সীমান্ত ভয়ংকর

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
লিখেছেন সবুজ পাহাড়ের রাজা (তারিখ: বুধ, ১৭/১০/২০১২ - ১:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ২০১২ সালের জানুয়ারী থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত 'ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী' (বিএসএফ) কর্তৃক 'বাংলাদেশী হত্যা'র কিছু পরিসংখ্যান:

জানুয়ারী:

◘ চাপাইনবাবগুন্জের শিবগন্জ উপজেলার সাদ্দাম হোসেনকে ০৪ জানুয়ারি ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ। ২৫ জানুয়ারি পদ্মার পাড়ে সাদ্দামের হাত-পা বাধা ক্ষত-বিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। (লিংক)

◘ যশোরের শার্সা উপজেলার রাশেদুজ্জামান ২১ জানুয়ারী বিএসএফের গুলিতে খুন হয়। (লিংক)

ফেব্রুয়ারী:

◘ দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার সাইফুল ইসলামকে ০২ ফেব্রুয়ারি বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে হত্যা করে বিএসএফ। (লিংক)

◘ দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার মিজানুর রহমানকে ১৩ ফেব্রুয়ারী বিএসএফ নির্যাতন করে হত্যা করে। মিজানুরের লাশের ডান চোখ ছিল না। ডান চোয়াল, কান, দাঁতের মাড়ি ছিল মারাত্মকভাবে থেঁতলানো। চোয়ালের গভীর ক্ষত দিয়ে মাথার মগজ বেরিয়ে আসছিল। (লিংক)

মার্চ:

◘ দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার আব্দুল জলিল ০৫ মার্চ বিএসএফ-এর ছোঁড়া ককটেলের আঘাতে আহত হয়। পরে, বিএসএফ বেয়নেট দিয়ে খুচিয়ে আব্দুল জলিলের মৃত্যু নিশ্চিত করে। (লিংক)

◘ যশোরের শার্শা উপজেলার মো. শাহাদাত হোসেনকে ২৭ মার্চ রাতে পিটিয়ে হত্যা করে বিএসএফ। (লিংক)

এপ্রিল:

◘ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার রুহুল আমীনকে ০৪ এপ্রিল ভোররাতে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। (লিংক)

◘ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার সিরাজুল ইসলামকে ১২ এপ্রিল বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ও কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে বিএসএফ। (লিংক)

◘ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার ফারুক হোসেনকে ১৪ এপ্রিল বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। (লিংক)

◘ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ওলিয়ার রহমানকে ২২ এপ্রিল বিএসএফ জওয়ানরা পিটিয়ে হত্যা করে। (লিংক)

মে:

◘ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দারুল ইসলামকে ১৬ মে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। (লিংক)

◘ দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার সাইদুর রহমান চিকুকে হাতবোমা ও গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। (লিংক)

জুন:

◘ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ফারুককে ১৪ জুন বিকেলে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। (লিংক)

জুলাই:

◘ সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার আলতাফ হোসেন ০২ জুলাই বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়। (লিংক)

◘ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার মো. রতন নামের সতেরো বছর বয়েসী এক কিশোরকে ০৩ জুলাই পিটিয়ে হত্যা করে বিএসএফ। (লিংক)

◘ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সানাউল হককে সীমান্তবর্তী জমিতে পানি দেয়ার সময় ২৫ জুলাই গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। (লিংক)

◘ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার গরু রাখাল আবু আলমকে ২৬ জুলাই বিএসএফ সদস্যরা পিটিয়ে হত্যা করে। পরে লাশ সানিয়াজান নদীতে ফেলে দেয় বিএসএফ। আবু আলমের মুখমন্ডল হাতুড়ি দিয়ে থেতলে ক্ষতবিক্ষত করে দেয় বিএসএফ। (লিংক)

আগস্ট:

◘ ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার জাহিদুল ইসলাম লাল্টুকে ০৬ আগস্ট সকালে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। (লিং)

◘ সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আতাউর রহমানকে ১২ আগস্ট সকালে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। (লিংক)

◘ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার জাহাঙ্গীর হোসেন নামের এক রাখালকে ২০ আগস্ট বিএসএফ সীমান্ত থেকে ক্যাম্পে ধরে নিয়ে যায়। ক্যাম্পে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় জাহাঙ্গীরকে। ২১ আগস্ট বিএসএফ সদস্যরা জাহাঙ্গীরের লাশ চেনাকাটা নদীতে ফেলে দেয়। (লিংক)

◘ দিনাজপুর জেলার বিরামপুরের আবুল কাশেমেকে ২৬ আগস্ট সীমান্ত পার হবার সময় বিএসএফ হাতবোমা ছুঁড়ে হত্যা করে। পরে লাশ সীমান্তের কাছাকাছি এক ডোবায় ফেলে দেয় বিএসএফ। (লিংক)

সেপ্টেম্বর:

◘ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার মো. হাজিরুলকে পহেলা সেপ্টেম্বর ভোররাতে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। (লিংক)

◘ লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাবুল হোসেনকে পহেলা সেপ্টেম্বর রাতে বিএসএফ গুলি করে হত্যা করে। (লিংক)

◘ যশোরের বেনাপোলের পুটুখালী সীমান্তে ১৩ সেপ্টেম্বর আলমগীর নামে এক গরু ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা করে বিএসএফ। [আসক/এমআরটি]

◘ চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদার চোটবলদিয়া সীমান্তে ১৪ সেপ্টেম্বর বিপ্লবকে পিটিয়ে হত্যা করে বিএসএফ। [আসক/এমআরটি]

◘ সাতক্ষীরা সীমান্তে ২১ সেপ্টেম্বর নজরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। [আসক/এমআরটি]

◘ দিনাজপুরের বিরল উপজেলার এনায়েতপুর সীমান্তে ২৪ সেপ্টেম্বর বিএসএফের গুলিতে হোসেন আলী নামে একজন খুন হয়। [আসক/এমআরটি]

◘ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে ৩০ সেপ্টেম্বর হান্নান নামে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করে। [আসক/এমআরটি]

অক্টোবর:

◘ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার এনামুল ইসলামকে ০২ অক্টোবর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে বিএসএফ। (লিংক)

◘ রাজশাহীর চর মাঝারদিয়াড়ে বিএসএফের গুলিতে ০৭ অক্টোবর সুজন আলী (১৬) নামে এক কিশোর নিহত হয়। (লিং)

◘ কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার মহিষকুন্ডি মাঠপাড়া সীমান্তে আলম হোসেকে ১১ অক্টোবর কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে বিএসএফ সদস্যরা। (লিংক)

◘ ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার আব্দুল খালেক ১৩ অক্টোবর বিএসএফের গুলিতে খুন হয়। (লিংক)

উপরের খবরগুলো হতে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশ ভারত-সীমান্তে জানুয়ারি হতে অক্টোবর, ২০১২ পর্যন্ত খুন হওয়া মোট বাংলাদেশীর সংখ্যা ৩২ জন।

সীমান্তে বিএসএফের হাতে নাজেহাল, শারীরিকভাবে নিপীড়ণের শিকার, গুলিতে আহত, অপহরণের হিসাব করলে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশী নিপীড়ণের সংখ্যাটা কয়েক শ'তে যেয়ে ঠেকবে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন:

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিএসএফ গুলির ব্যবহারসহ পিটিয়ে, কুপিয়ে, বেয়নেট চার্জ করে মানুষ হত্যার মতো নৃশংসতার কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। গত দশ বছরে এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশী হত্যা করেছে বিএসএফ। প্রতিবেদনগুলোতে আরো বলা হয়, বারবার আশ্বাস দেয়া সত্বেও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ করছে না। কোন বিএসএফ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়নি।

লিংক- ০১, ০২, ০৩

সেন্টার ফর মিডিয়া রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং এমআরটি-এর প্রতিবেদন:(লিংক)

সেপ্টেম্বর মাসে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফ সাত বাংলাদেশীকে হত্যা করে। এর মধ্যে গুলি হত্যা করা হয় তিনজনকে এবং পিটিয়ে হত্যা করা হয় চারজনকে। পুলিশের এক এএসআইসহ অন্তত ২৭ জনকে বিএসএফ ধরে নিয়ে যায়।

আগস্ট মাসে বিএসএফ চারজনকে হত্যা করে। এমআরটির মতে, ২০১২ সালে এখন পর্যন্ত বিএসএফের হাতে ৩৩ জন বাংলাদেশী খুন হয়।

মানবাধিকার সংগঠন অধিকার-এর প্রতিবেদন: (লিংক: , , )

২০০০ সাল থেকে ২০১১ পর্যন্ত বিএসএফের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ৯২৩ জন, অপহরণের শিকার ৯৩৩, নিখোঁজ ১৮৬ ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১৫ জন বাংলাদেশী নারী।

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিএসএফের হাতে কমপক্ষে ২৩ জন বাংলাদেশী খুন হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)-এর প্রতিবেদন: (লিংক)

২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিএসএফের গুলিতে ও নির্যাতনে নিহত হয়েছে ১৯ জন, আহত হয়েছে ৫৬ জন এবং অপহরণের শিকার হয়েছে ৫৩ জন।

সীমান্তে নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে ‘সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ’ নেওয়ার আশ্বাস দেয়ার পরও বিএসএফের গুলি বর্ষণ আর নির্যাতন বন্ধ না হয়ে বরং তা অতীতের মতো অব্যাহত আছে।

ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের মৃত্যু নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর বিএসএফের ট্রিগারের শিকার হচ্ছেন কিংবা নির্মম নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন যে বাংলাদেশি নাগরিকরা তারা সবসময় নিরস্ত্র অবস্থায় ছিল

দ্য ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস, বাংলাদেশ বলছে-

গত এক দশক ধরে প্রতি চারদিনে গড়ে একজন বাংলাদেশীকে সীমান্তে হত্যা করছে ভারত। (লিংক)

দ্য হিন্দু বলছে-

আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ভারতের বিএসএফ গত দশ বছরে এক হাজারের বেশি মানুষ হত্যা করেছে। (লিংক)

ইইউ পার্লামেন্টের সদস্য জিন লাম্বার্ট বলেন-

অনেকদিন ধরে চলতে থাকা ভারতীয় বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা কোনভাবেই মেনে নেয়া যাই না, এর প্রতিকার দরকার। (লিংক)

দ্যা টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইউএনএইচসিআর, দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, গ্লোবাল পোস্ট-এর প্রতিবেদনে বারবার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা উঠে এসেছে।

সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধে ভারতের আশ্বাস

♦ ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১২ তারিখে ঢাকায় বিজিবি-বিএসএফের সম্মেলনে বিএসএফ মহাপরিচালক বনসাল সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার অঙ্গীকার করেন। অথচ, এই ঘোষণার ২৪ ঘন্টা না যেতে বিএসএফ বেয়নেটের আঘাতে ও পিটিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে হান্নান নামে একজনকে হত্যা করে। অক্টোবর মাসে এপর্যন্ত বিএসএফের হাতে খুন হয়েছে চারজন। (লিংক)

♦ ২০১১ সালের ৩০ জুলাই ভারতীয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম ঢাকা সফরকালে সীমান্তে নিরীহ ব্যক্তির ওপর আর গুলি চালানো হবে না বলে আশ্বাস দেয়।

♦ ২০১১ সালের ১৭ জুলাই জামালপুরে অনুষ্ঠিত দুই দেশের কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকেও সীমান্তে গুলি না চালানোর প্রতিশ্রুতি দেয় ভারত।

♦ ২০১১ সালের ০৮ জুলাই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণা একই প্রতিশ্রুতি দেন।

♦ ২০১১ সালের ০৭ মে বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি এম হামিদ আনসারি সীমান্তে হত্যা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেন।

♦ ২০১১ সালের মে মাসে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব নিরুপমা রাও সীমান্তে হত্যা বন্ধের কথা বলেন।

♦ ২০১১ সালের মার্চ মাসে ভারত সরকার বিএসএফকে সীমান্তে রাবার বুলেট ব্যবহার করার নির্দেশ দেয়।

এই আদেশ দেয়ার পরও কি করে বিএসএফ সীমান্তে গুলি ছুঁড়ে? নাকি ভারতীয় সরকারের আদেশটি ছিল লোক দেখানো? ভারত সরকার বিএসএফকে প্রাণঘাতী আগ্নেয়াস্ত্র সরবরাহ না করলে ওরা কোথা থেকে এসব ব্যবহার করে?

♦ ২০১১ সালের ২৮ জানুয়ারি বিএসএফের স্পেশাল মহাপরিচালক প্রণয় সাহা হিলি চেকপোস্ট পরিদর্শনে এসে একই প্রতিশ্রুতি দেয়।

♦ ২০১১ সালের ২০ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত দুই দেশের স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকেও ভারতের স্বরাষ্ট্র সচিবের পক্ষ থেকে সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা বন্ধের আশ্বাস দেয়া হয়েছিল।

♦ ২০১১ সালের ২০ জানুয়ারি ঢাকায় দু-দেশের স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কিশোরী ফেলানী হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। তখন ভারতীয় স্বরাষ্ট্র সচিব ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, হত্যাকাণ্ড বন্ধে বিএসএফ প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার বন্ধ করবে।

♦ ২০১১ সালের জানুয়ারিতে ভারতীয় কতৃপক্ষ থেকে বলা হয় সীমান্তে অবৈধ পারাপার ঠেকাতে বিএসএফ রাবার বুলেট ব্যবহার করবে।

♦ ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ৩১ ও ৩২তম বিডিআর ও বিএসএফ এর মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠকে বিএসএফ মহাপরিচালক প্রতিশ্রুতি দেন সীমান্তে আর কোনও বাংলাদেশিকে হত্যা করা হবে না।

♦ ২০০৯ সালের জুলাইয়ে ঢাকায় বিডিআর সদর দফতর পিলখানায় সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মেলনে বিএসএফের ডিজির কাছে বিজিবির ডিজি বিএসএফের সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যার প্রতিবাদ জানান। বিএসএফ প্রধান সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধের আশ্বাস দেয়।

♦ ২০১০ সালের ১০ থেকে ১৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে রাষ্ট্রীয় সফর করেন। এসময় সীমান্ত প্রসঙ্গে মনমোহন সিং প্রতিশ্রুতি দেন, বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধে কার্যকরী উদ্যোগ নেবে ভারত সরকার।

♦ ঢাকা সফরে এসে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম প্রতিশ্রুতি দেন একইভাবে। তিনি বলেন, সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিএসএফকে কঠোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সীমান্তে হত্যাকান্ড নিয়ে বাণী অমৃত:

☻ বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএসএফের প্রধান বনসাল বলে, 'বাংলাদেশ সীমান্তে বিএসএফের গুলি চালানো বন্ধ হবে না।' (লিংক)


বিএসএফের প্রধান বনসাল

☻ ১৫ অক্টোবর, ২০১২ তারিখে ভারতের স্বরাষ্ট্র-সচিব আর কে সিং বলে, 'সীমান্তে বিএসএফ আক্রান্ত হয় বলেই গুলি চালায়। যাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় তারা সবাই চোরাকারবারি'। (লিংক)

সীমান্তে বিএসএফকে বাংলাদেশীরা আক্রমন করেছে এরকম ঘটনা খুব বিরল। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ইইউ, অধিকার, আসক, এমআরটি, বিভিন্ন সংগঠন ও পত্রিকার রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে, 'বাংলাদেশীরা বিএসএফকে আক্রমন করেছে, এধরণের ঘটনা হাতেগোনা কয়েকটি।'

চোরাকারবারিরা আইনের উর্ধ্বে নয় যে ওদের কোন প্রকার গ্রেফতার, বিচার ছাড়া মেরে ফেলা যাবে। সীমান্তে চোরাকারবারিদের কি করা হবে, তা নিয়ে সুস্পষ্ট আইন আছে, বিধি-বিধান আছে। চোরাকারবারি বলে কাউকে হত্যা করলে, তা বৈধ হয়ে যায় না।

এটি প্রমাণিত সত্য যে, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ বাংলাদেশীদের দ্বারা কোন প্রকার আক্রমনের শিকার না হয়েও শুধুমাত্র অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারের জন্য বাংলাদেশীদের হত্যা করে, যা সম্পূর্ণরূপে বেআইনী ও অমানবিক। শুধু তাই না, বিএসএফ বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে বাংলাদেশীদের আক্রমন, লুটপাট, হত্যা ও নিপীড়ণ করেছে। শুধুমাত্র সীমান্তের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে থাকার জন্যও বিএসএফ বাংলাদেশীদের হত্যা করেছে।

☻ ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১২, দিল্লীতে সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা বিষয়ে আলোচনা করেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ও ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম।

আলোচনায় ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বলে, গত আট মাসে আত্মরক্ষা(?) করতে যেয়ে বিএসএফ মাত্র চারজন বাংলাদেশী হত্যা করেছে। (লিংক)

বুঝলাম পি চিদাম্বরম ভারতীয় মন্ত্রী, সে মিথ্যা বলতেই পারে। কিন্তু মাননীয়া সাহারা খাতুন, আপনি তো সেখানে উপস্থিত ছিলেন, আপনি মাত্র চারজন খুন হবার ও আত্মরক্ষার্থে বিএসএফের গুলি চালানোর এই মিথ্যাগুলোর কোন প্রতিবাদ করলেন না কেন?

যেখানে মাসে গড়ে দু থেকে তিনজন করে খুন হচ্ছে বিএসএফের হাতে, সেখানে আট মাসে মাত্র চারজন খুন হবার মত মিথ্যার প্রতিবাদ করা উচিত ছিল-না কি?
সীমান্তে বিএসএফ আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়, এটা অনেক বড় মিথ্যাচার।


ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম

☻ স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের মুখপাত্র সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, 'সীমান্তে যা হচ্ছে, তা নিয়ে রাষ্ট্র খুব বেশি চিন্তিত নই। প্রতিনিয়ত ঘটনাগুলো ঘটছে। এসব অতীতে ঘটেছে, ভবিষ্যতেও ঘটবে। এটা নিয়ে রাষ্ট্র খুব বেশি চিন্তিত নয়। সেখানে গরু চুরি, চোরাকারবারী, অবৈধভাবে সীমান্ত চলাচল, মাদক ব্যবসায় দুই দেশের বর্ডারে এগুলো হয়ে থাকে সবসময়; এগুলোকে তিলকে তাল করার কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি করি না'। (লিংক)

মাননীয় মন্ত্রী,
একজন মানুষ, সে 'গরুচোর, অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারকারী, মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারী' যেই হোক, তাকে বিনা বিচারে অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারের জন্য হত্যা করা বা, নিপীড়ণ করা যায় কি?
আইন-আদালত, সভ্য উপায়-এই শব্দগুলোর প্রকৃত ব্যবহার ফিকে হয়ে আসছে কি?

☺ ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দাবী, সীমান্তে আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুড়ে বিএসএফ। বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ফজলুর রহমান এপ্রসঙ্গে বলেন, 'বাংলাদেশে দাঁড়িয়ে পি চিদাম্বরম চরম অসত্য কথা বলেছেন। বিএসএফ সদস্যদের ওপর আক্রমণ হলেই কেবল আত্মরক্ষার্থে জন্য গুলি চালাবে। এটি আসলে কথার কথা। এর মানে, বাংলাদেশিরা কি বিএসএফ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করে? আমার জানামতে কখনোই বাংলাদেশিরা বিএসএফ সদস্যদের ওপর আক্রমণ করেনি। বিএসএফই আক্রমণ করে। আর তারা যদি সত্যিকার অর্থে সদিচ্ছা নিয়ে আশ্বাস দিত, তাহলে তা বাস্তবায়ন হতো।'
.
.
.
সীমান্তের ইস্যুতে বর্তমান বাংলাদেশ সরকার আগের সরকারগুলোর মতো দুর্বল পররাষ্ট্রনীতি বজায় রেখেছে। আমাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি থেকে ভালো কিছু আশা করতে পারি না।

পৃথিবীর কোনও দেশ তার সীমান্তে পাশ্ববর্তীদেশের মানুষদের এভাবে গণহারে হত্যা করে না। কিন্তু ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ আজ ৪২ বছর ধরে এই বিরল দৃষ্টান্তটি রেখে চলেছে।

ভারত বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যা ও নির্যাতন বন্ধ করেনি বরং নিরপরাধ বাংলাদেশিদের হত্যা করতে বিএসএফের নিষ্ঠুরতা বেড়েই চলেছে। হত্যার ধরনে এসেছে পরিবর্তন, বর্বরতা; আগে গুলি করে হত্যা করত, এখন মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করে, কুপিয়ে, বেয়নেট চার্জ করে, ছুরিকাঘাত করে, হাতবোমা মেরে বাংলাদেশী হত্যা করছে বিএসএফ। বিএসএফ বাংলাদেশের ভূখণ্ডে ঢুকেও বাংলাদেশীদের ধরে নিয়ে যায়, নির্যাতন ও হত্যা করে।

ভারত সরকার বলছে, তারা বিএসএফকে আদেশ দিয়েছে, যাতে তারা সীমান্তে আর কোন বাংলাদেশীকে হত্যা বা, নিপীড়ণ না করে। তারপরও বিএসএফ কিভাবে ভারত সরকারের আদেশ অমান্য করে সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা করে। সামরিক বা, আধা-সামরিক বাহিনীর চেইন অব কমান্ড বলে একটা বিষয় আছে। বিএসএফের মত বাহিনীর লোকেরা চাইলেই নিজেদের ইচ্ছে মত কাজ করতে পারে না। ব্যর্থ রাষ্ট্রের একটি উপাদান হল, সামরিক/আধা-সামরিক বাহিনী নিজ ইচ্ছায় চলে, সরকারী আদেশ অমান্য করে।
ভারত সরকারের মতে, ভারত সরকার বিএসএফকে সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা ও নিপীড়ণ বন্ধে আদেশ দিয়েছে। তাহলে, বাস্তব পরিস্থিতি দাঁড়ায় ভারত সরকারের আদেশ অমান্য করে বিএসএফ সীমান্তে বাংলাদেশীদের গণহত্যা করছে। তা, ভারত কবে থেকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হল যে, এর সামরিক বাহিনীগুলো নিজ ইচ্ছায় চলে?

আসল সত্যটি হল, ভারত সরকার শুধু মুখেই বলছে যে, বিএসএফ সীমান্তে আর কোন বাংলাদেশী হত্যা ও নিপীড়ণ করবে না। বাস্তবে, বিএসএফ সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা ও নিপীড়ণের মাধ্যমে ভারত সরকারের আদেশ পালন করছে।

ভারত সরকার বারবার বলছে, সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধ করা হবে। তারপরও, বিএসএফ কিভাবে সীমান্তে মানুষ হত্যা করে? বাস্তবে ভারত সরকার বা, বিএসএফ সীমান্তে বাংলাদেশীদের গুলি করে হত্যা করা, সীমান্ত থেকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করার নীতি থেকে একবিন্দুও সরে আসেনি।

বিএসএফ ভারত সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান। বিএসএফ সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যার মাধ্যমে ভারত সরকারের আদেশ লঙ্ঘন করছে। ভারত সরকার বিএসএফের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?

তাহলে তো সহজেই এই উপসংহারে আসা যায়, ভারত সরকার সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা বন্ধের ব্যাপারে যা বলেছে সব মিথ্যা। ভারত সরকার আসলে বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশী অবৈধ সীমান্ত পারাপারকারীদের ব্যাপারে আইন ও মানবাধিকারের তোয়াক্কা না করে চুড়ান্ত সমাধানের [Final Solution, Extermination] পথ বেছে নিয়েছে।

ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী (বিএসএফ) ৪২ বছরে কম করে হলেও তিন থেকে চার হাজার বাংলাদেশী হত্যা করেছে। আমরা, বাংলাদেশীদের সময় এসেছে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক প্রতিনিয়ত বাংলাদেশী খুন হবার ঘটনাটিকে 'গণহত্যা' বলে ঘোষণা করার।
.
.
.
সীমান্ত ভয়ংকর : একজন ফেলানী ; ভারতের অসহিষ্ঞু আচরণ , আইন ও মানবাধিকার লংঘন
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ-এর তান্ডব ও কিছু কথা
ফেলানীর মর্মান্তিক আরো কিছু ছবি.....
.
.
.


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর কথা শুনে মনে হল ব্যাক্তি নিরপত্তার দায়িত্ব কেবল ওই লোকটিরই, সরকারের কোন দায়ভার বা জবাবদিহিতা নেই । দয়াকরে সব বিষয়কে "তিলকে তাল করা হয়" বলে এড়িয়ে যাবেন না। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন না পারলে সে ব্যর্থতার দায়ভার অকপটে স্বীকার করুন। সব কাজেই যে আপনি সফল হতে পারবেন তা কিন্তু না তাই বলে ব্যর্থতার দায়ভার নিতে দোষ কি?

ধন্যবাদ রাজা ভাই,তথ্যবহুল লেখাটির জন্যে। ভালো থাকবেন।

অমি_বন্যা

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন না পারলে সে ব্যর্থতার দায়ভার অকপটে স্বীকার করুন। সব কাজেই যে আপনি সফল হতে পারবেন তা কিন্তু না তাই বলে ব্যর্থতার দায়ভার নিতে দোষ কি?

চলুক চলুক চলুক

মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

মেঘা এর ছবি

আওয়ামী সরকারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ভারতকে দরকারে অদরকারে নিজের ক্ষতি করেও তেল মারে। সাহারা খাতুন নিজের দেশের কথা না ভেবেই জ্বি আপনি যা বলেন তাই ঠিক বলে সব মেনে নিয়ে চলে এসেছে। আমাদের কোন কিছু কেন হয় না? কারণ আমরা আমাদের অধিকার জোর গলায় দাবী করে আদায় করতে পারি না। যেখানে আমাদের কোন ভুল নাই সেখানে আরেকটা বড় দেশের হুমকী শুনে কেন চুপ করে থাকবো?

সব সময় একটা লিডারের খুব অভাব অনুভব করেছি। একজন আপোষহীন নেতা যে শুধু দেশের কথা ভাববে। দলের অথবা নিজের স্বার্থের কথা না শুধু দেশের কথা ভাবা একটা মানুষের ভীষণ দরকার!

লেখাটার জন্য ধন্যবাদ রাজা ভাই। আমাদের নিজেদের সচেতনতাই হয়ত পারে দেশের জন্য কিছু করতে।

--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

সব সময় একটা লিডারের খুব অভাব অনুভব করেছি। একজন আপোষহীন নেতা যে শুধু দেশের কথা ভাববে। দলের অথবা নিজের স্বার্থের কথা না শুধু দেশের কথা ভাবা একটা মানুষের ভীষণ দরকার!

চলুক চলুক চলুক

মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

সব সময় একটা লিডারের খুব অভাব অনুভব করেছি। একজন আপোষহীন নেতা যে শুধু দেশের কথা ভাববে। দলের অথবা নিজের স্বার্থের কথা না শুধু দেশের কথা ভাবা একটা মানুষের ভীষণ দরকার!

একদম সহমত। চলুক

আউটসাইডার এর ছবি

লেখায় চলুক

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

সীমান্তে নিপীড়ন বন্ধ হোক!

তামান্না ঝুমু এর ছবি

দু'দেশেরই সীমান্ত। কিন্তু সীমান্তে শুধু দরিদ্র হতভাগ্য বাংলাদেশীরাই কেন খুন হয়? কোনো ভারতীয় খুন হতে ত কখনো শুনিনি। এদের প্রাণের কি কোনো মূল্য নেই? আর কতদিন চলবে এভেবে?
তামান্না ঝুমু

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

যতদিন আমাদের প্রতিনিধিরা নতজানু হয়ে থাকবে, যতদিন আমরা নিজেদের জীবিকার ব্যবস্থা স্বদেশে করতে না পারছি, ততদিন এর সুরাহ হবে বলে মনে হয় না।

সচলায়তনে আপনাকে দেখে ভাল লাগছে ঝুমু আপা।
মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

কাজি মামুন এর ছবি

বঙ্গবন্ধুর যে মেরুদণ্ড ছিল, তা শেখ হাসিনার নেই। বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধে সমর্থনের জন্য ইন্দিরা গান্ধিকে ভূয়সী প্রশংসা করলেও একই সঙ্গে ভারতীয় বাহিনীর ফিরে যাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিতে পারতেন। মজার ব্যাপার হল, এই স্বাধীনচেতা মনোভাবের কারণে বঙ্গবন্ধুর সাথে ইন্দিরার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে কিন্তু কখনোই ফাটল ধরেনি। নিঃশর্ত আনুগত্য বা বশ্যতা সেবাদাস বানাতে পারে, বন্ধুত্ব নয়। সত্যিকারের বন্ধুত্ব তৈরি হয় পারষ্পরিক বিশ্বাস, আস্থা আর সমর্থনের মাধ্যমে। বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে দুই তরফা দাখিলা পদ্ধতি খুবই জরুরি এবং কার্যকরী, কি বলেন, রাজা ভাই?

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

নিঃশর্ত আনুগত্য বা বশ্যতা সেবাদাস বানাতে পারে, বন্ধুত্ব নয়। সত্যিকারের বন্ধুত্ব তৈরি হয় পারষ্পরিক বিশ্বাস, আস্থা আর সমর্থনের মাধ্যমে। বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে দুই তরফা দাখিলা পদ্ধতি খুবই জরুরি এবং কার্যকরী।

সহমত।

মতামতের জন্য ধন্যবাদ।

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

নিঃশর্ত আনুগত্য বা বশ্যতা সেবাদাস বানাতে পারে, বন্ধুত্ব নয়। সত্যিকারের বন্ধুত্ব তৈরি হয় পারষ্পরিক বিশ্বাস, আস্থা আর সমর্থনের মাধ্যমে। বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে দুই তরফা দাখিলা পদ্ধতি খুবই জরুরি এবং কার্যকরী

খুব সুন্দর একটি কথা, সহমত। চলুক

ইমাম এর ছবি

কৌস্তূভ দা ( যার যেকোনো লেখা মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে পড়ি ) এর একটা প্রতিক্ক্রিয়া মন্তব্য আশা করছি । মন খারাপ

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার মন্তব্যের প্রতি রেফার করেই একজন এই পোস্টটার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। নিচে প্রতিক্রিয়া দিয়েছি। প্রশংসার জন্য ধন্যবাদ।

ইমাম এর ছবি

ধন্যবাদ চলুক

হাসান মোরশেদ এর ছবি

বিএসএফ গনহত্যা করছে, এর প্রতিবাদ শুধু নয় প্রতিরোধ দরকার।
ঠিকাছে, কিন্তু আমরা আমাদের নাগরিকদের খুন হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য কী ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমি খুব কাছ থেকে দাঁড়িয়ে দেখেছি কী করে আমাদের মানুষ ভারতীয় সীমানার অনেক ভিতরে ঢুকে, মেঘালয় পাহাড়ের উপর থেকে ঠেলে ফেলা দেয়া গরু টেনে হিঁচড়ে আমাদের সীমানায় নিয়ে আসে- আনার পর কীভাবে আমাদের সীমান্ত রক্ষীরা এগুলোকে বৈধতা দিয়ে দেশের ভিতরে পাঠায়। একেবারে ছবি সহ আছে, কৌশলগত কারনে প্রকাশ করবোনা।
আমাদের সরকার সীমান্ত এলাকার মানুষকে ঠেলে দেয় নৃশংস বর্বর বিএসএফ এর গুলীর শিকার হতে। ভারত যেখানে উদ্যোগ নিয়ে নো ম্যান্স লেন্ড এর কাছাকাছি অংশ থেকে তাদের জনবসতি সরিয়ে নেয়, সেখানে আমরা গিয়ে নো ম্যান্সে বাড়ী তুলি আর ভারতের পিলারের ভেতর আমাদের কাপড় শুকাতে দেই।
শুধু বিএসএফ/ ভারতকে ধুয়ে দিলেই হবেনা- প্রতিরোধকের ব্যবস্থা করতে হবে। সীমান্ত এলাকার মানুষের জীবন যাত্রার মানোন্নয়ন যতোদিন না হচ্ছে কমবেশী মাত্রায় এসব ঘটতেই থাকবে।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

মতামতের জন্য ধন্যবাদ হাসান ভাই।

শুধু বিএসএফ/ ভারতকে ধুয়ে দিলেই হবেনা- প্রতিরোধকের ব্যবস্থা করতে হবে।

সীমান্তে যেসব বাংলাদেশী বিএসএফের হত্যার শিকার হয়, তারা বাধ্য হয়েই পেটের দায়ে অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার হয় এবং অবৈধ কাজ করে।

এখানে, আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থা বা, সমাজকাঠামোর ব্যর্থতা হচ্ছে আমরা তাদের পেটের দায় মিটানোর মত কোন কিছু বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সৃষ্টি বা, দাঁড় করতে পারছি না।

বাংলাদেশীদের অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপার এবং এর সাথে জড়িত অবৈধ কর্মকান্ডের জন্য বিএসএফ সর্বোচ্চ গ্রেফতার করতে পারে এবং আইনের বিধিবিধানের আওতায় থেকে জিগ্ঞাসাবাদ করতে পারে। হত্যা করা তো দূরের কথা কোন প্রকার নির্যাতন, নিপীড়ন করতে পারার কথা না। অন্তত: আইন তাই বলে, মানবাধিকারের কথা নাইবা আর তুললাম।

বাংলাদেশ সরকার বা, বাংলাদেশ 'সীমান্ত অবৈধভাবে পারাপারকারী বাংলাদেশীদের' জন্য দেশের অভ্যন্তরে জীবিকা সৃষ্টি করতে পারুক বা, না পারুক, অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারকারী বাংলাদেশীদের কোনভাবেই হত্যা বা, নিপীড়ন করতে পারে না বিএসএফ। বিএসএফ যা করতে পারে তা হল, গ্রেফতার করতে পারে, প্রাথমিক জিগ্ঞাসাবাদ ও তল্লাসী করতে পারে এবং ভারতীয় আইন অনুসারে 'আইন প্রয়োগকারী সংস্থার' হাতে তুলে দিতে পারে। কিন্তু কোনভাবেই হত্যা বা, নিপীড়ন করতে পারে না। যদি করে, তাহলে তা 'অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারকারী বাংলাদেশীদের' ইস্যুতে ভারতের সিদ্ধান্ত 'চুড়ান্ত সমাধান (Extermination)' এর মাঝে পড়ে।

অবশ্যই বাংলাদেশ সরকারের এবং বাংলাদেশীদের উচিত এসব অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারকারীদের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা দেশের ভিতরেই করা। কিন্তু এর প্রতিকার হিসেবে বিএসএফের বাংলাদেশী খুন ও নিপীড়ন কোনভাবে মেনে নেয়া যায় না।
তাহলে, আইন ও মানবাধিকার বলে যে শব্দ, নীতি আছে, তার কি হবে?

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ধরলাম বিএসএফ চলমান নৃশংসতা বর্বরতার বদলে কোন জাদুর বদলে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার শব্দ দুটি শিখে গেলো তাহলে কী হবে? বাঙ্গালদেশের মানুষ খুনের বদলে ভারতের জেলে পঁচবে- তাইতো?
আমরা ও যে সমস্যার একটা অংশ এটা মেনে নিয়ে আমাদের মানুষ যেনো অবৈধ পথে অন্য দেশে না ঢুকে সেই ব্যবস্থাটা করা জরুরী

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

আমাদের মানুষ যেনো অবৈধ পথে অন্য দেশে না ঢুকে সেই ব্যবস্থাটা করা জরুরী

চলুক চলুক চলুক
বাংলাদেশীদের এবং বাংলাদেশ সরকারের অবশ্যই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসব অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারকারী বাংলাদেশীদের জন্য জীবিকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

ফাহিম হাসান এর ছবি

আমরা ও যে সমস্যার একটা অংশ এটা মেনে নিয়ে আমাদের মানুষ যেনো অবৈধ পথে অন্য দেশে না ঢুকে সেই ব্যবস্থাটা করা জরুরী

চলুক

ধুসর গোধূলি এর ছবি

দাদা, আপনি কেবল দুই হাজার চারশ ঊনত্রিশ মাইল দৈর্ঘ্যের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের একটা পয়েন্টের কথা বলছেন। দক্ষিণ আর উত্তর বঙ্গের চিত্র সর্বাংশে আপনার দেখা সীমান্তের সাথে সবসময় সামঞ্জস্যপূর্ণ না। আমাদের মানুষ ভারতে গরু আনতে যায়, কিংবা ভারতের পিলারের উপর কাপড় শুকাতে দেয় বলেই বিএসএফ'এর গুলি খেয়ে মরে- অবস্থাটা এমন না।

মানলাম, আমাদের সরকার সীমান্তের মানুষজনকে নোম্যান্স ল্যান্ডে ঘরবাড়ি তোলা থেকে সরিয়ে আনছে না। কিন্তু বিএসএফ যখন নোম্যান্স ল্যান্ডে দীর্ঘ পরিখা খনন করে, তখন সচেতন ভারত সরকার কী করে?

গরু চোরাচালান বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে একটা ওপেন সিক্রেট। বিএসএফ দেশপ্রেমে বলীয়ান হয়ে, নিজেদের গোমাতার সম্ভ্রম রক্ষার্থে বাংলাদেশী চোরাকারবারীদের গুলি করে অবস্থাটাও তো এমন না। প্রকৃত অবস্থা হলো, এই চালানে নিজেদের দাবীকৃত বখরার এদিক-ওদিক হলেই তারা হাতের নিশানা প্র্যাকটিস করে বাংলাদেশীদের উপর। খুব বেশি ঘাটাঘাটি না করে একেবারে টাটকা একটা, গত ৮ অক্টোবরের খবর থেকেই একটা লাইন এখানে উদ্বৃত করছি- "এ সময় চোরাচালানের টাকাপয়সা নিয়ে বিএসএফ’র সঙ্গে তাদের কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে বিএসএফ’র গুলিতে সুজন নিহত হন। অন্যরা পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়।"

কী মনে হয় খবরটা পড়ে? বিএসএফ সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে গুলি করেছে, নাকি চোরাচালানে সম্পৃক্ত থেকে নিজের দাবীকৃত বখরা না পেয়ে?

আমাদের সীমান্তরক্ষীরা ধোয়া তুলসীপাতা অবশ্যই না। কিন্তু প্রশ্নটা এখানে তুলসীপাতার না। প্রশ্নটা মানুষের জীবনের। বিএসএফ যখন ভারতীয় খাসিয়াদেরকে বৈধতা দিয়ে, সশস্ত্র পাহারায় বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে বাড়িঘর বানায়, বাংলাদেশীদের ক্ষেতের ধান কেটে নিয়ে যায়, তখনও আমাদের সীমান্তরক্ষীরা বন্দুকের ঘোরা টিপে না। ভারতের প্রেমিক-প্রেমিকাযুগল নির্জনে প্রেম করতে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়লেও তাদের প্রেমকে স্বর্গীয় না বানিয়ে সীমান্তচুক্তি মেনে তাদেরকে ভারতের সীমান্তরক্ষীর হাতে তুলে দেয়। মদের নেশায় মাতাল হওয়া বিএসএফ জোয়ান বাংলাদেশের অনেক ভিতরের গ্রামে ঢুকে বিয়ে বাড়িতে ব্রাশ ফায়ার করলেও তাকে অবশেষে অক্ষত অবস্থায়ই ফেরত দেয় আমাদের সীমান্তরক্ষীরা।

গরু চোরাচালানীতে সম্পৃক্ত থাকার পরেও উভয়পক্ষের সীমান্তরক্ষীর মধ্যে মূল পার্থক্যটা এখানেই।

বিএসএফ'এর হারামীপনার কথা কেবল আমরাই বলি তা না। গত মাসের ২ তারিখ সন্ধ্যায় জার্মান টেলিভিশন চ্যানেল ARD-তে Bangladesh: Todesgrenze (বাংলাদেশঃ মরণসীমান্ত) নামে একটা ফলোআপ রিপোর্ট প্রচারিত হয়। সেখানে বিএসএফ'এর নামে কেবল সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যার অভিযোগই আসেনি, এসেছে সীমান্তের ওপাড়ে নিজেদের মানুষকে ধর্ষণ করার অভিযোগও। ভিডিওটা জার্মান ভাষায়, তারপরেও লিংকটা দিচ্ছি-
http://mediathek.daserste.de/sendung-verpasst/11611552_weltspiegel/11611626_bangladesh-die-todesgrenze?datum=20120902

বিএসএফ'এর বিরুদ্ধে এতো এতো অভিযোগের পরেও, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগজনক রিপোর্ট প্রকাশের পরেও যখন ভারত সরকারের দায়িত্বশীল কর্তাব্যক্তিরা বিএসএফ-কে নানাভাবে ইনডেমনিটি দিতে তৎপর হয়ে ওঠেন, সেটা দেখলে বিস্ময় জাগে, বিরক্ত লাগে। চোরের মায়ের গলা সবসময়েই, সবখানেই বড় থাকে।

আপনার কি মনে হয় বাংলাদেশ চাইলেই বিএসএফ বা ভারত সরকার চোরাচালান বন্ধে মনোযোগী হবে? ফেন্সিডিলের এতো বড় আর লাভজনক একটা মার্কেট ভারত হারাতে চাইবে, এতো সহজেই?

সীমান্তচুক্তি মেনে বিএসএফ ট্রেসপাসার বাংলাদেশীদের ভারতের জেলে আটকে রেখে পঁচাক, কেউ তো আপত্তি করছে না তাতে। কিন্তু গুলি করে মারবে কেনো? আর বুঝলাম, তাদের গোমাতা চোরাচালানীদের তারা গুলি করে মারে। কিন্তু নিজেদের ভূখণ্ডে খেলতে থাকা শিশুদের কেনো মারে বিএসএফ, এইটা বলেন তো আমাকে।

সাফি এর ছবি

ক'দিন আগে পত্রিকায় পড়লাম ভারত জানিয়েছে, নিহত নিরাপরাধ প্রমাণিত হলে বিএসেফ এর বিরুদ্ধে তদন্ত করবে ভারত। তবে কি ভারতের আইনে অপরাধীকে বিনা বিচারে গুলি করে মেরে ফেলাটা জায়েজ?

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
কালো কাক এর ছবি

চলুক

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

ধুগো দা,

অনেক বিষয় উঠে এসেছে আপনার মন্তব্যে। চলুক

হাসান মোরশেদ এর ছবি

তোর কী কোন কারনে মনে হচ্ছে বিএসএফ এর 'মিশন কিলিং' কিংবা এর পেছনে ভারত রাষ্ট্রের মদদ নিয়ে আমার কোন জাস্টিফিকেশন আছে?

আমি বাইরের খুনির সাথে ফাইট দেবার লগেলগে নিজের দিকে চোখ দিতে চাচ্ছি। আমাদের ও তো একটা সীমান্ত রক্ষী বাহিনী আছে। এই নবাবের পুতেরা কী করে? বিএসএফ এর গুলী খেয়ে মরা তো পরের ধাপ, আগের ধাপটা হচ্ছে আমাদের মানুষরা যেনো আইন অমান্য না করে সেটা নিশ্চিত করা। আর আমাদের সীমানার ভিতরে ঢুকে যখন বিএসএফ নৃশংসতা করে তখন এর ব্যবস্থা করার জন্যই তো ট্যাক্সের পয়সায় এদেরকে পোষা।
কিন্তু চোরাচালানের গরু পিছে ২০০ টাকা বখরা খেয়ে এইসব হয়না। আমাদের সীমান্তরক্ষী থেকে শুরু করে আমাদের নীতি নির্ধারক পর্যন্ত চুরি চুট্টামীর কারনেই এদের না আছে নৈতিক, না আছে কৌশলগত দক্ষতা দেশের মানুষের নিরাপত্তা বিধানের।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

না দাদা, আমার কেনো সেটা মনে হবে? আপনার প্রত্যুত্তরে না বলে আমার মন্তব্যের কথাগুলো আলাদাভাবেও দেওয়া যেতো অবশ্য।

বিএসএফ'এর নৃশংসতার ব্যবস্থা আমাদের সীমান্তরক্ষীরা কিন্তু করে। সেটা সীমান্ত আর কূটনৈতিক চুক্তি মেনেই, যেটা উপরে উল্লেখ করেছি। এর বাইরে কিছু করতে হলে সেটা সীমান্তচুক্তি লঙ্ঘন করে করতে হয়। যেটা বিএসএফ করে। এখন, ভারতীয় নাগরিকের ট্যাক্সের পয়সায় লালিত-পালিত বিএসএফ প্রতিবেশী দেশের সাথে সীমান্তচুক্তি লঙ্ঘন করে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, কূটনৈতিক চুক্তি লঙ্ঘন করে- এর পরেও ভারতের স্বরাস্ট্রমন্ত্রী, স্বরাস্ট্র সচিব, বিএসএফ প্রধান, ভারতের রাস্ট্রদূত প্রমূখ ব্যক্তিবর্গ ছাগসদৃশ বক্তব্যে বিএসএফ'কে ইনডেমনিটি দিয়ে যায় নির্লজ্জভাবে, ভারতের রামছাগল গোত্রের কিছু নাগরিক জাতীয়তাবাদের জোশে জোশিলা হয়ে 'ইন্ডিয়ান আর্মি'র ধন দুই হাতে পাকড়ে এনে সেটা কতো বড় তা দেখানোর চেষ্টা করে। কারণ, বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্তে সীমান্তচুক্তি লঙ্ঘন করে যে নৃশংসতা ঘটায় সেটা হয়তো তাদের কাছে তাদের ট্যাক্সের টাকার সদ্ব্যবহারই মনেহয়।

কিন্তু, বাংলাদেশিদের ট্যাক্সের টাকায় পোষা বিজিবি বিএসএফ'এর নৃশংসতা রুখতে গিয়ে অনুরূপভাবে সীমান্তচুক্তি লঙ্ঘন করুক, এটা মনে হয় আমি, আপনি- কেউই চাইবো না।

আর, ২০০ টাকা বখরা কিংবা ২০০০ টাকা- এগুলো সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে কোনো কাজেই আসবে না যতোক্ষণ না প্রতিবেশি দুই দেশই এ ব্যাপারে একমত হবে। চোরাচালান বন্ধে শতভাগ সৎ না হওয়া পর্যন্ত একা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সীমান্ত সীলগালা করে দিলেও চোরাচালান বন্ধ হবে না। এটা বাস্তবতা। কেনো হবে না, তার একটা ছোট্ট কারণ উপরের মন্তব্যে উল্লেখ করেছি মাত্র।

তবে আমরা চেষ্টা করছি, এবং করবো অবশ্যই। ভারতীয় পণ্যের উপর থেকে নির্ভরশীলতা কমানোর জন্য। সরকারের আশায় থেকে সবসময় কাজ হয় না। নিজেদের মধ্যে সচেতনতাটা বাড়াতে হয়। সেটা বাড়াতে পারলে, ভারতীয় থার্ডক্লাস পণ্যের প্রতি আমাদের মাত্রাতিরিক্ত আগ্রহ কমাতে পারলে অন্তত আমাদের দিক থেকে, আমাদের মানুষকে সীমান্ত অতিক্রমে বাধ্য হওয়া থেকে সরিয়ে আনা যাবে।

কাজি_মামুন এর ছবি

কারণ, বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্তে সীমান্তচুক্তি লঙ্ঘন করে যে নৃশংসতা ঘটায় সেটা হয়তো তাদের কাছে তাদের ট্যাক্সের টাকার সদ্ব্যবহারই মনেহয়।

কথাটা ঠিক! অনেক ভারতীয় এমনটাই ভাবে। বাংলাদেশের হাবু শেখের উপর অত্যাচারকে ঐসব তরুন ভারতীয় বৈধতার সিল মেরে দিয়েছিল এই যুক্তিতে যে, উন্নত ঝা চকচকে ভারতকে দুষিত করে দিচ্ছে হাবু শেখের মত নোংরা বাংলাদেশিরা!
যাহোক বস্‌, আপনার কাছে আমার একটা প্রশ্ন আছেঃ আপনি কি মনে করেন, শুধু শেখ হাসিনার নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণেই ভারতের সীমান্তরক্ষীরা এমন ঘটনা ঘটাতে সাহস করছে? বা শেখ হাসিনা চলে গেলেই কি এই হত্যাকান্ড বন্ধ হয়ে যাবে? এর প্রকৃত সমাধান কি?
আপনি বলেছেন, ট্রেসপাসাররা জেলে পচে মরলেও আপনার আপত্তি নেই, কিন্তু গুলি করে মারাতে আপনার আপত্তি। জেলে পচিয়ে মারা মানবাধিকার লংঘন নয়?
আপনি বলেছেন, যখন বখরা নিয়ে মতভেদ ঘটে, তখুনি পাখির মত গুলি করে মারে বাংলাদেশিদের। আসলেই বিএসএফের কাছে একজন বাংলাদেশির মূল্য একটা পাখির মতই। কিন্তু এই অসম, নির্মম আর অবৈধ সীমান্ত বানিজ্যকে রোখার দায়িত্ব যে বিজিবির, তাদেরকে আপনি কেন ছাড় দিচ্ছেন? বিজিবি এই বানিজ্য টিকিয়ে রাখতে বদ্ধ পরিকর, তাই তাদের উস্কানিতেই হাবু শেখের মত নীরিহ বাংলাদেশিরা রাক্ষসের গুহায় গিয়ে বেঘোরে প্রান হারায়। রাক্ষসদের সমালোচনা আমরা অবশ্যই করব, তবে তার আগে ঐ রাক্ষসদের যে দেশীয় সহযোগী রয়েছে, তাদেরও সমালোচনা করতে হবে, কারণ তারা আমাদের নিয়ন্ত্রনে।

এগুলো সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে কোনো কাজেই আসবে না যতোক্ষণ না প্রতিবেশি দুই দেশই এ ব্যাপারে একমত হবে।

একমত তো সীমান্ত হত্যা বন্ধেও হয়েছিল, সে কথা রাখতে পেরেছে কি?
আর শেষে একটা কথা না বলে পারছি না বলে দুঃখিত! সচলের মত অসাম্প্রদায়িক একটা ব্লগে 'গোমাতা' শব্দের প্রয়োগ দৃষ্টিকটু লেগেছে।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক গুরু গুরু

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আমাদের সরকার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দায় এড়িয়ে যাওয়ার মানসিকতা দৃষ্টিকটু। এ বিষয়ে দেশের জনগণকেই সচেতনভাবে এগিয়ে আসতে হবে। এক সময় এ নিয়ে এই সচলায়তনেই 'ভারত বনধ' নামে একটি আন্দোলন শুরু হয়েছিলো, মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির জন্য।
ধন্যবাদ, লেখাটির জন্য। সাথে আছি

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

সচলায়তনের 'বনধ' আন্দোলন সফল, এটা বলতেই হবে। কারণ, এর ফলে, বিপুল পরিমাণ মানুষ সচেতন হয়েছে বিষয়টি নিয়ে।
মতামতের জন্য ধন্যবাদ পৌঢ় দা।

ফাহিম হাসান এর ছবি

গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। তথ্যগুলো কাজে আসবে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

সীমান্তে নিপীড়ণ বন্ধ হোক।

স্যাম এর ছবি

সহমত আবার ও ফাহিম ভাই। ধন্যবাদ রাজা।

সাফিনাজ আরজু  এর ছবি

খুব গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট। এমন বিষয়ভিত্তিক লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ রাজাভাই।
সীমান্তে নিপীড়ণ বন্ধ হোক।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

সীমান্তে নিপীড়ণ বন্ধ হোক।

সজল এর ছবি

একটা দেশের সরকার তার নিজের নাগরিকের মৃত্যুতে ব্যাথিত হয় না, এর চেয়ে দুঃখের আর কী হতে পারে! দুর্বল রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে মাথা নুয়ে আসে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

দুর্বল রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে মাথা নুয়ে আসে।

চলুক এই এক বাক্যে অনেক কিছু বলে দিয়েছেন।
সীমান্ত ইস্যুতে বাংলাদেশের সব সরকারের নতজানু নীতির মূল্য দিতে হয় আমাদের।

মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
সীমান্তে নিপীড়ণ বন্ধ হোক।

রু এর ছবি

খুব তথ্যবহুল লেখা। ধন্যবাদ, সবুজ পাহাড়ের রাজা।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

সীমান্তে নিপীড়ণ বন্ধ হোক।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ধন্যবাদ লেখার জন্যে। আমরা তো সিজনাল রাইটার মনে হয়, এক একটা সময়ে আমাদের উৎসাহ উথলে উঠে, ঐ সময়টা চলে গেলে ঐ ইস্যু সমাধান না হলেও ম্যান্দা মেরে কোথাও পড়ে থাকে আমরা আবার নতুন জিনিস নিয়ে লাফাই। নিয়মিতভাবে বিএসএফের বিনাবিচারে হত্যাকাণ্ড নিয়ে লেখা আসলে সকলের গোল্ডফিশ মেমোরিটা মাঝেমাঝেই রিফ্রেশ হয়। তবে সচলায়তনে বিএসএফ-এর কার্যকলাপ নিয়ে প্রকাশিত লেখাগুলোর অনুবাদ থাকাটা খুব জরুরি মনে করি আমি। নিজে দেখেছি বকে বকে বিদেশী বা ভিনভাষী বা ভারতীয় বন্ধুদেরকেই এই ব্যাপারে ওয়াকিফহাল করতে যেই এফোর্ট লাগে, নানান খবরের লিংক বা গোছানো একটা লেখা তার থেকে বেশি ফলপ্রসূ হয়, আর হ্যাঁ, মহারাষ্ট্রে থাকা আমার কোন ভারতীয় বন্ধুর প্রতিদিনের খবরের কাগজে আমাদের সীমান্তের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের খবর কদাচিৎ আসে! সম্ভব হলে আপনার এই তথ্যবহুল লেখাটার একটা ইংরেজী অনুবাদ অ্যাড করে দিয়েন এর সাথেই।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

মতামতের জন্য ধন্যবাদ।
শীঘ্রই অনুবাদ করে সচলে এ্যাড করে দেবো, ধন্যবাদ।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ভারত থেকে গড়িয়ে পড়ছে গরু

কিঞ্চিৎ সংশ্লিষ্ট।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

কৌস্তুভ এর ছবি

কিছু বলতে গেলেই অনেক কিছু বলতে হয়। তাও বলি।

১) শুধু বিএসএফই নয়, ভারতীয় আর্মির নানা শাখা নানা জায়গায় হারামিপনা করে চলেছে নানা সময়। অসমের এই ঘটনাটাও আন্তর্জাতিক নিউজ হয়েছিল:

এখন ব্যাপার হচ্ছে এই, যে মণিপুরি নারীদের আর্মি কী করছে তা নিয়ে বিহারের একজন লোকের জানাশোনা কম, মাথাব্যথাও কম। হয় তার দৈনিক ডালরুটির জোগান দিব্যি আছে এবং সে মোটামুটি সুখী জীবনের মধ্যে ওসব নিয়ে মাথা ঘামায় না, নয়ত সে রোজকার রুটির জোগানেই ব্যস্ত আর তাই ওদের নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় নেই। স্যাডলি, এটাই আমাদের দেশের বাস্তব।

দেশের মিডিয়াও এ প্রসঙ্গে খুব দেশপ্রেমিক। আগে কিছু খবরের কথা দেখিয়েছিলাম,

"কালকে সীমান্তের ওপার থেকে বিনা প্ররোচনাতেই বিডিয়ার ব্যাপক গুলিবর্ষণ করে, জবাবে বিএসএফ পাল্টা গুলি চালায়... সংঘর্ষবিরতির পরে দুদেশের মধ্যে ফ্ল্যাগ বৈঠক হয়...'

"নদীতে স্নান করতে আসা যুবকের প্রতি বিনা প্ররোচনায় বিডিয়ার গুলি চালালে যুবকের মৃত্যু..."

বিএসএফ এক বেআইনি অনুপ্রবেশকারী পরিবারকে বিডিয়ারের হাতে তুলে দিতে গেছিল, কিন্তু বিডিয়ার ঢাকার নির্দেশ দেখিয়ে, শুধু বাবা-মা-কে ফেরত নেয়, নিজেদেরই লোক হওয়া সত্ত্বেও বাচ্চাদুটিকে ফেরত নেয় নি। এখন তারা ভারতের জুভেনাইল হোমে বাবা-মা-কে ছাড়াই দিন কাটাচ্ছে।

অর্থাৎ কিনা, আমরা গান্ধীর দেশ না? আমরা কি কখনও অন্যায়ভাবে গুলি চালাতে পারি? আমরা শুধু বেআইনি অনুপ্রবেশকারীগুলোকে একটু সমঝে দিই মাত্র।

বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়েও ভারতের লোকের ধারণা কম, সীমাবর্তী রাজগুলো থেকে যদি একটু দূরে যান। বাংলাদেশের রাজধানীর নাম জিজ্ঞেস করলে তারাও 'সেখা চিনা' বলে দিতে পারে। তাদেরকে এই নিয়ে জিজ্ঞেস করলে কেউ বলবে গুজব, কেউ বলবে নিশ্চয়ই বাংলাদেশীরা তেমন কিছু করেছিল তাই বিএসএফ গুলি চালিয়েছে, কেউ বলবে বেশ হয়েছে ব্যাটাদের এমনটাই করা দরকার।

মোট কথা, এসব নিয়ে দেশের মানুষজনের যেমনি ধারণা নেই তেমনি সরকারের উপর কোনো চাপও নেই।

২) আপনার আগের লেখাটাতেও দেখলাম, রিপোর্টিং (অনুবাদ) এর দিকটা ঠিকঠাক হলেও নিজস্ব ব্যাখ্যা দেওয়ার সময়ই গোলমাল হচ্ছে। এবং এই লেখাটার ক্ষেত্রে যেমন একটা খামতি, এই প্রসঙ্গে সচলে আগে অনেকগুলো তথ্যপূর্ণ লেখা এসেছে যাতে অনেক আলোচনা হয়েছে, সেগুলোর প্রসঙ্গ না আনা, সেগুলোকে রেফার না করা।

[১] [২] [৩]

"শুধু তাই না, বিএসএফ বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে বাংলাদেশীদের আক্রমন, লুটপাট, হত্যা ও নিপীড়ণ করেছে" এইটার কোনো রেফারেন্স দেননি। একটা সার্বভৌম দেশের এলাকায় অন্য দেশের সেনা বিনা অনুমতিতে ঢুকে পড়ছে এটা মস্ত বড় একটা অপরাধ হওয়া উচিত। বিএসএফ এটা করে দেখিয়ে ওসব লেখায় লিঙ্কও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আপনার লেখায় রেফারেন্স অনুপস্থিত যেটা আপনার বক্তব্যকেই দুর্বল করে দেয়।

৩) এই ঘটনার পেছনে ভারত সরকারের মানসিকতা নিয়ে আপনার ব্যাখ্যা কিছু কিছু জায়গায় খুবই এলোমেলো। এই যেমন, "ব্যর্থ রাষ্ট্রের একটি উপাদান হল, সামরিক/আধা-সামরিক বাহিনী নিজ ইচ্ছায় চলে, সরকারী আদেশ অমান্য করে।" "তা, ভারত কবে থেকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হল যে, এর সামরিক বাহিনীগুলো নিজ ইচ্ছায় চলে?"
এটা লজিকের সরল ভুল। ক-এর প্রপার্টি খ হলে কোনো দেশে খ দেখামাত্রই তাকে ক বলা যায় কি? ক=>খ তো খ=>ক হয় না।

"ভারত সরকার বিএসএফের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?" এর ব্যাখ্যা অনেকগুলো হতে পারে। আপনি কেবল ধরছেন, ভারত সরকার 'Final Solution, Extermination-এর পথ বেছে নিয়েছে।' তা কেন? এমনও তো হতে পারে, এ বিষয়ে সরকারের মন্ত্রীরা অলস/অকর্মণ্য/মেরুদণ্ডহীন/অনাসক্ত/গয়ংগচ্ছ? যে সরকার নিজের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিপুল গণক্ষোভই উপশম করতে তেমন উদগ্র না সে অন্য দেশের নাগরিক মরলে এত বিচলিত হবে কেন? আর হাসান মোরশেদ একটা বড় পয়েন্ট তুলেছেন, যে সীমান্তে চোরাকারবারের টেকাটুকার একটা ভালো ভাগ বিএসএফের লোকেরা পায়, এবং তাতে কোনো ঝামেলা হলেই তারা ক্ষমতা দেখাবার জন্য দুচারটে লোক মেরে দেয়। তারা ক্ষমতার মাথাগরমে ভারতীয় নাগরিকদেরই পাত্তা দেয় না, তো আবার বিদেশী। যতক্ষণ না তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক প্রতিক্রিয়া নেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ তারা এগুলো চালিয়েই যাবে।

এই বিএসএফ বর্ডার দিয়ে জঙ্গিদের আনাগোনা রুখতে পারে না, টেকাটুকার বিনিময়ে গরুপাচারও দেখতে পায় না, অথচ নিরস্ত্র কিশোরী মেয়েকে ঠিকই ফুঁড়ে ফেলে।

ভারত বাংলাদেশকে এশিয়ার রাজনৈতিক আঙিনায় একটা বড় ভরসা হিসেবে দেখে। তারা যদি দেখে যে বাংলাদেশ চীন-পাকিস্তান অক্ষের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে তাহলে তারা ঠিকই তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু বাংলাদেশ কি ভারতকে সেই চাপটা দেয়?

৪) আর্মির এইসব কাজকর্মে আমরা যথেষ্টই বিরক্ত। কিন্তু আমরা জিঙ্গোইস্ট না যে কোনো ভিনদেশী আমাদের দেশের আর্মির সমালোচনা করছে দেখলেই লাফিয়ে পড়ব। আগের লেখাগুলোর সঙ্গে সহমত ছিল, এটার সঙ্গেও। শুধু বিশ্লেষণের দিকটায় যত্নবান হন।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আমরা জিঙ্গোইস্ট না যে কোনো ভিনদেশী আমাদের দেশের আর্মির সমালোচনা করছে দেখলেই লাফিয়ে পড়ব।

আমরা বলতে কাদের কথা বোঝালেন?

কৌস্তুভ এর ছবি

ভাল প্রশ্ন। এখানে যেসব ভারতীয় সচল আছেন তাঁদের কথা বলেছি। আমি দমুদি তুলিদি ইত্যাদি। আগের পোস্টে দমুদি যেমন মন্তব্য করেছিলেন আমার মনে আছে। উড়ে এসে জুড়ে বসা অতিথিদের কথা বলছি না।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

বুঝেছি। যারা জিঙ্গোয়িস্ট ভারতীয় নন, তারা জিঙ্গোয়িস্ট ভারতীয় নন, তেমনটাই বলতে চেয়েছেন। খাইছে

কিন্তু এটা দ্বারা কী পয়েন্ট মেক করা গেলো তা অস্পষ্ট। হয়তো জাস্ট বললেন।

গোটা গোষ্ঠির দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নিলে দেখবেন বিপদ। কোনদিন আবার কে কী বলে বসে তার দায়িত্ব আপনি নিবেন কেনো? হয়তো বা নিবেন। একজন ভারতীয় হাচলই এই সচলায়তনে ঠিক ঠিক "আর্মির সমালোচনা করছে দেখেই" প্রতিক্রিয়া দিয়ে বসেছিলেন কিনা, তাই বলছি (পরে যদিও ওনার অসাধারণ রিফর্ম দেখা গেছে, যাচ্ছে বলে মনে করি)।

কৌস্তুভ এর ছবি

ঠিক। আপনি যাঁর কথা বলছেন এই পোস্ট বিষয়ে ফেসবুকে তাঁর মন্তব্য ছিল, "কয়েক বছর আগে আমিও খাডাস এর মতো বিএসেফ এর কাজকে জাস্টিফাই করাটাকেই সমর্থন করতাম।"

আমার ধারণা বলে এখন কোনো ভারতীয় সচল জিঙ্গোয়িস্ট নন। আর সচল হবার দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ফলে জিঙ্গোয়িস্ট কোনো ভারতীয় সচল হয়ে পড়বেনা এমনটাও ভরসা করি মডুদের উপর। তাই মোটামুটি উঁচু প্রোবাবিলিটি নিয়ে কথাটা বললাম। হাসি

পয়েন্টটা ছিল এইজন্য - সবুজ পাহাড়ের রাজা'র কনক্লুশন টানার ক্ষমতায় যেমন দুর্বলতা দেখছি তাতে উনি হয়ত ভেবে বসতে পারেন ওনার লেখার সমালোচনা করছি কারণ ভারতীয় হিসেবে আমার আঁতে ঘা লেগেছে। বা অন্য কেউও করতে পারে এই চিন্তা। তাই বলে রাখা।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

১ নং বক্তব্যের উদ্দেশ্য কি? মানে আমার পোস্টের সাথে এর সম্পর্ক কি?

'সমঝে' দেয়ার সংখ্যাটা গত দশ বছরে প্রায় এক হাজার, আর গত ৪২ বছরে চার থেকে পাঁচ হাজার। এটা কে সমঝানো বলে না, এটা গণহত্যা।

এই লেখাটার ক্ষেত্রে যেমন একটা খামতি, এই প্রসঙ্গে সচলে আগে অনেকগুলো তথ্যপূর্ণ লেখা এসেছে যাতে অনেক আলোচনা হয়েছে, সেগুলোর প্রসঙ্গ না আনা, সেগুলোকে রেফার না করা।

আমার এই লেখাকে জাস্টিফায়েড করার জন্য কেন সচলের আগের লেখাগুলোকে রেফার করতে হবে বুঝলাম না। আমার পোস্টে উল্লেখিত সবগুলো ঘটনার রেফারেন্স আছে।
আপনার দৃষ্টিতে অনেক কিছুই মনে হতে পারে।

শুধু তাই না, বিএসএফ বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে বাংলাদেশীদের আক্রমন, লুটপাট, হত্যা ও নিপীড়ণ করেছে

পোস্টটি ছিল বেসিকেলি বিএসএফ কিলিং নিয়ে, তা না বোঝার মত কিছু নেই।
তারপরও আপনি তোষকে একটি বালি খোঁজার মত করে একটি লাইন নিয়ে সমাধানে চলে গেলেন।
আপনি এই প্রসঙ্গে আমার কাছে লিঙ্ক চাইলেই পাচ্ছেন। আপনার সহজেই দৌঁড় দিয়ে একটা সমাধানে চলে যাওয়া ঠিক হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। এটা ব্লগ, কম্যিউনিকেশনের বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার।

বিএসএফ বাংলাদেশ সীমান্তে ঢুকে বাংলাদেশীদের নিপীড়ণের রেফারেন্স:

লিংক- এক, দুই, তিন, চার, পাঁচ, ছয়, সাত, আট, নয়, দশ

৩ নং-এর জবাবে:

ভারত সরকার বারবার বলছে, তারা বিএসএফকে সীমান্তে হত্যাকান্ড না করার আদেশ দিয়েছে। এ আদেশ দেয়ার পরও বিএসএফ নিরীহ মানুষকে হত্যা করে। এটি কে কি বলবেন? সামরিক বাহিনীতে চেইন অব কমান্ড নামে যে একটা বিষয় থাকে, তা কি ভুলে যাচ্ছেন? এর মানে দাঁড়াচ্ছে, ভারত সরকারের আদেশ সত্বেও ভারতের বিএসএফ নিজের মত করে কাজ করে যাচ্ছে।
যখন কোন দেশের সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রের আদেশ না মেনে নিজের মত করে কাজ করে, তখন, তা ব্যর্থ রাষ্ট্রের উপাদান।

আপনার কাছে সীমান্তে প্র্রবেশ করে নিপীড়ন করা অনেক বড় অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে আর কোন দেশের সামরিক বাহিনী রাষ্ট্রের আদেশ না মেনে নিজের মত করে কাজ করে, তখন, তা ব্যর্থ রাষ্ট্রের উপাদান; এটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে?

যদি, এই থিওরী না মানেন তাহলে, চুড়ান্ত সমাধানের সন্দেহ আমি দেখাবো।
ভারত সরকার মুখে ঠিকই বলছে, নো বর্ডার কিলিং কিন্তু ঠিকই বিএসএফকে বলছে, একটারমিনেট দেম।

ভারতীয় বিএসএফের বাংলাদেশ সীমান্তে গণহত্যা রেফারেন্সসহ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ায় আপনার কাছে আমার পোস্ট, যত্মহীন বিশ্লেষণ, কনক্লুশন টানার ক্ষমতায় দুর্বলতা বলে মনে হলে একটুও অবাক হব না।
কারণ, সিএইচটি ইস্যুতে আমাদের অনেক বাঙালী-বাংলাদেশী মানবতাবাদীদের মানবতার সংজ্ঞা তখন পাল্টে যায় তো, এরকম মানবতাবাদীদের দেখতে অভ্যস্ত।

ব্যাপার না, ভাল থাকেন।

কৌস্তুভ এর ছবি

১) আবারো আপনার কোনোকিছুর অর্থ বোঝার ক্ষেত্রে খামতি, নাকি বলা উচিত ভুল অর্থ গ্রহণ করার প্রতিভা, দেখা গেল। "অর্থাৎ কিনা, আমরা গান্ধীর দেশ না?" এই কথার পরেও ওই লাইনটা যে বিদ্রূপ ছিল, তা বুঝতে পারলেন না। ওটা যে 'দেশপ্রেমিক' ভারতীয় মিডিয়ার মনোভাবকে বোঝাতে ব্যঙ্গ করে বলা, সেটা আপনার ঠাওর হল না। অবশ্য হবেই বা কী করে, ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ তো আপনার কাছে 'আনসিভিলাইজড ওয়ে'...

২) এই পোস্টের সঙ্গে ১ এর সম্পর্ক হল, বিএসএফ-এর এই আচরণের ভারতের দিক থেকে পরিপ্রেক্ষিত দেওয়া। এই যেমন, ভারতীয় মিডিয়া এই ঘটনাগুলোকে কীভাবে পরিবেশন করে, সেই দিকটা সংযোগ করা। একটা পোস্টের কমেন্টে নানা দিক থেকে তথ্য-বিশ্লেষণ পাঠকরা যোগ করে লেখাকে সমৃদ্ধতর করে তুলবেন, এটাই তো মন্তব্য-ব্যবস্থার থেকে কাম্য।

৩) ওগুলোর রেফারেন্স দিতে বলাও ঠিক একই কারণে - আপনার এই লেখাকে 'জাস্টিফায়েড' করার জন্য নয়, সমৃদ্ধতর করার জন্য। ওই লেখাগুলোয় ও মন্তব্যে অনেক আলোচনা-বিশ্লেষণ হয়েছে যেগুলো এই পোস্টে অনুপস্থিত, সেগুলো পাঠকরা যাতে পড়তে পারেন।

৪) পোস্টটা ছিল বিএসএফ কিলিং নিয়ে, কিন্তু সেটা 'সীমান্ত ভয়ঙ্কর'এর একটা দিক, আরেকটা দিক হল কোনো সার্বভৌম রাষ্ট্রের জমিতে বিনানুমতিতে ঢুকে পড়ে হামলা করা, সেটাও বড় অপরাধ। আপনি সেই প্রসঙ্গ এনেছেন কিন্তু রেফারেন্স দেননি। এটা আপনার আলোচনা-অংশে রেফারেন্স-খামতির উদাহরণ দেওয়ার জন্য। সোজা কথা।

৫) আপনার বাক্যগুলোর মধ্যে লজিকাল গঠনের দুর্বলতাটা ওখানে দেখিয়েছি। ব্যর্থ রাষ্ট্র বিষয়ে ঠিকঠাক বিশ্লেষণ দিলে মেনে নিতাম, কোনো 'কষ্ট' হত না।

৬) পোস্টের যে অংশটায় সীমান্তে গণহত্যা সম্পর্কে একের পর এক খবরের লিস্ট দিয়েছেন, বা আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনগুলোর রেফারেন্স দিয়েছেন, সেটা নিয়ে তো কিছু বলার নেই। যেমন ছিল না আপনার অনুবাদ অংশটা নিয়ে। কিন্তু নিজস্ব মতামত-ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিতে গেলেই নানারকম খামতি-দুর্বলতা চোখে পড়ছে আপনার লেখায়। সেইটা এতগুলো উদাহরণ দিয়ে বারবার দেখিয়ে দেওয়া। সেদিকটা ঠিক করুন, আপনার সাথেই আছি। তার বদলে যদি 'ভারতীয়রা তো প্রতিক্রিয়া দেখাবেই' বলে ডিনায়াল মোডে চলে যান, আপনারই অপূর্ণতা থেকে যাবে। সেটাই ৪)-এ বক্তব্য ছিল। দেখছি সেটাও গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

০১) ওটা সারকাজম ছিল বুঝেছি বলেই, আপনার ওই লাইন কটা কোট করিনি। আমি কি বলতে চেয়েছি সেটা স্পষ্ট ছিল, তা আপনি না বুঝলে আমার কিছু করার নেই।

০২) ওটাতে আমি বিএসএফের প্রতি আপনার এ্যাপেলোজেটিক টোন দেখেছি।
(এই লাইনটি বলার পর, আপনার কিছু বন্ধু যদি আমার দিকে তেড়ে আসেন, তাহলে বলব, ব্রো, আমার ফ্যামিলি এই দেশের মাটির জন্য রক্ত দিয়েছে এবং নির্যাতিত হয়েছে তো, তাই, দেশের ক্ষেত্রে সেনসেটিভ হওয়াটা উত্তারাধিকার সূত্রে পেয়েছি এবং কৌস্তুভকে এটা বলার জন্য যদি সচলে আমি ব্যানও হয়, আমার কোন আফসোস নেই। ব্লগের জন্য তো আর উত্তরাধিকার সূত্রে দেশের জন্য পাওয়া আবেগ ত্যাগ করতে পারব না।)

০৩) বাহ! আপনি তো খুব সুন্দর কথা ঘুরাতে পারেন। ঘাটতি থেকে সমৃদ্ধির দিকে চলে গেলেন?

০৪) রেফারেন্স চাইতে পারতেন সুন্দর করে। কিন্তু তা না করে আপনি যেভাবে বলেছেন, তা কি রকম ছিল, সেটা আপনার-আমার-পাঠকের না বুঝার কথা নয়।

০৫) খুব সুন্দর করে ভেঙে বুঝিয়ে দিয়েছি, তাতেও আপনি না বুঝতে চাইলে আমার কি করার আছে?

০৬) আগেও বলেছি, আবারও বলছি:
ভারতীয় বিএসএফের বাংলাদেশ সীমান্তে গণহত্যা রেফারেন্সসহ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ায় আপনার কাছে আমার পোস্ট যত্মহীন বিশ্লেষণ, কনক্লুশন টানার ক্ষমতায় দুর্বলতা, নানারকম খামতি-দুর্বলতা, অপূর্ণতা বলে মনে হলে একটুও অবাক হব না।

০৭) বুঝলাম কথার মারপ্যাচে তাল গাছটা আপনার। ওকে, আপনাকেই দিলাম। ভাল থাকেন।

কৌস্তুভ এর ছবি

১) সারকাজম যদি বুঝেই থাকেন তাহলে "এটা কে সমঝানো বলে না, এটা গণহত্যা" বলার কারণ কিছু থাকে কি? কেউ যখন ব্যঙ্গ করে বলে, "নাফিস পোলাটা ফুলের মত নিষ্পাপ, এফবিআই তাকে ফুসলাইছে" তখন 'ওটাকে ফুসলানো বলে না' বলে সেটার সমালোচনা করতে যাওয়াটা হাস্যকরই।

২) আপনি ওটাতে অ্যাপলজেটিক টোন দেখবেন তা আর আশ্চর্য কী। আপনার ভুল অর্থ গ্রহণ করার দক্ষতা তো বারবারই দেখাচ্ছেন। " শুধু বিএসএফই নয়, ভারতীয় আর্মির নানা শাখা নানা জায়গায় হারামিপনা করে চলেছে নানা সময়।" এর পরেও অ্যাপলজি দেখছেন, বাহ বাহ।
এখানে বাকি যে অপ্রয়োজনীয় কথাগুলো বললেন, সেটাই জিঙ্গোইজমের একরকম উদাহরণ।

৩) অসম্পূর্ণতা থাকলেই সেটাকে পূর্ণতর করার প্রয়োজন আসে। যাকে বলে কমপ্লিমেন্ট করা। ঘাটতি-সমৃদ্ধির সঙ্গে 'জাস্টিফায়েড' ব্যাপারটার সম্পর্ক নেই।
যদি বলি, রমনি-রায়ান সেক্সিস্ট, তাহলে সেটা মিথ্যা নয়, অর্থাৎ 'আনজাস্ট' নয়, কিন্তু রেফারেন্স দিয়ে সেটাকে পরিপূর্ণ করে তোলা দরকার। তফাত বোঝা গেছে?

৪) ওইটা তো একটা উদাহরণ মাত্র, আপনার বিশ্লেষণের সামগ্রিক ধাঁচে বারবার রেফারেন্সের অভাবের। প্রতিটা ক্ষেত্রে তামা-তুলসী হাতে জোড়করে রেফারেন্স চাওয়া মুশকিল।

৫) হেহে, হ্যাঁ, এক্কেবারে 'সুন্দরী লো সুন্দরী, তুলনাহীনা সুন্দরী' টাইপের খুব সুন্দর করে।

৬) সে আর বলতে। ডিনায়াল মোডই সহজতম পন্থা।

৭) ভালই আছি, ধন্যবাদ। আপনিও ভাল থাকেন।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

শুধু তাই না, বিএসএফ বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে বাংলাদেশীদের আক্রমন, লুটপাট, হত্যা ও নিপীড়ণ করেছে

কেনু ভাইয়া, এর জন্য যে মন্তব্যর ঘরে দশটা রেফারেন্স লিংক দিলুম যে হইনি?
আর এত বড় পোস্টে ওই একটা লাইনের রেফারেন্স আলাদা করে দেইনি, কারণ, পোস্টে যে লিংকগুলো আছে, তাতে অনেকগুলোতে এর সম্পর্কে বলা আছে।
পুস্ট ঠিক মত না পড়লে কি আর করা।

অবিশ্বাসের দর্শনের পোস্টে আস্তিকরা একটা-দুটা লাইন নিয়ে লেগে পড়ে, মুক্তিযুদ্ধ-যুদ্ধাপরাধের পোস্টে পাক-পেয়ারু বেজন্মারা তর্কে লেগে পড়ে, সিএইচটি ইস্যুতেও একই, ঠিক তেমনি, সীমান্ত ইস্যুতে কিছু কিছু মানবতাবাদী এপোলজেটিক হয়ে যায়। এ আর নতুন কি?
অথচ, ওই লাইনগুলোর রেফারেন্স ঠিকই পোস্টে আছে। একটু মনোযোগ দিয়ে পড়লে পাওয়া যেত। কিন্তু ওরা পেতে চাইবে না।

আমাকে এখন আপনার জিঙগোইশ্টিক, মিশ্টিক, কত কিছু মনে হবে.......

আমার পোস্টকে নিম্নমানের পোস্ট বানানোর আপনার প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই! চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

আমার বক্তব্যের যে অংশটা নিয়ে কথা চলছে, সেটা আপনার মূল পোস্টে রেফারেন্সের অভাব সম্পর্কে ছিল। কমেন্টে রেফারেন্স দিয়েছেন, সঠিক করেছেন, সেখানেই কথা থেমে যেত (লিঙ্কগুলো পোস্টে আপডেট করে দিলে আরো ভাল হত), কিন্তু থামল না কারণ আপনি তার সঙ্গেই আমার দুরভিসন্ধির অভিযোগ জুড়ে দিলেন, "তারপরও আপনি তোষকে একটি বালি খোঁজার মত করে একটি লাইন নিয়ে সমাধানে চলে গেলেন।"

কৌস্তুভ এর ছবি

আর আপনাকে এই বহুআলোচিত পোস্টটার দিকে একটু দৃষ্টি আকর্ষণ করি। এখানেও বিস্তর সমালোচিত হয়ে লেখক অভিযোগ করেছিলেন, "এই লেখার বড় অংশ জুড়েই সমসাময়িক বিভিন্ন অনাকাংখিত ঘটনার উল্লেখ। কিন্তু সবার নজর কেনো ঐ শেষ প্যারাতেই।"

কিন্তু উপায় নেই গোলাম হোসেন, কোনো লেখার বাকিটা ভালো হয়ে একটা অংশে সমস্যা থাকলে পাঠকের স্ক্রুটিনিতে সেটাও ধরা খাবে।

বলছি না যে আপনার পোস্টটা ওনার মত সাম্প্রদায়িক, আপনি একটামাত্র বিষয় নিয়ে ঝুলে আছি এইরকম অভিযোগ করলেন বলে উদাহরণ দেখালাম, যে সচলে এমনটা ঘটেই থাকে।

কিন্তু একি, তিন টুকরোয় যে মন্তব্যটার উত্তর দিলাম এখন দেখছি সেটাই হাপিস! http://www.sachalayatan.com/kingofgreenhill/46513#comment-552772 ছিল সেটার লিঙ্ক।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার (সাম্প্রতিক দুটো) পোস্টের দুখানা করে অংশ থাকে, বহিস্থ মেটেরিয়ালের উপর আর নিজের বিশ্লেষণ। 'নিম্নমান' সংক্রান্ত সমালোচনাগুলো দ্বিতীয় অংশের প্রতি, সেটা স্পষ্ট করে বারবারই বলেছি। তারপরেও 'আমার পোস্টকে নিম্নমানের পোস্ট বানানোর আপনার প্রচেষ্টা' বলে ভিক্টিম কার্ড খেলার চেষ্টায় লাভ নেই রাজামশাই।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

ভিক্টিম কার্ড খেলি নারে ভাই, খেইলা কি করুম? নিজেরাই তো ভিক্টিম। কুত্তার মত সীমান্তে মাইরা ফালাইয়া থোই।

ব্যর্থ রাষ্ট্র আর এক্সটারমিনেট থিউরি আপনার জাতিবোধের গায়ে লাগায় আপনার কাছে আমার পোস্ট নিম্নমানের কেন, আরো কত কিছু মনে হবে।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার বক্তব্যের চেন বারবার একটা কাটা রেকর্ডে গিয়ে কনভার্জ করে কেন? আগের পোস্টে সেটা ছিল কমিউনিজম-উগ্রবাদী নাস্তিকতা নিয়ে, এখানে আমার উগ্র জাতীয়তাবাদ নিয়ে।

কৌস্তুভ এর ছবি

আর একটা জিনিস খেয়াল করবেন। কলরবে আপনার যে মন্তব্যটা দেখা যাচ্ছে সেটা টেনে এনে আপনার দেশপ্রেমকে ব্যঙ্গ করে আমি কিন্তু কিছুই বলিনি। কারণ ব্যক্তিআক্রমণে আমার কোনো আগ্রহ নেই। আপনার লেখার যে দিকটা আমার দুর্বল লেগেছে শুধু সেদিকটাই সমালোচনা করছি যাতে ভবিষ্যতে বেটার লেখা দিতে পারেন। স্যাডলি, সেই বিবেচনাটা আপনার মধ্যে দেখছি না; আপনি আমার চরিত্র নিয়েই উত্তেজিত মন্তব্য করছেন।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

৪) আর্মির এইসব কাজকর্মে আমরা যথেষ্টই বিরক্ত। কিন্তু আমরা জিঙ্গোইস্ট না যে কোনো ভিনদেশী আমাদের দেশের আর্মির সমালোচনা করছে দেখলেই লাফিয়ে পড়ব। আগের লেখাগুলোর সঙ্গে সহমত ছিল, এটার সঙ্গেও। শুধু বিশ্লেষণের দিকটায় যত্নবান হন।

আর্মির এইসব কাজকর্ম?! চিন্তিত
বিএসএফ নিয়ে আলাপ চলছে নাকি (ভারতীয়) আর্মি নিয়ে? ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ এর সাথে আর্মির কী ধরনের সংশ্লিষ্টতা আছে তা জানো বা মনে করো তা জানালে খুশি হবো। ব্যক্তিগতভাবে ভারতীয় আর্মি নিয়ে যেহেতু আমার নিজের মাথাব্যথা কম আর বিএসএফ নিয়ে সীমান্তবর্তী শহরের একজন হিসেবে আমার মাথাব্যথা বেশি হয়, আর এই পোস্ট, পুরানো পোস্ট ইত্যাদিতে সীমান্তে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে যেহেতু ভারতীয় আর্মি না, বিএসএফকে নিয়েই কনসার্নড আমরা!
আরেকটু সুস্পষ্ট করে দেই আমার প্রশ্নটা -
(১)-এ বলা বিএসএফ ছাড়াও ভারতীয় আর্মিও ভারতের অভ্যন্তরে কী কুকীর্তি করেছে সেই পয়েন্টের প্রয়োজনীয়তা বা অপ্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করতে এই কমেন্ট করছি না, তোমার (৪) নং পয়েন্ট নিয়ে আমার এই আগ্রহ।

এই অংশটুকু আসলে পোস্টের বিষয়ের অফটপিক, তবে দৃষ্টিগোচর হলো নতুন করে, আর এই পোস্টের কমেন্টেরই প্রাসঙ্গিক বিধায় এখানেই লিখবো ফেসবুকে না হাসি -
সচল ধ্রুব বর্ণন-কে করা তোমার কমেন্ট থেকে,

ঠিক। আপনি যাঁর কথা বলছেন এই পোস্ট বিষয়ে ফেসবুকে তাঁর মন্তব্য ছিল, "কয়েক বছর আগে আমিও খাডাস এর মতো বিএসেফ এর কাজকে জাস্টিফাই করাটাকেই সমর্থন করতাম।"

'অনলাইন রাইটার্স কমিউনিটি সচলায়তন'-এ তোমার এই বারবার ফেসবুক -নামক একটি 'সোশাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম'এর রেফারেন্স টেনে আনাটা, (তাও আবার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনুমতি ব্যতিরেকেই!) আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে অনেকদিন ধরেই বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছে!
অবজারভেশন - ধ্রুব বর্ণন অবশ্য 'সচলায়তন'-এ করা কমেন্টেই ছিলেন, ফেসবুক-টুইটার-মাইস্পেসের রেফারেন্সে যান নাই।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কালো কাক এর ছবি

চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

১) ঠিকাছে, আর্মি শব্দটা সমস্যা হলে বাহিনী বা সেনা ওই জাতীয় কিছু ব্যবহার করা যেতে পারে। আমি আর্মি শব্দটা ১ ও ৪-এ ব্রডলি ব্যবহার করেছি সামরিক, আধাসামরিক সবধরনের বাহিনীকে একসাথে বোঝাতে। বিএসএফ একটা প্যারামিলিটারি ফোর্স, ইরম শর্মিলা চানুর ঘটনা যেটা থেকে শুরু সেটায় জড়িত ছিল আসাম রাইফেলস যারা আরেকটা প্যারামিলিটারি ফোর্স।

পয়েন্ট ১-এ ওই আলোচনাটার উদ্দেশ্য খানিকটা হতাশভাবে এই কথাটা বলা, যে আপনারা ভারতীয় (সামরিক/আধাসামরিক) বাহিনীর থেকে ভদ্র আচরণ চাইছেন, তারা নিজেদের নাগরিকের সঙ্গেই ভদ্র আচরণ করে না তো বিদেশীদের সঙ্গে! এদের উপর কড়া চাপ না পড়লে এরা শোধরাবে না।

২) ৪ নম্বর পয়েন্টের উদ্দেশ্য ওখানেই ধ্রুব বর্ণনকে বলেছিলাম, যে এটা ক্ল্যারিফাই করে দিতে চাই যে জিঙ্গোইজম আমার মধ্যে নাই, কারণ সন্দেহ ছিল সবুজ পাহাড়ের রাজা ওই লাইনে চলে যেতে পারেন। লাভ হল না, উনি সেই তাইই গেলেন।

৩) সচলে ফেসবুকের/ফেসবুকে সচলের প্রসঙ্গ আনা নিয়ে তোমার এই অস্বস্তিটাই বরং আমার ইন্টারেস্টিং লাগে!

ক) সচলও একটা ওপেন পাবলিক প্লেস, ফেসবুকও। (একটা ঘটনায় আমি প্রাইভেট প্রসঙ্গ এনেছিলাম, এবং সেজন্য দুঃখিত, কিন্তু সেটা এই আলোচনার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।) একদিকে যেমন সচলের মতন আরো অনেক ওপেন পাবলিক ব্লগ আছে, আমারব্লগ থেকে মুক্তমনা, ওদিকে ফেসবুকের মত নানা (অংশত) ওপেন পাবলিক সোশাল নেটওয়ার্কিং ফোরাম রয়েছে, টুইটার হ্যানত্যান। এদের যে অংশগুলো পাবলিক, সেগুলো নিয়ে পরস্পর স্থানে কথা বলতে সমস্যা কোথায়? তুমি কি চাও যে ফেসবুকে সচলের লিঙ্ক দেওয়া যাবে না, সচলে সবুজবাংলাব্লগের লিঙ্ক দেওয়া যাবে না? প্রতিটা পাবলিক প্লেসকে আলাদাভাবে ক্লয়স্টারড করে রাখতে হবে? কেন এই অদ্ভুত চাওয়া?
খ) এই বিষয়ে তো কোনো নিষেধ এমনকি নিরুৎসাহও নীতিমালায় করা নেই।
গ) মডুরা সচলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ফেসবুকের পাবলিক তথ্য ব্যবহার করেছেন, এমনটা খুব সম্প্রতিই ঘটেছে, তুমি দেখেছ। এখানে বিস্তারিত বলার প্রয়োজন নেই।
ঘ) আজকেই দিগন্তদা তাঁর লেখাতেও ফেসবুকের 'রেফারেন্স টেনে' এনেছেন। উদাসদা তাঁর রিসেন্ট লেখাটায় ফেসবুকে শয়ে শয়ে শেয়ার হতে থাকা পোস্টারটাকে 'টেনে এনেছেন'। একসময় সোনারবাংলা সবুজবাংলার অনেক 'রেফারেন্স টেনে' এনেছিলেন। আমি টুইটারের রেফারেন্সও টেনে এনেছিলাম একটা লেখায়। আমার এই লেখাটাও শুরু হচ্ছে ফেসবুকে শয়ে শয়ে শেয়ার হতে থাকা একটা ছবিকে ব্যবচ্ছেদ করার জন্যই। এগুলোতে তোমার কোনো আপত্তি নেইকো?

অরফিয়াস এর ছবি

সীমান্ত সংঘাত : একটি পর্যবেক্ষণের চেষ্টা

এই লেখাটা প্রাসঙ্গিক মনে হয় এই আলোচনায়, লিঙ্ক দিলাম। আগ্রহ থাকলে কেউ দেখে নিতে পারেন।

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

চলুক

বুঝতে পারলাম না গুরুত্বপূর্ণ আপনার এই লেখাটা এতো স্বল্পপঠিত কেনো!

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

অরফিয়াস এর ছবি

জানিনা। হাসি

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

১) আর্মি -'শব্দটা' নিয়ে সমস্যা মনে করিনি, আর্মির ইনভলভমেন্ট কতটুকু তা নিয়ে প্রশ্ন করেছি। বিএসএফ প্যারামিলিটারি ফোর্স, এটুকু আমিও জানি। কিন্তু বিএসএফ-এর মধ্যে এই মিলিটারি অংশটুকুর সংশ্লিষ্টতা কতখানি তা নিয়ে তুমি বিশেষ আর কিছু জানো কিনা তাই জানতে চাচ্ছি। মানে কমান্ড, ডিসিশন মেকিং এগুলা বিএসএফ নিজেই নেয়, নাকি সেগুলার উপরে আর্মির আলাদা প্রভাব থাকে। খেয়াল করো, বিএসএফ-এ থাকা আর্মি অফিসশিয়াল নন, বরং আলাদা করে ইন্ডিয়ান আর্মির প্রভাব আছে কিনা, তাই জানতে চাচ্ছি। বাংলাদেশ সীমান্তের কার্যাবলীর সাথে এই 'মিলিটারি' অংশটুকুর কী সংশ্লিষ্টতা?
আমার আগের মন্তব্যেই কিন্তু বলেছি যে বিএসএফ বাদে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে ভারতীয় অন্যান্য প্যারামিলিটারি ফোর্স বা সরাসরি আর্মি কোনটা নিয়েই আমি নিজে কনসার্নড নই, বা এ প্রসঙ্গে কোন পোস্টেই আলাপ হয়নি যতদূর মনে পড়ছে, সবই বিএসএফ-কে কেন্দ্র করেই ছিলো শুধু। তুমি কি পার্টিকুলার এই বিষয়ে আর্মি বা অন্য প্যারামিলিটারি ফোর্সের জড়িত থাকা টেনে এনে নতুন কোন একটা দিকে আলোকপাত করতে আগ্রহী? এ সংক্রান্ত কতটুকু তথ্য তাহলে তোমার কাছে আছে? এগুলাই জানতে চেয়েছি। সেরকম তথ্যাদি থাকলে সচল যারা লিখছেনএই প্রসঙ্গে তারা নতুন পোস্ট দিতে পারেন নতুন আঙ্গিকে।

২) তোমার ৪ নং পোস্টের আমি শুধু 'আর্মি' অংশটা নিয়েই জানতে চেয়েছি। জিঙ্গোইজম বা আর কিছু নিয়ে তোমার সাথে সবুজ পাহাড়ের রাজা বা ধ্রুব বর্ণনের আলাপের ব্যাপারে আমার কোন কিছু বলার বা জিজ্ঞাসার থাকলে আমি সেখানেই করতাম।

৩) 'অস্বস্তি' টার্মটা আমি ব্যবহার করি নাই তো! তুমি বললা। আমি শুধু বলেছি তোমার এই কাজটা আমার 'ইন্টারেস্টিং' লাগে। হাসি
খ), গ), ঘ) নিয়ে আমার মতামত নাই। গ) এর সাম্প্রতিক ঘটনায় কার বা কীসের কথা বলছো এইটা অবশ্য বুঝি নাই।
ক)

একদিকে যেমন সচলের মতন আরো অনেক ওপেন পাবলিক ব্লগ আছে, আমারব্লগ থেকে মুক্তমনা, ওদিকে ফেসবুকের মত নানা (অংশত) ওপেন পাবলিক সোশাল নেটওয়ার্কিং ফোরাম রয়েছে, টুইটার হ্যানত্যান। এদের যে অংশগুলো পাবলিক, সেগুলো নিয়ে পরস্পর স্থানে কথা বলতে সমস্যা কোথায়? তুমি কি চাও যে ফেসবুকে সচলের লিঙ্ক দেওয়া যাবে না, সচলে সবুজবাংলাব্লগের লিঙ্ক দেওয়া যাবে না? প্রতিটা পাবলিক প্লেসকে আলাদাভাবে ক্লয়স্টারড করে রাখতে হবে? কেন এই অদ্ভুত চাওয়া?

অদ্ভুত চাওয়াচায়ির ব্যাপার হবে কেন! ফেসবুক আর সচলায়তনকে আলাদা রাখতে হবে, অন্যান্য ব্লগের প্রাসঙ্গিক লিংক দেয়া যাবে না, এরকম কোন কথাও তুলি নাই। তবে ফেসবুক আর সচলায়তনের পার্থক্য করা যাবে কিনা, এইটার উত্তর আমার কাছে আছে। আর "পরস্পরস্থানে কথা বলতে গিয়ে সমস্যাটা কোথায়" এই প্রশ্নটা তুমি করবা বলেই আমি আমার আগের কমেন্টে সচলায়তনের আগে 'অনলাইন রাইটার্স কমিউনিটি' আর ফেসবুকের আগে 'সোশাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম' টার্মগুলা লিখেই দিয়েছি। হ্যাঁ, দুইটার মধ্যে সিগ্নিফিক্যান্ট পার্থক্য আমার বিচারে অবশ্যই আছে! সচলায়তনকে অন্য যে কোন ব্যক্তিগত ব্লগ বা কমিউনিটি ব্লগিং বা এমনকি বাংলাদেশের বা আমার জানামতে বাংলা আর কোন ব্লগের সাথে এক করে ফেলা যায় না, কারণ সচলায়তন নিজেই ডিফাইন করে দিয়েছে যে এইটা অনলাইন 'লেখক'দের সমাবেশ।
সচলায়তন 'আজকে শাক দিয়ে ভাত খাইলাম' টাইপ লেখা পোস্ট করে আড্ডাবাজি চালানোর উদ্দেশ্য নিয়েই করা লেখা পোস্ট করে না, এখানে মানুষ আসে যাচাই-বাছাই করা কিছু ভালো লেখা পড়তে, বা নিজের অনেক পরিশ্রম দিয়ে লেখা একটা জিনিস একটা বিশাল পাঠক ও অন্যান্য লেখকের সমাবেশের সাথে শেয়ার করতে। এখানে পোস্টে একটা কথা লেখা বা মন্তব্যে একটা আলাপে অংশ নেয়া মানে সেটার দায়-দায়িত্ব নিয়ে, প্রয়োজনে নিজের কথার যৌক্তিকতা ডিফেন্ড করার সামর্থ্য নিয়ে বলতে আসা। এই রেস্পন্সিবিলিটিটা এখানে কেউ চাক বা না চাক অটোমেটিক চলে আসে। আমরা লেখক-পাঠকরা বরং নিজেদের দায়ভার আছে সেটা মনে রেখেই মন্তব্যঘরে ইনফরমালি অনেক গল্প-গুজব করি এখানে মাঝেমাঝেই।
কিন্তু একটা সোশাল নেটওয়ার্কিং এর উদ্দেশ্যটাই গাদাখানেক মানুষের সাথে নেটওয়ার্কিং, লেখালেখি নয়। ফেসবুকে একটা জরুরি আর চমৎকার নোট লেখাও যেমন যায়, একটা 'আজকে লাল-জামা কিনে নদীর হাওয়া খেয়ে আসলাম' স্ট্যাটাসও দেয়া যায়। কোনটাকেই সচলায়তনের মডারেশন পার হয়ে প্রকাশিত একটা লেখার সাথে তুলনা করা যায় না, আমি করি না। ফেসবুকে আত্মীয়-কলিগ-বন্ধুদের সাথে ব্যক্তিগত লেভেলে গিয়ে যে আন্তরিক আড্ডাবাজি মশকরা বা ইনফরমাল আলাপ করা যায়, সচলায়তনের একটা পোস্টে আন্তরিক আড্ডাবাজি হলেও আমরা সেই এক্সটেন্টে এখানে সেটা করি না, বা সচেতনভাবেই একটা অলিখিত রেড লাইন থাকে। ফেসবুকে নিজের পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে কারও সাথে বাদ-বিবাদ যেভাবে করা যায়, এবং পরবর্তীতে তার দায় কেউ নিলেও পারি, নাও নিলে পারি, এখানে সেটা করা যায় না, সচলায়তনের নীতিমালার কারণেই। সচলায়তনে প্রতিটা পোস্টের বিবেচনা হয়, ঐ পোস্টের মেরিটেই। এইটাই হলো পার্থক্য।
সচলায়তন এখনো 9Gag এর মতো সাইটগুলাতে যেমন ফেসবুক লগ-ইন দিয়েই লোকে কমেন্ট করে, সেরকম অপশন রিসোর্স খাওয়া নাকি কী এরর হওয়ার কারণে একবার দিয়েও দেয়নি, ভবিষ্যতে দেবে হয়তো। তখনো মনে হয় দুইটা একই লেভেলে আসতে পারবে না। দুইটা আলাদা জায়গাই। দুই জায়গায় আলাপ করা তথ্য বা মন্তব্য আলাদাই ব্যাপার।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কৌস্তুভ এর ছবি

আর্মির এইসব কাজকর্ম?! চিন্তিত
বিএসএফ নিয়ে আলাপ চলছে নাকি (ভারতীয়) আর্মি নিয়ে?
... সীমান্তে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে যেহেতু ভারতীয় আর্মি না, বিএসএফকে নিয়েই কনসার্নড আমরা!

এতে মনে হয়েছিল বিএসএফের সাথে আর্মিকে গ্রুপ করায় তোমার আপত্তি আছে। তাই বলেছিলাম যে আর্মি এখানে আমব্রেলা টার্ম। সমস্যা না থাকলে ভালই। তোমার প্রথম মন্তব্যে সেটা স্পষ্ট হয় নি, তাই ওই ব্যাখ্যাটা করতে হল।

আর্মির সরাসরি ইনভল্ভমেন্ট আছে বলে মনে হয় না। বিশদে জানিনা।

এই বিষয়ে অন্যান্য মিলিটারি/প্যারামিলিটারি বাহিনীর প্রসঙ্গে টেনে এনে কী বিষয়ে আলোকপাত করতে চেয়েছি তা তো বললামই,
"পয়েন্ট ১-এ ওই আলোচনাটার উদ্দেশ্য খানিকটা হতাশভাবে এই কথাটা বলা, যে আপনারা ভারতীয় (সামরিক/আধাসামরিক) বাহিনীর থেকে ভদ্র আচরণ চাইছেন, তারা নিজেদের নাগরিকের সঙ্গেই ভদ্র আচরণ করে না তো বিদেশীদের সঙ্গে! এদের উপর কড়া চাপ না পড়লে এরা শোধরাবে না।"

******************

সচলায়তনের স্ট্রাকচার, আর তার কোয়ালিটি, এই দুটোকে মিশিয়ে ফেলছ কেন? স্ট্রাকচার অনুযায়ী সচলায়তনও আরেকটা কমিউনিটি ব্লগই। সবুজবাংলা ছাগু ব্লগ আর সচলায়তন প্রো-মুক্তিযুদ্ধ ব্লগ; বা সচলায়তন লেখক সমাবেশ আর সামুব্লগ আলফাল পোস্টে ভরা, এগুলো তাদের কোয়ালিটি বা প্রকৃতি বা চিন্তাধারা এগুলোর তফাত। কিন্তু স্ট্রাকচার হিসেবে সচলায়তন আর পাঁচটা ড্রুপাল-ভিত্তিক উন্মুক্ত কমিউনিটি ব্লগের থেকে আলাদা নয়।
এবং আমার মন্তব্যটা স্ট্রাকচার-সম্পর্কিতই। সচলে আমি যা পোস্ট/মন্তব্য দেব সেগুলো সবই উন্মুক্ত, যে-কেউই পড়তে পারে। (রেস্ট্রিক্ট ব্যতিক্রম।) আর সেটা প্রতিটা কমিউনিটি এমনকি ব্যক্তিগত ব্লগের ক্ষেত্রেও সত্যি।

এবং ফেসবুকও তাই। আমার পাবলিক প্রোফাইলে আমি যা স্ট্যাটাস দেব, সেখানে যা কমেন্ট আসবে, বা অন্য কারো স্ট্যাটাসে আমি যা কমেন্ট দেব, সেগুলোও অন্য সবাই পড়তে পারবে। (ভিউয়িং রেস্ট্রিকশন থাকলে হয়ত শুধু বন্ধুরা পারবে, কিন্তু মূল পয়েন্টটা এক।)

এবং এই পেপারগুলোতেও সোশাল নেটওয়ার্ক বা সোশাল মিডিয়ার মধ্যে ফেসবুক ফ্লিকার ব্লগ সবকিছুকেই ধরা হচ্ছে।

আর মূল কথা এই যে, যেকোনো উন্মুক্ত মাধ্যমেই অন্য যেকোনো উন্মুক্ত মাধ্যমকে রেফারেন্স দেওয়া যায় বলে আমি মনে করি। তার মধ্যে উন্মুক্ত সোশাল নেটওয়ার্কও পড়ে, অনলাইন নিউজ কনটেন্ট যেমন প্রথমালো থেকে বিবিসিও পড়ে, উইকি ইত্যাদি কনটেন্টও পড়ে।

*****

ফেসবুকে "লাল জামা কিনলাম" এইটা স্ট্যাটাস দেওয়া যায়, সামুতে এই একই কথা বলে পোস্টও দেওয়া যায়। সচলে যায় না সেটা তার কোয়ালিটির ব্যাপার, স্ট্রাকচারের নয়। আর নীতিমালাও ফেসবুকে আছে, কেউ পর্ন ছবি দিলে ব্লক খাবে। এই সোশাল নেটওয়্যার্কগুলো মূলগতভাবে সবাই স্ট্রাকচারালি সিমিলার। তাই সচলায়তনে ভালো লেখা আসে, এখানে নিছক আড্ডানো যায় না, এগুলো তার প্রকৃতিগত বৈশিষ্ট কেবল।

আর "দুইটা আলাদা জায়গা" তো অবশ্যই। ফেসবুক টুইটার নয়, টুইটার সচলায়তন নয়, সচলায়তন আমারব্লগ নয়। এটা তো একটা ট্রিভিয়াল স্টেটমেন্ট। তেমনই, "দুই জায়গায় আলাপ করা তথ্য বা মন্তব্য আলাদাই ব্যাপার" এটাও আরেকটা ট্রিভিয়াল স্টেটমেন্ট। অবশ্যই আমি এই পোস্টে তোমাকে কোনো প্রতিমন্তব্য করতে গিয়ে সেটা মাইস্পেসে করে আসব না।

আর এখনও এটা বুঝছি না, সচলের কোট যদি ফেসবুকে শেয়ার করাটা 'ইন্টারেস্টিং' না লাগে, সচলের অন্যান্য পোস্টে যদি ফেসবুকের প্রসঙ্গ আনাটা 'ইন্টারেস্টিং' না লাগে, যদি সচলে টুইটারের প্রসঙ্গ আনাটা 'ইন্টারেস্টিং' না লাগে, তাহলে খালি আমার এই বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ফেসবুকের প্রসঙ্গ আনাটাই 'ইন্টারেস্টিং' কেন?

সজল এর ছবি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

অতিথি লেখক এর ছবি

সীমান্তের অবস্থা যে এতটা খারাপ জানা ছিল না। ৪-৫ হাজার মানুষ মারা তো রীতিমত গণহত্যা। আমাদের অপদার্থ সরকারগুলো দেশের চিন্তা করলে এসব এড়ানো যেতো। বিএসএফের বিরুদ্ধে আর্ন্তজাতিকভাবে কোন অ্যাকশান নেয়া যায় না?

তথ্য বহুল পেস্টে জন্য রাজা ভাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। কোন পত্রিকায় ছাপার ব্যবস্থা করেন। মানুষের সত্যটা জানা উচিত।

- হাসান শাকুর।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।