ইস্কুলে কোনো অমেরুদণ্ডী প্রাণীর রচনা লিখেছিলাম কি না মনে নেই; আমাদের সবগুলো রচনাই ছিল শোয়ানো মেরুদণ্ডের গরু-ছাগল-ভেড়া-মহিষের মাহাত্ম্য কারণ এই শ্রেণির মেরুদণ্ডগুলা চারটা খুঁটির উপর লম্বালম্বি শুয়ে থাকে বলে শিং-খুর-নাক-কান-লেজ নিয়ে কয়েকটা বাক্য লিখে সরাসরি চামড়া ছিলে চামড়ার রপ্তানিমূল্য কিংবা ছিলা চামড়ায় লবণ মাখানোর কৌশল কিংবা সেই চামড়ায় বানানো জুতা-মোজা-ব্যাগের বর্ণনা দিয়ে লম্বায়প্রস্থে রচনা বড়ো করা যেত আর মাংসের স্বাদ কিংবা ভুঁড়ির পাতলা পর্দায় বানানো ঢোলের শব্দতরঙ্গ বর্ণনা করে দু-চারটা বাড়তি বাক্য জুড়ে দিলে পরীক্ষায় পূর্ণমান পবারও একটা আশা থাকত কিন্তু যদ্দুর মনে পড়ে কোনো অমেরুদণ্ডী কিংবা মানুষের মতো খাড়াদণ্ডী প্রাণীর রচনা চোখেও পড়েনি কিংবা লিখতেও বলেনি কেউ...
ধার্মিক বিজ্ঞানশিক্ষক আর বিজ্ঞানমনস্ক ধর্মশিক্ষকের সমন্বিত তালিমপ্রক্রিয়ায় আমরা যখন ছোরা-চাকু-কাঁচি দিয়ে সঠিকভাবে জ্যান্ত কেঁচো কাটতে পারার জন্য নিজেকে যথার্থ বিজ্ঞানশিক্ষার্থী আর কেঁচোর ভেতরে মাটি ছাড়া কিছুই দেখতে না পেয়ে নাড়িভুঁড়ি ছাড়া তার বেঁচে থাকার মূল রহস্যের জন্য ঈশ্বরের অপার মহিমায় আনত হয়ে বিজ্ঞানসম্মত ধর্ম আর ধর্মসম্মত বিজ্ঞানের কোয়ালিশন করতে করতে কাস্তে-হাতুড়ি-গাঁইতি-শাবল কিংবা হাতের মুঠোয় মশালের রাজনৈতিক শিখায় পিঠের চামড়ার নিচে গিট্টু গিট্টু একটা নড়বড়ে হাড্ডির শেকলকে লোহা-ইস্পাত-রডের মতো শক্ত কঠিন বলে বিশ্বাস করে দৌড়াতে দৌড়াতে দেখলাম মেরুদণ্ড নামের এই হাড্ডির দড়ি খালি ঢিলা হয় আর ডানে বামে লিকলিক করে এরে-ওরে ঠেস দিয়ে কিংবা লাঠিসোঁটাবাঁশ ভর দিয়ে দাঁড়াতে দাঁড়াতেও ত্যাড়াব্যাঁকা হয়ে একপাশে ঝুলে পড়ে আর তেলের অভাবে মশাল নিভু নিভু তখন মীমাংসা ছাড়াই ধর্ম এবং বিজ্ঞান দুইটারে পূর্বপুরুষের কবরের মতো ‘আইতে যাইতে সালাম দিমু কিন্তু খাইতে দিমু না’র স্ট্যাটাস দিয়ে লোহালক্কড়ের দোকানে জংধরা কাস্তে-হাতুড়ি-গাঁইতি-শাবল বিক্রি করে মেরুদণ্ড থেকে কাঠবাঁশের ঠেস খুলে দিতেই দেখি ওয়েলকামব্যাক ওয়েলকামব্যাক বলতে বলতে ঢোঁড়াসাপেরা আমাদের দিচ্ছে প্রায়োগিক বিজ্ঞানের প্রথম জৈবিক পাঠ- হাঁটো; পা দুইটারে লেজ বানিয়ে পেটের উপর শরীরের ভার দিয়ে বুকটারে মাটির সাথে চেপে মাজা বাঁকিয়ে একখান ছাইয়াঝাঁকি দেও; দেখবা ঠ্যাঙের উপর হাঁটার চাইতে বুক দিয়ে হাঁটা অনেক সহজ....
২০১১.০৬.২৬ রোববার
মন্তব্য
স্কুলে গরু ছাড়া অন্য কোনও প্রাণীর (চতুষ্পদ বা দ্বিপদবিশিষ্ঠ) রচনা আসে বলে কখোনো শুনেছি বলে মনে পড়ছে না।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
আমি ছাগলের রচনা লিখেছি- দেশি ছাগল- রাম ছাগল- খাসি
ভেড়ার রচনা লিখেছি লোম বেছে কম্বল বানানোর বর্ণনাসহ
মহিষের রচনা লিখেছি শিং দিয়ে বাইদানির শিঙা বানানোর কাহিনীসহ
আমি গরু, ঘোড়া, হাতি, বাঘ, বিড়াল ( নার্সারিতে থাকতে), কুকুর রচনা শিখেছিলাম।
কোনডা?
বারে বাহ! ছন্দের পরতে পরতে মিহিন সেলাই, ঝাঝরির ভাঁজ ভেঙে নানানরকম আলো, চমৎকার!
আমি চমৎকৃত হচ্ছি আপনাদের লিখা পড়ে, পত্রিকায় পত্রিকায় কতো ছাইপাশ পড়ে থাকে (সচল ‘ছাইপাশ‘ নন), আমরা গিলতেই থাকি, না গিলে উপায়ও থাকেনা, কারন এরা ছাড়া আর খুব মানুষই লিখে। এর বাইরে অনেক মানুষ তাদের মনের কথা এইভাবে বলে যাচ্ছে দেখে আমার মনে হচ্ছে এদেশে মননশীলতার চর্চা বিরাট একটি বাক নিয়েছে, খুবই তীক্ষè বাক। এই বাক নেয়ার দরকার ছিলো, অপ্রাতিষ্ঠানিকতার চর্চা প্রাতিষ্ঠানিকতাকে করে দিক উন্মুক্ত, মানুষের ভেতরের মানুষগুলো লিখতে থাকুক দল-মত-নির্র্বিশেষে (জামাত শিবির রাজাকারসহ যাবতীয় পশুত্ব ব্যতিরেকে)। জয় হোক উন্মুক্ত মননশীলতার, বিশ্বাসের চর্চার।
মাহবুব লীলেন ভাই, লিখতে কেমন লেগেছিলো বলবেন কি? মানে কেমন মুডে ছিলেন! পড়তে যেয়ে শ্বাস আটকে যাওয়া লিখা লিখেছেন ভাই। শুভেচ্ছা, তানিম এহসান
ধন্যবাদ ভাইজান
আমার মুড সব সময়ই লোকাল বাসের রড ধরার জন্য হাইজাম্প লংজাম্প করার মতো দৌড়ের মুড
সেটা হোক লেখা কিংবা ঘুম
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
হ
উফ্! পড়তে গিয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল!
নতুন একসপেরিমেন্ট?
নিশ্বাস বেরোবার রাস্তা থাকলে সেটা খোলা-বন্ধ হতে পারে স্যার
না থাকলে হয় হাঁপানি
আপনি যদি হাঁপানিরে শ্বাসপ্রশ্বাসের এক্সপেরিমেন্ট বলেন তো আমার কিছু বলার নেই
উত্তর তো মশাই আরো জটিল! কী বলতে চেয়েছিলাম সেটা আপনার উত্তর শুনে গুলিয়ে গেছে।
অতশত বুঝি না। মনে হচ্ছে লেখার স্টাইল পাল্টে ফেলছেন। গত লেখায় ও খেয়াল করেছিলাম।
স্টাইল তো বদলাতে চাচ্ছি। কিন্তু কোথায় গিয়ে দাঁড়াচ্ছে বুঝতে পারছি না
হুম, আরো সময় নেন। এখনও ঝাপসা লাগছে । বেশ জটিল । আগের টার চেহারা অনেক স্পষ্ট ছিল।
অবশ্যই এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত।
শেষের ওই প্যারাটা কি পুরোটা একটা বাক্য দিয়ে লেখা? - মাথায় প্যাঁচ খেয়ে গেলো
সেইটা তো খেয়াল করি নাই
শেষের বাক্যটাতো অনেক বড়। এত বড় বাক্য জীবনে পড়েছি কী?
না পড়লেও শুনেছেন। রাজনীতিবিদদের বক্তৃতা কিন্তু মোটে এক লাইন। বলে কয়েক ঘণ্টা ধরে
ব্যাপক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আইচ্ছা স্যার
আরে তাইতো? মনে হয় বেশি উপকারী নাতো তাই আসতো না!!!
শেষ প্যারায় দম ফেলতেই দিলেন না; না দিলেন যতি- তার ব্যতিরেকে দিলেন চুম্বকীয় সম্মোহন!!! কীভাবে পারেন ভাই? এই অনন্য বৈশিষ্ট্য আপনার স্বকীয় হয়ে গেছে!!!
দৌড়ের লেখা দৌড়ানোর মতেই হয়। কী আর করা
০২
আপনার নিকটা নিয়ে একটু চিন্তা করেন ভাইজান। ওইটা বড়োই খটমট
লীলেনদা জায়গা মতো ধরছেন, সাকল্যে নিক খুবই খটমট আর অস্বস্তিকর হইছে 'কবি' শব্দটা, নিবন্ধন করার সময় যা তা দিয়া দিছি । চিন্তা করতাছি 'কবি' সরাইয়া একটা যুতসই শব্দ বসানোর, পাইতাছি না। বস্, আম্রে একটা নিক দেন না(যদি বসের সময় হয় ), তয় 'মৃত্যুময়'টা রাইখেন, এইটুক বড় ভালু পাই।
মৃত্যুময় জিনিসটাই তো একটা ব্যাকরণ
এইটা যেখানে থাকবে সেইটা তো খটমট হতে বাধ্য
০২
এই জিনিসরে সাইজ করা আমার বিদ্যায় কুলাবে না
যদ্দুর মনে করতে পারলাম মরণশীল ছাড়া এর কোনো প্রতিশব্দ আমার জানা নাই
মরণশীলটাও আবার দার্শনিকদের সম্পত্তি
এখন মনে হচ্ছে ব্যাকরণবিদ (হতাশ) আর দার্শনিক (আকাম্মা) আর বুদ্ধিজীবী (অথর্ব) ছাড়া কেউ বোধহয় মৃত্যু নিয়ে ভাবে না তাই এর কোনো মাউথএবল বাংলা শব্দ তৈরি হয়নি
বস মৃত্যুময়রে খটমট কইলে হইব না- আপনি যে আম্গো নি:শ্বাসটাই ফেলতে দেন না-কেবল আঠার মত ধইরা রাখেন, এর বিচার কী হইবো?
০২
মরণশীল ভালো বলছেন তো বস; তয় পারলে সাথে আর একটা কিছু দেন, আপনার নামেও তো দুইখান শব্দ, আমার একখান থাকলে হয়?
জব্বর কইছেন, অবশ্য আপনি জব্বর ছাড়া কক্ষণই কিছু কন না !!!
হাম্বা!
ব্যা...
ভাগ্যিস নোয়াম চমস্কির 'সিন্টাষ্টিক স্ট্রাকচারস' আগেই বেরিয়ে গিয়েছিল। তা না হলে বক্ষ্যমান রচনার দ্বিতীয় বাক্যটি নিয়ে সাংগঠনিক বাক্যতত্ত্বের পুরোহিতগণকে কতই না মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হতো। শত বছরেও অধিক সময় ধরে 'আধুনিক' শাড়ী পরে থাকা ভাষা বহু ব্যবহৃত 'আধুনিক' শাড়ী পাল্টাবে আর কতদিনে? খোলস না পাল্টালে সাপ কি নতুন হয়? কিন্তু খোলসের নিচের খোলতাইতে আছে কি পাল্টে দেবার মতো অজস্র বে-নী-আ-স-হ-ক-লা রোশনাই ঝরানো আলোর ঝলকানি?
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
সাংগঠনিক বাক্যতত্ত্ব?
ওরে বাপরে। কমেন্ট করার নামে দেখি ব্যাকরণের কথা
কি মাঝি ডরাইলা!
------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।
খালি ডরাই নাই। ভয়ও পাইছি
শেষ বাক্যাংশটা এক দমে পড়তে পারি নাই। ক্লান্ত হয়া গেলাম।
কাইট্টা ছোট কইরা লন
কথাটা কেমন শোনাবে জানি না, তবে আমার ধারণা যারা বাংলাদেশে থাকেননি, বাংলাদেশের স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েননি এবং যাদের বয়স নূন্যতম পঁয়ত্রিশ নয় তারা এই লেখার একটা বড় অংশ বুঝতে পারবেন না। বাঘের একবার বিড়াল ছানা আবার সেখান থেকে ভেড়ার বাচ্চা বনে যাবার ইতিহাস যাদের মগজ-হৃদপিণ্ড-চামড়ার উপর দিয়ে যায়নি তাদের পক্ষে সেটা কতটুকু হৃদয়ঙ্গম করা সম্ভব?
প্রথম অনুচ্ছেদে তিনটা পূর্ণচ্ছেদ আছে। চেষ্টা করে দেখুন ওগুলোকে বিদায় করা যায় কিনা।
কবিতা লেখা তো মনে হয় বাদ দিয়ে দিয়েছেন, গল্পের অবস্থা তথৈবচ, বাঘ কাহিনী তো মনে হয় শীতকাল না আসলে ধরবেন না, তাই এই মুক্ত গদ্যই চলুক - অন্ততঃ নিয়মিত চলুক।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
দিলাম স্যার
আপ্নের কথায় দাঁড়িডান্ডা তুলে এক্কেবারে বকরণ বানিয়ে দিলাম
০২
কবিতা বাদ্দেইনি স্যার ধরার চেষ্টায় আছি
গল্প আসবে শিগ্গির
আর এই গদ্য হচ্ছে লোকাল বাসের ঝাঁকুনির ফল
দারুন ! ধার্মিক বিজ্ঞানশিক্ষক আর বিজ্ঞানমনস্ক ধর্মশিক্ষকের সাথে পরিচ্য় টা আমারও হয়েছিল
সমগোত্রের লোক তাহলে
আহা! মধু মধু! শেষ প্যারাটি পড়িয়া ব্যাপক আমোদিত হইলাম। লিখকের জন্য বর্ষার দুইখানা তাজা কদম বরাদ্দ দিলুম!
ন্যাড়া মাথায় কদম গাঁথব কোথায়? তার চেয়ে দুইটা কদমা দিলে চাবান যাইত
আহা! মধু মধু! দ্বিতীয় প্যারাটি পড়িয়া বড়োই আমোদিত বোধ করিলাম।
নিটোল
তাইলে দেখা হইলে এক প্যাকেট বিড়ি দিয়েন
বাপ্রে, মেরুদন্ড খাড়া রাখতে পারতেছিনা শেষটা পড়ার পর থেকে!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
মেরুদণ্ড খাড়া না থাকলে কী হয়?
মাথা ঘুরিতেছে !!শেষ বাক্য সমাপ্ত করিতে যাইয়া দম আটকাইয়া মরিতে বসিয়াছিলাম!!
সাধু সাধু
খালি খালি শ্বাস টান দিয়ে কী হবে। শ্বাসের সামনে এক কল্কে গঞ্জিকা ধরতে পারলে না হয় শ্বাসটা সার্থক হতো
শ্বাসটান......!!!
আইচ্ছা
--------------
নিত্যানন্দ রায়
লীলেনদা, আমি আপনের কষ্ট বুঝি। সব দাড়ি মুখে নিয়া গেলে লেখায় দিবেন কেমনে?
যাউকগা, লেখা লীলেনীয় হইছে
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
দাড়ি কামায়ে ফেলছেন বলে শুঞ্ছিলুম যে?
অসাধারণ একটা লেখা। আপনার পোস্টগুলোতে চিন্তার যে খোরাকটুকু জোটে তা সত্যি দুর্লভ।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
ধন্যবাদ পড়ার জন্য
জনাব, হাতে আপনার দুই হালি গ্রন্থ। তারপরো নিজেরে বদলানোর কসরতে নেমেছেন। বদলে যাবেন? যান। তবে শুধুমাত্র সেই আগের আপনাতে।
কী আর করা
তথৈবচ তো আর থাকা জায় না। থাকতে গেলে নৈবচ হয়ে যেতে হয়
তার চেয়ে বদলে যাওয়াই ভালো
নতুন মন্তব্য করুন