প করা হয়ে যাক। প্রথমেই ইমু পাখি সম্পর্কে একটু জেনে নিই।

ইমু পাখি:


ইমু পাখি (ছবিসূত্র: উইকিপিডিয়া)

ইমু পাখি অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় আকৃতির পাখি। উচ্চতা ও আকৃতিতে উটপাখির পরেই এর স্হান। হালকা পাখনার উড়তে না পারা এই পাখি সাধারণত: সাত ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এদের পা ও গলা অনেক লম্বা হয়। ইমুরা খুব দ্রুত দৌঁড়াতেও পারে, ঘন্টায় ৫০ কিলোমিটার। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, এক লাফে এরা দশ ফুট পর্যন্ত যেতে পারে। আচরণে এরা খুবই নিরীহ ও শান্ত প্রাণী। ইমুরা সাধারণত: দশ থেকে বিশ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। খাদ্যচক্রে এরা তৃণভোজী, তবে, নানাবিধ পোকামাকড় খেয়ে থাকে।

ইমু পাখিরা একসাথে দশ থেকে বিশটি ডিম পাড়ে। ডিমগুলো লম্বায় প্রায় ১৫০ মিলিমিটার ও উচ্চতায় ১০০ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। ওজনে একেকটি ডিম ০১ কেজি পর্যন্ত ভারী হয়ে থাকে।


ইমু পাখির ডিম (ছবিসূত্র: উইকিপিডিয়া)

ইমুরা বর্তমানে সংখ্যায় প্রায় দশ লক্ষের মত হবে। তবে, এতে খুশি হবার কিছু নেই, আগে আরো অনেক বেশি ইমু পাখি ছিল। ইমুদের কয়েকটি প্রজাতি বর্তমানে বিলুপ্ত; এর মধ্যে তাসমানিয়ান ইমু, কৃষ্ণ ইমু উল্লেখযোগ্য। এছাড়া, অস্ট্রেলিয়ার মূল-ভূখন্ডের কয়েক জায়গায় (নিউ সাউথ ওয়েলসের কিছু এলাকা, নর্থ কোস্ট এলাকা, পোর্ট স্টিফান) ইমু পাখি বিলুপ্ত প্রায়।

এক সময় ইউরোপীয় সেটলাররা ইমুর চর্বি জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করত, সে সময় এ উদ্দেশ্যে অনেক ইমু হত্যা করা হয়। ইমু রক্ষায় অস্ট্রেলিয়া সরকার আইন পাশ করেছে এবং বর্তমানে এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

ইমু পাখিরা মানুষের নিমর্মতা হতে রক্ষা পাক, ইমুরা বেঁচে থাকুক অনন্তকাল।

এবার, আসুন ইমু যুদ্ধের কাহিনী বলি।

ইমু যুদ্ধ

ঘটনাটি ১৯৩২ সালের।
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় খুব গরম পড়েছিল সে বছর। খাবার পানি আর খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছিল চারদিকে। খাদ্য আর পানির সন্ধানে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ইমু পাখিগুলো তখন দল বেঁধে লোকালয়ে হানা দিতে শুরু করে। বিশেষ করে, পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মার্চিসন ও কাম্পিয়ন জেলা এবং ওয়ালগুলান শহরের বেশ কয়েকটি খামার বাড়িতে হানা দেয় ইমুরা। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়, সাথে বেপরোয়া ইমুর আক্রমনে আহত হয় ডজনখানেক মানুষ।

ইমু পাখির আক্রমনের শিকার জেলাগুলোর মানুষরা তখন দল বেঁধে গেল পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার প্রিমিয়ার স্যার জেমস মিচেলের কাছে। ইমু সমস্যার সমাধান চাই। মিচেল প্রশাসন ইমু সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব দিল সিনেটর স্যার জর্জ পিয়েরসকে। তিনি ইমু সমস্যা সমাধানে মশা মারতে কামান দাগানোর ব্যবস্থা নিলেন। অফিসিয়ালি যুদ্ধ ঘোষনা করলেন ইমু পাখির বিরুদ্ধে।

সিনেটর স্যার জর্জ পিয়েরস-এর আদেশে খবর দেয়া হল রাজকীয় অস্ট্রেলিয়ান গোলন্দাজ বাহিনীকে।

১৯৩২ সালের অক্টোবরে মেজর মেরেডিথ কিছু গোলন্দাজ সৈন্য ও দুটো লুইস মেশিনগান আর দশ হাজার বুলেট নিয়ে বেরুলো ইমুর সন্ধানে।

প্রথম যুদ্ধ (০২ নভেম্বর, ১৯৩২ হতে ০৯ নভেম্বর, ১৯৩২)

০২ নভেম্বর, ১৯৩২ থেকে শুরু হল মূল অভিযান। প্রাথমিকভাবে একশ ইমু নিধনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।

ওইদিন কাম্পিয়ন জেলা হতে খবর আসে সেখানে পঞ্চাশটির মত ইমো ঘুর ঘুর করছে। খবর পাওয়া মাত্রই মেরেডিথ চলল সৈন্য আর আধুনিক অস্ত্র নিয়ে ভয়ংকর(!) শত্রু ইমু বধে।

দুপুরের দিকে মেরেডিথের বাহিনী পৌঁছুল কাম্পিয়ন জেলায়। কিন্তু একটা সমস্যা হয়ে গেল। ইমুগুলো পরস্পর হতে বেশ দূরে দূরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। মেশিনগান দিয়ে ইমু খতম করতে গেলে অনেক বুলেট খরচ হবে আর সাথের হালকা বন্দুকগুলোর রেন্জ ঠিক করতে গেলে ইমুগুলোর বেশ কাছে যেতে হবে। মহা চিন্তায় পড়ে গেল মেরেডিথ; গোঁফের নিচ দিয়ে গোৎ গোৎ করতে মহাশত্রু(!) ইমু বাহিনী এভাবে কোমর দুলিয়ে হেঁটে যাচ্ছে অথচ রাজকীয় গোলন্দাজ বাহিনীর অফিসার হয়েও সে কিছু করতে পারছে না।

অবশেষে মহা সিদ্ধান্ত(!) নিয়েই নিল মেজর মেরেডিথ। যা থাকে কপালে; মেশিনগান দুটোকে পজিশানে বসানো আদেশ দিল সে।

মহাশক্তিধর(!) ইমু বাহিনীর দিকে মেশিনগান দুটো পজিশন নেবার পর মেরেডিথ গলা হাঁকল, ফায়ার!

গুলির শব্দে দ্রুত এদিক ওদিক ছুটতে লাগল ইমুরা। দ্রুত গতির ইমুর স্থান পরিবর্তনের সাথে পাল্লা দিয়ে মেশিনগান দুটোকে নাড়াতে বেশ বেকায়দায় পড়তে হচ্ছিল মেরেডিথের বাহিনীকে। তারপর, বেলা শেষে দু'দফা ফায়ারিং-এ প্রায় তিন হাজার গুলি শেষ করে শত্রু বধ হল মাত্র ১৩ টি।

নজ্জা! নজ্জা! নজ্জা!

স্যার জর্জ পিয়েরস এই খবর শুনে মেরেডিথকে বার্তা পাঠালেন।
কি কর তুমি মশাই? কখনো শুনেছো তিন হাজার বুলেটে মাত্র তেরো জন শত্রু খতম? আমি কোন অজুহাত শুনতে চাই নে বাপু, যা করার জলদি কর।

বেচারা মেরেডিথ আর কি করবে। পরদিন একটা ভাল ফলের আশা করতে লাগল।

পরদিন, ০৩ নভেম্বর ঘটল এক অবাক করা ঘটনা। ইমু বাহিনী বেমালুল হাওয়া। কোথাও মহাশত্রু ইমুদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুরোটা দিন ইমুদের খুঁজেও তাদের টিকিটির সন্ধান পেল না মেরেডিথ বাহিনী।

০৪ নভেম্বর, ১৯৩২, সকালে একটা খবর শুনে দ্রুত সৈন্যদের প্রস্তুত হবার আদেশ দিল মেরেডিথ।

কাম্পিয়ন জেলার কাছেই একটি বাঁধ আছে। ওখানে অনেকগুলো ইমু ঘুরঘুর করছে। দ্রুত সৈন্য আর ভারী মেশিনগানগুলো নিয়ে মেরেডিথ এগিয়ে গেল বাঁধের দিকে। বাঁধের কাছে এসে মেরেডিথ দেখল ইমু সংখ্যা হাজারের কম হবে না। এতগুলো ইমুকে একসাথে হত্যা করতে পারবে ভেবে মেরেডিথ খুশি না হয়ে পারল না, মনে মনে হেসেই দিল পৈশাচিক হাসি।

মেরেডিথ দ্রুত মেশিনগান দুটো পজিশনে বসানোর আদেশ দিল।

মেশিনগান দুটো ঠিকমত সেট করার পর অপেক্ষা করতে লাগল মেরেডিথ। অসহায় ইমুরা রেন্জের কাছে আসা মাত্র মেরেডিথ হাঁক দিল, 'ফায়ার'।

কিন্তু একি! মাত্র কয়েকটি ইমু হত্যা করার পর জ্যাম ধরে একটি মেশিনগান বন্ধ হয়ে গেল।

অপর মেশিনগান দিয়ে ইমু বধের নিরন্তর চেষ্টা করে যাচ্ছিল মেরেডিথ বাহিনী। কিন্তু গুলির শব্দে ইমুগুলো দৌঁড়ে পালিয়ে যেতে লাগল।

সেদিনও ব্যর্থ হতে হল মেরেডিথকে। মাত্র পনেরোটি ইমু মারা পড়েছে। বুলেট খরচ হয়েছে হাজারখানেক।

০৯ নভেম্বর অভিযান সমাপ্তির আগ পর্যন্ত মেরেডিথ ও তার বাহিনী অনেক চেষ্টা করেছিল ইমু নিধনের। কিন্তু প্রত্যাশিত সফলতা(!) আসেনি। এমনকি দ্রুতগামী ইমুদের শায়েস্তা করার জন্য মেশিনগানগুলোকে মিলিটারী জিপে বসিয়ে ইমুদের ধাওয়া করা হয়েছিল কিন্তু ইমুরা এতই দ্রুত দৌড়াতে পারে আর স্থান পরিবর্তন করে যে মিলিটারী জিপে করেও ওদের তেমন কিছুই করা গেল না।

এত অভিযান চালানোর পরও ইমু বাহিনীর খামার বাড়িতে আক্রমন বন্ধ হলো না। অভিযান ব্যর্থ হল। ইমুর কাছে পরাজিত হল রাজকীয় অস্ট্রেলিয়ান গোলন্দাজ বাহিনী।

অবশেষে, ০৮ নভেম্বর, ১৯৩২-এ পার্লামেন্টে সমালোচনার কারনে ইমুর বিরুদ্ধে করা ব্যর্থ অভিযান ০৯ নভেম্বর স্যার জর্জ পিয়েরস পরিত্যাক্ত ঘোষনা করেন এবং মেরেডিথের সৈন্যবাহিনীকে ফিরে আসার আদেশ দেন।

এই অভিযান নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মেরেডিথ বলে, 'ইমুরা বুলেট দ্বারা আঘাত পাবার পরও খুব দ্রুত দৌঁড়ুতে পারে। ইমুরা যদি অস্ত্র চালাতে জানত, তাহলে, এরা পৃথিবীর অপ্রতিরোধ্য বাহিনী হত।' মেরেডিথ ইমুদের আফ্রিকান জুলু জাতির সাথে তুলনা করে বলে,' দম দম বুলেট জুলুদের দমাতে পারেনি, ইমুরা জুলুদের মতনই অপ্রতিরোধ্য।' এমনকি মেরেডিথ ইমুদের ট্যাংকের সাথেও তুলনা করে বলে, 'মেশিনগান যেমন ট্যাংকের তেমন কিছু করতে পারে না, তেমনি, ইমুদেরও কিছু করতে পারে না।'

প্রথম যুদ্ধের সার-সংক্ষেপ:

ইমু হত্যা করা হয়: ৫০ হতে সর্বোচ্চ ৫০০।
বুলেট খরচ হয়: প্রায় ৭০০০ রাউন্ড।

দ্বিতীয় যুদ্ধ (১২ নভেম্বর, ১৯৩২ হতে ১০ ডিসেম্বর, ১৯৩২)

০৮ নভেম্বর মেরেডিথের বাহিনী ব্যর্থ হয়ে চলে যায় কিন্তু ইমু বাহিনী দমে না। বরং আগের চেয়ে আরো বেশি আক্রোশে পানি ও খাবারের আশায় পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার অনেকগুলো খামারবাড়িতে হানা দেয়। লোকজন অতিষ্ট হয়ে আবার স্যার মিচেলের কাছে আবেদন জানায় ইমুদের বিরুদ্ধে পুনরায় সামরিক অভিযান পরিচালনা করার জন্য।

অবশেষে, ১২ নভেম্বর, ১৯৩২-এ খামারবাড়ির কৃষি ফসল বাচানোর অজুহাতে আবারো মেজর মেরেডিথকে পাঠানো হল পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মহাশত্রুকে ইমুকে বিনাশ করার জন্য।

১৩ নভেম্বর হতে মেরেডিথ ইমুদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে। এবারের অভিযানও ব্যর্থ হয়। প্রায় দশ হাজার রাউন্ড বুলেট খরচ হয়, হত্যা করা হয় মাত্র এক হাজার ইমুকে কিন্তু ইমুদের খামারবাড়ি হতে দূরে সরানো গেল না।

এভাবে সামরিক বাহিনী কর্তৃক নিরীহ ইমু নিধন ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টে এ নিয়ে বির্তকের ঝড় উঠে। এর প্রেক্ষিতে, ১০ ডিসেম্বর, ১৯৩২ সালে ইমু নিধন অভিযান আবার পরিত্যাক্ত করা হয়।

দুই ইমু যুদ্ধে সরাসরি প্রায় ১,৫০০ থেকে ২,০০০ ইমু প্রাণ হারায়। আহত হয়ে পরে আরো ২,০০০ থেকে ৩,০০০ ইমু মারা যায় বলে ধারণা করা হয়।

ইমু নিধনে তৃতীয় অভিযান (১৯৩৩-১৯৩৫)

রাজকীয় অস্ট্রেলিয়ান গোলন্দাজ বাহিনী ইমু নিধনে ব্যর্থ হয়ে দ্বিতীয় ইমু যুদ্ধ ত্যাগ করে। নিরীহ ইমু নিধনের চেষ্টা করার কারণে সারা বিশ্বে সমালোচিত হয় অস্ট্রেলিয়ান সরকার ও পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ান প্রশাসন।

কিন্তু খামারবাড়িতে ইমুদের হানা দেয়া বন্ধ হয় না।

১৯৩৪ সালের শুরুতে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ভুক্তভোগী খামার মালিকরা আবারো ইমুদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালানো আবেদন করে। কিন্তু এবার পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার প্রশাসন সরাসরি এর বিপক্ষে অবস্থান নেয়। ইমু সমস্যার অন্য এক সমাধান বের করে প্রশাসন। ১৯২৩ সালে ইমুদের এরকম উৎপাত দেখা দিয়েছিল। সে সময় বাউন্টি-হান্টার নিয়োগ করে ইমু সমস্যা নিয়ন্ত্রনে আনা হয়। এবারো বাউন্টি-হান্টার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয় পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া প্রশাসন।

১৯৩৪ সালে বাউন্টি-হান্টারের গুলিতে প্রাণ হারায় প্রায় ৬০,০০০ ইমু। বাউন্টি-হান্টার নিয়োগ করে এতগুলো ইমু পাখি হত্যা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয় সে সময়।

ইমু যুদ্ধ, ইমু ও মানুষের নিমর্মতা:

জর্জ পিয়েরস প্রথম ইমু যুদ্ধের সময় রাজকীয় অস্ট্রেলিয়ান গোলন্দাজ বাহিনীকে বলেন, ইমু অভিযানটি করা হচ্ছে টার্গেট প্র্যাকটিসের জন্য। এছাড়া, ইমুর চামড়া দিয়ে হালকা অশ্বারোহী বাহিনীর টুপি বানানোরও একটি পরোক্ষ উদ্দেশ্য ছিল।
মানুষ কতটা নির্মম!

মানুষ শুধু দেখল ইমু পাখি খামারবাড়ি আক্রমন করছে অথচ, মানুষরা বুঝতে চাইল না এর জন্য মানুষই দায়ী।

পৃথিবীতে একজন মানুষের যতটুকু বেঁচে থাকার অধিকার আছে, ঠিক ততটুকু বেঁচে থাকার অধিকার আছে ইমু পাখিদেরও।

১৯৯৯ সালে ইমু পাখি রক্ষার জন্য আইন পাশ হবার আগ পর্যন্ত নানাভাবে (এমনকি সরকারী সমর্থনে ও উদ্যোগে) অস্ট্রেলিয়ায় ইমু পাখি নিধন করা হয়েছে। তবে, আশার কথা, বর্তমানে ইমু পাখি রক্ষায় অস্ট্রেলিয়া সরকার অনেক কাজ করছে।

ইমু পাখিদের উপর মানুষের সকল নিমর্মতা বন্ধ হোক।

ইমুরা বেঁচে থাকুক ওদের মত করে, ওদের পরিবেশে।

অস্ট্রেলিয়ান পত্রিকায় ইমু যুদ্ধ:


০৩ নভেম্বর, ১৯৩২


১০ নভেম্বর, ১৯৩২ (বড় করে দেখুন)



১২ নভেম্বর, ১৯৩২


১৯ নভেম্বর, ১৯৩২

ইমু যুদ্ধের হোতারা:


পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার প্রিমিয়ার স্যার জেমস মিচেল।


প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সিনেটর স্যার জর্জ পিয়েরস।


মেজর মেরেডিথ

তথ্য সহায়িকা:

০১। দ্যা সানডে হ্যারাল্ড (০৫ জুলাই, ১৯৫৩)
০২। পেপার কাটিং: উৎস
০৩। উইকিপিডিয়া: ০১, ০২
০৪। Boom & Bust: Bird Stories for a Dry Country by Libby Robin, Robert Heinsohn, Leo Joseph.
০৫। Australian old Portrait and Photo Collection, Publisher: State Library of Victoria.
০৬। Flightless Birds by Clive Roots.
০৭। বিবিধ- ০১, ০২, ০৩


মন্তব্য

সজল এর ছবি

মানুষ বসতি গেড়েছে এমন প্রায় সব জায়গা থেকেই অন্য বড় প্রাণীরা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। ইউরোপে হোমো স্যাপিয়েন্সের পদচিহ্ন পড়ার কিছু পড়েই ম্যামথ সহ বিগগেম বিলুপ্ত হয়ে যায়। নিয়ান্ডারথালদের ইতিহাসের সমাপ্তিও আমাদের ইতিহাস শুরুর সাথে সাথে(কে দায়ী বলা কঠিন)। আর কয়েকশ বছর পড়ে ফার্ম অ্যানিমেল আর পেট ছাড়া অন্য কোন প্রাণী টিকে থাকবে কিনা সন্দেহ আছে।

অন্য প্রাণীদের প্রতি মানুষের নির্মমতা বন্ধ হোক। লেখায় চলুক

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

অন্য প্রাণীদের প্রতি মানুষের নির্মমতা বন্ধ হোক।

চলুক

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

তারেক অণু এর ছবি

চলুক উত্তম জাঝা!
এমন আরো লিখুন, অস্ট্রেলিয়াতেই খরগোশ নিয়ে যে তুলকালাম কাণ্ড হয়েছিল তাও লিখতে পারেন।

বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা পাখি নিউজিল্যান্ডের মোয়াদের মানুষের হাতে বিলুপ্তি ইতিহাসও সবার জানা দরকার।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

অস্ট্রেলিয়ায় খরগোশ আর নিউজিল্যান্ডের মোয়া পাখির কথা পড়েছি। মানুষের নিমর্মতার স্বাক্ষী হয়ে আছে এরা।

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

অমি_বন্যা এর ছবি

লেখাটি বেশ তথ্যভিত্তিক। অনেক নতুন তথ্য জানা গেল।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

জাবেদুল আকবর এর ছবি

চলুক চলুক
আপনার মহীশুরের বাঘ নিয়ে লেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

মহীশুরের বাঘ সিরিজের পরের পর্ব শীঘ্রই লিখব। হাসি

লাল নীল দীপাবলী এর ছবি

খুব ইনফরমেটিভ পোস্ট।
সকল প্রাণীদের প্রতি মানুষের নির্মমতা বন্ধ হোক।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

সকল প্রাণীদের প্রতি মানুষের নির্মমতা বন্ধ হোক।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

দুর্দান্ত এর ছবি

যুদ্ধে দুটি পক্ষই সক্রিয় থাকে।
লেখা পড়ে এমু যুদ্ধের চাইতে 'মাস এমুসাইড' বা 'ন্ররিশংস এমুনিধন' বলেই মনে হল।
অসি রসবোধ সবসময়ই বেশ মোটা।
---
হাতের কাছে পেলে এমুর মংস খেয়ে দেখতে পারেন। দেশি কালা-ভুনা টাইপের রেসিপিতে উটপাখি বা এমু অতুলনীয়, তবে তেল এক্টু বেশী লাগে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

ঠিক বলেছেন।

সকল প্রাণীদের প্রতি মানুষের নির্মমতা বন্ধ হোক।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

কল্যাণ এর ছবি

মন খারাপ কস্কি মমিন!

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

মন খারাপ
সকল প্রাণীদের প্রতি মানুষের নির্মমতা বন্ধ হোক।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

কতো ‌অজানারে।।। লেখা ভালো লাগলো। চলুক

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

স্বপ্নখুঁজি এর ছবি

এক্কেবারেই জানা ছিল না। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ, কি কি করে নাই ? সত্যিই বিচিত্র মানুষ।
লেখাটা খুবই ভালো লেগেছে। সাথে ইমুগুলোর জন্য একটু সুক্ষ ব্যথা অনুভব করছি।

আরও অনেক কিছু জানার আশা আপনার কাছ থেকে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

সকল প্রাণীদের প্রতি মানুষের নির্মমতা বন্ধ হোক।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।