এইরকম শীত শীত দুপুরগুলোয় কোল পেতে আরো বেশি শীত টেনে নিতে ইচ্ছে করে। হাতের আঁজলা ভরে বেশ খানিকটা শীত তুলে নিয়ে মুখে মাখিয়ে ঝরঝরে রোদে ঘুরে বেড়াতে ইচ্ছে করে।
কাগজে কলমে সামার এখন। কিন্তু আচমকা কোত্থেকে যে শীতের বুড়ি এসে এইখানে বেশ করে চাগিয়ে বসলো, কে জানে! কদিন আগেও গরমে মাথার তালু চিড়বিড় করে উঠতো, টেম্পারেচার ছিল ৩৮, ৪০। এখন সেখানে দেখায় নীরিহ নিপাট ১২, অথবা খুব বেশি হলে ১৪। রাতের বেলা গায়ের উপর আয়েশী কম্বল টেনে নিলে নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ বলে মনে হয়। কিন্তু হায়, সকাল বেলা আমীররে তুই, ফকির সন্ধ্যাবেলা। সেই কাক-না-ডাকা ভোরে যখন সেই কম্বল ঠেলে উঠে কাজে যেতে হয়, মনের ভেতর ভীষন রাগ চেপে যায়, ইচ্ছে করে এখুনি দেশের টিকেটের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া শুরু করি।
তা আর হয়ে ওঠে না। লাট্টুর মতন ঘুরতে ঘুরতে জীবন কাটাতে থাকি, প্রতি দিনকার বাঁধা ধরা পৌনপুনিকতায়।
*
ওজন বেড়ে যাচ্ছে সাংঘাতিক ভাবে। খাওয়া কমাতে পারি না, তাই ওজন ঠেকাতে একটা ব্যায়ামের যন্তর কেনা হলো। কিন্তু সেটা দিয়ে আর কিছু করা হয়ে ওঠে না। রোজ সকালে উঠে সেই মেশিনটার দিকে ঘড়ি ধরে তিন মিনিট তাকিয়ে থাকি। ব্যস, তাতেই কেমন হাস ফাঁস লেগে ওঠে। তারপরে পাশে রাখা স্কেলে উঠে দাঁড়িয়ে নিজের ক্রমবর্ধমান ওজন নিয়ে চিন্তায় পড়ে যাই।
ইদানীংকালের পত্রিকা পড়ে একটা ব্যাপার খেয়াল করলাম, আমার নিজের ওজনের সাথে বাংলাদেশের চাল-ডালের দামের রয়েছে অত্যাশ্চর্য মিল! এই দুটাই একবার বেড়ে গেলে সহজে আর কমে না। ক্রমশ বাড়তেই থাকে।
মিল খুঁজে পেয়ে আপাতত আমার ওজন মাপা বাদ দিয়েছি। কোন লাভ নেই। বরং চালের দাম কমলে কেউ একজন আমাকে জানিয়ে যাবেন এখানে, প্লীজ। সেদিনই না হয় আবার মেপে দেখবো।
*
অস্ট্রেলিয়ান ওপেন হয়ে গেলো ক'দিন আগে।
কোন এক কালে, যখন কুর্নিকোভাদের টেনিস কোর্টের এমাথা থেকে ওমাথায় হরিণীর মতন ছুটোছুটির অভ্যাস ছিলো, আমার মতন টেনিস বিশেষ-অজ্ঞও তখন টিভির পর্দায় চোখ লেপ্টে বসে থাকতাম।
এখন আর সেই যুগ নাই। তারপরেও অল্প বিস্তর দেখি, খেলোয়াড় বেছে বেছে অবশ্যই।
মারিয়া শারাপোভাকে নিয়ে কদিন বেশ লেখালেখি হলো দেখলাম। আমি প্রায়শই ভাবতাম, এই সুন্দরী মেয়েটা প্রতিবার শট নেবার সময় কেন যে ওরকম ষাঁড়ের মতন চেঁচিয়ে ওঠে!
সেদিনের পত্রিকা খুলে দেখি জম্পেশ কাহিনি। মারিয়া'র চিৎকার মাপা হয়েছে, সবচেয়ে জোরে যেটা ছিলো- তার পরিমাপ ৭২ ডেসিবেলের কাছাকাছি।
এইটুকু বললে অবশ্য বেশি কিছু বোঝার উপায় নেই। পত্রিকায় তাই গ্রাফ এঁকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে- একটা মাঝারি মানের ভ্যাকুয়াম ক্লিনার সর্বোচ্চ শব্দ করে ৭০ ডেসিবেলের মতন। আর একটা পাওয়ার ড্রিলের জন্যে সেটা হয়ে যায় ৮০ ডেসিবেল! মারিয়া শারাপোভা রয়েছেন এই দুইয়ের ঠিক মাঝামাঝি!
আচ্ছা, আপনাদের কারো কি ষাঁড়ের চিৎকারের পরিমাপ জানা আছে? জানলে..., একটু মিলিয়ে দেখতাম আর কি!
*
(এই লেখাটার শিরোনাম কি দিবো এই নিয়ে খানিক ভেবে টেবে শেষমেষ দিলাম হাওয়াই মিঠাই।
দিল্লী কা লাড্ডু দিলে সবচেয়ে ভালো হতো, গুণে মানে তার চেয়ে এটা উন্নতমানের কিছু নয়। যো খায়েগা ও পস্তায়েগা, যো নেহী খায়েগা ও ভী পস্তায়েগা।
তো পস্তানোর জন্যে আপনাদের দিল্লীতে পাঠিয়ে দেয়াটা একটু পাষানীয় কান্ড হবে বিধায় তা আর দিলাম না।
আপাতত না হয় হাওয়াই মিঠাই খেয়েই পস্তান! )
মন্তব্য
রোজ সকালে উঠে সেই মেশিনটার দিকে ঘড়ি ধরে তিন মিনিট তাকিয়ে থাকি। ব্যস, তাতেই কেমন হাস ফাঁস লেগে ওঠে।
হা হা হা!
এইটা তো দারুন ব্যাপার!! মজা পেলাম খুব।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
শারাপোভাকে নিয়ে অজানা তথ্য জানতে পারলাম।
বেশ মজা পেলাম
---------------------------------
-মহিব
ভাবসাব দেখে মনে হইল "উনি একজন মানুষ"
ওজন বাড়া নিয়ে ভাববেননা।
ও বাড়ারই জিনিস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
বেশ কয়েক বছর হয়েছে আমাদের বাড়ির ট্রেডমিলের বয়স। সর্বসাকুল্যে ব্যবহার হয়েছে ৪-৫ দিন। এখন সেটা আলনা হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সারাক্ষণ দেখি কাপড়চোপড় ঝোলানো থাকে। এতো দামি আলনার মালিক হবো, কোনোদিন ভাবিনি। নিজের সৌভাগ্যকে তাই ধন্যবাদ দিই।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
হা হা।
অনেক আগ্রহ করে কেনা অ্যাব-কিন মেশিনটাও এখন আমার আলনা। শার্ট ঝোলানোর জন্য এমন পারফেক্ট জায়গা ঘরে আর নেই। অন্যান্য জামা কাপড় তো আছেই।
সানিয়া মীর্জারে দেখেননা কেন?
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আলবাবে ঠিক কইসেন
---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
ব্যায়ামের সব যন্ত্রেরই শেষ গন্তব্য একটাই। আলনা হিসেবে ব্যাবহারটা অবশ্য ব্যতিক্রম নয়, আমারটারও ভাগ্য তাইই হয়েছিল শেষমেষ।
আপনার জন্য গুড নিউজ হচ্ছে দেশে চালের মূল্য নিম্নগামী (গতকালের সংবাদ অনুযায়ী)। কাইন্ডলী ওজনটা চেক করে জানাবেন।
আমরা গুটিকতক ফ্রেন্ড বরাবর মেয়েদের লন-টেনিস দেখতাম মূলতঃ অন্য (?) কারণে। বুঝেনই তো .... ...
আপনার লেখা ফাটাফাটি হইছে!
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
- দুনিয়ার সবাই খাইষ্টা, আমি একা না। কুর্ণিকোভারে বাদ দিলাম। হিঙ্গিসেরও যে ভক্ত কম না এইটা চামে চামে বুঝতে পারলাম এইক্ষণে।
ভাইসব, আমরাতো সবাই টেনিসললনাতুতো ভাই হয়া গেলাম দেখি। খেলা বুঝি আর না-বুঝি
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
৫ দিসি রে।
মেশিন বেশি দেখিস নে।
---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)
------------
...অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা...
কোথায় যেন পড়েছিলাম, ইংল্যান্ডের কোনও এক পাবের ভেতরে প্রতিদিন একই বিজ্ঞপ্তি সবার চোখে পড়তো: আগামীকাল বীয়ার সার্ভ করা হবে বিনামূল্যে।
আমারও সেই একই দশা। বছরের পর বছর ধরে ব্যায়াম শুরু করেই চলেছি পরবর্তী সপ্তাহ থেকে।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
তুমুল।
আমি কুর্নিকোভার সেই রকম ফ্যান ছিলাম এক সময়। ডেস্কটপ ওয়ালপেপার, মেসেঞ্জার থিম, মিডিয়াপ্লেয়ার স্কিন, সব জায়গায় তার সগর্ব উপস্থিতি ছিল। প্রাক্তন প্রেমিকা এসেই এ নিয়ে বিশেষ আপত্তি তুললো। আমি অবশ্য মোটেই গা লাগাইনি
নতুন মন্তব্য করুন