মায়ের মুখে শুনেছি। স্বাধীনতার ঠিক পরপরই নাকি রাস্তাঘাটে প্রচুর ঠিকানাবিহীন উন্মাদিনী দেখা যেত। আমার নানা বাড়ি- সিলেটের বিয়ানিবাজার এলাকায় নাকি এরকম এক তরুণীকে দেখা যেত রাস্তায় একা একা হাঁটতে। কারো সাথে কোনো কথা বলত না। কিন্তু মাঝে মাঝেই চিৎকার দিযে বিলাপ করে উঠতো- ও মাইও; মাইও গো। মাইয়া লোকরে অত অত্যাচার'
০২
তার সম্পর্কে আমার মা আর কিছু জানেন না। তিনি কোনো থিওরি দিয়েও তাকে চিহ্নিত করেননি আমার কাছে। কিন্তু আমার মুক্তিযুদ্ধ পাঠের অংশ হিসেবে যখন বীরাঙ্গনাদের সম্পর্কে একটু একটু পাঠ করছি তখনই এই কাহিনীটি বারবার আমার মনে পড়তে থাকে। মনে হতে থাকে হয়তো এই উন্মাদিনীও ছিলেন এক বীরাঙ্গনা। যিনি নিজেও হয়তো জানতেন না তাকে বীরাঙ্গনা উপাধী দিয়ে সম্মানীত করেছে দেশ
অথবা তিনি জানতেন। কিন্তু এও জানতেন যে বীরাঙ্গনাদের পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য সাহায্য বরাদ্দ করা হয়েছে। ঘর বাড়ি দেয়া হয়েছে। কিন্তু সেই ঘরবাড়িতে বীরাঙ্গনাদের পরিবারের উপকার হলেও বীরাঙ্গনাদের ঠাঁই হয়নি সেসব বাড়িতে (স্মরণ করছি শ্রদ্ধেয় নীলিমা ইব্রাহিমের রচনাবলীকে)
০৩
বহুবার এই কাহিনী নিয়ে লিখতে গিয়ে আমি আটকে গেছি। কিছুই লিখতে পারিনি। শুধু তার মুখের মাইও শব্দটি শুনে মনে হয়েছে হয়তো সেই উন্মাদিনী ছিল কুমিল্লা কিংবা তার আশেপাশের কোনো অঞ্চলের মানুষ। কিন্তু আর এগোয়নি
০৪
কিন্তু তার কী ঘটেছিল?
ও মাইও মাইও গো। মাইয়া লোকরে অত অত্যাচার
স্বাধীনতার পরপর স্বাধীন দেশের রাস্তায় এক উন্মাদিনী কেন এই বিলাপ করে করে রাস্তায় ঘোরে?
কার কী মনে হয় তার কাহিনী সম্পর্কে? তার ব্যাকগ্রাউন্ড- যুদ্ধ শেষে তার ফিরে আসা এবং তার রাস্তায় নেমে পড়া... এবং তার পরিণতি...
০৫
প্লিজ লিখুন। যার যা মনে হয় লিখুন তার সম্পর্কে। দেখি সবাই মিলে একটা পূর্ণ কাহিনীতে গিয়ে পৌঁছানো যায় কি না....
মন্তব্য