১।
মাঝে মাঝে এমন হয় যে, গভীর রাতে ঘুম ভেঙে গেলে চোখ দুটো না খুলেই যখন অন্ধকারের গায়ে কান পাতি, নিস্তব্ধ রাতের ভেতরের কোন একটা উৎস থেকে খুব মৃদু ভাবে তবলার বোলের মত শব্দ ভেসে আসতে থাকে। একটা বা দুটো আঙুল দিয়ে খুব আদুরে ভঙ্গিতে যদি বাজানো হয় - সেটা ঠিক তেরে কেটে ধিন হয় না, বদ্ধ ঘরের দরজার এপাশ থেকে ভেতরের গুম-গুম শব্দ শুনতে পেলে যেমন লাগে, অনেকটা সেরকম।
প্রথম প্রথম হৃৎপিন্ডের শব্দ ভেবে ভুল করতাম; পরে বুঝেছি, ওটা আসলে রাতেরই নিজস্ব শব্দ। দেয়ালের গায়ে অবিচল বসে থাকা টিকটিকি যেমন শুধু রাত হলেই টিকটিক করে উঠে; অথবা দেয়াল ঘড়িটা, সারাদিন চুপচাপ অবিরাম ঘুরে যায়, শুধু রাত গভীর হলেই যেন সেটাও টিকটিকির সাথে গলা মেলায়, তেমনি করে কেবল রাত হলেই যেন অন্ধকারের শব্দ শুনতে পাই আমি।
এখন যদিও বিকেল, আকাশে মেঘ তাই সন্ধ্যে বলে ভুল হয়। অবিরাম ঝিরঝির বৃষ্টি হচ্ছে- থামবার লক্ষণ নেই দেখে খানিকটা অপেক্ষা করার পর হাল্কা পায়ে দৌড়ে আমরা ক'জন প্রায় ধ্যানমগ্ন মানুষ এই গাছটার তলায় এসে আশ্রয় নিয়েছি। সামনে তাকালে কেবলই বৃষ্টি, চেয়ে থাকার কোন মানে হয় না, তবুও আমরা সবাই সেদিকে তাকিয়ে থাকি। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকায় হঠাৎ করেই বৃষ্টির ফোঁটাগুলো খুব বড় মনে হয়। আমার এমনও মনে হতে থাকে, যেন অনেক ওপর থেকে আমি বিশেষ কোন একটা ফোঁটাকে চোখে চোখে রেখে নীচে নামতে দেখছি, খানিকপর সেটা মাটিতে পড়ে ছিটকে উঠছে যেন। আমি ঠিক এমন করেই অনেক- অনেকগুলো বৃষ্টির ফোঁটাকে অনুসরণ করতে থাকি, এবং এমনটা করতে করতে যেন এর মাঝেও সেই নিস্তব্ধ রাতের তবলার বোলের শব্দের যে ছন্দ, আমি সেটা খুঁজে পাই।
আমি আনমনে, বৃষ্টি বাঁচিয়ে ঠোঁটে একটা সিগারেট গুঁজে দেই, তারপর লাইটারটা বের করার জন্যে পকেট হাতড়াই। ঠিক সেই সময় আমার বন্ধু দীপু হঠাৎ করে আমার কাঁধে হাত রাখে। কখন যে আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, কোন ফাঁকে, আমি টেরই পাইনি। ওর মাথায় একটা লাল টুকটুকে রুমাল বাঁধা। আমি একটু থমকে যাই। লাইটার হাতে নিয়ে বৃষ্টি বাঁচিয়ে আমি যে মুহুর্তে আগুন ধরাই - ঠিক তখুনি গভীর পানির তলদেশ থেকে ক্রমশ বড় হতে হতে উপরে উঠতে থাকা বুদবুদের মত অনেক আগের একটা ঘটনা আমার মনে পড়ে যায়।
আমি আর দীপুই ছিলাম সেবারও। দুজনেরই বয়স তখন দশ, কিংবা এগারো হবে। ছাদের পাশের সিঁড়ির ঘরটায় গিয়ে কুড়িয়ে পাওয়া আধ-খাওয়া একটা সিগারেটের টুকরাতে আগুন ধরিয়ে টানছিলাম আমরা। একেকবার টান দেবার সাথে সাথে ঐ সিগারেটের চেয়েও বেশি লাল হয়ে উঠছিল আমাদের মুখ। কাশির দমক আটকে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন ঘরটায় আমরা দুই কিশোর যখন অনভ্যস্ত ভঙ্গিতে একের পর এক টান দিয়ে চলেছি সিগারেটে- আর ফিসফিস করে ঠিক করছি- বন্ধুদের কাছে কেমন করে এই বীরত্বের গল্প করা যায় - ঠিক সেই মূহুর্তে বাবা এসে দরজা খুলে দাঁড়ান।
বাবাকে সেদিন শীতের কুয়াশা কেটে কেটে নদীর ওপার থেকে ক্রমশ কাছে এগিয়ে আসা ডিঙি নৌকার মাঝির মত লাগছিল আমার কাছে - মনে আছে।
দীপু একটুও দেরি করেনি। ছুটে পালিয়ে গিয়েছিল ও। আর বাবা, চোখে অবাক দৃষ্টি নিয়ে আমার কাছে এসে হাত থেকে সিগারেটটা নিয়ে গিয়েছিলেন। তারপরে আচমকাই প্রচন্ড জোরে চড় মেরেছিলেন আমাকে। আমি ছিটকে পড়েছিলাম মেঝের ওপর। কোনো কথা না বলে তিনি নীচে নেমে গিয়েছিলেন সেদিন।
আগে পরে অনেকবারই মার খেয়েছি, কিন্তু সেদিনের কথা মনে আছে বেশ। খুব ব্যথা পেয়েছিলাম এটা ঠিক, তবু সেদিন একটুও রাগ করিনি বাবার ওপর - কারণ, বাবা আমার এই কীর্তির কথাটা মাকে কখনো বলেননি।
২।
আমার মা। প্রায় সারাটা জীবন দেখেছি তিনি বিছানায় শুয়ে আছেন। কী একটা অসুখ ছিল মায়ের - তিনি খুব বেশি নড়াচড়া করতে পারতেন না। এমন নয় যে সারাদিন কাশতেন বা খুব জ্বরে ভুগতেন- সেরকম কিছু নয়। প্রায় সুস্থ মানুষের মতনই দেখাতো তাকে। পার্থক্য এই যে তিনি বিছানা শুয়ে থাকতেন সারাদিন।
ভীষন ফর্সা ছিলো তার গায়ের রঙ- চোখ দুটো- মনে আছে- ছিল আশ্চর্য রকমের গভীর আর কালো। মা যখন মাঝে মাঝে কাছে ডাকতেন আমাকে, আমি বিছানার পাশটিতে চুপ করে বসে থাকতাম আর শুরু হত তার রাজ্যের সব গল্প। আমি খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতে থাকতাম সেসব, আর মনে মনে ভেবে যেতাম আজগুবি সব ভাবনা।
কখনো কিছু লুকোতে চাইলে মায়ের চোখের দিকে তাকাতাম না কখনো। অন্যদিকে চেয়ে থাকতাম। মা কেমন করে যেন বুঝে যেতেন, আমাকে বলতেন তার দিকে তাকাতে। আমি তাকিয়ে দেখতাম- পাথরের মত কালো দুটি চোখ, কিন্তু কি গভীর আর কি স্বচ্ছ তারা! খানিক তাকিয়েই মা বুঝে যেতেন কোথাও গোপন কোন কথা আছে আমার, সযত্নে লুকোনো। তারপর গলায় আদর নিয়ে তিনি কেমন করে যেন আমার কাছ থেকে সে খবর ঠিকই বের করে নিতেন।
মায়ের বিছানার পাশে দেয়াল ঘেঁষে একটা মাকড়সার জাল ছিল, মাঝে মাঝে সেখানে কালো রঙের একটা মাকড়সা এসে বসতো। মা সেটাকে বলতেন তার বন্ধু। আমরা যখন থাকি না বাসায়, মা নাকি সেই মাকড়সার সাথে গল্প করেন। আমাদের কাজের বুয়া সেসব শুনেছে মাঝে মাঝে।
মাকড়সার চোখ কোথায় থাকে জানি না, কিন্তু প্রায় প্রতিবারই মনে হত, মাকড়সাটা যেন আমার দিকেই কঠিন মুখ করে চেয়ে আছে। যেন বা আমার এখানে, এইভাবে, মায়ের কোল ঘেঁষে বসে থাকাটা তার পছন্দ হচ্ছে না। কখনো কখনো শিউরে উঠে আমি সেদিক থেকে চোখ সরিয়ে মনে মনে ভাবতাম, আচ্ছা, ও কি বাবার দিকেও একই চোখ করে তাকিয়ে থাকে?
৩।
বাবা চিরকালই খুব নির্বিবাদী মানুষ ছিলেন। শহরের একমাত্র সরকারী কলেজে পড়ান। সারা দিনের পর বাসায় ফিরলে মাঝে মাঝে দু'একজন ছাত্র তার কাছে টিউশান নিতে আসে, তিনি তাদেরকে ঘন্টা দুই সময় দেন, তারপরে পত্রিকা নিয়ে বসে পড়েন - একেবারে রাতের খাওয়ার আগে পর্যন্ত- যতক্ষণ না মা তাকে তার ঘরে ডেকে পাঠান।
বাবা ও মায়ের মধ্যে নাকি একসময় গভীর প্রেম ছিল - এ কথা আমার কেন যেন বিশ্বাস হতে চায় না। মা বিছানায় শোয়া থাকলেও ভীষন ছটফটে স্বভাবের মানুষ। প্রায় সারাক্ষণই কথা বলে যাচ্ছেন- অথবা কাজের বুয়াকে এটা ওটা বলে যাচ্ছেন। সেই তুলনায় বাবা একেবারেই মৃদুভাষী। কেমন করে যে তাদের মিল হলো!
বাবা মা প্রায়শই বসে বসে অনেক গল্প করেন। গল্প মানে- মা একাই বলে যেতে থাকেন, বাবা খুব মনোযোগ দিয়ে শুনতেন সেসব। মানুষের চোখ থেকেও যে কখনো ভালবাসা ঝরে পড়ে, এ ব্যাপারটা তখন বাবার চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝেছিলাম। প্রায় প্রতিটি কথার মৃদু স্বরে জবাব দিতেন - কিন্তু গলার স্বরেও সেটা টের পাওয়া যেত।
আমার পনের বছর বয়সে যেদিন মা মারা যান- বাবা সেদিন একদম স্থির হয়ে বসেছিলেন সারাদিন। বারান্দার এক কোনায় চেয়ার পেতে। আমাদের নিকট আত্মীয়স্বজনেরা এসে মায়ের দাফনের ব্যবস্থা করেছিলেন, বাবাকে সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়নি।
সারাদিন একঠায় বারান্দায় বসে থেকে- সন্ধ্যার পরে তিনি প্রথম কথা বলে ওঠেন। ক্লান্ত স্বরে আমাকে ডেকে বলেন, আজকের পেপারটা একটু দিয়ে যাবি আমাকে?
আমি সেদিন কোনো এক ফাঁকে মায়ের ঘরে গিয়ে দেখি - মাকড়সাটি নেই আর ওখানে। তারপরে আর সেটাকে কখনো দেখিনি আমাদের বাসায়।
৪।
বৃষ্টি ঝরতে থাকে। একটু বাড়ে, আবার কখনও কমে যায়। ভিজে চলা দাঁড়কাকের মতন ঋষিসুলভ শান্ত ভঙ্গিতে আমরা ক'জন প্রায় ধ্যাণমগ্ন মানুষ এই গাছটার তলায় দাঁড়িয়ে থাকি। দীপু আমার কাঁধে হাত দিয়ে থাকে, এইটুকু স্পর্শকেও যেন ভীষণ প্রয়োজনীয় মনে হয় তার। সামনে তাকালে কেবলই অবিরাম বৃষ্টি, চেয়ে থাকার কোন মানে হয় না, তবু আমরা সবাই নিদারুণ আলস্যে সেদিকেই তাকিয়ে থাকি। খানিকটা দূরে, প্রায় অস্বচ্ছ অবয়বের অজানা অচেনা কিছু লোক নির্বিকার মনোযোগে মাটি খুঁড়ে চলেছে। তাদের মুখে কোনো শব্দ নেই, শুধু কান পাতলে ঝুপ ঝুপ করে একটা ভোঁতা আওয়াজ পাওয়া যায়। আমি সেই আওয়াজের প্রতি আরও বেশি মনোযোগী হই, অল্প প্রচেষ্টার পরেই সেটাও আমার কাছে সুরময় হয়ে ওঠে, আর তখন আমার মায়ের কথা মনে পড়ে যায়।
মা চলে যাবার পরে বুকের মধ্যে একটা শূণ্যতার মত তৈরি হয়েছিলো। ঠিক সেই সময় মনে হয়েছিল সেটা আসলে কখনই পূরণীয় হবার নয়। কিন্তু তেমনটা হলো না আসলে। কলেজে থাকার সময়টা বা যতক্ষণ বন্ধুদের সাথে থাকা হয়, মাকে মনে পড়তো না। বাড়ি ফিরলেই শুধু একটু ফাঁকা ফাঁকা লাগতো। আমাদের বাড়ির চেহারাও তেমন একটা বদলালো না। সেই পুরোনো বুয়াই বহাল রইলেন। শুধু বাচ্চা মতন একটা ছেলেকে এনে রাখা হলো ছোটখাট ফাই-ফরমাশ খাটার জন্যে।
বাবার সাথে দেখা হওয়া কমে গিয়েছিল আরও। তিনি আরও চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলেন। আরও বেশি পত্রিকা-প্রিয়। দেখতে অত্যন্ত সুপুরুষ ছিলেন। বাবার বন্ধুরা এসে তাকে নানা জায়গায় বেড়াতে নিয়ে যেতে চাইতেন, বাবার ভাল লাগবে এই ভেবে। কিন্তু তিনি তেমন একটা পাত্তা দেননি সেসবে। দু'একজন মুখ ফুটে আবার বিয়ে করার কথাও বললেন, কিন্তু বাবার চোখের পলক পড়ছে বলে মনে হয়নি কখনও।
বছর গড়িয়ে যায়।
আমি তখন সদ্য যুবক। প্রিয়তির সঙ্গে পরিচয় হয়ে গেছে ততদিনে। ক্লাশের ফাঁকে খানিকক্ষণ কথা বলা, অথবা কথা না বলে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকা, সবই আমার কাছে অসম্ভব গুরুত্বপূর্ণ। রিকশায় পাশাপাশি বসলে যখন আমাদের দুজনের গা ছুঁয়ে থাকে, আমি কেমন যেন ঘোরের মধ্যে চলে যাই। ততদিনে গাঁজা টানাও শিখে গেছি। কিন্তু গাঁজার ঘোরের চেয়েও আমার কাছে প্রিয়তির গা ছুঁয়ে থাকাটা আরো বেশি মধুময় মনে হয়।
একদিন ক্লাশ শেষে - আমরা দুজন বসে আছি। প্রিয়তি কি একটা গল্পের বই পড়ছে আমার সাথে কথা না বলে। আমি সেটা টুক করে কেড়ে নিতে চাইলাম, ও দিলো না, সেটাকে চেপে ধরলো একদম বুকের সাথে। আমি আবারও জোর করতে যেতেই কী যে হলো, আমার হাতের দু'টো আঙুল হঠাৎ ওর বুক ছুঁয়ে গেল। দু'জনেই একটু চমকে উঠলাম- তারপর -কিছুই হয়নি - মত করে ও আবারও বই পড়া শুরু করলো। কিন্তু আমার মধ্যমা আর তর্জনীর চমক তখনো কাটেনি। আমি অবাক দৃষ্টিতে আমার আঙুলের দিকে তাকিয়ে রইলাম- কী আশ্চর্য একটা সুখানুভুতি সেখানে।
সেদিন রিকশায় করে ফেরার সময় কেউ কোন কথা বলিনি।
বাড়ি ফিরে নিজের ঘরে গিয়ে চুপ করে শুয়ে পড়েছি- আর খানিক পর পর হাত চোখের সামনে তুলে আঙুল দুটোকে দেখেছি। হঠাৎ খুব বেশি আপন মনে হচ্ছিল ঐ দুটোকে, এমনকি ভাত খাবার সময় যখন খাবার মুখে তুলছিলাম, বারবার মনে হচ্ছিল, এই দু'জন বেশি কষ্ট পাচ্ছে না তো!
রাতে কিছুতেই ঘুম আসছিল না সেদিন। বিছানায় এপাশ ওপাশ শুধু একসম খুব তৃষ্ণা পেলে উঠলাম পানি খেতে। রান্নাঘরে যাবার প্যাসেজটায় এসে দাঁড়াতেই হঠাৎ গোঙানির মত একটা শব্দ শুনলাম যেন। আমি দাঁড়িয়ে গিয়ে বোঝার চেষ্টা করলাম কোত্থেকে আসছে সেটা।
অন্ধকারে দাঁড়িয়ে বুঝতে বুঝতেই দেখি বাবা বের হয়ে আসছেন হন্তদন্ত হয়ে, এপাশে আলো না থাকায় আমাকে দেখেননি - ঘাম দেয়া শরীরে ছুটতে ছুটতে চলে গেলেন নিজের ঘরে। আমি খানিকটা এগিয়ে রান্না ঘরে উঁকি মেরে দেখলাম- আমাদের কাজের ছেলেটা উঠে বসে হাঁটুতে মুখ গুঁজে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদছে। পাশেই পড়ে থাকা লুঙিটায় চোখ মুছছে শুধু একটু পর পর।
এরকম করেই ঠিক একদিনে দু'বার আমার পৃথিবী বদলে গেল।
৫।
নিউমার্কেটের সামনের বড়ো রাস্তাটা পার হবার জন্যে প্রিয়তি যখন নির্বিঘ্নে আমার হাত ধরে, আমার ইচ্ছে করে এই হাতটা, এই নিউমার্কেটটা, এই সময়, এই জায়গা, সবকিছুকে সোনা দিয়ে বাঁধিয়ে রাখি!
কিন্তু বাড়ি ফিরলেই আবারও সেই বিচ্ছিরি বোধ। বাবাকে দেখলেই একটা বমি-মতন অনুভূতি দলা পাকিয়ে উঠতো গলার কাছটায়। কখনই আমাদের চোখে চোখ পড়তো না। আমি চাইতাম, হয়ত ঠিক যেমন করে মা তাকাতেন আমার দিকে, আমার গোপন কথা জানবার জন্যে, কিন্তু বাবা অন্যদিকে তাকিয়ে কথা বলতেন সবসময়। আমি তীব্র দৃষ্টি নিয়ে অপেক্ষা করতাম কখন তিনি আমার দিকে তাকাবেন- আর আমি আমার সবটুকু ঘৃণা ঢেলে দিব সেখানে।
ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে আমি চলে এলাম আমাদের শহর ছেড়ে। একই বিষয় নিয়ে পড়তে প্রিয়তিও চলে এল। আমরা দুজনেই হলে থাকতাম, একসাথে পড়তাম, ঘুরতাম, ফিল্ম সোসাইটি করতাম। মিছিল, মিটিং, আন্দোলন আর ভালোবাসাবাসি- সব চলতে লাগলো একসাথে।
ছুটিছাটায়ও বাড়ি যেতে চাইতাম না আর। অনেক দিন বাদে বাদে বাবার সাথে হঠাৎ হঠাৎ ফোনে কথা হতো।
একবার তিনি খুব অসুস্থ হয়ে গেলেন। হার্টের অসুখ। বাইপাস করাতে হলো। হাসপাতাল- ডাক্তারের কাছে ছোটাছুটি, সবই একা প্রিয়তি করলো, আমি কেবলই তাকে সঙ্গ দিলাম।
অপারেশনের পরদিন আমি বাবার বিছানার পাশে বসা। প্রিয়তি বাইরে গেছে কিছু একটা কাজে। বাবা ঘুমাচ্ছিলেন। হঠাৎ করে তিনি চোখ মেলে তাকালেন। এবং অনেক অনেকদিন পরে আমাদের চোখাচোখি হলো।
বাবার চোখ দেখে আমি চমকে উঠলাম। কি গভীর ক্লান্তি, লজ্জা আর আকুতি সেখানে! কিছু না বলে তিনি আমার হাত ধরতে চাইলেন, আমি চট করে উঠে দাঁড়ালাম। অনেকদিনের পুষে রাখা ঘৃণাটুকু ঢালতে গিয়ে দেখি- সেটুকু গ্রহন করবার ক্ষমতা আর তার নেই। অঝোরে পানি পড়ছে তাঁর চোখ থেকে।
ঘৃণা করতে না পারার অক্ষমতায় আমি সেখান থেকে ছুটে বের হয়ে এলাম।
৬।
আবারও বছর গড়ায়। গড়িয়েই চলে।
প্রিয়তি আর আমার ছোট্ট সংসার। প্রিয়তি এখন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়ায়। আর আমি পুরোপুরি সিনেমাওয়ালা। হলে চলে না- দর্শকে দেখে না- এমন সব ছবি বানাই। বছর বছর নিয়মিতভাবে পুরস্কার এনে দেয় সেসব সিনেমাগুলো, আর আমি সেই আনন্দে প্রতিদিন প্রিয়তিকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকি।
এমনি করেই চলছিল আমাদের। গতকাল পর্যন্ত।
কাল রাতেই হঠাৎ ফোন এলো বাড়ি থেকে। জরুরী তলব। আর আমরা আজ সকালে এসে পৌঁছাই আমাদের ছোট্ট শহরে- এক ঝাঁক কালো মেঘ মাথায় নিয়ে।
*
সিগারেটটা শেষমেষ ধরাতে পারি। ওটার মাঝামাঝি আসতে আসতে বৃষ্টির মধ্যে খুঁজে পাই সেই তবলার বোলের ছন্দ। শেষ হবার আগেই দীপু আমার কাঁধ ধরে ইশারা করে। বৃষ্টি থেমে গেছে, আমরা কয়েকজন নিশি পাওয়া মানুষের মতন হেঁটে এসে দাঁড়াই সেখানে।
কবরে লাশ নামানো হয়। বাবাকে মাটি চাপা দেয় সবাই মিলে। দেখি চেনা অচেনা সব লোকজন গভীর মনোযোগে বাবার কবরে মাটি ফেলতে থাকে। আমি এক দৃষ্টিতে সেদিকে তাকিয়ে থাকি। হঠাৎ বড় চাচা বলে ওঠেন, বাবা রে, মাটি ফেলবি না একটু?
আমি মাথা নাড়ি। হাতের সিগারেটটা শেষ প্রায়। কোথায় ফেলবো বুঝে পাই না। তারপর কি ভেবে ফেলে দিই সেটা কবরের ভেতর। এরপর নিচু হয়ে এক গাদা মাটি মুঠো করে ছড়িয়ে দিতে থাকি সেটার ওপরে।
বৃষ্টি গুমোট বেঁধে থাকে আকাশে, মেঘ ডেকে ওঠে। আমার হাত থেকে মুঠো মুঠো মাটি বৃষ্টির মত ঝরে পড়তে থাকে, সেখানে - একটা সিগারেটের সাথে আমার বাবা ক্রমশ চাপা পড়তে থাকেন।
২০০৬
মন্তব্য
পুরোনো গল্প। সচলায়তনে রাখতে ইচ্ছে করলো বলে তুলে দিলাম।
-যা দেখি তা-ই বলি...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
ভালো লাগলো। "অনেকদিনের পুষে রাখা ঘৃণাটুকু ঢালতে গিয়ে দেখি- সেটুকু গ্রহন করবার ক্ষমতা আর তার নেই৷" - খুব একটা ধাক্কা দেয়।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
গল্পের ভাত নাই। কেউ পড়ে না!
-----------
জুবায়ের ভাই,
আপনিই অন্ধের ষষ্ঠী, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
-যা দেখি তা-ই বলি...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
কীসের ভাত আছে?
প্রিয় পোস্ট বলে সচলায়তনে কিছু থাকলে এ গল্পটা জুড়ে দিতাম।
অসাধারন, অসাধারন!
আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে
অমিত আহমেদ। ধন্যবাদ। বড়ই শরমিন্দা বোধ করছি!
-যা দেখি তা-ই বলি...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
- পড়েছিলাম আগেও, আবারো পড়লাম।
_________________________________
<স্বাক্ষর দিমুনা, পরে জমিজমা সব লেইখা লইলে!>
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এবার দেখি একটা কমেন্টও নাই! আজিব তো!!!
আগের কমেন্টটা সাম্প্রতিক মন্তব্য তালিকায় আসে নাই।
কনফু, আপনাকে বাগে খাইলো?
আমারে বাগে খাইলে এডমিনের পশ্চাতে সিংহ লেলিয়ে দিবো।
হু হু বাবা, খবর আছে!
-যা দেখি তা-ই বলি...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
আমি এসেছিলাম অসম্ভব ভালো লাগা এই গল্পটা আবার পড়তে।
শেষে এসে কনফুর কমেন্ট পড়ে ভাবছি, এডমিনের পশ্চাতে? এক্সিউজ মি, এখনও কি বহাল আছে কথাটা?
--তিথি
----------------------------------------------------
আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
কনফু ভাই,
সচলায়তন সঙ্কলন এর সূচী থেকে আপনার গল্পে প্রবেশ, অতঃপর এদ্দিন পরে পড়ার কারণে মন্তব্য করতে দ্বিধা এবং তদপর, বাধ্য হয়ে মন্তব্য করে ফেলা ....
অসাধারণ একটা গল্প হয়েছে, এটাই বলতে চেয়েছি শুধু।
___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"
বাংলা ভাষায় সাম্প্রতিক সময় সুমন ভাইয়ের 'গরিবি অমরতা'র পর এই গল্পটা মারাত্মক নাড়া দিলো। কি দুর্দান্ত ভাষা, ইন্টেরিয়র মনোলগের কি অসাধারণ প্রদর্শনী!! আমি যাকে বলে dumbfounded.
আমি জানি না আপনার এলিমেন্টস চুসিং ইচ্ছাকৃত ছিলো কিনা, কিন্তু রোমান্টিসিজমের এমন ম্যাজিক রিয়লিস্টিক প্রকাশ তো সচরাচর চোখে পড়ে না।
আমি মুগ্ধ!
বিশেষ করে মাঝে মাঝে জয়েসের মতো যে মাইক্রোস্কপিক স্পেক্ট্রাম নিয়ে এসেছেন তার তুলনা হয় না।
এত বেশি শক্তিশালী লেখা আপনার! আমার আসলে মাথা আউলায় গেসে... উল্টা পাল্টা বকতেসি... নিঝুমরে ধন্যবাদ। আজকে বাসে আসতেসিলাম। তখন তীব্র বুকে ব্যথা নিয়ে সে আপনার এই লিখার কথা বলে যাচ্ছিল। সে না বললে এইটা পড়া হতো না। তার প্রতি কৃতজ্ঞতা।
আর আপনাকে স্যালুট! হ্যাটস অফ, ডিয়ার রাইটার, হ্যাটস অফ!!
অদ্ভূত সুন্দর লেখা। এটা আমার আগে চোখে পড়েনি!
অনেক পুরনো লেখা নাকি কনফু ভাই?
লেখা পোস্ট করা ২০০৮ এ আর মন্তব্য ২০০৭ ...।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
হুম, এইটা বহু পুরানো লেখা। আপনার চোখে পড়েছে দেখে ভাল লাগলো।
-----------------------------------
তুমি যা জিনিস গুরু আমি জানি, আর কেউ জানে না
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
গল্পের সংগা -টংগা বুঝি না... গল্প কাকে বলে কেউ জানত চাইলে এই গল্পটাই বের করে দেখাই... এই গল্পের কাছে কোন গল্পই ধোপে টিকে না । অন্ততঃ আমার বিচারে...
--------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন
---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন
আমার পড়া সবচেয়ে বিস্ময়কর গল্পগুলোর শেলফে তুলে রাখলাম একে। মানুষের প্রতিভা দেখে আমি মুগ্ধ হই, ঈর্ষাণ্বিত হই তার চেয়েও বেশি। এই গল্প পড়ে বুঝলাম ঈর্ষা করার যোগ্যতা আমার নেই।
_____________________
আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।
সচলায়তন পড়ি বেশ অনেকদিন, আপনার ব্লগ পড়া হয় নাই।
আজ বিসমিল্লাহ বইলা ধরলাম।
ভাবছিলাম কোনো মন্তব্য করুম না। কাঠের সেনাপতি ভাল্লাগছিলো, কিন্তু এইটা পড়া ভাল্লাগাটা না জানাইয়া থাকতে পারলাম না।
জবর গল্প। বুকের মধ্যে ঘাই মারে। আল্লায় আপনারে বেশি বেশি লেখার তৌফিক দান করুক।
ভয়াবহ গল্প!
এরকম লেখায় মন্তব্য করতেও কইলজার জোর লাগে!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আপনার লেখা "দেশ"-এ অতন্দ্র প্রহরী'র করা মন্তব্য থেকে এই গল্পটার খোঁজ পেলাম। সচলে আছি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অথচ এই গল্পটার কথা কখনো জানতে পারিনি। এমন আরও অনেক অসাধারণ লেখা সচলের কোনে কোনে পড়ে আছে, কখনো সেগুলো পড়া হয় না।
গল্পটা নিয়ে অনেকক্ষণ ধরে অনেক কিছু ভাবলাম কিন্তু কিছুই গুছিয়ে লিখে উঠতে পারলাম না। তার দরকারও নেই। সংবেদনশীল যে কোন পাঠক এই গল্পটা পড়লে এমন দশাতে পড়বেন। কাহিনী, শব্দ চয়ন, ভাষার ব্যবহার, রূপকল্প, জাদু-বাস্তবতার প্রয়োগ, উপস্থাপনা সব মিলিয়ে অসাধারণ পরিপাটি একটি প্যাকেজ! অনেক গল্পই আমাদের চমকে দেয়, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তার ধার হারাতে হারাতে এক সময় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যায়। এই গল্পটা কালোত্তীর্ণ।
ধন্যবাদ দেবার মতো বালখিল্যতা দেখাবো না, শুধু এমন একটা গল্প উপহার দেবার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে গেলাম।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আমার মাঝে মাঝে একটা ভয় হয় - সচলায়তনের হোস্টিং ও মেন্টেনেন্সের জন্য যে বা যাহারা সিলভার টনিকের যোগান দেন, তিনি বা তাহারা যদি হঠাৎ করে একদিন বলে বসেন - "যথেষ্ট হয়েছে, আর না!!", কিম্বা যিনি বা যাহারা (হয়তো একই ব্যক্তি/রা) এর মডারেশন বা টেকনিকাল মেন্টেনেন্সের জন্য সময় দেন, ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ান, তিনি বা তাহারা যদি ওয়ান ফাইন মর্নিং "ধুত্তুরি, আর পারি না রে বাবা!" বলে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে ইস্তফা দেন বা অন্য কোনো কারনে যদি সচলায়তন বিলুপ্ত হয়ে যায় -- তখন কি হপে? তখন এই কোনে কোনে পড়ে থাকা না-পড়া অসাধারণ লেখাগুলির, এই সময়ের ছাইচাপা পড়া রত্নরাজির কি হবে?? আপনার মতো অন্য কেউ তখন এক বা অনেক দশক পরে কি করে আরেকটা অনাবিষ্কৃত বা প্রায়-অনাবিষ্কৃত রত্ন খুঁজে পাবে এভাবে? তখন হাজার ছাই উড়ালেও তো আর এইসব অমূল্য রতনের খোঁজ আর কিছুতেই পাওয়া যাবে না!!
আমার তাই মাঝে মাঝে মনে হয় নিতান্তই বাজে অখাদ্য লেখা থাকলে সেগুলি বাদ দিয়ে সচলায়তনে আজ পর্যন্ত প্রকাশিত সমস্ত লেখাগুলি নিয়ে সার্চেবল পিডিয়েফ ফর্ম্যাটে একটা কমপ্লিট এ্যান্থোলজি (এক বা একাধিক খণ্ডে) বা ঐ জাতীয় কিছু করা যেতে পারে হয়তো সেই অনাগত ভবিষ্যতের জন্য। তবে এটা আগে প্রকাশিত শুধুই সেরা লেখাগুলির সঙ্কলণ হলে হবে না, সব ধরণের প্রায় সব লেখার সঙ্কলণ হতে হবে, নচেৎ সচলায়তনের প্রাণস্পন্দন বা উত্তাপটা বাদ পড়ে যাবে। এরকম কিছু করলে সেটা যে তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ করতে হবে তাও নয়, 'যেদিন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ণ'-কালের জন্য রেখে দেয়া যেতে পারে, যাতে সেদিনের মানুষও খুঁজে পায় সচলায়তনকে, এই লেখাগুলিকে, এই লেখকদের।
****************************************
পূর্ণ সহমত। সেই সাথে এই অনুরোধটাও জানিয়ে রাখলাম যে যদিই কোনদিন সচলায়তন স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয় - আর্থিক বা সময়ের টানাটানিতে, আমাকে যেন অন্ততঃ একটিবার সুযোগ দেয়া হয় তাকে সচল রাখার জন্য এগিয়ে আসার।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ আবারো, পান্ডবদা।
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
আপনার লেখা "দেশ"-এ অতন্দ্র প্রহরী'র করা মন্তব্যে ষষ্ঠ পান্ডব-এর করা মন্তব্য থেকে এই গল্পটার খোঁজ পেলাম। ভাগ্যিস পেলাম!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ এক লহমা।
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
নতুন মন্তব্য করুন