youtube.com আমার খুব প্রিয় একটি ওয়েবসাইট।
আমার ধারনা, দেশের বাইরে থাকা বেশিরভাগ মানুষেরই এই সাইটটা খুব পছন্দের। এখানে পাওয়া যায় না এমন কোন ভিডিও নেই বললেই চলে। জানি, একটু বেশি বলে ফেললাম, কিন্তু কথাটা অনেকাংশে সত্য।
দেশ-বিদেশের হাজারো ইউজার এখানে নিজেদের সংগ্রহের ভিডিও আপলোড করেন। এটাকে ভিডিও লাইব্রেরি বলা যায় সহজেই। ওয়ার্লড কাপ শুরুর আগে ম্যারাডোনার গোলগুলো দেখতে সাধ হলো, ওখানে খুঁজতেই পেয়ে গেলাম। একদিন এখানকার পত্রিকায় এলো শেন ওয়ার্ন নাকি নতুন কি কীর্তি করেছে! কই পাই, কই পাই?
কেন? ইউটিউবে!
-------------------
ওখানে গিয়ে বাংলা অথবা বাংলাদেশ লিখে সার্চ দিলে অনেকগুলো ভিডিও চলে আসে। নানারকম মিউজিক ভিডিও, বিজ্ঞাপন এবং কোন কোন সময় পুরো নাটকও পাওয়া যায় ওখানে। আমি তুমি এবং সত্যজিৎ নামে একটা নাটক দেখে ফেললাম ওখানে। পেয়ে গেছিলাম জেমসের হিন্দি গান!
দেশে নাকি ইদানীং নেসক্যাফের একটা অ্যাড খুব জনপ্রিয়। চল সবাই.. বা এরকম কিছু। আমার-হতেও-পারে-বউ সেটা আমাকে শোনাবেই শোনাবে। ওর কাছে আছে গানটা, পাঠাতে চাইলো। কিন্তু দেশের নেট-এর স্পিড সেই ইচ্ছাকে বাস্তবায়িত করতে দিচ্ছিলো না। কি মনে করে ইউটিউবে সার্চ দিলাম। বাহ! একদম সামনে চলে এলো- চল সবাই- জীবনের আহবানে সামনে এগিয়ে যাই।
একই ভাবে শুনলাম, ও দেখলাম- বাবা বাবা, আমাদের ময়না পাখিটা না আজ আমার নাম ধরে ডেকেছে!
সুতরাং এই টিউবের কল্যানেই হতেও-পারে-বউ যখন আমাকে বলল, দেখেছিস, কি ভীষন সুইট মেয়েটা!- আমি নির্দিধায় জোরে জোরে মাথা ঝাঁকাতে পারলাম।
এহেন ইউটিউব পছন্দের সাইট হবে না তো কি?
------------------------
খুব ভালো একটা ব্যাপার হলো- মাঝে মাঝেই ওখানে কিছু দরকারি নিউজ-ক্লিপিংসও আপলোডিত হয়। শায়খ আব্দুর রহমানকে ধরার নিউজ ক্লিপিংটা আমি ওখানেই খুঁজে পেয়েছিলাম।
খুব সমপ্রতি, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানকে ঘরে ফিরিয়ে আনা হলো। পেপারে এবং এখানে পড়ে আমি ভীষন এক্সাইটেড! নেট খুঁজেও তেমন কোন ছবি পেলাম না সেদিনের। আমাদের দেশীয় পত্রিকাগুলো তাদের অনলাইন ভার্সান গুলোয় ছবি দেয়ার ব্যাপারে খুবই উদাসীন।
তাই আবারো ইউটিউবে ট্রাই মারলাম।
মতিউর রহমান লিখে সার্চ দিতেই পেয়ে গেলাম তিনটি ভিডিও। ভীষন আগ্রহ নিয়ে দেখলাম সেগুলো।
মতিউর-এর ভাই এবং মিলি রহমানের আনন্দ ও কান্নার মিশেল আর অনুভুতি দেখলাম। কি অদ্ভুত দু:খময় ভালো লাগা অনুভুতি তাঁদের। ভীষন ভাবে আপ্লুত হলাম।
----------------------------
ঐটুকু ছোট্ট ভিডিওর মাঝেই আবারো রাজনৈতিক নেতারা চলে এলেন।
জনৈক আওয়ামী লীগার বললেন, মতিউরের দেশে ফিরে আসাটা গৌরবের ব্যাপার, কিন্তু দু:খ এই যে তিনি যাদের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন, তারাই এখন ক্ষমতায়।
হক কথা!
কিন্তু, কেউ কি তাঁকে মনে করিয়ে দিবেন, ক্ষমতায় আনবার ব্যাপারে তাঁদেরও অবদান কম নয়? ওদের সাথে নিয়ে আন্দোলন করবার দৃষ্টান্তটা, যদদূর জানি আওয়ামী লীগেরই সৃষ্টি।
আসলে ক্ষমতার লড়াইয়ে কেউই কারো থেকে কম যান না। জিয়া পূনর্বাসন করেছিলেন, হাসিনা সাথে নিয়ে আন্দোলন করেছেন, আর খালেদা বসালেন ক্ষমতায়।
আমার ঘৃণাও তাই সব রাজনৈতিক দলের জন্যেই সমবন্টিত। কারো পাতে কম দিব না।
-------------------------
আমাকে চমৎকৃত করলো এই ভিডিওর পরের অংশটুকু!
আলপিনে একসময় মজার একটা ফিচার ছিলো- চেনা চেনা লাগে। নানারকম বর্ণনা দিয়ে বলা হোত চেনা যায় কি না। যেমন, রাস্তায় হঠাৎ করে খাকি পোষাকের কেউ আপনার সামনে এসে হাত পেতে দিল। চিনবেন তাকে? জি্ব, ঠিক ধরেছেন, ট্রাফিক পুলিশ, ভিক্ষুক নন।
ঐ ভিডিওতে, সেই রাজনৈতিক নেতার পরেই একজন অত্যন্ত বিনয়ী লোক হাসিমুখে বক্তব্য রাখলেন।অথবা, কনফুসীয় ভাষায় বলতে গেলে বলা যায়- আবদার করলেন, এরকম, " দেশ স্বাধীন হবার পরেই এটা... এটা শেষ হয়ে গেছে। জেনারেল মার্সি , যখন সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা হয়ে গেছে , তখন আর এই নিয়ে আমরা আলাপ করতে চাই না, আমরা সামনের দিকে আগাইতে চাই...।'
কি পাঠক শুনেছেন এমন কথা আগে?
চেনা চেনা লাগে?
------------------
ফুটনোট: সাথের ছবিটি ইউটিউব থেকে স্ক্রিনপ্রিন্ট করে দেয়া, লেখার তথ্যকে সমর্থনের জন্য, কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে নয়।
তবু, যদি, কারো আত্মিয় স্বজনের সাথে ছবিটি মিলে যায়, এবং সে কারনে কেউ দু:খ পান, তবে তার জন্যে সমবেদনা রইলো।
মন্তব্য
নতুন মন্তব্য করুন