সম্পূর্ণ রঙীনঃ একটি ফুলে দুইটি ভ্রমর-

কনফুসিয়াস এর ছবি
লিখেছেন কনফুসিয়াস (তারিখ: শুক্র, ২২/০৬/২০০৭ - ১০:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সোজা সাপ্টা কাহিনি। দুই নায়ক, এক নায়িকা। নায়কদের একজনের বাবা নিজে নিজে খুন হন, ঘটনাচক্রে সন্দেহ গিয়ে পড়ে মূল নায়কের উপর। এদিকে নায়ক নায়িকার মাঝখানে চলে আসে আরেক প্রায়-নায়িকা। আমাদের নায়ক লোকসম্মুখে চুমু খান সেই নবাগতা নায়িকাকে- তাও আবার অনেককাল আগে মূল নায়িকাকে যেই ইশটাইলে খান, ঠিক সেই ইশটাইলে। এই না দেখে নায়িকার অভিমান ভেঙে পড়ে। ওদিকে বাবার খুনী সন্দেহ করায় নায়কদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। কাহিনিতে চলে আসেন ভিলেন। সেই কিন্তু আবার ভালো মানুষ, পুরোপুরি ভিলেন না। মেয়ের চিকিৎসার খরচ তোলার জন্যে তিনি ভিলেনের রোল করছেন।

তো এইরকম গোলমালের মাঝখানে সিনেমার শেষপ্রান্ত হাজির হয়ে যায়। নায়িকাকে কিডন্যাপ করে ফেলে ভালো মানুষ-ভিলেন, আর সহযোগী ভিলেন। ওখানে তুমুল মারামারি, নিজেদের মধ্যকার ভুল বুঝাবুঝি ভেঙে দুই নায়ক 'বুকে বুক মিলিয়ে' যুদ্ধ করে ভিলেনদের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যায়ে ভিলেন ছুরি হাতে এগিয়ে আসে নায়ককে মারতে, আর বন্ধুকে বাঁচাতে সেই ছুরির সামনে পিঠ পেতে দেন অন্য নায়ক। লাভের মধ্যে লাভ- নায়িকার কোলে মাথা রেখে মৃত্যু হয় তাঁর। শেষমেষ নায়ক নায়িকার মিলন ঘটে। সিনেমারও শেষ হয়।

এতক্ষণের কাহিনি পড়ে যদি ভাবেন, এই সিনেমার নাম রঙীন একটি ফুলে দুইটি ভ্রমর, তবে পাঠক, আপনার দোষ দিব না। বিশ্বাস করুন- সিনেমার শুরুতে যদি স্ক্রীনে না দেখাতো, তারচেয়ে বড় কথা- সাথের টিকেটের গায়ে যদি স্পষ্টাক্ষরে লেখা না থাকতো- আমি বিশ্বাসই করতাম না এই মাত্র যেই ছবিটা দেখলাম, সেটার নাম- স্পাইডার ম্যান-থ্রি!
হায়, সেলুকাস! হলিউডের পরিচালকেরা যে ইদানীং মনোযোগ দিয়ে বাংলা সিনেমা দেখা শুরু করেছেন, সিনেমার শেষে ক্রেডিট ডিসপ্লেতে এই তথ্যটাও যোগ করা দরকার ছিলো।

যারা এখনো দেখেন নি, তারা বেঁচে গেছেন। আর যারা বাঁচতে পারেন নি,আসেন ভাইয়েরা, আমরা গলা ছাইড়া কান্দি! মন খারাপ(
auto


মন্তব্য

কনফুসিয়াস এর ছবি

পুরোনো পোষ্ট এইটা।
সিনেমা নিয়া আরো কিছু টানা পোষ্ট দিবো ভাবছি। তাই এইটারেও এইখানে আইনা হাজির করলাম।
-যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

ভাস্কর এর ছবি

সবই বাজার বস...সবই বাজার....


বরফখচিত দেশ ক্যান এতোদূরে থাকো!


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

কথা সইত্য।
====
মানুষ চেনা দায়!

সৌরভ এর ছবি

খেলুম নাহ!
থুক্কু, দেখুম না।
------ooo0------
বিবর্ণ আকাশ এবং আমি ...


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

অমিত আহমেদ এর ছবি

হক কথা!

************************
আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

ঝরাপাতা এর ছবি

এখনো দেখা হয় নাই। এখন দেখি না দেখনই ভালো হইছে।
_______________________________________
পোড়াতে পোড়াতে ছাই, ওড়াতে ওড়াতে চলে যাই . . .


বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

ভালৈছে দেহি নাই, দেখলে বাংলা সিনেমার কথা মনে হইতো আর স্বপ্নে ময়ূরী আইসা আমার ঘরের ছাদ ফাটাইয়া লাইতো ডান্স কইরা।
অল্পতে চোখ বাঁচছেগো কুংফু।
_________________________________
<স্বাক্ষর দিমুনা, পরে জমিজমা সব লেইখা লইলে!>

যূথচারী এর ছবি

কিন্তু বিষয় হলো যেভাবেই বলেন না কেন, বিষয় কিন্তু এই একটাই: নায়ক থাকবে নায়িকা থাকবে, নায়িকার জন্য দেওয়ানা আরো কিছু ঝামেলা থাকবে, কিছু বন্ধু থাকবে, পুরাতন অচলায়তন থাকবে, কিছু অসুন্দর থাকবে। শেষমেষ কোনো মতে শেষ হবে।
ব্রেখট যেমন বলেন, "যা কিছু মৌলিক তা করে গেছে শুধু এডাম আর ঈভ।" শুধু শুধু ওই মাকড়সা-মানবরে দোষ দিয়া কি লাভ?


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

কনফুসিয়াস এর ছবি

কথা সত্য। কিন্তু ঘটনা হইলো গিয়া, এই সিনেমা বাদে আর কোনটা এমন কইরা বাংলা সিনেমার কথা মনে কইরা দেয় নাই। এই জন্যেই ইহার কথা বর্ণনা করলাম!

-যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

কেমিকেল আলী এর ছবি

প্রথমে মনে হচ্ছিল কোন বাংলা সিনেমার সমালোচনা পড়ছি। ভাবতে ছিলাম কনফুসিয়াস তাহলে আজকাল বাংলা সিনেমাও দেখে?

পরে ছবিটা নজরে আসায় --হাসতেই আছি।

এক্কেবারে হক কথা কইছেন বস।

তিন লাইনের কবি এর ছবি

হায় হায় কন কি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।