যে দেশে থাকেন তিনি সেটা তার দেশ না। যেটা তার দেশ তিনি তার নাগরিক না
যে দেশের নাগরিক তিনি সেখানে প্রবেশের অধিকার নেই তার...
তিনি এক দেশবিহীন বিহারি বৃদ্ধ। জন্মেছেন ভারতে- যেতে চেয়েছেন পাকিস্তানে- আটকে আছেন বাংলাদেশের জেনেভা ক্যাম্পে...
তাই তিনি হাঁটেন
নিঃশব্দে মোহাম্মদপুর থেকে উত্তরা- সাভার- গাজিপুর তিনি হাঁটতেই থাকেন
একই সাথে একই সময়ে পৃথিবীর বহু দেশে হাঁটার ক্ষমতা রাখেন তিন ...
আরোগ্য-বণিকের ডেরায় নতুন এক যন্ত্রের আমদানি হলে রক্তের মধ্যে বিষের অভিযোগে স্বাস্থ্য-পুলিশেরা আমাদের ধরে নিয়ে মেশিনে ঢোকায়। হাতে গ্লাভস লাগিয়ে সে যন্ত্রবান্দর আমাদের রক্তে উকুন খুঁজে- হাড্ডিতে খাদ খুঁজে- হৃৎপিণ্ডে পোকা খুঁজে- পায়খানায় পাথর খুঁজে ছাপার অক্ষরে জানায় চোখের মধ্যে বালি ছাড়া আর কোনো সমস্যা নাই আমাদের...
তারপর কুঁচকিতে ঘা- মাথায় খুশকি- বৌয়ের সাথে রাগারাগি সব কিছুর ...
নিজে নিজেই কেউ আহত হয়; নিজেকে কামড়ে খামচে টেনে হিঁচড়ে উন্মাদ সুফিদের মতো আন্ধা ঈশ্বরকে দেখায়- দেখো তোমাকে একমাত্র গণ্য ভেবে নিজেকেও কতটুকু নগণ্য করতে পারি আমি...
কেউ কেউ নিজেকে আহত হতে দেয়। মাইরের সামনে দাঁড়িয়ে মহাত্মা গান্ধীর মতো শান্তির সুবচন ঢেলে মারমুখো মানুষকে বোঝাতে চায় নিজের শান্তিপ্রিয়তা
কেউ কেউ আহত হয় গ্রামীণ জননীর বাৎসল্যসূত্র মেনে- ছোটবেলা মারি নাই মরে যাবে তাই। ...
রামায়ণের পরেও রাম-রাবণের ঘটনা আছে। গ্রামাঞ্চলের ঢপযাত্রায় সে ঘটনাগুলো দেখা যায়। কিন্তু রামায়ণোত্তর রাম-রাবণের ঘটনাটা আমাকে প্রথম বলেন সিলেটের দয়ামীরের এক থুত্থুরে দাদিমা। শাড়ি জিলাপি নিমকি আর চিটাগুড় মাখানো হুকার তামাক নিয়ে আমি তার কাছে গিয়েছিলাম কিচ্ছা সংগ্রহ করতে ৯২ সালে। এক ভিনদেশী লোকের কাছে কিচ্ছা জোগাড় করে বিক্রির চুক্তি করেছিলাম আমি...
দিদিমা ছিলেন কিচ্ছার ডিপো। ক...
মেয়েটা গলির ভেতরে ঢুকে গেলে আমরা পিছু নেই। পাড়ার বাসিন্দারা আজ হরতালে একদল ঘুমে অন্যদল ক্লাবের বড়ো পর্দায় বিশ্বকাপ ফুটবলে মশগুল। থাবাবাদীরা সামনে গিয়ে মেয়েটার পাশাপাশি হাঁটে আর ভাবে আজ যে কোনো চিৎকারকে বিশ্বকাপের উল্লাস দিয়ে ঢেকে দেয়া যাবে...
গলির শেষ দালানের একটা ঘরের চাবি আমাদের কাছে আছে। আজকে খোঁজ নেবে না কেউ তাই সমঝোতাবাদীরা দূর থেকে আওয়াজ দেয়- ল যাই গা। এই আওয়াজটা ইদান ...
বগোডুলের মাও নাই বাপও নাই। ঘরবাড়ি কিছু নাই। চেয়েচিন্তে কুড়িয়ে খায়। কুড়িয়ে পাওয়া বস্তায় ঢুকে রাত্তিরে ফুটপাতে ঘুমায়। একদিন বস্তার ভেতর থেকে মাথা বের করে দেয়ালে হেলান দিয়ে ফুটপাতে ঝিমায় বগোডুল। পাশের ফলের দোকান থেকে আপেল বিক্রির সময় একটা আপেল পড়ে গিয়ে রাস্তায় গড়ায়। বগোডুল দৌড়ে আপেলটা তুলে বস্তায় লুকিয়ে বস্তার উপর বসে আবার ঝিমায়...
ঘুমে ভেঙে পড়তে পড়তে মেয়েটি ফুটপাতে শরীর বিছিয়ে দিলে নিশাচররা ঘুম ভাঙিয়ে তাকে শোবার কথা বলে। শুতে রাজি নয় বলে ঘুমে ভাঙতে ভাঙতে মেয়েটি জেগে থেকে তৈরি করে ফেলে বন্ধ্যাকরণ বড়ির একটা বাণিজ্যিক স্লোগান; স্বাধীন নারীর নিরাপদ ঘুমের জন্য চাই হাকুল্লা বড়ি...
০২
পৃথিবীর সব প্রাণীই পৃথিবীর কোনো না কোনো মানুষের খাদ্য তালিকায় আছে। এই সত্যটা জানে শুধু মিলিটারিদের কমান্ডোবাহিনী। তাই প্রশ...
ব্যক্তিগত মাসের দ্বাদশ দিনে সন্তানপ্রত্যাশী নারীটিকে পর্দার আড়াল থেকে এক গ্লাস পানি বাড়িয়ে দিয়ে আধ্যাত্মগুরু বললেন- জননী; পবিত্র গ্রন্থের যে কোনো তিনটি পৃষ্ঠায় হাত বুলিয়ে ঈশ্বরের নামে পানিতে হাত ধুয়ে নিন। তারপর এক নিশ্বাসে সবটুকু পান করে পবিত্র গ্রন্থটি বুকে চেপে ধরুন। দেখবেন যে অশুভ আত্মা আপনাকে জননী হতে দেয় না সে ছটফট করে উঠবে আপনাকে ছেড়ে যাবার জন্য...
নারীটি পানি পান করে ...
প্রাণোবন্ধু ফেলাট কিনছে নগর বাগানে। মোরে কয় আয় দোস্ত দেইখা যা; ডাইলভাত দুগগা খাইয়া যা। মুই কই আমুনে কিন্তু আর যাওনের দিশা পাই না। দিনে দিনে বাপে মিসকল দেয়। ব্যাককল করলে কয় টেকা পাডা অসুধ খামু গায়ে মটমটি করে। মুই কই বয়সের লগে কিছু মটমটি হইবই। গরম পানি দিয়া গোসল দেও দেখবা সাইরা গেছে। বাপে কয় শ্বাস নিতারি না বুকে ধড়ফড় করে। মুই কই সকালে উইঠা ফেরেশ বাতাস খাও দেখবা শ্বাসের নালি পরিষ্ক...
আমার নিজের বই ছাড়া যত বই আছে সব কার্টন খুলে গতকাল রাতে ফ্লোরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেললাম। কার্টন উল্টাই আর ছুঁড়ে ছুঁড়ে মারি ফ্লোরে
শেলফ টেলফ কিচ্ছু নাই তাই সব বইই কার্টনে রাখি। দুই ধরনের কার্টন। পড়া বইয়ের জন্য এক ধরনের আর না পড়া বইয়ের জন্য আরেক ধরনে। কাল সবগুলাই তিনটা ঘরের ফ্লোরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিড়ি ধরিয়ে বইয়ের উপর দিয়ে হেঁটে হেঁটে নামগুলা পড়া শুরু করলাম। অনেক পদের অনেক অনেক বই। পদ্য-গ...