সিলেটের মতো দুনিয়াতে অত বেশি জায়গার নাম কোনো শহরে আছে কি না আমার জানা নেই। এক নামের জায়গায় দাঁড়িয়ে বিড়ি টানলে ছাই গিয়ে পড়ে অন্য নামের জায়গায়। প্যাডেল আড়াই চক্কর ঘুরে আসার আগেই রিকশা চলতে শুরু করে বদলে যাওয়া নামের রাস্তায়। মেয়েরা যেখানে গেট দিয়ে ইস্কুলে ঢোকে সে জায়গা থেকে হেড মিস্ট্রেস যেখানে দাঁড়িয়ে ছাত্রীদের স্কুলে আসা তদারকি করেন সে জায়গার নাম ভিন্ন। আবার যখন তারা যার যার ক্লাসে গিয়ে বসে তখন হয়ত
সিলেটের ভারুয়ারা জানে ভারের ব্যালেন্স। দাঁড়িয়ে কথাবার্তা বলতে হলে তারা দুপাশে ওজন সমান করে কাঁধ ঠেকায় বাঙের মধ্যখানে। সমতলে হাঁটার সময় তারা বাঙের সামনের দিক ছোট রেখে পেছনে বাড়তি ওজনের সাথে ভারসাম্য করে হাঁটার গতির। আর পাহাড়ে উঠা কিংবা ঢালু বেয়ে নামার সময় তারা দুই কাঁধে বাঙ নিয়ে আড়াআড়ি আগায়...
ছেঁড়া শাড়ির কথা কি স্মৃতিতে ভাসে? ধুয়ে নিংড়াতে গেলে যে শাড়ি ফরফর করে ফেটে যেত কয়েক হাত? রংচটা সেই শাড়িটি কি স্মৃতিতে ভাসে? সেলাই দিতে গেলে সুতার টানে আরও বিঘতখানেক ছিঁড়ে আসতে যে শাড়ি? অপূর্ণ শৈশবের কয়েক সমুদ্র অশ্রু শুষে নেবার মতো পুরোনো সেই শাড়িটা কি তোমার স্মৃতিতে ভাসে?
তোমার কি স্মরণে আসে নাগরিক ড্রেন ছাড়া তোমার অশ্রু ঠিক কতদিন ধরে আর প্রশ্রয় পায় না কোথাও?
২০১১.০২.২০ রোববার
কাঠ মধু মাছের উৎস আর বাঘের আস্তানার বাইরে সুন্দরবনকে নিয়ে আমাদের ভাবনা কতদিনের? ৭২ সাল পর্যন্ত বাঘকে আমরা জানতাম উপদ্রব; শিকার করলে পুরস্কার মিলত। হরিণ ছিল মৃগয়ার উপকরণ। তার বাইরে সুন্দরবনের বাকিটা ছিল মৌয়াল বাউলি কিংবা বনবিভাগের কর্মীদের নৈমিত্তিক পানসে জীবন...
শরীরটা সামনে ঝুঁকিয়ে হাতলের শেষ মাথায় শক্ত করে বাম হাত আর একটু উপরের দিকে আলতো করে ডান হাত রেখে কুড়ালটা বাগিয়ে ধরে আব্দুল ওহাব। তার হাত আর শরীরের এই পজিশন সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে কোপ মারার পজিশন। কোপ মারার আগে হাত আর মেরুদণ্ড একসাথে পেছনে গিয়ে একসাথে নেমে আসবে সামনে। অর্ধেক সেকেন্ড সময় লাগবে কুড়াল মাথার উপর তুলতে আর বাকি অর্ধেক সেকেন্ডে হ্যাপ করে নেমে আসবে সামনে। সোজা কুড়ালের ফালিটা গিয়ে ভ্যাৎ করে গে
- আর ইউ এন ইজিপশিয়ান?
সুন্দরবন টিকবে না বেশিদিন। মানুষের হাতে-মুখে বেড়ে চলা গজদন্ত ঠেকাতে না পারলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে সুন্দরবন। প্রায় এরকম একটা বক্তব্য শুনতে শুনতে সুন্দরবনে একদল দেশি বিদেশি পরিবেশবাদীর সফরসঙ্গী হয় ফটোগ্রাফার নয়ন। তার কাজ পুরো ভ্রমণের ছবি তোলা
সামনের পা দুটো পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রিতে টানটান করে পুরো শরীরের ভার লাফ দেবার জন্য পেছনের পায়ে নিয়ে শণ ঝোপের মধ্যে খাপ ধরে বসেছিল বাঘটা। বছর দশেকের পূর্ণ পুরুষ বাঘ। আমাকে দেখে শরীরটা আরো গুটিয়ে লাফ দেবার জন্য সামনের পা দুটো তুলতে তুলতে হঠাৎ করে থেমে গেলো। মাত্র হাত দশেক দূরত্ব। আমি কী করব না করব বুঝে উঠার আগেই দেখলাম বাঘটা খাপ ছেড়ে শরীর নরম করে পেছনের পায়ের উপর বসে পড়ল। মুখটা একটু হায়ের মতো ফাঁক হয়ে এলো- ভাগিনা সালাম...
আমি এখনও ভাবছি দৌড় দেবো কি না। এমন সময় আবার শুনলাম- দাঁড়িয়ে রইলি কেন? আয় এদিকে আয়
পদবি নৌকা চালক। প্রশিক্ষণ বন্দুক চালনায়। নাম রতন সরকার
দুবলার চর। সুন্দরবনের অস্থায়ী পুরুষ বসতি; এক অস্থায়ী গ্রাম। ঘোরেপ্যাঁচে কোনো নারী যদি সেখানে পৌঁছে যায় তবে দিনে দিনে তাকে চর ছেড়ে আসতে হয়। এটাই নিয়ম। ভাসান নদীর বুকে সাগরের মুখে এই চরে পুরুষেরা বছরের শুকনা মৌসুমে পাঁচ মাসের গ্রাম বেঁধে থাকে। সেখানেই বসে রাসপূজার আসর আর মেলা। দূরান্ত থেকে শতশত নারী পুরুষ তীর্থযাত্রী সেখানে গেলেও মেলা শেষে সবাই ফিরে আসে। শুধু মজুর পুরুষেরাই সেখানে থেকে যায়। তারা সে