প্রায় দশ বছর পর কুষ্টিয়া গেলাম। শুকনা গড়াই নদী হেঁটে পার হয়ে নসিমনে চড়ে প্রথমেই শিলাইদহ ঠাকুরবাড়ি। ঠাকুরবাড়িতে কেন যেন যেতে যত ভাল্লাগে যাবার পরে আর তত ভাল্লাগে না। উঠানে ঢোকার পর তাও যতটুকু ভালোলাগার রেশ থাকে; বাড়ির ভেতরে ঢুকলেই তা একেবারে শূন্যের কোঠায় এসে ঠেকে। বহুবারই তো গেলাম। কিন্তু সেই একই অনুভূতি; অন্ধকার ঘরে রবীন্দ্রনাথের কয়েকটা ছবি আর ঘুণে ধরা ঠাকুরবাড়ির পুরোনো কিছু ফার্নিচার...
বাড়িটাকে কি অন্যভাবে সাজানো যায় না? রবীন্দ্রনাথের পারিবারিক বাড়ি বলেই কি আমরা শুধু পারিবারিক পুরোনো খাটপালঙ্ক চেয়ার আর সব জায়গায় সহজলভ্য কয়েকটা ছবি দেখব? ওখানে সম্পূর্ণ রবীন্দ্রনাথকে দেখানোর কোনো ব্যবস্থা করা যায় না? প্রতিদিন ওখানে যাওয়া হাজার হাজার স্কুলশিশু আর দর্শকদের জন্য ওটাকে কি একটা রবীন্দ্রকেন্দ্র বানানো যায় না?
কে জানে। আমি জানি না। জাদুঘরের নিয়ম নীতি আমার জানা নেই। তার চেয়ে বাউন্ডারির বাইরে পুকুরপাড়ের বকুলতলাটা আমার বরং বেশি ভাল্লাগে। কিন্তু বাড়ি থেকে বের হবার জন্য গেটের দিকে আগালেই উঠানের ডান কোনায় সামনের আর ডানের দেয়ালের বেশ খানিকটা অংশ জুড়ে একটা মঞ্চ আর একটা অফিসঘর। অফিসঘরটা জুড়ে রেখেছে উঠানের বেশ কিছু অংশ আর দুই ফুট উঁচু মঞ্চটা জুড়ে রেখেছে আড়াইফুট উঁচু বাউন্ডারির দুই কোনার বেশ কিছু জায়গা। এই অফিসঘরে বসে ঠাকুরবাড়ির দেখাশোনা করেন সরকারি কর্তাবাবুরা। আর মঞ্চটা?
ওটা হু.মু এরশাদ সাহেবের। তিনি বাংলাদেশে বহু কিছু করার অংশ হিসেবে একবার বড়োসড়ো করে রবীন্দ্রনাথকেও স্মরণ করার জন্য ঠাকুরবাড়িতে আসেন। বাঙালিকে রবীন্দ্রনাথের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে তাকে ঠাকুরবাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করতে হয়েছিল। এবং সেজন্য দরকার ছিল উঁচু একটা মঞ্চ। এটা সেই মঞ্চ। ইট সিমেন্ট দিয়ে পাকা করা বক্তৃতার মঞ্চ...
এরশাদকে উঁচু করার জন্য ঠাকুরবাড়ির নাকেমুখে এরকম একটা স্থায়ী মঞ্চ চাপিয়ে রবীন্দ্রনাথের নিশ্বাস বন্ধ না করলে কি একেবারেই চলত না?
ঠাকুরবারিড় বকুলতলায় বাউলদের রবীন্দ্রসংগীতের আসর
০২
বারো কি তেরো বছর পর এলাম মেরেপুরের মুজিবনগর। ঠা ঠা রোদের ঘাম-ধুলা সব এক ঝটকায় মুছিয়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের নতুন স্ট্যাচুগুলো মনটা ভালো করে দিলো। মূর্তিগুলো মুক্তিযুদ্ধের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোর একেকটা কম্পোজিশন। মুজিবনগর সরকারের শপথ থেকে শুরু করে নিয়াজির আত্মসমর্পণ পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সবগুলো ঘটনাই একের পর এক চুনাপাথরের রংয়ে সাজানো। অদ্ভুত সুন্দর এবং নিখুঁত। আমরা মুক্তিযুদ্ধের যেসব ঘটনার ছবি দেখে অভ্যস্ত। এগুলো সেইসব ছবিরই স্ট্যাচু। কিন্তু একটা একটা করে সবগুরো ঘুরে দেখার পর মনে হলো সার্বিক কম্পোজিশন থেকে কিছু একটা যেন মিসিং...
মুজিবনগর সরকারের শপথ এবং প্রথম গার্ড অব অনারের কম্পোজিশনের সামনে ক্ষুদে পর্যটক জয়িতা
অনেকক্ষণ তাকানোর পরে মনে হলো মুক্তিযুদ্ধের এই মূর্তিময় উপস্থাপনার মধ্যে বাংলাদেশের প্রকৃতিটা নেই। মেহেরপুরের আম্রকাননে করা এই কম্পোজিশনের সাথে কি একটা দুইটা কিংবা কয়েকটা প্রাকৃতিক গাছকে অংশ করা যেত না? স্বাভাবিক গাছগুলোকে কেটে পুরোটাই কি ইট দিয়ে মুড়িয়ে দেবার দরকার ছিল?
কম্পোজিশনগুলোর পেছনে স্টেডিয়ামের মতো একটা গ্যালারি। তিন তলা সমান উঁচু। চারদিকে গোল। স্টেডিয়ামের মাঠে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের থ্রিডি মানচিত্র। সবুজ জমিনের মানচিত্রের বিভিন্ন জায়গায় মিনিয়েচার মডেল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন কম্পোজিশন। দেখতে দেখতে মনে হলো সিমেন্টের উপর প্লাস্টিক পেইন্ট ছাড়া প্রাকৃতিক সবুজ দিয়েও হয়ত মানচিত্রটাকে সবুজ করা যেত...
গ্যালারি থেকে নেমে চলে আসি উল্টো দিকের আম বাগানের ভেতরে মুজিবনগর সরকারের শপথ মঞ্চের উপর বানানো স্মৃতিসৌধে। চমৎকার এবং চমৎকার একটা স্মৃতিসৌধ। মুজিবনগর সরকারের শপথ মঞ্চ যেখানে বানানো ছিল সেখানটাতেই স্মৃতিসৌধটি। আশপাশে আম বাগানও নিখুঁত অবস্থায় আছে। আর মঞ্চের ঠিক ডান কোনায় একটা বিশাল মেহগনি গাছ...
- গাছটার বয়স সাড়ে তিনশো বছর। একটুখানি হেসে কথাটা জানালেন স্মৃতিসৌধের বর্তমান কেয়ারটেকার আর ৭১এ শপথমঞ্চ নির্মাণের একজন কর্মী মুক্তিযোদ্ধা সুভাস মল্লিক...
শপথের আগের রাতে বন্য শুকর আর শেয়ালের অবাধ বিচরণভূমিতে মঞ্চ বানানো আর পাশের চার্চ থেকে চেয়ার টেবিল এনে নেতাদের বসার ব্যবস্থা করার বর্ণনা দিতে দিতে বাঁশি বাজিয়ে সৌধের দিকে ধেয়ে গেলেন সুভাস মল্লিক। জুতা মোজা স্যান্ডেল নিয়ে সৌধের স্তম্ভ বেয়ে বেয়ে উঠছে কয়েকটা তরুণ। ধমকে সবাইকে নামিয়ে আবার ফিরে এলেন- সাধারণ নিয়মটাও এদেরকে শেখানোর কেউ নেই। বুঝলেন?
সত্যি সত্যি ভালো লাগার মতো একটা স্মৃতিসৌধ। সৌধ থেকে নেমে গেট দিয়ে বের হবার মুখেই চোখে পড়ল বামপাশের দেয়াল ঘেঁষে দুই ফুট উঁচু একটা সিমেন্টের মঞ্চ। দেখার জন্য এগিয়ে যেতেই একটা ধাক্কা খেলাম। এই মঞ্চটার নাম শেখ হাসিনা মঞ্চ। সামনের দিকে শেখ হাসিনার নাম ধারণ করে স্মৃতিসৌধের দিকে পাছা ঠেকিয়ে দাঁড়ানো মঞ্চটা সম্ভবত তিনি যখন স্মৃতিসৌধ উদ্বোধন করতে এসেছিলেন তখন বানানো হয়...
স্মৃতিসৌধের সামনে নিজের নামে স্থায়ী মঞ্চ বসিয়ে শেখ হাসিনা কি নিজেকে সম্মানিত করলেন নাকি বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথকে অসম্মান করলেন?
সুভাস মল্লিক পর্যটকদের বর্ণনা করছেন সেদিনের শপথমঞ্চ তৈরির কাহিনী
০৩
নিচে বারো চৌদ্দফুট ফাঁকা রেখে উপরে দালান তোলার যে মডেল; বাংলাদেশে তার নাম সাইক্লোন সেন্টার। গোরস্থানে সিমেন্টের কারুকাজ করা ঢিবি জাতীয় যে কবর তা দেখলেই বোঝা যায় কোনো পিরের কবর। আর মসজিদের মডেল তো সকলেরই জানা...
সিমেন্টের একতারাওয়ালা একটা গেটের ওইপারে একটা সাইক্লোন সেন্টার বানিয়ে তার সামনে ছোট একটা মসজিদ তুলে সেই মসজিদের ভেতর একটা পিরের কবর ঢুকিয়ে দিলে যে অবস্থা দাঁড়ায় সেটাই হলো সরকারি হেফাজতে লালন সাঁইয়ের বর্তমান চেহারা। দেখলেই মনে হবে লালন নামে একজন পির এখানে সিমেন্টের মসজিদে বসে আল্লাবিল্লা করে বৃক্ষবিহীন সিমেন্টের উঠান পার হয়ে সিঁড়ি বেয়ে সাইক্লোন সেন্টারে উঠে গিয়ে ঘুমাতেন...
ডানের মসজিদে লালন বন্দী। সামনে সিমেন্টচাপা তার শিষ্যের দল
আজকের স্থাপত্যপ্রকৌশল দিয়ে কালিগঙ্গার পাড়ে ছেউড়িয়ায় লালনকেন্দ্রকে লালনের পরিবেশের মতো সাজানো কি খুব বেশি কঠিন হতো? আর রাজনৈতিকভাবে খুব কি অসুবিধা হতো মৃত লালনকে মসজিদে ঢুকিয়ে না দিলে?
২০১১.০৩.২৪
মন্তব্য
লীলেন ভাইয়ের সাথে একমত, আসলেই এগুলো অনাথ হয়ে গেছে। তবে একটুখানি আমার মত শেয়ার করি-
১। লেজেহোমো তাদেরই উত্তরপুরুষ যারা শামসুর রাহমানকে 'রাবীন্দার সঙ্গীত' লিখতে বলেছিলো।
২। যাদের স্মৃতিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে আমরা তো বহুকাল হলো তাদের আদর্শ ও চেতনার প্রতি পাছা ফিরিয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে আছি।
৩। হিন্দু মা-বাবার ঘরে জন্ম নেওয়া লালনকে মসজিদে ঢুকিয়ে পোক্ত মুসলমানিত্ব দেওয়া হচ্ছে।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আপনার তিনটা পয়েন্টই দ্বিজাতি গ্রাউন্ডে দেশবিভাগের ভৌতিক ধারাবাহিকতা
ভাগে পাওয়া দেশ থেকে অর্জন করা স্বাধীন দেশে যারা মানসিকভাবে নিজেকে সেট করতে পারেননি তারাই এখনও মুসলমানিত্ব দিয়ে বাংলাদেশের বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করতে চান
০২
পাকিস্তানে আইনগতভাবে কড়াকড়ি মুসলমানিত্ব কায়েম করা জেনারেল জিয়াউল হক নাকি একবার বলেছিলেন- কড়াকড়িভাবে মুসলমানিত্ব আরোপ না করলে বৈশিষ্ট্যগতভাবে ইন্ডিয়া থেকে পাকিস্তানকে আলাদা করার মতো কোনো উপাদান নেই। জাতি-ভাষা-সংস্কৃতি-বৈশিষ্ট্য সবই ইন্ডিয়া পাকিস্তানে এক। সেজন্যই পাকিস্তানের বৈশিষ্ট্য রক্ষার একমাত্র অস্ত্র মুসলমানিত্ব...
বাংলাদেশের শাসকদের অনেকেই হয়তো এই ঘোরে থাকেন
তারা জানেন না বাঙালিকে অন্য যে কোনো জাতি থেকে আলাদা করার জন্য বাঙালিত্বই যথেষ্ট
বাঙালিরা বহু শতাব্দি ধরে প্রথমত জাতি হিসেবে তৈরি হয়েছে
তারপর অর্জন করেছে জাতিরাষ্ট্র
ইসরাইল কিংবা পাকিস্তানের মতো জাতিরাষ্ট্রের মানচিত্রে ঢুকে বাঙালিদের জাতি তৈরির অপচেষ্টা করতে হয়নি কিংবা হচ্ছে না কিংবা হবেও না
০৩
চল্লিশ বছরে আমরা কিন্তু বহুদূর চলে এসেছি
পাকিস্তানি ঘরানার অনেক চেষ্টা অপচেষ্টা কিংবা ঘোর কাটিয়ে চলে এসছি
জাতীয় সংগীত-পতাকা-স্মৃতিসৌধ-রবীন্দ্রনাথ কিংবা ভাষাকে মুসলমানি করানোর অপচেষ্টা কিন্তু এখন সত্যি সত্যিই নেই
এখনও যেটা বাকি আছে তা হলো ইতিহাসকে মুসলমানি করানোর চেষ্টা। তারই ধারাবাহিকতায় লালনের আখড়ার নাম- লালনের মাজার
লালনের কবরের উপর মসজিদের স্থাপত্য...
০৪
স্থাপত্যের দিক থেকে স্মৃতিসৌধগুলো ছাড়া আমার জানামতে বাংলাদেশের স্থপত্যে আর কোথাও স্বকীয়তা নেই এখনও
এখন বোধয় স্থপতিদের এই দিকটায় নজর দেয়া দরকার
তাহলে হয়তো আমরা একটা বাঙালি স্থাপত্যশিল্প পেয়ে যাব ভবিষ্যত যমুনা সেতু কিংবা লালনের কবরশিল্পের জন্য
নাহ! লীলেনদা, আমার কাছে মনে হয় না স্বকীয়তার অভাব। বরং মনে হয় চাহিদার অভাব। টাকা নাই, রুচি নাই ক্যাম্নে কী!
মাথা থেকে কিছু উল্লেখযোগ্য আধুনিক (!) স্থাপনার উদাহরণ-
# শামসুল ওয়ারেস স্যারের কাজগুলো। গাজিপুরের বাগানবাড়ি অনবদ্য।
# গুরু মাযহারুল ইসলামের-
* আগারগাঁ জাতীয় আর্কাইভ (পুরানো)
* সাইক্লোন শেল্টারগুলো (মহেশখালিরটা যতদূর মনে পড়ে ওনারই ফাটানো কাজ)
* চারুকলা ভবন (আগের ছবি দেইখেন)
* চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস ডিজাইন। আরো অসংখ্য ...আহা গুরুর হাত
এছাড়া-
# ঢাকার গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মিশন
# ঢাকার ছায়ানট ভবন (বশীরুল হক)
# ধানমন্ডির আলিফ অ্যাপার্টমেন্ট (কেউ কেউ দ্বিমত পোষন করতে পারেন কিন্তু আর্বান কন্সট্রেইন্টে আমার দেখা সবচেয়ে ভালো কাজ)
# কাছাকাছি আরেকটা কাজ গুলশানের এক অ্যাপার্টমেন্ট
এছাড়া মুস্তাফা খলিদের কর্পোরেট অফিসগুলো দেখতে পারেন (গ্রামীণ ইত্যাদি)
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
কাজগুলো দেখলাম। সত্যিই আমার জানা ছিল না এগুলোর কথা
ধন্যবাদ। এতকিছু জানতাম না।
আট বছর আগে গেছিলাম এই তিনটা জায়গায়, তখন মেহেরপুরে এতকিছু হয়নি। তবে কুঠিবাড়ি রঙ করে আদি রঙ পালটে ফেলা হয়েছিল মনে আছে। কুঠিবাড়ির পুকুরপাড় টা অসাধারণ লেগেছিল। আর "দুই বিঘা জমি" কবিতার দুই বিঘা জমি দেখেছিলাম। আর মেহেরপুরের আশেপাশে একটা নীলকুঠি দেখতে গেছিলাম, নীল গাছ দেখে মনে হয়েছিল, হায় এই নিরীহ একটা গাছের কারণে কত তুলকালাম, গাছটা জানেও না।
আর ছেউড়িয়ায় বসে গান শোনার সেই অভিজ্ঞতা কোনদিনও ভুলব না।
ঠাকুরবাড়িতে দাঁড়ায়াই কারে যেন বলতেছিলাম, এতদূর এসে এটা দেখার চেয়ে গুগলে রবীন্দ্রনাথকে বেশি পাওয়া যায়... কথা খুব একটা মিছা না।
মেহেরপুরটা দারুণ লাগছে। পুরা ব্যাপারটাই দারুণ। এমনকি মেহেরপুর শহরটাও কুষ্টিয়ার তুলনায় বেশি সুন্দর। বিশাল বাংলাদেশের ম্যাপটাও ভালো, কিন্তু যে উদ্দেশ্যে [বার্ডস আই ভিউ] গ্যালারি উঁচা করছে, তার জন্য আসলে এতটুকু উঁচা যথেষ্ট না, আরো উঁচা দরকার ছিলো...
আর লালন মেলা এখন শুধু একটা মেলাই... ওখানেও লালনের কিছুই নাই এখন...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
গুগলে যে রবীন্দ্রনাথ পাওয়া যায় তা না হয় আপনি জানেন
কিন্তু প্রতিদিন হাজার হাজার স্কুলশিশু ওখানে যায়। তাদের কী অনুভূতি হয় জানি না
পুরোনো কিছু ফার্নিচার আর কয়েকটা ছবি দেখে তারা যদি রবীন্দ্রনাথ দেখা শুরু করে তাহলে তো মুশকিল
ওখানে কিন্তু চাইলেই সম্পূর্ণ রবীন্দ্রনাথকে উপস্থাপন করা যায়
০২
মানচিত্রটা দেখে প্রথমেই আমার যা মনে হয়েছে তা হলো; স্টেডিয়ামের ভেতরের পুরো জায়গা ঠেসে মানচিত্রটা বসানো। হয় মানচিত্রটা আরেকটু ছোট করা দরকার ছিল না হয় পাশে আরো জায়গা রাখার দরকার ছিল
মানচিত্রের দক্ষিণদিকে বঙ্গোপসাগরকে একেবারে একটা পুকুরের মতো মনে হচ্ছিল
০৩
লালন মেলায় কাঠের ফার্নিচারও বিক্রি হয়। মোটর সাইকেলের সার্কাসও হয়
আমার তাতে আপত্তি নেই
বরং লালন মেলাকে কেন্দ্র করে কুষ্টিয়া শহরে পুরো একটা গ্রামীণ মেলা যদি আয়োজিত হয় তবে বরং একটা সার্বিক মেলাই পেয়ে যাব আমরা
কিন্তু লালনকে মসজিদের নিচে সিমেন্ট দিয়ে চাপা দিযে রেখে কোনো কিছু করায় আমার আপত্তি
লালনকে মসজিদের নিচে চাপা দেওয়া হচ্ছে অসাম্প্রদায়িকতাকে চিরতরে মাটিচাপা দেওয়ার প্রক্রিয়ার একটা অংশ। ভোটের বাজারে ধর্মকে ব্যবহার করার যে সার্বজনীন অপচেষ্টা, তাতে এই অপসাস্কৃতিক চর্চায় আশ্চর্য হচ্ছি না। আমি আপনার আপত্তির সাথে প্রচণ্ডভাবে সহমত লীলেন ভাই।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
ভাল লাগলো। কুষ্টিয়ায় যেতে হবে একসময়...।
ঘুরে আসা দরকার। ছোট্ট একটা জায়গার ভেতর একসাথে আমাদের তিনটা আইকন অন্য কোথাও নেই
এই উত্তরটা ভুলে এখানে চলে এসছিল। ডিলিট করার চান্স না থাকায় লেখাটা মুছে কৈফিয়ত জুড়ে দিলাম
নির্বাক...
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
হ মাস্টর
শুধু এইটা না
আশপাশে আরবি লেখার ছড়াছড়ি দেখলে ইনারে মুফতি আমিনির বাইরে ভাবাও বেশ কঠিন
এক কথায় অসাধারন লিখেছেন। তিন জায়গাতেই যাবার সুযোগ হয়েছিল। অনুভূতিও একই রকম।
অনুভূতি প্রকাশ প্রয়োজন
চমৎকার বর্ণনা। তোমার সঙ্গে আরেকবার ঘুরে এলাম লীলেন।
হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!
বিষয়টা আরো বড়ো পরিসরে তোলেন রিটন ভাই
৭১এর শপথমঞ্চের স্মৃতিসৌধের সামনে হাসিনার নামে সিমেন্টের মঞ্চ অপমানজনক
কুঠিবাড়ির আঙিনায় বক্তৃতা দেবার মঞ্চ বেমানান
লালনের কবরে মসজিদ বানানো আপত্তিজনক
বদলে দেই সবকিছু। চুনকাম করে দেই লালনের আখড়া, কুঠিবাড়ি, পানাম নগর।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
হ
চুনকাম আরেকখান আধুনিক শিল্প
সবকিছুর উপর দে রং মাখিয়ে
০২
নাটোরের একটা রাজবাড়ি কিন্তু এখন ইদগা
ভালো লিখছেন, লীলেন্দা।
চেষ্টাইলাম
জীবনে প্রথম কুষ্টিয়া গেসি।
যা দেখসি, তাই ভালু লাগসে।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
ওইটা চৌখের গুণ
পোস্টে কোন ছবি আসছে না কেন !!
আর আপনি তো দেখছি সাংঘাতিক মানুষ ! যেখানেই যান সেখানেই একটা প্যাঁচ লাগান !! হা হা হা !!!
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
এখনও যদি ছবি না আসে তয় আছাড় দিয়া কম্পু ভাইঙ্গা ফালান
০২
প্যাচাল মানুষ হই না বনি কেঠাই কইব
সমালোচনা যে উন্নয়ন আকাংক্ষার অন্যরূপ, একথা আজকাল অনেকেই মানতে চান না।
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
১. কোনো ছবি দেখতে পেলাম না।
২. আপনি যে হাইকু'র মাপে পোস্ট দেয়া বন্ধ করে সাধারণ মাপের পোস্ট দিয়েছেন তার জন্য ধন্যবাদ।
৩. আমরা সব সুকৃতি'র সাথে শরীক হতে চাই তাই মঞ্চ-তোরণ-ফলক ইত্যাদির দরকার হয়। আমরা নিজেদের পরিচয় নিয়ে গর্ব করতে শিখিনি, লজ্জা পেতে শিখেছি। তাই কখনো দাঁড়ি-টুপি দিয়ে, কখনো তিলক-পৈতা দিয়ে, কখনো বিলেতি উচ্চারণে ইংরেজী কথা বলে, কখনো নিজেদের মানুষ আর আচারকে নাক সিঁটকে নিজেদের অন্য পরিচয় গড়ে তোলার চেষ্টা করি। কিন্তু যা কিছু বানোয়াট তা যত সুন্দরই হোক তা মিথ্যাই থাকে।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ছবি দেখতে চাই। লেখা পড়ে আক্কেলগুড়ুম হয়ে গেলো।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!
(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)
নতুন মন্তব্য করুন