পঞ্চসতীর যে পূজা হয় সেই সতীগো পয়লা তালিকায় সীতার নাম নাই; অথচ সতীত্বের পরীক্ষায় পাশ করা একমাত্র নারী হইলেন সীতা। ক্যামনে কী?
‘অহল্যা দ্রৌপদী কুন্তী তারা মন্দোদরী তথা
পঞ্চকন্যা স্মরে নিত্যং মহাপাতক নাশনম্’
এই হইল পূজনীয় পঞ্চসতীর পয়লা তালিকা। বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়া ইনারা সকলেই একাধিক যৌনস্পর্শে অভিজ্ঞ নারী। অথচ রাবণের যৌনস্পর্শের সন্দেহে অসতী অপবাদে সীতারে দিতে হইল সতীত্বের পরীক্ষা...
এর মানে কি এইটাই না যে পঞ্চসতীর প্রথম তালিকা যারা করছিলেন তাগো কাছে সতীত্বের সংজ্ঞায় একস্পর্শী কিংবা বহুস্পর্শী যৌনতা কোনো গণ্য বিষয় আছিল না? এবং এই কারণেই সমসাময়িক অহল্যা আর মন্দোদরীরে তালিকায় নিলেও বৈশিষ্ট্যে মিলে নাই দেইখা সীতারে নেন নাই তারা?
পঞ্চসতীর আরো একখান তালিকা আছে; যেইখানে সীতাও আছেন আরো নতুন দুইজনের লগে। সেইটা হইল সীতা-সাবিত্রী-অহল্যা-দ্রৌপদী ও অরুন্ধতী। সাবিত্রী আর অরুন্ধতী যৌনতার দিকে একস্পর্শী নারী। সাবিত্রী হইলেন সত্যবানের আর অরুন্ধতী হইলেন মুনি বশিষ্ঠের বৌ। দুই তালিকাতেই অহল্যা আর দ্রৌপদী কমন। দ্রৌপদীরে আপাতত বাদ দিয়া যাই; কারণ দ্রৌপদী অন্য আখ্যান মহাভারতের চরিত্র। অন্য দিকে একই রামায়ণের সীতার সমসাময়িক চরিত্র ঋষি গৌতমের বৌ অহল্যা লুকাইয়া পুরানা প্রেমিক ইন্দ্রের লগে যৌনতা করার অপরাধে শাস্তি পাইছিল স্বামীর কাছে। স্বামী তার হাত পা বাইন্ধা থুইছিল এক পাথরের লগে। এতই শক্ত আছিল তার বান্ধন যে নড়াচড়া করতে না পাইরা প্রায় প্যারালাইজড হইয়া যাইতে হইছিল তার। কিন্তু কিন্তু তার পরেও কেমনে তিনি সতী হিসাবে আছেন দুই দুইটা তালিকায়? এক্ষেত্রে প্রথম তালিকার পঞ্চসতীর বৈশিষ্ট্যগুলা মিলাইয়া দেখলে তার কিঞ্চিৎ উত্তর পাওয়া যায়। হয়ত অহল্যা তালিকাতে আছেন কারণ শেষ পর্যন্ত তিনি আছিলেন স্বামী অনুরক্ত; যৌনতা এইখানে ডাজন্ট ম্যাটার...
প্রথম তালিকার বাকি চাইরজনের মইদ্যে কুন্তীরে আমরা জানি; স্বামী অনুগমনের ইতিহাসে তার জুড়ি মিলা কঠিন। পাঁচ স্বামীর লাইগা দ্রৌপদীর অকল্পনীয় যন্ত্রণা আর শেষ পর্যন্ত সকল সন্তান বিসর্জন দিয়াও স্বামীদের প্রতি তার অনুরক্তি মুছতে দেখি না কখনো...
‘তারা’ও আছেন পয়লা তালিকায়। জনসমক্ষে ইনি কিঞ্চিৎ অপরিচিত। ইনি দেবগুরু বৃহস্পতির স্ত্রী; কচের জননী। তিনি প্রেমে পইড়া গেছিলেন বৃহস্পতির এক দানব বা রাক্ষস শিষ্য চন্দ্র বা সোমের। সোমের হাত ধইরা তিনি পলাইয়াও গেছিলেন; মতান্তরে সোম তারে অপহরণ কইরা নিছিল। স্বামীর বাড়ি ছাইড়া গিয়া তিনি সোমের সাথে আশ্রয় পাইছিলেন বৃহস্পতির প্রতিদ্বন্দ্বী দানবগুরু শুক্রাচার্যের কাছে। বৃহস্পতি আর দেবতারা লাঠিসোঁটা নিয়া বহুবার তারা উদ্ধারের প্লান কইরাও শেষ পর্যন্ত ক্ষান্ত দিছিল শুক্রাচার্যের ভয়ে। পরে স্বয়ং ব্রহ্মা গিয়া শুক্ররে মিনতি কইরা রাজি করাইছিলেন। তারপর শুক্রের কথায় সোম তারারে বৃহস্পতির কাছে ফিরাইয়া দেয়। স্বামীর ঘরে ফিরবার সময় কিন্তু তারা ছিলেন গর্ভবতী। সন্তান বুধ-এর জন্ম তিনি বৃহস্পতির ঘরে দিলেও পরিষ্কার জানাইয়া দিছিলেন যে পোলাটা কিন্তু সোমের। এবং তারপরও বাকি জীবন কিন্তু তিনি তার মূল স্বামী বৃহস্পতির লগেই ঘর করেন; মানে শেষ পর্যন্ত স্বামীর লগেই আছিলেন....
মন্দোদরী হইলেন রাবণের স্ত্রী। রামায়ণের কোনো কোনো ভার্সনে শোনা যায় সুগ্রীব তিনারে ধর্ষণ করে। আর সব ভার্সনেই আছে স্বামীর লগে তিনি রাম আর বিভীষণের বিপক্ষে যুদ্ধ করলেও পরে তিনি বিবাহ করেন বিভীষণরে। আর রামায়ণের কিছু ভয়ানক ভার্সনে শোনা যায় যে তিনি হইলেন স্বয়ং সীতার জননী। সীতা হইল অজ্ঞাত ঔরসে তার বিবাহপূর্ব কইন্যা। তার মানে পয়লা তালিকার কেউই যৌনতার দিক থাইকা একস্পর্শী নারী নন; বরং তারা সকলেই শেষ পর্যন্ত স্বামী অনুগামী নারী...
পরীক্ষা দিয়া পাশ করা বিশ্বাস যাইলে ধইরা নিতে হয় পরীক্ষার পরে যৌনস্পর্শের দিক থাইকা সীতা শুধুই স্বামীস্পর্শী নারী হিসাবে প্রমাণিত। সাবিত্রী আর অরুন্ধতী এমনিতেই শুধু স্বামীস্পর্শী নারী। দ্রৌপদীর পাঁচ স্বামী হইলেও তিনিও শুধু স্বামীস্পর্শী নারী; স্বামীগো বাইরে তার কোনো যৌনস্পর্শ ঘটে নাই। মানে এই হিসাবে দ্বিতীয় তালিকার চাইরজনই পাওয়া গেলো শুধুই স্বামীস্পর্শী নারী...
এইবার তাইলে অহল্যা। খেয়াল করেন ইন্দ্রের লগে অহল্যার যৌন সম্পর্কের কিন্তু দ্বিতীয় আরেকটা পরিশুদ্ধিমূলক কাহিনি আছে। যেইটা দিয়া অহল্যারে স্বামীস্পর্শী হিসাবে জায়েজ করার চেষ্টা করা হইছে। সেই কাহিনিমতে ইন্দ্র তার বিবাহপূর্ব প্রেমিক-ফেমিক কিছুই না। বরং ইন্দ্র অহল্যার স্বামী গৌতমের বেশ ধইরা তার ঘরে আসছিল বইলা অহল্যা তারে চিনতে পারে নাই। এবং স্বামী গৌতম মনে কইরাই যৌনতা করছে তার লগে। মানে থিউরিটিকালি অহল্যা কিন্তু স্বামী ছাড়া কারো লগে যৌনতা করে নাই। এই যুক্তি মাইনা নিলে কিন্তু অহল্যারে বহুগামিতার অপরাধ থাইকা মাফ কইরা দেওয়া যায়। এবং ফাইনালি দেখা যায় এই তালিকার ৫ নারীই হইলেন শুধুই স্বামীস্পর্শী নারী। যেইখানে পয়লা তালিকার ৫জনই বহুস্পর্শী নারী....
প্রশ্ন হইল বহুস্পর্শী নারী বাদ দিয়া একস্পর্শী নারীগো সতী করার লাইগা দ্বিতীয় তালিকা করার প্রয়োজনটা হইল কাদের? কেন এবং কবে হইল?
আদিতে বিষয় আছিল কার বিয়া করা বৌ স্বামীরে কয়টা সন্তান দিতে পারল সেইটা; তা যার ঔরসেই হউক। কিন্তু যখন লোক সংখ্যা বাইড়া গেলো; আবার সম্পদ আর উত্তরাধিকার ভাগাভাগিতে টানাটানি পড়ল; তখনই মনে হয় স্বামীরা প্রশ্ন তোলা শুরু করল যে- নিজের পোলারেই যেখানে খাওয়াইতে পারি না; সেইখানে আরেক বেটার পোলারে কোন দুঃখে ভাগ দিমু? মানে ধীরে ধীরে স্ত্রীর গর্ভে শুধুই তার স্বামীর সন্তান ধারণের ইস্যুটা প্রধান হইয়া উঠল...
এই প্রসঙ্গে পয়লা দুইটা উদাহরণ দেখি ঋষি অঙ্গিরার পরিবারে। দুই ঘটনার লগেই অঙ্গিরাপুত্র দেবগুরু বৃহস্পতি জড়িত। বৃহস্পতির যৌন সম্পর্ক আছিল তার বড়ো ভাই উতত্থের বৌ মমতার লগে। সেইটাতে বাধা দেয়ায় বৃহস্পতি তার ভাতিজা দীর্ঘতমার দুই চোখ অন্ধ পর্যন্ত কইরা দিছিলেন; যাতে সে কোনো লটরপটর দেখতে না পায়। তো যাই হোক; বৃহস্পতি-মমতার সম্পর্কের ধারাবাহিকতায় যখন ভরদ্বাজের জন্ম হইল তখন দেখা গেলো মমতা ভরদ্বাজরে উতত্থের ক্ষেত্রজ পুত্র হিসাবে লালন করতে আপত্তি করতাছেন। মমতা কইলেন- দেবরের পোলারে আমি স্বামীর ঘরে পালন করতে পারব না। বিষয় সম্পত্তির দিক দিয়া মমতার স্বামী উতত্থ কিন্তু বহুত দরিদ্র আছিলেন। মমতা কি তার স্বামীর ভরন পোষণের ক্ষমতার কথা বিবেচনা কইরাই ভরদ্বাজরে পালন করতে আপত্তি করছিলেন? অন্যদিকে কোনো অদ্ভুত কারণে ভরদ্বাজরে লালন পালন করতে বৃহস্পতিও আপত্তি করেন। ফলে ভরদ্বাজ পালিত হন সম্পূর্ণ অনাত্মীয় পরিবেশে। যদিও মুনি ভরদ্বাজ বৃহস্পতিপুত্র হিসাবেই পরিচিত আছিলেন সমস্ত জীবন...
ভারতীয় পুরাণে ক্ষেত্রজপুত্র গ্রহণ করতে প্রথম এবং একমাত্র আপত্তিটা আমরা এইখানে দেখি; ঔরসজাত পুত্রের দায়িত্ব নেয়া অস্বীকার করারও একমাত্র উদাহরণটাও আমরা এইখানে দেখি...
কিন্তু মমতার পয়েন্টের আরেকটা রিপিটেশন দেখি আমরা বৃহস্পতির কাছে। মমতা কইছিলেন- পোলার বাপেরই উচিত পোলারে পালন করা; এই ক্ষেত্রে বৃহস্পতি দায়িত্ব না নিলেও বৃহস্পতির বৌ তারার প্রেমিক সোমরে কিন্তু আমরা তা নিতে দেখি...
তারা স্বামীর বাড়ি ফিরা যখন সন্তানের জন্ম দিলেন তখন দেখি বৃহস্পতি উতলা হইয়া তারারে জিগায়- পোলাটা কার? আমার নাকি সোমের? তারা কয়- এই পোলার বাপ হইল সোম...
এইখানেও আমরা বৃহস্পতিরে বহুত উদ্বিগ্ন দেখি সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়া। যখন তিনি জানলেন পোলাটা চন্দ্রের; তখন কিন্তু তিনি আগ্রহ হারাইয়া ফেললেন আর অতি আনন্দে পোলারে কোলে তুইলা বাড়ি নিয়া গেলো চন্দ্র; যে পোলার নাম রাখছিল বুধ...
তার মানে কিন্তু অঙ্গিরার পরিবারে ক্ষেত্রজ পোলা নিতে আপত্তি আছিল; তা হোক ভাইয়ের ঔরসে অথবা হোক কোনো ভিন্ন পুরুষের ঔরসে। প্রশ্ন হইল অন্যরা কেন ক্ষেত্রজ নিতো?
ক্ষেত্রজ নিবার বেশিরভাগ উদাহরণ কিন্তু আমরা পাই ক্ষত্রিয় পরিবারে। যাগো সম্পত্তি যেমন আছিল বেশি; তেমনি পোলাপানের দরকারও আছিল বেশি; হোক তা চাষ করার লাইগা আর হোক তা লাঠি ধরবার লাইগা। তো সোম কিন্তু আছিল ক্ষত্রিয়; তাই আনন্দে লাফাইতে লাফাইতে সে পোলারে বাড়ি নিয়া যায়। অন্যদিকে বৃহস্পতি আর তার ভাই হইলেন ব্রাহ্মণ। ব্রাহ্মণদের বেশিরভাগ সম্পত্তিই যেহেতু আছিল অস্থাবর; এবং আয় ইনকাম আছিল অনিশ্চিত; সেই কারণে বোধহয় উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে এরাই সবার আগে সতর্ক হইছিল। মানে স্ত্রীর গর্ভে যে সন্তান নিশ্চিতভাবে স্বামীর; শুধু তাগোরেই উত্তরাধিকার ভাবতে শুরু করছিল তারা। কিন্তু তারপরও তখনো স্ত্রীদের স্বামীর বাইরে কারো সাথে যৌনতায় কোনো বাধা কিংবা অপরাধ আছিল না। সেইটা আমরা অঙ্গিরার দুই পোলার বৌ; মমতা আর তারার ক্ষেত্রেই দেখি...
স্ত্রীরা শুধুই স্বামীর ঔরস ধারণ কইরা পোলা জন্ম দিব; এই কনসেপ্টের ধারাবাহিকতায়ই বোধহয় পরবতীতে স্ত্রীদের শুধুই স্বামীস্পর্শী হইবার নিয়ম প্রচলিত হয়...
স্বামীর প্রতি স্ত্রীর আনুগত্যের বিধানরে আরেক ধাপ আগাইয়া নেন উতত্থের সেই পোলা; যার চোখ অন্ধ কইরা দিছিলেন বৃহস্পতি। আন্ধা হইলেও বড়ো হইয়া তিনি ঋষি দীর্ঘতমা নামে বেশ নাম করেন। অবশ্য নারীদের স্বামীর অনুগত করার ক্ষেত্রে দীর্ঘতমার আগে আরেকটা প্রচেষ্টার কথা শোনা যায়। সেইটা করছিলেন ঋষি উদ্দালকের পোলা শ্বেতকেতু। তিনি নিজের আর বাপের সামনে মায়েরে আরেক ব্রাহ্মণের হাত ধইরা চইলা যাইতে দেইখা বড়োই কষ্ট পাইয়া বিধান দেন যে নারীগো স্বামী ছাড়া অন্য কোনো পুরুষের লগে মিশা অনুচিত। যদিও তিনি নিজেও উদ্দালকের ঔরসজাত পোলা আছিলেন না। তিনার মা তারে অন্য পুরুষের ঔরসে ধারণ কইরা পালন করছিলেন উদ্দালকের ঘরে...
কিন্তু উদ্দালকের কথায় কেউ তেমন পাত্তাটাত্তা দেয় নাই। পরে এই জিনিসটারে একটু কঠিন শক্ত কইরা দেন বৃহস্পতির ভাতিজা আন্ধাঋষি দীর্ঘতমা। তো এই আন্ধাঋষি দীর্ঘতমার বৌয়ের নাম আছিল প্রদ্বেষা। যেহেতু দীর্ঘতমা আছিল আন্ধা; সেহেতু তার কাছে রাইত আর দিন; ঘর আর বাইর সকলই আছিল সমান। যখনই তার গতর টাডানি দিতো তখনই সে বৌরে জাপটাইয়া ধরত। কিন্তু প্রদ্বেষাতো আর আন্ধা আছিল না। তার তো দিন রাইত; প্রকাশ গোপন এইসব বিষয়ে বিবেচনা আছিল। তো দীর্ঘতমার এই যেখানে সেখানে যৌনতায় প্রদ্বেষা আপত্তি করছিল দেইখা দীর্ঘতমা তারে অভিশাপ দিয়া একটা বিধান দেয়- এখন থাইকা নারীগণ হইবেন সম্পূর্ণ স্বামীর ইচ্ছার অধীন; মানে নারীরা না কইতে পারব না স্বামীরে; অথবা তাগো কোনো স্বাধীনতা নাই...
সেইটা অবশ্য দেবলোকের কেউ তখন মানে নাই। উল্টা প্রদ্বেষার পক্ষ নিয়া দীর্ঘতমারে পিটাইয়া ভাসাইয়া দিছিল জলে। আর সেই জলে ভাসতে ভাসতে দীর্ঘতমা রাজা বলির বাড়ি আইসা কিন্তু আবার বলিরাজার বৌ সুদেষ্ণার গর্ভে জন্ম দিয়া দিছিল পাঁচখান পোলা- অঙ্গ-বঙ্গ-কলিঙ্গ-প্ণ্ড্রুু এবং সূক্ষ্ম...
মানে স্বামীর অধীন হইবার বিধান দিবার পরেও স্ত্রীদের স্বামী ছাড়া অন্য পুরুষের লগে যৌনতা তখনো নিষিদ্ধ বিষয় না। তাইলে এই সতীত্বের বিষয়টা সীতার ঘাড়ে চাপাইল কেডা?
যৌনতা দিয়া সতীত্ব নির্ধারণের বিষয়টা কবে থাইকা শুরু হইছে তার কোনো সাকিন সন্ধান বাইর করতে পারি নাই আমি। তবে আমি এইটা নিশ্চিত যে সেইটা রামায়ণ রচনাকালে কিংবা রামায়ণের রচয়িতা বাল্মীকির সময়ের না। বাল্মীকি আছিলেন খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকের মানুষ। তখন যদি যৌনতা দিয়া সতী নির্ধারণের বিষয় থাকতো তবে নিশ্চয় তিনি অহল্যা কিংবা মন্দোদরীর লাইগাও কোনো না কোনো পরীক্ষার ব্যবস্থা করতেন। আর তিনার সময়ে যদি এইটা বিবেচ্য বিষয় না থাকে; তবে ধইরা নিতে হয় রামায়ণের অগ্নি পরীক্ষাটাও তার সংযুক্তি না; বরং অন্য কেউ হান্দাইয়া দিছে নিজস্ব ধান্দায়...
বাল্মীকির মৌখিক রামায়ণখান লিখিত রূপ পায় একাদশ শতকে। বাল্মীকি লিখছিলেন রামায়ণের ৫খান কাণ্ড। আর তার দেড় হাজার বছর পর যখন তা লিখিতরূপ পায় তখন প্রথম কাণ্ড আর সপ্তম কাণ্ডসহ মোট সাত কাণ্ডের রামায়ণ হইয়া লিখিত হয়। এবং সীতার সতীত্ব প্রশ্ন আর অগ্নি পরীক্ষার বিষয়টাও হান্দাইয়া যায় ঠিক এই সময়টাতেই। কারণ ততদিনে কিন্তু নারীদের বেশ জাপটাইয়া ধরছে পুরুষের সুবিধাবাদ...
মন্তব্য
ভাল্লাগসে
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
আমি জানতাম তারা মানে বানর রাজ বালির স্ত্রী তারা যাকে পরে সুগ্রীব বিয়ে করে
যতদুর মনে পরে বনফুল এর অগ্নিশ্বর উপন্যাস এ - দ্রৌপদী, কুন্তি, তারা এরা বহুস্পর্শী হবার পরেও পঞ্চ সতীর তালিকায় এদের নাম এর কারণ ব্যাখ্যা করা আছে .
ভাষার আংশিক প্রমিতকরণের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানাই। কৌলীন্যতা একেবারে ছুড়ে ফেলে রামায়ণকেও অভাজনে পুরোপুরি উন্মুক্ত করা হোক, ঠিক মহাভারতের মতোই। পরবর্তী পর্বের প্রতিক্ষায় রইলাম।
রাজর্ষি
পড়তে গিয়ে আমার অবস্থা শিবরাম চকরবর্তির মতো। একটু পর পর ভাবতে হচ্ছে, 'প্রতাপ কে?"। কৌতূহল জাগানিয়া একটি লেখা।
--মোখলেস হোসেন
হ। আর ঘাটতে গিয়া আমার অবস্থা বেতাল পঞ্চবিংশতি
তাতো বটেই। মাথায় ভূত না চাপলে এতো পরিশ্রম কে করে!
পঞ্চসতী নিয়ে আগে কখনও এমন করে ভাবিনি। হালকা ভাবে ভাবনাটা এসেছিল যে কী মানদণ্ডে তালিকাটা তৈরী করা হয়েছিল; কিন্তু ঐ পর্যন্তই। আপনিই দেখিয়ে দিলেন কোথায় দেখতে হবে, কিভাবে দেখতে হবে।
---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।
মন্দোদরী সীতার জননী!!! তুমি কি এইটা নিয়া লিখবা আরও?
---মোখলেস হোসেন।
এখানে দেখেন : [url=url= http://www.sachalayatan.com/leelen/54855]রামায়ণের শোলক সন্ধান ১: সীতা কার মেয়ে?[/url]
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
ধন্যবাদ অনার্য সংগীত।
----মোখলেস হোসেন।
নতুন মন্তব্য করুন