সম্প্রতি শাহী মির্জা নামের একটি ছেলে ড়্যাবের ওয়েবসাইট হ্যাক করে বিপুল পরিমান আলোচিত হয়েছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এবং বেশ কিছু বাংলা ব্লগে তাকে নিয়ে প্রচুর পোস্ট পড়ছে। সম্প্রতি কিছু লেখা দেখে মনে হল এটা নিয়ে কথা বলা দরকার।
সংজ্ঞা
প্রথমে হ্যাকারের সংজ্ঞা জানা দরকার। উইকিপিডিয়ার শরনাপন্ন হলে জানা গেল (ভাবানুবাদ):
"কম্পিউটার নিরাপত্তার আলোকে, যে ব্যক্তি কম্পিউটারের সুরক্ষা/কুরক্ষার কাজে (ভালো ভাবে বা খারাপ ভাবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে) কম্পিউটারের ভুল ধরার কাজে পারদর্শীতা অর্জন করে, অথবা কম্পিউটারে (ভালো ভাবে বা খারাপ ভাবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে) অযাচিতভাবে ঢোকার জন্য বিশেষ দক্ষতা, পদ্ধতি এবং গভীর জ্ঞান ব্যবহার করে তাকে হ্যকার বলে। সাধারনভাবে ব্যবহৃত "হ্যাকার" শব্দটি আসলে কালো-টুপি হ্যাকার বা ক্রিমিনাল হ্যকারকে বুঝিয়ে থাকে। এছাড়া সৎ বুদ্ধি বিবেচনা সমৃদ্ধ হ্যকারও রয়েছেন, যাদেরকে সাদা-টুপি হ্যাকার বলা হয়। যে হ্যাকারদের বুদ্ধি বিবেচনা নিয়ে সন্দেহ আছে তাদের গ্রে-হ্যাট হ্যকার বলা হয়। হ্যাকার শব্দটির এই বিবিধ ব্যবহারের ধোঁয়াশা দূর করতে ক্র্যাকার শব্দটিও অনেক সময় ব্যবহার করা হয়। ক্র্যাকার শব্দ দিয়ে কম্পিউটার নিরাপত্তা সাথে জড়িত ক্রিমিন্যালদের থেকে শিক্ষিত, ভালো ধরনের হ্যাকারদের আলাদা করা হয় (যেমন এরিক এস. রেমন্ড)।
কম্পিউটার সিকিউরিটি সংক্রান্ত হ্যাকিং একটি সাব-কালচার গড়ে তুলেছে যাকে অনেক সময় নেটওর্য়াক হ্যাকার সাব-কালচার বা কম্পিউটার আন্ডারগ্রাউন্ড বলা হয়। এরা দাবী করে করে যে তারা সৃষ্টিশীল এবং অস্বাভাবিক রকমের পারদর্শী কম্পিউটার ব্যবহারকারী। অপরদিকে, হ্যাকার বিরোধীরা দাবী করে হ্যাকাররা এর অপরাধপ্রবন দিকটা অনেক সময় অনুধাবন না করেই নিজেদের আর্টিস্টিক বিদ্যা জাহির করতে এবং পলিটিক্যাল কারনে হ্যাকিং করে।"
বিভিন্ন রিপোর্ট
ইত্তেফাকের রিপোর্ট [১] অনেকটাই সাইবার ক্রাইমের বিরুদ্ধে। তারা পুরো বিষয়টির অনেক বড় ইফেক্টের দিকে নজর দিয়েছে এবং সঠিকভাবে এবং সার্বিকভাবে তার বিরোধীতা করেছে।
চাইর চুট্টা (ছবি: ডেইলী নেশন)
অথচ ইত্তেফাকের ডেইলী নেশনের সুর আবার নরম। অবশ্য তারা হ্যাকারদের দোহাই দিয়ে উল্লেখ করেছে যে হ্যাকিং করা উচিৎ নয়। বিডিনিউজও ঠিক ধরি মাছ না ছুঁই পানি টাইপের নিউজ করেছে এক্ষেত্রে।
তবে সবচেয়ে অবাক লেগেছে প্রথম আলোর রিপোর্ট [২] দেখে। খুব নরম সুরে তারা টেকনিক্যালী হ্যাকারদের বরাত দিয়ে বলতে চেয়েছ যে শাহী মির্জা আসলে ২১ বছরের নাদান দুদু খাওয়া ছেলে। ঠিক বুঝতে পারে নাই যে তারা হ্যাকিং করেছে। তারা হ্যাকিং করার টেকনিক শিখেছে, ছয় মাস ধরে ড়্যাবের ওয়েব সাইটের "প্রথম পাতা ওলট পালট করেছে"। আর তারা নাকি বুঝে নাই যে হ্যাকিং একটা অপরাধ! প্রথম আলোর এই ধরনের অপরিনামদর্শী রির্পোট দেখে যার পরনাই বিরক্ত লেগেছে।
স্বভাবতই ব্লগগুলোও সরগরম ছিল বিষটি নিয়ে। একমাত্র সচলায়তন ছাড়া সবগুলো ব্লগে কম বেশী আলোচনা হয়েছে [ক]। কিন্তু সবচেয়ে অবাক হয়েছি শক্তিশালী কলামিস্ট সচল আরিফ জেবতিকের একটি পোস্ট দেখে [খ, গ]। একটি ব্লগ প্লাটফর্ম আবার সেটিকে প্রথম পেইজে লটকে দিয়েছে। আরিফ জেবতিকের মত ব্লগে এভোলিউশন সৃষ্টিকারী লেখক যখন বিষয়টি নিয়ে ভুল অবস্থানে দাঁড়ান তখন দুশ্চিন্তা ভর করে বৈকী!
আমার মতামত
প্রথম আলোর মতে শাহী মির্জা ড়্যাবের (এবং অন্যান্য সরকারী ওয়েবসাইটের) ওয়েব মাস্টারদের প্রথমে সর্তক করে দেন। তাতে তারা কান না দিলে মির্জা তাদের শিক্ষা দেয়ার জন্য ওয়েবসাইট হ্যাক করে দেখান। আহা কি মহৎ তার উদ্দেশ্যে!
এখন এই বিষয়কে বাস্তব একটা উদাহরন দিয়ে তুলনা করি। ধরেন আমি আমার গ্যারেজে গাড়ি পার্ক করে দরজা খোলা রেখে বাসায় ঢুকে পড়ি। গাড়ি লক করা থাকে কিন্তু গ্যারেজ খোলা থাকে। শাহী মির্জা পাড়ার ছেলে। সে খালি আমার গাড়ির আশেপাশে ঘুর ঘুর করে। এখন শাহী মির্জা আমাকে কয়েক দিন ধরে বলে আসছে ভাই আপনার গ্যারেজ লক করেন, নাইলে কিন্তু চোরে গাড়ি নিবে। তার কথা প্রমান করার জন্য মাঝে মাঝে গাড়ীর আশেপাশে ময়লা করে আসে। কিন্তু গ্যারেজের দরজা ঠিক করা হয়না বলে আমার আর দরজা লক করা হয়না। একদিন গ্যারেজ গিয়ে দেখি আমার গাড়ি নাই এবং একটা চিরকুট পেলাম, শাহী মির্জা গাড়িটা চুরী করেছে আমাকে দেখানোর জন্য, যে গাড়িটা ইনসিকিওরড ছিল।
তাহলে কি মির্জা চোর, নাকি আমার ওয়েল উইশার? অবশ্যই চোর! ভালো করে দরজা বন্ধ করলে কি সে চুরি করত না? তাতে একটু কষ্ট হত কিন্তু অবশ্যই সে চুরি করত।
যত বুদ্ধিমানই হোক, যত যোগ্যতাই থাকুক, বয়স যত অল্পই হোক অপরাধ অপরাধই। তার জন্য তাকে শাস্তি পেতেই হবে। উপরন্তু সাইবার ক্রাইমের এই উঠতি সময়ে একটা দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি না দিতে পারলে আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বে কিছুদিন পরে হ্যাকারে হ্যাকারে সয়লাব হয়ে যাবে। এমনিতে বিশ্বে ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকারদের কারনে প্রতিনিয়ত অজস্র শ্রম এবং অর্থ অপচয় হচ্ছে। এই তালিকায় বাংলাদেশের নাম না লেখালেও চলবে।
তবে জেল বা অবমাননাকারী কোন শাস্তি দিলে হয়ত প্রতিশোধের নেশায় হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই তাকে এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে সে শুধরাতে পারে। বড় অঙ্কের অর্থদন্ড দেয়া যেতে পারে। যেহেতু অর্থ দিতে হবে পরিবারকে, পরিবারের সদস্যরাই তাকে ট্র্যাকে রাখবে।
আর সেই সাথে সাংবাদিক এবং ব্লগারদের আহ্বান জানাই অন্যায়কে প্রশয় দেবেন না। সাইবার ক্রাইমকে এখনই না বলুন।
১ | লিখেছেন হিমু (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ৭:৪৩পূর্বাহ্ন)
মির্জা সরাসরি মিডিয়া বা ড়্যাবের কর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে জানাতে পারতেন যে ভাই, আপনাদের কিন্তু প্যান্টের চেইন খোলা, ঠিক করেন। তাতে কাজ হোলেও হোতে পারতো।
আমার মনে হয় না এই কীর্তির পরেও ড়্যাব বা অন্যান্য সরকারি ওয়েবসাইটের কোন গুণগত পরিবর্তন ঘটবে। শুনলাম কোন একটি প্রতিষ্ঠানকে বিপুল পরিমাণ টাকা দেয়া হয় এই ওয়েবসাইট পরিচর্যার কাজ করার জন্যে। এখন যা হবে, অন্য কোন প্রতিষ্ঠানকে হয়তো আরো বেশি টাকা দেয়া হবে ড়্যাবের ওয়েবসাইটকে পাহারা দেবার কাজে।
২০০৬ সালে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সরকারি বিদ্যুৎসেবার খরচ নিয়ে একটা কাজ করছিলাম, তখন দেখেছি আমাদের সরকারি ওয়েবসাইটের কী করুণ হাল। একে হ্যাক করে ঠিক করা সম্ভব নয়। এর দায়িত্বে যে কর্তারা থাকেন, তাঁদের মানসিকতা হ্যাক না করা পর্যন্ত এই পঙ্গু ওয়েবসেবার মান পাল্টাবে না।
৩ | লিখেছেন হিমু (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ৮:০৯অপরাহ্ন)
আমি সাইবার ডার্ক না, একেবারে খাঁটি ডার্ক। হ্যাকিঙের বিদ্যাও ড়্যাবের কর্তাদের মতোই। তবে বিনা কারণেই তারা আমারে ধইরা স্বীকারোক্তি বাইর কইরা নিতে পারে। নিজেকে তখন আমি শাহি মির্জা বইলাও দাবি করতে পারি, কিসুই বলা যায় না।
হ্যাকিং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেই মনে করি। তবে শাস্তির ধরন বা মাত্রা নিয়ে বিতর্ক চলতে পারে। কিন্তু যে-দেশে যুবরাজ নিরপরাধ প্রমাণিত, সেই দেশে হ্যাকিং-এর জন্য শাস্তি চাইবার ভিত্তি আছে কি?
তুলনা টানবার জন্য দুঃখিত।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~ পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও। - হুমায়ুন আজাদ
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~ টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
৫ | লিখেছেন অমিত (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ৮:০৯পূর্বাহ্ন)
অপরাধ অপরাধই ? তাহলে দেশে থাকতে অরিজিনাল সফটওয়ার কখনো ব্যবহার করেছি বলে তো মনে পড়ে না, সেটার শাস্তির কি হবে ?আর এখন যে প্রায়ই গান ডাউনলোড করি, এমপিথ্রি, পাইরেটেড ডিভিডির যে কালেকশন-এইগুলাও তো ক্রাইমের পর্যায়ে পড়ে, তাহলে ?
১০ | লিখেছেন অমিত (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ৮:২৩পূর্বাহ্ন)
আমি যেই অপরাধগুলার কথা বললাম তুমি কি তার একটাও কখনো করনি এবং এখনও দুই একটা করছো না বলতে চাও ?
আমি জায়েজ হওয়ার কথা বলি নি, বলতে চাইলাম ঐ ওয়েবসাইট হ্যাক করায় যদি কোনও অর্থিক ক্ষতি হয়ে থাকে তার থেকে লক্ষ কোটি গুন ক্ষতি বাংলাদেশের কম্পিউটার ইউজাররা করে আসছে।
১১ | লিখেছেন হিমু (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ৯:১৩পূর্বাহ্ন)
পাইরেটেড সফটওয়্যারের ব্যাপারে বাংলাদেশের আইন এবং আইনপ্রয়োগপদ্ধতিকাঠামো কি সংশ্লিষ্ট প্রোডাক্টগুলির ব্যবহারনীতিকে ড়্যাটিফাই করে? আজকে দুপচাঁচিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র মোহাম্মদ সোলায়মান যদি পাইরেটেড মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ব্যবহার করে, তাহলে বাংলাদেশ রাষ্ট্র বা মাইক্রোসফট তাকে কিভাবে পাকড়াও করবে? কোন আইনের আওতায় শাস্তি দেবে? ড়্যাব তো ওরে ধরলেও দুপচাঁচিয়ার কোন ক্ষেতে নিয়ে ক্রসফায়ারে ফেলবে।
চোরাই সফটওয়্যার আমিও ছোটকালে বহুৎ ব্যবহার করসি। ইন ফ্যাক্ট সুযোগ পাইলে আবারও করার সম্ভাবনাই বেশি দেখি। কিন্তু যেখানে আইন আছে, এবং সেই আইন প্রযুক্ত হবার সম্ভাবনা যথেষ্ঠ, সেখানে আমি এই কাজ করবো না। কষ্টেসৃষ্টে হালাল গরু খাবো।
তবে অপরাধ অপরাধই। যদি পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারের বিরুদ্ধে দেশে জোরালো আইন তৈরি হয়, এবং তার যথাযথ প্রয়োগের যোগ্যতাসম্পন্ন বাহিনী থাকে, আমার চোরাই সফটওয়্যার ব্যবহারের তো কোন সম্ভাবনা দেখি না।
১২ | লিখেছেন অমিত (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ৯:৫৬পূর্বাহ্ন)
সেটাই আসলে, সুযোগের অভাবে চরিত্রবান।
দোস্ত আমারে একটা কথা ক? আমাদের কয়জনের সাধ্য ছিল অরিজিনাল প্রাইসে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম কেনার ? কয়জন মানুষ অটোক্যাড জানত, আর কয়জনেরই বা কম্পিউটার থাকত ? আজকে আমরা দুনিয়ার তাবৎ মুভির খবর রাখি, রক এন্ড রোলের ইতিহাস আমাদের ঠোঁটের আগায়। ঐ পাইরেটেড কপি না থাকলে সলিড গোল্ড আর মুভি অফ দা উইক কতদূর টানত আমাদের ?
মানলাম হ্যাকিং খারাপ, পাইরেটিং জঘন্য কাজ। কিন্তু আমার বলার মুখ কোথায় ? চীন বা জার্মান বা আমেরিকান বা রাশান বা ব্রিটিশ কোনও না কোনও হ্যাকারের কল্যানে আমরা আজ কম্পুবিদ্যাবিশারদ।
দেশের ইকোনমিক অবস্থার উপরে নির্ভর করে যখন কোনও কম্পানি তাদের প্রাইসিং নির্ধারণ করবে না, তখন হ্যাকাররা কি আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এক একজন প্রমিথিউস নয় ?(এখানে আমি হ্যাকিং করে ক্রেডিট ইনফো চুরি করা বুঝাচ্ছি না, ঐটাকে এখনও পর্যন্ত চুরি ছাড়া আর কিছু ভাবার উপায় নাই। আর শাহী মির্জার কাজও এমন কিছু উঁচু মাত্রার কাজ না।)
আমরা যখন কম্পিউটার হাতানো শুরু করসি, তখন পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারের বিরুদ্ধে কোন আইন ছিলো? আমি এখনো নিশ্চিত না এইরকম কোন আইন আছে কি না দেশে। তখন আইনের ভয় ছিলো না, পাবলিক ব্যবহারও করসে সমানে।
এইটা ঠিক, কোন না কোন হ্যাকারের বদৌলতে আমরা কম ঝামেলায় পিসি গুঁতানোর কাম চালাইতাসি, কিন্তু কাজটা সেই কারণে "ঠিক" হয় না। আমাদের বাপচাচারাই কিন্তু ঘুষ খায় নাইলে ঘুষ দেয়, কিন্তু তাই বইলা কি ঘুষ খাওয়া "ঠিক" হয়ে যায়?
মির্জার কেসটা তুই এলিয়েন অ্যানালিস্টের মতো কইরা দ্যাখ। পোলাটার ইনটেনশন ভালো ছিলো, এ-ই তো আমগো যুক্তি? তো ইনটেনশন ভালো থাকলে ও সোজা রাস্তায় আগাইতো, সমস্যা কোথায়? একটা ইমেইল করতো ড়্যাবের কাছে, সিসি পাঠাইতো যাবতীয় পত্রিকার সম্পাদক বরাবর। কারো হোগা মাইরা তো তার হোগার অস্তিত্ব প্রমাণের দরকার পড়ে না, কইলেই হয় যে ভাই আপনের হোগা ঢাকেন, নাইলে আমি না মারলেও মাইনষে আইসা মারবো।
মির্জারে ধইরা ১০ বছরের জেল বা ১ কোটি টাকা জরিমানা করা হোক, এইটার সমর্থন বোধহয় আমরা কেউ করি না। একই সাথে ড়্যাবকেও বুঝতে হবে, যদি তারা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে না পারে, ওয়েবসাইটে কোন কনফিডেনশিয়াল তথ্য তারা রাখতে পারবে না।
১৪ | লিখেছেন অমিত (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ১১:০২পূর্বাহ্ন)
আচ্ছা ইনটেনশন ভাল বা খারাপ সেটা নিয়া কিন্তু প্রথমে আমার কোনও বক্তব্য ছিল না। ছিল সাইবার ক্রাইম নিয়ে এবং আমরা সবাই যে কম বেশী সাইবার ক্রিমিনাল সেটা নিয়ে।
শাহী মির্জার বক্তব্য ঠিক কিন্তু জানানোর পদ্ধতি ভুল,যতই চমকপ্রদ হোক না কেন। কিন্তু আলমগীর সাহেব যে বললেন ২-১ বছর জেলে রাখা যেতে পারে, তোর কি মনে হয় তাতে কি আমরা একজন সম্পূর্ণ নতুন শাহী মির্জা পাব ?আমি জানি না, দেশের প্রচলিত আইন কি বলে, কিন্তু র্যাবের ওয়েবসাইট হ্যাক করার জন্য স্পেশাল শাস্তি, সেটা আমি কোনভাবেই মানতে পারব না। আর একটা কথা উঠে আসছে যে অন্য হ্যাকাররা উৎসাহ পাবে। সিকিউরিটি ব্রিচ করার কোনও উপায় থাকলে কেউ না কেউ সেটা এক্সপ্লয়েট করবেই।মানুষের শুভবোধ এখনও ঐ পর্যায়ে পৌছায় নাই। এটা লাকের ব্যাপার যে কেউ হ্যাক করে পর্ন আপলোড করে দেয় নাই।
১৬ | লিখেছেন প্রকৃতিপ্রেমিক (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ৮:৪৪পূর্বাহ্ন)
আসেন এদের মাথায় তুলে নাচি। দুধের বাচ্চা কিনা। তবে শাস্তি হওয়া উচিত সামাজিক কাজে এদের নিয়োগের মাধ্যেমে। জেল বা জরিমানা কোনটাই নয়। অপরাধ করে ধরা পড়লেই মুক্তি চাওয়া আমাদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য। অপরাধীকে আমরাই বিভিন্নভাবে মাথায় তুলে নেই। সেটা জলীল জ্যোতিষী থেকে শুরু করে যুবরাজ কিংবা শ্রমিক থেকে শুরু করে যত বড় খুনিই হোকনা কেন! বিচিত্র আমাদের মানসিকতা, বিচিত্র এই দেশ।
@হাসান ভাই
স্বাভাবিক, শ্লীল, মানবিক আর অধিক সুগন্ধময় বিচারব্যবস্থা সমন্বিত একটা দেশের বা জাতির নাম বলেন। চ্যালেঞ্জ দিলাম।
@মাহবুব মুর্শেদ
আপনার মতের সাথে একমত। ২১বছর বয়স আমাদের দেশের মাপে অল্প। কিন্তু সে ছেলে আইন জানে না সেটা বিশ্বাস হয় না। ক্র্যাক করা সাইটে সে নিজেরই উল্লেখ করেছে সাইবার আইন প্রণয়নের কথা। ছেলেটা তার বোকামির মাশুল দিবে। এতে কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু আমি তার ১০বছর সাজা বা ১কোটি টাকা জরিমানার পক্ষে না। বছর এক/দুই যথেষ্ট।
১৮ | লিখেছেন রাফি (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ৯:০৩পূর্বাহ্ন)
জেবতিক ভাইয়ের লেখার সাথে একমত। যে দেশে বড় বড় অপরাধীরা শাস্তি পায় না; সেখানে শাহী মির্জার প্রস্তাবিত ১০ বছর কারাদণ্ড লঘু পাপে গুরু দন্ড বলেই মনে করি। তার অপরাধের ধরণ দেখে পরিষ্কার যে সে নিজেই ধরা দিতে চেয়েছে।
বড়জোর আর্থিক জরিমানার সাহায্যে কিছু সংশোধনী আনার চেষ্টা করা যেতে পারে।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
২০ | লিখেছেন রাফি (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ৯:২১পূর্বাহ্ন)
কেতাবী আলোচনায় খাটে যে অপরাধ যত ছোট হোক শাস্তি দিতেই হবে। কিন্তু বড় এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে যেখানে শাস্তির বিধান করা সম্ভব হয় না সেখানে এই ক্ষুদ্র অপরাধে শাস্তি দেয়া কেতাবী ঢং য়ে জায়েয হতে পারে কিন্তু সামগ্রিকভাবে একটা বড় মাপের হঠকারিতা ছাড়া কিছুই হবে না।
ট্রুথ কমিশন আর কালো টাকা সাদা করার যে পদ্ধতি আমাদের দেশে চালু আছে; তাতে তো অপরাধ স্বীকার করলে তার লঘু শাস্তি শুধু নয় ক্ষেত্রবিশেষে শাস্তিই হয় না। হ্যাক করা সাইটে নিজের আসল নাম ঝুলানো প্রকারান্তরে অপরাধ স্বীকার করা। সেক্ষেত্রে ট্রুথ কমিশন ওয়ালাদের কি উচিত না শাহী মির্জার শর্তসাপেক্ষে মুক্তিদান। হতে পারে সে শর্ত ভবিষ্যতে এ ধরণের অপরাধে আর না জড়ানো অথবা ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা পরিবর্ধন।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
যদি মাফ করে দেয় তাহলে তার পরিনতি কি হবে ভেবে দেখেছেন? আরো শত শত ছেলে উৎসাহিত হবে। যেহেতু এটা করে ছাড় পাওয়া যায় সেহেতু আরো ছেলেপেলে উৎসাহিত হবে। কেরমে কেরমে পালে পালে হ্যাকার গড়ে উঠবে। সাইবার মোল্লারা হ্যাকিং শিখে আকাম কুকাম করে বেড়াবে। আপনারা যারা এখন এইটার সার্পোট করছেন তারা বিগ পিকচার টা দেখছেন না।
টুকটাক হ্যাকিং (হোয়াইট হ্যাকিং) আমরাও করেছি। কিন্তু সরকারী কোন ওয়েসাইট কিংবা অপরাধ মূলক কিছু করার জন্য নয়!
কেতাবী আলোচনায় খাটে যে অপরাধ যত ছোট হোক শাস্তি দিতেই হবে। কিন্তু বড় এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে যেখানে শাস্তির বিধান করা সম্ভব হয় না সেখানে এই ক্ষুদ্র অপরাধে শাস্তি দেয়া কেতাবী ঢং য়ে জায়েয হতে পারে কিন্তু সামগ্রিকভাবে একটা বড় মাপের হঠকারিতা ছাড়া কিছুই হবে না।
ট্রুথ কমিশন আর কালো টাকা সাদা করার যে পদ্ধতি আমাদের দেশে চালু আছে; তাতে তো অপরাধ স্বীকার করলে তার লঘু শাস্তি শুধু নয় ক্ষেত্রবিশেষে শাস্তিই হয় না। হ্যাক করা সাইটে নিজের আসল নাম ঝুলানো প্রকারান্তরে অপরাধ স্বীকার করা। সেক্ষেত্রে ট্রুথ কমিশন ওয়ালাদের কি উচিত না শাহী মির্জার শর্তসাপেক্ষে মুক্তিদান। হতে পারে সে শর্ত ভবিষ্যতে এ ধরণের অপরাধে আর না জড়ানো অথবা ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা পরিবর্ধন।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
আলমগীর ভাই,
এই চ্যালেঞ্জ ট্যালেঞ্জের কোন দরকার নেই । এগুলো খুব রিজিড মনে হয় ।
আপনার যদি মনে হয়-বাংলাদেশ রাষ্ট্র কাঠামো আর তার বিচার ব্যাবস্থা পৃথিবীর অন্য রাষ্ট্র সমুহের তুলনায় যথেষ্ট স্বাভাবিক, শ্লীল, মানবিক আর অধিক সুগন্ধময় বিচারব্যবস্থা সমন্বিত অথবা তুলনামুলক ভাবে অন্য কোন রাষ্ট্রই এইসব মানদণ্ডে বাংলাদেশের চেয়ে খুব একটা এগিয়ে নেই আসলে --তাহলে আমার কিছু বলার নেই ।
তবে কিছু ফ্যাক্ট বিস্মৃত না হওয়ার সুযোগ নেই
বাংলাদেশের প্রতিটি সামরিক শাসন কিন্তু বিচারপতিগন কর্তৃক জায়েজকৃত । সামরিক শাসনকে যদি আপনি অবৈধ মনে করেন, বিচারপতিদের সামরিক শাসন প্রীতিকে কি মনে করেন?
ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ এবং খালেদা আমলের বিচারবহির্ভুত হত্যার দায়মুক্তি আদালত কর্তৃক স্বীকৃত
অর্পিত সম্পত্তি আইন নামে একটা বর্বর আইন চালু আছে বাংলাদেশের বিচার ব্যাবস্থায় যে আইন সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখলে ব্যবহৃত হয় ।
সার্টিফিকেট জাল করে বিচারক হওয়ার নজির এই দেশে আছে
বিচারপতি ফজলুর রহমানকে চোর বলা কি আদালত অবমাননা হবে? এই চোরকে যে ব্যবস্থা বিচারক হিসেবে মেনে নিয়েছে তাকে সম্মান করতে হবে?
এরকম অনেক অনেক উদাহরন দেয়া যেতে পারে, বিপরীতে আপনি ও হয়তো নানা দেশের রাষ্ট্র ও বিচার ব্যবস্থার অসংগিত্র উদাহরন দেবেন ।
তবে অন্যদের খারাপকিছুকে ঢাল করে নিজেদের অসভ্যতাকে আড়াল করা আমার কাছে বরাবরই হীনমন্যতা ও আত্নপ্রবঞ্চনা মনে হয় ।
এই মনে হওয়া তুলে রেখেছিলাম অন্য একটা পোষ্টে । নীচে লিংক দিলাম । সময় পেলে পড়ে দেখবেন । ভালো থাকুন
২৫ | লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ৯:৪৪পূর্বাহ্ন)
না । এটা ভিন্ন বিষয় ।
তবে বিনাবিচারে মানুষ হত্যাকে যারা দায়মুক্ত করে তাদের আদৌ কোন বিচার করার( হ্যাকিং হোক আর কিলিং হোক) নৈতিক অধিকার আছে কিনা-সেটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে তার প্রশ্নকে অসঙ্গত বলার মতো যথেষ্ট যুক্তি দাঁড় করানো যাবেনা ।
-------------------------------------
"শিয়রের কাছে কেনো এতো নীল জল? "
আপনি যেসব আক্ষেপ তুলে এনেছেন তার প্রায় সবই আমি 'সভ্য' দেশ থেকে বের করে দিতে পারব।
ড. জাফর ইকবাল নিকট অতীতে কোন একটা লেখায় অনেকটা এরকম বলেছিলেন:
আমার মা দেখতে অসুন্দর, খিটখিটে, বেটে, গায়ের রঙ কালো। কিন্তু তবু তাকে আমি ঘৃণা করতে পারি না, ছেড়ে যেতেও পারি না।
আরও একটা কথা প্রায়ই বলতেন (বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাতীদের উত্থানে আক্ষেপ করে): খুব প্রিয় কারো অসুখ হলে, বা নিতান্ত মারা যাবার সময়ে আমরা কিন্তু তার পাশে থাকি। মারা গেলেও সৎকার না করে কোথাও যাই না।
রাষ্ট্রে ঘুণ ধরেছে মানে মির্জা নিদোর্ষ না।
মির্জার অপরাধ ছোট, কিন্তু সে যে উদাহরণ তৈরি করেছে তা মারাত্মক। যারা সরকারী সাইটের নিরাপত্তা বাড়াতে বলছেন, তাদের জন্য বলি: নিরাপত্তা ১০০ ভাগ নিশ্চিত করা সম্ভব না। সে পরিমাণ অর্থও সরকারের থাকার কথা না। আর তার চেয়েও বড় কথা, অনিরাপদ বলেই সেটা ক্র্যাক করা যায় না (আইনত, নৈতিক বিচারে ইত্যাদি)। হিমুর প্যান্টের চেইনের উদাহরণটা ভাল লেগেছে।
মির্জার অপরাধ ছোট, কিন্তু সে যে উদাহরণ তৈরি করেছে তা মারাত্মক। যারা সরকারী সাইটের নিরাপত্তা বাড়াতে বলছেন, তাদের জন্য বলি: নিরাপত্তা ১০০ ভাগ নিশ্চিত করা সম্ভব না। সে পরিমাণ অর্থও সরকারের থাকার কথা না। আর তার চেয়েও বড় কথা, অনিরাপদ বলেই সেটা ক্র্যাক করা যায় না (আইনত, নৈতিক বিচারে ইত্যাদি)।
একজাক্টলী! আমি গাড়ির উদাহরনটা দিচ্ছিলাম এই ব্যাপারটা সহজ ভাবে বোঝানোর জন্য। গ্যারেজের দরজা খোলা থাকলেই কি গাড়ী চুরি করতে হবে? কিংবা গ্যারেজের দরজা লাগালেই কি চুরি বন্ধ হয়ে যেত?
২৮ | লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০৯/০৯/২০০৮ - ৩:৪৩অপরাহ্ন)
অপরাধীর সংজ্ঞার ব্যাপারেই আমরা একমত হতে পারিনা, এ দেশকে অপরাধমুক্ত করবো কী করে? তবে শাহীকে লঘু শাস্তি দেয়া উচিত, সরকারকে ঘুম থেকে জেগে ওঠা উচিত। কোন কোন সরকারী ওয়েবসাইটকে ভাগাড়ের সাথে তুলনা করা যায়।
'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি' এই আবেগে আমি উদ্বেলিত হতে পারি, 'স্মৃতি দিয়ে তৈরী সে যে স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা' -সেই স্মৃতি ও স্বপ্নে আমি দোল খেতে পারি কিন্তু এই রাষ্ট্র যন্ত্র যদি নিপীড়নমুলক হয়- দেশপ্রেমের আতিশয্যে তার দায়ভার আমাকে কেনো নিতে হবে?
নাগরিকের জন্য এটা একটা সতর্ক অবস্থান ।
ডঃ ইকবাল যে উদাহরন দিয়েছেন আশা করি তা দেশকে নিয়ে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিয়ে নয় । এই রাষ্ট্রযন্ত্র ও তার আইন সমুহ ব্যবহৃত হবে নাগরিককে নিষ্পেশনের জন্য, সংখ্যায় লঘু যে ধর্মে কিংবা জাতীয়তায় -তাকে কোনঠাসা করার জন্য । তবু দেশপ্রেমের দোহাই দিয়ে তার সব কুৎসিত, অমানবিক রূপ আমার চেপে রাখতে হবে?
এটা কিন্তু ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী ধারনা যা হিটলারের তীব্র দেশপ্রেমিক নাজিবাদের উত্থানে সহায়ক হয়েছিলো ।
-------------------------------------
"শিয়রের কাছে কেনো এতো নীল জল? "
আমি এটা বুঝছি না, সাধারন চুরি, ছ্যাচড়ামির মত অপরাধের সাথে আপনারা রাষ্ট্রযন্ত্রের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের জন্য করা অপরাধের সাথে মেশাচ্ছেন কেন? লেট গেট আওয়ার ফোকাস ক্লিয়ার হিয়ার। আমরা হ্যাকার মির্জার কথা বলছি। বলছি এটা যেন ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ইন্সপায়ারিং একজাম্পল না হয়।
এর মাঝে অন্য প্রসংঙ্গ এনে বিষয়টাকে হালকা করবেন না প্লীজ।
প্রশ্নটা শুধু অপরাধের নয়, অপরাধের শাস্তি কে দিচ্ছে তার ও ।
আর আইন কি চুরি/ ছ্যাচড়ামীকে সাধারন/অসাধারন ক্যাটাগরাইজড করে আলাদা আলাদা ট্রিট করতে পারে?
-------------------------------------
"শিয়রের কাছে কেনো এতো নীল জল? "
একটা সহজ-সরল বিষয়ের মধ্য রাষ্ট্র, দেশ তত্ত্ব চলে আসল।
রাষ্ট্র যন্ত্র যদি নিপীড়নমুলক হয়- দেশপ্রেমের আতিশয্যে তার দায়ভার আমাকে কেনো নিতে হবে?
গণতন্ত্র মানলে তো নিতে হবেই। ভোটে যারা যাবে তাদের সব দায় আমাদের। বিএনপি/জামাত ক্ষমতায় থাকার সময় সরকারি কর্মচারী (মুক্তিযোদ্ধা) রা কি নিজামি/মুজাহিদরে স্যার স্যার বলে নাই? তাদের কুকীর্তি জায়েজ করার জন্য প্রেস নোট লিখে নাই?
বিএনপির দ্বিতীয় আমলে শাহজালালের ভিসি ছিলেন হাবিবুর রহমান (এখন মৃত)। (উনি বাম কাম আলীগার)। আমরা তার কার্যকলাপে যারপরনাই ত্যক্ত ছিলাম। কিন্তু কখনও কোন আন্দোলনের কথা তুললেই আমাদেরকে চাপা দিয়ে রাখা হত। বলা হত, এটা গিয়ে যে আসবে সে ত আরো খারাপ হইতে পারে। এ যুক্তি যারা দিত তাদের নাম প্রকাশ করা উচিৎ হবে না।
আমার বাবা যদি ডাকাত বা ঘুষখোর হয়, তিনি কি আমাকে শাষণ করার অধিকার রাখেন? আপনার কথামতো মনে হচ্ছে, না তার কোন অধিকার নাই।
তা হলে কী করতে হবে? আগে শাসকদের নিজেদের বিচার করতে হবে। বিচারক কারা হবে? বিচারকরা তো ঘুষ খায়। আনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। কেমনে? তাদের অনেকে তো ঘরে বৌ পিটায়। এটা কোথায় গিয়ে শেষ হবে?
লেখকের সাথে একমত। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই হওয়া উচিত, যেহেতু মেধাবী ছেলে, জেলে পুরে রেখে সেটার অপচয় না করে উচিত আর্থিক শাস্তি দেয়া। একটা ক্রেজী কাজ হতে পারে, ছোকরাকে ড়্যাবেই চাকরী দিয়ে মাসে মাসে বেতনের একটা অংশ কেটে রাখা হবে শাস্তি হিসাবে।
যে কারণগুলোর জন্য শাস্তি দেয়া দরকার সেগুলো হলো, ১) বদ মোটিভেশন, ২)আফটারইফেক্ট
মোটিভেশন:
ছেলেটার বাবা পুলিশে চাকুরী করে, শুধু ড়্যাবের ওয়েবসাইট নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হলে সে বাবার মাধ্যমে অবশ্যই ড়্যাবের আইটি ইন্টেলিজেন্সের কাছে এ্যাপ্রোচ করতে পারত
এমনকি সে যদি জেনে থাকে সিকিউরিটি বাড়াতে কি কি করা দরকার তাহলে সেগুলো সাজেস্টও করতে পারত
কিন্তু সে সুপারহিরো হতে চেয়েছে, একেবারে বাঘের খাঁচায় হাত দিয়েছে সে ইচ্ছে করেই
আফটারইফেক্ট:
মুর্শেদ অনেকটুকুই বলেছেন, এছেলেকে ছেড়ে দিলে হুড় লেগে যাবে সারাদেশে। সাইবারক্রাইম একবার পাখা মেললে প্রথমে আক্রমণ করে ফিনান্সিয়াল সেক্টরে। আমাদের ব্যাংকগুলোর ড্যাটাবেজ কততা ডিফেন্ডেড জানিনা, তবে ড়্যাবের এই অবস্থা দেখে কিছুটা তো ভীত হতেই হয়। সেদিকে যদি এক্সপার্টরা হাত বাড়িয়ে সফল হয় তাহলে ছ্যাড়াব্যাড়া লেগে যাবে।
তারচেয়ে ভয়াবহ যেটা, সেটা হলো, ড়্যাবের এই দূর্বলতার কথা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে গেছে। ইন্টারন্যাশনাল হ্যাকারগুলা যে কি চীজ সেইটা আমরা সবাই ধারনা করতে পারি। এরা যদি বাংলাদেশের এই দূর্বলতার কথা জেনে সুযোগ নেয়, একেবারে খোঁড়া করে দিবে।
তখন কি এর দায় শাহী মির্জা নিতে পারবে?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
আন্তর্জাতিক হ্যাকাররা কোন আকাম করলে সেই ৯২-৯৩ সালের পাপী নীতিনির্ধারকরা ফাল দিয়া উইঠা কইবো, কইসিলাম না গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় তথ্য পাচার হইবো? দ্যাহো কথা ফলসে কি না!
কে জানে, ইন্টারনেটরে ক্রসফায়ারে ফ্যালে কি না। সরকারি লোকজন তো হয় প্রযুক্তিবিরোধী নাইলে প্রযুক্তি উদাসীন, অ্যাবসলিউট রেডটেপিজমে ফিরতে তারা হয়তো লুঙ্গি কোচা মাইরা বইসা রইসে।
হুমমম, শাহী মির্জা তো চামে চামে দেশের রাজনীতি এমনকি আমলানীতিতেও অবদান রেখে ফেলবে মনে হয়
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
আরিফ জেবতিকের পোস্টটার একটা বিশ্লেষণ করার লোভ সামলাতে পারলাম না। জেবতিক ভাই ক্ষমা করে দিয়েন।
আরিফ জেবতিক লিখেছেন:
বেশ একটা কাজের কাজ হয়েছে । ২১ বছরের এক তরুণকে তার মেসের বাকী সব তরুনের সাথে বস্তা বেঁধে গ্রেফতার করে রেবের কার্যালয়ে আনা হয়েছে ।
বস্তা বেঁধে আনা হয়েছে? প্রমান আছে? নাকি ইমোশন নিয়ে খেলার ভূমিকা এইটা?
আরিফ জেবতিক লিখেছেন:
সেই তরুণের অপরাধ কী ? সে রেবের ওয়েবসাইট হ্যাক করে তার নাম ঝুলিয়ে দিয়েছিল । নিতান্তই ছেলেমানুষী ব্যাপার । এ জন্য সেই তরুণকে ডেকে কড়া করে ধমক দেয়া যেতে পারে , কিন্তু একেবারে ১০ বছরের জেল আর ১ কোটী টাকা ক্ষতিপূরনের মামলায় জড়িয়ে ফেলা যায় কি না সেটা নিয়ে তর্ক হতে পারে ।
নিতান্তই ছেলেমানুষী ব্যাপার? দুদু খায় নাকি ছেলে? হ্যাকিংয়ের মত জটিল বিষয় শিখতে পারল আর এথিকসের মত সাধারন বিষয় শিখল না? এবার যে এই ধরনের ঘটনার ঢল নামবে সেটা ঠেকাবে কে? আরিফ জেবতিক?
আরিফ জেবতিক লিখেছেন:
রেবের ওয়েবসাইটটি আমি দেখলাম । উদ্ভট ফ্ল্যাশের কাজ করা আছে এর মাথায় ,বিরাট রঙচং , এক রেব অফিসার কম্পিউটারের সামনে বসে আছেন , এমন ছবিও দেখা যায় । এই ওয়েব দেখার মাধ্যমে অনেকের রুচিবোধ আহত হতে পারে , এজন্য ক্ষতিপূরনের মামলা করা যায় কি না জানি না । তবে এই উদ্ভট ওয়েবসাইটটি দেখে ধারনা করা যায় যে এটি খুবই অযত্নে যেনতেন প্রকারে বানানো হয়েছে ।
এটি খুবই অযত্নে যেনতেন প্রকারে বানানো হয়েছে, তাতে কি এটা হ্যাক করা জায়েজ হয়ে গেছে? উদ্ভট, ছেলেমানুষী যুক্তি!
আরিফ জেবতিক লিখেছেন:
সবচাইতে মজার বিষয় হচ্ছে ওয়েব থাকলেও রেবের ওয়েবমেইল নেই , তারা ব্যবহার করে ইয়াহুর মতো ফ্রি মেইল ।
এই সব ফকিরী ভাবচক্করের ওয়েব হ্যাক করা না করায় কী আসে যায় , খোদা মালুম ।
আর্শ্চয! যতই ফকিরী হোক, তাতে কি হ্যাক করা জায়েজ হয়ে যায়? শত্রুর ঘরে কি চুরী করা গর্বের কাজ হয়ে যায়? কাম অন! কাম টু ইওর সেন্সেস।
আরিফ জেবতিক লিখেছেন:
তবে এটা ঠিক রাষ্ট্রের আইন বড় কড়া । তারা ২১ বছর বয়েসের কোন তরুণকে মাপ করবে না ।
একবার তেজগাঁর রাস্তায় কাজ করতে গিয়ে এক বুড়ো মাটিকাটা শ্রমিক মাটির নিচের তার কেটে ফেলেছিল । সেটি ছিল প্রধানমন্ত্রীর দফতরের টেলিফোন লাইন । ফলস্বরূপ সেই বুড়ো দিনমজুর মানুষটাকে গ্রেফতার করে , প্রধানমন্ত্রীর প্রাননাশের চেষ্টার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে কান্ডারি হিসেবে রাখা হয়েছিল । পরবর্তীতে কী হয়েছে আমি জানি না । হয়তো সেই বুড়ো এখনও জেলের ঘানি টানছেন ।
একবার হাসিনার আমলে এক ছেলেকে গ্রেফতার করা হল প্রধানমন্ত্রীকে ইমেইলে হুমকি দেয়ার অপরাধে । যে সাইবার ক্যাফে থেকে ইমেইল করা হয়েছিল সেটিতে এক আইপি থেকে ২১ টি পিসি ব্যবহার করা হয় , সেখানে পার্থ নামের সেই নিরীহ তরুনই যে ইমেইল করেছিল তেমন কোন জোরালো প্রমান হাজির করা যায় নি । তারপরও শৈবাল সাহা পার্থ নামের সেই তরুনকে পিটিয়ে তার দুই পা ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল , হয়তো পার্থ নামের সেই তরুণটি এখনও তার পঙ্গু জীবন যাপন করছে ।
শুরু হল ইমোশন নিয়ে খেলা। হাজারটা ব্যাপার মওকুফ হয়ে গেছে তাই এটাও মওকুফ করে দিতে হবে! মামার বাড়ির আব্দার!
আরিফ জেবতিক লিখেছেন:
এবার ধরা হয়েছে শাহী মির্জা নামের তরুণকে । সুকান্ত তার কবিতায় লিখেছিলেন - ২১ বছর বয়েসটা বড়ো খারাপ , খালি দূ:সাহসী হতে ইচ্ছে করে । শাহী মির্জা সেই ২১ এর প্রজন্ম । তার মাথায় সবসময় দূ:সাহস উঁকি দেবে । কিন্তু সেই দূ:সাহস যখন এডভেঞ্চারিজম এর জন্ম দেয় , তখন তার বোকামীতে হতাশ হতে পারি , কিন্তু তাকে ১০ বছরের জেল খাটানোর উদ্যোগ নিতে পারি না ।
সুকান্তের কবিতা টেনে বিষয়টাকে আবেগ জর্জরিত করার চেষ্টা!
আরিফ জেবতিক লিখেছেন:
আমি জানি না কী হবে ।
আমি শাহী মির্জার মুক্তি চাই ।
কিন্তু আমি জানি বিষয়টি এতো সহজ নয় ।
শাহী মির্জার বাপ এই দেশের প্রেসিডেন্ট ছিলেন না ।
শাহী মির্জার বাপ এই দেশের মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না ।
সুতরাং সামান্য এক ওয়েবের কারিকুরির জন্যই তাকে হয়তো আজীবনের জন্য ভুগতে হবে ।
তার চাইতে চোর ও চোরের ছেলে হওয়া ভালো ।
তার চাইতে ডাকাত ও ডাকাতের ছেলে হওয়া ভালো ।
চোর ও ডাকাতের ছেলেরাই শুধু এই দেশে বিচার অস্বীকার করে বীরের মতো বেরিয়ে আসে । তারা হাত তুলে আমাদেরকে আশ্বস্থ করে ।
শাহী মির্জা পচবে জেলে , কারন তার জন্য কোন সংলাপ আটকে থাকবে না , কারো নির্বাচনে যাওয়ার গ্যারান্টি হয়ে সে আসবে না ।
জয়তু রাষ্ট্রযন্ত্র ।
জয়তু ।
আবার ইমোশন নিয়ে খানিকটা নাড়াচাড়া। শেষ মেষ রাষ্ট্রযন্ত্রের কথা বলে পাঠককে দলে টানা।
নাহ জেবতিক ভাই, ক্ষমা করবেন আপনার আবেদনে সারবস্তু কিছু পেলাম না।
প্রিয় মুর্শেদ ,
আলোচনার বিষয় এখানে দুইটি ।
প্রথমটি হচ্ছে , আপনার পোস্টের বিষয়ে । সেটা নিয়ে একটা আলোচনা হতে পারে । সেই আলোচনাটি কমেন্টের ঘরে করতে চাচ্ছি না , কারন এই বিষয়ে শুধু আপনি নন , অনেকেই দ্বিমত প্রকাশ করেছেন । আপনাদের অবস্থানকে শ্রদ্ধা এবং প্রাসঙ্গিক বক্তব্য যতোটুকু আমার তরফ থেকে আছে , সেটি দেয়ার জন্য তাই আলাদা পোস্ট লেখা আবশ্যক । আবার সচলের রেওয়াজ অনুযায়ী আলোচ্য পোস্টের রেশ ধরে নতুন পোস্ট দেয়াটাও ঠিক শোভন মনে হচ্ছে না , তাই পোস্টটি হয়তো অন্য কোথাও করা যেতে পারে ।
দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে , আপনার উপরোক্ত কমেন্টটা । আমার লেখা বিশ্লেষনে আপনার কষ্ট দেখে লজ্জিত হলাম ।
'' বস্তা ভরে নিয়ে আসা ''বলতে যখন আপনি বস্তা দেখাতে বললেন , তখন হাসি পেল শুধু । এই বিষয়ে কোন উত্তর দেব না , কারন সেই উত্তরটি দিতে গিয়ে বস্তা প্রদর্শন জাতীয় আলোচনাটি আসলেই স্বস্থিকর মনে হচ্ছে না ।
তবে হ্যাকিঙের যে বিদ্যা সে দেখিয়েছে তাতে তার একই সাথে পুরস্কার তিরস্কার দুইই প্রাপ্য।
রাষ্ট্রের ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এরকম হবে কেন? মির্জার শাস্তির চাইতে এই প্রশ্নটা অনেক বেশী তীব্রভাবে সামনে আসছে। মির্জা যে অপরাধটা করেছে সেটা হচ্ছে না বলিয়া পরের গৃহে ঢোকার। সেখানে সে নোটিশ দিয়ে এসেছে আপনার গৃহের ব্যাড়া ঠিক করেন নাইলে চোর ঢুকবো। তার মনে আসলে কি ছিল না ছিল কিংবা এই দৃষ্টান্ত পরে কোন প্রপঞ্চ সৃষ্টি করবে না করবে তার আগে আমার মতে ড়্যাবের ওয়েব নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় থাকা বেতনভুকদের কাঠগড়ায় তুলতে হবে।
রাষ্ট্র ইতিমধ্যেই যে পারফরমেন্স দেখিয়েছে তাতে আশান্বিত হবার তেমন কিছু দেখি না। মির্জাকে কত টাকা জরিমানা করা উচিত বা কত বছরের জন্য জেলে পোরা উচিত এগুলো ফালতু বিষয়। সে হয়তো অপরাধ করেছে। সেই অপরাধের পুরুত্বঘনত্ব নিয়ে আমার মতামত অমিতের মতোই।
নীতিগতভাবে দেখতে গেলে মির্জা অপরাধই করেছেন। আর সেকারণেই নীতিগতভাবে দেখতে গেলেও একমাত্র নীতিবান হাতেই একমাত্র অধিকার রয়েছে মির্জাদের ঘাড়ে খড়গ চালানোর। যে দেশে তারেক সাহেবদের ধরা হয় দুর্নীতির কারণে, আবার ছেড়েও দেয়া হয় কোন কারণ না দেখিয়েই, যেখানে তথাকথিত দেশপ্রেমী, সেক্যুলার আওয়ামী নেতারা জামাতের কুকুরদের সাথে হাত মেলাতে চোখের চামড়াও কাঁপে না, সে দেশে নীতিবানদের জায়গা কোথায়?
আরিফ জেবতিকের সাথে একমত। এমনকি ওনার আবেগপ্রবনতার সাথেও আমি তাল মেলাতে পারবো। আর সুচারু নৈতিকতার জোর থেকেই বলছি, মির্জাদের বড় কোন শাস্তি দেয়া হবে, এসব তথাকথিত নীতিবানদের আরেকটি বড় অনৈতিক কর্ম।
কেউ কেউ সামনের ভবিষ্যতের কথা তুলেছেন। মির্জাদের শাস্তি না হলে তারা কি শিখবে? হাস্যকর কথা! মির্জাদের কথা বাদ দিয়েও আর কোন ইতিগত উদাহরণ রেখেছে আমাদের সমাজ আর রাষ্ট্র? রাখেনি... কখনোই...রাখেনি..!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
সবার লেখাই পড়লাম মন দিয়া। আমিও কিছু কইতে চাই ভিন্ন প্রেক্ষাপট থিকা। প্রেক্ষাপটের ভিন্নতার হেতু দুইটি - এক. শাহী মির্জার বয়সটা আমি পার কইরা আসছি বেশি দিন হয় নাই। দুই. ওই বয়সে আমি নিজেও এই কাজগুলাতে লিপ্ত ছিলাম, তাই ওর তরফের কিছু ব্যাপারও হয়তো বুঝাইতে পারুম।
০১
রাগিব ভাইয়ের কথাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে যত “মেধাবী হ্যাকার” দেখেছি, তার শতকরা নিরানব্বুই ভাগই হইতেছে Script Kiddies, অর্থাৎ কিনা এগো প্রোগ্রামিং এর সেন্স থাকে না ( অন্তত হ্যাক করার মত ), এর সিকিউরিটি হোল বিষয়েও এত কিছু জানে না। আমি নিজেও সেই দলেই ছিলাম। এদের কাজ মূলত অধ্যাবসায়। প্রচুর খোঁজখবর রাখতে হয় কই কবে কোন হোল ধরা পড়লো, কোন এক্সপ্লয়েট রিলিজ পাইলো - মোদ্দা কথা প্রাথমিক কাম হইতেছে একটা কমিউনিটি মেইনটেইন করা।
এরপর এর কাম হইতেছে, কোড কম্পাইল করা। সাধারণত যে কোডগুলি পাবলিক রিলিজ দেয় হ্যাকাররা, সেইগুলার মধ্যে ইচ্ছা কইরাই কিছু ছোট খাটো ভুল কইরা দেয়, যাতে একদম মঘা কেউ কোড কম্পাইল কইরা মজা না নিবার পারে। কম্পাইলের পর এরর দেইখা কোড কারেক্ট করতে পারে - অন্তত এতটুকু চাল্লু পোলাপান যাতে মজাটা পায়। অবশ্য অনেক দয়ার সাগর ঝানু হ্যাকার আছে, যারা পোলাপাইনের কষ্ট দেইখা দয়া কইরা নিজেরাই কোড কম্পাইল কইরা দেয়।
এরপর কোন একটা হাইস্পীড শেলে কম্পাইল্ড ফাইলটা আপলোড কইরা দেওয়া হয় ( অবশ্য সোর্স আপ কইরা, জিসিসি দিয়াও কম্পাইল করা যায় শেল এ ), এতে দুইটা সুবিধা পাওন যায়, এক - ব্যান্ডউইডথ বেশি থাকে দুই - নিজের আইপি টা বাইর হয় না
ব্যস, এইবার কাম খতম। এইবার গুতাগুতি কইরা ডিফেইস করা শুরু। এর বাইরে আর কোন কাম নাই।
০৩
মুর্শেদ ভাই যে পাড়ার থিকা আরিফ ভাই এর লেখাটা নিছেন, ওই পাড়ায় কিছু এই হ্যাকিং বিষয়ক লেখায় আমি মন্তব্য করছিলাম। ওইখানে আমি বলছিলাম, শাহী মির্জা কোন ভয়াবহ প্রতিভার কাম করেন নাই, বরং উনার কামটারে অপরিনামদর্শীতা কওন যাইতে পারে। মাইনষে সাধারণত ডিফেইস করে ছদ্মনামে, আর ভূয়া ইমেইল আইডিতে। কিন্তু মির্জা সাহেব বীরত্ব দেখাইতে যায়া নিজের বিপদ ডাইকা আনছেন।
হ্যাকিং অপরাধ এতদূর পর্যন্ত আমি মানি। কিন্তু মুর্শেদ ভাই যেইভাবে কথাটা বলতেছেন তাতে আমার একটু আপত্তি আছে। একুশ বছর বয়েসে কেউ দুধের শিশু না, সেইটাও মানি, কিন্তু ভাই বয়সের সিগনিফিক্যান্সটা এত তাড়াতাড়ি ভুইলা যায়েন না। ওই বয়সটাতে আমারো শুধু মনে হইতো কিছু একটা করি এডভেঞ্চারাস, সেইখান থিকাই কিন্তু এইদিকে ঝুইকা গেছিলাম। আবার বয়স একটু বাড়তেই, চিন্তা ভাবনায় একটু চেইঞ্জ আসলেই সইরা আসছি। আপনি খেয়াল করছেন কিনা জানি না, এই যে বড়লোকের পোলাপানডি হিযবুত তাহরী করে, কেন করে ? এগো তো টাকার অভাব নাই - তাইলে ? আসলে এইটা হিরোইজমের বয়স। সবাই চায় হিরো হইতে। একটা গোপন সংগঠণ, কিংবা হ্যাকিং -এইগুলা রক্তে জোশ জাগায়। কাজেই মির্জারে এইভাবে শক্ত স্বরে অপরাধী কইতে আমার বাঁধে। সাকা চৌধুরী কত মানুষ মারলো, নিজামী মারলো তাগোই কিছু হইলো না - মাঝে দিয়া একটা চ্যাংড়া পোলা বয়সের দোষে যদি দশ বছরের জেল খাটে তাতে আমি ইনসাফের কিছু দেখি না।
০৪
তয় আপনার সাথে আমি একটা ব্যাপারে একমত - ব্লগে কিংবা ফোরামে যেইভাবে বলা হইতেছে সে মহাপ্রতিভাবান আসলে সে সেইটা নাও হইতে পারে। হয়তো এই কামটাই বাংলাদেশের আরো ৫০০ পোলা করতে পারতো, কিন্তু ওরা করে নাই ডরে। মির্জা ড়্যাবরে সাবধান করার জন্য এইকাম করছে এইটা আমি বিশ্বাস করি না, সে এইটা করছে হিরো হওনের জন্যই। কিন্তু সেই যাই করুক, এইটা আসলে তার বয়সের ধর্ম, নিজেরে প্রমাণ করা, জাহির করা। কাজেই তারে কোন কঠিন শাস্তি কিংবা অত্যাচারের ঘোরতর বিরোধী আমি। রাষ্ট্রের এইরকম আচরণ তারে ঠিক করনের বদলে আরো অপরাধী বানাইবো আমার বিশ্বাস।
মির্জার শাস্তির ব্যাপারে লেখকের প্রস্তাবনা কিন্তু রাষ্ট্রের প্রস্তাবনার বিপরীত মেরুতেই।
সমস্যাটা অন্য জায়গায়। মির্জার মধ্যে এই যে হিরো হওয়ার, বীর হওয়ার বাসনা, সেটির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা আমার আছে। আমাদের বাপচাচারা মির্জার বয়সেই একটা ট্রেইন্ড আর্মির বিরুদ্ধে .৩০৩ নিয়ে যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু মির্জার মধ্যে যে ভুল ধারণাটি তৈরি হয়েছে এই হিরোইজমকে প্রকাশ করার, সেটিকে আমরা বরং উসকে না দেই। ২১ বছর বয়সে পরের ঘরে সিঁদ কেটে হিরো হওয়া যায়, এই ধারণাটি মির্জার মনের মধ্যে কেন তৈরি হলো? আমরাই এর জন্যে দায়ী। আমাদের সত্যিকারের বীর নেই, আমরা তস্করকেই বীর ডেকে বীরপূজার পিপাসা নিবারণ করি। মিডিয়াতে সাকা-র মতো দস্যুদের মুখরোচক সব কাহিনী ছাপা হয়, একজন সৎ মানুষের গল্প তার হাজার ভাগের এক ভাগ জুড়েও আসে না।
আমার ভয় এটাই, শুধু মাত্র র্যাবের সেন্টিমেন্টে আঘাত লাগার কারণে ছেলেটাকে জানে না মেরে ফেলে কিংবা অমানুষিক অত্যাচার করে পঙ্গু না বানিয়ে ফেলে। এর চেয়ে মোটামুটি পরিমাণের একটা আর্থিক জরিমানা করুক - এতে উভয়েরই মঙ্গল।
সবগুলো মন্তব্য না পড়ে মন্তব্য করছি, তাই কিছু রিপিট হলে মাফ কইরা দিয়েন।
১. হ্যাকার-এর প্রকৃত সংজ্ঞা কি এইটা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক আছে। তবে সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ারিং-এর লোকজনের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য বা তারা যেটাকে স্ট্যান্ডার্ড মনে করে এবং ফলো করে সেটা হলো শেইন স্টিফেনের সংজ্ঞা। যেটা বলছে-
হ্যাকার - People who attempt to gain illegal access to machines on the internet for the ”fun”of it, but with no malicious intent.
ক্র্যাকার - People who attempt to gain illegal access to machines on the internet WITH malicious intent.
এই হ্যাকারের আরেকটা সংস্করণ হলো ইথিক্যাল হ্যাকার, যাদেরকে বিভিন্ন কোম্পানি রিক্রুট করে তাদের ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা পরীক্ষণের জন্য।
এখানে একটা ঘটনার কথা বলা যাক। বছর দশেক আগে ফিলিপাইনের এক চৌদ্দ বছরের হ্যাকার প্যান্টাগনের ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্রেক করতে পেরেছিল। কিন্তু ছেলেটা ওয়েবসাইটের বা ওদের ডাটাবেইজের কোন ক্ষতি করেনি। জাস্ট শুধু একটা মেসেজ রেখে এসেছিল, তোমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি আছে। এটাও একধরনের ইথিক্যাল হ্যাকিং।
আমার ব্যক্তিগত মত, কখনোই হ্যাকিং করা কিংবা ভাইরাস তৈরি করার মতো কাজকে সাপোর্ট করে না। ভার্সিটিতে থাকার সময় সফটওয়্যার ডেভেলপম্যান্ট ওয়ান করার সময় আমাদের কয়েকজনের জোশ চেপেছিল একটা বিধ্বংসী ভাইরাস তৈরি করবো। কোর্স টিচারকে বলতেই তিনি ধমক দিলেন, যদি তোমার করার মতো ক্যাপাবিলিটি থাকে তাহলে ভালো কিছু করো, খারাপ কিছু কেন করবে? সেই থেকে আর ঐসব চিন্তা মাথায় আনি নাই।
সংজ্ঞা যাই হোক, হ্যাকিং-এর উপর প্রতিটি রাষ্ট্রের কিছু বিধিনিষেধ আছে এবং সেই মোতাবেক শাস্তির বিধানও রয়েছে। এখন কথা হচ্ছে সেগুলো সম্পর্কে হ্যাকাররা কতটুকু জানে।
রাগিব ভাইয়ের মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, শাহী শুধু কতগুলো স্ক্রিপ্ট ডাউনলোড করে ব্রুট ফোর্স এট্যাক চালিয়েছে। সে যদি স্কিলড হ্যাকার হতো তবে নিশ্চতভাবে আই.পি এবং এ.আর.পি. স্পুফ করে নিজেকে হাইড করার চেষ্টা করতো। সবচেয়ে বড় যে ভুল কাজটা সে করেছে (মন্তব্য দ্রষ্টব্য) সেটা হচ্ছে ডাটাবেইজ ডিলিট করা (যদিও এসব ডাটাবেইজের ব্যাক-আপ থাকে), এটা সম্পূর্ণ আনইথিক্যাল।
এই ধরনের ক্রাইমগুলোকে এখনই গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত। তবে সেইসাথে এটাও বিবেচনা করতে হবে আমাদের দেশে মেইন-স্ট্রিম টেকনোলজি কতটুকু পথ পাড়ি দিয়েছে? আমরা কতটুকু সচেতন কপিরাইট, ইথিকস এসব ব্যাপারে? কারণ, আমার ধারণা আমাদের দেশের বেশির ভাগ লোকই 'সাইবার ক্রাইম এবং সাইবার ল' সম্পর্কে জানে না এবং না জেনেই তারা অনেক বড় ভুল করে ফেলে। সম্ভবত: শাহীও একই ধরনের ভুল করেছে।
যাহোক, আশা করছি এই ২১ বছরের তরুণ কিছুটা অনুকম্পা সবার কাছ থেকে আশা করতে পারে।
এখানে একটা ঘটনার কথা বলা যাক। বছর দশেক আগে ফিলিপাইনের এক চৌদ্দ বছরের হ্যাকার প্যান্টাগনের ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্রেক করতে পেরেছিল। কিন্তু ছেলেটা ওয়েবসাইটের বা ওদের ডাটাবেইজের কোন ক্ষতি করেনি। জাস্ট শুধু একটা মেসেজ রেখে এসেছিল, তোমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি আছে। এটাও একধরনের ইথিক্যাল হ্যাকিং।
শাহী মির্জার এই ইথিকস ছিলো না; সে কারণেই আমার ধারণা সে আদৌ সতর্ক করতে হ্যাক করেনি। সে হিরো হতে চেয়েছিলো, সে কারণেই নিজের নাম প্রকাশের লোভ সামলাতে পারে নি, আর পান্ডিত্য দেখানোর জন্যই ডাটাবেজে ক্ষতি করেছে সে।
মুর্শেদের তথ্য ভান্ডার কিংবা রাগিবের তথ্যভান্ডার যেখানে আমারও তথ্যের উৎপত্তি সেখান থেকেই, তবে এই যে র্যাবের ডাটাবেস হ্যাক করে ধ্বংস করে ফেলানোর অভিযোগ যা আদালতে উত্থাপিত হয়েছে সেটা একটা নিছক ব্লাফ।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নামক জিনিষটা অন লাইনে শেয়ারের জন্য ছেড়ে দেওয়ার স্বচ্ছ নীতি বাংলাদেশের কোনো সরকারী ওয়েব সাইটে নেই।
হ্যাকিং অপরাধ এটা আমি মেনে নিচ্ছি, মুর্শেদে যেভাবে নৈতিক সততার পারকাষ্ঠা দেখালো এখানে তা সাম্প্রতিক উপলব্ধি । এবং শব্দ ব্যবহার দেখে মনে হলো মুর্শেদ আদর্শ উদাহরণ হতে পারে নয়া হিন্দু গরু খাওয়ার যমের।
আমি মির্জার শাস্তি হয়তো মেনে নিবো, অপরাধ করেই ফেলেছে , তবে র্যাবের ভঙ্গিকে আমি সমর্থন করতে পারছি না, বাংলাদেশের আশ্চর্য সমস্যা, এখানে মানুষ বিশেষজ্ঞ খুঁজে, এই একই প্রবনতায় বাংলাদেশের অর্ধের মানুষ ভাবমুর্তি বিশেষজ্ঞ হয়ে গিয়েছে। বড় বড় বুলি আউড়ে যাওয়া ভাবমুর্তিপরায়ন মানুষের উপস্থিতি আমাকে অসুস্থ করে, এখানে এই পোষ্টেও আমি অনেক ভাবমুর্তি পরায়ন মানুষের উপস্থিতি দেখছি।
বাংলাদেশের সরকারী ওয়েব সাইটগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিম্ন মানের, কাপড় তুলে দাঁড়িয়ে থাকা দুর্বল রমনীর মতো ওয়েব সাইটে যে কেউ গিয়েই বীর্যস্খলন করে আসতে পারতো, এটা যে এত দিন হয় নি এটাতেই প্রমাণিত হয় বাংলাদেশের মানুষ অনেক বেশী নীতিপরায়ন।
ভাবমুর্তি এবং নৈতিকতাপরায়ন মানুষেরা হাহাকার করে বলে উঠতে পারে , কাপড় মানলাম খোলাই ছিলো, তাই বলে অনধিকার প্রবেশ আর লিঙ্গ গুতিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সতীত্বের তথ্য হানী করা কি মির্জার উচিত হলো?
তবে মুর্শেদের অন্য একটা আশংকা জেনে হাসতে হাসতে মরে যেতে ইচ্ছা হলো, মির্জাকে ক্ষমা করলে কিংবা অপরাধীকে তোষণ করলে দেশের তরুণেরা সবাই হ্যাকার হয়ে যাবে, এই হাস্যকত নৈতিকতাবাদী আশংকা শুনে মুর্শেদকে অতিসত্ত্বর কোনো কলাম লেখকের ভুমিকায় দেখতে পাই আমি, হয়তো আইটি বিশেষজ্ঞ কলামিস্ট হিসেবে মুর্শেদের ভবিষ্যত যাত্রা এখান থেকেই শুরু হবে।
হিরোইজম দেখানোর জন্য দেশের তরুনের হ্যাকার হয়ে যাবে এই সীমিত আশংকায় মির্জাকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার প্রস্তাব করার জন্য মুর্শেদের লেখার নিন্দা জানাই। আর মুর্শেদকে অনুরোধ করি একটু ঠান্ডা পানি চোখে মুখে দিয়ে লিখতে, রজ্জুতে স্বর্পভ্রম না এটা একেবারে রজুতে এনাকোন্ডা দেখে মদিনায় হিজরত মালুম হচ্ছে।
------------------------------------
আমি তো গণে নেই বিচ্ছিন্ন একা
সঙ্ঘে সমুহে নেই সঙ্ঘমিতা।
------------------------------------
আমি তো গণে নেই বিচ্ছিন্ন একা
সঙ্ঘে সমুহে নেই সঙ্ঘমিতা।
রাসেল ভাই, ড়্যাবের ভঙ্গিকে তো কেউ সমর্থন করছে না। কথা হচ্ছে মির্জাকে নিয়ে। আপনার বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে আপনার মাথায় টাক কাজেই যখন খুশি সেখানে চাঁটি মারা যাবে, সেটা কোন অপরাধ নয়।
মির্জার ওপর ড়্যাবের প্রতিহিংসা চরিতার্থ হোক, এ-ও তো কেউ বলছে না। মির্জাকে বীর হিসেবে চিহ্নিত করার কারণটাই বা কী? সে ড়্যাবের ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে বলে?
সমস্যাটা ভাবমূর্তি নিয়ে নয়, সমস্যাটা একজন হ্যাকার সম্পর্কে আমাদের মনের মধ্যে যে স্তুতিস্পৃহা জেগে উঠেছে, তা নিয়ে। মির্জার প্রতিপক্ষ ড়্যাব বলেই কি আমাদের মনের মধ্যে একটা সমর্থনের জায়গা তৈরি হয়েছে?
তো ভিউয়ার্স, আপনারা যারা এইমাত্র আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তাদের জ্ঞাতার্থে মূল কয়েকটা কথা জানিয়ে দিই, সাদা টুপি হ্যাকার, কালো টুপি হ্যাকার - এই দুয়ের মধ্যে জনাব শাহী মির্জাকে কোন টুপির মাওলানা বলে আখ্যায়িত করা যায় এই নিয়ে ব্যাপক ভুটাভুটি চলছে। ভুট গ্রহণ শেষেই বলা যাবে তিনি কোন টুপির হ্যাকিং মন্দিরে পুরোহিত হিসেবে যোগ দিবেন!
বয়স বা অপরাধ কিংবা ইমোশনের ভিত্তিতে তাঁকে বিচার করা হবে নাকি, "এই ব্যাটা যে এক্সপি ব্যবহার করে সেইটা কি জেনুইন নাকি চোরাই মাল" সেইটা আগে নির্ধারিত হোক- এই নিয়েও একটা কথ্যভুটের আয়োজন করা হয়েছে। ফলাফল সময়মতো জানিয়ে দেয়া হবে ভিউয়ার্স আপনাদের।
আমাদের সঙ্গেই টিউনড থাকুন। দেখে আসি প্রতিক্রিয়া পোস্টে আর কি কি তথ্য পাই।
শাহী মির্জা যা চেয়েছিল, তা কিন্তু সে হয়ে গিয়েছে... ভালো কিংবা মন্দ, যে কোনোটা হিসেবেই সে এখন আলোচনার তুঙ্গে...
আমি কারো বক্তব্যেই যুক্তির অভাব দেখি না...
অপরাধের লঘু শাস্তি হওয়া দরকার এবং এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন হওয়া দরকার, যেন আইনের অভাবে ভবিষ্যতে মোল্লা হ্যাকারদের পাল্লায় আমাদের আবার না পড়তে হয়...
কিন্তু শাহীকে গুরু অপরাধ দেয়াটা অমানবিক হয়ে যাবে... ১০ বছরের জেলের ভয় দেখিয়ে ওর রাতের ঘুম হারাম করে কয়দিন পর "আর কখনো এমন করব না" জাতীয় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে...
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
অল্পকথায় যা বলার বলি। হ্যাকিং অপরাধ, বেশ গুরুতর রকমেরই অপরাধ। শাহী মির্জাকে হিরো বানানোর প্রক্রিয়া ও অপরাধের উদাহরণ দিয়ে অপরাধের জাস্টিফিকেশনের বিপক্ষে থেকেই বলি - শাহী মির্জার শাস্তি হতে পারে জনসেবামূলক-বেতনহীন কাজ, জেল কিংবা অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণ নয়।
এটুকু লেখার পর এখন মনে হচ্ছে, সবাই তো প্রায় একই কথা বলেছেন, তাহলে বিভেদটা কই?
হিমু ভাইয়ের "অপরাধ, বিচার, শাস্তি" লেখার মর্মার্থ এখন বুঝলাম। এই লেখাটা পড়ার সময় অনেক কথা মাথায় আসছিল কিন্তু এখন আর কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না। সবাই সবকিছুই বলে দিয়েছে।
_________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?
মন্তব্য
মির্জা সরাসরি মিডিয়া বা ড়্যাবের কর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে জানাতে পারতেন যে ভাই, আপনাদের কিন্তু প্যান্টের চেইন খোলা, ঠিক করেন। তাতে কাজ হোলেও হোতে পারতো।
আমার মনে হয় না এই কীর্তির পরেও ড়্যাব বা অন্যান্য সরকারি ওয়েবসাইটের কোন গুণগত পরিবর্তন ঘটবে। শুনলাম কোন একটি প্রতিষ্ঠানকে বিপুল পরিমাণ টাকা দেয়া হয় এই ওয়েবসাইট পরিচর্যার কাজ করার জন্যে। এখন যা হবে, অন্য কোন প্রতিষ্ঠানকে হয়তো আরো বেশি টাকা দেয়া হবে ড়্যাবের ওয়েবসাইটকে পাহারা দেবার কাজে।
২০০৬ সালে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সরকারি বিদ্যুৎসেবার খরচ নিয়ে একটা কাজ করছিলাম, তখন দেখেছি আমাদের সরকারি ওয়েবসাইটের কী করুণ হাল। একে হ্যাক করে ঠিক করা সম্ভব নয়। এর দায়িত্বে যে কর্তারা থাকেন, তাঁদের মানসিকতা হ্যাক না করা পর্যন্ত এই পঙ্গু ওয়েবসেবার মান পাল্টাবে না।
হাঁটুপানির জলদস্যু
সাবধান হিমু। মির্জা নাকি "সাইবার ডার্ক হিমু" - এই ছদ্মনামে হ্যাক করে। গোলমাল না হৈয়া যায়।
আমি সাইবার ডার্ক না, একেবারে খাঁটি ডার্ক। হ্যাকিঙের বিদ্যাও ড়্যাবের কর্তাদের মতোই। তবে বিনা কারণেই তারা আমারে ধইরা স্বীকারোক্তি বাইর কইরা নিতে পারে। নিজেকে তখন আমি শাহি মির্জা বইলাও দাবি করতে পারি, কিসুই বলা যায় না।
হাঁটুপানির জলদস্যু
হ্যাকিং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেই মনে করি। তবে শাস্তির ধরন বা মাত্রা নিয়ে বিতর্ক চলতে পারে। কিন্তু যে-দেশে যুবরাজ নিরপরাধ প্রমাণিত, সেই দেশে হ্যাকিং-এর জন্য শাস্তি চাইবার ভিত্তি আছে কি?
তুলনা টানবার জন্য দুঃখিত।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
পাকিস্তানিদের আমি অবিশ্বাস করি, যখন তারা গোলাপ নিয়ে আসে, তখনও। - হুমায়ুন আজাদ
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু?
অপরাধ অপরাধই ? তাহলে দেশে থাকতে অরিজিনাল সফটওয়ার কখনো ব্যবহার করেছি বলে তো মনে পড়ে না, সেটার শাস্তির কি হবে ?আর এখন যে প্রায়ই গান ডাউনলোড করি, এমপিথ্রি, পাইরেটেড ডিভিডির যে কালেকশন-এইগুলাও তো ক্রাইমের পর্যায়ে পড়ে, তাহলে ?
ড়্যাবে ধরবো না এফবিআই, সেইটা বুইঝা আগা। ড়্যাবে ধরলে ক্রসফায়ার, এফবিআই ধরলে জেলজরিমানা।
হাঁটুপানির জলদস্যু
হ, অদূর ভবিষৎে বাংলাদেশের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ড্যাবের ভূমিকার কথা প্লুটোনিয়ামের অক্ষরে লেখা থাকবে।
কস কী রে মমিন? মামুরা চাইরঠ্যাং এক করতেও দিবো না নাকি??
হাঁটুপানির জলদস্যু
অপরাধ কর কেন? তুমি সারা জীবন অপরাধ করে আসছ বলে অপরাধটা তো আর জায়েজ হয়ে যাই নাই!
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
আমি যেই অপরাধগুলার কথা বললাম তুমি কি তার একটাও কখনো করনি এবং এখনও দুই একটা করছো না বলতে চাও ?
আমি জায়েজ হওয়ার কথা বলি নি, বলতে চাইলাম ঐ ওয়েবসাইট হ্যাক করায় যদি কোনও অর্থিক ক্ষতি হয়ে থাকে তার থেকে লক্ষ কোটি গুন ক্ষতি বাংলাদেশের কম্পিউটার ইউজাররা করে আসছে।
পাইরেটেড সফটওয়্যারের ব্যাপারে বাংলাদেশের আইন এবং আইনপ্রয়োগপদ্ধতিকাঠামো কি সংশ্লিষ্ট প্রোডাক্টগুলির ব্যবহারনীতিকে ড়্যাটিফাই করে? আজকে দুপচাঁচিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র মোহাম্মদ সোলায়মান যদি পাইরেটেড মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ব্যবহার করে, তাহলে বাংলাদেশ রাষ্ট্র বা মাইক্রোসফট তাকে কিভাবে পাকড়াও করবে? কোন আইনের আওতায় শাস্তি দেবে? ড়্যাব তো ওরে ধরলেও দুপচাঁচিয়ার কোন ক্ষেতে নিয়ে ক্রসফায়ারে ফেলবে।
চোরাই সফটওয়্যার আমিও ছোটকালে বহুৎ ব্যবহার করসি। ইন ফ্যাক্ট সুযোগ পাইলে আবারও করার সম্ভাবনাই বেশি দেখি। কিন্তু যেখানে আইন আছে, এবং সেই আইন প্রযুক্ত হবার সম্ভাবনা যথেষ্ঠ, সেখানে আমি এই কাজ করবো না। কষ্টেসৃষ্টে হালাল গরু খাবো।
তবে অপরাধ অপরাধই। যদি পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারের বিরুদ্ধে দেশে জোরালো আইন তৈরি হয়, এবং তার যথাযথ প্রয়োগের যোগ্যতাসম্পন্ন বাহিনী থাকে, আমার চোরাই সফটওয়্যার ব্যবহারের তো কোন সম্ভাবনা দেখি না।
হাঁটুপানির জলদস্যু
সেটাই আসলে, সুযোগের অভাবে চরিত্রবান।
দোস্ত আমারে একটা কথা ক? আমাদের কয়জনের সাধ্য ছিল অরিজিনাল প্রাইসে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম কেনার ? কয়জন মানুষ অটোক্যাড জানত, আর কয়জনেরই বা কম্পিউটার থাকত ? আজকে আমরা দুনিয়ার তাবৎ মুভির খবর রাখি, রক এন্ড রোলের ইতিহাস আমাদের ঠোঁটের আগায়। ঐ পাইরেটেড কপি না থাকলে সলিড গোল্ড আর মুভি অফ দা উইক কতদূর টানত আমাদের ?
মানলাম হ্যাকিং খারাপ, পাইরেটিং জঘন্য কাজ। কিন্তু আমার বলার মুখ কোথায় ? চীন বা জার্মান বা আমেরিকান বা রাশান বা ব্রিটিশ কোনও না কোনও হ্যাকারের কল্যানে আমরা আজ কম্পুবিদ্যাবিশারদ।
দেশের ইকোনমিক অবস্থার উপরে নির্ভর করে যখন কোনও কম্পানি তাদের প্রাইসিং নির্ধারণ করবে না, তখন হ্যাকাররা কি আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে এক একজন প্রমিথিউস নয় ?(এখানে আমি হ্যাকিং করে ক্রেডিট ইনফো চুরি করা বুঝাচ্ছি না, ঐটাকে এখনও পর্যন্ত চুরি ছাড়া আর কিছু ভাবার উপায় নাই। আর শাহী মির্জার কাজও এমন কিছু উঁচু মাত্রার কাজ না।)
আব্বে, ক' যে আইনের অভাবে চরিত্রবান ।
আমরা যখন কম্পিউটার হাতানো শুরু করসি, তখন পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারের বিরুদ্ধে কোন আইন ছিলো? আমি এখনো নিশ্চিত না এইরকম কোন আইন আছে কি না দেশে। তখন আইনের ভয় ছিলো না, পাবলিক ব্যবহারও করসে সমানে।
এইটা ঠিক, কোন না কোন হ্যাকারের বদৌলতে আমরা কম ঝামেলায় পিসি গুঁতানোর কাম চালাইতাসি, কিন্তু কাজটা সেই কারণে "ঠিক" হয় না। আমাদের বাপচাচারাই কিন্তু ঘুষ খায় নাইলে ঘুষ দেয়, কিন্তু তাই বইলা কি ঘুষ খাওয়া "ঠিক" হয়ে যায়?
মির্জার কেসটা তুই এলিয়েন অ্যানালিস্টের মতো কইরা দ্যাখ। পোলাটার ইনটেনশন ভালো ছিলো, এ-ই তো আমগো যুক্তি? তো ইনটেনশন ভালো থাকলে ও সোজা রাস্তায় আগাইতো, সমস্যা কোথায়? একটা ইমেইল করতো ড়্যাবের কাছে, সিসি পাঠাইতো যাবতীয় পত্রিকার সম্পাদক বরাবর। কারো হোগা মাইরা তো তার হোগার অস্তিত্ব প্রমাণের দরকার পড়ে না, কইলেই হয় যে ভাই আপনের হোগা ঢাকেন, নাইলে আমি না মারলেও মাইনষে আইসা মারবো।
মির্জারে ধইরা ১০ বছরের জেল বা ১ কোটি টাকা জরিমানা করা হোক, এইটার সমর্থন বোধহয় আমরা কেউ করি না। একই সাথে ড়্যাবকেও বুঝতে হবে, যদি তারা নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে না পারে, ওয়েবসাইটে কোন কনফিডেনশিয়াল তথ্য তারা রাখতে পারবে না।
হাঁটুপানির জলদস্যু
আচ্ছা ইনটেনশন ভাল বা খারাপ সেটা নিয়া কিন্তু প্রথমে আমার কোনও বক্তব্য ছিল না। ছিল সাইবার ক্রাইম নিয়ে এবং আমরা সবাই যে কম বেশী সাইবার ক্রিমিনাল সেটা নিয়ে।
শাহী মির্জার বক্তব্য ঠিক কিন্তু জানানোর পদ্ধতি ভুল,যতই চমকপ্রদ হোক না কেন। কিন্তু আলমগীর সাহেব যে বললেন ২-১ বছর জেলে রাখা যেতে পারে, তোর কি মনে হয় তাতে কি আমরা একজন সম্পূর্ণ নতুন শাহী মির্জা পাব ?আমি জানি না, দেশের প্রচলিত আইন কি বলে, কিন্তু র্যাবের ওয়েবসাইট হ্যাক করার জন্য স্পেশাল শাস্তি, সেটা আমি কোনভাবেই মানতে পারব না। আর একটা কথা উঠে আসছে যে অন্য হ্যাকাররা উৎসাহ পাবে। সিকিউরিটি ব্রিচ করার কোনও উপায় থাকলে কেউ না কেউ সেটা এক্সপ্লয়েট করবেই।মানুষের শুভবোধ এখনও ঐ পর্যায়ে পৌছায় নাই। এটা লাকের ব্যাপার যে কেউ হ্যাক করে পর্ন আপলোড করে দেয় নাই।
-------------------------------------
"শিয়রের কাছে কেনো এতো নীল জল? "
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আসেন এদের মাথায় তুলে নাচি। দুধের বাচ্চা কিনা। তবে শাস্তি হওয়া উচিত সামাজিক কাজে এদের নিয়োগের মাধ্যেমে। জেল বা জরিমানা কোনটাই নয়। অপরাধ করে ধরা পড়লেই মুক্তি চাওয়া আমাদের জাতিগত বৈশিষ্ট্য। অপরাধীকে আমরাই বিভিন্নভাবে মাথায় তুলে নেই। সেটা জলীল জ্যোতিষী থেকে শুরু করে যুবরাজ কিংবা শ্রমিক থেকে শুরু করে যত বড় খুনিই হোকনা কেন! বিচিত্র আমাদের মানসিকতা, বিচিত্র এই দেশ।
@হাসান ভাই
স্বাভাবিক, শ্লীল, মানবিক আর অধিক সুগন্ধময় বিচারব্যবস্থা সমন্বিত একটা দেশের বা জাতির নাম বলেন। চ্যালেঞ্জ দিলাম।
@মাহবুব মুর্শেদ
আপনার মতের সাথে একমত। ২১বছর বয়স আমাদের দেশের মাপে অল্প। কিন্তু সে ছেলে আইন জানে না সেটা বিশ্বাস হয় না। ক্র্যাক করা সাইটে সে নিজেরই উল্লেখ করেছে সাইবার আইন প্রণয়নের কথা। ছেলেটা তার বোকামির মাশুল দিবে। এতে কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু আমি তার ১০বছর সাজা বা ১কোটি টাকা জরিমানার পক্ষে না। বছর এক/দুই যথেষ্ট।
জেবতিক ভাইয়ের লেখার সাথে একমত। যে দেশে বড় বড় অপরাধীরা শাস্তি পায় না; সেখানে শাহী মির্জার প্রস্তাবিত ১০ বছর কারাদণ্ড লঘু পাপে গুরু দন্ড বলেই মনে করি। তার অপরাধের ধরণ দেখে পরিষ্কার যে সে নিজেই ধরা দিতে চেয়েছে।
বড়জোর আর্থিক জরিমানার সাহায্যে কিছু সংশোধনী আনার চেষ্টা করা যেতে পারে।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
বড় অপরাধের শাস্তি হয় না দেখে ছোট অপরাধ মাফ হয়ে যায়? এই নিয়ম কোথায় পেলেন?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
কেতাবী আলোচনায় খাটে যে অপরাধ যত ছোট হোক শাস্তি দিতেই হবে। কিন্তু বড় এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে যেখানে শাস্তির বিধান করা সম্ভব হয় না সেখানে এই ক্ষুদ্র অপরাধে শাস্তি দেয়া কেতাবী ঢং য়ে জায়েয হতে পারে কিন্তু সামগ্রিকভাবে একটা বড় মাপের হঠকারিতা ছাড়া কিছুই হবে না।
ট্রুথ কমিশন আর কালো টাকা সাদা করার যে পদ্ধতি আমাদের দেশে চালু আছে; তাতে তো অপরাধ স্বীকার করলে তার লঘু শাস্তি শুধু নয় ক্ষেত্রবিশেষে শাস্তিই হয় না। হ্যাক করা সাইটে নিজের আসল নাম ঝুলানো প্রকারান্তরে অপরাধ স্বীকার করা। সেক্ষেত্রে ট্রুথ কমিশন ওয়ালাদের কি উচিত না শাহী মির্জার শর্তসাপেক্ষে মুক্তিদান। হতে পারে সে শর্ত ভবিষ্যতে এ ধরণের অপরাধে আর না জড়ানো অথবা ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা পরিবর্ধন।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
যদি মাফ করে দেয় তাহলে তার পরিনতি কি হবে ভেবে দেখেছেন? আরো শত শত ছেলে উৎসাহিত হবে। যেহেতু এটা করে ছাড় পাওয়া যায় সেহেতু আরো ছেলেপেলে উৎসাহিত হবে। কেরমে কেরমে পালে পালে হ্যাকার গড়ে উঠবে। সাইবার মোল্লারা হ্যাকিং শিখে আকাম কুকাম করে বেড়াবে। আপনারা যারা এখন এইটার সার্পোট করছেন তারা বিগ পিকচার টা দেখছেন না।
টুকটাক হ্যাকিং (হোয়াইট হ্যাকিং) আমরাও করেছি। কিন্তু সরকারী কোন ওয়েসাইট কিংবা অপরাধ মূলক কিছু করার জন্য নয়!
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
কেতাবী আলোচনায় খাটে যে অপরাধ যত ছোট হোক শাস্তি দিতেই হবে। কিন্তু বড় এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে যেখানে শাস্তির বিধান করা সম্ভব হয় না সেখানে এই ক্ষুদ্র অপরাধে শাস্তি দেয়া কেতাবী ঢং য়ে জায়েয হতে পারে কিন্তু সামগ্রিকভাবে একটা বড় মাপের হঠকারিতা ছাড়া কিছুই হবে না।
ট্রুথ কমিশন আর কালো টাকা সাদা করার যে পদ্ধতি আমাদের দেশে চালু আছে; তাতে তো অপরাধ স্বীকার করলে তার লঘু শাস্তি শুধু নয় ক্ষেত্রবিশেষে শাস্তিই হয় না। হ্যাক করা সাইটে নিজের আসল নাম ঝুলানো প্রকারান্তরে অপরাধ স্বীকার করা। সেক্ষেত্রে ট্রুথ কমিশন ওয়ালাদের কি উচিত না শাহী মির্জার শর্তসাপেক্ষে মুক্তিদান। হতে পারে সে শর্ত ভবিষ্যতে এ ধরণের অপরাধে আর না জড়ানো অথবা ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা পরিবর্ধন।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!
আলমগীর ভাই,
এই চ্যালেঞ্জ ট্যালেঞ্জের কোন দরকার নেই । এগুলো খুব রিজিড মনে হয় ।
আপনার যদি মনে হয়-বাংলাদেশ রাষ্ট্র কাঠামো আর তার বিচার ব্যাবস্থা পৃথিবীর অন্য রাষ্ট্র সমুহের তুলনায় যথেষ্ট স্বাভাবিক, শ্লীল, মানবিক আর অধিক সুগন্ধময় বিচারব্যবস্থা সমন্বিত অথবা তুলনামুলক ভাবে অন্য কোন রাষ্ট্রই এইসব মানদণ্ডে বাংলাদেশের চেয়ে খুব একটা এগিয়ে নেই আসলে --তাহলে আমার কিছু বলার নেই ।
তবে কিছু ফ্যাক্ট বিস্মৃত না হওয়ার সুযোগ নেই
বাংলাদেশের প্রতিটি সামরিক শাসন কিন্তু বিচারপতিগন কর্তৃক জায়েজকৃত । সামরিক শাসনকে যদি আপনি অবৈধ মনে করেন, বিচারপতিদের সামরিক শাসন প্রীতিকে কি মনে করেন?
ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ এবং খালেদা আমলের বিচারবহির্ভুত হত্যার দায়মুক্তি আদালত কর্তৃক স্বীকৃত
অর্পিত সম্পত্তি আইন নামে একটা বর্বর আইন চালু আছে বাংলাদেশের বিচার ব্যাবস্থায় যে আইন সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখলে ব্যবহৃত হয় ।
সার্টিফিকেট জাল করে বিচারক হওয়ার নজির এই দেশে আছে
বিচারপতি ফজলুর রহমানকে চোর বলা কি আদালত অবমাননা হবে? এই চোরকে যে ব্যবস্থা বিচারক হিসেবে মেনে নিয়েছে তাকে সম্মান করতে হবে?
এরকম অনেক অনেক উদাহরন দেয়া যেতে পারে, বিপরীতে আপনি ও হয়তো নানা দেশের রাষ্ট্র ও বিচার ব্যবস্থার অসংগিত্র উদাহরন দেবেন ।
তবে অন্যদের খারাপকিছুকে ঢাল করে নিজেদের অসভ্যতাকে আড়াল করা আমার কাছে বরাবরই হীনমন্যতা ও আত্নপ্রবঞ্চনা মনে হয় ।
এই মনে হওয়া তুলে রেখেছিলাম অন্য একটা পোষ্টে । নীচে লিংক দিলাম । সময় পেলে পড়ে দেখবেন । ভালো থাকুন
আত্নপ্রবঞ্চনার অংশীদারীত্ব
-------------------------------------
"শিয়রের কাছে কেনো এতো নীল জল? "
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
হাসান ভাই কি এই উদাহরন দিয়ে হ্যাকিংকে জায়েজ বলছেন?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
না । এটা ভিন্ন বিষয় ।
তবে বিনাবিচারে মানুষ হত্যাকে যারা দায়মুক্ত করে তাদের আদৌ কোন বিচার করার( হ্যাকিং হোক আর কিলিং হোক) নৈতিক অধিকার আছে কিনা-সেটা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুললে তার প্রশ্নকে অসঙ্গত বলার মতো যথেষ্ট যুক্তি দাঁড় করানো যাবেনা ।
-------------------------------------
"শিয়রের কাছে কেনো এতো নীল জল? "
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আপনি যেসব আক্ষেপ তুলে এনেছেন তার প্রায় সবই আমি 'সভ্য' দেশ থেকে বের করে দিতে পারব।
ড. জাফর ইকবাল নিকট অতীতে কোন একটা লেখায় অনেকটা এরকম বলেছিলেন:
আমার মা দেখতে অসুন্দর, খিটখিটে, বেটে, গায়ের রঙ কালো। কিন্তু তবু তাকে আমি ঘৃণা করতে পারি না, ছেড়ে যেতেও পারি না।
আরও একটা কথা প্রায়ই বলতেন (বিশ্ববিদ্যালয়ে জামাতীদের উত্থানে আক্ষেপ করে): খুব প্রিয় কারো অসুখ হলে, বা নিতান্ত মারা যাবার সময়ে আমরা কিন্তু তার পাশে থাকি। মারা গেলেও সৎকার না করে কোথাও যাই না।
রাষ্ট্রে ঘুণ ধরেছে মানে মির্জা নিদোর্ষ না।
মির্জার অপরাধ ছোট, কিন্তু সে যে উদাহরণ তৈরি করেছে তা মারাত্মক। যারা সরকারী সাইটের নিরাপত্তা বাড়াতে বলছেন, তাদের জন্য বলি: নিরাপত্তা ১০০ ভাগ নিশ্চিত করা সম্ভব না। সে পরিমাণ অর্থও সরকারের থাকার কথা না। আর তার চেয়েও বড় কথা, অনিরাপদ বলেই সেটা ক্র্যাক করা যায় না (আইনত, নৈতিক বিচারে ইত্যাদি)। হিমুর প্যান্টের চেইনের উদাহরণটা ভাল লেগেছে।
একজাক্টলী! আমি গাড়ির উদাহরনটা দিচ্ছিলাম এই ব্যাপারটা সহজ ভাবে বোঝানোর জন্য। গ্যারেজের দরজা খোলা থাকলেই কি গাড়ী চুরি করতে হবে? কিংবা গ্যারেজের দরজা লাগালেই কি চুরি বন্ধ হয়ে যেত?
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
অপরাধীর সংজ্ঞার ব্যাপারেই আমরা একমত হতে পারিনা, এ দেশকে অপরাধমুক্ত করবো কী করে? তবে শাহীকে লঘু শাস্তি দেয়া উচিত, সরকারকে ঘুম থেকে জেগে ওঠা উচিত। কোন কোন সরকারী ওয়েবসাইটকে ভাগাড়ের সাথে তুলনা করা যায়।
দেশ আর রাষ্ট্রযন্ত্র দুটো ভিন্ন বিষয়।
'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি' এই আবেগে আমি উদ্বেলিত হতে পারি, 'স্মৃতি দিয়ে তৈরী সে যে স্বপ্ন দিয়ে ঘেরা' -সেই স্মৃতি ও স্বপ্নে আমি দোল খেতে পারি কিন্তু এই রাষ্ট্র যন্ত্র যদি নিপীড়নমুলক হয়- দেশপ্রেমের আতিশয্যে তার দায়ভার আমাকে কেনো নিতে হবে?
নাগরিকের জন্য এটা একটা সতর্ক অবস্থান ।
ডঃ ইকবাল যে উদাহরন দিয়েছেন আশা করি তা দেশকে নিয়ে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিয়ে নয় । এই রাষ্ট্রযন্ত্র ও তার আইন সমুহ ব্যবহৃত হবে নাগরিককে নিষ্পেশনের জন্য, সংখ্যায় লঘু যে ধর্মে কিংবা জাতীয়তায় -তাকে কোনঠাসা করার জন্য । তবু দেশপ্রেমের দোহাই দিয়ে তার সব কুৎসিত, অমানবিক রূপ আমার চেপে রাখতে হবে?
এটা কিন্তু ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী ধারনা যা হিটলারের তীব্র দেশপ্রেমিক নাজিবাদের উত্থানে সহায়ক হয়েছিলো ।
-------------------------------------
"শিয়রের কাছে কেনো এতো নীল জল? "
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
আমি এটা বুঝছি না, সাধারন চুরি, ছ্যাচড়ামির মত অপরাধের সাথে আপনারা রাষ্ট্রযন্ত্রের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের জন্য করা অপরাধের সাথে মেশাচ্ছেন কেন? লেট গেট আওয়ার ফোকাস ক্লিয়ার হিয়ার। আমরা হ্যাকার মির্জার কথা বলছি। বলছি এটা যেন ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য ইন্সপায়ারিং একজাম্পল না হয়।
এর মাঝে অন্য প্রসংঙ্গ এনে বিষয়টাকে হালকা করবেন না প্লীজ।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
প্রশ্নটা শুধু অপরাধের নয়, অপরাধের শাস্তি কে দিচ্ছে তার ও ।
আর আইন কি চুরি/ ছ্যাচড়ামীকে সাধারন/অসাধারন ক্যাটাগরাইজড করে আলাদা আলাদা ট্রিট করতে পারে?
-------------------------------------
"শিয়রের কাছে কেনো এতো নীল জল? "
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।
একটা সহজ-সরল বিষয়ের মধ্য রাষ্ট্র, দেশ তত্ত্ব চলে আসল।
গণতন্ত্র মানলে তো নিতে হবেই। ভোটে যারা যাবে তাদের সব দায় আমাদের। বিএনপি/জামাত ক্ষমতায় থাকার সময় সরকারি কর্মচারী (মুক্তিযোদ্ধা) রা কি নিজামি/মুজাহিদরে স্যার স্যার বলে নাই? তাদের কুকীর্তি জায়েজ করার জন্য প্রেস নোট লিখে নাই?
বিএনপির দ্বিতীয় আমলে শাহজালালের ভিসি ছিলেন হাবিবুর রহমান (এখন মৃত)। (উনি বাম কাম আলীগার)। আমরা তার কার্যকলাপে যারপরনাই ত্যক্ত ছিলাম। কিন্তু কখনও কোন আন্দোলনের কথা তুললেই আমাদেরকে চাপা দিয়ে রাখা হত। বলা হত, এটা গিয়ে যে আসবে সে ত আরো খারাপ হইতে পারে। এ যুক্তি যারা দিত তাদের নাম প্রকাশ করা উচিৎ হবে না।
আমার বাবা যদি ডাকাত বা ঘুষখোর হয়, তিনি কি আমাকে শাষণ করার অধিকার রাখেন? আপনার কথামতো মনে হচ্ছে, না তার কোন অধিকার নাই।
তা হলে কী করতে হবে? আগে শাসকদের নিজেদের বিচার করতে হবে। বিচারক কারা হবে? বিচারকরা তো ঘুষ খায়। আনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের। কেমনে? তাদের অনেকে তো ঘরে বৌ পিটায়। এটা কোথায় গিয়ে শেষ হবে?
লেখকের সাথে একমত। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিই হওয়া উচিত, যেহেতু মেধাবী ছেলে, জেলে পুরে রেখে সেটার অপচয় না করে উচিত আর্থিক শাস্তি দেয়া। একটা ক্রেজী কাজ হতে পারে, ছোকরাকে ড়্যাবেই চাকরী দিয়ে মাসে মাসে বেতনের একটা অংশ কেটে রাখা হবে শাস্তি হিসাবে।
যে কারণগুলোর জন্য শাস্তি দেয়া দরকার সেগুলো হলো, ১) বদ মোটিভেশন, ২)আফটারইফেক্ট
মোটিভেশন:
ছেলেটার বাবা পুলিশে চাকুরী করে, শুধু ড়্যাবের ওয়েবসাইট নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত হলে সে বাবার মাধ্যমে অবশ্যই ড়্যাবের আইটি ইন্টেলিজেন্সের কাছে এ্যাপ্রোচ করতে পারত
এমনকি সে যদি জেনে থাকে সিকিউরিটি বাড়াতে কি কি করা দরকার তাহলে সেগুলো সাজেস্টও করতে পারত
কিন্তু সে সুপারহিরো হতে চেয়েছে, একেবারে বাঘের খাঁচায় হাত দিয়েছে সে ইচ্ছে করেই
আফটারইফেক্ট:
মুর্শেদ অনেকটুকুই বলেছেন, এছেলেকে ছেড়ে দিলে হুড় লেগে যাবে সারাদেশে। সাইবারক্রাইম একবার পাখা মেললে প্রথমে আক্রমণ করে ফিনান্সিয়াল সেক্টরে। আমাদের ব্যাংকগুলোর ড্যাটাবেজ কততা ডিফেন্ডেড জানিনা, তবে ড়্যাবের এই অবস্থা দেখে কিছুটা তো ভীত হতেই হয়। সেদিকে যদি এক্সপার্টরা হাত বাড়িয়ে সফল হয় তাহলে ছ্যাড়াব্যাড়া লেগে যাবে।
তারচেয়ে ভয়াবহ যেটা, সেটা হলো, ড়্যাবের এই দূর্বলতার কথা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছড়িয়ে গেছে। ইন্টারন্যাশনাল হ্যাকারগুলা যে কি চীজ সেইটা আমরা সবাই ধারনা করতে পারি। এরা যদি বাংলাদেশের এই দূর্বলতার কথা জেনে সুযোগ নেয়, একেবারে খোঁড়া করে দিবে।
তখন কি এর দায় শাহী মির্জা নিতে পারবে?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
আন্তর্জাতিক হ্যাকাররা কোন আকাম করলে সেই ৯২-৯৩ সালের পাপী নীতিনির্ধারকরা ফাল দিয়া উইঠা কইবো, কইসিলাম না গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় তথ্য পাচার হইবো? দ্যাহো কথা ফলসে কি না!
কে জানে, ইন্টারনেটরে ক্রসফায়ারে ফ্যালে কি না। সরকারি লোকজন তো হয় প্রযুক্তিবিরোধী নাইলে প্রযুক্তি উদাসীন, অ্যাবসলিউট রেডটেপিজমে ফিরতে তারা হয়তো লুঙ্গি কোচা মাইরা বইসা রইসে।
হাঁটুপানির জলদস্যু
হুমমম, শাহী মির্জা তো চামে চামে দেশের রাজনীতি এমনকি আমলানীতিতেও অবদান রেখে ফেলবে মনে হয়
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে
আরিফ জেবতিকের পোস্টটার একটা বিশ্লেষণ করার লোভ সামলাতে পারলাম না। জেবতিক ভাই ক্ষমা করে দিয়েন।
বস্তা বেঁধে আনা হয়েছে? প্রমান আছে? নাকি ইমোশন নিয়ে খেলার ভূমিকা এইটা?
নিতান্তই ছেলেমানুষী ব্যাপার? দুদু খায় নাকি ছেলে? হ্যাকিংয়ের মত জটিল বিষয় শিখতে পারল আর এথিকসের মত সাধারন বিষয় শিখল না? এবার যে এই ধরনের ঘটনার ঢল নামবে সেটা ঠেকাবে কে? আরিফ জেবতিক?
এটি খুবই অযত্নে যেনতেন প্রকারে বানানো হয়েছে, তাতে কি এটা হ্যাক করা জায়েজ হয়ে গেছে? উদ্ভট, ছেলেমানুষী যুক্তি!
আর্শ্চয! যতই ফকিরী হোক, তাতে কি হ্যাক করা জায়েজ হয়ে যায়? শত্রুর ঘরে কি চুরী করা গর্বের কাজ হয়ে যায়? কাম অন! কাম টু ইওর সেন্সেস।
শুরু হল ইমোশন নিয়ে খেলা। হাজারটা ব্যাপার মওকুফ হয়ে গেছে তাই এটাও মওকুফ করে দিতে হবে! মামার বাড়ির আব্দার!
সুকান্তের কবিতা টেনে বিষয়টাকে আবেগ জর্জরিত করার চেষ্টা!
আবার ইমোশন নিয়ে খানিকটা নাড়াচাড়া। শেষ মেষ রাষ্ট্রযন্ত্রের কথা বলে পাঠককে দলে টানা।
নাহ জেবতিক ভাই, ক্ষমা করবেন আপনার আবেদনে সারবস্তু কিছু পেলাম না।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
প্রিয় মুর্শেদ ,
আলোচনার বিষয় এখানে দুইটি ।
প্রথমটি হচ্ছে , আপনার পোস্টের বিষয়ে । সেটা নিয়ে একটা আলোচনা হতে পারে । সেই আলোচনাটি কমেন্টের ঘরে করতে চাচ্ছি না , কারন এই বিষয়ে শুধু আপনি নন , অনেকেই দ্বিমত প্রকাশ করেছেন । আপনাদের অবস্থানকে শ্রদ্ধা এবং প্রাসঙ্গিক বক্তব্য যতোটুকু আমার তরফ থেকে আছে , সেটি দেয়ার জন্য তাই আলাদা পোস্ট লেখা আবশ্যক । আবার সচলের রেওয়াজ অনুযায়ী আলোচ্য পোস্টের রেশ ধরে নতুন পোস্ট দেয়াটাও ঠিক শোভন মনে হচ্ছে না , তাই পোস্টটি হয়তো অন্য কোথাও করা যেতে পারে ।
দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে , আপনার উপরোক্ত কমেন্টটা । আমার লেখা বিশ্লেষনে আপনার কষ্ট দেখে লজ্জিত হলাম ।
'' বস্তা ভরে নিয়ে আসা ''বলতে যখন আপনি বস্তা দেখাতে বললেন , তখন হাসি পেল শুধু । এই বিষয়ে কোন উত্তর দেব না , কারন সেই উত্তরটি দিতে গিয়ে বস্তা প্রদর্শন জাতীয় আলোচনাটি আসলেই স্বস্থিকর মনে হচ্ছে না ।
অপরাধ না কৃতিত্ব তা নিয়ে আমি ভাবছি না
হ্যাক করার সময় সে যে কথাটা লিখে দিয়েছিল সেটা আমার কাছে অনেক বিশি গুরুত্ব পূর্ণ
বাংলাদেশ সরকার আইটির উন্নতির জন্য কিছুই করছে না কিন্তু সাইবার অপরাধ বিরোধী আইন বানাচ্ছে
মির্জা না বুঝে করেছে বলে আমার মনে হয় না
বরং যে বিষয়টাকে সে ইঙ্গিত করেছে সে আমাদের অনেকেরই চোখে পড়েনি
০২
আরিফের পোস্টটা কিন্তু আমার মতে মূলত ছিল যখন যখন যাকে তাকে ধরে দেবতা কিংবা শয়তান বানিয়ে দেবার প্রক্রিয়ার বিপক্ষে
আমি তার সেই মতামত এখনও সমর্থন করি
প্রথম আলো নাকি আরেকটা খবর দিয়েছে, ভারতে অমুসলিমরা রোজা রাখছে। পোলাপাইন বেশ আলোচনা করছে এখানে।
প্রথম আলো কি যাযাদির পথে?
প্যান্টের চেইনও ঠিক করা লাগবে আবার শাহী মির্জারা হিরো হয়ে গেলে পোলাপাইনের ভবিষ্যত ফকফকা।
---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো
আমি সাফাই গাইবো না।
তবে হ্যাকিঙের যে বিদ্যা সে দেখিয়েছে তাতে তার একই সাথে পুরস্কার তিরস্কার দুইই প্রাপ্য।
রাষ্ট্রের ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এরকম হবে কেন? মির্জার শাস্তির চাইতে এই প্রশ্নটা অনেক বেশী তীব্রভাবে সামনে আসছে। মির্জা যে অপরাধটা করেছে সেটা হচ্ছে না বলিয়া পরের গৃহে ঢোকার। সেখানে সে নোটিশ দিয়ে এসেছে আপনার গৃহের ব্যাড়া ঠিক করেন নাইলে চোর ঢুকবো। তার মনে আসলে কি ছিল না ছিল কিংবা এই দৃষ্টান্ত পরে কোন প্রপঞ্চ সৃষ্টি করবে না করবে তার আগে আমার মতে ড়্যাবের ওয়েব নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনায় থাকা বেতনভুকদের কাঠগড়ায় তুলতে হবে।
রাষ্ট্র ইতিমধ্যেই যে পারফরমেন্স দেখিয়েছে তাতে আশান্বিত হবার তেমন কিছু দেখি না। মির্জাকে কত টাকা জরিমানা করা উচিত বা কত বছরের জন্য জেলে পোরা উচিত এগুলো ফালতু বিষয়। সে হয়তো অপরাধ করেছে। সেই অপরাধের পুরুত্বঘনত্ব নিয়ে আমার মতামত অমিতের মতোই।
অজ্ঞাতবাস
অজ্ঞাতবাস
সুমন ভাইয়ের সাথে আমিও একমত
------------------------------------------------------
স্বপ্নকে জিইয়ে রেখেছি বলেই আজো বেঁচে আছি
------------------------------------------------------
হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন’রা কি কখনো ফিরে আসে !
নীতিগতভাবে দেখতে গেলে মির্জা অপরাধই করেছেন। আর সেকারণেই নীতিগতভাবে দেখতে গেলেও একমাত্র নীতিবান হাতেই একমাত্র অধিকার রয়েছে মির্জাদের ঘাড়ে খড়গ চালানোর। যে দেশে তারেক সাহেবদের ধরা হয় দুর্নীতির কারণে, আবার ছেড়েও দেয়া হয় কোন কারণ না দেখিয়েই, যেখানে তথাকথিত দেশপ্রেমী, সেক্যুলার আওয়ামী নেতারা জামাতের কুকুরদের সাথে হাত মেলাতে চোখের চামড়াও কাঁপে না, সে দেশে নীতিবানদের জায়গা কোথায়?
আরিফ জেবতিকের সাথে একমত। এমনকি ওনার আবেগপ্রবনতার সাথেও আমি তাল মেলাতে পারবো। আর সুচারু নৈতিকতার জোর থেকেই বলছি, মির্জাদের বড় কোন শাস্তি দেয়া হবে, এসব তথাকথিত নীতিবানদের আরেকটি বড় অনৈতিক কর্ম।
কেউ কেউ সামনের ভবিষ্যতের কথা তুলেছেন। মির্জাদের শাস্তি না হলে তারা কি শিখবে? হাস্যকর কথা! মির্জাদের কথা বাদ দিয়েও আর কোন ইতিগত উদাহরণ রেখেছে আমাদের সমাজ আর রাষ্ট্র? রাখেনি... কখনোই...রাখেনি..!
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
তীরু ভাইয়ের সাথে ১১০% একমত।
মির্জা ভাল না খারাপ কাজ করেছে, সেটা জাজ করার জন্য আমরা কেউই কি নীতিগতভাবে শক্ত অবস্থানে আছি ?
০০
সবার লেখাই পড়লাম মন দিয়া। আমিও কিছু কইতে চাই ভিন্ন প্রেক্ষাপট থিকা। প্রেক্ষাপটের ভিন্নতার হেতু দুইটি - এক. শাহী মির্জার বয়সটা আমি পার কইরা আসছি বেশি দিন হয় নাই। দুই. ওই বয়সে আমি নিজেও এই কাজগুলাতে লিপ্ত ছিলাম, তাই ওর তরফের কিছু ব্যাপারও হয়তো বুঝাইতে পারুম।
০১
রাগিব ভাইয়ের কথাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি আজ পর্যন্ত বাংলাদেশে যত “মেধাবী হ্যাকার” দেখেছি, তার শতকরা নিরানব্বুই ভাগই হইতেছে Script Kiddies, অর্থাৎ কিনা এগো প্রোগ্রামিং এর সেন্স থাকে না ( অন্তত হ্যাক করার মত ), এর সিকিউরিটি হোল বিষয়েও এত কিছু জানে না। আমি নিজেও সেই দলেই ছিলাম। এদের কাজ মূলত অধ্যাবসায়। প্রচুর খোঁজখবর রাখতে হয় কই কবে কোন হোল ধরা পড়লো, কোন এক্সপ্লয়েট রিলিজ পাইলো - মোদ্দা কথা প্রাথমিক কাম হইতেছে একটা কমিউনিটি মেইনটেইন করা।
এরপর এর কাম হইতেছে, কোড কম্পাইল করা। সাধারণত যে কোডগুলি পাবলিক রিলিজ দেয় হ্যাকাররা, সেইগুলার মধ্যে ইচ্ছা কইরাই কিছু ছোট খাটো ভুল কইরা দেয়, যাতে একদম মঘা কেউ কোড কম্পাইল কইরা মজা না নিবার পারে। কম্পাইলের পর এরর দেইখা কোড কারেক্ট করতে পারে - অন্তত এতটুকু চাল্লু পোলাপান যাতে মজাটা পায়। অবশ্য অনেক দয়ার সাগর ঝানু হ্যাকার আছে, যারা পোলাপাইনের কষ্ট দেইখা দয়া কইরা নিজেরাই কোড কম্পাইল কইরা দেয়।
এরপর কোন একটা হাইস্পীড শেলে কম্পাইল্ড ফাইলটা আপলোড কইরা দেওয়া হয় ( অবশ্য সোর্স আপ কইরা, জিসিসি দিয়াও কম্পাইল করা যায় শেল এ ), এতে দুইটা সুবিধা পাওন যায়, এক - ব্যান্ডউইডথ বেশি থাকে দুই - নিজের আইপি টা বাইর হয় না
ব্যস, এইবার কাম খতম। এইবার গুতাগুতি কইরা ডিফেইস করা শুরু। এর বাইরে আর কোন কাম নাই।
০৩
মুর্শেদ ভাই যে পাড়ার থিকা আরিফ ভাই এর লেখাটা নিছেন, ওই পাড়ায় কিছু এই হ্যাকিং বিষয়ক লেখায় আমি মন্তব্য করছিলাম। ওইখানে আমি বলছিলাম, শাহী মির্জা কোন ভয়াবহ প্রতিভার কাম করেন নাই, বরং উনার কামটারে অপরিনামদর্শীতা কওন যাইতে পারে। মাইনষে সাধারণত ডিফেইস করে ছদ্মনামে, আর ভূয়া ইমেইল আইডিতে। কিন্তু মির্জা সাহেব বীরত্ব দেখাইতে যায়া নিজের বিপদ ডাইকা আনছেন।
হ্যাকিং অপরাধ এতদূর পর্যন্ত আমি মানি। কিন্তু মুর্শেদ ভাই যেইভাবে কথাটা বলতেছেন তাতে আমার একটু আপত্তি আছে। একুশ বছর বয়েসে কেউ দুধের শিশু না, সেইটাও মানি, কিন্তু ভাই বয়সের সিগনিফিক্যান্সটা এত তাড়াতাড়ি ভুইলা যায়েন না। ওই বয়সটাতে আমারো শুধু মনে হইতো কিছু একটা করি এডভেঞ্চারাস, সেইখান থিকাই কিন্তু এইদিকে ঝুইকা গেছিলাম। আবার বয়স একটু বাড়তেই, চিন্তা ভাবনায় একটু চেইঞ্জ আসলেই সইরা আসছি। আপনি খেয়াল করছেন কিনা জানি না, এই যে বড়লোকের পোলাপানডি হিযবুত তাহরী করে, কেন করে ? এগো তো টাকার অভাব নাই - তাইলে ? আসলে এইটা হিরোইজমের বয়স। সবাই চায় হিরো হইতে। একটা গোপন সংগঠণ, কিংবা হ্যাকিং -এইগুলা রক্তে জোশ জাগায়। কাজেই মির্জারে এইভাবে শক্ত স্বরে অপরাধী কইতে আমার বাঁধে। সাকা চৌধুরী কত মানুষ মারলো, নিজামী মারলো তাগোই কিছু হইলো না - মাঝে দিয়া একটা চ্যাংড়া পোলা বয়সের দোষে যদি দশ বছরের জেল খাটে তাতে আমি ইনসাফের কিছু দেখি না।
০৪
তয় আপনার সাথে আমি একটা ব্যাপারে একমত - ব্লগে কিংবা ফোরামে যেইভাবে বলা হইতেছে সে মহাপ্রতিভাবান আসলে সে সেইটা নাও হইতে পারে। হয়তো এই কামটাই বাংলাদেশের আরো ৫০০ পোলা করতে পারতো, কিন্তু ওরা করে নাই ডরে। মির্জা ড়্যাবরে সাবধান করার জন্য এইকাম করছে এইটা আমি বিশ্বাস করি না, সে এইটা করছে হিরো হওনের জন্যই। কিন্তু সেই যাই করুক, এইটা আসলে তার বয়সের ধর্ম, নিজেরে প্রমাণ করা, জাহির করা। কাজেই তারে কোন কঠিন শাস্তি কিংবা অত্যাচারের ঘোরতর বিরোধী আমি। রাষ্ট্রের এইরকম আচরণ তারে ঠিক করনের বদলে আরো অপরাধী বানাইবো আমার বিশ্বাস।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
মির্জার শাস্তির ব্যাপারে লেখকের প্রস্তাবনা কিন্তু রাষ্ট্রের প্রস্তাবনার বিপরীত মেরুতেই।
সমস্যাটা অন্য জায়গায়। মির্জার মধ্যে এই যে হিরো হওয়ার, বীর হওয়ার বাসনা, সেটির প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা আমার আছে। আমাদের বাপচাচারা মির্জার বয়সেই একটা ট্রেইন্ড আর্মির বিরুদ্ধে .৩০৩ নিয়ে যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু মির্জার মধ্যে যে ভুল ধারণাটি তৈরি হয়েছে এই হিরোইজমকে প্রকাশ করার, সেটিকে আমরা বরং উসকে না দেই। ২১ বছর বয়সে পরের ঘরে সিঁদ কেটে হিরো হওয়া যায়, এই ধারণাটি মির্জার মনের মধ্যে কেন তৈরি হলো? আমরাই এর জন্যে দায়ী। আমাদের সত্যিকারের বীর নেই, আমরা তস্করকেই বীর ডেকে বীরপূজার পিপাসা নিবারণ করি। মিডিয়াতে সাকা-র মতো দস্যুদের মুখরোচক সব কাহিনী ছাপা হয়, একজন সৎ মানুষের গল্প তার হাজার ভাগের এক ভাগ জুড়েও আসে না।
হাঁটুপানির জলদস্যু
আমার ভয় এটাই, শুধু মাত্র র্যাবের সেন্টিমেন্টে আঘাত লাগার কারণে ছেলেটাকে জানে না মেরে ফেলে কিংবা অমানুষিক অত্যাচার করে পঙ্গু না বানিয়ে ফেলে। এর চেয়ে মোটামুটি পরিমাণের একটা আর্থিক জরিমানা করুক - এতে উভয়েরই মঙ্গল।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
সবগুলো মন্তব্য না পড়ে মন্তব্য করছি, তাই কিছু রিপিট হলে মাফ কইরা দিয়েন।
১. হ্যাকার-এর প্রকৃত সংজ্ঞা কি এইটা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক আছে। তবে সিকিউরিটি ইঞ্জিনিয়ারিং-এর লোকজনের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য বা তারা যেটাকে স্ট্যান্ডার্ড মনে করে এবং ফলো করে সেটা হলো শেইন স্টিফেনের সংজ্ঞা। যেটা বলছে-
হ্যাকার - People who attempt to gain illegal access to machines on the internet for the ”fun”of it, but with no malicious intent.
ক্র্যাকার - People who attempt to gain illegal access to machines on the internet WITH malicious intent.
এই হ্যাকারের আরেকটা সংস্করণ হলো ইথিক্যাল হ্যাকার, যাদেরকে বিভিন্ন কোম্পানি রিক্রুট করে তাদের ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা পরীক্ষণের জন্য।
এখানে একটা ঘটনার কথা বলা যাক। বছর দশেক আগে ফিলিপাইনের এক চৌদ্দ বছরের হ্যাকার প্যান্টাগনের ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্রেক করতে পেরেছিল। কিন্তু ছেলেটা ওয়েবসাইটের বা ওদের ডাটাবেইজের কোন ক্ষতি করেনি। জাস্ট শুধু একটা মেসেজ রেখে এসেছিল, তোমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় ত্রুটি আছে। এটাও একধরনের ইথিক্যাল হ্যাকিং।
আমার ব্যক্তিগত মত, কখনোই হ্যাকিং করা কিংবা ভাইরাস তৈরি করার মতো কাজকে সাপোর্ট করে না। ভার্সিটিতে থাকার সময় সফটওয়্যার ডেভেলপম্যান্ট ওয়ান করার সময় আমাদের কয়েকজনের জোশ চেপেছিল একটা বিধ্বংসী ভাইরাস তৈরি করবো। কোর্স টিচারকে বলতেই তিনি ধমক দিলেন, যদি তোমার করার মতো ক্যাপাবিলিটি থাকে তাহলে ভালো কিছু করো, খারাপ কিছু কেন করবে? সেই থেকে আর ঐসব চিন্তা মাথায় আনি নাই।
সংজ্ঞা যাই হোক, হ্যাকিং-এর উপর প্রতিটি রাষ্ট্রের কিছু বিধিনিষেধ আছে এবং সেই মোতাবেক শাস্তির বিধানও রয়েছে। এখন কথা হচ্ছে সেগুলো সম্পর্কে হ্যাকাররা কতটুকু জানে।
রাগিব ভাইয়ের মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, শাহী শুধু কতগুলো স্ক্রিপ্ট ডাউনলোড করে ব্রুট ফোর্স এট্যাক চালিয়েছে। সে যদি স্কিলড হ্যাকার হতো তবে নিশ্চতভাবে আই.পি এবং এ.আর.পি. স্পুফ করে নিজেকে হাইড করার চেষ্টা করতো। সবচেয়ে বড় যে ভুল কাজটা সে করেছে (মন্তব্য দ্রষ্টব্য) সেটা হচ্ছে ডাটাবেইজ ডিলিট করা (যদিও এসব ডাটাবেইজের ব্যাক-আপ থাকে), এটা সম্পূর্ণ আনইথিক্যাল।
এই ধরনের ক্রাইমগুলোকে এখনই গুরুত্বের সাথে দেখা উচিত। তবে সেইসাথে এটাও বিবেচনা করতে হবে আমাদের দেশে মেইন-স্ট্রিম টেকনোলজি কতটুকু পথ পাড়ি দিয়েছে? আমরা কতটুকু সচেতন কপিরাইট, ইথিকস এসব ব্যাপারে? কারণ, আমার ধারণা আমাদের দেশের বেশির ভাগ লোকই 'সাইবার ক্রাইম এবং সাইবার ল' সম্পর্কে জানে না এবং না জেনেই তারা অনেক বড় ভুল করে ফেলে। সম্ভবত: শাহীও একই ধরনের ভুল করেছে।
যাহোক, আশা করছি এই ২১ বছরের তরুণ কিছুটা অনুকম্পা সবার কাছ থেকে আশা করতে পারে।
যে রাতে গুঁজেছো চুলে বেগুনি রিবন বাঁধা ভাট,
সে রাতে নরকও ছিলো প্রেমের তল্লাট।
. . . . . . . . . . . . . . . . . . (আবু হাসান শাহরিয়ার)
বিকিয়ে যাওয়া মানুষ তুমি, আসল মানুষ চিনে নাও
আসল মানুষ ধরবে সে হাত, যদি হাত বাড়িয়ে দাও।
শাহী মির্জার এই ইথিকস ছিলো না; সে কারণেই আমার ধারণা সে আদৌ সতর্ক করতে হ্যাক করেনি। সে হিরো হতে চেয়েছিলো, সে কারণেই নিজের নাম প্রকাশের লোভ সামলাতে পারে নি, আর পান্ডিত্য দেখানোর জন্যই ডাটাবেজে ক্ষতি করেছে সে।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
মুর্শেদের তথ্য ভান্ডার কিংবা রাগিবের তথ্যভান্ডার যেখানে আমারও তথ্যের উৎপত্তি সেখান থেকেই, তবে এই যে র্যাবের ডাটাবেস হ্যাক করে ধ্বংস করে ফেলানোর অভিযোগ যা আদালতে উত্থাপিত হয়েছে সেটা একটা নিছক ব্লাফ।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নামক জিনিষটা অন লাইনে শেয়ারের জন্য ছেড়ে দেওয়ার স্বচ্ছ নীতি বাংলাদেশের কোনো সরকারী ওয়েব সাইটে নেই।
হ্যাকিং অপরাধ এটা আমি মেনে নিচ্ছি, মুর্শেদে যেভাবে নৈতিক সততার পারকাষ্ঠা দেখালো এখানে তা সাম্প্রতিক উপলব্ধি । এবং শব্দ ব্যবহার দেখে মনে হলো মুর্শেদ আদর্শ উদাহরণ হতে পারে নয়া হিন্দু গরু খাওয়ার যমের।
আমি মির্জার শাস্তি হয়তো মেনে নিবো, অপরাধ করেই ফেলেছে , তবে র্যাবের ভঙ্গিকে আমি সমর্থন করতে পারছি না, বাংলাদেশের আশ্চর্য সমস্যা, এখানে মানুষ বিশেষজ্ঞ খুঁজে, এই একই প্রবনতায় বাংলাদেশের অর্ধের মানুষ ভাবমুর্তি বিশেষজ্ঞ হয়ে গিয়েছে। বড় বড় বুলি আউড়ে যাওয়া ভাবমুর্তিপরায়ন মানুষের উপস্থিতি আমাকে অসুস্থ করে, এখানে এই পোষ্টেও আমি অনেক ভাবমুর্তি পরায়ন মানুষের উপস্থিতি দেখছি।
বাংলাদেশের সরকারী ওয়েব সাইটগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিম্ন মানের, কাপড় তুলে দাঁড়িয়ে থাকা দুর্বল রমনীর মতো ওয়েব সাইটে যে কেউ গিয়েই বীর্যস্খলন করে আসতে পারতো, এটা যে এত দিন হয় নি এটাতেই প্রমাণিত হয় বাংলাদেশের মানুষ অনেক বেশী নীতিপরায়ন।
ভাবমুর্তি এবং নৈতিকতাপরায়ন মানুষেরা হাহাকার করে বলে উঠতে পারে , কাপড় মানলাম খোলাই ছিলো, তাই বলে অনধিকার প্রবেশ আর লিঙ্গ গুতিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সতীত্বের তথ্য হানী করা কি মির্জার উচিত হলো?
তবে মুর্শেদের অন্য একটা আশংকা জেনে হাসতে হাসতে মরে যেতে ইচ্ছা হলো, মির্জাকে ক্ষমা করলে কিংবা অপরাধীকে তোষণ করলে দেশের তরুণেরা সবাই হ্যাকার হয়ে যাবে, এই হাস্যকত নৈতিকতাবাদী আশংকা শুনে মুর্শেদকে অতিসত্ত্বর কোনো কলাম লেখকের ভুমিকায় দেখতে পাই আমি, হয়তো আইটি বিশেষজ্ঞ কলামিস্ট হিসেবে মুর্শেদের ভবিষ্যত যাত্রা এখান থেকেই শুরু হবে।
হিরোইজম দেখানোর জন্য দেশের তরুনের হ্যাকার হয়ে যাবে এই সীমিত আশংকায় মির্জাকে কঠোর শাস্তি দেওয়ার প্রস্তাব করার জন্য মুর্শেদের লেখার নিন্দা জানাই। আর মুর্শেদকে অনুরোধ করি একটু ঠান্ডা পানি চোখে মুখে দিয়ে লিখতে, রজ্জুতে স্বর্পভ্রম না এটা একেবারে রজুতে এনাকোন্ডা দেখে মদিনায় হিজরত মালুম হচ্ছে।
------------------------------------
আমি তো গণে নেই বিচ্ছিন্ন একা
সঙ্ঘে সমুহে নেই সঙ্ঘমিতা।
------------------------------------
আমি তো গণে নেই বিচ্ছিন্ন একা
সঙ্ঘে সমুহে নেই সঙ্ঘমিতা।
রাসেল ভাই, ড়্যাবের ভঙ্গিকে তো কেউ সমর্থন করছে না। কথা হচ্ছে মির্জাকে নিয়ে। আপনার বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে আপনার মাথায় টাক কাজেই যখন খুশি সেখানে চাঁটি মারা যাবে, সেটা কোন অপরাধ নয়।
মির্জার ওপর ড়্যাবের প্রতিহিংসা চরিতার্থ হোক, এ-ও তো কেউ বলছে না। মির্জাকে বীর হিসেবে চিহ্নিত করার কারণটাই বা কী? সে ড়্যাবের ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে বলে?
সমস্যাটা ভাবমূর্তি নিয়ে নয়, সমস্যাটা একজন হ্যাকার সম্পর্কে আমাদের মনের মধ্যে যে স্তুতিস্পৃহা জেগে উঠেছে, তা নিয়ে। মির্জার প্রতিপক্ষ ড়্যাব বলেই কি আমাদের মনের মধ্যে একটা সমর্থনের জায়গা তৈরি হয়েছে?
হাঁটুপানির জলদস্যু
বাংলাদেশের সরকারী ওয়েবসাইটগুলো হ্যাক করতে হয় না, অটো হ্যাক হয়েই থাকে।
বিশ্বাস না হলে নিচের লিংকগুলোতে দেখে আসতে পারেন!!
http://www.bangladesharmy.org
http://www.bangladeshgov.org
http://www.bangladesh-parliament.org
আরও অনেক লিংক পাবেন এইখানে
http://www.mosict.gov.bd/links.htm
এই অবস্থায় শাহী মির্জাকে ১০ বছর জেলের শাস্তি দেওয়া নুপুংশকদের উল্লাস ছাড়া আর কিছুই না।
সাইবার ক্রাইমকে এখনই না বলুন।
- বাহ্, বেশ ভালোই তো চলছে দেখি।
ড়্যাব বনাম শাহী মির্জা - সৌজন্যে জনগণ
তো ভিউয়ার্স, আপনারা যারা এইমাত্র আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তাদের জ্ঞাতার্থে মূল কয়েকটা কথা জানিয়ে দিই, সাদা টুপি হ্যাকার, কালো টুপি হ্যাকার - এই দুয়ের মধ্যে জনাব শাহী মির্জাকে কোন টুপির মাওলানা বলে আখ্যায়িত করা যায় এই নিয়ে ব্যাপক ভুটাভুটি চলছে। ভুট গ্রহণ শেষেই বলা যাবে তিনি কোন টুপির হ্যাকিং মন্দিরে পুরোহিত হিসেবে যোগ দিবেন!
বয়স বা অপরাধ কিংবা ইমোশনের ভিত্তিতে তাঁকে বিচার করা হবে নাকি, "এই ব্যাটা যে এক্সপি ব্যবহার করে সেইটা কি জেনুইন নাকি চোরাই মাল" সেইটা আগে নির্ধারিত হোক- এই নিয়েও একটা কথ্যভুটের আয়োজন করা হয়েছে। ফলাফল সময়মতো জানিয়ে দেয়া হবে ভিউয়ার্স আপনাদের।
আমাদের সঙ্গেই টিউনড থাকুন। দেখে আসি প্রতিক্রিয়া পোস্টে আর কি কি তথ্য পাই।
সবাই রমযানের পবিত্রতা রক্ষা করুন।
- আদেশক্রমে ব্র্যাক
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
শাহী মির্জা যা চেয়েছিল, তা কিন্তু সে হয়ে গিয়েছে... ভালো কিংবা মন্দ, যে কোনোটা হিসেবেই সে এখন আলোচনার তুঙ্গে...
আমি কারো বক্তব্যেই যুক্তির অভাব দেখি না...
অপরাধের লঘু শাস্তি হওয়া দরকার এবং এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন হওয়া দরকার, যেন আইনের অভাবে ভবিষ্যতে মোল্লা হ্যাকারদের পাল্লায় আমাদের আবার না পড়তে হয়...
কিন্তু শাহীকে গুরু অপরাধ দেয়াটা অমানবিক হয়ে যাবে... ১০ বছরের জেলের ভয় দেখিয়ে ওর রাতের ঘুম হারাম করে কয়দিন পর "আর কখনো এমন করব না" জাতীয় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া যেতে পারে...
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!
--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'
ঠিক কথা।
==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু
অল্পকথায় যা বলার বলি। হ্যাকিং অপরাধ, বেশ গুরুতর রকমেরই অপরাধ। শাহী মির্জাকে হিরো বানানোর প্রক্রিয়া ও অপরাধের উদাহরণ দিয়ে অপরাধের জাস্টিফিকেশনের বিপক্ষে থেকেই বলি - শাহী মির্জার শাস্তি হতে পারে জনসেবামূলক-বেতনহীন কাজ, জেল কিংবা অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণ নয়।
এটুকু লেখার পর এখন মনে হচ্ছে, সবাই তো প্রায় একই কথা বলেছেন, তাহলে বিভেদটা কই?
ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল
হিমু ভাইয়ের "অপরাধ, বিচার, শাস্তি" লেখার মর্মার্থ এখন বুঝলাম। এই লেখাটা পড়ার সময় অনেক কথা মাথায় আসছিল কিন্তু এখন আর কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না। সবাই সবকিছুই বলে দিয়েছে।
_________________________________
বিষন্নতা ছোঁয় আমায় মাঝে মাঝেই, কখনো কি ছোঁয় না তোমায়?
তবে আমার মনে হয় শাস্তিটা তীব্র হওয়া উচিত না।
নতুন মন্তব্য করুন