ঠিক যেন পোষা বেড়াল, ডান হাতের তর্জনীটা ছবির গালে একবার বুলিয়ে নিজের ঠোঁটে ছুঁইয়ে সেরকমই আদুরে একটা চুক চুক শব্দ করলেন মহিলা, আর মুখে বললেন, "পু-ও-র বয় ...। "
সামনে রাখা পত্রিকার প্রথম পাতা জুড়ে ছাপানো হিথ লেজারের মুখ, হলিউডের সদ্য প্রয়াত নায়ক। জাতে অস্ট্রেলিয়ান ছিলেন, মৃত্যুর পরপরই এখানকার মিডিয়ায় তাই কদিন ধরেই সবচেয়ে বেশি উঠে এসেছে হিথ লেজারের নাম, টিভি কি পত্রিকা, সবখানেই।
ভদ্রমহিলার বয়েস অনেক। প্রায় কখনোই ঠিকঠাক আন্দাজ করতে পারে না আহসান, তবু তার মনে হয় কমপক্ষে ষাট হবে অথবা পয়ষট্টি। কালো ফ্রেমের চশমা চোখে, আর লম্বা ঝুলের গাউন পরনে। চুলগুলো ভেজা ভেজা, মাথার সাথে একদম চেপে আঁচড়ানো। সব মিলিয়ে বেশ সম্ভ্রান্ত একটা চেহারা, সেই সাথে খুব আপন আপন। অনেক আগের, সেই ছেলেবেলার ইশকুলের এক প্রবীণা শিক্ষিকার কথা মনে পড়ে গেলো ওঁকে দেখে।
ঝকঝকে পলিশ করা কাউন্টারের এ পাশে দাঁড়ানো সে, পত্রিকা হাতে তুলে নিয়ে স্ক্যান করতে যাবে, তখুনি ছবিতে আঙুল বুলিয়ে মন্তব্য করলেন মহিলা। আহসান একটু থমকে গেল যেন। নিজের এপার্টমেন্টে খুঁজে পাওয়া গেছিলো হিথ-কে। ঊনত্রিশ হাজার ডলার ভাড়ার সেই বাসায় পড়ে ছিলো তার পোষাকহীন মৃত দেহ। প্রচুর ড্রাগ নিতেন হিথ লেজার। দীর্ঘকাল ডিপ্রেশানে ভুগছিলেন নানা কারণে, তাই প্রচুর ওষুধ নিতেন, মৃত্যুর কারণ হিসেবে এগুলোই ধারণা করেছে ডাক্তাররা।
ভদ্রমহিলার কথার উত্তরে আহসান একটু মাথা ঝোঁকালো কেবল। মুখে বলল, 'হুম, খুব স্যাড।'
আহসানের পাশের ক্যাশ রেজিষ্টারে দাঁড়িয়ে ছিলো ওর ভারতীয় সহকর্মী - রামিনিত সিং। ওদের দিকে তাকিয়ে চুপচাপ কথা শুনছিলো। হঠাৎ কি হলো, মহিলার কথা শুনে রীতিমতন উড়ে এলো সে। ' পুওর! পুওর বলছো তুমি ওকে? কি পরিমাণ ড্রাগস নিতো তুমি জানো? আর কত বেশি ওষুধ? জানো? এরকম সহানুভুতি কি পেতে পারে ও?'
মহিলা কেমন চমকে উঠে তাকালেন ওর দিকে। কি যেন ভাবলেন খানিকক্ষণ, তারপর মাথা নাড়তে নাড়তে বিড়বিড় করে বললেন, ' হুম, ড্রাগস নিতো, ওষুধ খেতো ... সে জন্যেই মরেছে। কিন্তু, ইন আদার সেন্স, হয়তো এই কারণেই সে পুওর ছিল, হয়তো এ কারণেই আরো বেশি সহানুভুতির দরকার ছিলো তার।' একটা ছোট্ট নিঃশ্বাসের বিরতি নিয়ে আবার বলে উঠলেন, 'কোন না কোন অর্থে আমরা সবাই হয়তো এরকম, আমরা সবাই-ই হয়তো পুওর!'
পত্রিকার পয়সা দিয়ে মহিলা চলে গেলেন। রামিনিত এমনিতে শান্ত-শিষ্ট ছেলে। আজ এরকম ক্ষেপে উঠলো দেখে আহসান খুব অবাক হল। মৃদু স্বরে শুধু বলল, 'এতটা রুড না হলেও কিন্তু হতো।'
খানিকটা বিষণ্ণ দেখালো রামিনিতকে। বললো, 'হয়ত। কিন্তু জানো, এরকম যদি আমাদের দেশে হতো, তাহলে ওরা কত কিছু বলতো, নেশারু, ইরেসপন্সিবল। আর ওদের এখানে মরেছে দেখে কত সহানুভুতি! আবার বলে পুওর বয়!' অনেকক্ষণ ধরে আপন মনে অনেক কথা বলেই চললো ও। এ দেশীয় সাদাদের গোষ্ঠী উদ্ধার করলো অনেকক্ষণ। এই রাগের মাঝেও করুণ শোনালো রামিনিতের গলা, মাঝে মাঝেই। আহসানের একটু খারাপই লাগছিলো। এই রাগের পেছনের কাহিনি সম্ভবত সে জানে।
শহরের মাঝামাঝি ব্যস্ত একটা এলাকায় বেশ বড়সড় পেট্রোল স্টেশন চাকুরী ওদের। কাস্টমার সার্ভিসের কাজ, সারাদিনে শ'চারেক নানা কিসিমের লোকের সাথে হাসিমুখে ডিল করতে হয়। প্রায় প্রতিবারই উত্তরে হাসিমুখ পাওয়া যায়। তবু, মাঝে মাঝে দুয়েকজন আসে যারা ভ্রু কুঁচকে রাখে সারাক্ষণ। চোখের দৃষ্টি দিয়ে বুঝিয়ে দেয় - বাপু হে, তোমার ঐ ঘিনঘিনে বাদামী গায়ের রং আমার পছন্দ হচ্ছে না।
কয়েকদিন আগেই এমনি একজনের সাথে গোল বেঁধে গিয়েছিলো রামিনিতের। গাড়িতে তেল ভরে ভেতরে এসে বলে সাথে টাকা নেই, পার্স ভুলে গেছে। রামিনিত ঠান্ডা মাথায় ফোন এগিয়ে দেয়, নিয়ম অনুযায়ী পরিচিত কাউকে ফোন করে ক্রেডিট কার্ডের নম্বর নিতে বলে। ঐ লোকটা কেন যেন ক্ষেপে যায়। অযথাই বাজে কথা বলে বসে ওকে। তর্কের এক পর্যায়ে ঐ হুট করে বলে বসে - "ব্লাডি ইন্ডিয়ান!"
আহসান বুঝতে পারে, আজকের ঘটনার শানে নুযুল আসলে গাঁথা আছে সেই দিনটাতেই। সহকর্মীর জন্যে খারাপ লাগে ওর খানিকটা, প্রায় একই ঘটনার সামনে যে সে-ও পড়ে নি কখনো, এমনটা নয়। মাথার ভেতর ওর সাদা-কালো-আর বাদামী রঙের অনেকগুলো ঘুড়ি যেন হুটোপুটি করে উড়তে থাকে। খানিক পর পরই ঘুড়ির গায়ে ভেসে ভেসে ওঠে চারপাশের চেনা-জানা নানান রঙের মানুষদের মুখ।
আট ঘন্টা করে একেকটা কাজের শিফট ওদের, শেষ হতে আর বেশি বাকি নেই। এমন সময় ম্যানেজারের রুম থেকে হঠাৎই ডাক আসে ওর জন্যে। স্টোরের মূল অংশটার পেছনেই তাঁর রুম। নাক বোঁচা ম্যানেজার, সম্ভবত হংকং-এ বাড়ি। এখনও অবিবাহিতা। কেমন করে যেন অনেক মানুষ একা থাকাটা অভ্যেস করে ফেলে, ভেবে অবাক লাগে ওর।
শুধু শুধুই ডাকা। সামনের সপ্তাহে একটা পাবলিক হলিডে আছে, সে দিন কাজ করতে পারবে নাকি অন্য কোন পরিকল্পনা আছে - এই নিয়ে মিনিট পাঁচেকের খেজুরে আলাপ।
ম্যানেজারের রুম থেকে বাইরে বেরুতেই কাউন্টারে দাঁড়ানো রামিনিত হাত ইশারা করে ওকে, 'নাম্বার টেন'।
এই ইশারার মানে জানে আহসান। দশ নাম্বার পাম্পে কেউ একজন তেল ভরছে, যার গাড়ির রেজিস্ট্রেশান নম্বর এখান থেকে দেখা যাচ্ছে না ঠিকঠাক। খানিকটা দ্রুত পায়ে স্টোরের দরজার কাছে চলে যায় আহসান, ইদানীং ড্রাইভ অফ অনেক বেড়ে গেছে আগের চেয়ে, তেল ভরেই সোজা পালিয়ে যায় লোকে, পয়সা দেয় না। গাড়ির নম্বর জানা না থাকলে বিপদে পড়তে হবে, পুলিশে ফোন করে জানাবার কোন উপায় থাকবে না আর।
লোকটাকে দেখা যাচ্ছে দরজার কাছ থেকে। ছিপছিপে লম্বা একজন মানুষ, মাথায় সাদা হ্যাট। সম্ভবত আফ্রিকান।
একটু দ্রুতই পা বাড়ায় ও। কালোদের ওপর বিশ্বাস নেই। এ দেশে হাজার রকম অপরাধ করে বেড়ায় ওরা, তেল চুরি তার মধ্যে সবচে নিরীহ গোছের।
রেজিস্ট্রেশান প্লেটটা দেখা যাচ্ছে না এখনো। আরো কাছে যেতে হবে। কিন্তু লোকটা কি দেখে ফেলেছে নাকি ওকে? তেল নেওয়া থামিয়ে দিলো কেন?
এইবার খানিকটা দৌড়ের মতন হাঁটা দিলো ও। লোকটাও এগুচ্ছে গাড়ির দরজার দিকে। পালাবেই নাকি শেষমেষ? যাহ শালা! বিরক্তিতে মুখ কুঁচকে যায় আহসানের।
নাহ, পালালো না। ড্রাইভিং সিটের ওপরে রাখা পার্সটা তুলে নিয়ে এ দিকে হাঁটা দিলো লোকটা, পয়সা দিতেই আসছে।
স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আহসানও ফিরে এলো স্টোরে। কাউন্টারে ফিরে যাবার আগে কি ভেবে ফ্রেশ হতে চলে এলো সে রেস্টরুমে। বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে চোখে মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিলো খানিকক্ষণ।
ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলো সে। গাড়ির নম্বর দেখার আগেই লোকটা পালিয়ে গেলে আজ আবার ম্যানেজারের ঝাড়ি শুনতে হতো তাকে। কিন্তু ওদেরই বা কি দোষ, এত করে বলেছে বাইরে সিকিউরিটি ক্যামগুলো ঠিক করতে তাড়াতাড়ি। পাঁচটার মধ্যে চারটাই কাজ করে না। যেটা করে, সেটা দিয়ে কোন গাড়িরই নাম্বার-প্লেট দেখা যায় না।
ইস, আজ যদি ওই কালো ব্যাটা সত্যি পালিয়ে যেত!
মুখে আরেকবার পানি দিয়ে ও চোখ তুলে তাকায়। বেসিনের ওপরেই একটা আয়না ঝোলানো সেখানে। ওদিকে তাকিয়ে একটা বাংলা গানের সুর শিষ দিয়ে তুলতে যাবে, তখুনি মুহুর্তের জন্যে চমকে ওঠে আহসান।
আয়নায় যাকে দেখছে সে আহসান নয়। ক'দিন আগে রামিনিতকে গাল দেয়া সেই লোকটার হলদেটে কুৎসিত মুখটা ভেসে উঠছে আয়নায়।
আতঙ্কে চিৎকার করে এক পা পিছিয়ে যেতে যেতে আহসান শুনতে পেল, আজ সকালের সেই মহিলা কানের পাশ থেকে ওকে ফিসফিস করে বলছে,'ওহ, পু-ও-র বয়!'
--------
মু. নূরুল হাসান
*বীক্ষণ, এপ্রিল ২০০৮, প্রথম প্রকাশিত।
**ঈষৎ পরিবর্তিত।
মন্তব্য
এত শক্ত গাথুনি দেন আপনি, মনে হয় বড়সড় একটা বিল্ডিং বানানো যাবে। কিন্তু কখনই সেটা করেন না। একতলাতেই থেমে যান। কেন?
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
গাঁথুনি শক্ত দিলেও মাটির উপর বিশ্বাস নাই, যদি ভেঙে পড়ে!
এই ভয়েই...।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
আহসান কালো লোকটাকে গালি দেয়ার জন্যই কি তেমন ভাবছে?
হিথ লেজারের কাহিনী কেন এত কভারেজ পাচ্ছে তা আমি আমার এক সাদা বন্ধুকে (যে গসিপ পত্রিকা টাকা দিয়ে কিনে পড়ে) জিজ্ঞেস করেছিলাম, কোন ব্যাখ্যা ছিল না তার কাছে।
অজি ছিলেন, এ জন্যে হতে পারে। আর দারুণ সব মুভিওতো করেছেন। আমার নিজেরও খুব ভাল লাগতো। কয়েকটা সুন্দর মুভির কথা এই মুহুর্তে মনে পড়ছে- ব্রাদার্স গ্রিম, ক্যাসানোভা, টেন থিংস আই হেইট এবাউট ইউ..., সবগুলাই খুব সুন্দর!
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
বীক্ষণে পড়েছিলাম আগে।
প্রথম পাঠে মনে হয়েছে, গল্পের চেয়ে বাস্তব বেশি। তাই এখানে গল্প বলার চেষ্টা নেই। বয়ানটা সাবলীল।
কেবল শেষে আয়নায় নিজের মুখ দেখাটাই অনুধাবন, লেখনী সত্ত্বার কৌশল।
তবে কনফুসিয়াসের লেখার মনোযোগী পাঠক হিসেবে বলি, এবারও (আগের বার 'ইঁদুর' গল্পে ছিল) বাক্য বিন্যাসে ভিন্নধারা দেখা যাচ্ছে। আর আমি তীক্ষ্ম নজরে দেখে যাবো এই পরিবর্তন শেষে কী রূপ নেয়।
আপাততঃ সুন্দর গল্পের জন্য কনফু (বিপ্লব)
নজর কিন্তু বেশি তীক্ষ্ণ কইরেন না, নজর লাইগা যাইবো।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
বর্ণবাদ আমাদের কী ভাবে প্রতারিত করে!
**********************
কাঁশ বনের বাঘ
**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!
এলোমেলো মাথা এক বিন্দুতে আনার চেষ্টা করছি...কয়েকবার পড়লাম গল্পটা...ভালো লাগলো।
লম্বা একটা ঘুম দিয়া ওঠো।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
বিদেশী আবহের কাহিনী। কেমন যেন অনুবাদ অনুবাদ গন্ধ। তবে ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ।
অনুবাদ অনুবাদ কি না, এইটা নিয়া দ্বিমত আছে।
দেখি আর কেউ এরকম বলে কি না।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
দারুণ লেগেছে। বিশেষ করে শেষের দিকে এসে একটা ধাক্কা খেলাম!!!
[][][][][][][][][][][][][][][][][][]
ওরে বিহঙ্গ, ওরে বিহঙ্গ মোর,
এখনি, অন্ধ, বন্ধ, কোরো না পাখা।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আমার এক বন্ধু টেক্সাস এ আছে ২ বছর হয়। একদিন কথায় কথায় বলছিল, "এই হিস্পানিক আর কালোদের প্রতি আসলে আমরাই বেশী রেসিস্ট"
ব্যাপারটা একটু আজব, অনেকটা ভাইস-ভার্সা টাইপ।
পরে কখনো ডিটেইলে লিখবো এইটা নিয়া।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
শেষের ধাক্কাটা সামলে ওঠতে পারছি না এখনো !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
আমার কাছেও অনেক বাস্তব লাগল গল্পটা,মনে হচ্ছিল যেন কি হচ্ছে চোখের সামনেই দেখতে পারছি।বেশিক্ষণ কাজ করলে তো চোখে ধান্দা লাগবেই।হেঃ হেঃ।যাই হোক অন্য স্বাদের একটা গল্প।
~~~টক্স~~~
কনফুসিয়াস শক্তিশালী লেখক। লেখার গঠন আর প্রকাশ ভঙ্গি চমত্কার। সহজ ও সাবলীল। পুরো লেখাটি গল্পের চেয়ে ব্যাক্তিগত উপলব্ধি বলে মনে হয়। খুব ভালো লেগেছে।
---------------------------------------------------------
পৃথিবীর সব সীমান্ত আমায় বিরক্ত করে। আমার বিশ্রী লাগে যে, আমি কিছুই জানিনা...
---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন
নিঝুমের মন্তব্য ভালো লাগলো, বেশ মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন।
আপনার কথা ঠিক, এখানে গল্প তেমন নেই, নিজের উপলব্ধিটারেই ভিন্ন মোড়কে সামনে নিয়ে আসা।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
সাদাকালো বিষয়ক আলোচনায় যাচ্ছি না, গল্প পড়ে বলতে চাচ্ছি, গল্পের বুনন অনন্য! আহসানের উদ্বেগ, হাটার গতি বৃদ্ধি, পার্স তুলতে দেখে স্বস্তি পা্ওয়া সবই চমৎকার ছদ্দবেশ পেয়েছে। এরপর তার রেষ্টরুমে গিয়ে ফ্রেস হ্ওয়াতে কারও মনে এসেছে বলে মনে হয় না যে তার উপলব্ধিতে আসবে ওই ব্যাপারটা।
পুরো গল্পের মোরালটা দারুন শক্তিশালী হয়ে অবতির্ন হয়েছে শেষক্ষনে। যা একটু্ও আরোপিত মনে হয় নি।
(রন্টি চৌধুরী)
সুন্দর মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
এরকম মনোযোগী মন্তব্য পেলে সত্যিই ভালো লাগে।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
সুন্দর এক গল্পের সফল গল্পকার আপনি।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
পড়া হলো একটু দেরিতে। তাতে ভালো লাগার ঘাটতি কিছু হয়নি।
ছোটো একটা কথা। আহসানকে আয়নার সামনে দাঁড় না করিয়ে উপলব্ধিটা আনা যায়? আয়নার মুখোমুখি হওয়াটা অনেকটা ক্লিশে টাইপ লাগে - এতো বেশি ব্যবহার হয়!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
জুবায়ের ভাই ঠিক বলেছেন।
কিন্তু আয়নার বিকল্প কিছু খুঁজে পাচ্ছি না। আর কিভাবে আনা যেত ভাবছি। সঠিক কিছু পেলে বদলে দেব অবশ্যই।
অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
নিজেকে দিয়েই বুঝি
গল্পটা কত সত্যি
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
কনফুসিয়াস - শুধু গল্প হিসেবেই যে ভালো তা নয় খুব সময়োপযোগী একটা বিষয় তুলে ধরার জন্যেও আপনার ধন্যবাদ প্রাপ্য। এই 'আমরা' যে কি পরিমাণ বর্ণ বিদ্বেষী, জাতি বিদ্বেষী তা আর কি বলবো!
মনোযোগ দিয়ে গল্পটি পড়ার জন্যে সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
একবার কোনও এক লেখায় "বাঙালিরা বর্ণবিদ্বেষী" মন্তব্য করেছিলাম। অন্যেরা আমার বক্তব্য সঠিক নয় বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।
চমত্কার গল্প।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
ধন্যবাদ।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
কনফুসিয়াসের গল্প নিয়ে আমিও পুরনো একটা মন্তব্য করি, সিনেমেস্ক। এ গল্পের মধ্যেও সিনেমার স্বাদ আছে। পড়ার পর দেখার তৃপ্তি পাওয়া যায়।
হাঁটুপানির জলদস্যু
- একই সারাউন্ডিংসে একজন কালো চামড়ার বদলে যদি সাদা চামড়া কিংবা বাদামী চামড়ার কেউ হতো তাহলে কি আহসানের শংকায় কোনো পরিবর্তন হতো খুব!
তার অবস্থান থেকে সে যেটা করেছে সেটা তার বর্ণবাদী মনোভাবের চেয়ে মনেহয় আশংকাটাই বেশি হাইলাইটেড হয়।
যাইহোক, রন্টি চৌধুরীর শেষের কথা গুলোই হয়তো বলার ছিলো আমার। কিন্তু এতো গুছিয়ে বলতে পারতাম না।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এই গল্পটা খুবই ভাল হয়েছে। একদমে পরে ফেলবার মত। অসম্ভভ সুন্দর শব্দ গাথুনি।
নতুন মন্তব্য করুন