বাপ দাদার আমল থেকেই আমরা পুব পাড়ায় থাকি। পাড়ার ইঁদুর ব্যাঙ তেলাপোকা খাই। সবার সঙ্গে দেখা হলে হাই হ্যালো সালাম দেই। পুরোনোরা দেখা হলে বাবা মায়ের কুশল জিজ্ঞাসা করে; কেউ কেউ বাবার শিকারের প্রসংশা করে; কেউ আমার সাথে বাবার শিকারের মিল খুঁজে পায়; কেউ মাছ ধরার সিজনে বাবা-মাকে তাদের বাড়ি গিয়ে দুচারটা মাছ খেয়ে আসার নিমন্ত্রণ দেয় কিংবা কেউ কেউ একটা মাছ ছুুঁড়ে দিয়ে বাবা মাকে নিয়ে দিতে বলে। আবার মাঝে মাঝে কেউ বাড়িতে এসে খবর দিয়ে যায়- অমুক ড্রেনে অনেকগুলো বড়ো বড়ো ব্যাঙ আছে; সময় করে যেন ওদিকে একবার যাই। কিংবা ধানের গোলাঘরে যেন একবার ঘুরে আসি; অনেকগুলো ধাড়ি ইঁদুর ওখানে এসেছে
পুরো পূব পাড়াতে আমাদের জাতের একটাই ঘর। বাপদাদারও দাদার আমল থেকেই এই এক ঘরই। অন্য পাড়াগুলোতে একসাথে আমাদের অনেক জাতি পরিবার থাকলেও আমরা এখানেই থেকে গেছি। অন্য পাড়ার জাতিরা অনেকবার আমাকেও বলেছে- একা একা থাকার অনেক সমস্যা। চলে আয় এখানে। কিন্তু আমি যাবার কোনো কারণ দেখিনি। বাবারও এক কথা। এটাইতো আমাদের আদিবাস। এটা ছাড়ার দরকার কী? আর মানুষগুলা তো আত্মীয়ের থেকেও বড়ো আত্মাীয়। চোখের সামনেই মানুষগুলা জন্মা নিচ্ছে বড়ো হচ্ছে আবার বুড়ো হচ্ছে। খালি জায়গাগুলোতে বাড়ি উঠছে। সামনে যেতে যেতে কার বাড়ি দেখার জন্য দাঁড়ালে হয়ত বাড়ির মালিক বের হয়ে আসছে- মামা নতুন বাড়ি করে আমি এখানে উঠে এলাম। পুরান বাড়িতে আর সবার জায়গা হচ্ছে না...
দেখা গেলো এটা অমুক বাড়ির মেজো কিংবা বড়ো ছেলে। কেউ পাড়া সম্পর্কে ভাগ্নে কেউ ভাতিজা কেউ ভাই। কাউকে ডাকি নাম ধরে। কাউকে মাসী। কাউকে দাদু...
একদিন সকালে শুনলাম কোন পাড়ায় নাকি আমাদের জাতের সাথে মানুষদের মারামারি লেগেছে। এটা অবশ্য হয়। কোথাও কোথাও আমাদের জাতের পাড়াতে দুয়েক ঘর মানুষ থাকে। আবার কোথাও কোথাও মানুষদের পাড়াতে দুয়েক ঘর আমাদের জাতি থাকে। মারামরি হতেই পারে; হলে পত্রিকা পড়ে হয়ত কেউ আমাকে জানায়- তোর বাবাকে গিয়ে বলিস- ওমুক পাড়ায় তোদের চারটা জাতিভাই মারা গেছে মানুষের হাতে। তোদের কোনো আত্মীয় কুটুম হয় কি না খোঁজ নিতে বলিস। তোর বাবার নানার বাড়িতো ওদিকটাতেই...
আবার কোনোদিন হয়ত শুনলাম কোনো পাড়ায় আমাদের জাতির কামড়ে অনেক মানুষ জখম হয়েছে। তখনও কেউ হয়ত খরবটা দেয়। হয়ত আমাদের জাতকে গালাগালিও করে। কিন্তু সেজন্য আমাদের কেউ কোনাদিন কোনোকিছু করেনি। করবেই বা কেন? আমাদের তো আর কারো সাথে কোনো গ্যাঞ্জাম নেই...
কিন্তু গত এক বছর ধরেই শুনছিলাম পশ্চিম পাড়ায় জাতিরা মানুষদের কামাড়াচ্ছে খুব। পশ্চিম পাড়ায় আমাদের জাতি বেশি। আগে অবশ্য ছিল না। যে সকল জায়গায় জাতির সমস্যা হচ্ছিল তারা সবাই গিয়ে পশ্চিম পাড়ায় আস্তে আস্তে জড়ো হওয়ায় এখন পশ্চিম পাড়াতে মানুষদের থেকে আমাদের জাতির সংখ্যা অনেক বেশি। আবার পশ্চিম পাড়া থেকেও অনেক মানুষ চলে এসেছে পুব পাড়ায় মানুষদের সাথে থাকবে বলে
অন্য পাড়া কিংবা পশ্চিম পাড়াতে গন্ডগোল হলেও আমাদের পাড়া যেমন চলছিল তেমনই চলছে। হঠাৎ একদিন এক চ্যাঙড়া ছেলে আমাকে লেজে ধরে রাস্তা থেকে মাঠে ছুঁড়ে মারল জাহান্নামে যা বলে। আমি তাকে আর কিছু না বলে তার বাবাকে গিয়ে বললাম। তার বাবাকে আমি মামা ডাকি। মামা শুনে আমাকে একটা মাছ খাইয়ে বললেন কিছু মনে না করতে। ছেলেটার একটু মাথা গরম...
এরকম দুয়েকটা ঘটনা অবশ্য গত এক বছর ধরে ঘটছে। আমি রাস্তায় বের হলে অনেকে দেখি গলায় জোর এনে আমাদের জাতিকে গালাগলি করে। করুক। আমার কী? আমি তো আর কাউকে কামড়াইনি
কথাটা বাবাকে বলায় বাবা বললনে এগুলোতে কান না দিতে। কারণ পশ্চিম পাড়ায় যেহেতু মানুষেরা আমাদের জাতির কামড়ে আক্রান্ত হচ্ছে সেই কারণে এ পাড়াতেও আমাদের উপর মানুষের রাগ থাকতে পারে। এটা কিছু না। কেটে যাবে। আর এ পাড়ায় আমাদের কে না চেনে। এ পাড়ায় সবার বসবাসের যত বয়স আমাদের বসবাসের বয়স তার থেকে কোনো অংশে কম নাকি যে আমাদরে কেউ চিনবে না?
কিন্তু কয়েকদিন ধরে বুঝতে পারছিলাম কোথায় যেন অনেক কিছুই বদলে গেছে। রাস্তায় বের হলে সবাই একটু এড়িয়ে চলে। অনেকে গালাগালি করে। আবার মাঝে মাঝে চ্যাঙড়ারা লাথি টাথিও দেয়। পরে অবশ্য সরি বলে। বাবা বলল একটু মানিয়ে চলতে হবে কয়দিন। অন্য পাড়ায় থেমে গেলে আবার সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু প্রতি দিনই অন্য পাড়ার গন্ডগোলের নতুন খবর শুনি। এখন সাধারণত কারো বাড়ির কাছাকাছি যাই না। কারণ একদিন এক বাড়ির গোলাঘরে ইদুর ধরতে গেলে বাড়ির দাদু আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দিলেন। বললেন আর যেন আমাকে তার বাড়ির আশেপাশে না দেখেন। অথচ এই বাড়িতে কিছুদিন আগেও ডেকে নিয়ে আমাকে মাছ দেয়া হয়েছে। তারপর থেকে আমি কারো বাড়িতে যাই না। ড্রেনে থেকেই ব্যাঙটাং ধরে খাই
আজ সকালে বের হতেই সুমন কাকা আমাকে ডাক দিলেন। সুমন কাকা একটু মাতাল টাইপের। সারাদিন দোকানের সামনে বসে বসে ঝিমায়। কেউ পাত্তাটাত্তা দেয় না। কিন্তু তার ডাকটা আমার পছন্দ হলো না
এমন না যে সুমন কাকা আমার নাম জানেন না। তিনি আমাকে নাম ধরেও ডাকতে পারতেন। কিন্তু জাতি ধরে ডাক দেয়ায় আমি তার ডাক না শোনার ভান করে গড়াতে গড়াতে ড্রেনের দিকেই যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি দৌড়ে এসে আমাকে একটা লাথি ঝেড়ে চিৎকার করতে থাকলো- বেয়াদবের বাচ্চা বেয়াদব। ডাকলে কানে যায় না?
- কিন্তু কাকা তুমি আমাকে মারছ কেন?
আমিও এবার দাঁড়িয়ে গেলাম। সঙ্গে সঙ্গে দেখি সুমন কাকা চিৎকার শুরু করল আশেপাশে তাকিয়ে- কে কোথায় আছো তাড়াতাড়ি আসো। ইয়ের বাচ্চা আমার দিকে ফনা তুলছে
- আমি ফনা তুললাম কই? আমি জিজ্ঞেস করলাম...
ধাম করে আরেকটা লাথি পড়লো একপাশ থেকে। আমি যতই বোঝানোর চেষ্টা করি ততই দেখি লাথি লাঠি জুতা পড়ছে আমার উপর। সঙ্গে গালাগালি
এর মধ্যে শুনলাম সুমন কাকার গলা- তাড়াতাড়ি বাইরে আসো সবাই- রায়ট লেগেছে। রায়ট....
লাঠি ঢোল সড়কি বল্লম। মুহূর্তের মধ্যে সবগুলো এসে জড়ো হয়ে গেলো আমার পাশে। পাড়ায় যে অত অস্ত্র আছে আমার ধারণাতেই ছিল না। আমি সাবইকে চিনি। সবার কাছে গিয়ে আমি যত বোঝাতে চেষ্টা করি ততই লাথি গুঁতা কিল এসে পড়ে আমার উপরে
এমন সময় সুমন কাকার গলা শুনলাম আবার- এটা একটা যুদ্ধ। আমাদের পাড়ায় থেকে আমাদের দিকে ফনা তোলে... যুদ্ধ....
- ও কাকা। কিসের যুদ্ধ? আমার একার সাথে তোমরা অতগুলা মানুষ কী যুদ্ধ করবে? আমার কথা শোনো
- কথা শোনার কিছু নেই। পশ্চিম পাড়ায় মানুষদের কামড়ানোর বদলা নেবার যুদ্ধ এটা
ঘ্যাঁচ করে একটা বল্লম কোমরের দিকে আমাকে মাটির সাথে গেঁথে ফেলল। সুমন কাকা সাবধান করে দিলো যাতে এখনই আমাকে কেউ মেরে না ফেলে। যুদ্ধের উৎসব করতে হবে। সবাইকে সাজগোজ করতে হবে
চারপাশে ঢোল বাজতে থাকলো। সুমন কাকা ঘরে গিয়ে মাথায় পালকের একটা মুকুট পরে এলো। সাথে একটা মরচে পড়া তলোয়ার। এগুলা তার বাড়িতে দেখেছি আমি। তার কোন পূর্ব পুরুষ নাকি রাজা ছিল। সে এটা ব্যবহার করতো
সুমন কাকা আমার সামনে এসে তলোয়ার নিয়ে নাচতে শুরু করলো ঢোলের তালে তালে- যুদ্ধ যুদ্ধ যুদ্ধ... আ-বা বা বা বা...। মুখের উপর হাত বাড়ি দিয়ে শব্দ করে নাচতে থাকলো সুমন কাকা
বর্শা বিদ্ধ মাজা থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু আমার কথা কেউ শুনছে বলে মনে হচ্ছে না। আমি সমানে চিৎকার করে যাচ্ছি- ও কাকা। ও মামা। ও দাদু। আমাকে তোমরা মারছো কেন?
এর মধ্যে তারা একটা নিয়ম তৈরি করল। কেউ আমাকে লাঠি দিয়ে এখন শরীরে আঘাত করবে না। লাঠিগুলা আড়াআড়ি করে আমার শরীরের উপর দিয়ে অন্যপাশের মাটিতে মারবে। তাতে মারের শখও মিটবে আবার আমিও সহজে মরবো না...
আমাকে বর্শা দিয়ে গেঁথে শুরু হলো ঢোলের তালে তালে মাইরের উৎসব। নেচে নেচে সবাই লাঠি তলোয়ার চালাচ্ছে আমার উপর দিয়ে চারপাশের মাটিতে। কেউ কেউ লাঠি দিয়ে আমার মাথাটা একটু উঁচু করে চিৎকার করে উঠছে- এই ফনা তুলেছে। ফনা। ছোবল মারতে চায়। মারো মারো মারো...
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলল এই উৎসব। পাড়ার এমন কেউ নেই যে এখানে আসেনি। এমন কেউ নেই যাকে আমি চিনি না। কিন্তু সবাই চুপ। কেউ এসে লাঠি ধরছে। কেউ পাথর। আর কেউ এসে চুপচাপ ফিরে চলে যাচেছ। কিন্তু কেউই আমার চোখের দিকে তাকাচ্ছে না। তাকালেই সম্পর্ক বের হয়ে যাবে...
সুমন কাকা হঠাৎ পরনের জামা খুলে মাথায় বেঁধে ফেলল। প্যান্টের পা গুটিয়ে রান দুইটা বের করে চাপড় মারতে মারতে আবারও মুখে আ আ আ চিৎকার করে উঠলো। সাথে সাথে সবাই আ আ আ...
- কাপড় খোলো। কাপড় খোলো। কাপাড় খোলো সাবই। পোশাক পরে যুদ্ধ হয় না। মদ নিয়ে আসো। মাতাল না হলে যুদ্ধ হয় না। নিয়ে আসো মদ
সঙ্গে সঙ্গে সবাই আ আ আ শব্দ করতে করেত অর্ধ উলঙ্গ হয়ে গেলো মুহূর্তে। একদল ছুটে গিয়ে নিয়ে এলো বালতি বালতি মদ। ঢক ঢক করে গলায় ঢেলে সবাই একসাথে চিৎকার করে উঠল আ আ আ... যুদ্ধ যুদ্ধ যুদ্ধ...
মদে গোসল করে টলতে টলতে সুমন কাকা আমার সামনে হাঁটু গেড়ে তলোয়ার দিয়ে একটা খোঁচা মারলো- তুই একটু রাগ টাগ না দেখালে আমাদের যে রাগ উঠছে না রে বাপ। একটু ফোঁস-ফাস কর
- আমি কোনোদিনও ফোঁসফাস করি না কাকা। তুমি ভালো করেই জানো
- আরে বেটা এখন তো যুদ্ধের সময়। ধরে নে তুইও আমাদের সাথে যুদ্ধ করছিস। একটু ফোঁস কর। তুই না হারলে যে আমরা বিজয় মিছিল করতে পারবো না। আমাদের আনন্দটাই মাটি হয়ে যাবে
- কাকা আমাকে না মেরেও তোমরা বিজয় মিছিল করতে পারো। তোমরা তো এমনিতেই জিতবে
- দূর বেটা তোকে না মেরে বিজয় মিছিল করলে কি আর সেই জোশ আসবে? যুদ্ধ জয়ের জন্য অন্তত একটা না একটা লাশতো লাগাবেই। তোকে মরতেই হবে...
সুমন কাকা তলোয়ার দিয়ে আমার মুখের উপর আরেকটা খোঁচা দিয়ে উঠে দাঁড়ালো আ আ আ...। এবার হত্যা করা হবে। শত্রু হত্যা। জন্মের মতো হত্যা... আ আ আ... এবার বোঝানো হবে মানুষের দিকে ছোবল তোলার ফল। আ আ আ...
- ও কাকা আমি ছোবল তুলিনি
- তুই না তুললে তোর জাত তুলেছে
- আমাকে তোমরা ছেড়ে দাও কাকা
- ছাড়া ছাড়ি নেই। প্রতিশোধ হবে। ফনা তোলার প্রতিশোধ। বিষ ঢালার প্রতিশোধ
- আমার বিষ নাইরে ভাই। আমি কাউকে কামড়াই না। আমাকে ছেড়ে দাও
- আ আ আ...
আবার চিৎকার করে উঠলো সবাই। সুমন কাকা আমার সামনে এলো- দেখি চান্দু তোমার বিষদাঁতটা একটু বের করো তো
- আমার কোনা বিষদাঁত নাই কাকা
- নাই মানে কী? থাকতেই হবে। দেখি তো...
সুমন কাকা তার মরচে ধরা তলোয়ারটা আমার মুখের মধ্যে ঢুকিযে দিলো- বিষদাঁত। বিষদাঁত কীভাবে ভাঙতে হয় এইবার দেখো...
দাঁত নয়। সুমন কাকার তলোয়ারে মোচড়ে টুকরো হয়ে বের হয়ে এলো আমার জিব। এর মধ্যে একজন চিৎকার করে উঠলো- দেখো দেখো। বিষদাঁত ভাঙা হয়েছে কিন্তু লেজ দিয়ে বাড়ি মারতে চায়। মারো...
কেউ একজন কুড়ালের এক কোপে আমার লেজটা আলগা করে নিলো শরীর থেকে। জিব ছাড়া আমি মাথা তুলে সুমন কাকার দিকে তাকালাম- কাকা...
খপাস করে তলোয়ারের উল্টো পিঠ দিয়ে আমার মাথার মধ্যে বাড়ি মারলো সুমন কাকা- কত্ত বড়ো সাহস। এখনও ছোবল মারতে চায়...
মাটিতে গড়াগড়ি দিচ্ছি আমি। লেজ নাই। জিব নাই। মাজা পর্যন্ত বর্শা দিয়ে মাটির সাথে গাঁথা। চারপাশে হাজারো মানুষ। চিৎকার...। গড়াগাড়ি দিতে দিতে নিজের একটা দোষ খোঁজার চেষ্টা করলাম। অন্তত একটা দোষ খুঁজে পেলে এই মাইরগুলোকে নিজের কাছে যুক্তিসংগত করতে পারবো আমি। আমি নিজের একট দোষ খুঁজে পেলাম। বোকামির দোষ। বোকার মতো একা একা মানুষদের মাঝে থাকার সাহস করা একটা দোষ। মারাত্মক দোষ। চারপাশে সুমন কাকারা চিৎকার করে অস্ত্রে শব্দ করে নাচছে। তাদের সাথে গলা মিলিয়ে জিব ছাড়া মুখে নিজেও চিৎকার করে নিজেকে দোষ দিতে থাকলাম- ঢোঁড়ার বাচ্চা ঢোঁড়া। বিষ নাই তবু তোর সাপ হবার শখ ছিল কেন?
আমার চিৎকারে সুমন কাকা আরো জোরে চিৎকার দিয়ে উঠলো অন্ধকারে- এখনও কামড়াতে চায়। মারো....
আ বা-বা বা বা
সম্মিলিত একটা চিৎকারের ভেতর সুমন কাকা তার মরচে পড়া তলোয়ারটা মাথার উপরে তুলে এক ঝটকায় নামিয়ে আনলো আমার ঘাড়ের উপর- খপাৎ
২০০৯.১২.২৩ বুধবার
মন্তব্য
এই অংশটুকুতে একটু বিসদৃশ লেগেছে। সাপকে নামধরে ডাকা!!! শেষদিকে ঢোঁড়া সাপের কথা আসার আগে আমি বিড়াল অথবা কুকুরের কথা ভাবছিলাম।
---- মনজুর এলাহী ----
যে সাপ পাড়ার লোকজনকে দাদু মামা কাকা ভাই বলে ডাকে আর যে সাপের সাথে দেখা হলে লোকজন তার বাপ মায়ের কুশল জিজ্ঞেস করে তার তো একটা নাম থাকতেই পারে। তাই না?
০২
এই প্যারার ফ্রেজিংটা আমারও খুব একটা পছন্দ হয়নি
আরো কাজ করব এখানে
গল্পটা দারুণ লাগলো লীলেনদা
------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
- আপনি অনেক কিছু নিয়েই এক্সপেরিমেন্ট করেন।
ভালো লাগলো গল্পটা।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
গল্পটা বেশ চমৎকার হয়েছে বস্ , সাথে ভয়ও লাগলো।
আমি যদি ভুল না হই, এইটা নিশ্চয়ই আপনার স্বপ্নে দেখা। আর তাই যদি হয়, তাহলে আপনার "স্বপ্নের সমীকরণ" সফল হয়েছে (স্বপ্নকে বর্ণনা করার একটা স্টাইল)।
( আমার ভুলও হতে পারে, ক্ষমা করবেন)
- বুদ্ধু
স্বপ্ন দেখা নয়
এটা স্বপ্ন বর্ণনার একটা প্রচেষ্টা
বড়ই প্রতীকি।
________________________________
তবু ধুলোর সাথে মিশে যাওয়া মানা
সহমত!
--------------------------------------------------
"সুন্দরের হাত থেকে ভিক্ষা নিতে বসেছে হৃদয়/
নদীতীরে, বৃক্ষমূলে, হেমন্তের পাতাঝরা ঘাসে..."
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
শেষের দিকে এসে খারাপই লাগলো......
আপনি সত্যি যাদুকর লেখক।এই লেখাটাকে অল্প এডিট করে কিছু জিনিস যোগ আর বিয়োগ করলে অসাধারণ একটা সৃষ্টি দাঁড়াবে।
রামচন্দ্রের লঙ্কাধ্বংসের মহাযজ্ঞে নিরপরাধ অনেক রাক্ষস ছেলেমেয়ে তো মরেছিলোই। অবশ্য, রামের দিক থেকে দেখলে-রাক্ষস হয়ে জন্মানোই তো মহা অপরাধ! জন্মেজয়ের সর্পযজ্ঞ দেখুন, অপরাধ করলো তক্ষক, সে তো গিয়ে বড়লোক বড়দা ইন্দ্রের চাদরের তলায় সেঁধিয়ে রইলো-আগুনে পুড়ে মরলো নিরপরাধ তরুণ নাগেরা।
এ গল্প চিরকালের। কোনোদিন কি শেষ হবে?
-----------------------------------------------
কোন্ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
লেখাটাকে করব আরো
কিন্তু আমার টার্গেট ছিল মেজরিটি মাইনোরিটি ইস্যুটা নিয়ে আসতে এই গল্পে
সম্ভবত বিষয়টা খুব একটা পরিষ্কার হয়নি
দেখি এটাকে আর কী করা যায়
সে আশাতেই রইলাম।
আজ কী মনে করে 'বৈরাত' পড়ছিলাম সন্ধ্যায়।
না দাদা,বিষয়টা শুরুর চিকে বোঝা না গেলেও পরে ঠিকই বোঝা যাচ্ছিল। আর রূপকের আশ্রয়ে লিখা গল্পে প্রথমে না বোঝাটাই তো স্বাভাবিক! ভীষণ ভাল লেগেছে। কবে যে আমরা মানুষ হব!?
'জাত গেল জাত গেল বলে একি আজব কারখানা......'
কিছু মনে করবেন না স্যার, এই গল্পের ভাষা আপনার আগের গল্পগুলোর তুলনায় কিছু না। কাহিনী, বর্ণনা, শব্দচয়ন কোন কিছুই লীলেনীয় মনে হয় নি। এত অস্থির হচ্ছেন কেন? গল্প নিয়ে, ভাষা নিয়ে এক্সপেরিমেন্টগুলো খেরোখাতায় সারুন। পাঠকের ওপিনিয়ন জানার জন্য আরেকটু ঘষা-মাজা করা জিনিষ দিন।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
জ্বি স্যার
চমৎকার চমৎকার এবং চমৎকার
আপনার লেখা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।
গল্পটা স্বপ্নে দেখা বা স্বপ্ন বর্ণনার চেষ্টা অথবা প্রতীকি কিছু যাই হোক না কেন পাঠক হিসেবে হয়ত নিজের মতো এর কোন ব্যাখ্যা দাঁড় করাই।
তবে আপনি যে থিম টার মধ্যে গল্প বলার চেষ্টা করেন বা যেভাবে বলেন সেটা কেমন যেন বুকের ভেতরটা অসাড় করে ফেলে। অনেকক্ষণ ঝিম ধরে থাকতে হয়।
এটা হতে পারে দুর্বলচিত্তের পাঠক হিসেবে আমার সীমাবদ্ধতা।
আপনি কি এরকম থিম নির্বাচন বা বলার ভঙ্গী দিয়ে পাঠকদের একরকম ঝাঁকুনি দিতে চান?নাকি এটা নিছকই গল্প বলার ষ্টাইল?
হাজার হাজার গল্পের ভেতর নিজে একটা নতুন গল্প লেখার চেষ্টার ভেতর তো আপনাতেই পাঠককে ছুঁয়ে যাবার একটা উদ্দেশ্য থাকে
আমার কাছে তো দুর্দান্ত লাগলো!
=======================
যদি আমি চলে যাই নক্ষত্রের পারে —
জানি আমি, তুমি আর আসিবে না খুঁজিতে আমারে!
=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
আমার ভাল লেগেছে।
যাব্ববা, এতো দেখি হিরামন আর আভাতারের মাঝামাঝি কিছু।
ভাল লেগেছে।
লীলেন ভাই
এ গল্পটা মনে হলো খুব বড় কিছু করার সংকল্প করে
দায়সারা কিছু দিয়ে কাজ সেরে ফেলা
আরেকটু দেখুননা মাথা ঠান্ডা করে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস
গল্পটা পড়ে ভালো লেগেছে। একটু সাদামাটা, কিন্তু ভালো।
ভালো লাগলো গল্পের বুনন। ধন্যবাদ।
শেখ নজরুল
শেখ নজরুল
ভালো লাগল!
==============================
ঢাকার মৌন ঘ্রাণে বকুলফুলের নাভি
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
==============================
হা-তে এ-ক প্র-স্থ জো-ছ-না পা-ড়ে-র ঘ্রা-ণ
খোমাখাতা
মর্মান্তিক
----------------------
শান্ত নদী
নতুন মন্তব্য করুন