ব্যস্ততার কারণে নিয়মিত ব্লগ দেখা হয়না। তাই এই প্রসঙ্গে সম্প্রতি আলোচনা হয়েছে কিনা জানিনা। তবু কিছু লিখতে ইচ্ছে করছে, লিখছি; লিখতে তো দোষ নেই।
বেশ কিছুদিন ধরেই দিন বদলের হাওয়া টের পাচ্ছি। তবে প্রথম আলোর শুরু করা ক্যাম্পেইনটাই বেশী নজর কাড়ছে। রেডিওতে প্রতিদিনই বিভিন্ন মানুষের শপথের নমুনা শুনতে পাচ্ছি। এর মাঝে গতকাল এই লিফলেটটি আমার হাতে এলো।
বুদ্ধিটা ভালো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের হাতে লিফলেট এর দ্রুত বিস্তার চোখে পড়ার মত। কিন্তু আমার বেশীরভাগ প্রকৌশলী বন্ধু যা করলো তা হচ্ছেঃ "লিফলেট দিয়ে প্লেন বানিয়ে উড়ানো"।
দেখে বিরক্ত হলাম। আমার ভাবখানা এমন যে এরা দেশ ও সমাজ সম্পর্কে কতটাই উদাসীন। কিন্তু আমি নিজে কি করেছি? কিছুই না। একটু আগে পর্যন্ত আমি কোন শপথ নিয়ে চিন্তাও করিনি।
একটা কথা আছে, "Never make a promise you can't keep!"। ঠিক কিনা? যদি পালন করতেই না পারি, তবে প্রতিজ্ঞা কেন? নাকি কবিগুরুর লেখায় হৈমন্তীর বাবার মত করে বলবোঃ "মানুষ পণ করে তা ভেঙ্গে ফেলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচার জন্য!"
জানি না কি করা উচিত ও কি করা সম্ভব। তবে এটা জানি যে আমাদের সবারই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে ভালো কিছু করার সুযোগ সবসময়েই ছিলো, আছে, থাকবে। কিন্তু আমরা সে ব্যপারে উদাসীন। আমি নিজেও স্বার্থ ছাড়া কিছু করেছি বলে মনে পড়ছে না। তবুও ইচ্ছে হচ্ছে কয়েকটা শপথ নিতে। দেশের কি হলো সেটা নিয়ে চিন্তা করার মত সাহস এখন নেই। অনেকটা আত্নশুদ্ধির চেষ্টা বলা চলে। তালিকাটা সময়ের সাথে বাড়বে আশা রাখি।
১) রোজ রাতে দাঁত মাজবো (হা হা হা... আমি এই ব্যপারে এখনও উদাসীন)
২) বাবা-মায়ের মুখে হাসি ফোটাবো (তাঁদের স্বপ্ন অনেক)
৩) সময়ের সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করবো (এখনও সময় এর দাম জানি না)
৪) বন্ধুর দূর্বলতার সুযোগ নেবো না (এখনও নিই না, তবে কু-চিন্তা মনে আসে)
৫) প্রেম-জ্বরে কাতর হবো না (আফসোস)
জানি না নিজেকে বদলাতে পারবো কিনা, তবে চেষ্টা করতে দোষ আছে কি?
মন্তব্য
এই শপথের ব্যাপারটা অনেকে বাঁকা চোখে দেখে।
আমার তো মনে হয় ঠিকই আছে।
আর কিছু না হোক নতুন একটা 'আক্টিভিটি' তো হলো। আমাদের সবকিছুই তো আজকাল বৈচিত্র্যহীন।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
লোক দেখানো শপথ আমারও পছন্দ নয়। তবে প্রচেষ্টা থাকা উচিত। অপরকে উৎসাহিত করাও কম কিছু নয়।
______________________________________
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়
______________________________________
লীন
আমার মনে হয়, প্রথম আলোর হর্তাকর্তাদের কোন শপথ বা আদৌ বদলে যাবার অঙ্গীকার ঘোষিত/লিপিবদ্ধ হয়নি বলেই মানুষ বাঁকা চোখে দেখে। আর যেখানে সংবিধান খুলে রাষ্ট্রপতি শপথ পাঠ করান তাবৎ মন্ত্রী-সাংসদ-বিচারপতিদের, সেখানেই কত গলদ রয়ে যায়!
কথা সত্য। প্রথম আলোর বর্তমান মান সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না। আমি শুধু আত্নশুদ্ধির চিন্তা নিয়ে মাথা কুটছি।
______________________________________
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়
______________________________________
লীন
হুম!!
তুই ভালো হয়ে যাচ্ছিস রে!!! লীন ঃ(
এখনও হইনি রে। হতে চাই। স্বপ্নের লাগামটা ধরে নিই আগে...
______________________________________
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়
______________________________________
লীন
ভাল উদ্যোগ বলতেই হচ্ছে।
ভাল কোনও শপথ এখনো খুঁজতেসি।
------------------------------
--------------------------------------------------------
খুঁজে পাওয়া মাত্রই জানাবেন আশা রাখছি।
______________________________________
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়
______________________________________
লীন
বদলে যা , বদলে দে
নিজে বদলে যাচ্ছি। অন্য কিছু বদলাতে পারবো বলে আশা করি না।
______________________________________
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়
______________________________________
লীন
আচ্ছা, শপথ করে লাভটা কী হবে ? মানে কেন আমাকে শপথ করতে হবে ? শপথের গুরুত্বটা এমন কী যে, মানুষজন শপথ করে রাতারাতি পালটে যাবে ? আর শপথের আর আগে কি মানুষ ভালো কাজ করতো না ?
অন্য কেউ করলে হয়তো আপত্তি থাকতো না, কিন্তু নামটা যখন প্রথম আলো তখন পিত্তি জ্বলা ছাড়া কিছু করার থাকে না। যে পত্রিকার সম্পাদক একজন নির্দোষ কার্টুনিস্টকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়, নতজানু হয় একদল ধর্ম ব্যবসায়ী কাঠ মোল্লার কাছে, তার কাছ থেকে আর যাই শুনি বদলে যাবার অঙ্গীকার শুনতে রুচি হয় না।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
একমত
______________________________________
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়
______________________________________
লীন
এই ব্যপারটা নিয়ে একটু দ্বিমত পোষণ করি ... ঐ মূহুর্তে সরকার (বা সেনাবাহিনী) প্রথম আলোর পক্ষে দাঁড়াতো না ... বিমানবন্দর ভাস্কর্য নিয়ে মোল্লাদের হুমকির মুখে সরকারের লেজ গুটানোর কথা মনে আছে নিশ্চই, কাজেই প্রথম আলো যদি মোল্লাদের কাছে মাথা নত না করতো তাহলে সরকারের তরফ থেকে প্রথম আলোর উপরে নিষেধাজ্ঞা আসাটা অবাস্তব ছিল বলে আমার মনে হয় না ... এই অবস্থায় প্রথম আলো সম্পাদকের হাতে বিকল্প কি ছিল বলে মনে হয়? প্রথম আলোর উপর নির্ভরশীল মানুষ তো একেবারে কম না, তাদের সবার রুটি-রুজি নিয়ে ঝুঁকি নেয়া কি মতিউর রহমানের পক্ষে সম্ভব ছিল?
আর পরে অমি রহমান পিয়ালের নেয়া কার্টুনিস্ট আরিফের সাক্ষাৎকার দেখে তো মনে হল যে প্রথম আলো তার কথা পুরাপুরি ভুলে গেছে এমন না, পরিস্থিতি একটু ঠান্ডা হওয়ার পর প্রথম আলোই তাকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করেছে ... জেলে তার সেল বদল করা, উকিলের খরচ দেয়া এগুলির পেছেনেও প্রথম আলো ছিল বলে কোথাও পড়েছিলাম [রেফারেন্স দিতে পারছি না এই মূহুর্তে, কোন একটা ব্লগেই এমন কিছু একটা এসেছিল] ...
[ডিসক্লেইমারঃ প্রথম আলো নিয়ে আমার কোন অবসেশন নাই, প্রথম আলো পড়ি কারণ এর চেয়ে ভাল বিকল্প এখনও পাই নাই, অন্য কোন পত্রিকা এর চেয়ে ভালো মনে হলে বিনা দ্বিধায় সুইচ করবো ...]
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
এতোই যদি নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভাবতে হয়, তবে সত্য প্রকাশে নির্ভীক বলে যে দাবি তারা করে থাকে, তাহলে তার কতটুকু যুক্তিযুক্ত হয় ? এতোটা আপোসকামী মনোভাব থাকলে কী একটা পত্রিকা থেকে এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করা যায় ?
আমি যতদূর জানি নিজ এজ পত্রিকাটা গত তত্বাবধায়ক সরকারের সময় যথেষ্ট সাহসী ছিলো, যার ছিটে ফোটাও প্রথম আলো দেখাতে পারে নি। নিউ এজের সম্পাদক সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা না থাকলেও আন্দাজ করতে পারি, তার সততা এবং নীতিবোধ প্রথম আলোর সম্পাদকের চেয়ে উন্নত। প্রথম আলো তো তেমনই পত্রিকা যারা ২০০১ এর নির্বাচনের কারচুপির খবর দেয়, ২০০৮ এর নির্বাচনের এক মাস আগে ( নিজেরাই স্বীকার করে যে এই তথ্য অনেক আগেই ছিলো)। কেন তারা জোট সরকারের আমলে এই তথ্য প্রকাশ করে নি ? উত্তর সোজা, তারা আপসকামী।
হয়তো প্রায় সবাই-ই আপসকামী, কিন্তু প্রথম আলোকে বিরক্ত লাগে কারণ তারা ভণ্ডামির একটা মুখোশ নিজেদের মুখে জড়িয়ে রাখে। কৃতকর্মের জন্য লজ্জাবোধ থাকলে এসব নিয়ে লাফালাফি কম করতো। কিন্তু তাদের কাজকর্ম একদমই চোরের মায়ের বড় গলা।
আর সেই কার্টুনিস্টের জন্য তারা যদি আদৌ কিছু করে থাকে, তবু তাতে কিছু প্রমাণিত হয় না। কারণ এসব তাদের অবশ্য কর্তব্য ।তাদের জন্য বিনাদোষে একটা ছেলে কতগুলো দিন জেল খাটলো - আমাদের এই দেশে জেল খাটা একটা ভদ্রছেলের ভবিষ্যত কী হতে পারে সেটা নিশ্চয়ই আমরা সবাই জানি।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
কিন্তু আপোষহীন হতে গিয়ে যদি এত বড় একটা এস্টাবলিশমেন্টের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়, এত এত এমপ্লয়ীদের চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়ে, তাহলে আপোষ করার চেয়ে ভালো আর কোন বিকল্প হাতে থাকে কি? মতিউর রহমান যদি একা হতো, তাহলে কাজটা দিয়ে তার চরিত্র বিশ্লেষণ করা যুক্তিযুক্ত হতো; কিন্তু তার সিদ্ধান্তের উপর যখন তার প্রতিষ্ঠান, তার কর্মচারীদের ভাগ্য নির্ভর করে তখন মনে হয় অন্য দিকটাও চিন্তা করা উচিৎ ... আমার মনে হয় না একই রকম পরিস্থিতিতে আমরা কেউই খুব বেশি আলাদা আচরণ করতে পারতাম, ব্লগে যাই বলি না কেন ...
নিউ এজ সম্পর্কে আইডিয়া নাই, আর প্রথম আলো নিখুঁত সেটাও দাবী করবো না ... তবে এই মাফ চাওয়ার ব্যপারটা নিয়ে যে অভিযোগটা সেটা ঠিক মানতে পারলাম না ...
তোমার কথা ঠিক, মুখোশ সবাই পরে ... আমার মনে হয় প্রথম আলোরটা চোখে পড়ে বেশি কারণ তাদের আকার অন্যদের চেয়ে বড় তাই ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
ব্যাপারটা এইভাবেও দেখতে পারেন - প্রথম আলো দেশের মোটামুটি শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর পছন্দের পত্রিকা, দেশের প্রগতিশীল গোষ্ঠীকে প্রতিনিধিত্ব করে। কাজেই সেই পত্রিকার সম্পাদক যখন হাঁটু গেড়ে কতগুলি কাঠমোল্লা, ধর্মান্ধ, যুদ্ধাপরাধীর সামনে ক্ষমা প্রার্থনা করে, তখন পরাজিত হয় দেশের সমগ্র প্রগতিশীল মানুষেরা। এই ঘটনা দেশের ধর্মান্ধগোষ্ঠীর কাছে বলার মত মাইলস্টোন হয়ে থাকলো, ব্লাসফেমি ঘরানার লোকের মারনাস্ত্র হয়ে থাকলো। একটা পত্রিকা কখন সত্যিকারের পত্রিকা হয়ে উঠে- নিঃসন্দেহে যখন সে আপোষহীনভাবে খবর পরিবেশন করতে পারে।
যদি ব্যক্তিস্বার্থ মাথায় রেখে এই আপোষ করে থাকে, তবে প্রথম আলোর এইটুকু লজ্জা ভিতরে রাখা উচিত যে, দেশের মানুষকে লাইনে আনার কিংবা শপথ পড়ানোর উদ্যোগ নেওয়ার তারা কেউ না।
সম্পূর্ণ উদ্যোগটা খুবই সাধুবাদের যোগ্য হতো, যদি উদ্যোক্তা প্রথম আলো না হতো। এ ছাড়া এর পেছনে প্রথম আলোর উদ্দেশ্যগুলি নিয়েও আলোচনা আজ সর্বত্র। কাজেই কোনমতেই এই শপথকে আসলে একটা মশকরা ছাড়া কিছুই বলতে পারছি না।
আমার কথাটা একটু ভুল বুঝেছেন। আমি বলিনি মুখোশ সবাই পরে, আমি বলেছি আপোষ সবাই করে, কিন্তু প্রথম আলোর মত মুখোশ সবাই পরে না। আমার আপত্তি, এই ভালো সাজার খেলা নিয়েই।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
একমত, খুবই দুঃখ পেয়েছিলাম ছবিটা দেখে, কিন্তু আমি সম্পাদকের চেয়ে সরকারের দায়টা বেশি দেখি ... গ্যালিলিওকেও চার্চের কাছে মাথা নত করতে হয়েছিল, একটা পর্যায়ে আপোষ করা ছাড়া উপায় থাকে না [ডিস্ক্লেইমারঃ প্রথম আলোকে গ্যালিলিওর সাথে তুলনা করি নাই কিন্তু ]
ব্যপারটাকে অন্যভাবেও দেখা যায়, বিশুদ্ধ মানুষ খুঁজে বের করে তারপরে যদি তাকে দিয়ে শপথ পড়াতে হয় তাহলে বিশুদ্ধ মানুষ খুঁজতেই সময় শেষ হয়ে যাবে, কাজ আর শুরু হবে না ... তারচেয়ে কাজটা যদি ভালো হয় তাহলে ইতিহাস ঘাঁটার দরকার দেখি না [আবার ডিস্ক্লেইমারঃ ভালো কাজ কথাটা জেনারেল টার্মিনোলজিতে বললাম, শপথ অভিযান ভালো কি খারাপ না অর্থহীন সে আলোচনায় যাচ্ছি না ...]
দুঃখিত, খেয়াল করি নাই ... তবে আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ বলে মুখোশ সবাই পরে, কারোটা ছোট কারোটা বড় কারোটা দেখা যায় আর কারোটা দেখা যায় না এইটুকুই পার্থক্য ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
সরকার তো এখানে আলোচনাতেই নেই। এই ঘটনায় সরকারের ইন্ধন বিশেষত উপদেষ্টা মইনুল হোসেনের হাতের কথা সবচেয়ে বেশি শোনা যায়। ইত্তেফাক এবং প্রথম আলোর বিজ্ঞাপন জনিত প্রতিযোগিতা সহ নানা পূর্বশত্রুতার কথা অনেকেই বলে থাকেন। যদিও আমাদের অনেকেই বিশাল তৃপ্তির ঢেকুর তুলেন এইসব শিক্ষিত এবং বেনিয়া উপদেষ্টাদের নিয়ে, কিন্তু আমি এখানে ভালো কিছুই কখনো দেখি নি এবং দেখার কারণও খুঁজে পাই না। তাই সরকারকে আমি আগেই ডিসকোয়ালিফাই করে রেখেছি।
শপথ কাজটা না হয় ভালোই ধরে নিলাম। কিন্তু সেই ভালো কাজটা যারা করছে তারা আসলেই ভালো মনে কাজটা করছে কি না, সত্যিকারের সৎ উদ্দেশ্য নিয়ে করছে কিনা এটা যাচাই করাও কি জরুরী না ? এটা মোটামুটি ওপেন সিক্রেট যে, প্রথম আলোর এই ক্যাম্পেইনের মূল উদ্দেশ্য একটাই, শো-অফ। যে কোন কিছু করেই তারা আলোচনায় থাকতে চায়। এসিডদগ্ধদের জন্য প্রথম আলো যে কাজটা করেছে, সেটার প্রশংসাও করতাম হয়তো, কিন্তু বছর দুয়েকেরও বেশ কিছুটা আগে যখন একটা কাজে অনেকগুলি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানীসহ মিডিয়া রিলেটেড বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা বলেছি, তখন খুব বিস্ময়করভাবে একটা কথা অনেকের কাছেই শুনেছি - প্রথম আলো এসিডদগ্ধদের ফান্ডের বেশ কিছু টাকা তছরুপ করেছে। হতাশ হয়েছিলাম।
আচ্ছা ধরেই নিলাম, মুখোশ সবাই পরে। তবু বলি, মুখোশ পরে বাইরে এসে সবার সামনে এতো নাচানাচি করাটাও মনে হয় শোভন না।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
ছেলেটা দুর্ভাগা, সে পরিস্থিতির শিকার ... সে জেল না খাটলে অবশ্যই সব দিক দিয়ে ভালো হতো, কিন্তু তার পক্ষ নিতে গিয়ে বাকি সবার চাকরি খোয়ানো কি ভাল হত? এই দেশে চাকরি হারানো একটা মিডল ক্লাস ফ্যামিলির কি অবস্থা হয় সেটাও নিশ্চই আমরা জানি ... প্রথম আলো যা করেছে তা অবশ্যই আপোষ, কিন্তু সেটার জন্য ঢালাওভাবে মতিউর রহমানকে দোষ দিতে পারলাম না, দুঃখিত ... দোষ যদি দিতে হয় সেটা সরকারকে, সরকার কেন মোল্লাদের দেখলে ভয়ে ল্যাজ গুটায়? ছাত্র পিটানোর সময় তো ভয়-ডর থাকে না ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
আমার মনে হয় না এতো সহজেই বন্ধ করে দিতে পারতো সরকার। এমন কিছু সরকার করতে হলে অবশ্যই এক ধরনের কালচারাল রেসিস্ট্যান্সের মুখে সরকারকে পড়তে হতো, যেমনটা হয়েছে মূর্তি পাচারের পরবর্তী সময়ে কতিপয় বরাহনন্দন উপদেষ্টাকে।
আমি বুঝি, প্রথম আলোকে যে ঝুঁকির মুখে পড়তে হতো প্রথম আলোকে, তার কথাই বলছেন। কিন্তু সত্যি করে বলেন তো, অন্ধ হলে কি প্রলয় বন্ধ থাকে ? এই ঝুঁকি, এই কনফ্লিক্ট কি একদিন আসবে না এই দেশে ? প্রথম আলোর মত বড় প্রতিষ্ঠান যখন লড়াই না করে ল্যাজ গুটিয়ে পালায়, তখন আসলে এই ভবিষ্যত কনফ্লিক্ট আরো ত্বরান্বিতই হয়। আমি আবারো বলি, আপোষ যদি করতেই হয়, তবে পত্রিকা চালিয়ে লাভ কী ? আর এই পত্রিকার খবরই বা আমরা কীভাবে বিশ্বাস করবো ? কীভাবে বুঝবো যে আজকের পত্রিকার খবরগুলিও কোন আপসের ফসল না ?
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
মূর্তি কিন্তু সরকারই সরায়ে নিছিলো, মোল্লারা না ...
সবার লড়াই করার একটা ক্ষমতা আছে, একটা প্রতিষ্ঠান যা করতে পারে একটা মানুষ ততটুকু পারে না ... আবার এক একটা মানুষ যে ঝুঁকি নিতে পারে একটা প্রতিষ্ঠান ততটুকু পারে না ... এট দ্য এন্ড অভ দ্য ডে, প্রথম আলো একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই ...
আমি আবারো বলি, প্রথম আলো কোনভাবেই আদর্শ কোন প্রতিষ্ঠান না, তাদের দোষ বা দুর্বলতা বা সুবিধাবাদীতা আছেই; কিন্তু এই কেইসটায় তোমার সাথে আমার দৃষ্টিভংগী মিলছে না, এইটুকুই ...
................................................................................................
খাদে নামতে আজ ভয় করে, নেই যে কেউ আর হাতটাকে ধরা ...
একমত@ সবজান্তা
আপনার সঙ্গে আরেকটু যোগ করে বলি: এই লোক দেখানো 'মহৎ কাজটি'কে আমি স্রেফ ভাণ্ডামী হিসেবে দেখছি। কারণ, প্রথম আলো কোনো কমিউনিস্ট পার্টি নয় যে তাঁকে সমাজ সংস্কারের/ বদলের ভূমিকায় নামতে হবে। আসলে তারা এই সব করছে, নেহাত বাণিজ্যিক কারণে, পত্রিকার কাটতি বাড়ানোর জন্য।
একইভাবে প্রথম আলোর ভাষাযোগ প্রতিযোগিতা, গণিত উৎসবসহ বিভিন্ন 'ভালো কাজের' (যা কিছু ভালো, তার সঙ্গে প্রথম আলো?) নেপথ্যেও রয়েছে ব্যবসায়িক বুদ্ধি।
আর ওবামার পর হাসিনা সরকার, বাংলা লিংকের বিজ্ঞাপন হয়ে প্রথম আলোর 'দিন বদলের' এইসব হাতুড়ি, শাবল. দা, কুড়াল, ছুরি-কাঁচির দক্ষ-যজ্ঞও পেছনে যে পরিমান অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তা দিয়ে কয়টি স্কুল বা হাসপাতাল তৈরি করা যেতো, তা-ও সবাইকে ভেবে দেখার অনুরোধ জানাই।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
সুন্দর বলেছেন। নিজের লাভ তথা ব্যবসা সবাই বুঝে।
আর ওবামা মামার বুদ্ধিটা জোশ ছিলো, সবাই এখন দিন বদলায়।
______________________________________
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়
______________________________________
লীন
আমার এক বন্ধু বাংলাদেশের হয়ে ব্রাজিল-কে প্রায়ই ১২ গোল দিত। বাস্তবে না; ভিডিও গেমে। তার দেশপ্রেমে আমি এখনও মুগ্ধ। দেশের বা মানুষের লাভ হোক না হোক সে অনেক আনন্দ পেত ঐ গেমে।
সেই রকম সময় কাটানোর জন্য এটা একটা ভালো উদ্যোগ।
আর এই "প্যাকেজ সময়ে" শপথটাও না হ্য় প্যাকেজ হল।
মসল্লার প্যাকেজ (প্যাকেট)
শিশু গান প্যাকেজ (শিশুরাও দেখি এখন বড়দের গান গায়; যদিও গায়ক মনে না হয়ে শিশু-শ্রমিক মনে হ্য়)
দরিদ্র গান প্যাকেজ (শ্রমিকের গান দিয়ে শ্রমিকের পকেট খালি করার ভন্ডামি)
ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রাইমারী আর হাইস্কুলের শপথগুলো যথার্থ ছিল ও আছে বলেই মনে হয়। সেটাকে কী এজন্য প্যাকেজ বানাতে হবে যে, বয়সের সাথে সাথে তার রং ফিকে হয়ে আসে। আহা,শপথ না পেলে বুড়োদের কী হবে!
নদী
এই প্যাকেজ এর উদ্দেশ্য জানি না, জানতেও চাইনা। চাই সবার সচেতনতা আর মূল্যবোধের উন্নতি।
______________________________________
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়
______________________________________
লীন
নিজের পরিবর্তন বাদ দিয়ে সমাজের পরিবর্তন অসম্ভব। অসংক্ষ ব্যক্তিগর পরিবনর্তন মানেইতো সমাজে পরিবর্তন। ব্যক্তিগত পরিবর্তনের কথা আমি যখন বলি তখন আমি ক্ষুদ্র পরিবর্তনকের বুঝাই।
আপনার সকল পরিবর্তন কল্যান বয়ে আনুক, এই সমাজে দম বন্ধ হয়ে আসে, আসেন সবাই মিলা দেশটারে বদলাইতে না পারলেও নিজেরে একটু কইরা বদলাই, তাতে সামান্য যে উন্নতি তা তুচ্ছ করার মত না।
বদলের জয় হউক, স্বপ্নের জয় হউক, মানুষগুলো পূর্ণ মুক্তি পাক!! লীন ভাইজান থামস আপ!!
ধন্যবাদ ভাইয়া। তোমার লেখাগুলোতেও অনেক সুন্দর স্বপ্নের ছোঁয়া থাকে। তুমিও লেখা শুরু করে দাও এখানে।
______________________________________
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়
______________________________________
লীন
পত্রিকা যদি ঠিকঠাক আর সত্য সংবাদ প্রকাশ করে। কোনো গোষ্ঠীতন্ত্র না চেটে, তাইলে এমনিতেই দেশ বদলে যাবে। জনে জনে শপথ করাতে হবে না।
প্রথম আলোর শপথ করা উচিত নিজের গোষ্ঠীর বাইরের বাংলাদেশটারে চেনার... দেশে যে ১৫ কোটি মানুষ আছে, সেটা তাদের আগে বুঝতে হবে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
সেই আশা করতে ভয় হয়।
সবার মাঝেই ব্যবসায়িক মনোভাব চোখে পড়ছে।
______________________________________
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়
______________________________________
লীন
বদলে যাবার স্লোগানের এই পোগ্রাম এখনি বদলে ফেলা উচিত প্রথম আলোর। যা যা পয়সা এই পোগ্রামের পেছনে ঢালার কথা সেটা "আইলা" আক্রান্ত মানুষকে দেওয়া হোক। এই আমার কামনা।
তবে প্রথম আলো বদলে যাবে না। পুরাটাই লোক দেখানো ভন্ডামি। সস্তা প্রচারণা। আর কিছু না।
আমাদের এই কামনা তো প্রথম আলোর ধারেকাছেও যাচ্ছে না ভাই...
______________________________________
কি জানি কিসের লাগি প্রাণ করে হায় হায়
______________________________________
লীন
নতুন মন্তব্য করুন