• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

হাইকিং - চমকে ভরা পিকাচু পিক

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি
লিখেছেন এস এম মাহবুব মুর্শেদ (তারিখ: বুধ, ০৪/০৭/২০০৭ - ৭:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১। যাত্রা হল শুরু

ছবি ১: আমি ও আমার বৌ ক্যাসে গ্রান্ডেতে

গত ডিসেম্বরে (২০০৫) আমাদের এক ইন্ডিয়ান বন্ধু মাস্টার্স শেষে চলে যাবে বলে ঠিক করলাম কোন এক জায়গায় ঘুরতে যাই। আমার ল্যাবে এবং ডিপার্টমেন্টে বাঙ্গালী বেশী নাই বলে, সমবয়সী ইন্ডিয়ান গুলোর সাথে আমার খাতির বেশী। সময়, এডভেঞ্চার ইত্যাদির কথা বিবেচনা করে ঠিক করা হল টেম্পি থেকে ঘন্টা দুয়েক দুরে তুসন (Tucson) শহরের একপ্রান্তে অবস্থিত পিকাচু পাহাড়ে যাওয়া হবে। আমার বৌ ভয় পেতে পারে ভেবে আমি আর তাকে বলি নাই যে আমরা পাহাড় চড়ব। আমাদের প্ল্যান হলো, সারাদিন পাহাড় চড়ে, কাছেই অবস্থিত পার্কে ক্যাম্পিং হবে। শীতকাল বলে রাতে প্রচন্ড ঠান্ডা পড়বে, সেজন্য নেয়া হবে প্রফেশন্যাল তাঁবু।


ছবি ২: আমি বাদে গ্রুপের সবাই, হাইকিং শুরুর আগে

যদিও ঠিক ছিল রওনা দেব সকাল ৮ টা নাগাদ, অমিত, চিত্রা এদের ঢিলেমীর কারনে দেরী হয়ে গেলো। বেরুতে বেরুতে ১০ টা বেজে গেলো। পথে ক্যাসে গ্রান্ডে নামের একটা শহরে থেমে কিছু খাওয়া দাওয়া করে নিলাম আমরা।

২। দ্যা হাইকিং


ছবি ৩: হান্টার ট্রেইলের শুরুতে সাইনবোর্ড

আমরা পিকাচু পিক পাকের্ পৌছে রেজিষ্ট্রেশন করে নিলাম। তার পর হল হাইকিং এর পালা। ততক্ষনে ১২ টা বেজে গ্যাছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল হান্টার ট্রেইল (ছবি - ৩) নামের একটা ট্রেইল। আমাদের কারোরই কোন আইডিয়া ছিল না এব্যাপারে। যে ছেলেটার উদ্দেশ্যে এই ভ্রমন, সেই নীলেশই ঠিক করেছিল এই ট্রেইলটা - কারন এই ট্রেইলটা নাকি মোস্ট এডভেঞ্চারাস। কিছুটা বর্ণনা পাবেন এখানে


ছবি ৪: "ঐ ওখানে উঠব আমরা! :O"

যাই হোক, পুরো ট্রেইলটা দুই মাইলের মতো, আর উচ্চতা হাজার দুয়েক ফিট। আমার কাছে যদিও উচ্চতা তিন হাজারের মত লেগেছে! উঠা শুরু করলাম আমরা। আমার বউ এতক্ষন পর বুঝতে পেরেছে আমার প্ল্যান কি! (ছবি - ৪) তখনও কিন্তু সে ঘাবড়ে যায়নি। আপাত দৃষ্টিতে বেশ সরল সোজা পাহাড়ই মনে হচ্ছিল এটাকে।

তবে ক্রমশ কঠিন হচ্ছিল ট্রেইলটা। মাঝে মাঝে পাথরে গেঁথে রাখা স্টিলের দড়ি বেয়ে উঠতে হচ্ছিল। আর সেই সঙ্গে শুনতে হচ্ছিল বৌ এর গজগজানি। :)


ছবি ৫: "আমরা এতখানি উপরে এসেছি? :p"


ছবি ৬: আমরা, চাতালের মত জায়গাটার কাছে।

ঘন্টাদুয়েকের মত চলার পর একটা বিরাট রক ফমের্শনের মত জায়গায় পৌছলাম আমরা। (ছবি - ৫, ৬) আমরা ভাবলাম বুঝি বেশী বাকি নেই আর। যারা নেমে আসছিল তারা ভয় দেখাচ্ছিল, সামনের অংশটা নাকি বিপদজ্জনক। আমরা ভাবছিলাম আরে ছোহ কি আর হবে। তখন কে জানে কি অপেক্ষা করছে আমাদের সামনে!

৩। দুঃস্বপ্নের শুরু

ছবি ৭: টুসি গিরিখাত ধরে নামছে

আমরা চাতালের মত জায়গাটা থেকে সামনে আগাতে দেখি, গভীর ঢালু একটা জায়গা। আমরা তো আস্তে আস্তে আগাতে থাকলাম। খুব সরু, ভয়াবহ রিস্কি একটা জায়গা। আমাদের অনেকে বসে বসে নামতে লাগল। (ছবি-৭)। বড় বড় পাথরের চাঁই পাশ কাটিয়ে আমরা নামতে লাগলাম। এই ভীষন দুর্গম জায়গার ছবি তুলতে গিয়ে দু দুবার আমার ক্যামেরা বাড়ি খেয়েছে। ভাগ্যিস হাতের সাথে বাঁধা ছিল ক্যামেরাটা। নইলে সোজা পৌছাতে দুহাজার ফিট নীচে।


ছবি ৮: ভয়াবহ গিরিপথটার স্কেচ

ছবি - ৮ এ দেখানো A জায়গাটায় হচ্ছে চাতালের মত অংশটা। আমরা লাল রঙে দেখান পথ ধরে একটু নীচের দিকে এসে আবার উপরের দিকে উঠছিলাম। এর মধ্যে টুসী একটু প্যানিক ফিল করছিল। আমি তাকে সাহস দিতে দিতে আনছিলাম। এতে করে আমরা গ্রুপের থেকে একটু পিছিয়ে পড়ি। ছবি - ৯ দেখলেই বুঝবেন টুসী কত কষ্ট করে হাসছে।

ছবি - ৮ এ দেখানো B পর্যন্ত পৌছাতে পৌছাতে দেখি, ভয়াবহ খাড়া অংশ পার হতে হচ্ছে। আর একটু সামনে থেকে দেখি, আক্ষরিক অথের্ সম্পূর্ণ পাথরে গাঁথা স্টিলের দড়ি বেয়ে, ভাটির্ক্যালি উপরে উঠতে হবে। টুসির পায়ে, সঠিক ধরনের জুতো ছিল না, তদুপরি এ পযার্য়ে এসে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে ও খুব ভেঙ্গে পড়ে। তাই অপেক্ষারত বন্ধুদের বললাম তোমরা যাও আমরা এখানে অপেক্ষা করছি।


ছবি ৯: টুসি কষ্ট করে হাসার চেষ্টারত

টুসী কে অনেক বোঝানোর পর ও একটু রাজি হল। কিছু দুর যাবার পর দেখি আমরা রাস্তা ভুল করে অন্যদিকে যাচ্ছি। আমাদের বন্ধুদেরও দেখা যাচ্ছেনা। সঙ্গে মোবাইলও আনিনি। কি করব বুঝতে পারছিলাম না। আমার চেহারা দেখে টুসীর উপর আতঙ্ক ভর করল। এবার সম্পূর্ণ ভেঙ্গে পড়ল সে। সে ফিরে যাবেই এখান থেকে। এবার আমি আর না করলাম না।

ফিরে যাবার সময় বাধল বিপত্তি। যে রাস্তা ধরে নেমে আসা সহজ ছিল সেটা বেয়ে ওঠা খুবই টাফ লাগছিল। আর আগে গ্রুপের সাথে ছিলাম। এবারে একা, প্রতি মূহুর্তে মনে হচ্ছিল পথ ভুল করছি কিনা। একবার পথ ভুল করে আরেকটু হলে স্লিপ করছিলাম আরকি। টুসী কোন রকমে টেনে তুলল।

কয়েকটি বাক তো ছিল সিম্পলি ভয়াবহ, নামার সময় বসে নামা গেছে, কিন্তু উঠতে গিয়ে হাঁচড়ে পাঁচড়ে জীবন বেরিয়ে যাবার দশা। টুসির জুতো স্লিপ করছিল। সেতো আতঙ্কে অস্থির হয়ে ফুপাতে লাগল। আমি পেছনে ছিলাম, তাকে কোন রকমে ঠেলতে ঠেলতে উঠতে লাগলাম। অবশেষে বিরাট যুদ্ধ শেষে আবার পৌছলাম A পয়েন্টে (ছবি - ৮)।


ছবি ১০: আমরা অবশেষে ভয়াবহ অংশটা পাড়ি দিয়ে এসে


ছবি ১১: চাতালের মত জায়গাটায় একটা ফলক

মনে হচ্ছিল যেন যুদ্ধ জয় করেছি। আমরা দুজনে বেঁচে ফিরবার জন্য আল্লাহর কাছে অসীম দোয়া করলাম। (ছবি - ১০, ১১)।


ছবি ১২: নেমে আসার সময় একটা জায়গা

তারপর আমরা বাকি রাস্তা নেমে আসলাম (ছবি - ১২)। নেমে আসার সময় কতবার যে মনে হয়েছে রাস্তা ভুল করছি কিনা। কতবার মনে হয়েছে ঝুনঝুনির শব্দ শুনলাম নাতো? একবার তো টুসি আমাকে ডেকে থামাল, বলল শোনো কোথা থেকে জেন ঝুনঝুন শব্দ হচ্ছে। আমিও শুনে বললাম বাতাসে গাছ-পাথরে ঘষার শব্দ। তখনও কি জানি, এখানে র্যাটল স্নেকের অবাধ বিচরন?


ছবি ১৩: তাঁবু তৈরীর সময়

যাই হোক শেষ অবধি নেমে আসলাম আমরা। আধা ঘন্টা ব্যবধানে আমাদের বন্ধুরাও নেমে আসল। সবাই হাত মুখ ধুয়ে আমাদের ক্যাম্পিং এর জায়গাটায় পৌছলাম। তাবু খাটাতে গিয়ে দেখি একটা তাবুর একটা অংশ মিসিং (ছবি - ১৩)। সুতরাং একটা তাঁবু কিনতে হবে। সবাই মিলে তুসন শহরটাতে গেলাম। সেখান থেকে খাবার দাবার শেষে, ওয়ালমার্ট গেলাম তঁাবু কিনতে। কিন্তু কপাল খারাব হলে যা হয় আরকি, সস্তার মধ্যে তাঁবু পাওয়া গেলনা। তাই প্ল্যান হল আমরা রাত কিছুক্ষন কাটিয়ে ফিরে যাব টেম্পি।


ছবি ১৪: আমরা আগুনকে ঘিরে

রাত বাড়তেই ঠান্ডার মধ্যে আমরা ক্যাম্প ফায়ার করে তার চারধারে দাঁড়িয়ে গল্প গুজব করতে লাগলাম (ছবি - ১৪) । একটা মজার খেলা খেলছিলাম, কোন একটি মুভির নাম অভিনয় করে বোঝাতে হবে অন্যদের। যাইহোক রাত ২ টা নাগাদ সবাই ক্লান্ত এবং ফেরার পালা। অবশেষে ক্লান্তিকর ভ্রমন শেষে ভোর রাতে ফিরলাম বাসায়। সঙ্গে নিয়ে, প্রচন্ড শিহরন জাগানো হাইকিং এর একটা স্মৃতি।

এখন মাঝে মাঝে ভাবি কি হতো যদি আমাদের কেউ একজন ফস্কে পড়ে যেত? এত মায়া বির্সজন দিয়ে বাবা মা আমাদের পড়তে পাঠিয়েছে, তাদের কি হত? চিন্তা করতে চাইনা - কষ্ট বিনা কেষ্ট লাভ হয় কি মহীতে?

(প্রথম প্রকাশ: সামহোয়্যার ইন ব্লগ ২০০৬-০৫-০৯)


মন্তব্য

সুজন চৌধুরী এর ছবি

জটিল!!!
বড় আমোদ পাইলাম।
____________________________
লাল গানে নীল সুর হাসি হাসি গন্ধ......

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

:-?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

শ্যাজা এর ছবি

প্যারাগ্রাফের মাঝে মাঝে ছবি দওয়াতে লেখাটা আরও জমে গেছে।

ঝুলিতে আর কি আছে বের করেন মিঞা :)


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আমার কথাও শ্যাজার মত।
প্যারায় প্যারায় ছবি। মারাত্মক। দেখি ভ্রমণকাহিনী বাকী রয়ে গেছে একটা। নামাতে হয়।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অমিত আহমেদ এর ছবি

আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। ভ্রমন কাহিনীতে পাঠকের মনযোগ ধরে রাখার কঠিন কাজটা লেখক সাবলিল লেখা আর ছবি দিয়ে সূচারু ভাবেই সম্পন্ন করেছেন।


আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।