প্রত্ম

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: শনি, ০১/১১/২০০৮ - ১:৩৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এখানে কোনো ট্রাফিক সিগন্যাল নেই কিন্তু কী কারণে যেন আজ সিগন্যাল পড়ায় গাড়িটা দাঁড় করাতেই হলো। একেবারে সেই রাস্তাটার সামনে। এর আগে এখান দিয়ে গেলে এদিকে তাকে তাকাতেই হতো। এখানেই রতন থাকতো সারাদিন। রতনকে দেখার জন্যই প্রতিদিন অদরকারেই এই রাস্তা ধরে প্রতিদিন কয়েকবার গাড়ি ঘুরিয়ে চক্কর খেতো নায়লা। নায়লা রতনকে দেখতো। কিন্তু রতন তাকাতোও না। তাকানোর কথাও না। হয় সে মাটির দিকে তাকিয়ে বসে থাকতো নাহলে বসে বসে বই পড়তো একমনে

তারপর আর এদিকে খুব একটা আসা হয়নি নায়লার। রতন আর এ শহরে নেই। কিন্তু ট্রাফিক জামে গাড়িটা থামতেই নায়লা জায়গাটার দিকে তাকিয়ে চমকে উঠল। ইটের স্তূপে হেলান দিয়ে বই পড়ছে রতন। মাথায় উলের ক্যাপ। কালো জ্যাকেট। হাতে বোনা সাদা আর নীল উলের মোটা মাফলার গলায়। পায়ে বুট। নায়লা গাড়িটা রাস্তার পাশে থামিয়ে নামে। গাড়ি নিয়েই তার কাছে যাওয়া যায়। কিন্তু পায়ে হেঁটেই পৌঁছাতে চায় তার কাছে। নায়লা আস্তে আস্তে ইটের স্তূপের কাছে এসে দাঁড়ায়। কিন্তু এখানে এখন আর কোনো ইট নেই। একটা নতুন সুনশান দালান। চারপাশে কোথাও কোনো ইটের স্তূপ নেই। কিন্তু সে স্পষ্ট দেখেছে রতন বসে আছে ইটের স্তূপের উপর হেলান দিয়ে। হতো রতন দালানের বারান্দায় বসে ছিল। পুরোনো অভ্যাসের কারণে সে দালানের বারান্দাকে ইটের স্তূপ দেখেছে। কিন্তু রতন গেলো কোথায়। তবে কি তাকে আসতে দেখে সে অন্যদিকে চলে গেছে? কিন্তু সে তো রতনের উপর চোখ রেখেই এক পা দু পা করে এগোচ্ছিল

দূরে একটা পিয়ন মতো লোককে দেখে নায়লা এগিয়ে যায়- কালো ক্যাপ আর কালো জ্যাকেট পরা একটা ছেলে এখানে বসা ছিল। কোনদিকে গেলো বলতে পারেন?
- কালো ক্যাপ আর কালো জ্যাকেট?
- গলায় সাদা আর নীল রংয়ের উলের মাফলার

দেখেছে কি দেখেনি সে ব্যাপারে পিয়োন মতো লোকটা কিছু বলে না। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে নায়লার দিকে। নায়লা আবারো রতনের পোশাকের বর্ণনা করে। কিন্তু লোকটা কোনো উত্তর না দিয়ে নায়লার আগা মাথা কয়েকবার তাকায়। উত্তর না পেয়ে যখন নায়লা ঘুরে দাঁড়ায় পেছন থেকে লোকটার গলা শুনতে পায়- ফ্রিজের ঠাণ্ডা পানি আছে। দেবো? একটু ফ্যানের নিচে বসবেন?

নায়লা চমকে উঠে। প্রচণ্ড গরম এখন। বহুদিন বৃষ্টিও হয়নি এখানে। অথচ সে লোকটাকে বলেছে কালো জ্যাকেট আর মাফলার পরা কাউকে দেখেছে কি না। কিন্তু এভাবেই তো সে রতনকে পরিষ্কার দেখল একটু আগেই...
২০০৫.১২.১৬ শুক্রবার


মন্তব্য

রণদীপম বসু এর ছবি

বিপজ্জনক পোস্ট ! রমণীদেরকে স্মৃতিভারাতুর করে আউলিয়ে দেয়া হচ্ছে !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মাহবুব লীলেন এর ছবি


স্মৃতি খালি পোলাপানরাই ঘাড়ে নিয়া ঘুরব
আর মাইয়ারা ঘুইরা বেড়াইব স্মৃতি বিতরণ কইরা?

এনকিদু এর ছবি

শুরুটা ভালই লাগল । কিন্ত তারপর ?

২০০৫ এর লেখা, তার মানে আপনার কাছে বাকি অংশটাও তৈরী হয়েই বসে আছে । এত ছোট খন্ড দিয়ে পাঠককে কষ্ট দেন কেন ভাই ?


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বড়ো দিলে লোকজন ঝাড়ি দেয়- অত বড়ো পড়ে কেমনে
ছোট দিলে বলে- বাকিটা গেলো কই?

কই যাই বলেন তো?

০২

এর কোনো বাকি অংশ নাই

অনিন্দিতা এর ছবি

ভাল মন্দ টের পাওয়ার আগেই দিলেন শেষ করে!
এটাও কি আপনার খেলাপী সিরিজের নতুন সংযোজন?

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

গল্প ও আজকাল হাবিজাবি নাকি?
ক্যাটাগরি যাই হোক বরাবরের মতোই ঝিম ধরানো.......

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ক্যাটাগরি জিনিসটা দেখলে আমার হাসি পায়
কোনো কিছু লেখার পরে যদি লেবেল লাগিয়ে দিতে হয়- ইহা একখানা ইতিহাস কিংবা ইহা হয় কবিতা

সম্ভবত এর চেয়ে দুর্ভাগ্যের আর কোনো কিছু হতে পারে না লেখকের জন্য

কিন্তু আপনাদের অন লাইন সিস্টেমে সব অটো ফিট করে দেয়া
কোনো কিছু না দিলে সেটাকে নিয়ে ফেলে দেয় বকর বকর ক্যাটাগরিতে

তার চেয়ে হাবিজাবিই বরং ভালো
যে পড়বে সেই ঠিক করে নেবে কোনটা কী

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

আমি আসলে আপনার নিজের লেখার ক্যাটাগরির কথা বলছিলাম।
আপনি তো কবিতাকে হাবিজাবি বলে চালাতে চান।
গল্প কে ও যে হাবিজাবি বলবেন এটা বুঝিনি তো তাই এটা বলেছিলাম। এখানে গল্প অপশন নিশ্চয়ই দেয়া যায় যেভাবে অন্যরা দেয়।

পথে হারানো মেয়ে এর ছবি

এ কি রবীন্দ্রনাথের ছোটগল্পের ফর্মূলা অনুসারে নাকি... শেষ হয়েও হইলোনা শেষ

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এইবার যে আমাকে মাপ করে দিতে হয়
ফর্মুলা জিনিসটাতে আমি কোনোদিনও পাশ করতে পারিনি
দেখা যায় ফর্মূলা করতে গিয়ে মূলা হয়ে গেছে আবার মূলা চাষ করতে গেলে দেখা যায় সেটা গিয়ে পড়ে গেছে আরো কারো ফর্মুলায়...

অতিথি লেখক এর ছবি

সব শেষেও শুরু হতে পারে....

মাহবুব লীলেন এর ছবি

তা বুঝলাম কিন্তু আপনের নাম না থাকায় আপেনেরে যে ভূতের মতো লাগছে সেটা কি টের পাচ্ছেন?

খেকশিয়াল এর ছবি

এ হইল আসল ভুতের গল্প

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

মাহবুব লীলেন এর ছবি

রতনে রতন চিনে

কাওয়াইদিনির খবর কী?
বহুদিন দেখি না

খেকশিয়াল এর ছবি

কয়াইদান আইতাছে লীলেনদা, কিঞ্চিত ব্যাস্ত

------------------------------
'এই ঘুম চেয়েছিলে বুঝি ?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

মুশফিকা মুমু এর ছবি

এর মানে কি? রতন ভুত হয়ে গেসে? চিন্তিত
একবার আমারো এরকম হয়েছিল, তবে সেটা কোনো ছেলে ছিলনা। ড্রাইভ করে যাওয়ার সময় রাস্তার পাশে একবার দেখলাম একটা পাখি মনেহয় পায়ে বেথা পেয়ে পরে আছে, নরতে পারছেনা। প্রচন্ড গরম থাকায় থামব কিনা, বাসায় নিয়ে আসব কিনা এই ভাবতে ভাবতে কিছুদুর চলে আসার পর আবার গাড়ি ঘুরায়ে ঐ জায়গায় যাই। নেমে অনেক খুজেও আর ঐ পাখিটা পেলাম না। মন খারাপ
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

মাহবুব লীলেন এর ছবি

তুমি দেখি উল্টা বুঝলা
রতন ভূত হয়নি
নায়লা পেত্নী হয়েছে এখানে

০২
নায়লার সাথে দেখি তোমার অনেক মিল

সবজান্তা এর ছবি

কল্পনায় কমই দেখছে ! টাবুর বহু পুরানো কোন এক হিন্দি সিনেমাতে দেখছিলাম নায়িকা নায়করে চা খাওয়াইতে খাওয়াইতে ছয় সাত মিনিটের বৃষ্টি ভেজা এক গান কল্পনা করে ফেলেছিলো...

লীলেন ভাই পরেরটুকু ছাড়েন...


অলমিতি বিস্তারেণ

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পরেটা ওই যে
গরমে ঘেমে বাসায় গিয়ে শাওয়ার নিতে নিতে নায়িকা দশ মিনিটের একখান গান কল্পনা করে ফেলল

যেখানে রতন আর সে সুংইমিং পুলে গরমে শরীরর জুড়ায়...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এইটা সিরিজ নাকি? আমি তো ভাবলাম শেষ... মন খারাপ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মাহবুব লীলেন এর ছবি

পরেরটাই ঠিক
সবাই কি আপনের মতো সিরিজ লিখতে পারে নাকি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আপনে তো চামে চামে খালি আমারে গালিগালাজ করতেছেন... কাহিনী কী?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কীর্তিনাশা এর ছবি

সবাই এত চিন্তায় কেন বুঝি না।

এইটা তো স্রেফ দৃষ্টি বিভ্রম।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হ ভাইজান
দৃষ্টিমান মানুষের বড়োই অভাব
সবাই সবকিছু দেখতে পায় না

রাফি এর ছবি

কিছুই বুঝি নাই; তবে লীলেন ভাইয়ের লেখায় যতিচিহ্ন দেখে মাইন্ড খাইছি।

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এইটা কী কইলেন
আমি লেখার শেষে ডান্ডা দেই না
তাই বইলা ভেতরে দুয়েকটা ডান্ডা না দিলে লেখা খাড়াইব কিসের উপর কনতো?

অতিথি লেখক এর ছবি

একটু যেন বেশিই ডিরেক্ট!
'ঝিম-ধরানো' আছে একটু, তবে ঝিমটাও যেন চৈতন্যের ভেজাল-মেশানো!
জানি না, আরো তিন বছর আগের লেখা ব'লেই কি না, মানে তখন আপনার লেখার ধারা এমনই ছিল কি না, হ'তে পারে হয়তো।
বস্, আমি ধারার কথা বলছি, মান নিয়ে প্রশ্ন তুলিনি কিন্তু। সেই উদ্ধত যোগ্যতার কানাকড়িও নেই আমার। হাসি
গল্পটা যে রতনের চোখে দেখা নয়, বরং বলা যায় নায়লার চোখেই- এটা ভালো লেগেছে। আর সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হ'লো এই, যে আপনার এত আগের লেখাও পড়তে দিচ্ছেন এইভাবে।
ধন্যবাদ।

_ সাইফুল আকবর খান

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বিশাল মূল্যায়ন?

অতিথি লেখক এর ছবি

এই রিঅ্যাকশনের মানে বুঝি নাই ঠিক।
স্যরি।
কোনো কারণে রাগ করেন নাই আশা করি। মন খারাপ

_ সাইফুল আকবর খান

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।