কথাকলি । ০৭। বিট এন্ড হিট

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: শনি, ২৭/০৯/২০০৮ - ৯:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাবা একদিন জিজ্ঞেস করলেন- তোর নাটকের লোকরা সবাই কি তোর মতো মূর্খ নাকি দুয়েকটা লেখাপড়া জানা লোকও আছে?

নিজের স্ট্যাটাস বাড়ানোর জন্য যত যত ডিগ্রির নাম জানি সব একেকজনের সাথে লাগিয়ে বললাম। কিন্তু যাত্রা করে নিজের পিতাকে ফতুর করে দেয়া আমার পিতাজি একটু হাসলেন- দু...র। অভিনয়ের লোকজন ঘুমের মধ্যেও অভিনয় করে। তোকে বেক্কল পেয়ে কী না কী বুঝিয়েছে

কথাটা সমর্থনও করলাম না। উড়িয়েও দিলাম না। আমি নিজেইতো ধান্দায়। লেখাপড়া জানা লোক মানে তো ভদ্রলোক। যারা বৃষ্টি এলে দৌড়ায় না- শীতে মাফলার পরে না। রং ছাড়া জুতা পরে না। সেভ করে ঘর থেকে বের হয় আর পারলে শার্ট ইন করে ঘুমায়। কিন্তু এইগুলাতো লেটফস পাবলিক

প্রথমবার সেটের কলে যাব না যাব না করেও গিয়ে দেখি কাঠ-চট- বাঁশ নিয়ে একেকজন একেক কিসিমের মিস্তিরি
- এইসব কাজতো সামান্য কয়টা টাকা দিলে মিস্ত্রি দিয়েই করানো যায়
- তা যায়। তাতে তোমার শুধু অভিনয় করা হবে। কিন্তু নাটক করা হবে না
একটা পেরেকে শেষ টোকা দিয়ে হাতুড়ি নাচাতে নাচাতে আওয়াজ দিলো আক্তার ভাই

- মানে?
- নাটকের প্রতিটা ইঞ্চিতে যতক্ষণ পর্যন্ত না তুমি পৌঁছাতে পারছ ততক্ষণ পর্যন্ত তুমি নাট্যকর্মী না

আমি চা বাগানে জন্মানো জাতজংলি। কাঠ ফাড়া- বাঁশবেতের কাজ থেকে শুরু করে ঘরের চাল ছাওয়া পর্যন্ত পারি। কিন্তু আমি হাত লাগাই না। এটা শহর। এখানে ভদ্রলোকরা থাকে। এখানে স্ট্যাটাস বলতে একটা কথা আছে। ভদ্রলোকদের মূল বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে শক্ত কোনো কাজ করতে না পারা। শক্ত কাজ করবে কামলা- কমিন- কুলি-মালিরা

আমাকে কেউ কিছু বলেও না। আমি আশপাশে ঘুরি কিন্তু কেমন বেক্কল বেক্কল লাগে। তিনটা ইট ভাঁটার মালিক হাতুড়ি পিটায়। অফিস পোশাকের হাতা গুটিয়ে ঘর ঝাড়– দেয় অন্যজন। সরকারি কলেজের টিচার টানে বাঁশবেত। আর জেনী দির মতো একটা মিউজিক্যাল মেয়ে ফ্লোরে বসে সেলাই করে চট

ধ্যাত। কিছু একটা করা দরকার

ক্লাস এইট থেকেই কার্ল মার্ক্সের কাছাকাছি মার্ক্সবাদী আর লেনিন থেকে বড়ো বিপ্লবী। যেহেতু এই মহামানবদের সাথে হাতুড়ির একটা সম্পর্ক আছে সেহেতু হাতুড়ি ধরলে হয়তো স্ট্যাটাসের একটা সম্মানজনক ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যাবে। আমি একটা হাতুড়ি নিলাম...

কিন্তু তক্তার জায়গায় তক্তা থাকে টুং করে উড়ে যায় পেরেক। খটাখট পিটাই কিন্তু জোড়াতো লাগে না কিছু। আক্তার ভাই হাসে- এটা তোমার পোস্টারে আঁকা সমাজতন্ত্রের হাতুড়ি না যে হাতে নিলেই বিপ্লব হয়ে যাবে। এভাবে সারা জীবনেও তুমি একটা পেরেক বসাতে পারবে না
- তাহলে?
- বিট এন্ড হিট
- মানে?
- পেরেকের মাথায় প্রথমে হাতুড়ির হালকা একটা বিট তারপর হিট। ঠুক-ঠাক। ঠুক-ঠাক। কিন্তু তুমি করছ ঠাক ঠাক ঠাক। তোমার মধ্যে না আছে বিট না আছে রিদম

আরে তাইতো? বিট দিয়ে প্রথমে এইম ঠিক করে নাও। তারপর দাও ঠাক

আমি ঠকাঠক পেরেক ঠুকতে লাগলাম। আক্তার ভাই আবার তাকায়- যত কিছু জোড়া লাগানো সব কিছু রিদমিক। বিট এন্ড হিট। আর ভাঙাভাঙির সব কিছু ওনলি হিট। নো রিদম। নো বিট...

জোড়া লাগা কাঠগুলো শেরো ভাইর দপ্তরে পৌঁছে দিয়ে আনাড়ি লোকজনের ওখানে দাঁড়ানোও নিষেধ।
আমি হাতুড়ি পিটাই আর দেখি একেকটা মরা তক্তা কিংবা চটের উপর সমান্তরালে চলে খড়ের গাদার মতো আউলা ঝাউলা শেরো ভাই আর রাজহাঁসের পালকের মতো গোছালো জেনী দির তুলি। গ্র“পের সবচে গোছালো আর সবচে অগোছালো দুইটা মানুষের হাত কীভাবে একসাথে চলে একই রেখা ধরে?

মগজের দিক থেকে তখন আমি জগাখিচুড়ি। মসিহী জামাত আমার মধ্যে খ্রিস্ট ধর্মের এক মহান প্রচারকের লক্ষণ দেখছে। বৈষ্ণবরা আবিষ্কার করছে সন্ন্যাসের উপাদান। গুরু লিয়াকত সাঁই বলেন আমি জন্মসূত্রে সুফী। সমাজতন্ত্রের পাতি তাত্ত্বিকরা আমার মধ্যে দেখতে পাচ্ছে এক বাঙাল জোসেফ নায়ারের ছায়া

আর আমি ঘড়ির কাঁটার মতো সবগুলো দাগ থেকে সমান দূরত্ব আর সমান ঘনিষ্ঠতায় ঘুরছি সমান নিষ্ঠতায়। বাড়িতে পড়ছি বুদ্ধের ত্রিপিটক; কীভাবে একটা মানুষ সবকিছুকে বাদ দিয়ে সবকিছু নিয়ে কথা বলে শেষ পর্যন্ত বলছে- কাম এন্ড এগজাম। বাইরে অবজার্ভ করছি মণিপুরিদের। যারা কোথাও কারো বাড়িতে কাজ করেও না কাউকে দিয়ে বাড়ির কাজ করায়ও না। কিন্তু তারা আবার মোহম্মদ থেকে অনেক অনেক দূরের পৌত্তলিক। অথচ মোহাম্মদ নিজের সব কাজ নিজে করতেন বলে যারা চোখ দিয়ে পানি ফেলে তারাই টুলে বসে অন্যকে দিয়ে পা ধোয়ায়। যারা শ্রমিকের হাতুড়ি আর কৃষকের কাস্তে মাথার উপর ঝুলিয়ে রাখে তারাই বক্তৃতা করতে বের হবার আগে অন্যকে দিয়ে কাপড় ইস্ত্রি করায়

কিন্তু এরাতো নামাজও পড়ে না- শ্রমিকের পৃথিবীর নামে মিছিলও করে না। তবে কি মোহাম্মদ আর মার্ক্স অন্যদেরকে শ্লোগান আর লেকচারগুলো দিয়ে নিজেদের জীবন লুকিয়ে দান করে গেছেন কথাকলির কাছে?
২০০৮.০৬.০৮ রোববার

................................
কথাকলি । ০৬। আমি একটা দল
কথাকলি । ০৫। অচেনা সেতার
কথাকলি । ০৪। কী যেন ডাকে
কথাকলি । ০৩। বাঙালের বাংলা শিক্ষা
কথাকলি। ০২। এ্যানার্জি পয়েন্ট
কথাকলি । ০১। প্রেমিক পাগল আর কবি


মন্তব্য

সবজান্তা এর ছবি

০১

লীলেন ভাই, আবার সচল হওয়ার জন্য ধন্যবাদ। কথাকলির সিরিজটা ভেবেছিলাম আর চালু করবেন না। আমার আশংকার মোমবাতিকে ফু দিয়ে নিভিয়ে দেওয়ার জন্য অভিনন্দন।

০২

এই লেখা পড়ে যা বুঝলাম আপনি চাইলে চমৎকার ভাষায় ধর্মগুলি কিংবা সূফীবাদ নিয়েও লিখতে পারেন।

০৩

এ পর্ব ভালো লেগেছে। পরের পর্ব জলদি ছাড়ুন।


অলমিতি বিস্তারেণ

মাহবুব লীলেন এর ছবি

লিখব তো
কিন্তু মাথার একটা পোকা মারার আগে আরেকটা পোকা এসে জন্মায়

কথাকলির মাঝখানে ঢুকে গেছে মহাভারতের বঞ্চিতজন
সেটা ঘাঁটাঘাটি করতে করতে নতুন পোকা এসে ঢুকেছে মাকইকেল মধুসূদন

এখন মধুসূদন নিয়ে হাবুডুবু খাচ্ছি
যত ডুবছি তত মনে হচ্ছে মধুসূদনের চেয়ে বেশি ভেতর থেকে বাঙালি আর কেউ নেই

পুরো মেঘনাদবধটাই মূলত একটা লোকসাহিত্য

দেখি আদৌ এগুলো কোনো শেপ পায় কি না

তবে থেমে থেমে হলেও কথাকলি চলবে

সবজান্তা এর ছবি

মধুসূদন ! চমৎকার !!

এই ভদ্রলোকের সম্পর্কে আমার জানার গন্ডী বেশ ছোট। সাধারণ জ্ঞান, কিছু মিথ ( যার সত্য মিথ্যার মাত্রা জানি না) আর সুনীলের কোন একটা বই ( উনার ঐতিহাসিক উপন্যাসগুলির মধ্যে প্যাঁচ লাগাই শুধু)।

এর বাইরে আপনি যদি বস্তুনিষ্ঠ কিছু তথ্য জানান, আমি অন্তত খুশি হবো।


অলমিতি বিস্তারেণ

মাহবুব লীলেন এর ছবি

তথ্য নিয়ে কাজ করছি না আমি
ওটা আমি পারিও না
ইদানীংকালে আমার মনে হচ্ছে মেঘনাদবধের রাবণের চরিত্রটা মূলত মধুসূদনের বাবা রাজ নারায়ণ দত্তের চরিত্র

০২

বহু আগে আমি চলতি বাংলায় মেঘনাদের কয়েক পাতা অনুবাদ করেছিলাম

এখন চিন্তা করছি মৈমনসিংহ গীতিকার ভাষায় মেঘনাদ অনুবাদ করব

মধুসুদনকে সাধারণ বাংলায় ফেললেই দেখা যায় কতটা গ্রামীণ
কতটা বাঙ্গাল আর কতটা লোকজ মধুসূদন

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রিয় লীলেন, একটা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করা যাক। মৈমনসিংহ গীতিকার কয়েকটা পৃষ্ঠা মাইকেলীয় ভাষায় অনুবাদ করে ফেলুন। দেখা যাক তা মেঘনাদ বধের সমরূপ ধারন করে কিনা।

মেঘনাদ বধ কাব্যে আঞ্চলিক শব্দ ও ভাষারীতি প্রয়োগে-দোষের কথা উন্নাসিক সমালোচকেরা বহুদিন ধরে বলে আসছেন। সুতরাং আপনি যদি সেখানে মাটির গন্ধ পান তাতে অবাক হবার কিছু নেই।

মেঘনাদের বধের সাথে হেক্টর বা সোহরাবের বধেরও অনেক মিল পাবেন। এমন কি আরেকটি ঐতিহাসিক হত্যাকাণ্ডেরও। বিভিন্ন দেশের প্রচলিত আখ্যানগুলোতে এধরনের মিলের কথা ডঃ মুহম্মদ শহীদুল্লাহ অনেক আগেই চিহ্নিত করেছেন। তাই মৈমনসিংহ গীতিকার বাঙ্গাল-লোকজ আখ্যানগুলোর কাহিনী বিন্যাস বা মাইকেলের ভাষারীতির সাথে এর মিলও পাওয়া যাওয়াও অসম্ভব কিছু নয়। আলস্য না করে চেষ্টা চালিয়ে যান। ফল অবশ্যই আসবে।

যারা মনে করেন অর্থাভাবে বা হালে পানি না পেয়ে মাইকেল দেশে ফিরে এসেছিলেন; যারা মনে করেন ধর্মান্তরিত হয়ে মাইকেল ইউরোপীয় বনে গিয়েছিলেন তারা সম্ভবতঃ মাইকেলের কবিতা হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন নি।

===============================
তোমার সঞ্চয় দিনান্তে নিশান্তে পথে ফেলে যেতে হয়


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এইবার মনে হয় হাত পা ছেড়ে আমার সারেন্ডর করা উচিত
কোন কুবুদ্ধিতে যে কথাটা বলে লেছিলাম...

০২

আমি অত গভীর থেকে বিষয়টা ভাবিনি
পড়াশোনার শুরুর দিকে মাইকেলের শব্দ বুঝতে ডিকশনারি ঘাঁটতে হতো। তখন বইয়ের উপর শব্দের অর্থগুলোও লিখে রাখতাম
আর সেখান থেকেই মধুসূদনকে সোজা বাংলায় অনুবাদ করার একটা আকাম শুরু করে দিয়েছিলাম...

এবং তা করতে গিয়েই মনে হয়েছে মধুসূদনের লেখাগুলো পুরোটাই লোকজ এবং বাঙাল

০৩

মেঘনাদের সাথে হেক্টরের যে মিল তা কিন্তু রামায়ণের সাথে ইলিয়াডের মিলের কারণে
শাহনামার সাথে এই দুইটা এপিকের মিল থাকলেও সোহরাবের মৃত্যু কিন্তু আমার কাছে একেবারেই ইউনিক আর আলাদা মনে হয়
জানি না কে কীভাবে এর সাথে মেঘনাদ আর হেক্টরের মৃত্যুর মিল খুঁজে বের করেছেন

০৪
অন্য অনেকেই জন্মসূত্রে বাঙাল
কিন্তু মধুসূদন সাধনা করে হয়ে উঠা বাঙাল

এই কারণেই আমার মনে হয় মধূসূদনই বোধহয় বাংলা সাহিত্যে ভেতরের দিক থেকে সবচে বেশি বাঙাল

অনিকেত এর ছবি

ঠিক এই রকমের অনেক লেখা চাই।
আপনার এই 'ধরনের' লেখার আমি মুগ্ধ পাঠক।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আপনার লেখাটি সাংঘাতিক লেগেছে। অপূর্ব পর্যবেক্ষন।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

উদ্ধৃতি
এটা তোমার পোস্টারে আঁকা সমাজতন্ত্রের হাতুড়ি না যে হাতে নিলেই বিপ্লব হয়ে যাবে।
দারুণ একখান কথা!

-আবার জেগে উঠেছে মাহবুব লীলেন। আমিও পাঠকের দলে আছি। চলুক।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

অনিকেত জাহিদ হোসেন আর জুলিয়ান সিদ্দিকী

ওস্তাদ লোকজনের প্রসংশায় তো ভয় লাগে
কোনদিন না মুই কী হনুরে বলে লাফিয়ে আকাশে উঠে দেখি নামার আর কোনো মই নেই...

০২

মাঝে মাঝে কষ্ট করে ফাঁকগুলো ধরিয়ে দিলে আমার অনেক বেশি উপকার হয়

স্বপ্নাহত এর ছবি

মই লাগলে কইয়েন। বাসায় একটা আছে ভাংগাচোরা। কোন কামেই লাগতেসেনা।

---------------------------------

বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

অতিথি লেখক এর ছবি

কথাকলি সিরিজটা আস্তে আস্তে হলেও দয়া করে চালিয়ে যান । আর আশায় রইলাম দেখার যে মধূসুদন কতটা গ্রামীণ কতটা বাঙ্গাল আর কতটা লোকজ । নিরাশ করবেন না ।
নিবিড়

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কথাটা এইখানে বলার কারণ হলো বিষয়টা অন্যদেরও মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া
আর তার মানে হলো আমার অন্যরাও লিখবেন
কিংবা ভাববেন
আমি একা না

যাযাবর এর ছবি

Lilen ami bar bar chesta korchilam banglay type korte, parchilam na. moner vabta prokasher akuli pakulir kache har mene evabei likhchi. valo legeche amar kothakoli series. porer lekhar jonno boshe achi. Boshe achi tomar chokher modhushudon dekhar jonno.

হিমু এর ছবি

কন্ট্রোল অল্ট ইউ চাপলে ইউনিজয় কীবোর্ড পাবেন, কন্ট্রোল অল্ট পি চাপলে ফোনেটিক।


হাঁটুপানির জলদস্যু

মাহবুব লীলেন এর ছবি

যাযাবর ভাই
আপনার নামের সাথে আমার পরিকল্পনার মিল যে অনেক বেশি
একেকবার একেকটা চিন্তা করি তারপর সেটা ছেড়ে অন্য চিন্তায় চলে যাই
এরকম কত লেখা আর কত মধুসূদন এক পাতা দুইপাতা লিখে পড়ে আছে...

তবে মধুসূদনের পোকাটা যেহেতু দ্বিতীয়বার মাথায় ঢুকেছে প্রায় বারো বছর পরে
মনে হয় সহজে যাবে না

দেখি

০২

আর বাংলায় লেখাটা তেমন কঠিন না
হয়ে যাবে

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বস্, খালি শুনতাম আপনার কথাকলি সিরিজের কথা, কিন্তু আগে মনে হয় পড়া হয় নাই! কথাকলি ০৭ বের হইলো, অথচ কেন পড়া হয় নাই আগেরগুলা, সেটা সরেজমিনে দেখতে গিয়ে থলের বেড়াল বের হলো! এটা আপনার প্রাগৈতিহাসিক আমলের একটা সিরিজ, যা অনেকটা হ্যালির ধূমকেতুর মত অনেকদিন বাদে বাদে চেহারা দেখায়! দেঁতো হাসি

যাই হোক, আমি সারা রাত না ঘুমানো, জরুরী একটা কাজ শেষ করলাম। এখন ঘুম দেব ভাবতেসিলাম, কিন্তু আপনি কথাকলির জালে যেমনে ফাঁসায়া দিলেন, তাতে বাকি রাতও ঘুম হবে নাকি সন্দেহ! চোখ টিপি

লেখাটা চমৎকার লাগসে। বরাবরের মত, আপনার অন্যান্য লেখার মতই। কথাকলির বাকিগুলাও পইড়া ফেলব খুব শিগগীরই। আর, মধূসুদনরে নিয়ে একটু তাড়াতাড়ি লিখেন, আরেকটা হ্যালির ধূমকেতু দেখার কোন শখ নাই! খাইছে
_______________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

তেব্র না হলেও ম্রেদু পেরতিবাদ জানাই

১ থেকে ৬ পর্যন্ত কিন্তু শুকতারার মতো নিয়মিতই গেছে
৭ এ এসে একটু গ্যাপ আরকি
এর অবশ্য কারণও আছে কিছু
কিছু আমার হাবিজাবি কুত্তা দৌড়
আর বড়ো কারণটা হলো ৬ নম্বর পর্ব লেখার পরপরই বেশ কয়েক বছর পরে কথাকলি আবার মঞ্চে নাটক করল
গিয়েছিলাম

আর গিয়েই বোধহয় আবার আউলা হয়ে গেলাম
লেখার জন্য বিষয়ের সাথে মিনিমাম যে দূরত্বটা থাকা দরকার তা আবার নেই হয়ে গেলো

অনিন্দিতা এর ছবি

Welcome back Leelen!
শিরোনাম থেকে শুরু করে প্রতিটি বাক্য একেবারে দুর্ধর্ষ!
উদ্ধৃতি দিতে গিয়ে মনে হল না থাক। পুরো পোষ্ট ই আবার দিতে হবে।
আমার অনুরোধ আপনি এই সিরিজ কোন রকম গ্যাপ না দিয়ে এখানে দিন।
ভয়ে ভয়ে এবার বলি, আপনার এ সিরিজের ফাঁকে ফাঁকে মাঝে মাঝে ভিন্ন স্বাদের কোন লেখা দিলেও দিতে পারেন । কিন্তু আলাদা কোন সিরিজ শুরু করা কি ঠিক হবে?বরং এক সিরিজ শেষ করে অন্য টা দেবেন। তবে যাই করুন না কেন এত বিরতি দিয়ে কথাকলি দেওয়াটা ঠিক না ।
অন্য প্রসঙ্গঃ
আপনি যেভাবে কথাকলি কে দেখেন কথাকলির বাকীরাও কি এভাবে দেখেন? খুব অপ্রাসঙ্গিক কিছু বলে ফেললাম কিনা বুঝতে পারছি না।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

জ্বি স্যার
ন্যাড়া বেলতলায় যায় একবার আর হাফ ন্যাড়ারা বড়োজোর দু্ইবার
তাই আর কোনো সিরিজ চালু করার দুঃসাহস নেই
আপাতত

০২

আমি আমার চোখ দিয়ে দেখা কথাকলিকে লিখছি
অন্যদের দেখায় নিশ্চয়ই পার্থক্য আছে
কিছু কিছু ভিন্নমত এই সিরিজেও আসবে

তবে কথাকলির মূল ফিলিংসটা প্রায় সবারই আগাগোড়া একই রকম

হাসান মোরশেদ এর ছবি

কথাকলি'র রুমে পংকজ দার আঁকা বিশাল দুই রবীন্দ্র ও নজরুল ছিলেন ।
এটা কি আরো পরের গল্প?
-------------------------------------
সমুহ শোকেরা এলো ঝাঁক বেঁধে;
বিদায় জুবায়ের ভাই...

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এগুলো অনেক পরের
তবে কথাকলির রুমে রাখা রবীন্দ্র নজরুলের প্রথম দুটো ছবি ছিল পংকজ দার আঁকা
সেগুলো নষ্ট হয়ে যাবার পরে আরো বড়ো সাইজের যে দুটো ছবি ছিল সেগুলো ছিল শাহ আলমের আঁকা

শাহ আলমেরগুলো এখনও লিটন ভাইর বাসায় আছে

০২
অন্যপ্রসঙ্গ

পংকজদা হারামজাদা এখন আম্রিকার কোথাও থাকে
দেখো কাউরে দিয়ে ধরা যায় কি না তারে

অমিত আহমেদ এর ছবি
মাহবুব লীলেন এর ছবি

বাংলা ওয়েলকাম

থার্ড আই এর ছবি

লেখাতো বরাবরের মতই মাহবুব লীলেন টাইপ হয়েছে। কোন কিছুতেই প্রাণচ্ছল মন্তব্য করতে পারছিনা, কেমন যেন মনটা এখনো মেন্দা মেরে আছে।
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আপনার লেখা না পড়তে পড়তে সেদিন আমি আপনাকে স্বপ্নে দেখেছি স্যার

দেখি এরশাদ রাস্তা দিয়ে হাঁটছে আর আপনি তার সামনে রাস্তায় হামাগুড়ি দিয়ে ফূঁ দিয়ে দিয়ে রাস্তার ধুলো পরিষ্কার করে দিচ্ছেন

০২

সামনে ইলেকশন
কোনো গ্রিন সিগন্যাল পেলে আমাদের মনে রাইখেন স্যার
তখন আমরা আপনার রাস্তায় চেটে চেটে পরিষ্কার করে দেবো

থার্ড আই এর ছবি

লেখা না পড়তে পড়তে মানে ....?? গত এক সপ্তাহে লেখা দিলাম ৩ টা। আর এখন মন মেজাজ বহুত খারাপ, লেখা আসতাছে না।

আল্লাহ এই রমজানেও আপনার মুখে সংযম আনতে পারলোনা। স্বপ্ন দেখতে থাকেন, বিপ্লব দার সাথে মিল্লা জামাতের সহিত স্বপ্ন দেইখেন। আমার এইসব মন্তব্য মজাই লাগে, এইসব আমি উপভোগ করি। ভাগ্য ভালো আপনি এই দৃশ্য স্বপ্নে দেখছিলেন। বাস্তবে এই কাজ করার আগে যেন আমার জম দূত আমার সাথে দেখা করে। রোজা মুখে নিয়া কইলাম।

কিছুক্ষণ আগে এক ছাত্র নেতা এসেছেন, তাকে একটা ঈদ শুভেচ্ছা বাণী লিখে দিতে হবে। সেই বানীটা হলো বর্তমানে লন্ডনে নির্বাসনে থাকা যুবরাজের। আমি তার দিকে তাকিয়ে একটা মৃদু হাসি দিলাম, এখন আপনি পরবর্তী মন্তব্য লেখার জন্য স্বপ্ন দেখতে থাকেন।

আমার রাস্তা চাটার দরকার নাই, বরং মজার মজার লেখা দেন সেইগুলা আমরা সবাই মিল্ল্যা সচলে চাইটা পুইটা খাই।

---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পয়সা পাত্তি কত দেবে বলেন
যুবরাজের জন্য ঈদের শুভেচ্ছা না হয় আমরাই লিখে দেবো

এই দুর্দিনে কিছু উপরি ইনকাম হলে ক্ষতি কী?
তাছাড়া যুবরাজ আমাদের জাতীয় সম্পদ না হলেও রাজকীয় সম্পদ সেটা তো আর অস্বীকার করতে পারি না

থার্ড আই এর ছবি

উপরি !! ওরে .....সচলে দূনীতি দমন বিভাগের কেউ নাই....???

------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

স্বপ্নাহত এর ছবি

প্রথম থিকা শেষ মন্তব্য পর্যন্ত সবগুলা আরেকবার চশমা লাগায় পড়েন।
যা যা বলা হইসে আমিও ঠিক তাই কইতে চাইসিলাম।

---------------------------------

বিষণ্ণতা, তোমার হাতটা একটু ধরি?

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

অন্যের লেখা পড়তে গেলে কপিরাইট আইনে সমস্যা আছে

পলাশ দত্ত এর ছবি

কথাকলির একটা হিস্ট্রি বোধহয় আপনার হাত ধরেই উঠে আসতেছে লীলেন ভাই। এই লেখার একটা বাস্তব (নন-ভার্চুয়াল!) সংস্করণ করা যায়?

আর মধুসূদন কবে আসবে??

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পুরোটা শেষ না করা পর্যন্ত (অন্তত বেশিরভাগ) বলা যাচ্ছে না কিছুই
টুকরো টুকরো করে লেখার কারণে অনেক জায়গায় যেমন রিপিটেশন চলে আসবে তেমনি অনেক কিছুই বাদও পড়ে যাবে

তাছাড়া লেখাটা শুরু থেকেই বেশ এলোমেলো

একটা পর্যায় পর্যন্ত শেষ করে পুরোটাকে টিউনিং করতে বসব

এর একটা প্রিন্ট ভার্সন অবশ্যই (হয়তো?) হবে
তবে মনে হয় না কয়েক বছরের আগে
কারণ লেখাটাকে ধরে আমি যে জায়গায় যেতে চাই তার ধারে কাছেও এখনও যেতে পারিনি
এখনও ইন্ট্রোতে ঘুরপাক খাচ্ছি

০২

মধুসূদন এখনও মগজে এলোমেলোভাবে আছে
জানি না কবে কী করতে পারব

রণদীপম বসু এর ছবি

দারুণ হচ্ছে।

তবে কি মোহাম্মদ আর মার্ক্স অন্যদেরকে শ্লোগান আর লেকচারগুলো দিয়ে নিজেদের জীবন লুকিয়ে দান করে গেছেন কথাকলির কাছে?

এই সাংঘাতিক কথাটার কোবরেজি নিশ্চয়ই সামনে পারো !
চালাই যান ভাইছাব।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমি তো দেখি পদে পদে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনছি

উপরে একটা কমেন্ট করতে গিয়ে মুখ ফসকে বলে ফেলাম মধুসূদনের কথা
এখন আপনি দেখি নিয়ে এলেন মার্ক্সীয় মোহাম্মদ কিংবা মোহাম্মদীয় মার্ক্সকে...

এই জিনিসটা বোধয় এভাবে আসবে না
তবে মফস্বলের প্রতিটা গ্রুপই নিজের কাজ নিজে করার পদ্ধতিটা অনুসরণ করে
তা যত পয়সাওয়ালা গ্রুপই হোক না কেন

আর এই কাজগুলো একসাথে করতে গিয়েই আসোলে নিজেদের মধ্যে টাকা পয়সা স্ট্যাটাস বয়স সব কিছুকে ছাপিয়ে একধরনে সম্পর্ক তৈরি হয়
যা কোনোদিনও কাটে না

তানবীরা এর ছবি

আমরা এখানে আরো কষ্ট করে নাটক করি লীলেন ভাই, স্টেজের আর্টও নিজেরা করি, এমনকি রিহার্সেল এর ডিনার, লাঞ্চ, স্ন্যাকস সব সেলফ মেড।

বাকী পর্বগুলো পড়ব এখন।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আপনারা তো লাঞ্চ ডিনার করাবেনই
আপনারা থাকেন বিদেশে
ডলারকে ডলার পাউন্ডকে পাউন্ড কামাই করেন

আপনারা তো আর আমাদের মতো পিঁয়াজু খেয়ে নাটক করেন না

তানবীরা এর ছবি

দাদা ভাইগো যেটা আপনার কাছে পেয়াজূ, সেটাই আমাদের কাছে স্ন্যাকসগো দাদাভাই। এক টেবিলে বসেই আমরা কেউ পানি খাই, কেউ খাই জল আর কেঊবা ওয়াটার। কেউবা খাই কাচামরিচ, কেউ কাচালঙ্কা আর কেউ গ্রীন চিলি।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সুমন সুপান্থ এর ছবি

আগা-গোড়া দুর্দান্ত একটা লেখা লীলেন ভাই ! স্মৃতিময় তো বটেই , লেখার অন্তর্নিহিত শক্তির জন্য ও গেঁথে রইলো মনে ।
বহুকাল আগে, নদী পাখি মেঘ অথবা গ্রন্থী তে পড়া আপনার একটা গল্পের কথা মনে পড়ে গেলো এইবেলা ! { ( নাম মনে নেই ) সেই যে এক বেকার মধ্যবিত্ত যুবকের দিনলিপি ... ! }

এই সিরিজটার বাকী পর্বগুলোর অপেক্ষায় রইলাম ।

---------------------------------------------------------

'...এইসব লিখি আর নাই লিখি অধিক
পাতার তবু তো প্রবাহেরই প্রতিক...'

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দেখি কতদূর কী করতে পারি
ঝামেলা হচ্ছে এই জিনিসগুলো একটা থেকে বের হয়ে আরেকটায় চলে যায় অবলীলায়

সেইসব দিনের মুগ্ধতাগুলোকে লাগাম দেয়া বেশ কঠিন

নজমুল আলবাব এর ছবি
রেনেট এর ছবি

দেরিতে হলেও পড়লাম। আপনার কথাকলির সিরিজটা আমার বরাবরই প্রিয়। আরো পর্ব আসবে নিশ্চয়ই।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

মাহবুব লীলেন এর ছবি

জ্বি হ আইবে
কিন্তু আন্নের লেখা কই?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।