মাথার উপর যখন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে...

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি
লিখেছেন এস এম মাহবুব মুর্শেদ (তারিখ: সোম, ০৩/১২/২০০৭ - ১১:৫২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নিদারুন অসময় যাচ্ছে এখন। তিন বছর হয়ে যাচ্ছে মার্স্টাস করতে এসেছি। পাকিস্থানী প্রফেসরের কথা আমি কাজ করিনি। থিসিস যা লিখেছি কিচ্ছু হয়নি। পেপার যেটা পাবলিশ হয়েছে সেটা ট্র্যাশ। তৃতীয় পক্ষের কাছে তার কথা সত্যি মনে হতে পারে।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যে পেপার পাবলিশ হয়েছে সেটার রিভিউয়াররা তাকে জার্নালে প্রকাশের জন্য আমাকে অনুরোধ জানিয়েছে। থিসিস অত খারাপ হয়নি যতটা সে দাবী করছে। আর পুরো প্রজেক্টটা চার/পাঁচ ছাত্রের করার কথা, সেখানে একলা আমি নামিয়েছি পুরোটা। সচলায়তন নিয়ে গত সামারে ব্যস্ত ছিলাম ঠিকই কিন্তু তারে আগেও আমি প্রচুর কাজ করেছি।

এই বুড়ো তার সব ছাত্রের সাথে এরকম করে। গত বিশ বছরের সবগুলো ছাত্র তার কাছে খারাপ। শুনেছিলাম এই বুড়ো সস্তা, এতো সস্তা ধরনের আগে বুঝিনি। এখন আমার অনিশ্চিত ডিফেন্স, অনিশ্চিত ভিসা স্ট্যাটাস, অনিশ্চিত চাকরীর অবস্থা। কি করি কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। শুনেছি ছাত্ররা পাগল হয়ে প্রফেসরদের গুলি টুলি করে বসে, কি অবস্থায় পড়লে করে টের পাচ্ছি।

এর মধ্যে এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়েছি। গাড়ি রেসিডেন্সিয়াল এলাকার রাস্তার উপর দাঁড় করিয়ে রেখে গিয়েছি। এসে দেখি কে যে গাড়ি পিছনটা ভচকে দিয়ে চলে গেছে। সামান্য নষ্ট হওয়া গাড়ি চলছে কিন্তু সেটা সারাতে মূল গাড়ির দামের চেয়ে বেশী খরচ হবে। সুতরাং গাড়ি বাতিল।

ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী যে টাকা দিতে চাচ্ছে তা অপ্রতুল। তাদের সাথে দফায় দফায় ঝগড়া হয় কিন্তু তারা অনড়। এদিকে একদিন পুলিশ ধরে বসল, ভাঙ্গা গাড়ি চালাচ্ছি কেন? আবার আজকে গাড়ি র্স্টাট দিতে গিয়ে দেখি ঠান্ডায় ব্যাটারী ডাউন। কোন দিকে যাই?

চাকরী নিয়ে কি করব বুঝছি না। এই মাস থেকে রিসার্চ এসিস্ট্যান্টশীপ বন্ধ হয়ে যাবে। আমার স্ত্রী চাকরী খুঁচ্ছে, কিন্তু ডিসেম্বরের ছুটি শুরু হয়ে গেছে তাই প্রায় সব কিছু বন্ধ। তারউপর যেহেতু আমি মধ্যবর্তীকালীন চাকরীর অনুমতি পাইনি (আমার প্রফেসরের কারনে) তাই চাকরী একটা হলেও শুরু করতে পারব না। আগামী মাসে কি হবে অনিশ্চিত।

একসময় হয়ত সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে। সব কিছু সুস্থির হবে। তখন এই অবস্থার দিকে তাকিয়ে হাসব। তবু যখন মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে তখন সৃষ্টিকর্তাকে গালি দিতে ইচ্ছে করে। আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করি, "আমি কেন?" উত্তর আসে, "কারন তুমি এটাকে আসতে দেখনি"।

সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য আমারই প্রস্তুত থাকা উচিৎ ছিল আসলে।


মন্তব্য

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

আপাতত সব বাদ দিয়ে পড়ায় ফোকাস করো। ঐটাই সবচেয়ে বেশী জরুরী। এডভাইজার বদলানোর কোন উপায় নাই?

-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

??? এর ছবি

হ্যাঁ, সুপারভাইজার বদলানো একটা ভালো আইডিয়া। বিবরণ শুনে মনে হচ্ছে সুপারভাইজার আসলেই হোস্টাইল। এই অবস্থায় কাজ কন্টিনিউ করা মুশকিল। বিশেষত ডিফেন্সের সময় অনেক খুঁটিনাটি বিষয় থাকে, যখন সুপারভাইজারকে একটা প্রো-স্টুডেন্ট রোল প্লে করতে হয়। এই পাকি তো মনে হয় তখন ভালোই ঘাপলা বাঁধাবে।

খারাপ সময় দল বেঁধে আসে, ঘাবড়াও মাত্। দেয়ার শুড বি লাফটার আফটার পেইন, সানশাইন আফটার রেইন!
..............................................................
শুশুকের ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে সাঁতরে এসেছি কুমীরে-ভরা নদী!

সবজান্তা এর ছবি

আমিতো ভাই একটা পাকিস্তানী পিপড়ারেও ভরসা পাই না। সেইখানে আপনে যায়া ক্যামনে একটা জলজ্যান্ত পাকিস্তানী মানুষের খপ্পরে পড়লেন ??

যাক , সমবেদনা থাকলো । তবে আশার কথা এইটাই বিপদ কারো চিরদিন থাকে না। আশা করি আপনার ও দ্রুত ভালো দিনে আসবে।

ভালো থাকবেন ।
-----------------------------------------------------
অলমিতি বিস্তারেণ

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

.................................................................

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বাদ দেন
অত পড়ে কী হবে
দেশে চলে আসেন
ট্রাফিক জামের ভেতর দাঁড়িয়ে রাজা-উজির মারবো
আর বিকেলে বিড়ি ফুকবো

কিসের অত পড়া-গাড়ি-বাড়ি- ইনসুরেন্স
চলে আসেন
(একদিনের থাকা খাওয়া ফ্রি)

হিমু এর ছবি

মাথা ঠান্ডা রাখো।


হাঁটুপানির জলদস্যু

কনফুসিয়াস এর ছবি

হাল ছাইড়েন না কোন মতে। সব ঠিক হয়ে যাবে।
-----------------------------------
যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

সমবেদনা জানাই ।আপনার অবস্থাটা কল্পনা করে মন খারাপ হচ্ছে ।ধৈর্য হারাবেন না , অতিরিক্ত টেনশন নিবেন না ।

দুইটি বিষয় ভেবে দেখতে পারেন ।
প্রথমটি হচ্ছে এডভাইজর বদলানো । (যদি সময় ক্ষেপন এবং অন্যান্য অসুবিধা না হয় , তাহলে এটাই ভালো সমাধান )
দ্বিতীয়টি হচ্ছে ঘুষ দেয়া । ( সিরিয়াসলি বলছি কিন্তু ,ফান করে নয় )
পাকিস্তানীকে কেনা যাবে না , এটা বিশ্বাস করি না ।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

মাথা ঠান্ডা রাখো।
আমি দু:সময় পকেটে নিয়া ঘুরি। মাঝে মধ্যে বাইর কইরা দম দেই।
বাকি কথা সবাই কইছে।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

শামীম এর ছবি

আমারই তো অসহায় অনুভব হচ্ছে ... ...

তবে এরকম পরিস্থিতিতে আপনিই প্রথম নন। অন্য বেশ কিছু মানুষও পার করে এসেছে একই ধরনের পরিস্থিতি। ওনারা পরবর্তীতে ভাল আছেন। আপনিও পারবেন ....

মেঘ দেখে তোরা করিসনে ভয়
আড়ালে তার সূর্য হাসে ...

মাথা ঠান্ডা রাখুন, প্রফেসরকে তেলের উপরে রাখুন। হাত কচলানো দেখতে অনেকেই পছন্দ করে ইয়ে, মানে...

থিসিসটা প্রফেসর যেমন ভাবে বলেন সেভাবে লেখুন। তবে আগের বাতিল করে দেয়া ভার্সানগুলোর হার্ড-কপি ফাইলে সংগ্রহ করে রাখুন। আমি নিশ্চিত যে ২ বা ৩ বার কারেকশন দেয়ার পর আপনার মূল লেখাটাতেই ফেরৎ আসবেন উনি ... তখন ফাইলটা দেখালেও দেখাতে পারেন তাকে (ব্যাপারটা একটু ঝুকিপূর্ণ)..
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

মাথা ঠান্ডা রাখেন। যতো রকম বিকল্প সমাধান আছে সব ভাবেন। আশা করছি সব ঠিক হয়ে যাবে।

মাশীদ এর ছবি

এমনিতেই মেজাজ খারাপ ছিল, তোর এই পোস্ট পড়ে মন খারাপ হয়ে গেল। তুই যে অনেক কাজ করেছিস সে ব্যাপারে আমার কোন সন্দেহ নেই। আন্ডারগ্র্যাডে তোর আর আরেফিনের গ্রুপকে দেখতাম সারাদিন ল্যাবে বসে কাজ করছিস। আমরা বাকিরা রীতিমত ভয় পেয়ে যেতাম! তোর কপাল খুবই খারাপ যে এমন সুপারভাইজার পেয়েছিস যে সেটা অ্যাপ্রিশিয়েট করেনা। কিন্তু ৩ বছর এর সাথে থাকার পরে সুপারভাইজার বদলানোর এখন আর তো কোন স্কোপ নেই। তুই শুধু এখন তার কথামতো থিসিস ঠিক করতে পারিস, সে যা চায় তাই দে, even if it conflicts with ur views. আমারো কিছু ক্যাচাল ছিল কাজ নিয়ে (সবারই কম-বেশি থাকে) আর থিসিস লেখা নিয়ে খুবই চিন্তায় থাকতাম। তখন আমার ফ্ল্যাটমেট (যে কিনা PhD করতে গিয়ে সুপারভাইজারের সাথে বনিবনা না হওয়ায় ডাউনগ্রেড করে মাস্টার্স করেছিল) আমাকে বলেছিল যে খামাখা সুপারভাইজারদের সাথে ক্যাচালে যেয়ে সময় নষ্ট কর না কারণ তাতে তোমারই ক্ষতি। তারা যা চায় বা যা বলে সেভাবেই লিখে জমা দিয়ে দাও। আমি শেষদিকে সেটা বেদবাক্য হিসেবে নিয়েছিলাম তাই কোনভাবে বের হয়ে গেছি ঠিকমত। তুই চেষ্টা করে দেখ। কয়দিন আর আটকে রাখবে! দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে তাড়াতাড়ি। গুড লাক!


ভাল আছি, ভাল থেকো।


ভাল আছি, ভাল থেকো।

নিঝুম এর ছবি

আমি বলিনা আপনি চিন্তা করবেন না
আমি এও বলিনা যে আপনি ভেঙ্গে পড়েন
আমি জানি আপনি পারবেন।পারতেই হবে যে...
একটু ভয় লেগেছিলো ফাকিংস্তানী প্রফেসর শুনে,কিন্তু ব্যাপার না।জয় আমদেরি হবে ভাই...

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

পরিস্থিতি খারাপ; কিন্তু এইটা নরমাল সিনারিও। অনেক প্রফেসরই আছে, তারা বিভিন্ন কারণে শেষের দিকে এসে প্যাঁচ কষে কিভাবে আরো বেশিদিন কাজ করানো যায়। উপমহাদেশীয় স্টুডেন্টদের সাথে বাজে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে উপমহাদেশীয় বংশোদ্ভূত প্রফেসরদের দুর্ণাম সারা পৃথিবীতেই, সেটা পাকিস্তানি বলে কথা নয়, ইন্ডিয়ান, বাঙালি সবাই-ই মোটামুটি স্টেরিওটাইপড।

কাজকর্ম যে খারাপ হয় নাই, এটা ১০০% কনফার্ম। কারণ, কাজ খারাপ হতে থাকলে সে আগেই সিগনাল দিত, শেষে এসে আটকে দিতো না। মাস্টার ডিগ্রীর জন্য পেপার পাবলিশই তেমন জরুরী নয়, পেপারের মান তো পরের কথা। কারণ, এটা হলো রিসার্চের একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়। অতএব, কাজ ভালো হয় নি, পেপার ট্রাশ এগুলো যাস্ট কথার কথা।

পরিস্থিতি যতোটা খারাপ ভাবছো, ততোটা খারাপ নয়। আমার ধারণা খুব সহজেই ম্যানেজ করতে পারবা। মাশীদের সাজেশনগুলো কাজের। এর বাইরে আরো দুইনাম্বারী করতে পারো। আমার ধারণা, প্রফেসর চাইছে তার আন্ডারে পিএইচডি করো। এজন্যই প্রেসার ক্রিয়েট করা। সো, পিএইচডি করবা এরকম একটা মুলা দেখাইয়া ডিগ্রী নিয়ে কেটে পড়তে পারো।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

অনেকগুলো ইস্যু একসাথে।
ডিগ্রি, জীবনযাপনের আর্থিক টানাটানি, বিদেশে ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা।
সহমর্মিতা!!!

ডিগ্রির বিষয়ে শামীম ও মাশীদের পরামর্শই সঠিক। সুপারভাইজারকে বদলানোর অবস্থা এই পর্যায়ে নাইও ধারণা করি। একদিন ভদ্র ছেলের মত তার কাছে হাজির হয়ে জানান দেয়া ভালো যে তুমি আমাকে বলে দাও কোন ১০টা জিনিস আমাকে করতে হবে। তার কথা শোনাই ভালো।
এই থিসিস কোনো মাস্টারপিস নয়। এটা হচ্ছে মাস্টার হওয়ার বেসিক ট্রেনিং। সুতরাং এটা সুপারভাইজারের কথা শুনে করাই ভালো। মাস্টারপিস পরে চাইলে করা যাবে।
আর্থিক বিষয় ওচাকুরি সম্পর্কে বাস্তবসম্মত একটা প্ল্যান করতে হবে পরিস্থিতি বুঝে। এটার দিকে সবচে গুরুত্বপূর্ণ। সুনীল গাঙুলির কথাটা মনে পড়ছে, সাহিত্যের চেয়ে জীবন গুরুত্বপূর্ণ। তসলিমা নাসরিনের বর্তমান অবস্থায় তিনি মন্তব্য করেছেন।

বিদেশে ভবিষ্যতের বিষয়টা ভবিতব্যের ওপর ছেড়ে দেয়াই ভালো। যে বিষয়ে আপনার হাত নেই সে বিষয় নিয়ে নিজেকে দোষারোপ করার মানেও নেই। প্রিয়তমাকে জড়িয়ে ধরে বলুন: এই পৃথিবী এতো সুন্দর তুমি আছো বলেই...
এবং যতক্ষণ তুমি আছো ততক্ষণ আমার কোনো দুশ্চিন্তা নেই...........
-----------------------------------------------
খড়বিচালি জোগাড় করি, ঘর বানাবো আসমানে

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি যখন মাষ্টার্স করি, দুই বছর কাজ করার পর ঠিক আপনার মতো একই কারণে এডভাইজার বদলে পুরা দুই বছরের কাজ ফেলে দিয়ে নতুনএডভাইজারের সঙ্গে নতুন টপিক নিয়ে কাজ শুরু করি। টাকা পয়সার টানাটানি তো ছিলোই তার উপর পরের সেমেষ্টারে এসিস্ট্যান্টশিপ পাবো কিনা, তাহলে ভিসার কি হবে, ডিগ্রীটা তাহলে হলোই না...... এইসব নিয়ে কত যে খারাপ সময় গেছে। তবে এখন অবিশ্বাস্য মনে হলেও আপনাকে বলি - এই সময়টা কেটে যাবে, সবারই হয় আবার সবারই যায়। মাশীদ এর সাজেশনটা খুবই প্র্যাক্টিকাল, কোনমতে খালি শেষ করা। আর আপনি অপশনাল প্র্যাক্টিকাল ট্রেইনিং(স্কুল অনুমতি দিলে ডিগ্রীর আগেও নেয়া যেতো অন্তত তখন) নিয়ে কাজ করতে পারেন?

স্নিগ্ধা

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

দুঃসময়, সন্দেহ নেই। সহানুভূতি।

অনেকেই চমৎকার, বাস্তবানুগ পরামর্শ দিয়েছেন। তবে আরিফ জেবতিক দারুণ বলেছেন:

পাকিস্তানীকে কেনা যাবে না , এটা বিশ্বাস করি না ।

পৃথিবীর যাবতীয় দুই নম্বরী কাজে পাকিস্তানীরা এক নম্বর।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

ভয় খাইয়েন না, মামু। অন্তত এই অধম আছে আপনার সহ-ভুক্তভোগী হিসেবে। আমার কাহিনী পরে গুছিয়ে বলবো। আপাতত আমিও আমার সুপারভাইজরের মন রাখার জন্য কাজ আগাই। আপনি তো তবু টাকা পেয়েছেন, ভাই। আমাকে বিনা পয়সায়ই খাটায় মারতেসে শালারা। টাকা দিয়ে বেশি দিন রাখলে বা বেশি খাটালে পোষাতো। অন্তত কিছু গাইডলাইন দিলেও চলতো। আমাকে তো সোজা বলে দিলো 'কনফারেন্স পেপার চাই'। কিসের উপর, কী নিয়ে, কেমন রিসার্চ করে, এসব নিয়ে কোনই ধারনা নাই! 'ইউ আর অন ইওর ওউন দেয়ার!' বলে নিজে নিজে প্রপোজাল লিখে ফান্ড আনো। আমার এক চেনা ভাই তো এক ইরানির খপ্পরে পড়ে ২ তা পিএইচডির সমান কাজ করেও একটা মাস্টার্স পাচ্ছে না। নিজেই গাছ-মাটি-পাথর কামড়ে পড়ে আছি, আপনাকে কী আর বলবো।

তীরন্দাজ এর ছবি

এক হতাশাবাদী বলেছিল, 'জীবনটা মুরগীরদের খোয়াড়ে ঢোকার সিড়ির মতো। শুরু থেকে শেষ অবধি বিষ্ঠায় পরিপূর্ণ।' খারাপ সময়ে মাঝে মাঝে এটাও বিশ্বাস করে বসি।

কিন্তু আপনি তো আশার আলো দেখছেন। এটাই বা কম কি?
'জীবনটা যুদ্ধের।', এ কথাটি মনে রাখলে অনেক শক্তি পাবেন আত্মার ভেতর থেকে।। আপনার শুভকামনা করছি মুর্শেদ।

**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ss এর ছবি

স হ মর্মিতা প্রকাশ করছি।
দু'একটা ছোট্ট বিষয়, ওপরের সাজেশন গুলো স হ:
১। জমানো টাকা দিয়ে ম্যাক্সিমাম কদ্দিন চলবে,তার একটা দ্রুত হিসেব এবং অবিলম্বে সমস্ত নন এসেনশিয়াল খরচ ( হতে পারে সিগারেট, গাড়ি, পেট্রল, দাওয়াত,গানবাজনা, ইতিউতি ঘোরাঘুরি যেকোনো কিছুই, যেটা আগামী ৩ থেকে ৬ মাস বন্ধ রাখা যায়, এবং বন্ধ রাখলে আপনি মারা যাবেন না) বন্ধ করা বা মিনিমামে নামিয়ে আনা। একটা আ্যকশন প্ল্যান করা যায় এভাবে যে ক)থিসিস সাবমিট হোলে এই এই খরচ আমি আবার শুরু করতে পারি, তদ্দিন এটা এটা স্টপ খ) দু একটা জিনিস luxury হলেও আমার জন্য জরুরী, i.e. গাড়ী ছাড়া চলাফেরা গ্রোসারী করা অসম্ভব, সুতরাং গাড়ী এসেনশিয়াল।।। এভাবে।
২। প্রফেসর/ বস যিনি বা যেই হোন না কেন, যেমনই হোন না কেন, আপাতত: তিনিই আপনার আল্লাহ। খুব বিষময় শোনালেও এটাই সত্যি, এই মুহূর্তে। আপনার প্রতিভা মার খেয়ে যাবে আপনার পিপল ম্যানেজমেন্ট স্কিলের অভাবে। পৃথিবীর অন্য কাউকে খুশী করার আগে, তাকে খুশী আপনাকে করতেই হবে। এটা আপনার ( আমার ছিলো ভীষণ রকম, ভুগেছি সেজন্য ব হুত) নীতিবিরুদ্ধ হতে পারে, কিন্তু ডিগ্রী শেষ করা আপনার জন্য জরুরী হলে, এই মুহূর্তে এই বাক্য বেদবাক্য। মনে রাখা ভালো, সে পাকিস্তানী , ও সাদা এগুলো থেকে একদম প্রেজুডিসড হবেন না। ধরে নিন উনি বাঙ্গালী হলেও উনি ঠিক এরকমই করতেন আপনার সাথে। প্রতিপক্ষকে বাগে আনতে হলে তার খেলবার কৌশল জানা জরুরী। দেখুন আপনি তা জানেন কি'না।
জানলে কাজে লাগান। দরকার হলে তার কাছে ছোট হোন, যেটুকু ছোট না হলেই নয়, যেমন: বলতে পারেন যে, দেখো, কত আশা নিয়ে আমি পড়তে এসেছিলাম, কিন্তু এত বছর পর মনে হচ্ছে আমি একটা গাধা, আচ্ছা আমি তো চেষ্টা করলাম, এই এই ভাবে, কিন্তু ওই জায়গাটা তোমার সাথে মিললো না কেনো? আপনি হয়তো পুরোটাই জানেন, তারপরেও সে যা বলে, apparent agreement দেখানো ভীষণ ফলপ্রসূ। প্রফেসর যতই খারাপ হোক, প্রতিষ্ঠান কিন্তূ প্রথমে তাকেই সাপোর্ট দেবে। এটা খেয়াল রাখবেন প্রতিষ্ঠান অনেক বেশী শক্তিশালী। সুতরাং তার ইমোশনাল intelligence বা EQ এর কাছে আপীল করাটা বেশী কাজের। উপমহাদেশীয় প্রফেসর রা এবং ছাত্র হিসেবে আমরাও emotional appeal এ অনেক বেশী প্রতিক্রিয়া দেখাই, এটা আপনার ক্ষেত্রে positive ভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করুন।
৩। বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া কোন সমাধান নয়। যেখানে আছেন, সেখানে থেকেই বিজয়ী হতে হবে। বাংলাদেশ এ ঠিক এই জিনিস ঘটলে আপনি কি করতেন, চায়না যেতেন, ভারত যেতেন? এ ভাবে ভাবুন। বুয়েটের সব প্রফেসররাই কি ভালো ছিলো, তারা কেউ গোলমাল করলে কি কি করতেন, ব্যাপারটা শুধু ক্ষমতার অসাম্য, ক্ষমতাবানকে জানতে দিন আপনি ক্ষুদ্র, আপাততঃ। এরপর যখন পাশ করে আপনার প্রফেসর এর থেকে ১০ গুন ভালো চাকরি নিয়ে আপনি তার সামনে দিয়ে হাসতে হাসতে বের হয়ে যাবেন, সেই সময়টার কথা মাথায় রাখতে হবে, সেটাই সমাধান।
৪। নমনীয় হতে শিখুন অভদ্রদের সাথে। এটা খু-উ-ব কঠিন। ভীষণ রকম। তারপর ও। যতক্ষণ দরকার, ঠিক ততক্ষণ। যখন আপনার ভালো দিন আসবে ( এ কৌশলে চললে অবশ্যই আসবে হো হো হো তখন তাদেরকে সুন্দর করে মিডল ফিংগার।
ভরসা রাখুন, নিজের প্রতি।

ss

দ্রোহী এর ছবি

হাল ছেড়োনা বন্ধু, বরং কন্ঠ ছাড়ো জোরে। সময়ে সব ঠিক হয়ে যাবে। দুঃস্বপ্নের প্রহর এত সহজে কাটে না।


কি মাঝি? ডরাইলা?

আরশাদ রহমান এর ছবি

আশাকরি সব ঠিক হয়ে যাবে।
সব দেশেই ভালো খারাপ মানুষ আছে তবে পাকু যখন খারাপ হয় তখন পুরানো ক্ষতটা মনে পড়ে যায়।

তানভীর এর ছবি

সমবেদনা পরিস্থিতির জন্য। মাস্টার্সে থিসিস করা তো অনেক ইউনি-তেই রিকোয়ার্ড না। অনেকে থিসিস করতে না চাইলে (মানে এডভাইজার গ্যাঞ্জাম করলে আর কি) এমএসসি না করে এম ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী নিয়ে বের হয়ে যায়। গ্রাজুয়েট স্কুলকে বলে এটাকে এম ইঞ্জিনিয়ারিং করা যায় না?

আমার এক বন্ধুর সাথে এক বিশিষ্ট বাংলাদেশী প্রফেসর (আহা বাংলাদেশী!) এই রকম করছিল (উনি দেশ থেকে অনেক বাংলাদেশী ছাত্র নিয়া আসছে এই পর্যন্ত, খাইস্টামির জন্য একজন ছাড়া কেউই টিকতে পারে নাই!!)। খাটায়ে মারত, কিন্তু কোন কাজই এডভাইজারের পছন্দ হইত না। সে অবশ্য পিএইচডিতে ছিল। খালি কানত, অথচ তার মত পড়ুয়া ছাত্র আমি খুব কমই দেখছি। টিকতে না পেরে সে গ্রাজুয়েট স্কুলকে বলে পিএইচডি বাদ দিয়ে এম ইঞ্জিনিয়ারিং-এ কনভার্ট করছে, যাতে ঐ এডভাইজারের হাত থেকে বাঁচা যায়। হাতে যে দু/এক মাস ছিল কোমর বেঁধে জব এপ্লাই করছে। তারপর এমনই কপাল খুলছে, ইন্টেল থেকে প্রথম ইন্টারভিউর ডাক আসছে এবং ওইখানেই জব হয়ে গেছে! আপনার জন্যও এমন সুদিন হয়ত সামনেই অপেক্ষা করছে- এ কামনা করছি।

========
"পুনরায় রৌদ্রহীন রৌদ্রে আমি, পথহীন পথে"

দৃশা এর ছবি

We shall overcome
We shall overcome someday
I do believe
We shall overcome some day
We shall all be free
We shall all be free some day
We are not afraid
We are not afraid some day
We are not alone
We are not alone some day
The whole wide world around
The whole wide world around some day
We shall overcome
We shall overcome someday

বহুত হইল খাজুইরা ঘ্যান ঘ্যান...শুনেন বস আপনে কঠিন বাস্তববাদী বুদ্ধিমান ব্যক্তি...আপনারে কিছু শান্তনার বানী কিংবা আশ্বাসবানী দেওয়ার মানে হইল যাইচা পইড়া নিজের গালে নিজেই থাবর মারার মত ব্যাপার...এইগুলান ব্যাপার না বস...all in the game..cheer up.

দৃশা

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আসলেই ফ্রাস্ট্রেটেড আছি। ভাল খবর হচ্ছে এইমাত্র সে জানুয়ারীর ৩ তারিখে ডিফেন্সের জন্য রাজি হয়েছে। তাও স্প্লিট প্রেজেন্টেশন দিতে হবে। একবার তিন প্রফেসরের একজনের কাছে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। আরেকবার বাকি দুজনের কাছে জানুয়ারীতে। তবে এখনও অপশনাল ট্রেইনিংয়ের জন্য সই করেনি। ওটা না পেলে চাকুরী শুরু করতে পারব না। আমি দোয়া বিশ্বাস করি না, কিন্তু এইরকম সময়ে সৃষ্টিকর্তার কৃপা চাওয়া ছাড়া আর কিইবা করতে পারি। শুভকামনা চাইছি আপনাদের কাছে।

আরেক পোস্টে জানাবো কি করে এর কাছে ফাঁসলাম। আর কি রকম পরিস্থিতি পার করে যাচ্ছি। এগুলো ডকুমেন্টেড থাকা দরকার। নইলে বাঙ্গালী ছেলেরা না জেনে বুঝে ফেঁসে যায় এবং যাবে।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

অনিকেত এর ছবি

বস্‌, কামড় মাইরা বইসা থাকেন।
কচ্ছপ তো মেঘ ডাকলে ছাড়ে, আপনি বান আসলেও ছাইড়েন না

আর আপনার সবচাইতে বড় সুবিধা হচ্ছে, এই যন্ত্রনার সময়টা একা পার করতে হচ্ছে না। আপনার সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে আছেন আরেক জন।

আর আমরা তো আছিই।
কোনো কামে লাগতে পারলে আওয়াজ দিয়েন।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ধুরো মিয়া। ফ্রাস্ট্রেটেড হইয়া লাভ কি?
আমারে একবার একজন বড়ভাই বলছিলেন, "আমাদের চারপাশে তোমার চাইতে খারাপ অবস্থায় যেমন মানুষ আছে আবার তেমনি আমার চাইতেও অনেক ভালো অবস্থায় আছে।"

আমি বিশ্বাস করি তুমি তোমার গন্তব্যের রাস্তা বের করে ফেলবে শীঘ্রই।
বাকী কথা বদ্দা কইছে।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

অভিজিৎ এর ছবি

আপনার অবস্থা শুনে আমার নিজের পি এইচ ডি'র সময়কার কথা মনে পড়তেছে মুর্শেদ। আমিও মুক্তমনা চালাইতে গিয়া একসময় এতই এতটাই ডিরেইল্ড হইয়া গিছিলাম - যে সেখান থেইক্যা ফিরতে বহুত কষ্ট করতে হইছে। আর বন্যা তো লাঠি লইয়া মাথার উপ্রে বইস্যা ছিল, যেন অন্য কিছু করতে না পারি - শ্যাস সময় গুলায়। এখন একটাই উপদেশ আপনেরে - সলায়তন মচলায়তন চাঙ্গে তুইলা রাইখ্যা পড়া রেডি করেন। ডিফেন্সের ভাল প্রিপারেশন নেন। সচলায়তন গিরি পরেও করবার পারবেন। ডিগ্রি আর সব সময় আইব না।
==========================
পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

দেশ ও ভাবীর স্বার্থে সচলায়তন থেকে আগামী এক মাসের জন্য এস এম মাহবুব মুর্শেদ নামক ব্লগারকে ব্যান করা হোক!!

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

অভিজিতের সাথে ১০০% একমত। মাহবুব, তুমি আসলেই সচল থেকে অফ রাখো নিজেকে এই ঝামেলা পুরাপুরি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত। ডিস্ট্র্যাকশন রাইখোনা কোন। আশা করা যায়, তোমার অবর্তমানে অন্য মডু/ডেভেলপাররা কাজ চালায় নিতে পারবে।

ভিসা নিয়ে অযথা টেনশন কইরো না, এই কথা বলবোনা, কারন বলে লাভ নাই। ৯/১১ পরে বিকট মন্দার সময়ে ঐ জাহান্নামের ভিতর দিয়ে নিজেই গেছিলাম। জীবন হারাম করা এক অভিজ্ঞতা। টেনশন আসবেই। ডোন্ট লেট ইট ওভারহোয়েল্‌ম ইউ - এর বেশী কিছু বলবো না।

আর টাকা পয়সা যেভাবে যেদিক থেকে আসে আসুক। পড়াটাই টপ প্রায়োরিটি। বেশী ঝামেলা হলে দেশ থেকে আনাও নাইলে ক্রেডিট কার্ডে মাইরা দাও। ক্রিসমাস সেলস'এর সময় রিটেইল জব-ও হয়তো পাইতে পারো তুমি বা ভাবী, যদি নিয়মে বেশী কড়াকড়ি না থাকে।

ভরসা রাখো।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

সচল থেকে বিরত থাকা সমাধান না। ইজি থাকতে হইবো। ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখতে হবে বেস্ট অপশন কি। ব্যাপারটা সাময়িক। সো, ধৈর্য, বুদ্ধি এবং সাহসের সাথে সময়টাকে ফেস করতে হবে।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।