রাজনীতি আমার কাছে ঠিক যেন দস্যু বনহুর।
" তারপরে কি হইতে কি হইলো, নিমেষের মধ্যেই শত্রুর বন্দুক বনহুরের হাতে চলিয়া আসিলো। '' রাজনীতিকে ঠিক এরকমই ভোজবাজি মনে হয় আমার কাছে চিরকাল, যেখানে সদা সর্বদাই কি হইতে কি হইয়া যায়! আগে ভাগে কিছু বুঝে উঠতে পারাটা সব সময়েই যেখানে দুষ্কর।
রাজনীতিবিদদেরও আমার পছন্দ নয়। সেই ছোটবেলার কথা। কোন কেলাশে পড়তাম তাও ভুলে গেছি। কোন এক সুন্দর সকালে দাঁত মাজতে মাজতে বাসার বাইরে গিয়ে দেয়ালে তাকিয়ে দেখি, খুব বড় বড় করে সেখানে লেখা- " দ-খ-লে- কা-ল্লু- মিয়া- ''। আমি তো সেই দেখে আর্ত চীৎকার! বলে কি! আমাদের বাসা দখল করে নিয়েছে! হই হই চেঁচামেচি করে বাসার সবাইকে জড়ো করে ফেললাম, সবাই বলে কি হলো, কি হলো? আমি কোন এক ফাঁকে কাঁদো কাঁদো গলায় বললাম, তোমরা দেখতে পাওনা, কাল্লু মিয়া যে আমাদের বাড়ি দখল করে নিয়েছে??!!
তারপর সবার সে কি হাসি! অবুঝ আমাকে মাথায় হাত বুলিয়ে বুঝিয়ে দেয়া হলো, বাড়ি নয়- নির্বাচনী প্রচারের জন্যে দেয়ালে চিকা মারা হয়, সেটারই দখল নিয়ে রেখেছে কাল্লু মিয়ার কর্মীরা, ভয়ের কিছু নেই।
সেদিন 'বুঝ' পেয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু সেই যে মন বেঁকে বসলো রাজনীতিবিদদের উপর, সেটা আজ অবধি সোজা হয় নি।
দুই হাজার সাতের এই শীত শীত সকালে এসে আমি এখন আর সেই পুঁচকে ছোঁড়াটি নই। রাজনীতিক নন, সুতরাং এ কথাও জোর দিয়েই বলা যায় যে আমাদের উপদেষ্টারাও নিশ্চিত কাল্লু মিয়া নন। জরুরি অবস্থার শুরুতে একের পর এক যখন দূর্নীতিবাজেরা ধরা পড়ছিলো, খানিকটা হলেও আশা পাচ্ছিলাম, এবার বোধহয় বিচার হবে তাদের কৃতকর্মের। কিন্তু, তারপরে কি হইতে কি হইয়া গেল, দেখি চিত্রনাট্য নতুন করে লেখা হচ্ছে, ঘটনার নেপথ্যে দর কষাকষি চলছে, রাঘব বোয়ালেরাও টপাটপ দেশ ছাড়তে রাজি হয়ে যাচ্ছেন। চারপাশে ফিসফিস শুনছি, বাংলাদেশ নাকি হাঁটছে পাকিস্তানের দেখানো পথেই!!! তবে? সোনার বাংলার ভবিষ্যত কি তাহলে পেয়ারা পাকিস্তান??
জেগে জেগেই দুঃস্বপ্ন দেখছি এখন- আমাদের মানচিত্রের গায়ে খুব মেপে মেপে জলপাই রঙে লেখা হচ্ছে- ' দ- খ- লে- ... ... ''। বছর দশেকের সেই ছোট্ট ছেলেটা আজ আবার গাল ফুলিয়ে বলছে- আমাদের দেশ যে দখল হয়ে গেল, তোমরা দেখতে পাওনা??
আমরা কি দেখতে পাচ্ছি?
মন্তব্য
পুরোনো লেখা দিতে চাচ্ছি না, তবু দুয়েকটা এখানে রাখতে ইচ্ছে করে। পুনরাবৃত্তির জন্যে দুঃখিত। -যা দেখি তা-ই বলি...
-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ ।
ব্যাপার না। আগেও পড়া ছিলো...
কি মাঝি? ডরাইলা?
" তারপরে কি হইতে কি হইলো, নিমেষের মধ্যেই শত্রুর বন্দুক বনহুরের হাতে চলিয়া আসিলো। ''
এই লাইনের অভিনব ব্যবহার মনে থাকবে কনফু।
দর্শকদের কাছে এই কি হইতে কি হইয়াই যায়। কি করা। নিজে যুদ্ধের ময়দানে না নামিলে রক্ষা নাই।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
সহমত।
পাব না কেন, পাই ... কিন্তু দেইখা কি করব?
নতুন মন্তব্য করুন