বইমেলা কি হবে আর? মেলা শুরুর আগেই এবার বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেছেন মেলার জন্য বাংলা একাডেমির কাজের ক্ষতি হয়। তারপর বললেন মেলায় ঢুকতে হবে টিকেট করে। তারপর বললেন মেলার উল্টো পাশের মাঠে তিনি খাবার দোকান করে দিয়েছেন; সবাই যেন মেলায় আড্ডা না দিয়ে সেখানে গিয়ে আড্ডা দেয়। এবং তারপর তিনি দয়া করে মেলার ৩৫০টা স্টলের মধ্যে ১৪০টা স্টল প্রকাশকদের জন্য রেখে ২১০টা স্টল রেডিও- পত্রিকা- এনজিও- ইউনিভার্সিটি এবং ব্যাংকের এটিএম বুথএর জন্য দিয়ে সব শেষ দিন বললেন- মেলা তো সবার। এখানে শুধু বই থাকবে তেমন তো নয়
বহু বছর থেকে সারা বছর কুত্তা খাটনি দিয়ে ফেব্রুয়ারিটা বাঁচিয়ে রাখি আমি। আমার অফিস জানে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার বাইরে যাই না আমি। বিকেল চারটার পরে অফিসে থাকি না আমি। আমার নাটকের দল জানে ফেব্রুয়ারিতে সন্ধ্যায় রিহার্সাল করি না আমি। আমার বন্ধুরা জানে ফেব্রুয়ারির বিকেলগুলোতে বাংলা একাডেমির মাঠ ছাড়া অন্য কোথাও থাকি না আমি। শুধু এই বইমেলার জন্য। যখন ঢাকার বাইরে থাকতাম। তখন তিন কিস্তিতে কমপক্ষে ১২ দিন এসে থাকতাম এই বইমেলায়
আরো বহু বহু মানুষ। কেউ হয়তো এদেরকে লেখক স্বীকার করে কেউ করে না। এদের বেশিরভাগই থাকে ঢাকার বাইরে। অনেকে দেশেরও বাইরে। তারাও আসে। প্রতি বছর। কমপক্ষে ১০ দিনের জন্য। সাদ কামালি- সালমা বাণীর মতো অনেক লেখক প্রতি বছর শুধু ফেব্রুয়ারিতেই দেশে আসে। আসে বইমেলার জন্য। আবার চলেও যায় মেলার এক বা দুদিন পরে
কেন আসে? আমি কেন যাই? কেউ কেউ বলে নিজের উদ্যোগে প্রকাশিত অচল মালগুলোর পুশিং সেলের জন্য এইসব লেখকরা গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বইমেলায়। পুশ করা হয়। সত্যি করা হয়। কিন্তু এই সেলের টাকা কি কানাডা আমেরিকা ইংল্যান্ড থেকে আসা যাওয়ার বিমান ভাড়া কিংবা ১০-১২ দিন হোটেলে থাকা খাওয়ার পয়সার থেকে বেশি?
নিজের উদ্যোগে বই বের করলে সেই বইতো নিজের উদ্যোগে বিনে পয়সায়ই বিলি করা যায়। মেলায় এসে দাঁড়িয়ে থাকা কেন?
আমরা প্রতিদিন যেসব জায়গায় যাই; আমরা কি সত্যি সত্যি প্রতিদিন সেসব জায়গা ভিজিট করি? নাকি আমরা মূলত জায়গা নয়- ভিজিট করি মানুষ। প্রতিদিনের আড্ডার জায়গায়ও কোনোদিন কোনো মানুষ না থাকলে আমরা ফিরে চলে আসি। আর ভিন্ন কোথাও কাউকে পেয়ে গেলে বসে যাই ফুটপাত কিংবা কোনো চায়ের দোকানের পাশে
বইমেলার মাঠ সারা বছর ফাঁকা পড়ে থাকে। সারা বছর সেখানে অন্য কেউ থাকে না বলে যাবার টান পায় না কেউ। শুধু ফেব্রুয়ারিতে থাকে অন্যরা। থাকে বইকে ঘিরে। থাকে নিজেদের ছোট ছোট স্বপ্নকে ঘিরে। কোথাও অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হলে কিছু অবলম্বন লাগে। হয় চা কিংবা নাটক কিংবা নেশা কিংবা কোনো মানুষ। বইমেলায় বই আর মানুষকে অবলম্বন করে কিছু লেখক কিংবা লেখকের মতো মানুষেরা দাঁড়িয়ে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। আর তাদের আশেপাশে নিজেদের বই। এইসব বই প্রকাশকদের করা বই নয়। এগুলো লেখকদের করা বই। এগুলো পাঠকদের পড়ার বই নয়। এগুলো অন্য লেখকদের পড়ার জন্য বই। নিজেদের বই নিজেরা পড়ার জন্য এইসব লেখকরা এসে দাঁড়িয়ে থাকে বইমেলার একটা জায়গায়। এরা সবাই তরুণ। অপ্রতিষ্ঠিত। এদের ভিত্তি কিছু ছোট ছোট আর অনিয়মিত ম্যাগাজিন। যেগুলোকে তারা বলে লিটলম্যাগ। যারা তারুণ্য হারিয়েছেন কিংবা প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেছেন তারা কেউ এখানে আসেন না। তারা লিটলম্যাগ-এ লিখেন না। তারা হয়তো আড্ডা দেন অন্য কোথাও
প্রতিদিন মাটির ব্যাংকে দশ টাকা করে রাখেন সরকার আজিজ। চারপাঁচ বছর পরে সেই টাকায় একটা ম্যাগাজিনের টাকা হয়। তিনি বের করেন ময়মনসিংহ জং। কিন্তু কৃষিকাজ ফেলে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিতে এসে কয়েকটা দিন কাটিয়ে যান বইমেলায়...। ঢাকা ইউনিভার্সিটির প্রফেসর খন্দকার আশরাফ হোসেন মুদি দোকানদারদের দরজায় দরজায় ঘোরেন একটা বিজ্ঞাপনের জন্য। তারপর বের করেন একবিংশ...। অচল লেখকদের অচল লেখা নিয়ে ম্যাগাজিন করেন তারা। আর আড্ডা দেন বইমেলার একটা কোণায়...। বাকিদের কাহিনী হয় একই রকম কিংবা আরো করুণ। কিন্তু কোনোভাবেই এর থেকে ভালো নয়। কিন্তু তবুও সবাই করে। কেন করে? করে ভেতরের কোনো এক স্বপ্নের টানে...
কিন্তু এই আড্ডাগুলো কি থাকবে এরকম? এবার মেলার আগেই নিজেদের মধ্যে নিজেরা বাবা মা তুলে গালাগালি হয়ে গেছে। মেলায় হাতাহাতি হয়ে গেছে চার পাঁচটা। আড্ডা হয়েছে গুচ্ছে গুচ্ছে। অনেকেই অনেকের সাথে কথা বলেননি এবার...। এবার প্রথমবারের মতো টাকা দিয়ে লিটল ম্যাগের স্টল নিতে হয়েছে। অন্যবার নিজেরা নিজেরা ভাগাভাগি করে গাছতলায় বসা হতো। একসাথে। একসঙ্গে। এবার প্রত্যেকের স্টলের একেকটা নম্বর আছে। লাল দাগ দিয়ে ভাগ করা আছে প্রত্যেকের সীমানা। ...এবার লাল দাগ ঢুকে গেছে অনেক সম্পর্কের ভেতরেও...
এবার প্রথমবারের মতো মেলার শেষ দিনে আহমেদুর রশীদ মোবাইলে মেসেজ পাঠায়- ভাঙা মেলায় আমন্ত্রণ। যখন মেলায় তার কোনো বন্ধু ছিল না সেই শৈশবে এই আহমেদুর রশীদ প্রতিদিন মেলায় এসে তথ্যকেন্দ্রের বারান্দায় একা একা বসে থাকতো। সে এবার কেন ভাঙা মেলায় আমন্ত্রণ জানায়?... সেও কি শুনেছে কোনো ভাঙনের সুর ভেতরে কোথাও?
প্রতিবছর ঢাকার বাইরে থেকে যে কয়জন নিয়মিত এই মেলার জন্য ঢাকায় আসেন। তার মধ্যে একজন ছড়াকার গোবিন্দ পাল। ২৮ তারিখ মেলায় বললেন- বহুদিন আমার ম্যাগাজিনটা হয় না। সামনের মেলায় করব। লেখা দিও...
রাত দুটোয় ফোন পেলাম। রাত এগারোটায় গোবিন্দ পাল মারা গেছেন হার্ট অ্যাটাকে। ...আগামী মেলায় তার ম্যাগাজিনটা হয়তো আর বের হবে না। কিন্তু তিনি জীবিত থেকে ম্যাগাজিন বের করলে হয়তো দেখতেন আগামী বছর বইমেলায় বইয়ের জন্য হয়তো ১০-১২টা স্টল আছে। কিন্তু লিটল ম্যাগাজিনের জন্য কোনো জায়গা নেই। হয়তো কিছু আড্ডা আছে কিন্তু সেই আড্ডাগুলোও বড়ো বড়ো লাল ফিতা দিয়ে ভাগ করে রাখা। যাক। গোবিন্দ দা মরে গিয়ে অন্তত একটা বাড়তি কষ্ট পাওয়া থেকে বেঁচে গেলেন...
২০০৮.০২.২৯ শুক্রবার
মন্তব্য
সচলায়তনে একুশে বই মেলা নিয়ে সেরা লেখা এটি ।
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি
অসাধারণ পোস্ট। গোবিন্দ পাল আর গোবিন্দ পালদের শ্রদ্ধা জানাই নতমস্তকে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
আপাতত : বলে যাই
অসাধারন পোস্ট । মাহবুব লীলেনের ব্লগীয় পোস্টগুলোর মাঝে এই পোস্টটি আলাদা হয়ে থাকবে ।
আরো কিছু কথা ছিল , সেগুলো না হয় আলাদা বলা যাবে...
এই লেখা রেফারেন্স হিসেবে উঠে আসতে পারে আর ক'বছর পরেই। শ্রদ্ধা।
রেফারেন্স হিসেবে উঠে আসবে। অবশ্যই তবে হয়তো আমার মৃত্যু দিবসে
সবাই দেখবে। শুধু আমি দেখব না
তাই না?
বাক্হারা। এ রকম লেখার কারনেই ব্লগ স্বার্থক। অনেক অনেক ধন্যবাদ লীলেন ভাই, যোজন দূর থেকেও।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
প্রাণছোঁয়া পোস্ট।
গোবিন্দ পালের জন্য শ্রদ্ধাঞ্জলি।
যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!
ভালো লাগলো।
..........................................
বইমেলা বেঁচে থাকুক অন্তত আরো ১০ টি বছর। বা তার চেয়ে অল্প একটু বেশি। একুশের বইমেলার স্বপ্ন দেখেই যে ডায়েরিতে দাগ কাটি (এখনো কবিতা বলতে পারছিনা)। লীলেন ভাইকে ধন্যবাদ অসাধারণ এই পোস্টের জন্য। নতুন এসেছি খুব বেশিদিন হয়নি তাও লীলেন ভাই এর ভক্ত হয়ে গেছি। ঐ কবিতার শেষ চার লাইন সারাক্ষণ মাথায় ঘুরে। মাতালের শেষ ৪ লাইন (আমিও পিকনিকে যাব) একদিন দেখা হবে ভাইয়া।
উলুম্বুশ
আমার উকুন বাছা দিন গল্প বইটির গল্পগুলো এখানে দেবার চিন্তা করছি
প্রথমটা আজ দিলাম
শেষ গল্পটার নাম জন্মান্তর
পিকনিকে যাবার ঘটনাটা সেখানেও আছে
মাকড়সার বাসার মতো মনটাও বাঁধা পরে গিয়েছিলো ওইখানে ওই অশ্বত্থ বটের নিচে।
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
অসাধারণ লাগলো।
এরকম লেখা আরও পড়তে চাই।
আপনারা থাকতে মেলা বন্ধ করবে কে?
নিশ্চিন্ত থাকুন্। মেলা স্বমহিমায় ফিরে আসবে।
মাহবুব লীলেনের স্বাতন্ত্রতা আরেকবার প্রমানিত হল।
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
আবার ঘুরে এলাম বইমেলা !
কিছু বলার মত শব্দ খুঁজে পাচ্ছি না।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
স্যলুট লীলেন ভাই।
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ
অজ্ঞাতবাস
সবইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
একেবারে ভেঙে পড়া মন থেকে লেখা
অনেক কিছুই এখন আর সাহস করে আশা করতে পারি না
গোবিন্দ দার একটা ছবি এখানে দিলাম
আমাদের হতাশার সাথে থাকুক চলে যাওয়া মানুষটার মুখ
ছড়াকার গোবিন্দ পাল। বইমেলার দুঃখ যাকে আর পোড়াবে না কোনোদিন
স্বপ্নভুক বোকার দলই বইমেলাকে বাঁচিয়ে রাখবে। ভয় নেই।
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
আপনার কাজ কর্ম অবশ্য বোকা বোকা (মহৎ!)মনে হলে ও আপনার চেহারা দেখে অন্য কিছু মনে হচ্ছে। কী মনে হচ্ছে জানেন? আমার সরল স্বীকারোক্তি - ইয়ে মানে G.M.T.T. মনে হচ্ছে। আপনার কি মনে হয়?হা. হা. হা.।
রতনে রতন চিনে
মানিকে মানিক
একদম ঠিক।
আহা মাকড়শার ওই জালটা!
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
লীলেনদা আপনারে বিপ্লবী সেলাম,
গোবিন্দ পালের জন্য শ্রদ্ধাঞ্জলি।
আমি সারা বছরে বইমেলার জন্যই বইসা থাকি, সেই ছোটবেলা থিকা, কোন হালারা বন্ধ করব বইমেলা? দেখা যাইব নে, ছিড়া ফালামু একদম
- খেকশিয়াল
সুন্দর লেখা
সুন্দর লেখা
লেখাটা পড়ে আর না লগিয়ে পারলাম না। একজন লেখক কিংবা প্রকাশকের কাছে এই বইমেলা মনে হয় ঈদ বা পূজার চেয়ে কোন অংশে কম নয়...সারা বছর জুড়ে অপেক্ষা করতে হয় প্রচন্ড ভালোবাসা আর আবেগ নিয়ে...বইমেলা বেঁচে থাকুক...লীলেইভাইকে ধন্যবাদ
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
ব্যাক্তিগত ব্লগ | আমার ছবিঘর
অসাধারণ পোস্ট মাহবুব লীলেন!
পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)
পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)
খুবই তথ্যবহুল ও মর্মস্পর্শী লেখা।
এরপর হয়তো শেরাটনের উইন্টারগার্ডেনে ঘটা করে কর্পোরেট পৃষ্টপোষকতায় বই মেলা হবে। ডিজ্যুস মার্কা কিছু বই ও পাঠকের মচ্ছব হবে। আমরা কতিপয় পশ্চিমা অতিথির জলকেলী দেখতে দেখতে পুলটির পাশে কফি পান করে আড্ডা দেব। বাংলা একাডেমীর কাজেরও ক্ষতি হবে না।
পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?
চমৎকার লেখা লীলেনদা
চমৎকার
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
মর্মস্পর্শী লেখা৷
আমার কয়েকটা প্রশ্ন ছিল:
১৷ ঢাকা ছাড়াও বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গায়ও বইমেলা হয় নিশ্চয় ৷ তো, ঢাকা থেকে দূরবর্তী স্থানে ঢাকা বা আশেপাশের ছোট প্রকাশকরা যান কি? গেলে কি রকম সাড়া পান? না গেলে কেন যান না?
২৷ বইমেলা ছাড়া আলাদা করে লিটল ম্যাগাজিনের মেলা হয় কি? হলে তাতে পাঠকের কিরকম সাড়া পান?
-----------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
ভয়াবহ রকম দারুন একটা পোস্ট। খুবই ছুঁয়ে গেলো।
একেকটা লেখা থাকে, ছুঁয়ে যায় একদম ভিতরের কোনো চিকন তার, অচেনা সুর, অচেনা বোল।একেকটা লেখা থাকে,যাকে কিছুতেই ভোলা যায় না। একেকটা লেখা থাকে,পড়লেই মনে হয় কিযেন কিযেন কিযেন একটা হয়ে গেলো মনের ভিতরের মনে।
সেইরকম একটা লেখা এই লেখা।
মাত্র কিছুদিন আগেও ভাসা ভাসা শুধু শোনা ছিলো, আজ এই মেলা এই একমাসে খুব খুব প্রাণের কাছের মেলা হয়ে গেছে। ছোটো থেকে শুনে আসছি শুধু কলকাতা বইমেলা,আগে তার প্রাণও ছিলো। কয়েকবার গেছিও। আজ সেই মেলা দৈত্যের হাতে বন্দী নাচুনে-পুতুলমেলা, প:বংগে সাহিত্য বন্দী হয়ে গেছে দৈত্যের হাতে, তাদের ভাড়া করা ভাঁড়েরা পয়সার জন্য আত্মা বিক্রয় করে তাদের তালে নাচে, সত্য কথা আর বলতে পারে না, সত্য অনুভব আর প্রকাশ করতে পারে না। সুস্থ প্রতিযোগী যেসব পত্রিকা ছিলো সকলেই মরে গেছে দৈত্যের হাতে, এখন কলকাতা বইমেলা সাহিত্যের মৃতদেহ নিয়ে শিয়ালের উল্লাস। তবু মানুষ এখনও যায়, এখনও শিশুকিশোরদের জন্য ভালো বই খোঁজে বাংলাপ্রেমী বাবামা। আশা রাখি একদিন এ দানব শেষ হবে,সুদিন আসবে।
পাশের দেশের প্রাণের মেলাটি দেখে তাই ভালো লাগে,হোক না দূর থেকে। ভাবতে ভালো লাগে এ প্রাণবন্যা একদিন ধুয়ে শুদ্ধ করে দেবে সব।
ভালো থাকবেন সবাই।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
আমি পুরাপুরি বেকুব হয়ে যাচ্ছি।
গতবার বইমেলা শেষ হওয়ার পর এই লেখাটা লেখা হয়েছিলো, সে সময় পড়ে এতোই চমৎকার লেগেছিলো যে প্রিয়তে যোগ করে রেখেছিলাম বহু আগেই।
সেই পোস্টই আজ এক বছর পর এতো মন্তব্য পাচ্ছে !
সত্যিকারের কালোত্তীর্ণ লেখা, লীলেন ভাই
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
আজ সন্ধ্যায়ই তো সচল মউয়ের সঙ্গে কথা হচ্ছিলো বইমেলা নিয়ে...
স্যালুট লীলেন্দা!!
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
অসাধারণ! অসাধারণ!
আবার পড়লাম....
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
মারাত্মক!! ছুঁয়ে যায় বারবার।
ডাকঘর | ছবিঘর
নতুন মন্তব্য করুন