দিন বাড়ি যায়

কনফুসিয়াস এর ছবি
লিখেছেন কনফুসিয়াস (তারিখ: শুক্র, ০৯/০৫/২০০৮ - ৯:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পায়ের তলায় চাকা লাগিয়ে দৌড়ুচ্ছি, চৌপর দিনভর ব্যস্ত থাকি।
গত একমাসে প্রায় কিছুই লেখা হয়নি আমার, অবশ্য পড়েছি প্রচুর। সুখের খবর হচ্ছে, পড়তে চাইলে সচলায়তনে এখন লেখার অভাব নেই!

লিখতে চাইনি, তা নয়। গত মাসে পরপর দুই রবিবার দুইটা পহেলা বৈশাখ উদযাপন করে মনে হয়েছিলো, এই নিয়েই লিখি না কেন? বেশ তো মজা হলো। আমাদের দেশীয় উৎসবগুলো নিয়ে এখানে এইসব সমস্যায় পড়তে হয়। যদি উইকেন্ডে আপনা থেকেই না পড়ে, তাহলে জোর করে সেটাকে এনে উইকেন্ডে ফেলে উৎযাপন করা হয়। বৈশাখ তো বৈশাখ, এমনকি ঈদের আনন্দও এইরকম শিফটিং এর কবল থেকে বাঁচতে পারে না সবসময়। দেশে লোকে ঈদ করে চাঁদ দেখে, আমরা এখানে করি উইকেন্ড দেখে।

প্রথম উৎসবে গিয়ে পেটপুরে সিংগারা খেলাম। ফেইস-বুকিশরা জানেন, তার আগের একটা সপ্তাহে আমার হঠাৎ করে সিংগারা-বিরহ শুরু হয়েছিলো। সেটা সামাল দেয়ার জন্যেই একরকম হুড়োহুড়ি করে গেছিলাম বৈশাখ আয়োজনে।

আর ২য় উৎসব হয়েছিলো অনেক বেশি জমজমাট করে, মেলবোর্নের বিখ্যাত ফেডারেশান স্কোয়ারে। সিডনীতে বাংগালী অনেক, বেশ বড় করেই তাই উৎসব হয় ওদের। কিন্তু মেলবোর্নে উৎসব মানেই চেনা-জানা দুতিনটে কম্যুনিটি সেন্টারের কোন একটায় ছোটখাটো আয়োজন। মেলবোর্নবাসী জাতে উঠছে, ফেডারেশান স্কোয়ারে অনুষ্ঠানটা মোটামুটি এইরকমই একটা ঘোষণা বলা যায়। চ্যানেল আই দেখিয়েছে সেটা টিভিতে, নানান রাঘব কোম্পানী স্পন্সর করেছে।
আমি অবশ্য পুরোটা দেখতে পাইনি। সারাদিন কাজ ছিলো, সব শেষ করে আমি যখন পৌঁছুই তখন সমাপনী সংগীত শুরু হয়ে গেছে, তোমার হলো সারা, আমার হলো শুরু।

সেই উৎসবে একজন দীর্ঘদেহীকে দেখে খুব পরিচিত মনে হলো, কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছি না কোথায় দেখেছি ওনাকে। অনেক চিন্তা ভাবনা করে শেষমেষ কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম সরাসরি। প্রথমে কলেজের নাম বললাম, না, উনি সেখানে পড়েন নি। তারপরে ইউনিভার্সিটির কথা বলতেই মিলে গেল। জানালেন, শহীদুল্লাহ হলে থাকতেন। আমি থাকতাম অমর একুশে হলে। উনি শুনে বললেন শেষের দিকে ওখানেই চলে এসেছিলেন। আমি তো খুব খুশি, ভাই-টাই ডেকে কথা শেষ করে যখন চলে আসছি বাসায়, তখন হুট করে মনে আমার পড়লো ওনাকে তো আসলে সিনিয়র হিসেবে পাইনি ভার্সিটিতে, উনি একুশে হলের হাউস টিউটর ছিলেন! কি সর্বনাশ!
তো এই নিয়েও লিখতে চেয়েছিলাম, কিন্তু সময় পাই নি শেষমেষ।

তারপরে মাঝে আবার উবুন্টু নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছিলাম অনেক সময়। ইচ্ছে করে নয় অবশ্য। স্বল্প ড়্যামের ল্যাপটপে ভিস্তা চালানো আর ঘোড়ার রেসে শামুক দৌড়ানো প্রায় সমার্থক। এই ঝামেলা থেকে মুক্ত হতে চেয়েছিলাম অনেক আগেই, কিন্তু বাংলা লেখার জন্যে আমি শতভাগ নির্ভর করি অভ্রের ওপর, এদিকে লিনাক্সে অভ্র না চলায় বাধ্য হয়েই ভিস্তা পুষছিলাম। শাব্দিক নামে ফায়ারফক্সের জন্যে একটা প্লাগইন আছে, যেটা দিয়ে লিনাক্সেও অভ্র ব্যবহার করা যায়, কিন্তু সেটা পুরোপুরি নির্ভুল নয়। চ আর ছ-এ কি এক শত্রুতা বাঁধিয়ে রেখেছে, কিছুতেই তারা যুক্ত হয়ে চায় না, জ্ঞান লিখতে গেলে লিখতে হয় গ্গান। এই মুশকিল সমাধান করছি বড়ই অদ্ভুত উপায়ে। উবুন্টুর ডিফল্ট কি বোর্ড প্রভাতও রেখে দিয়েছি। প্রায় সব লেখাই লিখি শাব্দিক প্লাগইন দিয়ে, লেখা শেষে বানানগুলো ঠিক করি প্রভাত দিয়ে। এইভাবে কতদিন চালাতে হবে বলা মুশকিল, কারণ শুনেছি অভ্র-র হর্তাকর্তাদের লিনাক্স খুব একটা প্রিয় নয়।
এই জোড়াতালির কষ্টের কথাও লিখব ভেবেছিলাম একদিন, হলো না।

আবার সচলায়তনে যখন এই সময়ের বাংলা গান নিয়ে বেশ জোর তর্কালোচনা চলছিলো, আমি চুপচাপ পড়ে গেছি। অনেকদিন আগে একবার ছয় নম্বর বাস অথবা হয়তো শাপলা সার্ভিসে অথবা অন্য কোন বাসে চড়ে টিউশানিতে যাচ্ছিলাম। যেতে যেতে দেখি আমার পেছনের কোন একটা সীটে বছর পঁচিশের এক ছেলে হাতে একটা বই ধরে বসে আছে। সন্ধা হয়ে গিয়েছিলো, বাস চলতে চলতেই বাসের ভেতরের অথবা বাইরের রাস্তার আলো এসে পড়লে, সেই আলোয় সেই ছেলে বই পড়ে, আর পড়তে পড়তে আবেগে চোখ মুছে। এই দৃশ্য দেখে আমি অভিভূত হয়ে পড়ি, সেই লেখকের নাম জানার জন্যে উদগ্রীব হয়ে পড়ি মুহুর্তেই, কিন্তু কিছুতেই সেই সার্থক লেখকের নাম দেখতে পাই না। অবশেষে, আর কিছু পরেই যখন আমাকে বাস থেকে নেমে যেতে হবে, তাই আর থাকতে না পেরে খানিকটা নির্লজ্জ হয়েই মাথা পুরো ঘুরিয়ে দেখে নিলাম লেখকের নাম, আর দেখে ভীষণ অবাক হলাম। না, আমার চেনা-জানা অথবা সুপরিচিত কোন লেখকের বই ছিলো না তা, কী নাম ছিলো এতদিন পরে আর মনে করতেও পারছি না, হয়তো ছিলো কাশেম বিন আবুবকর, অথবা নিশাত চৌধুরী বা অন্য কেউ। কিন্তু তারপর থেকে আমি আর বই বা গানের পছন্দ নিয়ে বড় একটা আলাপে যাই না। কার যে কী ভাল লাগে, কে-ই বা তা জানে! আমার নিজের ভেতরেও কত রকমের স্ববিরোধীতা! আনিলা বা এলিটার গান খুব ভাল লাগে কিন্তু এদিকে মিলা বা ইভা রহমান শুনলে গা রিরি করে ওঠে। ফরিদা পারভীন শুনে চুপ করে বসে রই, আবার চুপটি করেই শুনি আনুশেহ। হাবিবের কিছু ভাল লাগে, কিছু মন্দ লাগে, আর ফুয়াদকে শুনতে পারি না একদমই। কিন্তু আমার সবচেয়ে অবাক লাগে এদের সাথে এক সমতলে কেউ যখন অর্ণবের নাম নেয়! মন দিয়ে গান শোনে আর প্রাণে সেটা অনুভব করে এমন কারো এরকম ভুল হতে পারে বলে আমি মনে করি না। বাঙ্গালী মাত্রই লেট লতিফ, সময়ে লোকের মূল্যায়ন করতে জানে না, দেরি করে ফেলে সবসময়েই। আজ থেকে বছর কুড়ি বাদে এই সময়ের গানকে যদি কেউ অর্ণব যুগের গান বলে পরিচয় করিয়ে দেয়, এই আমি অন্তত অবাক হবো না।
তো লিখতে চেয়েছিলাম এই বহু পুরনো গল্পের কথা, চেয়েছিলাম অর্ণবের কথা বলতে, কিন্তু সময় হলো না।

এর মাঝে আরো অনেক কিছুই হলো। পদ্মায় নতুন করে চর পড়লো, আমার ওজন বেড়ে গেলো প্রায় কেজির কাছাকাছি, অস্ট্রেলীয় সৈনিক মারা গেল পরবাসী যুদ্ধে, এক ভারতীয় ট্যাক্সি ড্রাইভারকে কারা যেন ছোরা মারলো এখানে, পার হয়ে গেল আমার বস সত্যজিতের জন্মদিন। এ সব কিছু নিয়েই কত কী লেখার ছিলো, কিন্তু আর হলো কই!

এই করে করে চলেই এল পঁচিশে বৈশাখ। এই এক আশ্চর্য দিন। এমনকি এই জবরজং শীতের জংলা কুয়াশারও যেন মনে থাকে এই দিনের কথা। আমার ঘরে গীতবিতান খোলা হয়, নেটে বসে রবি দাদুকে সেলাম ঠুকি বারে বারে। তারপর আয়েশ করে গা এলিয়ে দিয়ে শুনি পাশ থেকে বউ গুন গুন করে গাইছে, আমায় নহে গো ভালবাসো শুধু, ভালবাসো মোর গান। হুম, নজরুল গেয়েই তাহলে রবিকে শুভেচ্ছা জানানো? তবে তাই হোক।
আর এইসব টুকরো টাকরা ভাবনা আর কয়েক চিমটি স্মৃতি মিলিয়ে আমি শেষ মেষ লিখেই ফেলি আমার দিন যাপনের গালগপ্পো।


মন্তব্য

সৌরভ এর ছবি

ঠিকাসে।
আমি খুব ভালো পাঠক। মোটামুটি সব পড়ি।

উবুন্টুতে কী কি-বোর্ড চাও? আমি তো য়্যুনিজয় ব্যবহার করি। সমস্যা তো দেখি না। ফোনেটিক কী অবস্থা খুঁজে দেখা হয় নাই।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

কনফুসিয়াস এর ছবি

সৌরভ,
উবুন্টুতে আমি অভ্রই চাই আসলে। ইউনিজয়ে জীবনেও লিখি নি। প্রভাত অবশ্য ফোনেটিক, কিন্তু নতুন করে আর কোন ফোনেটিকও জানতে চাই না।
আপাতত জোড়াতালি দিয়ে চালানোর প্ল্যানেই আছি, যতদিন অভ্র নিজেই একটা নির্ভুল প্লাগইন বের না করে লিনাক্সের জন্যে।
*
মনে হচছে অনেকদিন পরে দেখলাম যেন তোমারে। হাসি

-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

স্নিগ্ধা এর ছবি

চমৎকার লেখা!! খালি সিংগারা'র অংশটুকু পড়ে মনে বড় দুষ্কু হলো মন খারাপ

কনফুসিয়াস এর ছবি

দুকখু পাওয়ার কিস্যু নাই। শোমচৌকে জিগ্গেস করেন, সিংগারার রেসিপি বলে দিবেন উনি।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

মুশফিকা মুমু এর ছবি

ইভা রহমান শুনলে আমারো গা রিরি করে ওঠে হো হো হো
খুব ভালো লাগলো পড়ে হাসি
আপনারা সিডনি আসলে কিন্তু অবশ্যই আমাদের বাসায় বেরাতে আসবেন।

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

কনফুসিয়াস এর ছবি

মুমু,
সন্দেহ হচছে, খুব শিঘ্রী নিশচয়ই আপনি মেলবোর্নে আসছেন, নইলে হুট করে সিডনি যাবার নেমন্তন্ন দিলেন কেন? হাসি
মজা করলাম, ভয় পাবেন না।
আমাদের পক্ষ থেকেও নিমন্ত্রণ রইলো, আসবেন অবশ্যই।

-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

মুশফিকা মুমু এর ছবি

হাহাহাহা না সেজন্য না, আপনি মেলবর্নের কথা লিখলেন তাই ভাবলাম বলি। ধন্যবাদ, আমি আসব তবে আপাতত না হাসি নিশ্চিন্ত থাকেন খাইছে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

মাশীদ এর ছবি

যাক, লিখব লিখব ভেবে না হতে হতে শেষ পর্যন্ত সেটা নিয়েই লিখে ফেললি বলে এক ফাঁকে টুক করে পড়েও ফেললাম। খুব ভাল লাগল।


ভাল আছি, ভাল থেকো।


ভাল আছি, ভাল থেকো।

কনফুসিয়াস এর ছবি

তোমারে বহুত দিন বাদে দেখে আমারও খুব ভাল লাগলো।
ব্যস্ততার নিকুচি করে লেখা নামাও না দেখি কয়েকখান, পড়ি।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

পরিবর্তনশীল এর ছবি

ব্যস্ততার নিকুচি করে লেখা নামাও না দেখি কয়েকখান, পড়ি।

কে কী কয়?
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

হু... সূচিপত্রটা ভালো হইছে... এইবার একেকদিন একেকটা পরিচ্ছেদ নামায়ে ফেলেন... ______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কনফুসিয়াস এর ছবি

হা হা হা! খুব ভাল বলেছেন।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

খেকশিয়াল এর ছবি

গাল-গল্প ভাল্লাগ্লো, আরো লেখেন ।

-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- শালার, কবে যে এই রকম করে লিখতে পারবো! মন খারাপ

লেখার প্রতিটা লাইন ই জমজমাট। চলুক
ইয়া হাবিবি
___________
<সযতনে বেখেয়াল>

কনফুসিয়াস এর ছবি

ইয়া হাবিবি!
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

"সচলায়তন অ্যান্ড দ্য রিটার্ন অফ কুংফু"

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

একটা টুয়েন্টি২০ পোস্ট।
অল্প পরিসরে কাভার ড্রাইভ, হুক, পুল শট সব...
চলুক

এরকম লেখার হাতরে মসলিন কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা উচিত।

কনফুসিয়াস এর ছবি

আপনারেও ইয়া হাবিবি। লগে একখান হক্ব মাওলা!
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

শেখ জলিল এর ছবি

ভালো লাগলো দিনযাপনের গালগপ্পো।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়ে বড় আনন্দ পেলাম। ভালো থাকুন, আরো লিখুন, শুভ কামনা থাকলো।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান

ovaga এর ছবি

প্রথম উৎসবে গিয়ে পেটপুরে সিংগারা খেলাম।
আর ২য় উৎসব হয়েছিলো অনেক বেশি জমজমাট করে, মেলবোর্নের বিখ্যাত ফেডারেশান স্কোয়ারে। সিডনীতে বাংগালী অনেক, বেশ বড় করেই তাই উৎসব হয় ওদের। কিন্তু মেলবোর্নে উৎসব মানেই চেনা-জানা দুতিনটে কম্যুনিটি সেন্টারের কোন একটায় ছোটখাটো আয়োজন। মেলবোর্নবাসী জাতে উঠছে, ফেডারেশান স্কোয়ারে অনুষ্ঠানটা মোটামুটি এইরকমই একটা ঘোষণা বলা যায়। চ্যানেল আই দেখিয়েছে সেটা টিভিতে, নানান রাঘব কোম্পানী স্পন্সর করেছে।
আমি অবশ্য পুরোটা দেখতে পাইনি। সারাদিন কাজ ছিলো, সব শেষ করে আমি যখন পৌঁছুই তখন সমাপনী সংগীত শুরু হয়ে গেছে, তোমার হলো সারা, আমার হলো শুরু।

কনফুসিয়াসকে ধন্যবাদ, মেলবোর্নে পহেলা বৈশাখের আয়োজন সংবাদ সবাইকে জানানোর জন্য। তবে সংবাদ পরিবেশনের অ্যাপ্রোচটি খানিকটা normative হওয়ায় একটু ভিন্নমত প্রকাশে বাধ্য হচ্ছি।

বাংলাদেশ/বাঙালী সমিতি টাইপ সংগঠনটির শীর্ষ মস্তিষ্কদের সুযোগ্য আপনজনদের অযোগ্য পরিবেশনা ও অব্যবস্থাপনার খপ্পর থেকে পহেলা বৈশাখের আয়োজনকে মুক্তি ও স্বস্তি দিতে স্টুডেন্টস ফোরামের ব্যানারে মূলত মেলবোর্নবাসী বাংলাদেশী ছাত্র ও শিক্ষকদের মেধা, আন্তরিকতা ও পরিশ্রমে যে অনুষ্ঠানটি এবার প্রথমবারের মতো আয়োজিত হয়, তা আর যাই হোক, জাতে ওঠার কোনো চেষ্টা বা অপচেষ্টা ছিল বলে একজন সাধারন দর্শক হিসেবে আমার মনে হয়নি। পুরো অনুষ্ঠানটি ছিল সুরুচিসম্পন্ন ও উপভোগ্য, যা মুগ্ধভাবে দেখেছেন দেশি-বিদেশী অনেকেই।

স্পন্সর যোগাড় থেকে শুরু করে পরিকল্পনা, অনুশীলন, আয়োজন- কোনোটিই সহজ কাজ নয়। যেখানে বাঙালীর সময় ম্যানেজ করে দেখতে যাওয়াই হয়ে ওঠেনা। আয়োজকদের সহযোগিতা বা কৃতজ্ঞতা দূরে থাক, ধন্যবাদ জানাতেও আমাদের এত কার্পণ্য!

কনফুসিয়াস এর ছবি

প্রিয় অভাগা,
আপনার মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ। তবে এখানে বোধহয় খানিকটা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেছে, এই ভেবে আমি বেশ লজ্জিত।
জাতে ওঠা কথাটা আমি একদমই ঋণাত্মক অর্থে বলিনি যে ভাই। এই কথাটার কোথাও কি আপনি খানিকটা গর্ব বা তৃপ্তির স্পর্শ পাননি? তাহলে সেটা আমারই লেখার দুর্বলতা হয়তো- অনুভুতির ঠিকঠাক প্রকাশ ঘটাতে পারিনি।
আর, এটা নেহায়েতই একটা দিনলিপি হিসেবে লেখা, সংবাদ পরিবেশন নয়। তাই সংবাদ পরিবেশনের সকল রকম আনুষঠানিকতা কি এখানে আশা করা যায়, বলেন?
না, ধন্যবাদ জানাতে কার্পণ্য একেবারেই নেই। প্রোগ্রাম শেষে আয়োজকদের একজনের সাথে মিনিটখানিকের আলাপে আমি আমার উচ্ছ্বাস যথাসম্ভব প্রকাশ করেছি। আগ্রহভরে জানতে চেয়েছি আগামী বছর এরকম কিছু হবে কি না, তারপর নিজেই উত্তর দিয়েছি এই বলে যে, এবারে ফেড স্কোয়ারে প্রোগ্রাম করে একটা স্ট্যান্ডার্ড দাঁড়িয়ে গেল, এরপর থেকে আশা করি কেবলই ওপরে যাবে সেটা, নীচে আর নামবে না।
মন্তব্য পড়ে কেন যেন আপনাকে "সাধারণ দর্শক" মনে হচ্ছে না আমার। হাসি খুব ভাল হয়, যদি আপনি এবারের বৈশাখী মেলার আয়োজন নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতা সচলায়তনে লিখেন। আমরা সবাই জানতে পারবো পেছনের হালচাল।
সেই পোষ্টে আলাদা করে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাবো, তার আগে এই সুযোগে এখানেও ধন্যবাদ জানিয়ে দিই- মেলবোর্নের এবারের বৈশাখী মেলার পেছনের কারিগরদের। আপনাদের জন্যে অনেক শুভকামনা।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

ovaga এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনার লেখা চমৎকার। তবে আন্দাজশক্তি অন্তত এক্ষেত্রে ভাল না:) আমি নেহাতই সাধারণ দর্শক। ছাত্র-শিক্ষক-আয়োজক-স্থায়ী বাসিন্দা কোনওটাই নই। আয়োজনের সঙ্গে জড়িত একজনকে ধন্যবাদ দিতেই কিছু তথ্য জেনে ভাল লেগেছিল, এই যা।

রায়হান আবীর এর ছবি

আমি ব্লগীং করি আর মনে মনে ভাবি, একদিন আমিও কনফু ভাইয়ের মতো লিখতে পারবো। আমার প্রতিটি কথা মানুষ শুধু পড়বে না, পড়ার সাথে সাথে দেখতেও পারবে।

হাবিবের কিছু ভাল লাগে, কিছু মন্দ লাগে, আর ফুয়াদকে শুনতে পারি না একদমই। কিন্তু আমার সবচেয়ে অবাক লাগে এদের সাথে এক সমতলে কেউ যখন অর্ণবের নাম নেয়!

হাবিব ফুয়াদের সাথে অর্ণবের সবচেয়ে বড় পার্থক্য হলো অর্ণব ওদের মতো গলায় অটো টিউনার ব্যবহার করেনা। ওর নিজের গলাই অতিপ্রাকৃত রকমের সুন্দর। তাছাড়া ফুয়াদ গান গাওয়ায় মিলারে দিয়া, হাবিব ন্যান্সি...আর অর্ণব গাওয়ায় সাহানা, আবিদা কে দিয়ে। আবিদার কন্ঠ শুনে আমার মনে হয়, এই মেয়ে যদি দেখতে কাকের মতোও হয় তাও আমি সারাজীবন তার সাথে থাকতে রাজী আছি। মাঝরাতে তাকে ঘুম থেকে উঠাই বলবো,ঐ তোমার "প্রজাপতিটা" গানটা একটু শুনাও তো...

---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।

ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।

কনফুসিয়াস এর ছবি

প্রথম প্যারার জন্যে শুকরিয়া।
আর অর্ণব নিয়া আর কিছু বলবো না রে ভাই, কথা ফাইন্যাল। হো হো হো
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

নজমুল আলবাব এর ছবি

এর আগে আরেকবার বলছিলাম, আইজ আবার বলি, এমন দিনলিপি যদি আমি লিখতে পারতাম...।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

তারেক এর ছবি

অনেক মজা করছেন তো!
অর্ণবের বাক্সে ভোট দিলাম।
অভ্রের বদলে আমি প্রভাত ইউজ করা শুরু করতেছি শিগগিরি... উবুন্টু ৮.৪ দারুন! প্রভাত হইলে আমার দুইকূল রক্ষা হয় হাসি
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

কনফুসিয়াস এর ছবি

আমি আরও কদিন দেখবো, অভ্রর প্লাগইন আসে কি না। না এলে প্রভাতে শিফ্ট করবো।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

তারেক এর ছবি

বলতে ভুলে গেছিলাম। আমি লিনাক্সে বাংলা লেখার জন্য উইকির খেলাঘর পেইজ টা ব্যবহার করতাম। এটা সেভ করে সোর্স কোড থেকে টেক্সট বক্সের ভেতরকার বাংলা গুলো মুছে দিয়েন। লেআউট পুরোপুরি অভ্র ফোনেটিক

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

কনফুসিয়াস এর ছবি

বাহ, এইটা ভাল বুদ্ধি! রাগিব ভাইও বলছিলেন একবার।
বড় লেখার জন্যে এটা কাজে লাগানো যেতে পারে।
কিন্তু এটারেই কেউ মডিফাই করে প্লাগইন বানিয়ে ফেলতে পারে না?
ইস, টেকি জ্ঞান থাকলে আমি নিজেই করে ফেলতাম!
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

ভালো লাগলো খুব।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

কনফুসিয়াস এর ছবি

যারা যারা কষ্ট করে পড়েছেন, তাদের সবাইকে নতুন আলুর শুভেচ্ছা! :‌))

-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।