একটা স্যান্ডেল কোথায় পড়েছে জানি না। আমি দৌড়াচ্ছি। লোকজনের পেটে-পিঠে ধাক্কা মেরে দৌড়াচ্ছি আমি। কিছুই খেয়াল করার সময় নেই। মাত্র দশ হাত দূরত্ব। পেছনে তাকানোরও সময় নেই। এক পায়ের বিরক্তিকর জুতাটা খোলারও সময় নেই। দৌড়াচ্ছি। মাথায় মৃত্যুদণ্ড নিয়ে দৌড়াচ্ছি আমি...
দৌড়াতে দৌড়াতে একেবারে শহরের বাইরে। ভয়ানক ক্লান্ত। এখন ব্যবধান আরো কম। মাত্র আট কি সাত কি ছয় হাত। সামনের গাছটাই ভরসা। চড়ে বসতে পারলে বেঁচে যাবো এইবার। না হলে গতরাতের স্বপ্নের মতো নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে হবে আমাকে
লাফ দিয়ে ঝুলে পড়লাম একটা ডালে। বেয়ে বেয়ে মগডাল। আপাতত নিরাপদ। খুরধারী চতুষ্পদের পূর্বপুরুষে গাছে চড়ার কোনো ইতিহাস নেই
উদভ্রান্ত চক্কর নিচে। শিংয়ে-খুুরে সমানে খুঁড়ে চলেছে গাছের গোড়ার মাটি; যেন মাটি খুঁড়ে আমাকে সমেত গাছটাকে উপড়ে ফেলবে সে। মাঝে মাঝে মারছে সমস্ত শক্তি দিয়ে একেকটা ঢোঁশ। কিন্তু একবারও উপরে তাকায়নি। সে ধরেই নিয়েছে আমার পালাবার কোনো পথ নেই
কিন্তু তাকে তাকাতেই হবে। আমার জন্য তাকাতে হবে তাকে। এক পায়ের অবশিষ্ট স্যান্ডেলটা ছুঁড়ে মারি দু শিংয়ের মাঝামাঝি। প্রচণ্ড এক হুংকার দিয়ে তাকালো আমার দিকে মুখ তুলে। এক। একই প্রাণী। কাল রাতের। শব্দে-বর্ণে হুবহু সেই ষাঁড়। মিশকালো ছ’ফুটি বিশাল দেহ। চকচকে তীক্ষè দু শিংয়ের মাঝামাঝি জ্বলজ্বলে এক টুকরো সাদা। সেখানে ভাসছে একটা মনোগ্রাম ১৭৫৭...
আজ দু’বছর ঘুমালেই ষাঁড়। লোকটি হাজির হয় ষাঁড়ে চড়ে। হাসতে হাসতে বলে - ছোকরা ভালো হয়ে যাও। আবার এক বছর গেলে আসে আরেকদিন। গতকালও সেরকম লাঠি ঘোরাতে ঘোরাতে নৈমিত্তিক ঢংয়ে বললো- সতেরো শ’ সাতান্ন সালে পলাশীতে জন্ম আমার। তারপর কিছু নির্দেশ দিলো আমাকে। আমি বললাম- না। বলল- নিষেধ ছিলো কিছু। আমি বললাম- না...
সবগুলো না শুনে বেদম পেটালো আমাকে কুঁকড়ো লাঠি দিয়ে। পরদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠলাম শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে। এরপর ঘুমালেই লোমশ লোকটি এসে এক ঘণ্টা আমাকে পেটায়। আমার শরীরে ব্যথা চিরস্থায়ী হয়ে যায়। ডাক্তার বলে- আরথ্রাইটিস। কিন্তু ওষুধে সারে না। আকুপাংচার করি। কাজ হয় না। ডাক্তাররা ওষুধ দেয় পুরোনো রোগের। আর আমার শরীরে রোগ তৈরি হয় প্রতিদিন
গতকালও এসেছিল সে। টানা একঘণ্টা পিটিয়ে জিজ্ঞেস করল- কথা শুনবি না?
- না
তাহলে তোর জন্য নতুন শাস্তি...
লোকটা ইশারা করলো তার বাহনকে। ষাঁড়টি প্রথমেই তেড়ে এসে খেয়ে ফেললো কবিতার খাতা- গানের স্বরলিপি- ক্যানভাস- রং তুলি- নাটকের পাণ্ডলিপি; তারপর শিংয়ে খুঁচিয়ে আমাকে ফালাফালা করে ঘোঁৎ ঘোঁৎ শব্দে গিললো রক্ত। ...এবং মারা গেলাম আমি
লোমশ লোকটি এবার তার হাতের লাঠির তিনটা বাড়ি মেরে আমাকে আবার জীবিত করে তুলল। কিন্তু আমি তখনও ছিন্নভিন্ন। আমাকে আবার প্রশ্ন করলো - শুনবি না কথা?
- না
খ্যাক্ খ্যাক্ শব্দে অদ্ভুত হাসলো কিছুক্ষণ- তোর শাস্তি বেড়ে গেলো আরো। এখন থেকে শাস্তি হবে দিনে। চিনে রাখ আমার বাহনকে। এখন তোর শাস্তি হবে দিনে দুঘণ্টা করে। বাড়তে বাড়তে চব্বিশ ঘণ্টাও হতে পারে একসময়। আবার কমতেও কিংবা বন্ধও হতে পারে যদি তুই চাস
হাতের ভাঙা লাঠি দিয়ে আরেক বাড়ি মেরে আমার ছিন্নভিন্ন শরীর আবার এক করে দিয়ে চলে গেলো তার বাহন নিয়ে
পরদিন গলির মুখে আসতেই ষাঁড়। তারপর দৌড়। দৌড়াতে দৌড়াতে এই গাছ
ষাঁড়টি এখনো বৃত্তাকারে ঘুরছে গাছের চারিদিকে। বিকট শব্দে চিৎকার করছে। আমি এরকম চুপচাপ বসে থাকার কোনো মানেই হয় না। গাছের দুটো ডাল ভাঙলাম। ফুল হাতা শার্ট খুলে ডাল দুটো বাঁধলাম শার্টের দুই হাতে; যাতে ভারি হয়। এবার লাইটার জ্বেলে শার্টে আগুন ধরালাম। আগুন দেখে ষাঁড়টি তাকালো। সে তখন ঠিক আমার নিচে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুই হাত মেলে জ্বলন্ত শার্টটি ছেড়ে দিলাম নিচে। গিয়ে পড়লো তার পুরো পিঠ আবৃত করে। ...দুই দিকে ঝুলে আছে দুটো ডাল। আর তার পিঠ বরাবর জ্বলন্ত শার্ট। তখনো বোঝেনি কিছু। কিন্তু পশমের স্পর্শে আগুন ধ্বক্ ধ্বক্ করে জ্বলে উঠতেই দিলো লাফ
উম্মত্ত হয়ে ছুটছে ষাঁড়। ধুলোয় গড়াগড়ি খেয়ে কবার ঢোঁশ মারলো গাছে; একটানা চিৎকার। মাংস পোড়া গন্ধ। এক সময় নিভে গেলো আগুন অর্ধেক শরীর ঝলসে। এবং চলে গেলো। ঘড়িতে চোখ ফেলে দেখি ঘর থেকে বেরোনোর পর দু’ঘণ্টা হয়ে গেছে
কাউকে কিছু বললাম না বাসায়। বলার কিছু নেই। প্রতি রাতে পিটুনি খাবার কথা বিশ্বাস করেনি কেউ। এতো আরো দূর। আমি চুপচাপ বারান্দায় গরম পানিতে ডেটল ছেড়ে পায়ের ক্ষত ধুয়ে যেতে থাকি হাতের আলতো ছোঁয়ায়। পেছনে মায়ের গলা- পায়ে কী হলো আবার?
- না। এই খেলতে গিয়ে ফোসকা...
- খেলতে? তুই আবার ফুটবল ধরেছিস? কোনো কাজের কাজ নেই অকাজের কাজ
ঘাড় ঘুরিয়ে মা’ কে দেখতেই আৎকে উঠি আমি। মায়ের কপালেও সেই লোমশ লোকের ছবি। মাও কেমন ষাঁড়-ষাঁড় হয়ে যাচ্ছে ক্রমশই। দ্রুত দৌড়াতে যেয়ে চেয়ারে হোচট খেয়ে চেয়ারশুদ্ধ পড়লাম গরম পানির গামলায়। চিৎকার দিয়ে এসে তুলতে চেষ্টা করলেন মা। এক ঝটকায় ছাড়ালাম তার হাত। পালাতে পালাতে আবার পড়লাম; দরজায় হোচট লেগে হুমড়ি খেয়ে
মা-ই তুললেন এবার। আমি হাঁপাচ্ছি। মার মুখে এখন আর সেই ছবি নেই। অবাক বিস্ময়ে শুধু দেখছেন বড়ো বড়ো চোখে। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে প্রশ্নহীন মমতায় বললেন- চল শুয়ে থাকবি চল
বিকেলে বিছানায় শুয়ে পাশের ঘরে শুনলাম বাবার ভারিক্কি গলা। বাবা আমাকে খুঁজছেন। মা তাকে কী যেন খুব আস্তে বললেন কোনো কথা। বাবার রাগি গলা শুনলাম- হবে না? সারাদিন বখাটে চককর দিলে হবে না এসব? কবিতা নাটক গান ছবি। তার উপর আবার ধরেছেন খেলা? কোথায় সে? বলতে বলতে চলে এলেন সোজা আমার দরজায়
বাবার কপালেও সেই ছবি। হৃৎপিণ্ড বন্ধ হয়ে আসে আমার। কেমন যেনো ষাঁড়-ষাঁড় চেহারা এখন বাবার। লাফিয়ে খাট ছেড়ে দৌড়ের শুরুতে ধাক্কা খেলাম দরজার চৌকাঠে। ছিটকে আছড়ে পড়লাম ঘরে। আসোলে পর্দার কারণে ঠিক আন্দাজ করতে পারিনি দরজার মাপ। গলগল ঝরছে নাকে মুখে রক্ত। কোনোমতে উঠে বেরুতে যাবো আবার; বাবা ধরে ফেললেন হাত। ঝাঁকি মেরে ছাড়িয়েও টাল খেয়ে পড়লাম মেঝেতে মাথা ঠুকে
অপ্রস্তুত বাবা নিজেকে সামলাবার আগেই হাঁটু গেড়ে বসে মা শক্তিহীন আমার মাথা তুলে নিলেন তার কোলে। অবাক বাবা তাকালেন সোজা; এক ফোঁটা শক্তি ও নেই শরীরে। বিস্মিত বাবা প্রশ্ন করলেন কী হলো আজ তোর? তার চেহারায় এখন ষাঁড়ের মুখ নেই
অনেক্ষণ আর জানি না কিছু। রাত দশটায় খাওয়ালেন মা ডেকে তুলে। ঘুম। আবার ঘুম। সীমাহীন ব্যথা সমস্ত শরীরে। পরদিন সকালে কলেজের পথে নিষেধ এলো মায়ের কণ্ঠ থেকে। তবুও বেরুলাম লুকিয়ে দু’পাযের কষ্ট সমেত। সঙ্গে এক প্যাকেট সিগ্রেট আর লাইটার। দু ঘণ্টার খোরাক
কলেজ গেটেই ঘটলো ঘটনা। ...ঝেড়ে দৌড়। একে ওকে ধাক্কা মেরে দিগি¦দিক দৌড়। অর্ধেক তৈরি সাইন্স ফেকাল্টির দিকে দৌড়াচ্ছি আমি। তিন তলা দালানটিতে কাজ হচ্ছে। এখনো সিঁড়ি তৈরি হয়নি। আমার লক্ষ্য কোনো মতে মইয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া... মাঝ পথে উঠতেই কেঁপে উঠলো মই শিংয়ের ধাক্কায়। আমিও মরীয়া। মইটা উপর থেকেও শক্ত করে বাঁধা। নিচে খসে গেলেও ঝুলে থাকবে আমাকে নিয়ে...
উপরে সিগ্রেট ফুকছি আমি নিশ্চিন্ত। ছাদে এখানে ওখানে অসংখ্য ইট। প্রথমে ছুঁড়লাম একটা আধলা ইট। ঘ্যাক্ শব্দে পড়লো ষাঁড়ের পিঠে। এরপর আরো। কখনো টুকরো- কখনো আস্ত- কখনো আধলা। পুরো দুঘণ্টায় কখনো লাগলো; কখনোবা বিফল। ধীরে ধীরে নামলাম নিচে। শেষ সিগ্রেট শেষ করেও ফোর্থ পিরিয়ডের থাকলো সাত মিনিট বাকি
আমি বেকুবের মতো স্থির বসে আছি। স্যার পড়াচ্ছেন অনর্গল। দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করলে বললেন অতো বুঝে কাজ নেই। বোর্ডে যা লিখেছি নোট করে নাও
- কিন্তু স্যার দুনম্বর পয়েন্টটা ঠিক...
- বললামতো লিখে নাও মুখস্থ কোরো। তোমাকে বোঝাবার সময় নেই আমার
বেঞ্চে বসতে বসতে দেখি স্যারের কপালেও সেই ছবি। স্যারও এক মিশকালো ষাঁড়। ধ্বক করে ঢোল পেটালো বুকের ভেতর। বামের দরজার দিকে ছিলো মাত্র দুজন; ওদেরকে টপকে লাগালাম দৌড়। অবাক সমস্ত ক্লাশ তাকালো আমার দিকে। ষাঁড় আকৃতির স্যারও তাকালেন মাংসল গর্দান বাঁকা করে...
এক মাসের মধ্যেই শহরে পাগল হয়ে গেলাম। সবাই জানে অযথা দৌড়াই আমি। কখনো দৌড়ে উঠি গাছে। কখনো সেই সব ছাদে যে সবের কোনো সিড়ি নেই; শুধু পাশের গাছে চড়ে কিংবা বড় ডাল ধরে ঝুলে উঠা যায়; আর দু আড়াই ঘন্টা বসে সিগ্রেট ফুঁকে ফুঁকে ইট ছুঁড়ি নিচে...
এর মাঝে শিখে গেছি দুটো কাজ বেশ ভালো। এক- দ্রুত দৌড়াতে পারি আমি। দুই- তরতর বানরের মতো চড়তে পারি গাছে। আর কখন কোথায় দৌড়ে উঠতে হবে মোটামুটি মুখস্থ তাও। আরো শিখে গেছি ষাঁড়টা কিছু লোককে ভয় পায় ভীষণ। তাই মাঝে মাঝে সুযোগে কয়েক ঘণ্টা কাটিয়ে দেই ওদের আশেপাশে। চার দিকে চক্কর দেয়। কেউ দেখে না ওকে; শুধু গোবরের গন্ধে নাক সিঁটকায়
এক রাতে প্রচণ্ড পিটুনি খেয়ে পরদিন ছোরা সঙ্গে নিয়ে বেরুলাম। ষাঁড়টি সাধারণত আসে সকালের দিকে। কলেজের গেটেই দেখা পেলাম তার। এবার আর দৌড়ালাম না। ছোরা বাগিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম চোখের দিকে তাকিয়ে। কিছুটা যেন ভড়কে গেলো দৌড়াতে না দেখে। তারপর ঠিক মানুষের মতো হেসে উঠলো। এবং... তেড়ে এলো মাথা নিচু করে প্রচণ্ড বেগে শিং বাগিয়ে। আমি অপেক্ষা করছিলাম এর জন্য। ঢোঁশ মারার মুহূর্তে একটু সরে শক্ত করে ছোরা তাক করে ধরলাম তালু বরাবর। একেবারে ১৭৫৭’র ছবির মধ্যখানে। ঘ্যাচ্ করে বিঁধে মট করে ভেঙে গেলো চাকু। আমিও লাগালাম দৌড় । কিন্তু তার আগেই সে শিং ঘুরিয়ে আমার ডান দিক থেকে ছিঁড়ে নিয়ে গেলো এক তাল মাংসল পেশী
মাটিতে চিৎ হয়ে শুয়ে আছি আমি। তেড়ে এসে এক পা তুলে দিলো বুকে; আশি মন ওজন। মনে মনে আমারো হিসেব শেষ। এবার পায়ে চেপে ধরে শিং দিয়ে তন্নতন্ন করবে সমস্ত শরীর। কিন্তু হঠাৎ ছিটকে সরে গেলো ষাঁড়। কোত্থেকে সুগন্ধি শব্দের কিছু ছেলে-মেয়ে হাতে ধরে তুললো আমাকে। ডান পাশ ভেসে যাচ্ছে লাল কালো রক্তে
হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতে ওরা বললো আমি নাকি একটা চকু হাতে আত্মহত্যার চেষ্টা করছিলাম। হঠাৎ পড়ে যাই চিৎ হয়ে। তাই রক্ষে। কিন্তু আমি শত চেষ্টা করেও তাদের বোঝাতে পারলাম না যে আমাকে আমি আঘাত করিনি। সে আমাকে ফেলে দিয়েছিল শিংয়ের আঘাতে। ওরা হাসে। কী আর করা। চেপে গেলাম
আঘাতটা গেছে মাংসের ওপর দিয়ে। ব্যান্ডেজ বেঁধে ফিরলাম বাসায়; বুকের ব্যথাটা সঙ্গে নিয়ে
ঘুমের মধ্যে সে এলো। কপালে একটা কাটা দাগ। আজ আর কোনো প্রশ্ন করলো না। শুধু বললো- আমাকে আঘাত করার শাস্তি তোমাকে পেতে হবে। তারপর কয়েকঘণ্টা চললো অনবরত তুলো ধুনা। আছড়ে ফেললো মাথার ওপর থেকে। আমি একটি চিৎকারও দিতে পারছি না। স্বপ্নে কখনো কিছুই করতে পারি না আমি। না পারি দৌড়াতে- না পারি চিৎকার দিতে- না পারি অন্য কিছু করতে
পিটতে পিটতে ক্লান্ত হয়ে সে চলে গেলো। বলে গেলো আজ থেকে শাস্তি বাড়লো আরো এক ঘণ্টা করে
সকালে আর নাড়াতে পারি না গতর। উঠতে উঠতে বেজে গেলো দশটা। বাসার সবাই চলে গেছে যে যার কাজে। আমাকে নাস্তা খাইয়ে মাও চলে গেলেন কোথায়। বলে গেলেন ফিরবেন দুপুরের দিকে; আমি যেন বাসাতেই থাকি
বাসায় একা আমি। সবগুলো দরজা বন্ধ করে বসে আছি জানলার পাশে। এমন সময় এলো সে। আমি নিশ্চিন্ত। দরজা বন্ধ। কিন্তু ক’পা পিছিয়ে বিশাল দেহের শক্তিতে ঢুঁশিয়ে ভেঙে ফেললো দরজার কপাট। আর তো উপায় নেই। পেছনের দরজা খুলে পেয়ারার ডাল বেয়ে উঠলাম মুরগি ঘরের ছাদে। নিচু হলেও এখানে ও আসতে পারবে না আর। খাড়াই ছাদে বসে দেখলাম একটা শিং ভাঙ্গা ওর। রক্ত পড়ছে চুইয়ে চুইয়ে। আজকের আচরণ কেমন যেন পাগলের মতো। দরজা ভাঙতে ভেঙেছে শিং। বসে আছে আমাকে পাহারা দিয়ে। এখন আর পারতপক্ষে কাছে ঘেঁষে না আমার
দূরে থেকে আমাকে পাহারা দিয়ে চলে গেলো সে। বাসায় ফিরে সবাই ঝড় বইয়ে দিলো আমার উপরে দরজা ভাঙার অপরাধে। আর রাতে পিটুনি খেলাম শিং ভাঙার অপরাধে। যদিও মার খাওয়া অভ্যাস হয়ে গেছে আমার। তবুও সকালে সিদ্ধান্ত পালটে ফেললাম। আর তাতেই সবারই কাছে পরিচিত হয়ে গেলাম এক বদ্ধ পাগল হিসেবে
একদিন বাসায় ফিরে কবিতার খাতাগুলো পেলাম না কোথাও। রং তুলিও নেই। খুঁজতেই নম্র পায়ে হাজির হলেন বাবা; নরম বাণীতে বোঝালেন ওসবের জন্যই এ অবস্থা আমার। তাই তিনি সব আগুনে দিয়েছেন। ডাক্তার তাকে বলেছে আমাকে দেশের বাইরে কোথাও পাঠালে পরে এসব ঠিক হয়ে যাবে
আমার বলার কিছু নেই। বোকার মতো বসে আছি। বাবা বলছেন- এসব আমাদের কাজ নয়; আমাদের কাজ খেয়ে পরে বেঁচে থাকা। হঠাৎ আমার নাকে ষাঁড়ের গোবরের গন্ধ পেলাম। বোটকা দুর্গন্ধ। বাবার কপালে ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে সেই ছবি । দুটো শিং উঁকি দিচ্ছে চামড়া ফুঁড়ে
সেদিনের ষাঁড়ের লম্বা ভাঙা শিংটা সযতেœ রেখেছি টেবিলের পাশে। বাবার কপালে সেই ছবি আরো স্পষ্ট এখন। আমি দ্রুত শিংটা তুলে প্রাণপণ শক্তিতে মারলাম বাবার কপালে ঘা। একটা আর্ত চিৎকারে দুহাতে কপাল ঢেকে বসে পড়লেন তিনি। দৌড়ে এলেন মা। সারা ঘর ভেসে যাচ্ছে রক্তে আর শিং হাতে আমি দাঁড়ানো বিমূঢ়
এ ঘটনায় আমাকে কেউ কোনো প্রশ্ন করেনি; শুধু ঘরের মধ্যে তালা দিয়ে রেখেছে আমাকে। কিন্তু পরদিন ছোটো বোনটা লুকিয়ে খুলে দিলো তালা। আমি এক দৌড়ে সোজা কলেজ...
ষাঁড়ের পালা আজকের মতো শেষ। অনেক্ষণ ঘুরেফিরে ভাবলাম একটা ক্লাশ করি। এবং ঢুকেই দেখলাম স্যার পড়াচ্ছেন আর তার কপালে স্পষ্ট ১৭৫৭’র ছবি। গায়ে বোটকা গোবরি গন্ধ। সোজা ডাস্টার তুলে মারলাম স্যারের মাথায়...
আমাকে ধরে নেয়া হলো প্রিন্সিপালের রুমে। কেউ কোনো প্রশ্ন করার আগেই অসংখ্য উত্তর এলো আশপাশ থেকে - স্যার পাগল। বদ্ধ পাগল। মাথা খারাপ স্যার...
আমি বেরিয়ে এলাম শুধু এই নির্দেশ পেয়ে- যাও। বাসায় চলে যাও
শহরে রটে এখন আত্মহত্যাও করতে চাই আমি। অথচ আমার লক্ষ্য ছিলো রাস্তার ওপারের গাছ। মাঝখানে রাস্তা ডিঙানোর সময়ে পেছনের ষাঁড় থেকে দ্রুত এক গাড়ি এক ধাক্কায় আমাকে ছিটকে দিলো; উল্লাসে ষাঁড় প্রথমবারের মতো সফলতায় সেরে গেলো কাজ। আহত আমার দেহে। আমি অজ্ঞান
হসপিটালে মায়ের বিলাপে ঘুম ভাঙলো পরদিন। তার একপাশে দাঁড়িয়ে আছে সেদিনের ষাঁড়। ব্যান্ডেজের ভেতরে ব্যথায় ফেটে যাচ্ছে মাথা। তার উপর এখন যদি আবার আমাকে পিটায় সে। উঠে দৌড় দিলাম। পারলাম না। খাটের মশারি আর স্যালাইনের জঞ্জালে আটকে হুমড়ি খেয়ে পড়লাম মেঝেতে। দৌড়ে এসে আমাকে জাপটে ধরলো বোন। সে আসতেই নিমিষে উধাও হয়ে গেলো ষাঁড়। আমার রক্তে ভেসে যাচ্ছে বোনের শরীর। নার্স- ডাক্তার আবার দৌড়াদৌড়ি। আমি শুধু আমার বোনটিকে আঁকড়ে ধরে বললাম- ভাইকে ফেলে কোথাও যাস না তুই। তুই চলে গেলে আমাকে মেরে ফেলবে সে
বোনটি কিছুই বলল না। আমাকে আরো জোরে আঁকড়ে ধরল শুধু...
হাসপাতালে একটা মিনিটের জন্যও আমাকে ছেড়ে যায়নি আমার বোন। রাতে আমাকে জড়িয়ে ঘুমিয়েছে সে। ষাঁড়টি দূরে দাঁড়িয়ে আমাকে দেখতো। আর ঘুমের মধ্যে প্রতিদিন ১৭৫৭ একটা করে লাঠি ভাঙতো আমার উপর। একদিন ধড়মড় করে ঘুম ভাঙতেই বোনটি অনেক্ষণ আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল- অত ভয় পাস কেন? ভয় দেখা এবার...
সুস্থ হয়ে একদিন কুড়ালের এক ঘায়ে ভেঙে ফেললাম ষাঁড়ের দ্বিতীয় শিংটিও। ষাঁড় আর্তনাদ করে উঠলো প্রমিত বাংলায়। এবং এই প্রথম বুঝলাম চরম মুহূর্তে ষাঁড় কথা বলে বাংলায় মানুষের মতো...
পরদিন ভোরে অনেক দূর থেকে শিথিল পায়ে ষাঁড়টিকে দেখলাম হেঁটে আসতে। দৌড় দেবো কি না ভাবছি এমন সময় স্পষ্ট বাংলায় আমার নাম ধরে ডাক দিলো। কেমন করুণ তার গলা। দাঁড়ালাম। তেড়ে এলো না। ধীর পায়ে আমার কাছে এলো। তার চোখে মানুষের মতো জল। বলল- আর তোমাকে তাড়াবো না আমি। এসেছি বিদায় নিতে। আমার চাকরি শেষ...
ষাঁড়ের চাকরি। আমি অবাক হয়ে তাকালাম তার দিকে। তার আগুনে পোড়া চামড়া কেমন বিশ্রি- হলুদ। কপালের ক্ষতে বিভৎস পুঁজ। অনেক্ষণ নীরব থেকে আমার দিকে তাকালো সে- আজ থেকে তোমাকে চারদিক থেকে তাড়াবে নতুন চারটি ষাঁড়। পালিয়ে তোমার মুক্তি নেই। মুক্তির একমাত্র উপায় হৃদয়ের উত্তাপ
ষাঁড়টা একটু থামল। যাবার জন্য ফিরে ঘাড় ঘুরিয়ে বলল- আমিও একদিন মানুষ ছিলাম। বিদায়...
চার দিকে চারটি হুঙ্কার। চারদিক বন্ধ আমার। চারদিকে চারটি ষাঁড়। আমাকে ঘিরে ধরে নাচতে শুরু করেছে। নাচতে নাচতে এগিয়ে আসছে কাছে। পালানো যাবে না। পালাব না আমি। আমি পরনের শার্ট খুলে ফেলি। পকেট থেকে পেপার কাটার বের করে এক টানে দু’ফাঁক করে ফেলি নিজের বুকের বাঁ’পাশ। ডান হাতে এক খাবলায় ছিঁড়ে আনি নিজের রক্তাক্ত হৃৎপিণ্ড। তারপর নিজের হৃৎপিণ্ডটাকে টর্চলাইটের মতো জ্বালিয়ে এগুতে থাকি সামনে...
পালাব না আমি। আমি তাড়াব এবার...
১৯৯৩.০৭.১২ - ০৯.১৪
মন্তব্য
এটিই পুরোগল্পটির মূল বক্তব্য বলে মনে হলো আমার কাছে। হৃদয়ের উত্তাপ যে প্রতিনিয়তই কমছে, যান্ত্রিকতার সাথে সাথে- সারা পৃথিবী জুড়েই, এটা টের পাই প্রতিদিন।
গল্পটি ভালো লাগলো খুব!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
আমাদের হৃদয়ে সিমেন্ট হৃৎপিণ্ডে প্লাস্টিক...
চমতকার!!
এর চেয়ে সুন্দর করে লেখা কঠিন ছিলো।
লীলেন ভাইয়া আপনি তো কোরবানী ঈদের স্বপ্ন রোজার ঈদেই দেখে ফেললেন
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে
মুমু???????????????????????
বহুদিন তোমাকে দেখি না বলে কত্ত কত্ত প্রশ্ন জমা হয়ে আছে........
এইবার ঝটপট তিনটা মুমুয়িত প্রশ্নের উত্তর দাও তো:
কোরবানী কী?
রোজা কী?
স্বপ্ন কীভাবে দেখে?
মাথাটাই আউলাইয়া দিলেন গুরুজী ! আমি বিস্মিত, এই প্লট আপনার মাথায় আইলো কেমনে ! বেশ কিছুদিন ধরে তথাকথিত সুস্থতা আর পাগলামীর মাঝখানের স্বচ্ছ দেয়ালটা ভাঙার একটা প্লট খুঁজছিলাম প্রতিবারের ব্যর্থতায়। এমন অসম্ভব রোমাঞ্চকর প্লটটা আপনার মূল চরিত্রটার মতোই ছিন্নভিন্ন করে দিলো আমাকে !
পাঁচ তারা দাগাইয়াও শান্তি পাইতেছি না ! আরো কিছু দাগাইবার মঞ্চায়.........
তয় আপনি কিভাবে ভাবছেন জানিনা, আমার কাছে আপনার এই বাক্যটা
গোটা লেখার সাথে কেমন একটু মিশ খায়না মিশ খায়না বলে মনে হচ্ছে। একান্তই ব্যক্তিগত মতামত। আর কিছু দিয়ে প্রতিস্থাপন করা যায় কিনা তা জানি না বা ভেবে দেখি নি। ওটা আপনার এখতিয়ার।
আপনার কিছুদিনের অন্তর্ধান যদি এই লেখার জন্মযন্ত্রণা হয়ে থাকে, তাহলে এমন অন্তর্ধান বারবারই চাইবো। নইলে অন্তর্ধানের কোন ক্ষমা নাই।
ধন্যবাদ বা অভিনন্দন সবই অপ্রতুল, তাই ওসবে আর গেলাম না।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
স্যার
এই গল্পটা ৯৩তে লেখা। আজ থেকে ঠিক ষোলো বছর আগে
অন্তর্ধান থেকে এটার জন্ম নয় বরং বর্তমানের লুলাবর্ষের অভাব কাটাতে পুরোনো লেখাটা তুলে দেয়া...
হৃদয়ের উত্তাপ শব্দটা এই গল্পের ভাষার সাথে কিছুটা বেমানান
ঠিক
কিন্তু প্রথম অবস্থায় গল্পটা লেখাছিল একটা পদ্যঢংয়ে
তখন গীতিগল্প নামে একটা ফর্মের প্রাকটিস করছিলাম আমি
এটাও সেই গীতিগল্প সময়ের একটা লেখা
পরে ফর্ম ভেঙে গদ্য করে ফেলি। কিন্তু এখনো এর বাক্য গঠনে অনেক বেশি গীতিময়তা রয়ে গেছে
শব্দেও তাই...
০৩
সুস্থ আর অসুস্থতার সীমারেখা বোধহয় আমাদের পক্ষে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না কোনোদিনও স্যার
লীলেন্দা। আপনার উকিল বাপ ও কি নাজমুলালবাব?
গল্প সম্পর্কে কী বলবো। আপনার গল্পগুলো সবসময়ই অসাধারণ ও ভয়াবহ।
এক পোলার বাপ হইল বইলা কি নজমুল আলবাব সবার বাপ হইতে চায়
হেয় বড়োজোর উকিলশালার পদ পাইলে পাইতে পারে
এর বেশি না
এক্সেলেন্ট লেখা !! সিম্পলি অসাধারণ !!! গল্পটা এতো শৃঙ্খলিত বিশৃঙ্খল করে লিখেছেন...
---------------------------------------------------------------------------
- আমি ভালোবাসি মেঘ। যে মেঘেরা উড়ে যায় এই ওখানে- ওই সেখানে।সত্যি, কী বিস্ময়কর ওই মেঘদল !!!
ওয়াও...........
High shahityo Lilen bhai. Mobile e poira poshaibo na eta.
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
এই বলছেন এক লাইনের পোস্ট চান, আবার দিচ্ছেন ১৬ বছর আগের লেখা...খালি ফাঁকিবাজী?
১৬ বছর আগের লীলেন তো পড়লাম, এখন সমসাময়িক লীলেন দেন দু'চারটা।
তবে ১৬ বছর আগের লীলেন লেখক হিসাবে ভালোই ছিল...
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে
লিখতারি না কিছুই খালি জাবর কাটি বসে
(এক্লাইনের পোস্ট এইডা)
আগের বেশ কয়েকটা না বুঝতে পারা গল্পে লীলেনদার উচ্ছসিত মন্তব্য দেখে বুঝেছিলাম, এমন কিছু আসবে। গল্প পুরা বুঝতে পারলাম কি না বুঝি নাই কিন্তু বিবাহ সন্নিকট বলে যে বায়ু চড়াও হয়েছে সেটা বুঝতে পেরেছি।
ঈদ মুবারাক দাদা।
**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
দাদীজান
এইটা 'আসবে' নয়
আসছিল ১৬ বছর আগে ৯৩তে
চোখের ডাক্তার দেখান
চাচাজান, আফনে যদি বায়ু চড়িত হইয়া এইটা ল্যাখতে হারেন, তো উল্ডা পাল্ডা তারিখও দিবার পারেন।
মায়া হয় লোকটার জন্য। বিয়ে করতে যেয়ে শেষে মাথাটাও গেলো।
**************************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়
ভয়ঙ্কর মাতালাছি... তাই এই বৃহত পোস্টটা এখন পড়লাম না। কালকে পড়বো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
চোখ বুলিয়ে গেলাম। ভালো লাগল, মাহবুব ভাই।
----------------------------------------
বাসে অনেক ঘুম জমে
ভিতরে ভুলে যাই শস্যের চমক
----------------------------------------
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
অসাধারণ ! শুধু ’অসাধারণ’ শব্দটা আসলে যথেষ্ট না। কিন্তু এই মুহুর্তে আর কোনো প্রশংসার শব্দ মাথায আসছে না।
বিনীত প্রশ্ন, আপনি কি ইদানীং আর কোনো গল্প লিখছেন না ? সম্ভব হলে লিখুন না !
গল্প লিখছি
তবে লেখা মানে তো বছরে তিন চারটা বড়োজোর
এবছর তিন চারটার ড্রাফট করেছি
দেখি ফাইনাল করা যায় কি না
যে লোক ১৬ বছর আগে এমন একটা গল্প লিখতে পারেন, তাঁর জন্য, এমন লেখার জন্য আসলে কোনো প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। সে-সবে না গিয়ে, সামান্য পাঠক হিসেবে শুধু মুগ্ধতাটুকু জানিয়ে গেলাম, স্যার।
অত মুগ্ধ হয়ে লাভ নেই স্যার
গল্পটা রিরাইট করব
গ্যাপ ধরিয়ে দিলে কিছু উপকার হবে
গল্প রিরাইট করার বেদনা হয়তো প্রসব বেদনার চেয়েও বেশি। অথবা কে জানে, হয়তো শুধু আমারই এমন মনে হয়।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
চমৎকার আলো-আঁধারী লেখা। বুঝি, আবার যেন বুঝিওনা। তবে ভালো লেগেছে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।
ষাঁড়ের সাথে লড়াইয়ের কারণেই হয়তো মনে হচ্ছিল গল্পের নাম গ্ল্যাডিয়েটর না হয়ে ম্যাটাডর হলে ভালো হত। কেমন একটা ঘোর পুরো লেখাটা জুড়ে। প্রতিটি প্যারা শেষ হলো দাঁড়ি ছাড়া... ভালো লাগলো
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
সহমত! ম্যাটাডর রাখাই যুক্তিযুক্ত হতো!
লড়াইটা কি সত্যিই ষাঁড়ের সাথে না মানুষের সাথে মূলত?
লড়াইটা আসলে যে কার সাথে সেইটাইতো বুঝতে পারি নাই।
মানুষটি ষাঁড় হয়ে এসেছে... অথবা ষাঁড়টি মানুষ হয়েছে... মানুষ সত্ত্বাটির থেকে তার ষাঁড়রূপটি বেশি চোখে পড়েছিল তাই এমন মন্তব্য।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।
নতুন মন্তব্য করুন