শহরে নেমেই আমি ঝুলে থাকা রড বেয়ে ছোটবেলায় ঘুড়ি ওড়ানোর ছাদে উঠে গেলাম। এখানে দাঁড়ালে সুকন্যাকে দেখা যাবে
একটু পরেই সুকন্যা হাত ভরা চুড়ি পরে বের হয়ে গেলো। সে কুশিয়ারা যাচ্ছে। কুশিয়ারায় যাবার সময় সে দুই হাতে চুড়ি পরে যায়...
মুকুল বহুদিন ধরে বলছিল পিকনিকে যাবে। তাকে ফোন করে বললাম সবাইকে নিয়ে চলে আসতে। কুশিয়ারা পার হয়ে আমরা পিকনিকে যাব
পরদিন আমাদের পিকনিক। মোট বারোজন। মুকুল গাড়ি ঠিক করে সবাইকে নিয়ে আসবে। আমি উঠব শেরপুর ব্রিজ থেকে। কিন্তু সকালে ব্রিজে উঠার মুখে দেখি মুকুল আমার পাশে পাশে হাঁটছে। গাড়ি ঠিক করতে গেছে আরেকজন
ব্রিজটা এখন আর রাস্তা হিসেবে ব্যবহার হয় না। ওটা এখন ছোট ছোট মাইক্রো আর টেম্পুর স্ট্যান্ড। এ পারের গাড়ি যাত্রীদের ব্রিজের অর্ধেকে নামিয়ে দেয়। যাত্রীরা হেঁটে গিয়ে আবার ওইপারের গাড়িতে উঠে ব্রিজের অন্যে অর্ধেকের টেম্পু স্ট্যান্ড থেকে
মুকুল আর আমি যখন হাঁটছি তখন সুকন্যা পেছন থেকে দ্রুত আমাদের ক্রস করে ব্রিজের দিকে চলে গেলো। মুকুল আমার দিকে তাকায়- সুকন্যা এখানে?
- হ্যাঁ
- তোর সাথে কথা বলল না কেন?
আমি কিছু বললাম না। কারণ অন্য কারো সামনে আমরা কথা বলি না এটা তো আর অন্য কাউকে বলা যায় না
রবি যে গাড়িটা নিয়ে এলো সেটা আমি পছন্দ করলাম না। আরেকটা আনতে বলে ব্রিজের বাম রেলিংয়ের মাঝামাঝি উঠে বসলাম। এখান থেকে নিচে সুকন্যার বাড়ি দেখা যায়
কুশিয়ারা নদীটাকে গুটিয়ে এনে পুকুর বানিয়েছে সুকন্যা। ব্রিজটা এখন তার পুকুরের উপর। সুরমা নদী থেকে চাঁদনীঘাটের সিঁড়িটা খুলে পাইকারদের বাঁশের ভেলায় ভাসিয়ে নিয়ে এসে বসিয়েছে তার কুশিয়ারা পুকুরে। সুরমাতে যেমন ছিল; নদী পার হয়ে শহরে ঢুকতে বাম পাশে চাঁদনীঘাট। ঠিক তেমনি; ব্রিজ পার হয়ে সুকন্যার বাড়ি ঢুকতে বাম পাশে বসিয়েছে ঘাট। ঘাটটা সুকন্যার বাড়ির উঠান থেকে সটান নেমে গেছে পানিতে
সুকন্যা চাদর মুড়ি দিয়ে গুটিসুটি হয়ে ঘাটে বসে চুড়িতে শব্দ তুলে পানিতে হাত নাড়ছে। তার চারপাশে ঘাই দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার কুশিয়ারার বোয়াল
আগাগোড়া একটা তলোয়ারের মতো সাদা এই কুশিয়ারার বোয়াল। যে রাতকানা মাছের কাঁটা বাছতে পারে না তাকে দেয়া হয় এই এক কাঁটার এক মাছ; কুশিয়ারার বোয়াল। ছোট রান্ধুনির মাছ কুটা শেখার সময় এনে দেয়া হয় আঁশহীন এই বোয়াল। সন্তানের মুখেভাতের অনুষ্ঠানে দু দানা ভাতের সাথে অনিবার্য এই মাছ। শিশুর আদুল বাদুল হাতে নিজের খাবার নিজে তুলে খাওয়ার প্রথম দিনেও থাকে কুশিয়ারার এই এক টুকরা বোয়াল। আর নতুন জামাইয়ের প্লেটের পরিধি পার হয়ে মাছের যে টুকরোটা মসলা দিয়ে পাঞ্জাবি পর্যন্ত ভরিয়ে দেয়; সেও এই কুশিয়ারার বোয়াল; যার পুরো চামড়াটাই চর্বি আর চর্বির নিচে কাঁটাহীন এক কোষ মাংসের শরীর
কিন্তু জমির বিষ- নৌকার ডিজেল ঢুকে যাচ্ছে বোয়ালের মগজে; শরীরে ফোসকা আর অনেকের পেটেই গেঁথে আছে পুরোনো বড়শি...
আরেকটা গাড়ি নিয়ে এলো আরেকজন। এবার সরাসরি ঝামেলা বাঁধালাম- আমি যাব না। তোমরা যাও। এইসব গাড়িতে আমি যাই না
- গাড়িতে কী সমস্যা?
গাড়িতে কী সমস্যা সেটা না বলে সবাইকে গালাগালি করতে করতে আমি হাঁটা শুরু করলাম ব্রিজের ঢালুর দিকে। পেছন থেকে সবাই ডাকছে। এক সময় মুকুলের গলা শুনলাম- থাক। ও না গেলে না যাবে। চলো...
আরো দুয়েকবার আমাকে ডাকাডাকি করে গাড়িটা চলে গেলো। আমি রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছি। বোয়ালের সাথে খেলতে খেলতে আমার দিকে তাকিয়ে একবার মুচকি হাসলো সুকন্যা। আমি হাসিটা দেখলাম না। সে আবার গুনগুন করে গাইতে গাইতে পানিতে হাত নাড়তে লাগলো। বোয়ালগুলো এখান থেকে পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে না। মাঝে মাঝে পিঠের ঝিলিক আর পানির উপরে সুঁড়–গুলো নড়াচড়ার একটা শিরশিরে কণাকণা ঢেউ
আমি ব্রিজ থেকে নেমে আস্তে আস্তে গিয়ে ঘাটে বসলাম। সে আমার দিকে তাকালো না। কিন্তু কাউকে না দেখার ভান করলে মানুষের কানে শিরশির করে। সে আমার দিকে না তাকিযে কানের কাছে চুল ঠিক করল। আমি এবার পানিতে হাত নামিয়ে নাড়তে লাগলাম। সাথে সাথে একটা বড়ো সাইজের বোয়াল লেজ দিয়ে ঠাস করে হাতে একটা বাড়ি মারলো। বাড়ির চোটে ছিটকে ঠাণ্ডা পানি আমাকে প্রায় ভিজিয়ে দিলো। আমি উঠে পানি ঝাড়া শুরু করলে সে মুচকি হেসে তাকাল- মাছেরাও ছোটলোক চেনে
- ছোটলোকের ছোটমাছ। ভালো মানুষ জীবনে দেখেনি এরা
এবার খিলখিল করে হেসে উঠলো সুকন্যা- ছোটমাছ বললে কিন্তু গুঁড়ামাছ বোঝায়। বোয়াল মাছেরা বড়ো মাছের কাতারে পড়ে
- তোমার যুক্তি শুনতে আসিনি আমি। এই শীতের দিনে তোমার মাছ আমাকে পুরা ভিজিয়ে দিলো
- এভাবে হৈচৈ করলে তো ঠাণ্ডা লাগবেই। ঘাটে বসে আস্তে আস্তে পানি ছোঁও। প্রথমে আঙুল তারপর হাতের কব্জি পর্যন্ত। দেখবে ঠাণ্ডা লাগবে না। মাছেরাও তোমাকে চিনে ফেলবে
মুখ আর শরীর থেকে পানি ঝেড়ে আমি আবার বসলাম। একটা আঙুল ছোঁয়ালাম পানিতে। আস্তে আস্তে নাড়তে লাগলাম। একটা মাছ আমার আঙুল ছুঁয়ে গেলো। আস্তে আস্তে হাতের কব্জি পর্যন্ত ডোবালাম। বোয়ালের সুঁড়–গুলো শিরশির করে খেলা করতে শুরু করল আমার হাতের সাথে
- আঙুললগুলো ফাঁকা করে রাখো পানির নিচে
- কেন?
- মাছেরা গোসল করবে
- মানে?
- মাছেদের তো তোমার মতো হাত নেই যে ঘষে ঘষে শরীরের ময়লা পরিষ্কার করবে। আঙুলগুলো ফাঁকা করে রাখলে ওরা তোমার আঙুলের ভেতর ঘষে যেতে যেতে শরীরের ময়লা পরিষ্কার করতে পারবে। মাছেরা আঙুলের ফাঁকে ঢুকলে আঙুলগুলো একটু চেপে দিও
আমি দশটা আঙুল ফাঁকা করে পানির নিচে নাড়তে লাগলাম। সত্যি সত্যি মাছগুলো এবার আঙুলের ফাঁক দিয়ে শরীর ঘষে ঘষে একপাশ থেকে আরেকপাশে বের হয়ে যেতে থাকলো। সুকন্যাকে দেখলাম দুযেকটা মাছ হাতের তালুতে নিয়ে অন্য হাত দিয়ে ঘষে দিচ্ছে। আমিও একটা তুলতে গেলাম কিন্তু লাফ দিয়ে পড়ে গেলো। সুকন্যা আবার হাসলো- তোমার হাতে সেদ্ধমাছের গন্ধ লেগে আছে। তাই তারা তোমাকে পুরোপুরি ভরসা করতে পারে না
সুকন্যা গুনগুন করে গাইছে। আমি হাত নাড়ছি পানিতে। এখন আর শীত লাগছে না। সুকন্যা আমার দিকে তাকালো- আমি পীর হতে চাইলে তুমি আমাকে হেল্প করবে?
- হঠাৎ করে পীর হবার শখ হলো কেন?
- পীর না হলে এই মাছগুলোকে বাঁচাতে পারবো না। নদীটাকে পুকুর বানিয়ে ফেলায় মাছগুলোর পালাবার পথও এখন আর বেশি নেই। মানুষেরা যে কোনোদিন মাছগুলো ডাকাতি করতে পারে
- কিন্তু তুমি পীর হলে মানুষ মাছ চুরি করবে না তোমাকে কে বলল?
- করবে না। আমি মাছগুলোর অন্য একটা অলৌকিক ইতিহাস বানাব। সবাইকে বলব এরা মাছ নয় এরা জলদেবতা
- এই যুগে মানুষ এসব কাহিনী বিশ্বাস করবে না
- করবে। বোস্তামির পুকুরে কচ্ছপ। খানজাহানের কুমির। শাহজালালের গজার- কবুতর আর নিমাত্রার রাজহাঁসকে মানুষ এখনও দেখে রাখে। এখনও মারে না। প্রতিদিন খাবার দেয়। আমার বোয়ালগুলোকেও আমি মানুষের খাদ্য তালিকা থেকে সরিয়ে নিতে চাই। না হলে এরা বাঁচবে না। তুমি আমাকে হেল্প করবে?
ব্রিজের উপর ভটভট শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি মুকুলরা ফিরে এসছে। গাড়ি থেকে নামছে হুড়মুড় করে। সঙ্গে আরো কয়েকজন অচেনা লোক। গাড়ি ছেড়ে সবাই হৈ চৈ করে ঘাটের দিকে চলে এলো। সবার সামনে মুকুল। আমি তাকাতেই বিশাল একটা হাসি দিয়ে মুকুল লাফিয়ে উঠল- ধরিব মৎস্য খাইব সুখে...
কাছে এসে বলল- তোর জন্য পিকনিটাই যখন মাটি হলো তখন চিন্তা করলাম খরচ উঠিয়ে নেয়া দরকার। এজন্য পিকনিকে না গিয়ে মাইমল নিয়ে এলাম। এই বোয়ালগুলো বিক্রি করে খরচ উঠাবো
- না। এগুলো ধরা যাবে না
চিৎকার করে উঠলো সুকন্যা
- মুকুল ধমকে উঠলো- তুমি না বলার কে? এগুলো নদীর মাছ। নদীকে পুকুর বানানোর দায়ে তোমাকে আমি পুলিশে দেবো। ... এই জাল ফেলো
মাইমলরা ততক্ষণে জাল রেডি করে ফেলেছে। মুকুল বলার সাথে সাথে আটটা উড়াল জাল উড়ে গিয়ে পড়লো পানিতে। সাথে সাথে সুকন্যাও ঝাঁপ দিলো পানিতে। ডুব দিয়ে নিজেই গিয়ে ঢুকে গেলো একটা জালের ভেতর। পানিতে দাঁড়িয়ে জালের মুখ খুলে চিৎকার করতে থাকলো- পালা পালা তোরা...
কিন্তু সে একটা জাল কেটে দেয় তো সাতটা জাল তুলে আনে শয়ে শয়ে বোয়াল। সে পানি থেকে উঠে এসে দু হাতে মাছগুলো ধরে ছুঁড়ে মারতে থাকে পানিতে। কিন্তু সেগুলো গিয়ে ধরা পড়ে আরেকটা জালে। সে একবার পানিতে গিয়ে জাল রুখে দেয় তো আরেকবার পাড়ে উঠে এসে খাঁচা উল্টে ফেলে মাছগুলোকে ছেড়ে দেয় পানিতে
মুকুলের সঙ্গের লোকজন এবার ঘাট থেকে বড়ো বড়ো পাথরের চাঁই তুলে নেয় হাতে। সুকন্যা তখন সাঁতরাচ্ছিল মাছগুলোকে লুকানোর জন্য। একসাথে আট দশটা পাথরের চাঁই গিয়ে পড়ে তার উপর। পানি লাল হয়ে উঠে রক্তে। সুকন্যা তখনও সাঁতরাচ্ছে। আরো পাথরের চাঁই পড়ে তার উপর। এবার একটা জাল তাকে আটকে ফেলে পানিতে। সুকন্যা জালটা ছাড়াতে যায়। কিন্তু মাইমলরা জাল বয়ে নেবার মোটা মোটা বাঁশের লাঠি দিয়ে সমানে পিটাতে থাকে জালে আটকানো সুকন্যাকে। সুকন্যা প্রায় নিস্তেজ হয়ে আসে। আস্তে আস্তে তাকে তুলে আনা হয় পাড়ের দিকে। অন্য সাতটা জাল আবার ঝপাঝপ তুলে আনতে থাকে শয়ে শয়ে মাছ। সুকন্যা আমার দিকে তাকায়- তুমি প্লিজ পুকুরের পাড়টা কেটে পুকুরটাকে আবার নদী বানিয়ে দাও। আমার মাছগুলোকে অন্তত পালানোর কিছু জায়গা করে দাও...
সুকন্যার শরীর থেকে তখন অঝোরে রক্ত বের হচ্ছে। এই অবস্থাতেই সে গড়ান দিয়ে মাছের খাঁচার কাছে চলে যায়। শরীরের এক ধাক্কায় পুরো খাঁচাটা পানির মধ্যে ফেলে দিয়ে চিৎকার করে উঠে- তোরা যা। শিংমাছ হয়ে কাদার মধ্যে লুকিয়ে থাক। যা...
সুকন্যার নিস্তেজ দেহটা গড়িয়ে পড়ে পানিতে। মুকুলরা পুরো পুকুর খালি করে মাছগুলো নিয়ে চলে যায়। শুধু সুকন্যাই টিকে থাকে শিংমাছ হয়ে কাদার নিচে লুকিয়ে থাকা বোয়াল হবার জন্য কুশিয়ারায়....
২০০৯.১২.২৩ বুধবার
মন্তব্য
ও লীলেন ভাই, গল্প পড়তে ভালই লেগেছে। কিন্তু কিচ্ছু বুঝি নাই।
অসাধারণ লেখা। অসাধারণ!
এই আপনি কিনা লিখতে চান না! লিখলেও তিন লাইনে লিখতে চান! এভাবে সাহিত্যপিপাসু মানুষকে বঞ্চিত করতে চান!
আপনাকে গারদে পুরে রেখে শর্ত দেওয়া উচিত, যতক্ষণ না এরকম লেখা লিখছেন ততক্ষণ ছাড়া হবে না, চা কফি দেওয়া হবে না, ঝোলভাতও দেওয়া হবে না!
অবশ্য যে গারদে ঢুকেছেন, তার পরে বাকী সব গারদই নস্যি।
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সুন্দর।
স্রেফ অসাধারণ, আর কিছু বলার নেই।
এই গল্পে একশতে নিরানব্বই। আরো নামান।
ভালো লাগল। চমৎকার।
==============================
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
কপিরাইট ভেঙ্গে একটা মন্তব্য করি
০০।
লীলেন্দা আছেন কেমন। খুব ভালো থাকা তো উচিত না
০১।
পড়তে তোফা লাগছে; চমৎকার বলব না, তার চাইতে বেশি । *****
০২।
গল্প বুঝি নাই; বোঝার কথাও না বোধ হয়।
০৩।
শিং মাছ নাইলে বোয়াল মাছের ঝোল দিয়ে গরম ভাত খাইতে মঞ্চায়।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
অনেক দিন পর আপনার একটা মোটামুটি পূর্ণদৈর্ঘ্য গল্প পড়লাম ।
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...
ভালু পেলাম, যদিও পুরোটা বুঝলাম না...
বোকাসোকা মানুষ!
--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিক্ষা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃক্ষমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
একটু দ্বিধায় রয়েছি... এরকম কিছু পড়লে কিছুক্ষণ মৌন থাকাই মনে হয় ভালো!
____________________________
শান্তিও যদি সিংহের মত গর্জায়, তাকে ডরাই।
--নরেশ গুহ
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
সুকন্যার চরিত্রটা একটু কঠিন লাগল। কিন্তু, মূল ব্যাপারটা মাছেদের প্রতি তার ভালোবাসা সেটার প্রকাশে লেখকের পারদর্শীতা অসাধারণ।
কিন্তু, গল্পকথকের নির্লিপ্ততা একটু পোড়ায়।
গল্পটা বেশি জোস।
- মুক্ত বয়ান।
০১।
আমি উঠে পানি ঝাড়া শুরু করলে শুনলাম- মাছেরাও ছোটলোক চেনে
ছোটলোকের ছোটমাছ। ভালো মানুষ জীবনে দেখেনি এরা
এখানে কি "শুনলাম" হবে? নাকি "শোনালাম" বা "বললাম" হবে?
০২.
শেষ বাক্যটা নিয়ে একটা সেকেন্ড থট্ দেবেন। দৃশ্যকল্প বা পরিণতি না বদলে?
০৩.
আপনার কাঙ্খিত ভাষা নির্মাণের অনেক কাছে চলে এসেছেন দেখছি। এভাবে পাওয়া যাবে মনে হয়।
০৪.
পাঁচতারা যথেষ্ঠ নয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
০১
কথাটা সুকন্যার। কথকের নয়। কথক শুনছে। লাইনটা একটু বদলে দিলাম। এবার বোধহয় কনফিউশন থাকবে না
০২
শেষ প্যারাটা আরেকটু এদিক সেদিক করলাম। এবার দেখেন কী অবস্থা
০৩
এরকম ধরিয়ে দিলে ভাষাটা ধরতে বোধহয় বেশি দেরি করতে হবে না স্যার
সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানাবো না। দাবিই জানালাম
০১.
এবার অনেকটাই পরিষ্কার। তবে একই ব্যক্তি একটা মন্তব্য করে নিজের বলা বাক্বিধি নিয়ে সশব্দে হেসে রগড় করাটা একটু কেমন কেমন যেন লাগে।
০২.
আপনাকে বল্লাম কী আর বুঝলেন কী! শেষ বাক্যে আমি মৌলিক পরিবর্তন না করে সেকেন্ড থট্ দিতে অনুরোধ করেছিলাম। আপনি দেখি সেই মৌলিক পরিবর্তনটাই করলেন। এতে তো গল্পের ভাষারীতি মার খেল। দয়া করে এই গল্পটা নিয়ে "সুমন-সুমনা"র মত জিগ্-স পাজল খেলবেন না।
০৩.
যাদের মৌলিক লেখার ক্ষমতা নেই তারাই বোধহয় সমালোচক হবার চেষ্টা করে। আমার মাস্টারীর চেষ্টা সেটা আবার প্রমাণ করল। ভাষা নির্মাণের ক্ষমতা আমার নেই। আমি শুধু বলতে পারি কোনটা ভালো লাগলো, কোনটা ভালো লাগলোনা।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
সেকেন্ড থটের বিষয়টা ঠিক ধরতে পারিনি স্যার
একটু খোলা করে বলেন
এই চেঞ্জটাতে ভাষা একটু মার খেয়েছে। আবার কাজ করব এটাতে
০২
ভাষার দরকার নেই
কোনটা ভালো লাগলো আর কোনটা লাগলো না সেটা হলেই আমার চলবে স্যার
নৃশংস সুন্দর, যথারীতি!
আপ্নে কীসব সাংঘাতিক জিনিসপত্র লেখেন খালি!
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!
___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি
লীলেণ ভাইয়ের এই লেখাটা পড়ে বের হয়ে গেছি। একটু কঠিন, একটু জটিলই লাগলো। এর কিছু সময় পরে আজকে একটা পত্রিকা’র প্রথম পাতার প্রথম হেডিং এর উপর চোখ পড়তেই গল্পটাকে আর অত কঠিন মনে হলো না। নদীকে পুকুরের মতোন করে সমস্ত মাছ তুলে নিয়ে যাচেছ....
"পদ্মায় ‘বাঁধ’ দিয়ে মাছ শিকার
এখানে একটা লাইন যোগ হবে-লাইনটা হলো
কেউ জানেনা জালের নিচে ভারী পাথরের নিচে একটা খিলখিল করে হাসতে জানা সুকন্যা নামের একটা মেয়ের নিস্তেজ দেহটা ঢাকা পড়ে যায়।
মানুষ হিসেবে জানিনা তবে লেখক হিসাবে অনেক দূরদর্শী বারবার তা প্রকাশিত।
ইবরাহিম যুন
নিউজটা আমিও দেখলাম
কিন্তু দুইটার মধ্যে মিলটা এখন খুঁজে পেলাম
ভালো লাগলো।
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা
-----------------------------------------
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
জননীর নাভিমূল ছিঁড়ে উলঙ্গ শিশুর মত
বেরিয়ে এসেছ পথে, স্বাধীনতা, তুমি দীর্ঘজীবি হও।
লীলেন ভাই, আবার আগের ঝলক দেখালেন !
গোর্কীর 'মাল্ভা'(Malva)গল্পের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো ।
গ্রীক মিথওলজি থেকে এইবার ভু-বংলায় আসবার সময় হলো আপনার । নাটক-ফাটক বাদ দিয়ে একটা বড় কাজে হাত দেন । হাত তো তৈরীই ।
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !
তোমার কমেন্ট দেখলেই আমার ভয় লাগে
আতঙ্কিত হয়ে পড়ি প্রত্যাশার বিপরীতে নিজের প্রস্তুতির ক্ষুদ্রতা চিন্তা করে
যারা সেইসব মিথ তৈরি করেছেন তাদের প্রস্তুতি আর মেধার কথা চিন্তা করে অবাক লাগে
লেগে থাকা যদি লেখার কোনো মানদণ্ড হয় তবে হয়তো ওরকম কোনোকিছুর কাছাকাছি চলে যেতে পারবো
লেগে আছি
দেখা যাক
কেমনে যেন ভাল লাগল তয় কিছুই বুঝি নি
দারুণ লাগলো।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
নতুন মন্তব্য করুন