এই অফিসে আপনারা কাজ করেন আর আমি শুই। বসেন আপনি। সামনের সপ্তায় আপনাদের বস দেশের বাইরে চলে গেলে অফিসের সাথে সাথে আমারও শোয়ার জায়গা থাকবে না। যদিও একই ছাদের নিচে আমরা ছয়মাস ধরে আছি কিন্তু দিনে যখন আপনারা কাজ করেন তখন আমি থাকি দরজা বন্ধ করে আর আপনারা অফিস বন্ধ করে চলে গেলে শুরু হয় আমার কাজ। অবশ্য আমার কাজকে আপনারা কাজ না বলে বলেন কাম
এই শহরে আপনাদের বসকে ট্রাফিকজ্যাম ঠেলতে হয় না কোনোদিন। ঘর থেকে পা বাড়ালেই অফিস আর অফিস থেকে উঁকি দিলেই ঘর। কিন্তু বাড়িটা বানানোর সময় বেডরুমের পেছন দরজা থেকে শুরু হয়ে যে বারান্দাটা অফিস রুমের পেছন দরজায় গিয়ে শেষ হয়েছিল। ঘটনাক্রমে আপনাদের বস সেটাকে ভাগ করেননি অফিস আর ঘরে। ফলে ব্যক্তিগত ফোন ধরতে আপনারা যেমন বারান্দাটায় এসে দাঁড়ান। তেমনি আমিও মাঝে মাঝে চলে যাই কমন বারান্দাটায়। আর বারান্দার কথাগুলোও তেমনি যাতায়াত করে অফিস থেকে ঘরে। ঘর থেকে অফিসে অবলীলায়
সেই প্রথম দিকে আপনি একদিন ফোনে কথা বলছিলেন আপনার কোনো এক বন্ধুর সাথে। চাকরিটা ছেড়ে দিতে চাচ্ছিলেন আপনি। সেদিন সকালে আপনাদের বসের বেডরুমে আমাকে দেখে আপনি খুব শক্ড হয়েছিলেন। ফোনে আপনার বন্ধুকে বলছিলেন- কলর্গাল আনলে সে তার স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী আনবে। তাই বলে করতাছি-খাইতাছি টাইপের একটা স্ট্রিট গার্ল? অসম্ভব...
আপনাদেরকে শিল্প তৈরি করতে হয় বলে নিজের আলাজিহ্বা পর্যন্ত ব্যায়াম করে শিল্পের উপযোগী করে তোলেন। কোনভাবে শব্দ উচ্চারণ করলে তা শিল্প আর সভ্য হয় কিংবা কীভাবে হাসতে হয় তা আপনার ভালো জানেন। হয়ত স্ট্যান্ডার্ড সেক্সের জন্যও আপনারা বিশেষ কোনো ব্যায়াম কিংবা ট্রেনিংয়ে এটেন্ড করেন। আমি সেসব জানি না। আমি শুধু জানি যে আপনাদের বস আপনাকে রেখেছেন অনুষ্ঠান উপস্থাপনার জন্য আর আমার কাজ তার কাছে নিজেকে উপস্থাপন। এবং আমি যেমন স্বীকার করি যে আপনি আমার থেকে কয়েক লক্ষগুণ শুদ্ধসভ্য বাংলা বলতে পারেন; তেমনি আপনি অন্তত এটুকু স্বীকার করবেন যে শরীরে আমি দুয়েকটা পয়েন্ট বেশি পেয়ে যাব আপনার থেকে। তাই বস আপনার কথায় অশুদ্ধতা খুঁজে পেলেও আমার করতাছি খাইতাছিতে কোনো ভুল দেখেন না তিনি
আমার কিন্তু একটা সংসার ছিল। সেই সংসারটা ভাঙেওনি...। বিয়েটা হয়েছিল এপ্রিলের প্রথম সপ্তায় আর দ্বিতীয় সপ্তায় স্বামী চলে যায় বিদেশে। একেবারেই তাড়াহুড়োর বিয়ে। বাবা মায়ের সাথেই আমি থাকতাম। তারপর জুনে সে ফিরে। আমি আমাদের জন্য নতুন বাসা ঠিক করে রাখি। সে এলে উঠব। এসে প্রথম দিন সে চলে যায় তার বোনের বাড়িতে। পরের দিন সকালে আমার এখানে আসার কথা তার
বোনের বাড়ি থেকে আমাদের বাড়ি বড়োজোর দুঘণ্টার রাস্তা। সে রওয়ানা দিয়েছে সকাল আটটায়। এগারোটায় আমি তাকে ফোন করি। ফোন বন্ধ। ...আবার করি। বন্ধ...
একটায় ফোন করি তার বোনকে... বিকেল তিনটায় আবার ফোন করি। বোনের ছেলে জানায় আমাদের পাড়ায় তার এক বন্ধুর বাসা। গতকাল বলেছিল সে ওখানে যাবে। হয়ত বন্ধুর বাসায় চলে গেছে...
আমি আর ফোন করি না। ...রাত এগারোটায় ফোন করি। কেউ একজন ধরে আমাকে নাম জিজ্ঞেস। আমি ফোন রেখে দেই। বন্ধুকে দিয়ে আমার সাথে ফাজলামি করাচ্ছে সে... ভোর বেলা তার বোনের ফোন পাই। হাসপাতালে গিয়ে তাকে চিনতে পারি আমরা। তারপর তার লাশ নিয়ে প্রথম এবং শেষবার শ্বশুরবাড়ি যাই...
আপনার বস দেশের বাইরে তার সাথে পরিচিত ছিলেন। কয়েকমাস পরে দেশে ফিরে তিনি আমাকে সান্ত্বনা দিতে আসেন... তারপর তিনি এই অফিসবাসা করেন। আপনারও আসেন। আমিও আসি...
বাড়িতে জানে চাকরি করছি আর একসপ্তা পরে অফিস উঠে গেলে আপনাদের মতো আমিও বাড়ি ফিরে যাব...
মেয়েটা উঠে যাবার পরেও ঝিম মেরে বসে থাকে রুন্তি। মোবাইল বের করে সকালে আসা এসএমএসটা পড়ে...
রুন্তির নিজের একটা প্রেম ছিল কিন্তু বিয়েটা হয় অন্যজনের সাথে। প্রেমটা থেকে যায়। থেকে যায় সর্বক্ষণের ভরসা...। চাকরিটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। অন্য অনেকের সাথে তাকেও জানানো হয়। সে আরো ভালো করে জানে প্রতিমাসে রুন্তির দরকার নির্দিষ্ট কিছু টাকা। তাই আজ সকালে সে রুন্তিকে এসএমএসটা পাঠায়। সে বেড়াতে যাবে ঢাকার বাইরে। প্রতি রাতের জন্য রুন্তি পাবে অত করে টাকা। রাজি হলে টিকিট কাটবে সে...
রুন্তি এসএমএসটা পড়তে থাকে বারবার। আবারও সামনে এসে দাঁড়ায় মেয়েটা। হাতে লাগেজ- আপনাদের তো অফিস বন্ধ হয়ে গেলেও গোছানোর কিছু কাজ থেকে যায়। কিন্তু কামের তো আর কোনো প্রস্তুতিও নেই গোছানোও নেই। তাই আজকেই যাচ্ছি- বাই
২০০৯.০৮.০৪ মঙ্গলবার
মন্তব্য
হাবিজাবি?
ব্লগরব্লগর??
না এটি উপন্যাসের প্লট নয়। এটি ব্লগর ব্লগর কিংবা হাবিজাবি ও নয়। এটি একটি পুর্ন গল্প মাত্র।
আমি এই গল্পের এক সামান্য পাঠক মাত্র। গল্পকারকে অভিবাদন।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
খুব সুন্দর একটা গল্প পড়লাম। এটাই লীলেনীয় হাবিজাবি... আমরা যা লেখার জন্য মাথা কুটবো।
চমতকার লাগলো গল্পটা।
ধন্যবাদ লীলেন ভাই।
ন্যারেটিভ, আবার অ্যাবস্ট্রাক্ট ও।
এইটার ট্যাগ হাবিজাবি হয় ক্যাম্নে! দারুণ গল্প!
..................................................................
ঐ যে হাঁটছি মুদ্রা দোষে নাকটা ঘষে
আড্ডা মানেই সেকেণ্ড হাফে খেলছি সোলো
গুজবো না শার্ট আমার পাড়া স্মার্ট পেরিয়ে
সে রোদ্দুরের স্মরণ সভাও লিখতে হল
দারুন !
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)
তাড়াহুড়া করে পড়লাম বলে কিনা জানিনা, তেমন একটা ভালো লাগেনি।
অফিস-শোবার ঘরের ব্যাপারটা মেকি মনে হয়েছে।
তাড়াহুড়া না একটু খেয়াল করে ধীরে পড়লেও আপনার অবজারভেশনটা একই থাকবে
কিছু ইমপোজড আর কিছু মিসলিংকের বিষয় আছে এখানে
সাধারণত প্লট পেলে আমি নোট করে রেখে পরে আস্তে আস্তে লিখি
এটাও স্রেফ একটা প্লট। ঠিক গতকাল রাতেই পেলাম আর নোটাটাই তুলে দিলাম সরাসরি
০২
দেখি
হয়ত আমি কিংবা অন্য কেউ এটা নিয়ে কিছু একটা লিখলেও লিখতে পারে
অনেক ধন্যবাদ লীলেনদা, প্লটটা ভালো। আপনি অনুমতি দিলে আমি একটু চেষ্টা করে দেখতাম
লিখে ফেলেন
আমিও প্লটটা আরেকজনের কাছ থেকে অনুমতি নিযে এনেছি
যার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি সে নিজেও লিখবে
হোক না কযেকটা গল্প একটা প্লটের
(তবে আমি যে আদৌ লেখাটা শেষ করতে পারবো সে বিশ্বাস এখন আর আমার নেই। তাই আপনিই শুরু করেন)
ট্যাগটাই 'হাবিজাবি', গল্পটা নয়।
অভিনন্দন গল্পকার।
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
লেখা নিয়ে আপনার এই হাবিজাবি অভিমান কবে যাবে বলেনতো?
তাহলে গল্পটা আবার লিখে ফেলুন না।
আমার একটা সামান্য অবজারভেশন আছে আপনার লেখার বিষয়ে ।
অবজারভেশনটা বললে কিছু কাজে লাগতো আমার
বলেন স্যার
আসলে অবজারভেশনটা ঠিক আপনার এই লেখা নিয়ে ই নয় । টোটাল লেখার উপর ।
এখানে না দিয়ে বরং পরে জানাই।
এখানে কিছু খটকা রয়েছে।
১. মূল চরিত্রের স্বামী মারা যাবার ঘটনাটা কেমন যেন অস্পষ্ট। বার বার যোগাযোগ করলে ও তাকে খবর না দেয়াটা কিছুটা অদ্ভুত মনে হয়।
২. রুন্তীর চাকরি শেষ হয়ে যাচ্ছে। এসময় এস এম এস করে বাইরে যাবার প্রস্তাব কি তার প্রেমিক দিয়েছে?
এটা কয়েকবার পড়ার পর ই আমার মনে হলো। এখানে সে বলায় ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কার কথা বলা হচ্ছে।
হয়ত শুধু আমার ই বুঝতে সমস্যা হয়েছে।অন্যদের হয়নি।
আপনার কমেন্ট জানতে পারলে পরিষ্কার হতো।
আহারে...মানুষের নোটগুলাই এমুন কামিল। আমি মূর্খ মানুষ, তারপরো আমার কাছে এইটাকে আস্ত মানে সম্পূর্ণ একটা ছোটগল্প মনে হয়েছে। যে গল্প লিখতে পারার জন্য লীলেনকে আমি ঈর্ষা/ হিংসা দুইটাই করি।
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
---------------------------------------------------------
ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.
গল্প গল্প করতে করতে আমার কবিতার বারোটা বাজানোর জন্য প্রধান আসামী তুমি নিজেই
কবিতার বই যদি আর কোনোদিন করতে না পারি তবে নিজের হাতে তোমার ধড় থেকে মাথা নামিয়ে একটা গল্প লিখব মনে রেখো
তথাস্ত। কবিই পারে এমন গল্প লিখতে।
লগইন করতে আলসী লাগে?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
এটা আলসী না অন্যকিছু- কিছু একটাতো বটে।
লীলেনদা, আপনার সব লেখাই এখন পর্যন্ত কয়েকবার করে পড়েছি আর মুগ্ধ হয়েছি। কেন যেন এটা আমি দু'বার পড়তে পারলাম না। লেখাটা আমাকে ছুঁতে পারেনি। আমি দুঃখিত!
--------------------------------
কাঠবেড়ালি! তুমি মর! তুমি কচু খাও!!
**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।
মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।
দুঃখিত হবার কিছু নেই রে ভাই
এটা গল্প না
একটা মজার প্যারডক্সের নোট এটা
এটাকে সাজাতে পারলে হয়ত একটা ভালো গল্প হলেও হতে পারে
আর সাজাতে না পারলে স্রেফ একটা ইসু হিসেবেই থাকবে
নাহ, ঠিকি আছে ।
আমি গু ছাড়া সবই খাই । এইটা গু হয়নাই । ভালা হইছে । সব কিছুই চিনিমারা চকলেটে ডুবান রঙ্গিন প্যাকেটে মোড়ানার দরকার নাই ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
আমার কাছে মনে হয় এই গল্পটি রিপ্রোডিউসের দরকার নেই। খসড়া হিসেবেই এটা বেশি মানানসই।
ভালো লাগলো।
প্রথম দিকটা বেশ গোছানো বুনুনির গল্পের মতন এগোচ্ছিলো, শেষের দিকে এসে আর ধরতে পারলাম না। নামটাম সব গুলিয়ে গেল।
লেখক, এর থেকে বিস্তৃত করে উপন্যাস লিখলে খুব ভালো হবে যদি প্রথম দিকের মতন নিখুঁত বুনুনিটা থাকে।
শুরু করে দিন, শুভেচ্ছা রইল।
-----------------------------------------------
কোন দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
এইটার একটা কাঠামো দাঁড় করান না স্যার
দিনে দিনে দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছি আমি
গালাগালি ছাড়া মাথায় নতুন কিছুই তৈরি হচ্ছে না বহুদিন
এইটা ভালো লাগছে।
...........................
Every Picture Tells a Story
এই তো বেশ।
লীলেন স্যারের হাতে এই খসড়াই তো আস্ত গল্পের রূপ পেয়েছে।
তবে স্যার বলে কথা, এটা হয়ত তাঁর পরবর্তী উপন্যাসেরই খসড়া
দারুণ!
নতুন মন্তব্য করুন