অনেক দিন কিছু লিখি না, আজকে কেন যেন লিখতে ইচ্ছে হল। সকাল থেকেই ভাবছি সচল আর আমার সম্পর্কটা কি ? সচলে আমি এখন ও অচল (অতিথি) কিন্ত সব সচলরা আমাকে অনেক বেশি সচল করে রেখেছে। আমার ব্লগে লেখালিখি বন্ধ দেখে অনেক সচল আমাকে নিয়মিত লেখালিখি চালিয়ে যাবার জন্য উৎসাহিত করেন। অচল হয়ে সচলদের কাছ থেকে এটাও কম পাওয়া নয়। আজ সচলের জন্মদিন তাই আবারও লিখতে ইচ্ছে করল।
সচল কে আমি প্রথম চিনলাম গত বছর। জুবায়ের ভাইর যেদিন আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন সেই দিন আমি আনিস ভাইর কাছে শুনলাম সচলায়তন নামের ব্লগে জুবায়ের ভাই সর্ম্পকে অনেক লেখা এসেছে এবং উনি এখানে নিয়মিত লিখতেন। শোনা মাত্র সচলে ঢুকলাম লেখাগুলি পড়তে। এ ভাবেই শুরু ......
চেহারা দেখেই এই এক বছর কয়েক মাসের শিশুটিকে ভাললাগল, এরপর থেকে তাই রোজই সচলে আসি, যথারীতি এই শিশুটির পরিবারে নাম লেখালাম। একদিন সাহস করে একটি লেখাও দিলাম। ওমা দেখি কি যেন সব বলে, আপনার লেখাটি যাচাই বাছাইয়ের জন জমা হয়েছে ইত্যাদী ইত্যাদী। কিছুই বুঝলাম না। অন্য ব্লগে লেখা দেই সাথে সাথেই প্রথম পাতায় চলে আসে, তারা কত ভাল আর এখানে আবার এসব কি বলে যাচাই বাছাই। মেজাজ খারাপ হল, ভাবলাম, এই ব্লগেতো আর আসা যাবে না, এত ঝামেলা ক্রে কে আসবে। সেই লেখা যাচাই বাছাই করে আর আসলই না। কদিন খুব রাগ করলাম আর যাব না সচলে, বেটা মনে করে কি নিজেকে? আমার লেখা দেয় না। সেদিন জন্ম হল আর তার কি ভাব। ইসসস নিজেকে কি টাইম ম্যগাজিন ভাবে নাকি। দুই দিন রাগ করে আর লেখাই দেই না কিন্ত রোজই পড়তে আসি। পড়ি আর ভাবি আহারে আমার লেখা কি কোনদিনই এখানে আসবে না।
এরপর আবার চান্স নেই, আমার একটা লেখা যেটা অন্য ব্লগে অনেকেই পছন্দ করেছিল সেই লেখাটিকে আবারো মনের মাধুরী মিশিয়ে আরেকটু সাজাই। মেয়ে দেখানোর আগে যেমন সাজান হয়, আমিও আমার লেখাটিকে সেভাবেই সাজাই। এরপর একটা শুভক্ষণ দেখে যাচাই বাছাইয়ের জন্য পাঠাই, আর আল্লাহ আল্লাহ করতে থাকি। সেই যাচাই বাছাই অনেকহ্মণ চলে.. লেখাতো আসে না, প্রায় ৫/৬ ঘন্টা এভাবে গেল......... লেখা আসে না। এই ৫/৬ ঘন্টা কত বার যে সচলে ঢুকি তার ঠিক নাই। আমার যত গুলি পরিচিত সচল ছিল, ফোন করে সবার মাথা খাই। কেন আমার লেখা আসে না, কে মডারেট করে, কিভাবে করে ইত্যাদী, ইত্যাদী হঠাত দেখি আমার ব্লগে লেখা আসছে সাথে কমেন্টের ঘরে একটা চিঠি ঃ-
প্রিয় লীনা ফেরদৌস,
সচলায়তন তার অতিথি লেখকদের কাছ থেকে নতুন লেখার প্রত্যাশী। আপনার পোস্টটি কিছুদিন পূর্বে অন্য একটি কমিউনিটি ব্লগে প্রকাশিত হয়েছে বলে তা প্রথম পাতার পরিবর্তে আপনার নিজের ব্লগে প্রকাশিত হলো।
সচলায়তনের লেখা প্রকাশরীতি সম্পর্কে জানতে হলে সাধারণ নীতিমালা ও জিজ্ঞাস্য পড়ে দেখার অনুরোধ রইলো।
শুভেচ্ছা জানবেন। ধন্যবাদ।
ভাবেন একবার কি সাহস এই দুই বছরের শিশুর।
পরের দিন অনেক কষ্ট করে যত রকম মনের মাধুরী আছে সে সব একদম নিঙড়ে একটা নতুন লেখা দিলাম, দেখলাম ছোট শিশুটির প্রথম পাতায় সেই লেখাটা এল। এরপর থেকে শিশুটিকে একটু ভালবাসতে শুরু করলাম। কিন্ত আমি যতই ভালবাসি না কেন সে আমাকে বিমাতাই মনে করে। এই শিশুটির সাথে আমার একটা টক-মিষ্টি সম্পর্ক। লেখা প্রথম পাতায় এলে সেদিন বেশী ভালবাসি না এলে ভালবাসি না।
চুপি চুপি বলি, মুখে যাই বলি না কেন আসলে এই শিশুটির উপর আমার রাগ অভিমান কিছুই নাই। সময় আর মেধার অভাবে আমার লেখা হয় কম তাই আমি আজীবন এই শিশুটির বিমাতা হয়েই থাকব। বিমাতা হলেও শিশূটির জন্য আমার আছে অগাধ ভালবাসা আর ভাললাগা। শিশুটি আমাদের সকলকে একটি সুতায় বেঁধে রেখেছে, যে সুতা দেখা যায় না কিন্ত উপলব্ধি করা যায়। এই বন্ধন মুক্ত হওয়া কিন্ত খুব কঠিন। ভাবুনতো একবার এই দুই বছরের শিশুটির কি শক্তি।
আসুন আমরা সবাই মিলে শুভেচ্ছা জানাই আর আশির্বাদ করি শিশুটি যেন অনেক বড়...............এস পি বা দারোগা হয় আর আমাদের সবাইকে এভাবে বেঁধে রাখে। শুভ জন্মদিন সচল !!!
মন্তব্য
আপনাদের দেখলে লজ্জা লাগে খুব। আমরা যারা একেবারে প্রথম দিকে "ইন্সট্যান্ট সচল", তারা কত আয়েশের সাথে পূর্ণ সচলত্ব পেয়ে গেছি!
একেক জন অতিথি সচল হতে হতেই যত লেখা প্রকাশ করে ফেলেন, আমরা অনেকেই দু'বছরে সে-পরিমাণ লেখা লিখিনি। এ-যুগে হলে আমার মনে হয় না অতিথি থেকে সচল হওয়া লাগতো।
আমিও পুরনো লেখা দিয়েছিলাম প্রথম দিকে। অন্য ব্লগে না হলেও অনেক আগে লেখা। এখন টের পাই নিয়মিত নতুন নতুন লেখা দেওয়া কত কষ্টের!
তবে এই অপেক্ষা করানোটা আমার ভালো লাগে। অতিথিদের সাথে পরিচয়ের সুযোগটা হয়। এখন তো "[অতিথি]" দেখলেই সেই পোস্টে ঢুকি। বরং পূর্ণ সচলদের অনেক লেখাই অবহেলিত রয়ে যায়।
আসলে সচলের প্রতি আমাদের ভালোবাসাকে কোনো ভাবেই পরিমাপ করা যাবে না। সেই দুই বছরের শিশুই হোক কিংবা দু'দিনের হোক। সচল না হওয়ার আগে লেখা প্রকাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার অভিজ্ঞতা আমারো আছে। তবে এই অভিজ্ঞতা নিয়ে সচল হতে পারার যে তৃপ্তি তা আশা করি আপনি একদিন পাবেন।
লেখায়
ওয়েলকাম ব্যাক লীনা আপু।
---
শুভ জন্মদিন সচল ।।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
হুঁম...! তাহলে এই কথা !
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
দ্রুত সচল হোন, এই কামনাই করি!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
ভালো লাগল লেখাটা, আপনি সাহস করে লেখা দিয়েছিলেন, আর আমার সাহস করতেই লেগেছে ৯ মাস প্রথম লেখা দিতে
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
নতুন মন্তব্য করুন