ঢাকা মেডিক্যালের কোন একটা জনবহুল ওয়ার্ডে প্রায় মাসখানেক কাটিয়ে ডেঙ্গু থেকে সেরে উঠে যেবারে বাসায় ফিরি, তারপরে অনেকদিন ডাক্তারের কাছে আর অসুখ নিয়ে আমাকে যেতে হয় নি।
গতকাল হলো, সম্ভবত বছর সাতেক বা তারও বেশি কিছু সময় বাদে।
অসুখ মানে সাংঘাতিক কিছু নয়। কাল দুপুরে মূল শহর থেকে বাসায় ফিরতে ফিরতে হঠাৎ দেখি ডানে-বামে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতে পারছি না। ঘুম থেকে উঠে মাঝে মাঝে এরকম বিতিকিচ্ছিরি ব্যাপার ঘটে, কিন্তু সে তো সাত সকালে! ভর দুপুরে হঠাৎ কোত্থেকে এই জিনিস উড়ে এসে জুড়ে বসলো আমার ঘাড়ে, মালুম করতে পারলাম না। সোজা রাস্তায় চোখ রেখে গাড়ি চালানোই নিয়ম, কিন্তু গাড়ি চালানোর সময় ডানে-বামে তাকানোটাও কি ভীষন জরুরি, সেটা গতকালের আগে আর এত ভাল করে কখনো আমাকে বুঝতে হয় নি!
কোন মতে বাসায় ফিরে সিলিং-এর দিকে লম্বালম্বি তাকিয়ে ছোটখাটো একটা ঘুম দিলাম, সন্ধ্যায় ঘুম ভেঙ্গে দেখি ঘাড় আরো শক্ত হয়ে গেছে! চোখের মণি শুধু এদিক ওদিক করতে পারি, এত বড় মুন্ডুর আর কোন কিছুই নড়ছে না কোন দিকে। শুনেছি প্যাঁচা নাকি চোখের মণি নাড়াতে পারে না, এই জন্যে সৃষ্টিকর্তা তাকে অবিশ্বাস্যভাবে ২৭০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘাড় ঘুরাবার অনুমতি দিয়েছেন। আর বেচারা আমি, একটু খানি মণি ঘোরাই, তার বদলে আমার ঘাড় এমন করে আটকে দিতে হবে! হায়, এ কেমন বিচার!
তবুও ডাক্তারের কাছে যাবো না বলেই ঠিক ছিল মনে। 'ওষুধ খেলে রোগ সারে সাতদিনে, আর না খেলে মাত্র এক সপ্তায়'- এই মতবাদে ঘোর বিশ্বাসী আমি ঔষধও খাই না কত বছর মনে নেই।
কিন্তু আমার বন্ধু-ভাগ্য বরাবরই ভালো। এই দুরদেশেও তাতে আকাল ঘটে নি। ফোনে খবর পেয়ে সেরকমই একজন বাড়ি এসে আমাকে জোর করে ডাক্তারখানায় নিয়ে গেলো। শত আপত্তিতেও টলানো গেল না। ঘাড়ে ধরেই নিতো, নেহাৎ সেখানে ব্যথা ছিলো বলে বেঁচে গেছি।
এপয়েন্টমেন্ট ছাড়া গেছি, লম্বা সময় অপেক্ষার পরে ভেতরে ঢুকবার সুযোগ হলো।
ডাক্তার ভদ্রলোক এইদেশী নন। আফ্রিকান মহাদেশের কোন এক দেশের হবেন। আমার সমস্যা শুনে বেশ বুঝদারের মতন মাথা নাড়লেন, তার মাথা নাড়া দেখে শক্ত ঘাড়ে বসে বসে রীতিমতন ঈর্ষা বোধ করতে থাকলাম। তারপরেই পান চিবুনোর মতন ভঙ্গিতে তিনি যে কি কি আমাকে বলে গেলেন, তার কিছুই আমি বুঝলাম না। অজিদের আখাস্তা ইংরেজী শুনে ইতিমধ্যেই আমার কান পঁচে গেছে, আমেরিকান ইংরেজি এখন তাই কানে মধুবর্ষণ করে। আমি জানি যে আফ্রিকান ইংরেজিও অনেক ভালো, কিন্তু ইনি কোন ইংরাজিতে কথা কন?
আবারও উদ্ধার করলেন সেই বন্ধু, মোটামুটি দোভাষীর কাজ চালালেন কিছুক্ষণ। একটা ছোট্ট সাইজের প্রেসক্রিপশান হাতে বের হলাম, ভল্টারেন নামের কোন একটা পেইন কিলারের উপদেশ দেয়া তাতে।
আমার মনটাই খারাপ হয়ে গেলো। লম্বা সময় ওষুধ থেকে দুরে থেকেছি, ভালোই ছিলাম। এই নীরিহ-দর্শন ওষুধের কল্যাণে আবার সেই জগতে প্রবেশ করতে হবে না তো!
হে প্রভু, রক্ষা করো, আমি আর প্যাঁচাকে নিয়ে তোমার সাথে বদমাইশি করবো না। মুখপোড়া জীবনানন্দ মরুক গিয়ে, ভেসে যাক কোন বেনো জলে, আমাকে তুমি ভালো করে দাও!
মন্তব্য
দোয়া করিলাম! শীঘ্রই সুস্থ হয়ে ওঠেন...
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল
অসুখের কথা শুনে শুকনা মুখে কমেন্ট লিখতে বসার কথা ছিল।কিন্তু হাসতেই আছি।
শিগগির সুস্থ হয়ে উঠুন।শুভ কামনা
---------------------------
থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...
---------------------------------
বাঁইচ্যা আছি
হ রে ভাই, আমি কই কি, আর আমার সারিন্দা বাজায় কি!
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
হা ঈশ্বর! আমাদের কনফু দা কে ডাইনোসোরাস অসুখ থেকে মুক্তি দাও!
আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
আমার সমস্যা শুনে বেশ বুঝদারের মতন মাথা নাড়লেন, তার মাথা নাড়া দেখে শক্ত ঘাড়ে বসে বসে রীতিমতন ঈর্ষা বোধ করতে থাকলাম।
"সমান্তরাল" পড়বার পর থেকেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ,এই লোক যা লিখবে চোখ বন্ধ করে তাতেই ফাইব স্টার দিব। চিন্তা করেছি বলে দিতে হয় নি। আপনার লিখাই এত চমত্কার। এম্নিতেই পাঁচ তারা দিতে হয়।
--------------------------------------------------------
শেষ কথা যা হোলো না...বুঝে নিও নিছক কল্পনা...
---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
তাড়াতাড়ি সুস্থ্য হয়ে উঠুন দোয়া করি।
-নিরিবিলি
আগেকার দিনে পার্কে-টার্কে একধরণের লোকেরা থাকতো। তারা লৌহশলাকা দিয়ে কান পরিষ্কার করে দিতো, মালিশ করে দিতো ঘাড়-টাড়। ঐ রকম কেউ নেই আপনার ওখানে?
জীবনের জোয়াল চেপেছে যে ঘাড়ে,
ওষুধে কি আর সে ব্যথা সারে?
এই যা-কবিতা হয়ে গেল দেখছি! তাড়াতাড়ি ভাল হয়ে উঠুন!
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
ক্যামেলিয়া আলম
কারও অসুস্থতাও যে হাসির খোরাক জাগাতে পারে এ লেখা তার প্রমাণ। মাফ করবেন।
সুস্থ হয়ে উঠ....
..হৃদি ভেসে যায় অলকানন্দার জলে...
'ত্যাড়া ঘাড় এবার সোজা হলো তো?' আমার একবার এই দশা হয়েছিলো, তখন আমার ছোটো বোনের ছিলো ওই মন্তব্য। আপনারও কি তাই?
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
ঘাড়ে ব্যাথায় মইরা যান এই কামনা করি...
---------------------------------
এভাবেই কেটে যাক কিছু সময়, যাক না!
এত বড় অভিশাপ ক্যানে দিলা ভাইটু?
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
আপনার অসুস্থতায় কাতর হতে পারলাম না। উল্টো পেট ফাটিয়ে হাসতে হল ব্লগটা পড়ে। আপনার বিষয়ে একটা কথা বলি,
আপনি প্রাত্যহিক ঘটনাগুলো খুব ভালো এবং যথাযথ ভাবে অনুভব করেন।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
সচলেরা খালি অসুস্থ হয়ে পড়ছে কেন? গর্দানদর্দের নিরাময় হোক।
হাঁটুপানির জলদস্যু
ব্যাথা সারলে অষুধের নাম শেয়ার করবেন ... এই রোগ আমারও মাঝে মাঝেই হয়।
---------------------------------
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
অষুধের নাম দিয়েছি কিন্তু আগেই- ভলটারেন ড়্যাপিড- ৫০ এমজি। টেরাই করে দেইখেন।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
ডেঙ্গুতে পেতেছিলেন শয্যা
ঘাড়ব্যাথায় কী ভয়।
তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
- ডাক্তার অষুধ দিলেই যে সেটা কিনতে ফার্মাসীতে যেতে হবে, আর অষুধ কিনলেও যে খেতেই হবে এমন কথা কোন সংবিধানে আছে বলেন দেখি!
সাতদিন আর একসপ্তার গ্যাড়াকলে আমিও অষুধ খাইনা সেটা কোটি বছরের কাছাকাছি কোনো সময় হবে। ডাক্তারবাড়ি গেছি, অষুধও কিনতে হয়েছে, কিন্তু সে অষুধ কখনোই আমার গলা পার হয়নি।
জান দেবো তবু অষুধ গলার পার হতে দেবো না। এই মূলমটো ভুলে গেলে কিন্তু চলবেনা কুংফু।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ব্যথার চোটে এইবারে ভুলতে হয়েছে, পরেরবার থেকে আর ভুল হবে না ইনশাল্লা!
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
ভূত বসেছে ঘাড়েতে---
আবার ভূত---
এ হচ্ছে নিত্যদিন নিত্যনতুন বাঙালি খাদ্যখানা চাবানোর ফল। দুই দিন শুকনো রুটি কামড়ালে সমস্যার সমাধান হবে ইনশাল্লাহ।
ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল
এইটার নাম ঘোড়ারোগ
ছোটবেলা ইসকুলে পড়েছিলাম এই রোগ হয় ছাগলের
পুরো নাম ছাগলের ঘোড়া রোগ
লক্ষ্মণ: ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া ও ঘোরাতে না পারা
রোগের কারণ: ঘাড়ে কৃমির সংক্রমণ (ঘাড়ের কোন একটা যেন নালিতে হয়)
পরিণতি: মৃত্যু
প্রতিকার: কসাইখানায় আক্রান্ত ছাগলটাকে বিক্রি করে দেয়া
......................
আপনাকে কসাইখানা পর্যন্ত নিয়ে যাবার মতো কেউ নেই ওখানে?
লীলেন ভাইয়ার সাথে আমি একমত। এটা ঘোড়ারোগ ছাড়া আর কিছুই না।
অসুখ কি সারছে। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন। নববর্ষের শুভেচ্ছা।
রোদ্দুরেই শুধু জন্মাবে বিদ্রোহ, যুক্তিতে নির্মিত হবে সমকাল।
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
তুইতো দেখতেছি বিশাল সেলিব্রেটি হয়ে গেছস!!এখন সূস্থ তো?
মনে হয় শোবার দোষে এমন হয়েছে।
নতুন মন্তব্য করুন