মহাভারতমতে যাদব আর পাণ্ডব বংশ দুইটা শুরু হইছে ভৃগুমুনির পুত্র শুক্রাচার্যের কন্যা দেবযানী এবং তার সতিন; রাজা বৃষপর্বার কন্যা শর্মিষ্ঠার গর্ভ থাইকা রাজা যযাতির ঔরসে। দেবযানী গর্ভজাত রাজা যযাতির বড়ো পোলা যদু থাইকা যাদব বংশ যার শেষ মাথায় পাই কৃষ্ণরে। শর্মিষ্ঠাগর্ভজাত যযাতির ছোট পোলা পুরু থাইকা পয়লা পুরু বংশ তার পর কুরু বংশ তারপর পাণ্ডব বংশ; যার শেষ মাথায় পাই পঞ্চপাণ্ডব। তো শর্মিষ্ঠার পোলা পুরু থাইকা আগাইলে দেখা যায় যে ২৪ নম্বর প্রজন্মে আছে যুধিষ্ঠির; যা ভৃগু থাইকা গুনলে হয় ২৬। অন্য দিকে ঋষি অঙ্গিরার বংশধররাও মহাভারতে আছেন। যার শেষ মাথায় যুধিষ্ঠির থাইকা কয়েক বছরে বড়ো অশ্বত্থামারে দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু অশ্বত্থামা অঙ্গিরার মাত্র ৫ নম্বর প্রজন্ম। অথচ ঋষি অঙ্গিরা আর ভৃগু মুনি যেমন আছিলেন সমবয়সী তেমনি অঙ্গিরাপুত্র বৃহস্পতি আর ভৃগুপুত্র শুক্রাচার্যও আছিলেন সমবয়সী সতীর্থ। তো একই টাইম লাইনে যেইখানে অঙ্গিরা বংশ মাত্র ৫ প্রজন্ম গিয়া থামে সেইখানে ভৃগুর পোলা শুক্রাচার্যের মাইয়ার সতিনের বংশ কেমনে ২৬ পর্যন্ত পৌঁছাইয়া যায়? অথচ ভৃগুমুনির আরেক পোলা ঋচীকের বংশও কিন্তু অত উর্বর না। ঋচীকের পোলার ঘরের নাতি পরশুরাম হইলেন মুনি ভৃগু থাইকা চতুর্থ প্রজন্ম; যা অঙ্গিরার চতুর্থ প্রজন্ম দ্রোণাচার্যের লগে মিলে যায়; পরশুরাম দ্রোণের বয়সে বড়ো এবং গুরু; কিন্তু দুইজনই অঙ্গিরা এবং ভৃগুর চতুর্থ প্রজন্ম...
এইখানে প্রজন্মের ইতিহাস না খুঁইজা বরং মহাভারত এডিটের ইতিহাসের দিকেই নজর দেওয়া ভালো। কওয়া হয় মহাভারত সবচে বেশি এডিট হইছে ভার্গব ব্রাহ্মণগো হাতে। ভার্গব ব্রাহ্মণ মানে ভৃগুমুনির বংশধর। এই এডিটের মূল উদ্দেশ্য আছিল মহাভারতের মহাক্ষেত্রে নিজেগো প্রতিষ্ঠা করা। এইটার পিছনে অবশ্য আরো পুরানা একখান ইতিহাস আছে...
বর্তমান তাজাকিস্তানের পশুরজন অঞ্চলের মানুষগুলারে আর্যরা সেনাপতি ইন্দ্রের নেতৃত্বে ভিটামাটি থাইকা পিটাইয়া খেদাইয়া দেয়। পশুরজনের এই পলানো মানুষগুলা পরবর্তীকালে পরিচিত হয় পারস্য পারসিক বা পার্সিয়ান নামে...
ইন্দ্রের দলের আর্যরা নিজেগো কইত দেবতা। এককালের সেনাপতি ইন্দ্র পরবর্তী কালে পরিণত হন দেবরাজ ইন্দ্র নামে। অন্য দিকে ভূমি থাইকা উচ্ছেদ হওয়া পার্সিয়ানগো স্পিতামা গোত্রের মানুষ হইলেন মুনি ভৃগু। এই মানুষগুলা জীবনেও নিজেগো ভিটা হারানোর ইতিহাস ভুলতে পারে নাই। বলা হয় দেবরাজ ইন্দ্রের নামের লগে যত চুরি-চামারির কাহিনি আছে সব এই পার্সিয়ান গোত্রেরই সংযোজন। এমনকি দীপাবলির রাইতে যে বাত্তি জ্বালানো হয় তাও নাকি প্রচলন হইছে ইন্দ্র যাতে বলির পশু চুরি করতে না পারে তার লাইগা। মানে ইন্দ্র পুরাই একটা চোর বদমাশ লম্পট...
এই গোত্রের ভার্গব বংশে বহু বড়ো মানুষও জন্মাইছেন। চ্যাবন শুক্র জমদগ্নি পরশুরাম সবাই এই বংশের। ভৃগুমুনির পোলাগো মইদ্যে চ্যাবন ভেষজ-বিদ্যার বিশেষজ্ঞ তো শুক্র আছিলেন যুদ্ধ বিশারদ আর শল্য-বিদ্যার বিশেষজ্ঞ। অঙ্গিরা বংশ সর্বদাই ইন্দ্রের দলে থাকত বইলা ভৃগুপুত্র শুক্রাচার্য সব সময় থাকতেন অপজিশন; মানে অসুর রাক্ষস আর দানবগো লগে। একলার বুদ্ধি আর কৌশলেই তিনি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠীগুলারে টিকাইয়া রাখতেন দেবতাগো আক্রমণের মুখে। তিনি নিজে ব্রাহ্মণ হইয়া; সংহিতামতে নিষিদ্ধ হইবার পরেও নিজের মাইয়া দেবযানীর বিবাহ দেন ক্ষত্রিয় রাজা বৃষপর্বার লগে। এই পার্সিয়ান স্পিতামা গোত্রের সর্বশেষ আরেকজন বিখ্যাত মানুষ হইলেন পার্সিয়ান ধর্মের প্রবর্তক জরথ্রুস্ট। যিনি তার জেন্দাবেস্তায় ভালো পন্থাগুলারে কন স্পেন্ত মৈনু মানে স্পিতামা গোত্রের পথ আর খারাপ পথগুলারে বলেন অঙরা মৈনু; মানে অঙ্গিরার পথ...
ভূমি হারানো এই মানুষগুলাই যুগের পর যুগ ধইরা ইন্দ্র আর অঙ্গিরা বংশরে ধরা খাওয়ানোর লাইগা কাঞ্চি চালাইছে পুঁথিপুস্তকের পাতায়। আর একই লগে মহাভারতের যাদব-পাণ্ডব দুই বংশরেই নিজেগো পকেটে ঢুকাইতে গিয়া প্রজন্ম গণনা আর বংশ-লতিকায় পাকাইয়া ফালাইছে বিশাল ভজঘট। যদু থাইকা যাদব বংশ এবং কৃষ্ণ পর্যন্ত আসতেও বহুত গোঁজামিল দিছে তারা...
মহাভারতে কিছু মাইনসের কোনো নাম নাই। গান্ধার রাজের মাইয়া বইলা ধৃতরাষ্ট্রের স্ত্রী গান্ধারী; তার আর কোনো নাম নাই। তেমনি নাম নাই নকুল সহদেবের মা মাদ্রীর। দেশের নামেই তাগোরে ডাকা হইছে আজীবন। দ্রৌপদীরেও দেশের নামে পাঞ্চালী আর বাপের নামে দ্রৌপদী ডাকা হইলেও তার মূল নাম কৃষ্ণা পাওয়া যায়। আবার কিছু মানুষের নাম পুরাই বিকৃত কইরা দেওয়া হইছে। যেমন শকুনি দুঃশাসন দুর্যোধন। দুর্যোধনের মূল নাম আছিল সূর্যোধন; সেইটা পাওয়া গেলেও ধৃতরাষ্ট্রের বেশির ভাগ পোলাগো মূল নাম মোটেই উদ্ধার করা সম্ভব না মহাভারত থাইকা। পাণ্ডবপক্ষের ভক্তরা পুরাই খাইয়া ফালাইছে তাগোরে। তবে পাণ্ডবপক্ষে যোগ দিবার কারণেই বোধ হয় ধৃতরাষ্ট্রের দাসীগর্ভজাত পোলার নামখান বেশ নাদুসনুদুসই আছে- যুযুৎসু...
এর বাইরে কিছু মাইনসেরে ডাকা হইছে জাতিবাচক নামে; যেমন হিড়িম্ব হিড়িম্বা। হিড়িম্ব হিড়িম্বা শুনলে কেমন জানি হড় জাতির লগে একটা মিল পাওয়া যায়। সাঁওতালরা নিজেগো জাতেরে কয় হড় জাতি। আর একইসাথে যখন ড. অতুল সুর কন সাঁওতাল পরগনার পাশে বীরভূমে আছিল হিড়িম্বার বাস আর এখনো সেইখানে আছে ঘটোৎকচের পোলার রাজ্যের চিহ্ন পাণ্ডুরাজার ঢিবি; তখন মনে হয় ঘটোৎকচের মা হিড়িম্বা মূলত আছিল সাঁওতাল বংশজাত নারী...
একটা বিষয় নিশ্চিত যে মহাভারত পরিবারের দুই প্রধান পুরুষ ভীষ্ম এবং দ্বৈপায়ন দুইজনই আছিলেন নদীমাতৃক মানুষ; একজন গঙ্গাপুত্র তো আরেকজন দ্বৈপায়ন। কৃষ্ণসহ মহাভারতের বেশির ভাগ মানুষই আছিল দেখতে কালা; শিবপূজারি আর রাজা-বাদশা সকলেই বসবাস করত খড়কুটা কিংবা মাটির ঘরে। বারণাবতে যুবরাজের লাইগা ধুমধাম কইরা যে ঘর বানানো হয় সেইটা কিন্তু একটা বাঁশ বেত শণের ঘর। একই সাথে দেখা যায় সেই সময় মানুষ মাটির নীচে কিংবা গুহায়ও বসবাস করত। তার প্রমাণ সেই বারণাবতেই পাওয়া যায়। বিদুর এক কারিগর পাঠায় যে মাটির নীচে গুহাঘর বানানোয় এক্সপার্ট। তখন যদি এই জাতীয় ঘর বানাইবার প্রচলনই না থাকত তবে এক্সপার্ট মিস্ত্রি আইল কেমনে?
সিংহাসন মনে হয় খালি নামেই আছিল কিংবা পরে ঢুকানো হইছে। কামের ক্ষেত্রে চেয়ার জাতীয় কোনো আসন-টাসনের সন্ধান পাই নাই। মনে লয় মাটিতে আসন পাইতাই বসত সবাই। পোশাক-আশাকেরও কোনো বিস্তারিত নাই। সুতা আর কাপড়ের প্রচলন তখন থাকলেও কথায় কথায় পশুর চামড়া আর ছালবাকলার পোশাকের বর্ণনা দেইখা মনে হয় একইসাথে গরিবগুর্বাগো মাঝে ছালবাকলার পোশাকের ব্যাপক প্রচলন আছিল তখন। বনবাসে অর্জুনরেও একবার ছালবাকলার পোশাক বানাইতে দেখা যায়। প্রচলন না থাকলে অতি সহজে যেমন পাওয়া যাইত না তেমনি অর্জুনও বানাইতে পারত না অত সহজে। সেই সূত্র ধইরা দ্রৌপদীর পোশাক নিয়া কথা কওয়া বিপজ্জনক। তবে রাজরানির পোশাক থান কাপড় জাতীয় কিছু হইলেও হইতে পারে; মানে পুরুষে পরলে হইত ধুতি আর নারীতে পরলে হইত শাড়ি। তয় মিলিটারিগো চিনার লাইগা কুরুযুদ্ধে ইউনিফর্মের সন্ধান পাওয়া যায়। অর্জুন না মরা পর্যন্ত কর্ণের জুতা না পরার প্রতিজ্ঞা থাইকা অনুমান করা যায় সেই যুগে জুতারও প্রচলন আছিল...
মহাভারতের মহাভজঘট ০৪: অস্ত্রপাতি আর যুদ্ধ
মহাভারতের মহাভজঘট ০৩: সংখ্যা ও বয়স
মহাভারতের মহাভজঘট ০২: কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন
মহাভারতের মহাভজঘট ০১: ঘটনাকাল
মন্তব্য
লীনেন দা , কালী প্রসন্ন ও নৃসিংহপ্রসাদের বিশ্লেষনে তখন যে তাতী কামার কুমার ও অন্যান্য পেশার বনর্না পাওয়া যায় সেই থেইক্যা কি বুঝা যায় না যে কৃত্রিম তন্তু দিয়া না হোক প্রাকৃতিক তন্তুর ব্যবহার ছিল? তবে বস, গুষ্ঠি গুলারে যেভাবে বাইর করলেন হিসাব নিকাস কইরা তাতে কিন্তু মাথা ঘুরানোর অবস্থা।
----------
রাধাকান্ত
তুলা তো আগেই আছিল; আমিও তো তাই কইলাম কিন্তু গবিরগুর্বারা বোধহয় সুতার কাপড় পড়তে পারত না
০২
আর গুষ্টি; তালিকা দিমুনি?
আচ্ছা লীনেন দা,একটা প্রশ্ন আপনার কাছে, আপনি এই মহাভারত বিশ্লেষন করতে গিয়ে ধর্মীয় ভাবধারা ও ঐশ্বরিক ব্যপারটাকে বাদ দিয়ে দেখালেন কেন?ভবিষ্যতে আপনার বই ও তো একটা রেফারেন্স হয়ে থাকবে।তখন তো কালীপ্রসন্নের অনুদিত মূল ভারতের সাথে বিশ্লেষনাত্মক বই হিসেবে , রাখাল বাবু, অতুল বাবু , নৃসিংহপ্রসাদ বাবু ও লীনেন দা'র বই নিয়ে তো আমার ছেলেমেয়ের কাছে আমি ভজঘটের সম্মুখীন হবো।
------------
রাধাকান্ত
আমারটা নিয়া অন্যগুলার লগে ভজঘট লাগার কথা না; আমি কী করছি আর কী ছাইড়া গেছি তা ৪৫ পৃষ্ঠার ভণিতায় পুরাই পরিষ্কার কইরা কইয়া দিছি। আর ধর্ম সম্পর্কে্ও একটা উত্তর আছে ভণিতায়: এই যে
১। আপনি কইলেন আর্যরা সেনাপতি ইন্দ্রের নেতৃত্বে বর্তমান তাজাকিস্তানের পশুরজন অঞ্চলের মানুষগুলারে ভিটামাটি থাইকা পিটাইয়া খেদাইয়া দেয়। পশুরজনের এই পলানো মানুষগুলা পরবর্তীকালে পরিচিত হয় পারস্য পারসিক বা পার্সিয়ান নামে... আমি কিন্তুক পড়ছি ইক্টু অন্যরম। মধ্য এশিয়া থাইকা যাযাবর আর্যরা নাকি আইসা পারস্য তথা বর্তমান ইরানে বসতি গাড়ে পর্থমে। এরা সবাই আদি পারসিক। পরে এদের মধ্যে দুইটা গুরুপ হইয়া যায়- একদল কৃষিকাজ ইত্যাদিতে লাইগ্যা থিতু হইয়া যায়, আরেকটা গুরুপ যাযাবর, পশুপালক আর লুটেরা হার্মাদই থাইকা যায়। তখন এই দুই গুরুপে ফাইট লাগলে বা এক গুরুপ আরেক গুরুপের লাইফস্টাইল এ্যাকোমোডেট করতে অক্ষম হইলে একপর্যায়ে হার্মাদ গুরুপ পারস্যে সুবিধা না করতে পাইরা সেখান থাইকা মোহেঞ্জোদারো-হরপ্পা সভ্যতার দিকে সইরা আসার চেষ্টা নেয়। একাধিকবার হামলা দেয়। এইরকমই কোন একটা পর্যায়ে তাদের সেনাপতি বা সর্দার ইন্দরের নেতৃত্বে এই হার্মাদ গুরুপ অবশেষে সিন্ধু সভ্যতা ধ্বংস কইরা ভারতে হান্দাইতে কামিয়াব হয় এবং উত্তর সিন্ধু উপত্যকায় বসতি গাড়ে। তবে এই গপ্পের পর্থমাংশেই আমার আগ্রহ আপাতত। এটা যদি হাছা হয়, তাইলেতো আর্যরা আসলে ইরানি!! আরও দ্যাহেন "ইরান" নামটা। এ্যারিয়ান > ইরান, তাইনা?! তারপর হুনছি (পড়ছি), আদি বৈদিক যুগের কিছু দেবদেবীর নামও নাকি আদি পারসিক ধর্মে নাকি আছে / ছিল।
এই গপ্প আপনার ক্যামন লাগে?
২। মহাভারত নাকি রচনা শুরু হইছিল ভগবানের (রাম) ভাইপুত তক্ষের রাজধাণী "তক্ষশীলা"-য়। বর্তমান পাপিস্থানের রাওয়ালপিণ্ডি জেলার ট্যাক্সিলা-ইতো সেই তক্ষশীলা, তাই না? আরো মজার ব্যাপার হইল, আমি হুনছি এই তক্ষশীলার উৎপত্তি ৯ম-৮ম খৃষ্ট-পূর্বাব্দের দিকে আর এর বাড়বাড়ন্ত ৬ষ্ঠ খৃষ্ট-পূর্বাব্দের দিকে। এই যুগটা কিনা আবার, অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, মহাভারতেরও আদি রচনাযুগ। এখন দ্যাখেন এই যুগের তক্ষশীলা সম্পর্কে প্রত্নতাত্ত্বিকদের বরাত দিয়া উইকি কি বলতাছেঃ
এখন মহাভারতের স্থানিক ও কালিক উৎপত্তিক্ষেত্রের লগে উভয়তই পার্শিয়ান / ইরানি সংযোগের কি কোন প্রাসঙ্গিকতা আছে বলে আপনার মনে হয়?
****************************************
তাজাক পশুরজনরাও আছিল আর্য; কথা ঠিক; তবে এক গোত্র না; আলাদা। তবে আর্য কোনো গোষ্ঠী না; ভাষাগোষ্ঠী...
আর্য শব্দটার বর্তমান হইল ইরান। ঠিক কথা। আর্যরা ইরানিয়ান/পার্শিয়ান। আর্য>এরিয়ান>ইরান। ইরানিরা তাদের দেশের নাম নিছে আর্য থাইকা ষাইট/সত্তুরের দশকে
০২
হ। তক্ষশিলা সম্পর্কে কথা ঠিকাছে। মহাভারত সেইখানে হইছে কি না তা নিয়া বিতর্ক আছে। আর সন তারিখ নিয়া পয়লা দফাতেই বহুত প্যাচাল পাড়ছি;
০৩
মহাভারতে যে আর্যরা তারা সকলেই ইরানি/ ইরান থেকে আসা। তবে আর্যগো লগে নারী খুবই কম/প্রায় না থাকায় তাদের সংসার পাতার মূল কৌশলই আছিল স্থানীয় নারী লুট কইরা সন্তান জন্ম দেওয়া (ইন্দ্রের কাছে আর্যগো প্রার্থনা দেইখেন: হে ইন্দ্র আমাগো শত্রুর নারী দেও) তাই মহাভারতের চরিত্ররা মিশ্র রক্তেরই ছিল...
০৪
কেউ কেউ কন; পরশুরাম মানে হইল পারস্যরাম। মানে পারস্য থাইকা আগত; যাগো টোটেম আছিল কুড়াল...
হুমম... তারমানে বাঁশের কেল্লা হইল গিয়া মোছলমানের মহাভারত?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
আরে না; বখতিয়ারের ঘোড়া; একটা ঘোড়া আর একজন বীর পুরুষ না থাকলে মহাকাব্য হয় কেমনে?
বখতিয়ারের ঘোড়া!! হুমম...
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
সাক্ষী দা এভাবে কইয়েন না ! আর সাবধানে থাইকেন! জানেন তো বাশের কল্লা কিন্তু......
--------
রাধাকান্ত
লীনেন দা, বঙ্কিম ও নৃসিংহপ্রসাদের বই পড়ছি । নৃসিংহবাবু কিন্তু ভক্তি চালানের সাথে যুক্তি দিয়া যা তৈরি করছে তারে যেমন এড়াইতে পারিনাই , আবার লীনেন মাহবুব রক্তমাংসের মানুষ ধইরা মহাভারত বিশ্লেষনের দিকে যেভাবে আগাইছে তারেও এড়াইতে পারিনাই। তয় আমার কাছে আপনার দ্বিতীয় ঢালওয়ালারে ভাল লাগছে।কারন বিশেষ কইরা উনার বিশ্লেষন মনে ধরার মতো। আপনি কি বলেন? সেই তুলনায় বঙ্কিম অতটা ভাল লাগে নাই।তয় আমি যেহেতু মূল মহাভারতের পাঠক ছিলাম আগে তাই ততটা ঝামেলা আমার হয় না। আপনি যদি পারেন কৃপাপরবশ হইয়া আরো কিছু বিশ্লেষকের নাম কি আমারে দিতে পারেন যাদের গবেষনা চোখে পড়ার মতো?
------------
রাধাকান্ত
বঙ্কিম তো মহাভারতে ভগবান খুঁজতে গিয়া খুইজা না পাইয়া ধুইয়া ফালাইছেন কবিদের। আর নৃসিংহ চরিত্রগুলারে রচনা করছেন সাহিত্য দিয়া; এর লাইগা নৃসিংহ পড়তে আরাম....
আমি নিরীহ বাঙাল তাই দুই জাতের দুইটা ঢালই দেখাইয়া রাখলাম নিজের চান্দি বাচাইবার লাইগা...
০২
অতুল সুরের প্রচুর রচনা আছে; পড়তে পারেন। ভবানিপ্রসাদ সাহু আছে; দেখতে পারেন; আমার বাকশোর ভিতর আরো অনেকগুলা বই আছে; নোট হইয়া গেলে আবার বাকশে ফালাইয়া রাখছি; দেখি খুলতে পারলে নামগুলা বইসহ জানাইয়া দিমুনে
জয়ন্তানুজ বন্দোপাধ্যায়ের (কলকাতা) ২টা চমৎকার বই আছে মহাভারত আর রামায়ন নিয়ে আলাদা- আলাদাভাবে। এই মুহূর্তে পুরো নাম মনে পড়ছে না, তবে একটার নামের মধ্যে মনে হয় 'মহাকাব্য' শব্দটা আছে। আজিজে পাওয়া যায়।
****************************************
এই লেখকের কিছু পড়া হয়নি আমার। খুজব
পড়ে যাচ্ছি। ভারতীয় সভ্যতার ইতিহাস নিয়ে করা একটা পাঠচক্র (মানে নিজেরা নিজেরা বসে পাঠ করা আর কি)- তো ওই সময়ের কিছু তথ্য যা তখন জেনে বেশ চমক তৈরি করছিল- তা একটু আধটু মনে পড়ছে- আবার পড়ছে না।
স্মৃতিশক্তি ভয়াবহ দুর্বল বলে- খালি মনে হচ্ছে যে, এ বিষয়ে কী জানি একটা জানতাম, পড়ছিলাম- এইরকম।
পড়ে যাই---- নিয়মিতই পড়ছি-
লীলেনদা, অভাজনের মহাভারত বইটা দেরী হলেও পাবতো?
স্বয়ম
বইটা ছাপা হয়ে এসে গেছে তো
এসেছে যে, তাতো ফেবু থেকেই জানি লীলেনদা। কিন্তু মুশকিল হলো এবার এক বন্ধুকে নিয়ে হাসপাতালে দৌড় ঝাঁপ করতে করতে মেলাতেই যাওয়া হচ্ছে না। তাই বলছিলাম, আমার প্রস্তুত হতে হতে বইয়ের কপি অবশিষ্ট থাকবেতো?
স্বয়ম
আমাগো বই আমরা ছাড়া যেহেতু কেউ কিনব না সেহেতু আগামী একশো বছর গুদামে থাকার বিষয়ে ১০০% নিশ্চয়তা
লীনেন দা , যে কথাটা আমি কইতে চাইলাম সেটা আফনের মুখ দিয়া বাইর হইলো। আসলে বঙ্কিম এতোডা বিরক্ত লাগছে বলার মতো না।অতুল বাবুর বই খারাপ লাগে নাই তয় প্রসাদ বাবুই খুব ভাল লেখছে।আরো কিছু খুচরা বই পড়ছি। সবচেয়ে বড় কথা সবার যুক্তিই মনে হয় সত্য !অবাক ব্যপার।
------------------
রাধাকান্ত
আমার কিন্তু বঙ্কিমের কৃষ্ণচরিত্র অত্যন্ত ভালো লেগেছিল। ভক্তির খোলস ছাড়িয়ে বাস্তবের আঙ্গিনায় মহাকব্যকে দেখতে পাওয়ার শিক্ষা আমার ঐ বই থেকেই হয়েছিল। পরবর্ত্তীতে বিভিন্ন অসাধারণ লেখকের মণি মুক্তার ঝলক আমার ক্ষুদ্র বিচারবুদ্ধিতে যে আলোড়ন তুলতে পেরেছিল তার সূচনা হয়েছিল ঐ কৃষ্ণচরিত্র-পাঠের সুখানুভূতিতে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
মহাভারতের প্রক্ষিপ্ত বাছাইর টেকনিক বয়ানের দিক থেকে বঙ্কিমের কৃষ্ণচরিত্রের তুলনা নাই
হ
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
Amazon-এ ত আসে নাই এখনো, অনলাইনে রকমারির মত দোকান ছাড়া আর কোথাও পাওয়া যাবে?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আমাজনে যাবে বলেই তো শুনলাম
নতুন মন্তব্য করুন