ধনঞ্জয় রাজকুমারের আরো দুইটি কবিতার অনুবাদ

কুঙ্গ থাঙ এর ছবি
লিখেছেন কুঙ্গ থাঙ [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ২৩/০১/২০০৯ - ২:৩৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এখানে ছিল

এখানে থোকা থোকা হলুদ ছিল, ভেসে গেল দুরে। কোনো তীর বিদ্ধ করেছে
এই অসহায় কণ্ঠ। আঙুল থেকে ঝড়ে পড়ে বিষের প্রপাত। অশ্রুর চুঁড়ায় ঝরে
জন্মান্তরের বিস্মৃত ঋতুটির মতোন ম্লান কোনো সাজ।

শব্দ সমুদ্রের পারে বধিরপুরুষ এক ভিক্ষা মাগে। ফিরে গেছে তীর। নীল জামা
ছেড়ে আকাশ রোদ্দুরে পথ চেয়ে আছে।

দুটি চড়াই, গেরুয়া প্রকৃতি, অসহায় ভূমি, উপবাস, স্মরন, মনে করা, ভুলে
যাওয়া এক ধুলির কণার মতো ভাসে।



খবর

কণ্ঠকে বললাম -চারদিক খুঁজে খুঁজে খবর নিয়ে এসো
কিছুক্ষন পর প্রতিধ্বনি ফিরে এলো
বলল, রোদ-বৃষ্টি-বরিষা-শরৎ-সকাল-বিকাল সবদিকে নিয়েছি
চাঁপাগাছে একটিমাত্র ফুল
শৈশবের সাথে স্মৃতির সাঁকো হয়ে আছে।
ওইদিকে পার হয়ে দুরে একটি দ্বীপ নিয়ে দেখলাম
কতদিন কতযুগ কত জন্মের স্বপ্নকে
এক আশ্চর্য গন্ধ পাহারায় রেখেছে
নিয়ে যাওয়া অভিজ্ঞানটুকু হারিয়ে
পরিচয় দিতে পারলাম না
যদিও পেয়েছি, এক অন্যকে চেনা হলো না
কেউ কারো কথা পারলাম না বুঝতেই

প্রতিধ্বনি হাহাকার করে বলল -
কেন আমাকে ওই পথে পাঠিয়েছিলে!

ধনঞ্জয় রাজকুমার আধুনিক বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী কবিতার পথিকৃৎ। জন্ম ১৯৩৮ খ্রীষ্টাব্দে অসম রাজ্যের কাছাড়ে। জাতি, সংস্কৃতি, অতীত, ও শেকড়কে নিজের বিশাল কাব্যক্ষমতায় ধারন করেছেন। আশির দশক এবং তৎপরবর্তী কবিদের অধিকাংশ অনুসরন করেছেন তার পদাংক। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : "হপনর বাবুয়ানি", "ডিগল হাতহানল মোরে", "ভিক্ষা দেনে এর আহিগিতৌ", "হমাজি গাটর পানি", "বিরহী যক্ষর এলা" ইত্যাদি। কবিতার পাশাপাশি নাটকও লিখেছেন। উলোখযোগ্য নাটক "লক্ষীগিথানক", "রাজপ্রশ্ন" ইত্যাদি। বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষায় অনুবাদ করেছেন "রুবাইয়াৎ-ই-ওমরখৈয়াম", কালিদাসের "মেঘদুত", জাপানী হাইকু কবিতার সংকলন "মিকুপর চেরীফুল" রবীন্দ্রনাথের কবিতার অনুবাদ "কুরৌ আহান রবীন্দ্রনাথ" এবং বিশ্বের প্রায় ৬০টি ভাষার কবিতার অনুবাদ সংকলন দুই খন্ডের "অনুবাদকল্প"।

এই কবিতাগুলি নব্বই দশকে প্রকাশিত কবির "ভিক্ষা দেনে এরে আহিগিতৌ" ( এ চোখেও ভিক্ষা দাও) কাব্যগ্রন্থের এপেই আসিলপৌ কবিতার অনুদিত রূপ। অনুবাদ করেছেন শুভাশিস সিনহা।



আরো কিছু অনুবাদ পড়ুন:
ধনঞ্জয় রাজকুমারের তিনটি বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী কবিতার অনুবাদ
তিনটি সমকালীন বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী কবিতার অনুবাদ

ছবি: 
20/03/2008 - 5:50অপরাহ্ন

মন্তব্য

Ekla Ekjon এর ছবি

প্রতিধ্বনি হাহাকার করে বলল -
কেন আমাকে ওই পথে পাঠিয়েছিলে!

চমৎকার লাগল।

রানা মেহের এর ছবি

কবিতাগুলো চমতকার লেগেছে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

শ্যাজা এর ছবি
পলাশ দত্ত এর ছবি

শুধু বিষ্ণুপ্রিয়া কেনো! তাঁর এই দুই কবিতা গোটা বাংলা কবিতার সম্পদ হতে পারে।

আর একটু বেশি-বেশি দেয়া যায় না তাঁর কবিতা??

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

দ্বিতীয় কবিতাটা অসাধারণ লাগলো।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।