গল্পকার শহীদুল জহির আর নেই আজ সকাল থেকে
গল্পের গোলক ধাঁধা রেখে নিজেই এখন কোনো এক গোলকধাঁধার আড়ালে চলে গেলেন হার্টের অসুখকে উপলক্ষ করে
মানুষ মানুষকে পুড়িয়ে মারে স্বার্থের জন্য। কিন্তু সমাজের অচ্ছ্যুত কাক সেই মানুষকে আগুনের লেলিহান শিখা থেকে বাচিয়ে ঠোঁটে করে নিয়ে যায় এই উদ্বাস্তু নগরী ছাড়িয়ে কোনো এক নতুন দিগন্তের দিকে
যেখানে মানবিকতার নামে পাশবিক হানাহানি নেই। নেই হিংসা। নেই আগুন
আর যেতে যেতে সেই আধাপোড়া মানুষকে সাদরে গ্রহণ করে কাকেদের সমাজ। দেয় পালক। দেয় পাখা। একজন মানুষ নাগরিক মানব জন্ম ছেড়ে কাকজন্মে খুঁজে নেয় তার জীবনের আরাধ্য গন্তব্য
মানুষের ঘৃণা আর মানুষের লজ্জা থেকে মুক্তি পেতে একজন মানুষ হয়ে উঠে কাক। উড়ে চলে যায় এই নগর এই সভ্যতা ছেড়ে....
মানুষ থেকে কাকও মানুষের অনেক নিকট বান্ধব
কেননা কাকেরা কোনো কালেও গ্রহণ করেনি সভ্যতার পাঠ
কাঠুরে ও দাঁড়কাক এর মতো এমন গল্পের গল্পকার সেই শহীদুল জহির আজ সকাল থেকে আর নেই
মন্তব্য
অন্য পৃথিবীর মানুষ হয়েও তিনি যেন ভাল থাকেন।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
অসম্ভব! আমি বিশ্বাস করতে পারতেছি না! আমি এই বইমেলায় তার গল্প সংকলন কিনলাম। চতুর্থ মাত্রা, ঘেয়ো রোদের প্রার্থনা নিয়ে, এই সময়, ডুমুরখেকো মানুষ, কাঠুরে ও দাঁড়কাক... অমর সব গল্প।
it shouldn't be so early! can't be! can't be!!!
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
কখনও পড়িনি শহীদুল জহিরের গল্প। মানুষের মাঝে যেন তিনি বেঁচে থাকেন, এই কামনা করছি। অসধারণ লাগলো গল্পের থিমটা পড়ে।
— বিদ্যাকল্পদ্রুম
আমিও পড়ি নি শহীদুল জহির।
কিন্তু অনুভব করছি এ বেদনাবোধ।
আবার লিখবো হয়তো কোন দিন
এই লেখক লিখেছেন অল্প, আমি পড়েছি তারও এক অংশমাত্র। যতোটুকু পড়েছি তাতেই তাঁর জাতের পরিচয় মেলে।
কী এমন তাড়া ছিলো চলে যাওয়ার, কে জানে!
-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!
খুব নিভৃতচারী ছিলেণ শহীদুল জহির। তিনি যে লেখালেখি করেন তা তার সহকর্মীরাও জানতো না।
দক্ষ সরকারী কর্মকর্তা ছিলেন, তার অন্যনাম শহীদুল হক। কিন্তু আমার সাথে তার সরাসরি অধীনে কাজ করা অনেকের সাথে কথা হয়েছে যারা জানতো না তিনি আদৌ লেখেন।
আমি তার গ্রিনরোডে একা বাসায় আর এক ল্যাপটপ নিয়ে জীবন-যাপনের গল্প শুনেছিলাম সাদিক ভাইয়ের (কবি মুহাম্মদ সাদিক) কাছ থেকে। সাদিক ভাই শহীদুল জহিরের যেনতেনভাবে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাসটি (জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা)ভালো প্রকাশক দিয়ে আবার প্রকাশনার ব্যবস্থা করেছিলেন।
সাদিক ভাইয়ের কাছেই শুনেছিলাম, যে শহীদুল জহিরের একটি উপন্যাস সর্বকালের সেরা দশটি বাংলা উপন্যাসের একটি হিসেবে বাছাই করেছিলো কোনো একটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়।
কিছু হার্ডকোর পাঠক পরে পেয়েছিলেন শহীদুল জহির। তারা তার কিছু গল্পের টিভি-নাটক-ফিল্মরূপ দিয়েছেন বলে জানতাম। অন্তত: একটি টেলিফিল্ম নুরুল আলম আতিক বানিয়েছে বলে জানতাম। মিনহাজের আরেকটা বানানোর কথা ছিল। পরে জানলাম সরওয়ার ফারুকিও বানিয়েছেন।
আমার সাথে একবারই দেখা হয়েছিলো শহীদুল জহিরের। তখন তিনি ইআরডি-তে উপসচিব। সহকারী সচিব নাসির এরশাদের সাথেই ঢুকেছিলাম তার রুমে। রুমের বাইরে শহীদুল হক নামের প্লেট। কিন্তু তার খুব উদাস এক ধরনের আচরণ ও গুরু-গম্ভীর কণ্ঠস্বরে খুব ধীরে ধীরে কথা বলার ভঙ্গি দেখে আমার সন্দেহ হলো। আমি জানতাম শহীদুল জহির ইআরডি-তে তখন কাজ করেন। কিন্তু তাকে কখনো দেখিনি। আমি তাকে ফস করে জিজ্ঞেস করে বসলাম, আপনি কি শহীদুল জহির?
পাশে বসা নাসির তো অবাক। তার বসকে আমি এসব কি অদ্ভুত প্রশ্ন করছি। তিনি শুধু মাথা দোলালেন, কিছু বললেন না। আমি তার উপন্যাস নিয়ে, তার গল্প নিয়ে, সেগুলো যে আমি পড়েছি তা বুঝানোর জন্য কিছু কথা বলতে চাইলাম। কিন্তু তিনি দেখলাম খুব নিরাসক্ত। শুধু হু, হা করছেন, বিশেষ কিছু বলছেন না। বুঝলাম অন্তত: অফিসে কাজের জায়গায় এসব লেখালেখি নিয়ে খুব একটা কথা বলতে তিনি আগ্রহী না। খুব বিস্মিত হয়েছিলাম।
শহীদুল জহিরকে নিয়ে কিছু পত্র-পত্রিকায় নিশ্চই আলোচনা হবে। তবে সচলদের কেউ কেউ লিখলেও ভালো হয়।
-----------------------------------------------
Those who write clearly have readers, those who write obscurely have commentators.--Albert Camus
-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না
-- গল্পটা 'চতুর্থ মাত্রা'।
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে
এখনো হাতে "ডলু নদীর হাওয়া ও অন্যান্য গল্প"। পাঁচটা পড়া হয়েছে, দুটো বাকী।
ভীষণ মন খারাপ লেগেছে এ খবর শুনে।
আনোয়ার সাদাত শিমুলের কাছে প্রথম শুনি লেখকের নাম। কখনো কোনো লেখা পড়া সৌভাগ্য হয়নি আমার।
লেখককে শ্রদ্ধা।
ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল
অনেকে তার নামটা জানবে ও না কোন ও দিন , এটা জেনেই শহীদুল জহীর লেখালেখি শুরু করেছিলেন বোধকরি । এই বছর দু'য়েক'র নিরন্তর যোগাযোগে
এইটুক জেনেছি ( শোহেইল মতাহির যেমন বললেন ) , এইসব নিয়ে কোন ও স্পৃহতা-ই ছিলো না তার ! নিজের সম্পাদিত ছোটকাগজ স্রোতচিহ্ন'র ৩য় সংখ্যায় তার উপর একটা ক্রোড়পত্র করতে চেয়েছি, এমন ভয়াবহ সংবাদ শুনে মাস তিনেক আর ফোন-ই ধরেননি ! কথা'য় একটা সাক্ষাত্ কার ছাপা হয়েছিলো তার , পড়ার পর ফোন করেছিলাম , এমন ভাবে কথা বলছিলেন যেনো , একটা গর্হিত কাজ করে ফেলেছেন !
আর মোস্তাফা সরয়ার ফারুকী তো তার অনুমতি নেবেন , যে , তার গল্পের নাট্যরুপ হচ্ছে ; খুজে না পেয়ে , নাটকের বিষয়ই বদলিয়ে ফেললেন ! গল্পের লেখককে নিয়েই বানালেন নাটক--- কোথায় পাবো তারে ! তারে এমন-ই পাওয়া যায়নি কোনদিন ! মৃত্যুদিনে ও না !!!!
ও হ্যা , তার গল্প নিয়ে প্রথম চিত্রায়ন বোধহয় , ফুলকুমার
---------------------------------------------------------
নীল সার্ট নেই বলে কেউ আমাকে নাবিক বলেনি !
অথচ সমুদ্রে-ই ছিলাম আমি
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
এই লেখকের কোন গল্প পড়ার সৌভাগ্য হয় নি।
অসময়ে চলে যাওয়া এই লেখকের প্রতি শ্রদ্ধা।
দেশ নাটক তার গল্প কাঠুরে ও দাঁড়কাক নিয়ে একটি নাটক করেছিল
জনমে জন্মান্তর
নতুন মন্তব্য করুন