হয়তোবা তিনি একজন বীরাঙ্গনা। তাকে নিয়ে লিখুন...

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: শুক্র, ২৮/০৩/২০০৮ - ৬:১২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মায়ের মুখে শুনেছি। স্বাধীনতার ঠিক পরপরই নাকি রাস্তাঘাটে প্রচুর উন্মাদিনী দেখা যেত। সেরকমই এক উন্মাদিনী ছিল আমার নানা বাড়ি- সিলেটের বিয়ানিবাজার এলাকায়। একা একা হাঁটতো। কারো সাথে কোনো কথা বলত না। কিন্তু মাঝেমাঝেই চিৎকার দিয়ে বিলাপ করে উঠতো- ও মাইও- মাইওগো। মাইয়া লোকরে অত অত্যাচার...

আমার মা তার সম্পর্কে আর কিছুই জানেন না। এবং কোনো থিওরি দিয়ে তার কোনো পরিচয়ও আমার কাছে চিহ্নিত করেননি

০২

আমার মুক্তিযুদ্ধ পাঠের অংশ হিসেবে যখন একটু একটু করে বীরাঙ্গনাদের সম্পর্কে জানছিলাম তখন প্রায়ই এই গল্পটি আমার মনে পড়তো। মনে হতো হয়তো তিনি একজন বীরাঙ্গনা ছিলেন। কিন্তু তিনি নিজেও জানতেন না যে দেশ তাকে বীরাঙ্গনা উপাধি দিয়ে সম্মানীত করেছে

অথবা তিনি জানতেন। এবং এও জানতেন যে বীরাঙ্গনাকে দেয়া সম্মান এবং সরকারি অনুদান বীরাঙ্গনাদের জন্য নয়। ওগুলো বীরাঙ্গনাদের পরিবারের জন্য। সরকারের দেয়া অনুদানের ঘরবাড়িতে সবার জায়গা হয় শুধু হয় না বীরাঙ্গনাদের স্থান (স্মরণ করছি শ্রদ্ধেয় নীলিমা ইব্রাহিমের রচনাকে)

০৩

এই ঘটনা নিয়ে বহুবার লিখতে চেয়েছি। কিন্তু কিছুই আগায়নি। শুধু তার মুখের মাইও শব্দটা শুনে মনে হয়েছে এই তরুণী হয়তো কুমিল্লা কিংবা তার আশেপাশের এলাকার মানুষ ছিলেন। ওইটুকু পর্যন্তই...

০৪
একটা স্বাধীন দেশের রাস্তায় একজন বীরাঙ্গনা (হয়তো) অথবা একজন উন্মাদিনী চিৎকার করে করে বিলাপ করে- ও মাইও মাইও গো। মাইয়া লোকরে অত অত্যাচার...


কেন?
কী ঘটেছে তার জীবনে? সে কেন শুধু এই কথাই বলে? তার কষ্ট কি শুধু হানাদারদের উপরে নাকি স্বাধীন দেশের মানুষদের উপরেও?
অথবা শেষ পর্যন্ত তার কী হলো?

০৫

লিখুন। তার ব্যাকগ্রাউন্ড এবং পরিণতি সম্পর্কে যার যা মনে হয় লিখুন। দেখি সবাই মিলে একটা পূর্ণ কাহিনীতে পৌঁছাতে পারি কি না...


মন্তব্য

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমার হাতে এই বিষয়ে একটি অক্ষরও লেখা সম্ভব নয়। কারণ, আমার কল্পনা তার অভিজ্ঞতা ও দুঃস্বপ্নের বেড় পাবে না কোনোদিন।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

লেখেন স্যার
সে কোত্থেকে এলো
কেন এলো
কিংবা কোথায় গেলো
এখানে আসার আগে সে কী করত। কোথায় থাকত

লেখেন
যা মনে আসে লেখেন

তারেক এর ছবি

আমি চুপচাপ বিপ্লব দিয়ে গেলাম। কেউ লিখলে এসে পড়ে নে'ব
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আলস্যের কল্পনা চিরকালই কঠোর বাস্তবের কাছে হেরে যায়। বাস্তবকে বর্ণনা করবার মতো অতো শক্তিশালী কলম কোথায় পাবো?

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

স্নিগ্ধা এর ছবি

মুহাম্মদ জুবায়ের এর সাথে একমত। মানুষের নিষ্ঠুরতার সাথে কল্পনার পাল্লা দেওয়ার ক্ষমতা সবসময় থাকে না। এরকম আরেক বীরাঙ্গনা গুরুদাসীকে নিয়ে ইয়াসমিন হক এর একটা স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আছে, আমি দেখি নি - কেউ দেখে থাকলে একটু জানাবেন ঠিক কি দেখানো হয়েছে?

স্বাধীনতার পরপর রাস্তা ঘাটে উম্মাদিনীর সংখ্যা নাকি বেড়ে গিয়েছিলো - মাঝে মাঝে ভুল সময়ে ভুল জায়গায় না জন্মানোর জন্য ঈশ্বরে বিশ্বাস করে ফেলতে ইচ্ছা করে -

মাহবুব লীলেন এর ছবি

মানুষের নিষ্ঠুরতার সাথে কল্পনার পাল্লা দেওয়ার ক্ষমতা সবসময় থাকে না।

লিখুন না হয় মানুষের কিছু নিষ্ঠুরতার সত্য কাহিনী

ধূপছায়া এর ছবি

মাহবুব লীলেন-এর গল্প পড়েছি। তাঁর পক্ষেই সম্ভব বীরাঙ্গনাদের করুণ কাহিনী সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা..

মাহবুব লীলেন এর ছবি

মায়ের মুখে গল্পটা শুনেছিলাম ৮৫-৮৬র দিকে
কিন্তু লিখতে পারিনি বলেই সবার দ্বারস্থ হওয়া

দেন না ভাই কিছু তথ্য- উপাত্ত-কল্পনা- অনুমান-অভিজ্ঞতা-লোকশ্রুতি
যা সামনে আছে দেন

সবাই মিলে দাঁড় করাই একটা গল্প
(অবশ্যই অবশ্যই সবার নাম সে গল্পে উল্লেখ করে প্লটটা সাজানো হবে। আমি একা তার কৃতিত্ব নেবো না)

থার্ড আই এর ছবি

আপনি যেভাবে ছবি সাজিয়েছেন সেটি একটি নির্বাক কাহিনী অলরেডী হয়ে গেছে.
কলমের চেয়ে যে ছবি কখনও কখনও অনেক শক্তিশালী এই ফটো ব্লগ তার ই প্রমান।

---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কিছু কিছু সম্ভাবনা এবং আইডিয়ার কিউ দেন সবাই
সবার কমেন্ট এবং আইডিয়াগুলো নিয়ে একটা গল্প দাঁড় করানোর প্লান আছে আমার
সেই গল্পে এই উন্মাদিনী যেমন থাকবে
ঠিক তেমনি কাহিনীকাররাও থাকবেন একেকটা চরিত্র হিসেবে

থার্ড আই এর ছবি

নন্দীতাকে যখন সোলেমান তার লোক জন দিয়ে ধরে ক্যম্পে নিয়ে যায়,তখন নন্দীতার একমাত্র অপরাধ ছিলো সে মুক্তিযোদ্ধা অলকের স্ত্রী। অলকের অবস্থান কোথায়, সে কোথায় মুক্তিবাহিনীদের সংগঠিত করছে সেই বিষয়টি সম্পর্কে নন্দীতার কাছ থেকে গোপন খবর নিয়ে অলককে খুঁজে বের করাই ছিলো সোলেমান রাজাকারের উদ্দেশ্য। নন্দীতা অলকের অবস্থান জানায়নি বলে ক্যম্পে রাত্রী যাপন করতে হয়েছে দিনের পর দিন...
হয়তো কোন এক সময় নন্দীতা ক্যাম থেকে পালিয়েছে ..

যুদ্ধ শেষে অলক লাল সবুজের পতাকা নিয়ে ঘরে ফিরেছে বটে...নন্দীতার পালিয়ে আসারচেয়ে মৃত্যুটাকেই যোক্তিক মনে করেছিলো।

যার জন্য এত অপেক্ষা,যাকে বাঁচিয়ে রাখতে নন্দীতার এই আত্ন বিসর্জন....সেই অলকই যখন তাকে আপন করে নিলো না তবে কেন আর বেঁচে থাকা...তাই হয়তো জীবনটাকে অর্থবহ করতে নন্দীতা ছুটেছে সাগরের কাছে।
সাগরের বুকে অফুরন্ত ভালোবাসা, সে শুধুই গ্রাস করে..ভাসিয়ে নেয়..হয়তো নন্দীতাকেও নেবে।

------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

মাহবুব লীলেন এর ছবি

গ্রেট
একেই না বলে তৃতীয় চক্ষুর কারিশমা

আরেকটু যোগ করেন
মাইয়া লোকরে অত অত্যাচার

কথাটা কি শুধুই ক্যাম্পের অত্যাচারের জন্য
প্রিয় মানুষদের করা অত্যাচার...

দেখেন একটু যোগ করা যায় কি না

থার্ড আই এর ছবি

পূর্ব সুত্র: যুদ্ধ শেষে অলক লাল সবুজের পতাকা নিয়ে ঘরে ফিরেছে বটে...নন্দীতার পালিয়ে আসার চেয়ে মৃত্যুটাকেই যোক্তিক মনে করেছিলো।

... নন্দীতা চুপ করেই ছিলো এত দিন, ক্যম্পের অত্যাচার তার কাছে মনে হয়েছে এটা একটা যুদ্ধ..তার কাছে মনে হতো অলক যুদ্ধ করছে থ্রি নট থ্রি দিয়ে আর সে করছে শরীর দিয়ে রাজাকারদের সাথে। শরীর দেয়ার সাথে মনের যেহেতু কোন সম্পর্ক নেই তাই এই পরিনতিটা মেনে নিয়েছিলো নন্দীতা।

হতাশা আর ব্যর্থতা তাকে তাড়া করে ফিরে...অলকের ফিরে আসার পর, নতুন একজন অলকের সাথে তার পরিচয় হয়.. যে অলককে সে এতদিন দেবতা বলে পুঁজো দিত, যার জন্য ভগবানের কাছে বলতো, শেষ দমটা যেন থাকে শুধু অলকে এক নজর দেখার জন্য...সেই দেবতার সামনে আজ নন্দীতা বড় বেশী অসহায়...কোন আশ্রয় নাই তার।

নন্দীতার অত্যাচারের যন্ত্রনাটা সেই থেকেই শুরু....তার পর সাগর পাড়ে যেতে যেতে অনেক অলকের সাথে দেখা হয় নন্দীতার...কেউ তার ক্ষত সারায়নি বরং কিভাবে ক্ষত বিক্ষত হয়েছে সেই গল্পটাই শুনতে চেয়েছে...

তাই সাগরইতো নন্দীতার গন্তব্য ..সে গল্প শুনতে চায়না...বরং বুকে নিয়ে গর্জণ শোনায়।

ধুর লীলেন ভাই কিছু হয়না....আর পারি না।

---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

হয়তোবা সে একজন বীরাঙ্গনা
তার খালি পায়ে উঁকুনে ভরা চুলে টোল বসায়
চৈত্রের রৌদ্ররা
আকাশেই খোঁজে মুক্তি
সাগরে
বাতাসে
শ্বাস হয়তো তার বন্ধই হয়ে আসে

হয়তো ঢিল হাতে ছুটে যায় অবুঝে মেতে ওঠা বালকের দল
দৌঁড়ায় পাগলিনী
কখনো অট্টহাসি
কখনও ভাবুক চোখ জ্যান্ত ছবি এঁকে যায়
তার সেলে থাকা মর্জিনার ক্ষতবিক্ষত যোনীতে বেয়নেট
সখিনার চুলে বেঁধে গ্লানিতে আত্মাহুতি
সে তবু মরে নি
দিনের পর দিন
রক্তের সমুদ্রে সে তবু মরে নি কোনোদিন

সেইসব ছবি চোখে মগজে অস্তিত্বের প্রতিটা সুঁতোয়
এখনও সাজায় সাজিয়েই চলে
হয়তো তার ভাবুক জীবনবোধে তিতিবিরক্ত আমি
হাহাকার করে উঠি - মরে না কেন অভাগী!
হয়তো তার শ্যামল ভাবলেশহীন মুখে নখরের আঁছড়ে
তাকাতে কাঁপে আমার বুক
হয়তো কেমন করুণা করুণা ভাবও হয়

তবুও তার অট্টহাসি থামে না সে মরে না
ভাবে গলে না আগুনেও পোড়ে না জলজ্যান্ত শরীর
আমার উদ্ধত ভাবনার আয়নায় হয়তো সে অকারণ খেয়ালেই
আমারই করুণাগুলো আমাকেই ফিরিয়ে দেয়

------
'তিনি' কেটে 'সে' লিখলাম। 'তিনি' লিখলে পরপর মনে হয়।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কাহিন এগোচ্ছে
গুড
চলুক কল্পনা আর সেই কল্পনা দিয়ে একটা কাঠামো সৃষ্টি

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- উপসস! ভুল বুঝেছিলাম।
এটা নিয়েতো বস গল্প লেখার সাধ্যি হবে না কখনো। তার চেয়ে প্লটটা বদলে দেন, ট্রাই করে দেখা যাক।

আমি ফাজিল মানুষ। এইসব সিরিয়াস বিষয়ে হালকা চালের কথা বললে নিজেকেই অসম্মান করা হয়।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দেন
আপনি বরং প্লটটাই বদলে দেন
যেহেতু আমরা তার সম্পর্কে কিছুই জানি না
সেহেতু তাকে আপনি যেভাবে দাঁড় করাবেন সেভাবেই হবে

'কবি তব মনোভূমি রামের জন্মস্থান অযোধ্যার চেয়ে সত্য যেন'

রবীন্দ্রনাথের সেই বাণীই সত্য হোক

অনিন্দিতা এর ছবি

ইস কী চমৎকার আইডিয়া!সচল লেখকরা একটু চেষ্টা করেন।
আপনারা ঠিকই পারবেন এ নিয়ে গল্প লিখতে।
অপেক্ষায় থাকলাম পড়ার জন্য।
বীরাঙ্গানা শব্দ শুনলেই একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস বেরিয়ে যায়।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

জ্বি
পরের ঘাড়ে বন্দুক রেখে শিকার করা এবার একটু বাদ দেন
এবার নিজে কিছু আইডিয়া দেন
ধরে নেন এটাই আপনার অনটেস্ট পোস্ট

কমপক্ষে ১০টা পয়েন্ট দেন এই গল্পের
কোন দিক থেকে গল্পটা কোন দিকে এগোবে একটা একটা করে লিখে যান

স্নিগ্ধা এর ছবি

মাহবুব লীলেন - গল্প/কাহিনী ওসব লেখার জন্য যতখানি 'সৃষ্টিশীলতা' লাগে আমার দাদা সেসব একদমই নেই টেই, তাই আপনাকে বড়জোর সম্ভাব্য প্লট দিতে পারি। বীরাঙ্গনারা ফিরে আসার পরে সমাজ পরিবার ইত্যাদিতে গৃহিত না হওয়া নিয়ে তো অনেক কথা ইতোমধ্যে হয়েছে। এবার একটু অন্য দিক থেকে দেখি।

ধরুন, নন্দিতা ফিরে আসলো এবং অলক এবং অলকের পরিবার তাকে এমনকি গ্রহনও করলো - সাদরেই। যুদ্ধ বা এধরনের কোন বিশাল আকারের ক্রান্তি'র সময়ে মানুষ তার নিজের সীমাবদ্ধতাকে অনেক সময়ই অতিক্রম করে যায় - অতএব ধরে নিলাম সমাজও ভ্রু কুঁচকোয় নি। আপাত দৃষ্টিতে সব ঠিকই আছে। কিছুদিন তাই থাকলো। কিন্তু আস্তে আস্তে সমস্যা টা দেখা দিতে লাগলো নন্দিতার'ই মনে। না, নিজেকে অপবিত্র টবিত্র মনে করা না (আমার পক্ষে এই ন্যাক্কারজনক কথাটা লেখাই সম্ভব না), শুধুমাত্র লম্বা সময় ধরে ত্রাস, শারীরিক কষ্ট (হ্যা, নির্যাতন) আর একধরনের বিস্ময় মেশানো অবিশ্বাস - যে পাকিস্তানী হোক আর রাজাকারই হোক 'মানুষ' যে এত খানি নির্মম হতে পারে - এই অনুভূতি গুলোর হাত থেকে কিছুতেই মুক্তি না পেয়ে ধীরে ধীরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা? বেশী 'আবেগতাড়িত আবেদন' বর্জিত হয়ে গেলো ? হাসি

তাহলে আরেকটু এগোনোও যেতে পারে। ধরা যাক নন্দিতার একটা বাচ্চা হলো - '৭১ এর কারণে। মা হিসেবে ওই বাচ্চাটাকে কিছুতেই মেনে নিতে না পারা এবং আস্তে আস্তে ঘৃণা করতে শুরু করা - এই টানাপোরেণ নিয়েও লেখা যায় ?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হচ্ছে না কে বলে?
এই তো হয়ে গেলো
গল্পের অনেকগুলো ইলিমেন্ট দিয়ে দিলেন

কষ্ট না হলে আরও দিতে পারেন

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

মাহবুব লীলেন, চিঠির জন্য ধন্যবাদ।
নিজের কল্পনার দারিদ্র্য নিয়ে আমি এমনিতেই খুব কুন্ঠিত। তাই এ কাজ আমাকে দিয়ে হবার নয়। অন্যেরা কী লিখছেন, মন দিয়ে পড়বো।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

নো সমস্যা
গল্পটা যখন দাঁড় করাবো তখন পালাই-পালাই মার্কা একটা চরিত্র হিসেবে আপনার নামটা নোট করে নিলাম

দ্রোহী এর ছবি

মাফ করবেন। বীরাঙ্গনাদের নিয়ে গল্প লেখার সাধ্য আমার নেই। আমি চুপিচুপি এসে পড়বো–কে কি লিখেছে।


কি মাঝি? ডরাইলা?

শে.জ এর ছবি

বীরাঙ্গনা অনেক বড়ো বিষয়। গদ্যলেখায় আমার সবসময়ই ভয় কাজ করে। আমাকে দিয়ে হবে না কিচ্ছু! (..মেসেজের ধন্যবাদ, লীলেন ভাই।)

s-s এর ছবি

সুপ্রিয় সুহৃদ:
শারীরিক অসুস্থতার কারণে লেখায় একেবারেই ইতি পড়েছে, আপনার চিঠির জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই, এতে অন্ততঃ লেখার "উসিলা" সৃষ্টি হলো।
আমার ইনপুট ভিন্ন, আমি প্রেক্ষপট ভিন্ন ও আশাবাদী দেখতে পছন্দ করি সে কারণেই। খুব যুক্তিযুক্ত নয় তা, কিন্তু গল্প, শেষ অব্দি গল্পই-

***************************
যুদ্ধশিশু ও পরবর্তীতে আমেরিকার একটি পরিবারে দত্তক হিসেবে গৃহীত রায়হান ও বাংলাদেশবাসী আমলাকন্যা উন্নয়নকর্মী আনিলা পরস্পরকে চেনে এবং পরিচিত হয় জাতিসংঘের কর্মশালায় যেখানে বাংলাদেশের যুদ্ধকন্যাদের নিয়ে একটি প্রজেক্ট রীতিমতো হৈ চৈ লাগিয়ে দেয় - দাবী ছিলো ১৯৭১ এর সি আই এর প্ররোচণায় "বীরাঙ্গনা ধর্ষণ" প্রকল্পের সৃষ্টি, আমেরিকান কিছু ডিপ থ্রোটে র থলের বেড়াল বের হয়ে আসা - এই নিয়ে সারা আমেরিকায় তোলপাড়,সারা পৃথিবীতেও - আবার নজর পড়ে সবার বাংলাদেশ আর ৭১ এর নারী নির্যাতনের প্রতি - প্রশাসনের টনক নড়া - আনিলার নতুন প্রজেক্ট প্রাপ্তি - দু'জনেরই সে সুবাদে বাংলাদেশে প্রত্যাগমন- আমেরিকার কিছু সচেতন মহলের ইস্যুটিকে ঘুমুতে না দেওয়া- রায়হান ও আনিলার বিয়ে - রায়হানের জন্মদাত্রীর খোঁজ -
আনিলার আমলা পিতার সাহায্য - দক্ষিণপন্থী সেই আমলার স্বাধীনতা পরবর্তী সুবিধাবাদী রূপান্তর - অবশেষে খুঁজে পাওয়া সেই মা'কে - যিনি নাম পরিচয় পাল্টে ক্রিশ্চিয়ান মিশনারীদের একটা স্কুলে - দূরে পাহাড়ী এলাকায় আছেন - ৭১ এর বীরাঙ্গনা - কিছুদিন বারাঙ্গনা জীবনযাপনেও বাধ্য ছিলেন বাস্তবতার নির্মমতায়, তারপর ফাদার রা তাঁকে বাঁচান, ধর্মের বর্মের আড়ালে নিয়ে যান - ইতিহাস খুঁড়ে বের হয় আনিলার বাবা তাঁর ধর্ষকদের অন্যতম একজন - হতে পারে আনিলা এবং রায়হান আদতে একই পিতার ঔরসজাত - এই প্যারাডক্সের উদ্ভব যখন আনিলার গর্ভে রাহয়ানের সন্তান, তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা বা না রাখার টানা পোড়েন, অদ্ভুতভাবে রায়হানের সব কিছু জেনেও আনিলার বিপক্ষে যাওয়া বা সিদ্ধান্ত হীনতায় ভোগা - বাচ্চাটির পরিচয় কি হবে এটি আদতেই ইনসেস্ট কি'না - ধর্ম ও সমাজের জটিলতা - শেষ অব্দি রাহয়ানের মা'র প্রেরণায় বাচ্চাটির জন্ম এবং বেড়ে ওঠা - আগামী শতকের গোড়ার দিকে সেই বাচ্চাটি জাতিসংঘের প্রথম বাংলাদেশী নারী মহাসচিব - হতে গিয়েও হতে না পারা - কারণ নিজের জন্মের ইতিহাস জেনে সে নিজেই কিছুটা বিভ্রান্ত - নিজের নানাকে খুন করে সে , তারপর আন্তর্জাতিক আদালতে যুদ্ধশিশুদের অধিকারেরে বিশ্বব্যাপী আন্দোলন গড়ে তুলে নিজে ইতিহাস বিখ্যাত জনে পরিণত হয় - কারাগার থেকেই সে চালিয়ে যায় তার যুদ্ধ ---- ১৯৭১ এবং তাঁর পরবর্তী সব ধর্ষণ আর আত্মগ্লানি র বিরুদ্ধে - সব নারীর লড়াইয়েই সঙ্গী হয় সে - পৃথিবী তাঁকে একনামে চেনে এবং জানে -

আপাততঃ এটুকুই থাক্ ।

****************************************

বিনীত

ss

মাহবুব লীলেন এর ছবি

অসাধারণ একটা প্রসঙ্গ নিয়ে এসেছেন
মুক্তিযুদ্ধের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৯৬এ দেশের বাইরে থাকা বেশ কজন ৭১এর যুদ্ধ শিশু বাংলাদেশে এসেছিল
তারা এখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থাকে
তাদের অনেকের সাথেই কথা বলেছি
মজার বিষয় হলো এরা প্রায় কেউই বাংলা জানে না কিন্তু এদের বেশির ভাগেরই নামগুলো বিজয়-মুক্তি- সংগ্রাম- স্বাধীন...
দুজনকে দেখলাম হাতে ট্যাটু করে বাংলাদেশ লেখা

আমাদের এক ফ্রেন্ড ছিল যুদ্ধ শিশু। তারও নাম মুক্তি

০২

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন আওয়ামিলীগের মন্ত্রী ফরিদ গাজী
এই মন্ত্রণালয়েরই অধীনে ছিল বীরাঙ্গনা পুনর্বাসন প্রকল্প। এর রক্ষণাবেক্ষণেই অনেক যুদ্ধ শিশু ভূমিষ্ঠ হয়
পরে রেডক্রস এবং মিশনারী অব চ্যারিটির সহায়তায় পুনর্বাসন কেন্দ্রগুলো থেকে যুদ্ধ শিশুরা বাইরের বিভিন্ন দেশে চলে যায়
অনেক বীরাঙ্গনাও চলে যান বিভিন্ন দেশে
আবার ৭৫ পরবর্তী সময়ে অনেকেই গিয়ে উঠতে বাধ্য হন দেশের বিভিন্ন পাতিতালয়ে

আমি ফরিদ গাজীর কাছে বহুদিন ঘুরেছি সেই ডকুমেন্টগুলো এর পরে কোথায় গেলো তা জানার জন্য
কিন্তু পাইনি

.....
আমার জানামতে বীরাঙ্গনা নিয়ে তিনটি সফল নাটক হয়েছে বাংলাদেশে (১) থিয়েটার আর্টের কোর্ট মার্শাল (রচনা ও নির্দেশনা-এসএম সোলায়মান)
(২) থিয়েটার সেন্টারের শামুকবাস (মূলসূত্র- নীলিমা ইব্রাহিম। রচনা- মাসুম রেজা। নির্দেশনা- শহিদুল আলম সাচ্চু) এবং (৩) দেশ নাটকের ঘর লোপাট (রচনা ও নির্দেশনা- শামসুল আলম বকুল)

০৩

আপনার কমেন্ট হয়তো গল্পটাকে অন্য দিকে নিয়ে যাবে
ধন্যবাদ

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আমার একটি খসড়া উপন্যাস সচলায়তনে তোলা আছে। যুদ্ধশিশুদের প্রসঙ্গে তার একটি পর্বের কথা মনে পড়ে গেলো

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

মা ঠিক জানে, তাই তো সে মা। অনূদিত হয়ে কথাটি মেয়ের কাছে পৌঁছুলে কান্নাচোখেই হেসে ফেলে সে, আমার চোখ সত্যিই ব্যথা করছে, মা।

পড়লাম
এবং পুরো চুপকথা : উপন্যাসের খসড়া (পর্ব ২০)কে আপনার কমেন্ট হিসেবে ধরে নিলাম

দারুণ কাজে লাগবে আমার

নজমুল আলবাব এর ছবি

এই লোক এইভাবে যন্ত্রনা দিয়েছে নাটকের ঘরে
রোজ রোজ নানা কথা উপকথায় মাথায় গিট্টু লাগায়া দিত
এখন দেখি এইখানেও শুরু করছে!!!

গেট ওয়েল সুন ঝাপসা ভাই

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমার সম্পর্কে কমেন্ট চাইনি
গল্পটা সম্পর্কে চেয়েছি
এইবার তোমার একস্লিপ জার্নাল টাইপে দুয়েকটা পয়েন্ট দিয়ে দাও
তারপরে আমার পিণ্ডি চটকাও

নজমুল আলবাব এর ছবি

কেন এইখানে দেব কেন??? পারলে নিজেই লিখুম, নিজের বাড়িতে :)। আইডিয়া দিছেন বইলাকি একেবারে টাসকায় উঠে গেলেন নাকি?

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

মাহবুব লীলেন এর ছবি

গুড
তবুও একখান কাজের কাজ হবে
তবে পয়েন্টগুলা জানা থাকলে সুবিধা হতো
(আপনার নাম ঠিকানা এবং কৃতিত্ব সম্মানের সহিত গল্পে উল্লেখ থাকিবে। চিন্তার কোনো কারণ নাই)

নজমুল আলবাব এর ছবি

সত্যি হলো লীলেন ভাই খুব দৌড়ের উপরে এখন। সামনে এই মূহুর্তেও পাবলিক। কমেন্টাইয়াই কাটাতে হবে মনে হয় কয়েকদিন। বাসায় আবার নেট এবং বিদ্যুৎ সমস্যা।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

আমার পেটে বোমা মারলেও এই প্রস্তাবনার উপযোগী কোন লেখা বেরোবে কি না সন্দেহ। ভীষন শ্রদ্ধা নিয়ে আমি শুধু তাঁদের স্মরণ করি আর সবার লেখা পড়ি।

..........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আঁতলামি করিস না মাইয়া। মাইর খাবি
আমার সারা জীবনে যত কল্পনাজীবী দেখেছি তার মধ্যে তুই সবচে বড়ো
দে না বাপ
তোর কল্পনার স্টক থেকে পোকায় খাওয়া কিংবা মেয়াদউত্তীর্ণ দুচারটা কল্পনা এখানে দে

দেখি কিছু একটা দাঁড়ায় কি না

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

সর্বনাশ... !

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

যুদ্ধ শেষে একে একে অনেকেই যখন ফিরে আসতে থাকে, ফিরে আসে রতনও। যুদ্ধে যাবার আগে পরাধীন ভূমিতে সে রেখে গিয়েছিল তার কিছু স্বপ্ন। কথা দিয়ে গিয়েছিল, যদি ফিরতে পারে, ছোট্ট একটা ঘরে সাজাবে তার সব স্বপ্ন। তার স্বপ্নের মানুষ পিয়ালীকে নিয়ে। সেই পিয়ালী তার সমস্ত চপলতা হারিয়ে যখন ওর সামনে দাঁড়ায়, বুকটা ভেঙ্গে চুরে যায় রতনের। পিয়ালী ছলছল চোখে জানায়, তার প্রিয়তম মানুষটিকে দেবার মত তার কাছে আর কিছুই নেই। তিন তিনটে মাস তার কেটেছে পাক হানাদারদের ক্যাম্পে। সেইসব সময়ের কথা মনে করে আতংকে শিউরে উঠে চোখ বন্ধ করে পিয়ালী।
পরম মমতায় ওকে কাছে টেনে নেয় রতন। ” আমি একভাবে যুদ্ধ করেছি, আর তুই করেছিস অন্যভাবে। তোকে ছোট করে দেখার ক্ষমতা আমার নেই রে পিয়ালী। মন ছোট করিস না।”
ঘর বাঁধে ওরা। কিছুদিন পর পিয়ালীর সারা দেহে ফুটে ওঠে মাতৃত্বের চিহ্ণ। ক্রমেই বিষন্ন হতে থাকে রতন। রাতের বেলা পিয়ালী যখন ঘুমিয়ে থাকে, বিছানা থেকে উঠে বাইরে এসে হু হু করে কাঁদে ও। কেন মেনে নিতে কষ্ট হয় ওর? কিন্তু কষ্ট যে হয়। পিয়ালীকে সব, সব কষ্ট থেকে আগলে রাখতে চায় ও। কিন্তু বাচ্চাটা...? যে শত্র“দের বিরুদ্ধে প্রচন্ড আক্রোশ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল যুদ্ধে, সেইসব পিশাচদের কোন একটার বাচ্চা...। কিভাবে সম্ভব?
ঢেকে রাখতে চাইলেও ঢাকে না সব। পিয়ালী টের পায় রতনের ভাঙচুর। আরো একবার নিজেকেই দায়ী মনে হয় ওর। ভালবাসার মানুষটার কষ্ট সহ্্য হয়না ওর। রতনের অজান্তেই ঘর ছেড়ে পথে নামে সে........

( ভয় পাচ্ছি...এটা কি আদৌ কিছু হলো? )

.......................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পুরো একখান কাহিনী বলে দিয়ে আবার বলে আদৌ কি কিছু কি হলো?
ইহাকে বাংলায় বলে বিনয়....

থ্যাকংস ম্যাডাম
আরো চাই

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

দু:খিত লীলেন ভাই, কিছুই লিখতে পারলাম না। বারবার এই ভিডিওটির কথা মনে পড়ছিলো।

প্রথম যেদিন দেখেছি সেদিন চোখ ভিজে উঠেছিল। আজও।

অতিথি লেখক এর ছবি

লীলেন ভাই,
আপনার এই প্রস্তাবনার সাথে আমি পুরোপুরি একমত না। আমি বুঝতে পারছি না বীরাঙ্গনাদের নিয়ে সাবই মিলে কল্পগল্প তৈরি করার আইডিয়াটা চমৎকার না ধৃষ্টতা? বিশেষ করে আমার জন্য, যার মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা বাস্তবে নয়, গল্প থেকে; দৃষ্টিতে নয় স্মৃতিতে এবং অনুভূতির চাইতেও বেশি কল্পনায়।

৭১ এর নির্মমতা, কষ্ট, গৌরব সবই আমি ধারণ করার চেষ্টা করি মাত্র, কিন্তু কতখানি করতে পারি তা জানি না। এরকম অভিজ্ঞতা নিয়ে বীরাঙ্গনাদের নিয়ে লেখার ক্ষেত্রে আমি আসোলেই বেশ অনেকখানি বিব্রত...

আমরা বোধকরি সবাই বিশ্বাস করি যে বীরাঙ্গনা আসোলে কোনো উপাধি বা নাম সর্বস্ব শব্দ না, বরং এটি একটি অনুভূতি। শুধু অনুভূতি না, এক গভীর অনুভূতি যার বিভিন্ন স্তরে আছে নির্মমতা, অসহায়ত্ব, গ্লানি বা ধিক্কার বা লজ্জা, আত্মত্যাগ, তৃপ্তি, আশা, অহংকার, গৌরব... আরো হয়তো অনেক কিছু। আমার পক্ষে শুধু গল্প পড়ে বা শুনে নিজের কল্পনাকে সাজিয়ে একই চরিত্রে এতগুলো বিষয়ের সম্মিলন ঘটানো সম্ভব না। আর যদি তা করতে নাই পারি তাহলে আমার প্রশ্ন- বীরাঙ্গনা বা তাদের অনুভূতিকে একটি কাল্পনিক গল্পের মধ্য দিয়ে অসমাপ্ত প্রকাশ ঘটিয়ে তাদেরকে অসম্মান বা ছোট করার অধিকার আমাদের কতখানি?

তবে হ্যাঁ, যদি আমি মুক্তিযুদ্ধকে একটা সময়ের প্লট ধরে নেই আর ছবির মেয়েটাকে; যাকে আপনি পাগলি বলছেন, সমাজের সুফিয়া বা রহিমা বা নাসিমা নামের যে কোনো একটি চরিত্র হিসেবে নেই এবং তার পাশাপাশি তার ওই ডায়লগ: ও মাইও, মাইও গো। মাইয়া লোকরে অত অত্যাচার’।

একে যদি ৭১ আর ২০০৮ এর মধ্যকার একটি সেতু ধরে নেই তাহলে কল্পগল্পে চমৎকার কোনো ভিত্তি হয়তো পাওয়া যেতে পারে।

মৌরি নিষাদ

মাহবুব লীলেন এর ছবি

গল্পটা ৭১ আর ২০০৮ এর সেতু হিসেবেই দাঁড় করানোর প্ল্যান আছে মৌরি
আর অবশ্যই অবশ্যই কোনোভাবেই বীরাঙ্গনা শব্দটিকে কোনো অসম্মান করা হবে না

আমি একটা কাহিনীতে পৌঁছাতে চাচ্ছি যে কাহিনীটা কোনো একজন বীরাঙ্গনার কথা বলবে না
বরং বলবে বীরাঙ্গনা শব্দটির সাথে যুক্ত মানুষদের কথা

কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ....

অনিন্দিতা এর ছবি

সবাই এত চমৎকার আইডিয়া দিচ্ছেন যে চুপ চাপ পড়া ছাড়া আমার করার কিছুই নেই। এবিষযে বলার মতো কোন যোগ্যতাই আমার নেই।
এখানে দুয়েকটি মতামত এসেছে - যুদ্ধ ফেরত স্বামী ঘরে ফিরে তার বীরাঙ্গনা স্ত্রী কে মেনে নিতে পারছেন না। শেষ পর্যন্ত স্ত্রী সমুদ্রের দিকে ছুটে যান আত্মাহুতির জন্য।
আমি এ জায়গায় শুধু যোগ করতে চাই- সেখানে তার কিছু যুদ্ধ শিশুর সাথে দেখা হয়ে যায় যারা কোন চিলড্রেনস হোমে লালিত পালিত হচ্ছে। এদের দেখে তার নতুন উপলব্ধি হয়, বাঁচার ইচ্ছে জেগে উঠে। তিনি সেখানেই থেকে যান।
এরপর ঘটনার ডালপালা ছড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেওয়া যেতে পারে s-s এর চমৎকার আইডিয়া অনুযায়ী ।
আর কল্পনায় কুলোচ্ছে না। এটাও কোন নাটকের কাহিনীর মত হয়ে গেল কিনা বুঝতে পারছি না। বরং আপনারা লিখুন আমি পড়ি। সবাই লিখলে পড়বে কে?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এই তো চমৎকার আইডিয়া দিয়ে দিলেন
আমি বুঝি না সবাই আইডিয়া দিতে অত কিপ্টামি করে কেন?

দুয়েকটা আইডিয়া দিলেই তো আমার মতো অভাবী লোকজ বর্তে যেতে পারে

অতিথি লেখক এর ছবি

ক্যামেলিয়া আলম
অতিথি লেখক

বীরাঙ্গনা হিসেবে মঞ্চে উঠেছি ক’বার। নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে হানা দিয়েছি পতিতার কাছে। ওর চোখ Ñ ওর মুখ থেকে জীবনের কোন গল্পই উঠে আসেনি। শুধুই ক্লান্তি ছাড়া।

বীরাঙ্গনা শব্দটি আমার কাছে এক প্রকান্ড ক্লান্তি Ñ যেখানে না আছে অনুভূতিÑ না আছে অবসাদ Ñ না আছে স্মৃতি। পরম ধ্যানী হয়েও যার মস্তিষ্কের সুতার বাঁধনগুলো আর জোড়া লাগে না।

ওদের নিয়ে লেখা---------এখনও সম্ভব না। আরও কম বয়সে হয়তো সম্ভব ছিল অথবা আরও পরিণত বয়সে। যেখানে সমস্ত জীবনের খাঁজগুলো হবে অনড় আর স্থবির। আমি অপেক্ষায় রইলাম নিজের কাছে।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বীরাঙ্গনা শব্দটি আমার কাছে এক প্রকান্ড ক্লান্তি - যেখানে না আছে অনুভূতি- না আছে অবসাদ - না আছে স্মৃতি।

তোর কমেন্টের অপেক্ষা করছিলাম
গল্পটা লেখা শুরু করে দিয়েছি
তোর এই ক্লান্তি শব্দটা হয়তো আমার গল্পটাকে আলাদা একটা ডাইমেনশন দেবে

থ্যাংকস মামণি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।