উকুন বাছা দিন

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৭/০৩/২০০৮ - ১:৩৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কে জানে মহাকালের শরীরে কোন উকুন হয়ে আছি আর কোন উকুন বাছিকে জানে মহাকালের শরীরে কোন উকুন হয়ে আছি আর কোন উকুন বাছিবইয়ের সামনের এবং পেছনের ফ্লেপদুটোকেও আমি আমার বইয়ের মূল অংশ হিসেবেই দেখি
এবং আমার ফ্লেপগুলো নিজের নামে নিজেই লিখি
প্রথম ফ্লেপ অন্দরঘাট; এতে লিখি বই সম্পর্কে আর শেষ ফ্লেপ সদরপাট্টা; এতে লিখি নিজের সম্পর্কে

উকুন বাছা দিন এর গল্পগুলো সম্পর্কে অনেকগুলো কমেন্ট যেমন এসেছে কিছু কিছু প্রশ্নও এসেছে। মনে হয় বইটার দুটো ফ্লেপ কিছুটা সাহাজ্য করতে পারে সেই সব প্রশ্নের উত্তরের ক্ষেত্রে

অন্দরঘাট

এইতো...
এইসব...
যা মগজের গাঁদায় ছত্রাকের মতো আপনাতেই চাষাবাদ হয়
অথবা অনিদ্রা রোগীরা শেষ রাতের ঘুমে যেইসব দেখে
ধড়মড় করে জেগে ঘাম মুছে আবার
শুয়ে পড়ে ধুত্তুরি বলে

আগাও নেই মাথাও নেই
মানুষ আছে নাম নেই
ঘটনা থাকলে কাহিনী নেই
আর কাহিনী থাকলে কোনো মানেই হয় না এসবের

ভাঙারি ব্যবসা ও টোকাইব্রত করে পাওয়া এইসব
টুনটুকরো কুড়িয়ে মগজের জিঞ্জিরাপুরে খুলে বসি আমি
অন্য আরেক বাণিজ্য বিতান

যে বিতানের আলু-ডিম-ডাল কিংবা ডাল-ডিম-আলু
সকল পণ্যের বিজ্ঞাপনেই গল্পের ট্রেডমার্ক ব্যবহার করি
সকল সময়

..........................

সদরপাট্টা

পিচ্চিবেলার কেচ্ছাতে শুনেছি
এক অথর্ব ছাগল শেয়ালকে ভয় দেখানোর জন্য
ঝোপের আড়ালে লুকিয়ে নিজের পরিচয় দিয়েছিল
-সিংহের ভাগিনা আমি নমহরি দাস
আঠারো-আঠারো বাঘে করি একেক গরাস

কিন্তু এই যুগটা স্যাটেলাইট এবং
জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের
ঝোপের আড়াল থেকে নিজেকে নমহরি দাস বলার
কোনো সুযোগই নেই
আধুনিক মানুষ গায়ের গন্ধ থেকেও ছাগল আর
সিংহের পার্থক্য করতে পারে
তাই এখানে কিছুই লেখা হলো না নিজের সম্পর্কে
তবে
- আপনার ঢোল আপনি পিটাইও
অন্যের হাতে দিলে ফাটাইয়া ফেলিতে পারে

বিদ্যাসাগরের এই সাবধানবাণী মাথায় রেখে
লেজের ডগার এই নিরীহ উকুনগুলোও
নিজেই তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম


........................

একদিন আমরা যারা স্বপ্নবণিক ছিলামএকদিন আমরা যারা স্বপ্নবণিক ছিলাম
বইয়ের উৎসর্গের লাইনগুলো ছিল:

একদিন
আমরা যারা
স্বপ্নবণিক ছিলাম

....................
বইটি প্রকাশিত হয়েছে শ্রদ্ধেয় প্রণতি রায় চৌধুরী
দীপ্তিকণা রায় চৌধুরী এবং সুহৃদ অয়ন চৌধুরীর সৌজন্যে
.......................
প্রকাশক- শুদ্ধস্বর। প্রচ্ছদ- শিশির ভট্টাচার্য্য। ২০০৫
............................................

উকুন বাছা দিন। ০১। ফসিল
উকুন বাছা দিন। ০২। মাকড়া
উকুন বাছা দিন। ০৩। টিকটিকি
উকুন বাছা দিন। ০৪। ঘুণপোকা
উকুন বাছা দিন। ০৫। নখর
উকুন বাছা দিন। ০৬। সমাবর্তন
উকুন বাছা দিন। ০৭। বংশ
উকুন বাছা দিন। ০৮। নির্বাণ
উকুন বাছা দিন। ০৯। অশোক বন
উকুন বাছা দিন। ১০। রাজসাক্ষী
উকুন বাছা দিন। ১১। অতল
উকুন বাছা দিন। ১২। উদ্বাস্তু
উকুন বাছা দিন। ১৩। অনির্ধারিত
উকুন বাছা দিন। ১৪। অপারেশন ক্লিন হার্ট
উকুন বাছা দিন। ১৫। ফিনিক্স
উকুন বাছা দিন। ১৬। জন্মান্তর


মন্তব্য

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

এটাও আরেকটা গল্পের চে কম না ...

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

শেখ জলিল এর ছবি

১৬টি গল্পের একত্রিত এই লিংকটা কাজে দেবে। ধন্যবাদ।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

উত্তীও এর ছবি

- আপনার ঢোল আপনি পিটাইও
অন্যের হাতে দিলে ফাটাইয়া ফেলিতে পারে

বিদ্যাসাগরের এই সাবধানবাণী মাথায় রেখে
লেজের ডগার এই নিরীহ উকুনগুলোও
নিজেই তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম

মাহবুব লীলেন স্যার ,
বিদ্যাসাগর এমত উক্তি করেছেন বলে মনে করতে পারছি না। বিদ্যাসাগর যেহেতু ঢোল পিটানোক লোক ছিলেন না এবং যিনি নূন্যতম বিদ্যাসাগর চর্চা করেছেন তিনিই স্বীকার করতে বাধ্য হবেন এমত মন্তব্য বিদ্যাসাগর কৃত হতে পারে না।
আপনি যদি নিশ্চিত সূত্র ঊল্লেখ করতে না পারেন , তাহলে কি অনুগ্রহ করে বিদ্যাসাগরের নামটি উঠিয়ে দেবেন।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

জ্বি স্যার
এটা বিদ্যাসাগররেই বাণী

অনিন্দিতা এর ছবি

বাহ্, বেশ লাগল তো!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ধন্যবাদ স্যার

বিপ্লব রহমান এর ছবি

ওহে উকুন বাছা লেখক! আপনাকে জাঝা !...

---
ছবির বানর তিনটি মনে হচ্ছে একসময় নির্বাচন কমিশনে ছিলো। চোখ টিপি


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

উত্তীও এর ছবি

মাহবুব লীলেন লিখেছেন:
জ্বি স্যার
এটা বিদ্যাসাগররেই বাণী

একটি রেফারেন্স দিতে পারবেন আপনার স্বপক্ষে প্লীজ।

আমি কিছু রেফারেন্স দিতে পারি আমার স্বপক্ষে
১ করুনাসাগর বিদ্যাসাগর ---
২ মীজানূর রহমানের ত্রৈমাসিক পত্রিকা (বিদ্যাসাগর সংখ্যা)
৩ বিদ্যাসাগর এবং বাঙালী সমাজ - বিনয় ঘোষ
৪ বিদ্যাসাগর রচনা সমগ্র

আপনি যদি একটি রেফারেন্সও দেন , উত্তীও বাধিত হবে

মাহবুব লীলেন এর ছবি

জ্বি দেবো। অবশ্যই দেবো
কিন্তু এই মুহূর্তে হাতে নেই

এই কথাটা আমি পড়েছিলাম বিদ্যাসাগরের বিভিন্ন রসিকতা নিয়ে লেখা একটি সংকলনে
এখন সেটা হাতের কাছে নেই এবং তার নামটিও মনে পড়ছে না
কিন্তু আমার বইয়ে দেবার আগে আমি তা কনফার্ম করে নিয়েছিলাম এটুকু খেয়াল আছে
আপনার অত জোর দিয়ে বলায় এখন আমারও সন্দেহ হচ্ছে

আমি অবশ্যই চেক করে নেবো
আর যদি দেখি ওটা বিদ্যাসাগরের না তাহলে অবশ্যই তা সংধোধন করে নেবো
(যদিও ছাপানো বইয়ে কিছু করার আছে কি না আমি জানি না)

তবে এটা বিদ্যাসাগর রচনাবলীর অংশ নয়। বরং বিদ্যাসাগরকে নিয়ে লেখার অংশ। সেইসব লেখাতে তার উক্তি হিসেবে এই কথাটি পড়েছিলাম আমি এবং আরো দুয়েকজনের মুখেও শুনেছি কথাটা

আমি কনফার্ম করে রেফারেন্স দিচিছ
আর কনফার্ম না হতে পারলেও জানাচ্ছি

উত্তীও এর ছবি

উক্তিটি বিদ্যাসাগর চরিত্রের সাথে নিতান্তই বেমানান সারাজীবন প্রচার বিমুখ ব্যক্তিত্যের পক্ষে এমত মন্তব্য অবিশ্বাস্য সেজন্যই আমার প্রতিমন্তব্য ।

আপনার রেফারেন্সের অপেক্ষায় থাকলাম।

অভিনন্দন সহ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

মজা লাগছে।

একদিন আমরা যারা স্বপ্নবণিক ছিলাম

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনার ঢোল আপনি পিটাইও
অন্যের হাতে দিলে ফাটাইয়া ফেলিতে পারে

- এই প্রকারের উক্তিটি কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের নয়। লীলেনের দেয়া ভাষ্যের সাথে কিছুটা হেরফের আছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।