শামসুর রাহমানকে আধিপত্র

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: বিষ্যুদ, ০২/০৯/২০১০ - ১:৩২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কবিরা দেউলিয়া হলে কবিতা বিষয়ক কবিতা লেখে; হে কাব্য সুন্দরী তোমারে ভাইবা মুই হস্তমৈথুন করি’ কিংবা একটি কবিতা’ শিরোনামে হাবিজাবি কিছু ব্যক্তিগত বাক্য রচনা করে সংকলনের পাতায় কবি হিসেবে হাজিরা দেয়। কারণ কবিদের মধ্যে সাবেক কিংবা অবসরপ্রাপ্ত হবার বিধান না থাকায় কেউ সর্বশেষ কবিতা পঞ্চাশ বছর আগে লিখলেও মঞ্চের মধ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ সক্রিয় কবি অধিকার নিয়ে অবলীলায় দাঁত কেলিয়ে উঠে বসে যায়...

কবিতা কি বাংলাভাষাকে ছেড়ে চলে গেছে? নাকি গ্রামার মুখস্থ করা বাক্যবিশারদরাই এখন কবিতার পদাধিকারী?

এই দেশে প্রতি সপ্তায় পঞ্চাশ ফর্মার বেশি সাহিত্য ছাপা হয় বাণিজ্যিক পত্রিকায়; দুইশোর বেশি কবিতা খায় কর্পোরেট নিউজের ভোক্তারা; শ’খানেক মৌলিক নিরীক্ষার কবিতা নিয়ে প্রতি সপ্তায় বাজারে ম্যাগাজিন আসে আরো গোটা দশেক ফুল হাফ লিটল মিনি ম্যাগাজিন আর ফেব্রুয়ারি বইমেলায় তো যার সাথে ধাক্কা লাগে তার অর্ধেক কবি। সংখ্যাতত্ত্বের গবেষণার যুগে পৃথিবীতে এটা একটা হৈ হৈ কাণ্ড। কিন্তু অন্তরে কেন আর দাগ কাটে না বলেন তো শামসুর রাহমান?

বাংলা সাহিত্যে কবিতার ভেতরে কবিতা শব্দটার একমাত্র সফল ব্যবহার আপনিই করেছেন। যেমন ইচ্ছা লেখার আমার কবিতার খাতা। যারা জীবনে কোনো কবির পাগলামির শিকার হয়নি তাদের পক্ষে স্বাধীনতার অতবড়ো ব্যাপ্তি বোঝা সম্ভব কি না আমার সন্দেহ আছে। কিন্তু আপনি বলেন তো; মাত্র কয়েকটা বছরে আপনি অতটা বিস্মৃতি হয়ে গেলেন কেন? অথচ আপনার উপস্থিতি আমাদের কবিতার প্রতি ভক্তিরই প্রকাশ ছিল দীর্ঘ কয়েক দশক। নাকি আপনার ডাকনামটাই ছিল কবি কিন্তু আপনি মূলত ছিলেন একটা ব্যক্তি আইকন। একটা সামাজিক প্রতীক? উপস্থিত থাকলে যার মূল্য সিজনাল ফলের মতো অনেক বেশি কিন্তু অনুপস্থিত হলে তামাদি খাতার হিসাব। ঠিক যেমন কবি সুফিয়া কামাল। সর্বশেষ কত দশক আগে তিনি কবিতার খাতা খুলেছিলেন যিনি নিজেও ভুলে গিয়েছিলেন; তাকেও কিন্তু আমরা নামের সাথে কবি ছাড়া অন্য কিছু বলার কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবতাম না। অথচ আপনি তো ভালো করেই জানেন তিনি কোনো কালেও কবি ছিলে না। ছিলেন আইয়ুব খানের নারী কোটার মুসলমান পদ্য রচয়িতা। কিন্তু তিনি বাঙালির কাছে হয়ে উঠেন এক সাংস্কৃতিক প্রতীক। অথচ তারও ডাকনাম কবি...

আপনি এবং আপনার ভক্তদের জ্বলা কইলজায় জ্বালা তুলে বলি আমার আগের ধারণাই সম্ভবত ঠিক। সম্ভবত জীবনানন্দের পরে বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি আল মাহমুদ। আমার কোনো গবেষণা নেই। কিন্তু একটা পর্যবেক্ষণ আছে। যেখানে শামসুর রাহমানের বক্তৃতার অনুষ্ঠানে গিয়ে বেশিরভাগ মানুষ জেনেছে তার ডাক নাম কবি। সেখানে কিন্তু কবিতার লাইন কইলজায় মোচড় দেবার পরে জিজ্ঞেস করে যে নাম জানা হয় সে নামগুলোর মধ্যে থাকেন জীবনানন্দ আল মাহমুদ এমনকি আবুল হাসান এবং কোথাও কোথাও নির্মলেন্দু গুণ। কিন্তু আপনি কেন নেই?

ইদের পোশাকের মতো অনুষ্ঠানে ধুলোবালি ঝেড়ে আপনার কবিতার বই আমরা বের করে আনি নজরুল কিংবা সুকান্তের মতো আনুষ্ঠানিক কবিদের সাথে। কিংবা শ্রেফ যদি বলি যেহেতু বাঙালি জাতি স্বাধীনতা আর বিজয় দিবস উদযাপন বাদ দেবে না কোনোকালে সেহেতু একটা কবিতাই শুধু বছরে একবার আপনার নামটাকে সামনে আনবে আমাদের। কিন্তু আপনার তো হাজারে হাজারে কবিতা। কিন্তু অন্য কোনো লাইন কেন মনে আসে না আমার?

আপনার সম্পর্কে আমার আগের ধারণাটাতেই বোধহয় আমি এখনও অবস্থান করি। জাতি রাষ্ট্র বাংলাদেশের আধা-নাগরিক রূপটা আপনি ধরতে পেরেছিলেন। যে রাষ্ট্রের লোকগুলো পাগলা কুত্তার মতো শহরের দিকে ছুটে এসে এক অদ্ভুত ভাষা খিস্তি খেউড় করে প্রতিদিন ট্রাফিক জ্যাম বাঁধায়। কিন্তু ইদে পূজায় বাসে ট্রেনে ট্রাকে ঝুলে ঠিক ঠিক ফিরে যায় গ্রামে। যেখানে তার হয়তো কিছুই নেই। এই দেশে এখনও সাপ্তাহিক বন্ধের আগের কিংবা পরের দিন হরতাল ডাকা হয় মানুষের এই সাইকোলজি বুঝে। বিষুদ কিংবা রোববারে যে কেউ হরতাল ডাকলে গ্রামমুখী মানুষের শহর ছেড়ে যাওয়ায় অটোমেটিক হরতাল হয়ে যায়...

আপনি তাদেরকে চিনতেন বলে আমি মনে করতাম। কিন্তু আপনি কি এই মানুষগুলার নগরবাসের সাম্প্রতিকতা কিংবা ক্ষণস্থায়িত্বরে ধরন বুঝেছিলেন? বুঝেছিলেন এখনও যে কোনো ফরম পূরণে এদেশের মানুষকে বর্তমান ঠিকানার সাথে স্থায়ী আরেকটা ঠিকানা লিখতে হয়? এখনও যে কারো সাথে পরিচয় হলে আমরা বাসা কই’র সাথে আরেকটা অনিবার্য প্রশ্ন যোগ করি- বাড়ি কই?

বাড়ি মানে গ্রাম। বাড়ি মানে স্থায়ী ঠিকানা। বাড়ি কোনোভাবেই শহর হতে পারে না আমরা এখনও বিশ্বাস করি। আর সে কারণেই ইদের পূজার ছুটিতে আপনি ফাঁকা শহরে পড়ে থাকলেন অকেশনাল কবি হয়ে একেবারে একা...

২০১০.০৭.০৫ সোমবার


মন্তব্য

আব্দুর রহমান এর ছবি

পুরোটা বুঝিনি তবু ভালো লাগলো। ভালো বাংলা পড়লে আমি অন্যরকম এক সুখ পাই, বহুদিন বাদে সেই সুখটুকু পেলাম।

------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল

------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল

নীল রোদ্দুর এর ছবি

শামসুর রাহমান বিস্মৃত!
জানতাম না।

যে দুজনের কবিতার বই আমি চুল আঁচড়াবার চিরুনির মত হাতের কাছে রাখি, তাদের একজন শামসুর রাহমান, অপরজন জীবনানন্দ দাশ। উনারা আমার রোজকার ঘুমের মত, ক্ষুধা পেলে খাবারের মত প্রতিবেলার সংগী। তাই বুঝেই উঠতে পারিনি, এরাও বিস্মৃত হতে পারে। মন খারাপ
--------------------------------------------------------
শিশির ভেজা ঘাষ, ভোর বেলা যার ডগায় জমে থাকে একবিন্দু মুক্তো, হাসে মুক্তোটা, ঠিক শিশুর মত করে...

-----------------------------------------------------------------------------
বুকের ভেতর কিছু পাথর থাকা ভালো- ধ্বনি দিলে প্রতিধ্বনি পাওয়া যায়

তাসনীম এর ছবি

আমার লেখাটা পড়ে তাই মনে হয়েছে, তবে নিশ্চিত নই। লেখকের মন্তব্যের অপেক্ষায় রইলাম।

শামসুর রাহমান এখনো দারুণ প্রতাপের সাথেই টিকে আছেন, আমার কাছে এবং অনেকের কাছেই। এই লেখাটা পড়ে আমিও ঠিক বুঝলাম না কেন ওনাকে বিস্মৃত বলা হচ্ছে।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

জাহামজেদ এর ছবি

বাড়ি মানে গ্রাম। বাড়ি মানে স্থায়ী ঠিকানা। বাড়ি কোনোভাবেই শহর হতে পারে না আমরা এখনও বিশ্বাস করি। আর সে কারণেই ইদের পূজার ছুটিতে আপনি ফাঁকা শহরে পড়ে থাকলেন অকেশনাল কবি হয়ে একেবারে একা...

কিন্তু শহুরে কবিতাগুলো তো ঠিকই টানে, বাড়িতে যাননি বলে কি আমরা তাকে সেলফে তুলে রাখবো ?

____________________________
বৃষ্টির মধ্যে রোদ হয়ে তুই
পাতার গায়ে নাচ
কষ্টের রঙে সুখ হয়ে তুই
আমার মাঝে বাঁচ...

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

সাবিহ ওমর এর ছবি

রেকমেন্ডেশন লেটার দুই ধরণের হয়। এক ধরণের লেটার খুবই ঠান্ডা ধরণের, ইমপার্সোনাল। রহিমুল্লাহ কেটে সেখানে করিমুল্লাহ বসিয়ে দিলেও মূল বক্তব্যের কোন হেরফের হয় না। আরেক ধরণের লেটার হয় স্ট্রিক্টলি করিমুল্লাহ'র জন্য লেখা, সেখানে সলিমুল্লাহ বা কলিমুল্লাহ বসালেই হয়ে যায় না, কারণ তাতে এমন কিছু আছে যা করিমুল্লাহ'র সাথে রেকমেন্ডারের ঘনিষ্ঠ জানাশোনার আভাস দেয়। কবিতাও সেরকম দুই ধরণের হয়, এক ধরণের কবিতা আছে যেগুলা যেকোন খানের, যেকোন কালের, যেকোন লোকের হতে পারে। আর এক ধরণের কবিতায় এমনভাবে দেশ আর সময়ের ছাপ মারা থাকে, সেটাকে আর সেই দেশ আর সেই সময় থেকে আলাদা করা যায় না। শামসু কবির কবিতা দ্বিতীয় ধরণের। এগুলো আমাদের দেশের কবিতা, আমাদের সময়ের বাংলাদেশের কবিতা। যেন আমাদের কাছ থেকে পৃথিবীর মানুষের কাছে মেসেজ।

আমার মনে হয় এই ধরণের কবিতা লিখা কঠিন। সময়ের পালস বোঝা লাগে। যখন সবকিছু ঘুলা ঘুলা, তার মধ্যে বসে দিশা ঠিক করা লাগে। কত বড় বড় দিগগজ এইসব গিয়াঞ্জামে পড়ে আউলা-ঝাউলা হয়ে গেল কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার, শামসু কবি একবারের তরেও পা হড়কালো না!

লিলুয়া বাতাসে গা জুড়ানো কবিতা লেখা বরং এর থেকে সোজা লাগে আমার কাছে।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

'কবিতার লাইন কইলজায় মোচড় দেবার' বিবেচনায় শামসুর রাহমান তেমন গুরুত্বপূর্ণ কবি নয় সত্য, তবু সত্য শামসুর রাহমান বাংলাভাষী মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই কারনে যে তিনি তার কবিতাসহ মানুষের পাশে হেঁটেছেন জরুরী সময়ে। ঠিক একই কারনে মুলতঃ পদ্যকার কাজী নজরুলকে ও বাংলাভাষী মানুষেরা ভালোবেসে কবি হিসেবে গ্রহন করেছে।

যদি আমার বুঝতে ভুল না হয় ''কবিতার লাইন কইলজায় মোচড় দেবার' দক্ষতার বিবেচনায় তুমি বলছো-

সম্ভবত জীবনানন্দের পরে বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ কবি আল মাহমুদ।

আরো স্পষ্ট করে বলছো-
কবিতার লাইন কইলজায় মোচড় দেবার পরে জিজ্ঞেস করে যে নাম জানা হয় সে নামগুলোর মধ্যে থাকেন জীবনানন্দ আল মাহমুদ এমনকি আবুল হাসান এবং কোথাও কোথাও নির্মলেন্দু গুণ।

তাই?
অপরাজনীতি না হয় বাদই দিলাম কিন্তু কবি হিসেবে আলমাহমুদকে এতো গুরুত্ব দিচ্ছো কিসের ভিত্তিতে? জীবনানন্দের পর পরই? এমনকি আবুল হাসানের ও আগে?
ঐতো- 'সোনার দিনার নেই, দেনমোহর চেয়োনা হরিনী', ' আমাদের ধর্ম হোক ফসলের সুষম বন্টন', 'কবিতা তো মক্তবের মেয়ে, চুল খোলা আয়েশা আক্তার' এর বেশী তেমন আর কইলজায় মোচড় কই?

এর চেয়ে ঢের বেশী মোচড় তো আবুল হাসান একাই দিতে জানে। এমনকি হেলাল হাফিজের কতগুলো পংক্তি। সৈয়দ হকের অনেকগুলো শক্তিশালী কবিতা।

কবিতার বিচারে আল-মাহমুদ কি আসলেই এতোটা গুরুত্বপূর্ণ?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

জাহামজেদ এর ছবি

কইলজায় মোচড় দেওয়ার বিবেচনায় আল মাহমুদের চেয়ে হেলাল হাফিজ আর আবুল হাসানকে আরো কাছের মনে হয়।

হেলাল হাফিজের ‌এখন যৌবন যারা মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ট সময়/ এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ট সময় অথবা প্রত্যাবর্তনের পথে কিছু কস্টলি অতীত থাকে, এই পঙতিগুলো মানুষকে খুব সহজে টানে।

আবুল হাসানের পাখি হয়ে যায় এ প্রাণ ঐ কুহেলী মাঠের প্রান্তরে হে দেবদূত !
বলতে হয় না, বলতে হয় না, এমনিতেই কইলজায় মোচড় দেয়।

আল মাহমুদ কি করে জীবনানন্দের পর শ্রেষ্ঠ কবি হয়ে যান ?

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

তিথীডোর এর ছবি

"কবিতার বিচারে আল-মাহমুদ কি আসলেই এতোটা গুরুত্বপূর্ণ?
এর চেয়ে ঢের বেশী মোচড় তো আবুল হাসান একাই দিতে জানে। এমনকি হেলাল হাফিজের কতগুলো পংক্তি...''

তীব্র সহমত।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

রাহমান নাগরিক কবি। নাগরিক হয়ে নাগরিক কবিতা লিখেছেন - এখানেই তার বিরল সততা।
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

রণদীপম বসু এর ছবি

আসেন আগে কয়েকটা কবিতা পড়ে নেই !

হায় চিল / জীবনানন্দ দাশ

কখনো আমার মাকে / শামসুর রাহমান

প্রত্যাবর্তনের লজ্জা / আল মাহমুদ

তোমার চিবুক ছোঁবো, কালিমা ছোঁবো না / আবুল হাসান

ওটা কিছু নয় / নির্মলেন্দু গুণ

ফেরীঅলা / হেলাল হাফিজ

আমরা কি কবি না কি কাব্যের বিচার করবো ? কবির সাথে জড়িয়ে থাকে অসংখ্য সীমাবদ্ধতায় গড়া একজন ব্যক্তিও। কাব্যের সাথে কেবল শিল্প।
আমরা কোনটা চাইবো ?

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

রণদা, আপনার "শব্দছেঁড়া কবিতারা" সাইটটি দেখলাম। এত এত প্রিয় কবিতা একসাথে দেখে মাথা খারাপ হবার দশা। আগেও দেখতাম, কিন্তু এটা যে আপনার করা তা আগে খেয়াল করিনি। অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ জানবেন, এত কষ্ট করে কবিতাদের একসাথে গাঁথার জন্য।

রোমেল চৌধুরী [অতিথি] এর ছবি

"পথ ভাবে আমি দেব
রথ ভাবে আমি
মূর্তি ভাবে আমি দেব
হাসে অন্তর্যামী!"

অতিথি লেখক এর ছবি

শামসুর রাহমান সম্ভবত আমাদের জীবনবোধের সবচেয়ে কাছের কবি। আমাদের বর্তমান আটপৌরে নাগরিক জীবনের সাথে ফেলে আসা স্মৃতিময় গ্রাম, কৈশোরের স্বপ্নীল অঞ্জন শামসুর রাহমান ই একেছেন সবচেয়ে সফল ভাবে।
আমি শামসুর রাহমান কে বলি "বাস্তবতার স্বপ্নের কবি।"
লেখকের বিস্মৃতির কারণটা বুঝা গেল না।
...........................
শ্যামল

পলাশ দত্ত এর ছবি

জীবনানন্দ দাশের পর আল মাহমুদ? মাঝখানে নীরেন্দ্রনাথ, সুভাষ, শঙ্খ, শক্তি- এদের কারো নাম আসে না?

আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে লীলেন ভাইয়ের বক্তব্যটা মেলে কবিতার চর্চাকারীদের সঙ্গে। কিন্তু এমনি পাঠক বলে যে জিনিসটা তারা? কথা হবে পরে।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

অতিথি লেখক এর ছবি

মাহবুব লীলেন ভাইয়ের মূলবক্তব্য ঠিক ধরতে পারলাম না। আর তার উপরে আমার কাব্যভীতি। ইদানিং খুব জ্বালায় আছি ফেসবুকের কবিকূলের অত্যাচারে। আমি তাদের বন্ধু না কিন্তু আমার কিছু বন্ধু আছে যারা ওই কবিগণের বন্ধু। ফলে ওদের ট্যাগ করা হলে সেটা আমার পেজে লাইভ ফিড হয়ে যায়। বিশেষ করে কবি এনাম মাহিন, বাব্বা, লিখতে পারেন বটে ............ । 'গ্রীনলাইন ভলবো বাস', ইত্যাদি, ইত্যাদি। মহাকবি একেকজন!

হাসান-রাহমান মরে বেঁচেছেন।

রাতঃস্মরণীয়

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এখানের অনেকগুলো মত সম্পর্কে কিছুটা অন্যমত থাকলেও সবগুলো মতেই আমার মনে হচ্ছে যুক্তির খুঁটিটা বেশ কঠিন

বুঝতে পারছিলাম না আমার ধারণার স্ট্যান্ডটা কোথায়
পলাশের মন্তব্যটা পড়ে আমার ধারণাটা নিজের কাছেই বেশ পরিষ্কার হয়ে উঠল

আর দুর্ভাগ্যজনকভাবে লীলেন ভাইয়ের বক্তব্যটা মেলে কবিতার চর্চাকারীদের সঙ্গে।

এখন আমারও খেয়াল হচ্ছে কবিতাকর্মী ছাড়া কবিতা নিয়ে কারো সাথে বোধহয় আমার কোনো কথা হয়নি কোনোদিন

হয়ত সম্পূর্ণ পাঠক যারা তারা অন্য রকম ভাবেন

কিন্তু আমার আশপাশে তাকালে কেন যেন মনে হয় মারা যাবার পরেই শামসুর রাহমান তার অনেকটাই হারিয়ে ফেলেছেন...

০২

কবি এবং ব্যক্তি এক না আলাদা সেই বিতর্কের দরজা সম্পূর্ণ খোলা রেখেই কবি হিসেবে আল মাহমুদকে আমি অনেক উপরে স্থান দেই
ব্যক্তি হিসেবে রাখি ঘৃণার খাতায়

০৩
মন্তব্যবের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।